রামাদানের পর কীভাবে আল্লাহ্‌র আনুগত্যে অটল থাকা যায়

[মূল লেখক: আহমাদ ‘আবদুল-মাজীদ মাক্কী। মৌলিক লেখাটি এখানে পাবেন]

অনেকেই খেয়াল করেছেন যে বহু মুসলিম রামাদানের সময় বিভিন্ন ‘ইবাদাতের কাজে মশগুল থাকেন। এসবের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করা, দান করা, ওয়াক্ত হয়ে গেলেই তাড়াতাড়ি নামাজ পড়া ইত্যাদি। কিন্তু এরাই আবার রামাদান শেষ হয়ে গেলে গড়িমসি করা শুরু করেন এবং এই ‘ইবাদাতের কাজগুলো ধরে রাখতে পারেন না। এই ঘটনা যদি চলতেই থাকে তাহলে একজন বান্দার ঈমানে ও তার মৃত্যু ও আখিরাতের জীবনে এটি বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আল্লাহ্‌ আমাদের আদেশ করেছেন মৃত্যু অবধি তার আনুগত্যে অটল থাকার জন্য – “এবং তোমার রব্বের ‘ইবাদাত করো যতক্ষণ পর্যন্ত স্পষ্ট প্রতীতি না আসে” [আল-হিজ্‌র: ৯৯]। এখানে স্পষ্ট প্রতীতি (আরবি শব্দ ইয়াকীন) বলতে মৃত্যুকে বোঝানো হয়েছে। একইভাবে তিনি আমাদের আদেশ করেছেন প্রতিদিন অসংখ্যবার তার কাছে প্রার্থনা করতে যেন তিনি আমাদের সরল সঠিক পথ দেখান (অন্তত ১৭ বার আমরা সূরা ফাতিহা পাঠ করি যাতে এই প্রার্থনাটি রয়েছে)। 

আল্লাহ্‌র পথে স্থির থাকার এই পথে রয়েছে কিছু প্রতিবন্ধকতা, আবার রয়েছে কিছু সহায়ক জিনিস যা এই পথ চলাকে সহজ করে দেয়। যদি কোনও ব্যক্তি এই প্রতিবন্ধকতাগুলো এড়িয়ে চলতে পারে এবং এই সহায়িকাগুলোর সাহায্য নিতে পারে তবে সে আল্লাহ্‌র অনুমতিক্রমে তার আনুগত্যের ওপর স্থির থাকতে পারবে।

নিম্নে সংক্ষিপ্তাকারে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো এবং সবচেয়ে জরুরি সহায়িকাগুলোর উল্লেখ করা হোলো। হয়তো আল্লাহ্‌ ‘আয্‌যা ওয়াজাল্ল্‌ এর মাধ্যমে লেখক ও পাঠক উভয়কেই উপকৃত করবেন।

প্রথমত: প্রতিবন্ধকসমূহ

প্রথম প্রতিবন্ধক: অতি উচ্চাশা

এর অর্থ মূলত দুনিয়াকে আঁকড়ে থাকার প্রবণতা এবং এটিকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা। একে ভালোবাসা। অপরদিকে আখিরাতকে অগ্রাহ্য করা। আল্লাহ্‌ এই মানসিক ব্যাধি থেকে আমাদের সতর্ক করেছেন: “এবং অলীক সব আশা তোমাদের বিভ্রান্ত করেছে” [আল-হাদীদ: ১৪] অর্থাৎ পার্থিব দীর্ঘ উচ্চাশা। আল্লাহ সুবহানাহু ব্যাখ্যা করেছেন যে এই উচ্চাশা হচ্ছে হৃদয়কে শক্ত করে দেয়ার কারণ: “তারা যেন ওদের মতো না হয় যাদের ওপর পূর্বে কিতাব এসেছিলো, অত:পর দীর্ঘ সময় তাদের ওপর অতিক্রান্ত হোলো ফলে তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল” [আল-হাদীদ: ১৬]। একইভাবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে এটি পার্থিব জীবনে মানুষের যে প্রকৃত লক্ষ্য তা থেকে মানুষকে অন্যত্র ঠেলে দেয়: “তাদের ছেড়ে দাও, তারা খেতে থাকুক, ভোগে নিমজ্জিত থাকুক এবং ব্যপৃত থাকুক ভ্রান্ত আশায়। শীঘ্রই তারা জানতে পারবে” [আল-হিজ্‌র: ৩]। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে এই উচ্চাশা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া ও পতনেরও কারণ: “নিশ্চয়ই যারা সঠিক পথ বুঝে নেয়ার পরও তাতে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, শয়তান তাদের প্রলুব্ধ করে এবং ভ্রান্ত আশা দেখায়” [মুহাম্মাদ: ২৫]। প্রলুব্ধ করে বলতে বোঝানো হচ্ছে যে শয়তান তাদের কাজগুলো তাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে এবং তাদের দীর্ঘায়ুর মিথ্যে আশ্বাস দেয়। এর কথাই ইমাম আল-কুরতুবী বলেছেন: “এ এক বিরামহীন ব্যাধি ও দীর্ঘমেয়াদী মানসিক রোগ। যখন সে অন্তরে গেঁড়ে বসবে অন্তর খেই হারাবে। এর প্রতিকার হয়ে উঠবে কঠিন এবং সহজে এ ব্যাধি ছাড় দেবে না। কোনও চিকিৎসাতেই কাজ হবে না। বরং এ ব্যাধি চিকিৎসকদের পর্যন্ত হয়রান করে দেয়। জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিরাও এর নিরাময়ের কথা ভুলে বসে”।

হাসান আল-বসরী বলেন: “যখনই বান্দা উচ্চাশা পোষণ করা শুরু করে তখনই এটি তার কর্ম নষ্ট করে দেয়। কেননা অতি পার্থিব উচ্চাশা ‘ইবাদাতের কাজে অলসতা নিয়ে আসে এবং দীর্ঘসূত্রিতার জন্ম দেয়। পৃথিবীতে দীর্ঘ জীবনের অলীক প্রশ্রয় দেয়, প্রবৃত্তির অনুসরণে ঝুঁকিয়ে দেয়। এ ব্যাপারটি সর্বত্রই লক্ষ্যণীয় – আলাদা করে ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। অপরদিকে পার্থিব জীবনের কাছে অল্প প্রত্যাশা মানুষকে আখিরাতের পাথেয় অর্জনের কর্মের দিকে ঠেলে দেয়, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবে উৎসাহ দেয়”।  

দ্বিতীয় প্রতিবন্ধক: বৈধ জিনিস ভোগে বাড়াবাড়ি করা

সন্দেহ নেই কিছু কিছু হালাল বৈধ জিনিস – যেমন খাদ্য, পানীয় ও পোশাক ইত্যাদিতে বেশি ডুবে থাকা ‘ইবাদাতের কাজে ঘাটতি হওয়ার ও এতে স্থির থাকতে না পারার একটি বড় কারণ। এই ধরণের অতি ভোগ – আরাম আয়েশ, অলসতা ও অতিনিদ্রার জন্ম দেয়। বরং কখনও কখনও এটি মাকরূহ (শরি’আ অনুযায়ী অপছন্দনীয়) জিনিসের দিকে ঠেলে দেয়। কেননা এই বৈধ ভোগ্য সমূহ কামনা বাসনার দরজা এবং কামনা বাসনার কোনও বেড়াজাল নেই। এ কারণেই আল্লাহ্‌ সুবহানাহু পবিত্র খাদ্যদ্রব্য থেকে ভক্ষণ করতে বলেছেন এবং এতে সীমা অতিক্রম করতে নিষেধ করেছেন। যেমনটি তিনি বলেন: “আমার দেয়া পবিত্র বস্তুসমূহ হতে ভক্ষণ করো এবং সীমালংঘন করো না” [তা-হা: ৮১]। এর অর্থ এই নয় যে আল্লাহ্‌ যা হালাল করেছেন তাকে হারাম করে ফেলতে হবে। আমাদের নবীজী, যিনি সবচেয়ে বেশি পরহেযগার ছিলেন, তিনি মধু ও মিষ্টান্ন ভালোবাসতেন। তিনি গোশত খেতেন। নিতান্ত অপছন্দ না হলে তার কাছে যা এগিয়ে দেয়া হতো তা তিনি গ্রহণ করতেন। অতএব হালাল বৈধ বস্তু ব্যবহারে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা হোলো যখন সেটি নিজেই মানুষের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পরিণত হয়।

তৃতীয় প্রতিবন্ধক: ঈমানী পরিবেশ থেকে দূরে থাকা

আমাদের বিশ্বাসের একটি মূল স্তম্ভ হোলো যে ঈমান বাড়ে ও কমে। যখন বান্দা নিজেকে অশ্লীল, পাপাচারে লিপ্ত, খুল্লাম খুল্লা পরিবেশে নিজেকে নিয়োজিত করে তখন তার ঈমান দূর্বল হয়ে পড়ে এমনকী উবে যায়। একই ঘটনা ঘটে যখন সে পার্থিব কর্মকান্ডে বা এসব কাজে মশগুল থাকা মানুষদের সাথে বেশি ওঠাবসা করে। এ কারণেই আল্লাহ্‌র রাসূল (সা:) বর্ণনা করেছেন যে আল্লাহ্‌র নিকট সবচেয়ে প্রিয় স্থান হচ্ছে মসজিদ। আর সবচেয়ে ঘৃণ্য স্থান হচ্ছে বাজার। এটা এ কারণেই যে মসজিদসমূহ হচ্ছে আল্লাহ্‌র আনুগত্যের স্থান, যেখানে আল্লাহ্‌র দয়া ও ক্ষমা বর্ষিত হয়। অপরদিকে বাজারগুলো হচ্ছে প্রতারণা, মিথ্যে শপথ ও প্রতিজ্ঞা-ভঙ্গের জায়গা।

ইসলাম আমাদের উৎসাহ দিয়েছে সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের বন্ধুত্ব ও তাদের সাথে থাকার ব্যাপারে। যাতে করে মুসলিমরা ‘ইবাদাত কর্মসমূহে অভ্যস্ত হতে পারে। মন্দ ও অসৎ কাজ ছাড়তে পারে। সৎসঙ্গের যে বান্দার ঈমানের ওপর ভালো প্রভাব রয়েছে তার একটি সুন্দর উদাহরণ হোলো সেই হাদীস যেখানে এক ব্যক্তি যে একশটি হত্যা করেছে সে একজন ‘আলেমকে জিজ্ঞেস করছে: সে কি তওবা করতে পারবে? উত্তরে সেই ‘আলেম বললেন: “অবশ্যই, কে তোমার ও তওবার মাঝে বাধা দিচ্ছে?! তুমি অমুক অমুক জায়গাতে চলে যাও। সেখানে মানুষজন রয়েছেন যারা আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করেন, তাদের সাথে আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করতে থাকো। আর নিজের দেশে ফিরে যেও না কেননা সেটা একটা খারাপ জায়গা”।

দ্বিতীয়ত: সহায়িকাসমূহ

প্রথম সহায়িকা: স্থিরতার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দু’আ করা

আল্লাহ্‌র বান্দাদের একটি বৈশিষ্ট্য হোলো যে তারা দু’আর মাধ্যমে আল্লাহ্‌র মুখাপেক্ষী হন যাতে তারা তার আনুগত্যে অটল থাকতে পারেন। যাতে তাদের অন্তর সঠিক পথপ্রাপ্ত হওয়ার পর বক্রতার দিকে ধাবিত না হয়। তারা এই প্রতীতি রাখেন যে আদমের সন্তানদের অন্তরসমূহ আল্লাহ্‌র দুই আঙুলের মাঝে থাকে, একে তিনি যেভাবে ইচ্ছে পরিচালিত করতে পারেন। এ জন্যই আল্লাহ্‌র রাসূল (সা:) প্রায়ই এই দু’আ করতেন যে: “হে আল্লাহ্‌, হে অন্তরের পরিচালনাকারী, আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের পথে অটল করে দিন। হে অন্তরের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার অনুগত্যের পথে ঝুঁকিয়ে দিন”। তার প্রার্থনাসমূহের মাঝে এও ছিলো: “হে আল্লাহ্‌! আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন এবং সঠিক পথকে আমার জন্য সহজ করে দিন। ‘আলীকে (রা:) তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন আল্লাহ্‌র কাছে সঠিক দিক নির্দেশনা ও স্থিরতা প্রার্থনা করার জন্য। ইবন ‘উমার (রা:) দু’আ করতেন: “হে আল্লাহ্‌! আমার জন্য সহজতাকে সহজ করে দিন এবং কাঠিন্যকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিন”।

দ্বিতীয় সহায়িকা: ‘ইবাদাতের কাজে ভিন্নতা আনা

আমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র দয়ার একটি নিদর্শন হোলো যে তিনি আমাদের বিভিন্ন ‘ইবাদাতের পথ বাতলে দিয়েছেন যাতে করে মানুষ তার ক্ষমতা অনুযায়ী এ থেকে গ্রহণ করতে পারে। এসব ‘ইবাদাতের কাজের মাঝে কিছু রয়েছে শারীরিক ও আর্থিক, কিছু আছে কথ্য ও অন্তরস্থ। আল্লাহ্‌ ‘আয্‌যা ওয়াজাল্ল্‌ এগুলোর প্রত্যেকের ব্যাপারেই প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন এবং কোনওটিতে ঘাটতি না রাখতে বলেছেন। এভাবে ‘ইবাদাতের কাজে ভিন্নতা আনার মাধ্যমে ও সেগুলোতে প্রতিযোগিতা করে একজন মুসলিম আল্লাহ্‌র আনুগত্যে অটল থাকতে পারে। ‘ইবাদাতের কাজে সে এক্ষেত্রে বিরক্তি অনুভব করবে না। যেমনটি আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন: “তাদের যা আদেশ করা হয়েছে তারা যদি তাই করে তাহলে সেটা হবে তাদের জন্য মঙ্গলজনক এবং স্থিরতা পাবার জন্যও সেটা অধিক উপযোগী” [আন-নিসা: ৬৬]।

তৃতীয় সহায়িকা: মসজিদ ও মসজিদের বাসিন্দাদের সাথে লেগে থাকা

মসজিদ ও এর বাসিন্দাদের সাথে সংযুক্ত থাকার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র আনুগত্যে স্থিরতা পাওয়া যায়। এতে করে ফরজ নামাজগুলো জামাতে আদায় করা হয়, সৎকর্মশীলদের সান্যিধ্য পাওয়া যায়, ফেরেশতাদের দু’আর অন্তর্গত হওয়া যায়, ‘ইলমের বা জ্ঞানের বৈঠকে বসা যায় এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহকে সংরক্ষণ করা যায়। এ ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য প্রচলিত কথা এসেছে।

চতুর্থ সহায়িকা: সৎকর্মশীলদের গল্প পড়া

আল্লাহ্‌ তার কিতাবে নবী ও পূর্বেকার সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সুন্দর সুন্দর গল্প শুনিয়েছেন। এগুলো কেবল বিনোদন ও আড্ডাবাজির জন্য শোনানো হয়নি। এই গল্পগুলোর উদ্দেশ্য হোলো যাতে আমরা উপকৃত হতে পারি ও শিক্ষা পেতে পারি। এর উপকার হচ্ছে যে এতে ঈমানদার ও অনুগত নারী ও পুরুষদের অন্তরে স্থিরতা আসে। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন: “আর আমি  রাসূলদের সব বৃত্তান্তই তোমাকে বলছি এবং এ দিয়ে তোমার অন্তরকে মজবুত করছি” [হূদ: ১২০]।

কত মানুষেরই অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে ভালোর দিকে যখন তারা বড় মর্যাদাশীল ব্যক্তিত্বদের জীবনী পড়েছে। বিশেষ করে পূর্বেকার সৎকর্মশীলদের জীবনী – যারা সবচেয়ে বড় উদাহরণ রেখে গেছেন উৎসর্গের, ‘ইবাদাতের, পরহেজগারীর, জিহাদের, দানশীলতার ইত্যাদি। সত্যিকার অর্থে তারা ছিলেন পরিপূর্ণ মানুষ ও উম্মতের অগ্রগণ্য। এদের জীবনী পাঠ করে মানুষ প্রচুর উৎসাহ পেতে পারে। আরব কবির ভাষায়:

তাদের অনুকরণ করো যদিওবা তাদের মতো না হও
নিশ্চয়ই মহানুভবদের অনুকরণেই নিহিত সাফল্য

পঞ্চম সহায়িকা: আল্লাহ্‌র নিকট যে চির শান্তি রয়েছে তা কামনা করা

পরকাল ও এর প্রতিদানের ব্যাপারে স্পষ্ট আস্থা মানুষকে ‘ইবাদাতের কাজ করতে ও খারাপ কাজ ছেড়ে দিতে সাহায্য করে, যেমনটি আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন: “ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র সাহায্য প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তা বেশ কঠিন সবার জন্যই – আল্লাহ্‌ভীতিতে ভীত ব্যক্তিগণ ব্যতীত – তারা যারা ধারণা রাখে যে তারা তাদের রব্বের মুখোমুখি হবে এবং তারা তার নিকটই প্রত্যাবর্তনকারী” [আল-বাকারাহ: ৪৫-৪৬]।

আল্লাহ্‌র রাসূল (সা:) আমাদের জান্নাতের সবচেয়ে নিচু স্তরের বাসিন্দার কথা আমাদের শুনিয়েছেন একটি হাদীসে যা আমাদের সঙ্কল্পকে উচ্চ করবে এবং সৎকর্মের দিকে উৎসাহ দেবে, এ কাজে স্থির থাকতে সাহায্য করবে। তিনি বলছেন: “মূসা তার রব্বকে জিজ্ঞেস করলেন জান্নাতের সবচেয়ে নিচু স্তরের বাসিন্দার ব্যাপারে? আল্লাহ্‌ বললেন: সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে আসবে জান্নাতবাসীরা জান্নাতে ঢুকে পড়ার পর। সে বলবে: হে রব্ব! এখন কী হবে মানুষ তো তাদের নিজ নিজ স্তরে চলে গেছে?! তাকে বলা হবে: তুমি কি চাও যে তোমার দুনিয়ার রাজাদের মতো রাজত্ব হোক? সে বলবে: চাই হে রব্ব!  তখন তিনি বলবেন: “তোমার জন্য ওটাও থাকলো এবং ওটার মতো আরও, আরও। এভাবে পঞ্চমবারে সে বলল: হে রব্ব! তাহলে যারা জান্নাতের সবচেয়ে উঁচু স্তরে? তিনি বললেন: “তাদের জন্য আমি নিজে ঠিক করেছি, নিজ হাতে তাদের আভিজাত্য নির্মাণ করেছি এবং সেভাবেই সম্পূর্ণ করেছি। কোনও চোখ তা দেখেনি, কোনও কান তা শোনেনি, মানব হৃদয় তা কখনও কল্পনা করেনি”। এরপর নবীজী (সা:) বললেন: এর সত্যতা পাওয়া যায় আল্লাহ্‌র কিতাবে: “কেউ জানে না তাদের কৃতকর্মের জন্য কী কী নয়ন জুড়ানো প্রতিদান লুকিয়ে রাখা আছে” [আস-সাজদাহ: ১৭]।

আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাদের তার আনুগত্যে নিয়োজিত করেন এবং তার ওপর আমাদের অটল রাখেন।

 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on August 13, 2013 02:26
No comments have been added yet.


Asif Shibgat Bhuiyan's Blog

Asif Shibgat Bhuiyan
Asif Shibgat Bhuiyan isn't a Goodreads Author (yet), but they do have a blog, so here are some recent posts imported from their feed.
Follow Asif Shibgat Bhuiyan's blog with rss.