চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে ট্রেন থেকে নামলো প্রাণেশ। সে যাবে স্মৃতিহরগন্জ। এখান থেকে অনেকখানি পথ যেতে হবে তারপর নদী পেরোতে হবে। কিন্তু এই সকালবেলাতেও স্টেশনের আশেপাশে কোথাও কোনো রিকশা বা অন্য যানবাহন দেখতে পাচ্ছে না প্রাণেশ। এইসময় হঠাৎই স্টেশনে একটি মেয়েকে সাইকেল চালিয়ে আসতে দেখলো সে। কথা বলে জানতে পারলো আজ এখানে ধর্মঘট চলছে। তাই রাস্তাঘাটে কোনো গাড়ি চলাচল নেই! অথচ আজকে বিকেলের মধ্যে তাকে অফিসে পৌঁছাতে হবেই নাহলে চাকরিটা হাতছাড়া হয়ে যাবে। কিন্তু এই অদ্ভুত মেয়েটি তাকে রিকশা চালিয়ে নদী ঘাটে পৌঁছে দিলো আবার ডিঙি নৌকায় করে ওপারে নদীর পাড়েও নামিয়ে দিয়ে গেল।
প্রাণেশ অফিসে পৌঁছে জানতে পারলো তার পোস্টিং হয়েছে এখান থেকে পঞ্চাশ মাইল দূরে ভুবনঝিল নামের অঞ্চলে। অগত্যা তাকে সেখানেই রওনা হতে হলো। সেখানে তার বড়বাবু বদনসুন্দর মশাই ছিলেন। তাকে সবকিছু দেখিয়ে-বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে সেদিনই স্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে বদনসুন্দর কে তার স্ত্রীর কাছে চলে যেতে হলো! চারদিকে জনমানবহীন এই নির্জন বাড়িতে কদিন প্রাণেশকে একাই থাকতে হবে! কিন্তু বদনসুন্দর বাবু এটা বলে যাননি যে সূর্য অস্ত ডুবার সাথে সাথে রাত বাড়তেই এই অঞ্চল কি ভয়ংকর রুপ ধারণ করে বসে!
তবে রাতের ভয়ংকর রুপ দিনের আলো ফুটতেই কেটে যায়। দিনের বেলা এ অঞ্চল বেশ শান্ত-শিষ্ট। তখন কে বলবে রাতে যে এমন ভয়াবহ কান্ড হয়ে থাকে। একে একে গল্পের বাকি চরিত্র - বন্যা,কল্পনা দত্ত,হারাণচন্দ্র,দারোগাবাবু আর সেই নদীর ধারে বাস করা দুটো বিশালাকৃতির সাপ - সবার সাথে প্রাণেশ জড়িয়ে যেতে থাকে।
পাঠ্য অনুভূতি - এই বইয়ের প্লট অদ্ভুত রকমের হলেও সত্যি বলতে পড়তে ভালো লেগেছে। শুরুতে ভেবেছিলাম স্টেশনের দেখা হওয়া সেই মেয়েটিকে ঘিরেই গল্প এগোবে কিনা কিন্তু পরে দেখলাম না! গল্পের মোড় অন্যদিকেই নিয়েছে। শেষটা এমন হবে সত্যি কল্পনা করিনি। তবে পড়ে অবাস্তবও মনে হয়নি। ছিমছাম সুন্দর একটি বই। একবসাতেই শেষ করা যাবে।