নিশিপতঙ্গের অভিশাপে এক বৃদ্ধের ঘুম হারাম। অয়ন-জিমির জন্য এ রকম অ্যাডভেঞ্চার নতুন কিছু নয়। তবে এবার তারাও মৃত্যুর মুখোমুখি। তারা কি পারবে বৃদ্ধকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে?
অয়ন-জিমিকে নিয়োগ দেন বৃদ্ধ এক ভদ্রলোক। তার ধারণা, আদিবাসীদের এক দানবকে তিনি দেখেছেন, যেটা দেখতে অর্ধেক পতঙ্গ, অর্ধেক মানুষ। এই নিশিপতঙ্গ যারা দেখে, তাদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। একের পর এক বিপদে তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। ওই বৃদ্ধের বাবাও নাকি দেখেছিলেন ওই নিশিপতঙ্গ। অয়ন-জিমিকে এবার বের করতে হবে নিশিপতঙ্গকে। তবে আসলেই কি আছে এই নিশিপতঙ্গ, নাকি বৃদ্ধের কল্পনা! সেটি বের করতেই লেগে যায় দুই বন্ধু।
"অয়ন জিমি" আমার খুব পছন্দের সিরিজ। বহুদিন পর এই সিরিজের বই পড়ে ব্যাপক আনন্দ পেলাম। কাহিনি মাঝপথে একটু ঝিমিয়ে পড়লেও শেষটা জমজমাট। সাথে অয়ন জিমির খুনসুটি তো আছেই। রহস্য সমাধানে জিমির অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে ভালো লাগছে।
যথারীতি দুর্দান্ত। একদমে একটানে একবসায় মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ে শেষ করার মতো আরেকটা অয়ন-জিমি রহস্যকাহিনি। কিংবদন্তির মথম্যান ওরফে নিশিপতঙ্গের একশ বছরের পুরনো অভিশাপ, শার্লক হোমসের বিশ্ববিখ্যাত বাস্কারভিল হাউন্ডের মতো, একই পরিবারের এক জেনারেশনের পর পরের জেনারেশনকেও (আপাত) ধাওয়া রত। সাথে একশ বছর আগের অজানা রহস্যময় ইতিহাস, হারিয়ে যাওয়া "পবিত্র" ডায়েরির রহস্য, আর রেড ইন্ডিয়ানদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া লুকানো গুপ্তধন। সবমিলিয়ে নির্দিষ্ট একটা ছকে থেকেও বরাবরের মতোই জমজমাট উপাদেয় টানটান উত্তেজনার ঝরঝরে সুলিখিত সুখপাঠ্য অয়ন-জিমির বইমেলা ২৩-এর সদ্য প্রকাশিত অভিযান। এককথায় তৃপ্তিদায়ক। আর এবারে অন্তত শেষ মুহূর্তের আগে প্রকৃত কালপ্রিট কে একেবারেই আন্দাজ করতে পারিনি!
পুরো একটা বছর মাত্র একটা নতুন অয়ন-জিমি উপন্যাসের জন্য অপেক্ষাটা খুব বেশিই দীর্ঘ।
- কী বই পড়? - নিশিপতঙ্গ। - হিসিপতঙ্গ? পতঙ্গ হিসি করে দিছে? - হিসিপতঙ্গ না, মা। নিশিপতঙ্গ। নিশি মানে রাত, আর পতঙ্গ মানে পোকা। নিশিপতঙ্গ মানে রাতের পোকা। - রাতের পতঙ্গ নিয়ে গল্প? - ঠিক পতঙ্গ না। অর্ধেক পতঙ্গ, অর্ধেক মানুষ। এক কথায় পতঙ্গমানব। আহমেদ ছফার ভাষায়, অর্ধেক পতঙ্গ তুমি, অর্ধেক মানবী। - নিশিপতঙ্গ আসলেই আছে? - বৃদ্ধ এন্থনি টেলর সেরকমটাই বিশ্বাস করেন। এমনকি নিজের চোখে দেখেছেনও! - আসলেই? - হুম। সংখেপে বললে ঘটনা এ'রকম, 'বৃদ্ধ এন্থনি টেলরের ধারণা, আদিবাসীদের এক দানবকে তিনি দেখেছেন, যেটা দেখতে অর্ধেক পতঙ্গ, অর্ধেক মানুষ। এই নিশিপতঙ্গ যারা দেখে, তাদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। একের পর এক বিপদে তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। ওই বৃদ্ধের বাবাও নাকি দেখেছিলেন ওই নিশিপতঙ্গ। তারপর তার জীবনেও নেমে এসেছিল বিপর্যয়। অয়ন-জিমিকে এবার বের করতে হবে নিশিপতঙ্গকে। আসলেই কি আছে এই নিশিপতঙ্গ, নাকি বৃদ্ধের কল্পনা! নাকি এর মধ্যে আছে অন্যকিছু? - কাহিনি তো বেশ ইন্টারেস্টিং। - হুম। কিছুটা শার্লক হোমসের বিশ্ববিখ্যাত রহস্যপোন্যাস 'বাস্কারভিলের হাউন্ড' টাইপ। একই পরিবারের এক প্রজন্মের পর পরের প্রজন্মকেও তাড়া করতে থাকা অভিশাপ। জমজমাট রহস্য। অনেকদিন পর কোনও কিশোর রহস্যপোন্যাস পড়তে গিয়ে গোয়েন্দাদের আগেই মূল কালপ্রিটকে ধরতে পারিনি। ব্যাপারটা ভাল্লাগছে। - এক বাক্যে বললে? - এক কথায় বললে, 'ইতিহাস, অপরাধ, অভিশাপ, কিংবদন্তী, লুকনো গুপ্তধন, মগজাস্ত্রের প্রয়োগ এবং অন্তিম চমক' এর সমন্বয়ে কমপ্লিট একটা প্যাকেজ। যদিও মূলত কিশোর থ্রিলার, তবে আমরা যারা রকিব হাসানের সেই ভিন্টেজ তিন গোয়েন্দা পড়ে বড় হয়েছি, তাদেরও ভাল লাগবে নিশ্চিত ভাবেই। প্রথমবারের মত অয়ন-জিমি সিরিজের কোনও বই পড়লাম হার্ডকভারে। প্রথমার প্রোডাকশনও হয়েছে চমৎকার, প্রিয় সেবা প্রকাশনীর ঐতিহ্যবাহী পেপারব্যাককে মিস করিনি তেমন একটা। প্রচ্ছদ আরেকটু আকর্ষণীয় হতে পারতো। পরের বই 'আজব কারিগর' এর অপেক্ষায়।
তেইশের মেলার প্রথম বই পড়া শেষ হলো অয়ন জিমি দিয়েই। বরাবরের মতই দুর্দান্ত আরেকটা বই। বুড়ো বয়সে না পড়লে আরো বেশি ভালো লাগতো, এ ব্যাপারে নিশ্চিত। তবে তিন গোয়েন্দার প্রথমদিকের বই গুলোর মতই মানের দিক দিয়ে। অবশ্য মূল কালপ্রিট আর লুকোনো "জিনিস গুলো" কোথায় আছে সেটা বেশ আগেই বুঝে ফেলেছিলাম! সেটা আমার গোয়েন্দা উপন্যাস পড়তে গিয়ে অতি মাথা ঘামানোর ফল। 🥱
যাই হোক, রিয়াকে মিস করেছি। দু এক চ্যাপ্টারের জন্যও তো আনা যায় বেচারিকে! আর, প্রচ্ছদ মন মতো হয় নি। কিন্তু প্রথমা থেকে প্রকাশিত এই বইয়ের বাকি সব দিক দুর্দান্ত।
অনেক দেরিতে বইটা হাতে পেয়েছি, যখন অধিকাংশ পাঠকই বইটা পড়ে ফেলেছে। যাই হোক, অনেকদিন পর টানা কোন বই পড়ে শেষ করলাম। মুল অপরাধীকে তো আন্দাজ করা যায় নি। অবশ্য আন্দাজ করতে পারার কথাও না। পরে যথেষ্ট ভাল লেগেছে। পরবর্তী বই-এর অপেক্ষায় রইল।
বেশ অনেকদিন পর অয়ন-জিমি সিরিজের আরও একটি বই পড়া হলো। যদিও মূল রহস্যের প্রায় সবগুলো আঙ্গিকই ধরে ফেলেছিলাম আগেভাগে, তবুও পড়ে ভালো লেগেছে। কিশোর উপন্যাস হিসাবে তো অবশ্যই চমৎকার। কাহিনীর শুরুটা হয়েছে ঢিমেতালে, তারপর এক রহস্যময় কিংবদন্তীকে ঘিরে চলেছে তদন্ত। তদন্তের আঙ্গিকে বিশেষ বাড়াবাড়ি নেই। তবে বৃদ্ধ টেলরের অতি-ভয় কিছুটা বিরক্ত করেছে। যদিও এই ভয়ের পেছনে যথেষ্ট যৌক্তিকতা রাখার চেষ্টা করেছেন লেখক। এছাড়া নেভিল চরিত্রটির খুব বেশি ভূমিকা রাখা হয়নি বইতে, আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়তো তার কাঁধেও ফেলা যেতে পারতো।
খুদে চরিত্র হিসাবে পলিকে বেশ ভালো লেগেছে। আর বরাবরের মতোই আমোদিত করেছে অয়ন ও জিমির কিছু কিছু খুনসুটি।
সেবার বাইরে অয়ন-জিমি সিরিজের প্রথম উপন্যাস এটাই। সেই অর্থেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সিরিজের আরও কয়েকটা বই এই মুহূর্তে সংগ্রহে আছে, আশাকরি একে একে সবগুলো পড়ে ফেলব।
ইসমাইল আরমান স্যারের লেখা অয়ন জিমি সিরিজ বরাবরের মতোই ভালো লেগেছে আমার। ঝরঝরে সুন্দর একটা বই। তারপর উপর রহস্য, উত্তেজনা। এক বসায় শেষ করার মতো একটা বই। শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মূল অপরাধীকে আন্দাজ করা কঠিন। বইটা উপহার পেয়েছি। যাইহোক সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে।