Jump to ratings and reviews
Rate this book

সুপুরিবনের সারি

Rate this book
সদ্য-সদ্য দেশ ভাগ হয়েছে তখন। একজন কিশোর তার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে কীভাবে অনেকে ছেড়ে আসতে চাইছে তাদের চিরদিনের দেশ। আর সেইসঙ্গে পিছনে পড়ে থাকছে হারিয়েযাওয়া কত প্রিয়জন, কত প্রিয়ছবি। এইসব নিয়ে লেখা নতুন এই কিশোর-উপন্যাস। লেখকের 'সকালবেলার আলো' বইটির পরবর্তী অংশ।

92 pages, Hardcover

First published December 1, 1990

7 people are currently reading
134 people want to read

About the author

Shankha Ghosh

130 books63 followers
Shankha Ghosh (Bengali: শঙ্খ ঘোষ; b. 1932) is a Bengali Indian poet and critic. Ghosh was born on February 6, 1932 at Chandpur of what is now Bangladesh. Shankha Ghosh is regarded one of the most prolific writers in Bengali. He got his undergraduate degree in Arts in Bengali language from the Presidency College, Kolkata in 1951 and subsequently his Master's degree from the University of Calcutta. He taught at many educational institutes, including Bangabasi College, City College (all affiliated to the University of Calcutta) and at Jadavpur University, all in Kolkata. He retired from Jadavpur University in 1992. He joined the Iowa Writer's Workshop, USA in 1960's. He has also taught Delhi University, the Indian Institute of Advanced Studies at Shimla, and at the Visva-Bharati University.
Awards:
Narsingh Das Puraskar (1977, for Muurkha baro, saamaajik nay)
Sahitya Akademi Award (1977, for Baabarer praarthanaa)
Rabindra-Puraskar (1989, for Dhum legechhe hrit kamale)
Saraswati Samman for his anthology Gandharba Kabitaguccha[1]
Sahitya Akademi Award for translation (1999, for translation of raktakalyaan)
Desikottam by Visva-Bharati (1999)
Padma Bhushan by the Government of India (2011)

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
39 (57%)
4 stars
25 (36%)
3 stars
4 (5%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 18 of 18 reviews
Profile Image for Chandreyee Momo.
219 reviews30 followers
July 12, 2023
এই বইটা বড্ড আদর। স্মৃতির পাতায় ডুব দেয়ার মত সুন্দর। পূজার সময়ের কথাগুলো পড়ার সময় নেজেও খুব নস্টালজিক ফিল করছিলাম। বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাদের সব সুন্দর ব্যাপারগুলো কেমন হয়ে যায়। দুঃখ হয়।
এই বইটা মূলত তিনটা উপন্যাসের মাঝের অংশ। বাকি দুটোও পড়তে হবে খুব দ্রুত।
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews354 followers
July 13, 2023
সময়ে সব ম্লান হয়ে আসে। ছেলেবেলার মতো মামাবাড়ি যাবার আনন্দ-ও আর এক থাকে না, আর 'নীলু'র মতো যাদের জীবনে আগেভাগেই ছায়া ঘনিয়েছে সময়ের পট-পরিবর্তনে, তাদের সরল চোখে এই পালটে যাওয়া দেখতে বড় বিষাদের, মন খারাপের।

সময়টা সবে দেশ ভাগের পরপর। ভারত স্বাধীন হয়েছে। পূজোর দাদুবাড়ি চলেছে নীলু। এবারের যাওয়া প্রতিবারের থেকে খুব মলিন। আর সব ভাইবোনেরা এবার দাদুবাড়ি যাবে না। দেশেই নাকি নেই ওরা! নতুন জন্মের সাথে দেশ বেড়া টেনে দিয়েছে নিজের মাঝে, এখন সব 'আমাদের দেশ' আর 'তোদের দেশ'। এবারের পূজোও হচ্ছে ছোট করে। প্রতিমায় সেনাপতি কার্তিক হবে নাকি বাবু কার্তিক, সেসব নিয়ে আবদার করার যো নেই। পাশের বাড়ির হারুন রোজ আসতো পূজোয়, সপ্তমী থেকে দশমী একসাথে কাটতো। এবার হারুণের পাত্তা নেই। হারুনের বাড়ির বড়দের মুখেই শুনেছিল, জিন্না সাহেব নাকি আশ্বাস দিয়েছেন, "একদিন এই সব জমি, বাড়ি আমাদের হবে"। আমরা, ওরা- কারা এসব? এতদিন তো এমন ছিল না?

বইটা আমি পড়ছিলাম মামাবাড়ির উঠানে বসে। ভোর হয়ছে, ঘরের চালার ওপর দিয়ে রোদ পড়েছে সামনে টিনের বেড়ার গায়ে। বেড়া। সামনে, ডানে। দুইবার ভাগ হয়ে গেছে ছোট্ট উঠানটা, আমার শৈশবের স্মৃতিতে যেটা অখন্ড ছিল। দুই বাড়ির ছেলেমেয়ে পূর্ণিমার রাতে বউছি খেলেছি উঠোনজুড়ে। ধান মাড়াই আর খড় শুকানোর কাজ হতো যখন পুরো উঠানে, এ-মাথা ও-মাথা গড়াগড়ি দিয়ে গা লাল করে ফেলতাম ছোটরা। দুই বাড়ির মাঝে প্রথম বেড়া উঠলো, এক উঠোনে দাঁড়িয়ে মুখ দেখা বন্ধ। সময়ে, সেই এক ঘরেও ভাগ হলো। ছোটবেলায় যা ছিল বিচরণের সীমা, এখন সে উঠানে দাঁড়ালে মুখের ওপর বেড়া দেখতে পাই। মানুষ কি ভাগজোক ছাড়া থাকতে পারে না? হোক সেটা একটাই দেশ দু'বার ভাগ করা, অথবা এক উঠানের তিন ভাগ।

সারল্য নিয়ে এসবেই তাকিয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। নীলু'র চোখে তার মায়া-মাখা গ্রাম, প্রতি পূজোর স্মৃতি, পাড়ার ছেলেরা বদলে যাবার ছবি দেখে, নিজেদের মনেও কত সব ছেড়ে আসার বেদনা জেগেছে। শৈশবে আর ফেরা যাবে না তো, নেই পথ নেই হারিয়ে গেছে সে দেশ।
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
November 24, 2021
সুখের দুটি পায়রা এসে বসছে জুড়ে একটি ডাল
আমার সেথা কীই-বা অধিকার!
জাগাই কেন বৃথাই সেথা মৃত আশার ব্যর্থ তাল মনোমাঝেই থাক্ সে হাহাকার



'সকালবেলার আলো'র কিছুদিন পরের এই গল্প।
এটি হলো স্বাধীনতার পরের গল্প, যেখানে দু-টুকরো হয়েছে দেশ।।
"সকালবেলার আলো" গল্পের নীলুকে পাব আমরা এখানে।। নীলু পুজোর ছুটির সময়ে চললো মামাবাড়িতে পুজো করবে বলে।। কিন্তু এইবার সেই আমেজ নেই। কারণ এইবার তাদের সাথে যাচ্ছে না ছোটোমামা, মেজোমামা। অর্থাৎ অনেকের সাথে কাটানো পুজোর আমেজটা ঠিক নেই। যার কারণে নীলুর বেশ মন খারাপ।।
কিন্তু এখানেও নীলুর ছোটে বেড়ানোর কমতি ছিলো না।।
সে ঘুরে বেড়াতে থাকে এদিকে থেকে সেদিকে, নানার সাথে বাজার করতে যায় এবং আরো কত কি....
কিন্তু বাড়ির সকলে বলাবলি করছে তারা নাকি কলকাতায় চলে যাবে, কারণ দেশ ভাগ হয়েছে এবং এই দেশে যুদ্ধ শুরু হওয়ার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এবং পাকিস্তানিরা দখল করে রেখেছে দেশটি।। তা নিয়েও নীলুর দুশ্চিন্তার সীমা নেই।। সে ভাবে, তাহলে কি আর আসা হবে না এই গ্রামে?? এই গ্রামের স্নিগ্ধ, সবুজ গন্ধ কি আর পাওয়া হবে না??

প্রথম বইটির চেয়ে এই বইটিতে লেখা বেশ পরিপক্ব মনে হলো। বেশ ভাল লাগলো পড়তে।। অনেক অংশ ছিলো যেগুলো ভাল লাগার কারণে বারবার পড়েছি।। এমন বইগুলো সবসময় আমাকে একটা ভাল অনুভূতি দেয়।। পড়তে পড়তে একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।
আর শঙ্খ ঘোষ যেন কিছু সময়ের জন্য আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে গেলেন 🌻🌻🌻


সকালবেলার ওই পাখি যে
উড়তে আমায় ডাকছে নিজে
সেই কথাটা বলব আমি কাকে!
এসব তো কেউ বুঝবে না গো
সবাই আমায় বলবে পাগল
গোপন কথা গোপনে তাই থাকে
Profile Image for Chinmoy Biswas.
175 reviews64 followers
May 9, 2022
ছোট্ট নীলু মামা বাড়ি যাচ্ছে পূজোয়। প্রতি বছর যায় তারা। খুব হুল্লোড় হয়,পূজা মানেই তো আনন্দ। তাই এবারো নীলু খুব আশা নিয়ে বসে আছে, আগের সেই হুল্লোড় আরেকবার ফিরে পাওয়ার জন্য। কিন্তু বাড়ি গিয়ে দেখে তার ভাই বোনরা কেউ আসে নি। শুধু মামা মামি এসেছে। ফুলোমামি ও কেমন যেন অদ্ভুত আচরণ করছে। এই নিয়ে সবার মন খারাপ। এবার নীলু প্রথম আঘাত পেল ভাই বোনদের না পেয়ে,দ্বিতীয় আঘাত টা দিল বন্ধু হারুন। কারণ নীলু মামা বাড়ি গেলে প্রতিবার হারুন দেখা করতে আসে,দুই জন মিলে গল্প গুজব মজা করে। কিন্তু এবার একটা বারের জন্য হারুন এলো না নীলুদের বাড়িতে।

ভাই বোন কেউ না থাকায় পূজোয় আগের আমেজ নীলু পাচ্ছে না। চারপাশ টা কেমন তার অচেনা লাগছিল। পরিচিত অনেক মানুষ নেই। যারা আছে তারা সবাই আতঙ্কে অস্থির হয়ে আছে। বড়রা সবাই আলোচনা করছে দেশ ভাগ হয়ে গেছে!


শ্রদ্ধেয় লেখক শঙ্খ ঘোষের কিশোর সিরিজের তৃতীয় বই এটা। প্রথম দুইটা মত এটাও অসাধারণ ছিল। তবে কেমন যেন একটা বিষাদ মাখা গল্পটা। দেশ ভাগের বিষণ্ণ একটা গল্প। যে দেশ কে আমি হাতের তালুর মত চিনি, জানি সে দেশে আমি আগন্তুক! কি অদ্ভুত! কি নির্মম!
Profile Image for জাহিদ হোসেন.
Author 20 books476 followers
December 15, 2023
শঙ্খ ঘোষের মোহনীয় গদ্যে সময়টা চমৎকার কাটলো।

বইটার সন্ধান পাই ফেসবুক মারফত। পরবর্তীতে সিদ্দিক ভাইও সেদিন এটা সাজেস্ট করলেন।

স্টীমারে করে নীলুদের গ্রামে যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে বই শুরু। স্টীমারের পর নৌকা। নৌকায় পরিচিত মাঝি। নৌকা চলছে। জলের আওয়াজ। গুণটানা। সাঁতার শেখার স্মৃতি মনে পড়ে নীলুর। হারুন ওকে সাঁতার শিখিয়েছিল। ভাত রান্না হচ্ছে নৌকায়। গন্ধ ভেসে আসে। নীলুর খিদে পায় খুব।

এ সবকিছু চোখের সামনে যেন দেখতে পাচ্ছিলাম। মোক্ষম লাগছিল।

গ্রামের বর্ণনা ছেলেবেলার স্মৃতিও উসকে দিচ্ছিল বারবার।

পুরনো সেই গ্রামটাকে আমি আর খুঁজে পাই না। সেই গ্রাম হারিয়ে গেছে। সেই সময় নেই, সেই পরিবেশ-পরিস্থিতি নেই। মানুষদেরও অনেকেই নেই। তাহলে গ্রাম কীভাবে থাকে? সবকিছু মিলিয়েই তো গ্রাম, তাই না?

বই শেষ হয় নীলুদের ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। তাদের আর কখনোই গ্রামে আসা হবে না।

এই গ্রাম আর তাদের নেই। এটা অন্য কারো। অন্য মানুষের।
Profile Image for Ratika Khandoker.
301 reviews33 followers
October 24, 2022
বৃষ্টির এই স্যাঁতস্যাঁতে দিনটা আরো বেশি বিষাদমাখা হয়ে গেলো।
Profile Image for শাহ্‌ পরাণ.
259 reviews74 followers
March 26, 2024
প্রথম বই সকালবেলার আলোর মতই বিষাদমাখা সুন্দর। আমার নিজেরও যে কতগুলো স্মৃতি অনেকদিন পর বুকের ভেতর একটা হাহাকার তৈরি করে গেলো এই বইটা পড়তে গিয়ে, এই হাহাকার আমি রাখবো কোথায়! এই হাহাকার আমি রাখবো কোথায়!
Profile Image for Adham Alif.
335 reviews81 followers
June 4, 2023
৪.৫/৫
মামাবাড়িতে ছুটি কাটাতে তো কমবেশি সবারই যাওয়া হয়েছে। বড়ই আনন্দ মধুর সেসব দিন। নীলুর মামাবাড়ি ও সেখানকার বিভিন্ন চরিত্রের গল্প থাকছে এ পর্বে। পাতা বৃদ্ধির সঙ্গে আমরা আবিষ্কার করি চরিত্রগুলোর মায়ায় আছন্ন হয়ে পড়ছি। তীব্র সেই মায়ার ফলাফল হিসেবে আসে বিষণ্ণতা। বিষণ্ণ সুন্দর একটা বই।
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
523 reviews189 followers
July 26, 2024
"নিজের দেশ কি রাতারাতি অন্যের দেশ হয়ে যায়  না কি?হতে পারে কখনো? "
Profile Image for Munem Shahriar Borno.
202 reviews11 followers
February 17, 2025
একটানে পড়ে শেষ করলাম! যেমন-ই শঙ্খ ঘোষের গদ্য তেমন-ই মিষ্টি একটা গল্প; যতক্ষণ পড়ছিলাম, নিজের ছেলেবেলা-গ্রাম-মাঠ এগুলি মনে পড়ছিলো।

'কিশোরকথা' সিরিজের দ্বিতীয় বই এটা। প্রথমটায় (সকালবেলার আলো) কিশোর বয়সের দুরন্তপনার গল্প ছিলো, মানে একটা পুরোদস্তুর কিশোর উপন্যাস। এবার একই গল্পে এসেছে দেশভাগ আর প্রিয়জন বিয়োগ এর সুর। আমার কাছে এই গল্পটা সব দিক দিয়েই সিরিজের আগের গল্পটাকেও ছাঁপিয়ে গ্যাছে।
Profile Image for Akhi Asma.
230 reviews464 followers
October 1, 2021
তিনটার মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় মনেহয় এইটা।
92 reviews5 followers
May 18, 2025
দেশ ভাগ, স্বাধীনতা!!! শব্দ গুলো যেন অনেকটা ভারি, মাথার মধ্যে মস্ত কিছু একটা ঘটে যায়। সত্যিই তো স্বাধীনতা। অবশেষে পাওয়া গেল স্বাধীনতা। কিন্তু এ কেমন স্বাধীনতা? এ যে নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে হবে। এমন স্বাধীনতা কী কেউ চেয়েছে কখনো? নাকি কারো কাম্য ছিল এমন স্বাধীনতা ? দেশ যে মা, দেশের মাটি যে আত্মা তা কী কখনো পর হয়? হতে পারে কখনো? মাকে কী ভাগ করা যায়? সন্তানদের থেকে আলাদা করা যায় কী কোনো মাকে।

সবচেয়ে মন খারাপ করা লাইন হয়তো ❝ অদ্ভুত কথা। নিজের দেশটা কী রাতারাতি অন্যের দেশ হয়ে যায় নাকি? হতে পারে কখনো? ❞

এখনকার নতুন প্রজন্মের কাছে যেটা কেবল সমাজ বইতে লেখা, সাধারণ জ্ঞান পড়তে যেটা লাগে, তাও পরীক্ষা না হলে আমরা যার ধারে কাছে ঘেঁষতে চাই না ঠিক সেই জিনিসটাই কত যে আবেগের ছিল, কত ত্যাগের, মহিমার ছিল তা কী আমরা কখনো উপলব্ধি করেছি কখনো? নাকি করার চেষ্টা করেছি কখনো?

একই সাথে মন ভালো এবং মন খারাপ হওয়ার গল্প এটা। প্রতিটা বাঙালি পাঠকের উচিত এই বইটা পড়া। এত সুন্দর বিষন্ন মন খারাপ করা লেখা!!!!!
Profile Image for Md Al Amin.
5 reviews
January 10, 2024
সদ্য দেশ ভাগ হয়েছে তখন।একজন কিশোর তার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে কিভাবে অনেকে ছেড়ে আসতে চাইছে তাদের চিরদিনের দেশ।আর সেইসঙ্গে পিছনে পড়া থাকছে হারিয়ে যাওয়া কত প্রিয়জন,কত প্রিয়ছবি।

কিছু বই পড়লে মেলাংকলি ফিলিংস হয়,নস্টালজিয়া জেঁকে ধরে এটা তেমন একটা বই।
Profile Image for Fariha Tasnim Shatabdy.
7 reviews3 followers
May 29, 2023
শঙ্খ ঘোষের আত্মজীবনীমূলক তিনটি উপন্যাস - "সকালবেলার আলো", "সুপুরিবনের সারি" আর "শহরপথের ধুলো" , দেশভাগ নিয়ে লেখা তিনটি অনবদ্য আখ্যান। দুর্ভাগ্যবশত "সকালবেলার আলো" এখনো পড়া হয়নি, শিগগির পড়ে ফেলবো। সুপুরিবনের সারি, এবং শহরপথের ধুলো বইদুটো মূলত দেশভাগের পরের গল্প বলে, যখন একটি ভূখণ্ড ভেঙে দুই টুকরো দেশ হয়ে গেছে। "সুপুরিবনের সারি" এর গল্পের পরের গল্প নিয়ে লেখা "শহরপথের ধুলো"। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে দুইটা বইয়ের মাঝে "শহরপথের ধুলো" বেশি ভালো লেগেছে।

"সুপুরিবনের সারি" - উপন্যাসটিতে স্পষ্টভাবে দেশভাগের সময়ের কথা উঠে এসেছে। আরেকটু গুছিয়ে বললে, এই উপন্যাসে দেশভাগের প্রত্যক্ষ আর সরাসরি প্রভাবের অল্প - বিস্তর উল্লেখ হয়েছে। নীলু এই আখ্যানে কিশোর, যার মন তখনও বিশুদ্ধ, যার রাজনীতির কুলোষ বুঝে ওঠার মতো পরিপক্বতা নেই। তবে ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ নিয়ে তার আশেপাশের মানুষের মনস্তাত্বিক যে পরিবর্তন, তা সে প্রাণপণে বুঝে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পূজো উপলক্ষে মামা বাড়ি গিয়ে তার পূজোর আমেজ না পাওয়া, আপনজনদের অনুপস্থিতি, ছেলেবেলার বন্ধু হারুনের প্রতি অভিমান, নিজের দেশকে আর নিজের দেশ বলতে না পারার অনূভুতি, ফুলমামির প্রতি মায়া, জন্মভূমি চিরকালের জন্য ছেড়ে যাওয়ার মতো সম্ভাবনার উঁকি - সবকিছু মিলিয়ে এই উপন্যাসের আগাগোড়া বিষাদে মোড়ানো।

উপন্যাসটি ইতিহাসের ট্রাজেডীর দারুণ সাক্ষী। কিশোরউপন্যাস হলেও এই উপন্যাস লেখকের চোখের লেন্সে ইতিহাসকে বেশ পরিপক্বভাবেই দেখা যায়। সুপাঠ্য বই , যা সারাজীবন মগজে গেঁথে থাকবে।
Profile Image for Ankit Dey.
9 reviews
November 18, 2025
বড়ো হয়ে ওঠার পর ছেলেবেলার গল্প পড়তে এত ভালো লাগে কেন? উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় বিভূতিভূষণের 'পথের পাঁচালী' ও 'অপরাজিত' উপন্যাসদ্বয়কে।
আমার মনে হয়, বড়ো হয়ে ওঠার জন্য আমরা যেহেতু একটাই সুযোগ পাই, তাই অনেক সময়েই অনেকরকম 'বেড়ে-ওঠার অভিজ্ঞতা'-র থেকে আমরা বঞ্চিত হই। যেমন ধরুন, পার্কে হাটবার অনেকগুলি রাস্তা। কিন্তু ফুলগাছের পাশের রাস্তাটা ধরে হাঁটতে গেলে পুকুরের ধারে হাঁটা যাবে না। আবার পুকুরের ধারের রাস্তাটা ধরলে দোলনায় চড়া হবে না।
আমরাও হয়ত আরো অনেক অন্যভাবে উদযাপন করতে চেয়েছি আমাদের শিশুবেলাকে; পারিনি। হয়ত এই গল্পগুলি আমাদের সেই ইচ্ছেটা, কিছুটা হলেও, পূরণ করে।

ঠিক সেভাবেই, স্বাধীনতার একেবারে কাছাকাছি সময়ের এক শৈশব ও বেড়ে ওঠার জীবন আমরা যাপন করি নীলুর চোখে।
ঘুম ভাঙার পর, যেমন ধীরে ধীরে চারিপাশের আলো, শব্দ আমাদের ঘিরে ফেলে, তেমনভাবেই এক শান্ত, মিঠেকড়া শৈশব থেকে শব্দময় জগতের দিকে এগিয়ে যায় সে। সেই জগৎ বড়ো বেশি বাস্তব, বড়ো বেশি নিঠুর।

ক্ষুদ্র আকার সত্ত্বেও, প্রত্যেকটি বই মনে গভীর দাগ কেটে যায়। বড্ড বুকে বাজে, যখন নীলুর দাদু বলে—

অদ্ভুত কথা। নিজের দেশটা কি রাতারাতি অন্যের দেশ হয়ে যায় না কি? হতে পারে কখনো?


বলিস্-যে তোরা, খুকি, ভাব্ একবার, ওই কাছারি ঘরটার পিছনে সুপুরিগাছের সারি, একটা একটা করে ওর সবকটা আমার নিজের হাতে লাগানো, সেই কোন্ আদ্যিকালে, তোদের তখন জন্মও হয়নি। একটু একটু করে ওরা বড় হল আমার চোখের সামনে। খ��লের ধার থেকে দালানের সিঁড়ি পর্যন্ত গোটা পথটার প্রত্যেকটা ঘাস খুঁটে খুঁটে পরিষ্কার করি রোজ ভোরবেলা, দেখিস তো সব। ওই আম কাঁঠাল তেঁতুলের গাছগুলি, দিনান্তে একবার ওদের গায়ে হাত না রাখলে ভালোও লাগে না আমার। আর ওই-যে মণ্ডপের পাশ দিয়ে পুকুরের পিছন দিকটা— তোরা তো ওদিকে যাস্ও না বেশি - ওইখানে পড়ে আছে বাবার মঠ, ঠাকুরদার মঠ, এখনও তোর মা ওখানে নিত্য গিয়ে পিদিম জ্বালিয়ে আসে। এইসব ছেড়েছুড়ে দিয়ে, বল্ তো আমি যাই কোথায়, যাই কেমন করে —


পড়ুন। অবশ্যই পড়ুন।
Profile Image for Nishat.
60 reviews6 followers
Read
December 30, 2016
দেশ ভেঙে যাচ্ছে, দুভাগ হয়ে যাচ্ছে! সেই বিষয়ে এক পনের বছরের কিশোর কি ভাবছে, তার মনোজগতের প্রভাব নিয়েই যেন এই বই।

শঙ্খ ঘোষের ভাষারীতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সাথে প্লাস পয়েন্ট হিসেবে থাকে অসাধারণ সব কবিতা। বরিশালের হুলার হাট কিংবা সেদিকের গ্রামের বিবরণ। পূজোর বিবরণ কিংবা হাজার বছরের গ্রামীণ সংস্কৃতি, সবকিছু মিলিয়ে যেন চোখের সামনে ভাসছে। শুধু তাই না, কথোপকথনের ভাষাগুলোও যেন ছবির মতোন। যেখানে আঞ্চলিক ভাষার দরকার সেখানে তারই ব্যবহার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে বহুদিন ধরে গ্রামের বাড়িতে থাকা দাদু দিদিমার কথায় আঞ্চলিকতা না দেখে একটু অবাক হয়েছি। সবশেষ লেখক ফুলমামীর হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে ‘শেষ হইয়াও হইলো না শেষ”-এর ফ্লেভার রেখেছেন।

একটা কবিতা দিয়ে নায়ক নীলুর অপূর্ণতাকে ব্যাখ্যা করা যায়:

কেবলই করে ভয়
এত যে লোক এত যে জন
আমরা কি কেউ নয়।
মনে হচ্ছে নীলুর দেশ কিংবা দেশের মানুষ সবই আছে, কিন্তু কেউ তার নয়।
Profile Image for Md. Mahmudul Hasan.
36 reviews
January 2, 2020
দেশ ভাগ হয়ে যাচ্ছে। সেই সময়ের এক অবুঝ কিশোরের দৃষ্টিতে দেশভাগের ফলে সৃষ্ট সমস্যা এবং মানুষের যে এক মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন তারই প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায় এই উপন্যাসে। ১৯৪৭ সালের সময়কার মানুষের চালচলনের এক অনবদ্য ছাপ পাওয়া যায়। এবং সময়ের প্রেক্ষিতে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে যে বৈরি সম্পর্ক তার আভাস দেখা যায়।
Displaying 1 - 18 of 18 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.