Jump to ratings and reviews
Rate this book

লৌহকপাট

Rate this book
চাকরির কারণে জেল জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে লেখকের। কয়েদীদের কাছ থেকে শুনেছেন তাদের অপরাধের কাহিনী। সেসব কাহিনীর আলোকে লেখা 'লৌহকপাট'। প্রথম তিনখন্ড চাকরিজীবনে প্রকাশিত। শেষখন্ডটি অবসরের পর প্রকাশিত হয়।

519 pages, Hardcover

First published September 1, 1968

16 people are currently reading
277 people want to read

About the author

Jarasandha

24 books7 followers
জরাসন্ধ ছদ্মনামের আড়ালে আসল মানুষটি হলেন চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (১৯০২-১৯৮১)। অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করে দার্জিলিং-এ ডেপুটি জেলার হিসেবে কর্মজীবন সুরু করেন। তিরিশ বছর নানা জায়গায় কাজ করার পর ১৯৬০ সালে আলীপুর সেণ্ট্রাল জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

তাঁর লেখার বৃহত্তর অংশ জেলের বন্দীদের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। এছাড়া ছোটগল্প এবং ছোটদের জন্য লেখা গল্পও তার বেশ কিছু আছে। তাঁর শিশুদের জন্য নিবেদিত কিছু বই এ প্রথমদিকে তাঁর মূল নাম প্রকাশিত হয়েছিল।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
65 (63%)
4 stars
31 (30%)
3 stars
6 (5%)
2 stars
1 (<1%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 26 of 26 reviews
Profile Image for Shadin Pranto.
1,469 reviews560 followers
September 24, 2019
সেই ২০১৬ সাল পড়েছিলাম। অথচ এখনো ভালো বইয়ের কথা উঠলে 'লৌহকপাট' নামটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

বাঙালি জেলারের লেখা এমনই এক অনবদ্য উপন্যাস 'লৌহকপাট' যেখানে কোন ঘটনা সত্য, আর কোন চরিত্রটি জেলার চারুচন্দ্র চক্রবর্তীর নিজের সৃষ্টি তা বোঝা পাঠকের কম্ম নয়। মানুষের মন কতটা গভীর তার হদিস পাওয়া ভার। কিন্তু যে বা যারা অপরাধ করে জেলে গেছে কিংবা নির্দোষ ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব নিয়ে দুর্দান্ত কাজ করেছেন জরাসন্ধ। বাংলা সাহিত্যের অনেক বই নিয়েই ইদানীং আলোচনা হয়। কিন্তু 'লৌহকপাট'-এর মতো সুপাঠ্য গ্রন্থ নিয়ে সেরকম কথাবার্তা নেই।

যতি কখনো অখণ্ড অবসর পাই, তবে নিশ্চয়ই আবারো পড়ব 'লৌহকপাট'। যেখানে চারুচন্দ্র চক্রবর্তী তথা জরাসন্ধ শিখিয়েছিলেন,

' জীবনের সবচেয়ে বড় শেখা হলো সইতে শেখা। '
Profile Image for Saumen.
256 reviews
December 7, 2022
এসব বইয়ে ৫টা তারা ঠুকে দিলেই শান্তি পাওয়া যায় না। এসব বই রাখতে হয় মাথার কাছে। "তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা" এর মত করে যখনি সংসারস্রোত আপনাকে জড়িয়ে ধরবে, যখনি মনে হবে, ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর, তখনই দুয়েক ছত্র বিষরূপ মধুপান করে নেবেন এই বইয়ের। ভেবে দেখবেন, জীবন কি আসলেই এঁনাদের চেয়েও বেশি জটিল?


যখনই সাদা আর কালো দেখবেন, মানুষ আর অমানুষ দেখবেন, যখনই মনে হবে, জীবনের কিছুটা সময় শুধু এই লাইনগুলি পড়তে পড়তে দূরে তাকিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যায়, তখনি এই বইটা হাতে নিয়েন। নইলে এই বইয়ের অসম্মান হবে। জীবন সম্পর্কে, মানুষ সম্পর্কে, পাপপূণ্য সম্পর্কে নিজের ধারণা আরেকটু পোক্ত হবে, আরেকটু মানুষ হতে পারবেন।


আমার "জীবনবেদ" নামে একটা মানসিক বইকুঠুরী আছে। সেখানে শ্রীকান্ত(অখন্ড), অপুর সংসারসমগ্রের পাশে তিন নম্বর বই হিসাবে স্থান পেল লৌহকপাট।


বইটা পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, সব ছেড়েছুড়ে বিসিএস দিয়ে কারাকুঠুরীতে ঢুকে যাব নাকি? তাও যদি না পারি, পাবলিক সারভেন্ট হিসাবে এই জনস্রোতে কি মিশে যাওয়া যায় না? এমন কোন চাকরি, যেখানে পিয়ন, আর্দালি এসব সামলেও মানুষের সাথে সম্পর্কটা গড়ে নেওয়া যায়? 


ছড় বেছড় যা খুশি তাই লিখে গেলাম এই বৃহৎ বইটির সম্পর্কে, এই বইয়ে আসা হাজারখানেক চরিত্র রেখে গেলাম আপনাদের জন্য। নিজেরা পড়ে নেবেন, এবং অবশ্যই পড়বেন।


বইটায় লৌহকপাট বা জেলখানা নিমিত্তমাত্র।  আসলে বইটার মূল উপাদান মানুষ। হাজার রহস্যের মানুষ।তাদের বেশীর ভাগই অপরাধী, কিন্তু কেন? সত্যিই কি তারা সবসময় অপরাধ করেছে? যারা অপরাধ করেছে, তারা কি মনুষ্যত্ব ত্যাগ করেছে? চোখের জল, পীড়া, ভালবাসা সবই কি ত্যাগ করেছে তাদের? অপরাধী আর আমাদের ভদ্রতার সীমারেখা কতখানি?

যদি সত্যিই বলি, এই বইয়ের পরিপূর্ণ মনোজ্ঞ রিভিউ করার ক্ষমতা কারো নেই। কখনোই হবে না। মানুষ, মানবচরিত্রের কত বিচিত্র দিক যে জানলাম! সে বিচারে লৌহকপাট আক্ষরিক অর্থেই একটা মহাগ্রন্থ।
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews194 followers
June 30, 2023
ধীরে ধীরে এই মহাকাব্যিক উপন্যাসটি পড়ে শেষ করলাম আমি।
শুরু করেই এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ হয়েছিল। মনে হয়েছিল, পড়তে যাচ্ছি একটি অত্যন্ত ভালো বই। আমার সে অনুভূতি মিথ্যে হয় নি।
গারদের আড়ালে বসে থাকা অপরাধীদের যে দরদী চোখ দিয়ে দেখেছেন লেখক তা তিনি প্রকাশও করেছেন সাবলীল ভাষায়৷ তাই পড়তে গিয়ে কোন একঘেয়েমি বা বিরক্তিবোধ জাগে না৷
৫১৯ পাতার বইটিতে এত এত মানুষের গল্প রয়েছে কিন্তু প্রতিটা গল্পই ভীষণ ব্যঞ্জনাময়৷
মানবমনের সমস্ত গলিঘুঁজি ঢুঁড়ে আলোর সন্ধান করেছেন যেন লেখক৷
ধনরাজ তামাং এর কাহিনী যে জরাসন্ধের, তা আমি আগে জানতাম না। জানতাম এটুকুই যে উত্তমকুমারের একটু অন্য ধারার সার্থক চলচ্চিত্র একটি।
এই বইতে যখন ধনরাজ তামাং এর গল্প পড়ি, তখনো বোকার মতো ভেবে চলেছি কাকতালীয়ভাবে বোধহয় নামটা মিলে গেল।
একই সময়ে পড়া তরুণকুমারের আমার দাদা উত্তমকুমার পড়তে গিয়ে ভুলটা ভাঙে৷
ধনরাজ তামাং, বদর উদ্দিন মুন্সী, ব্রহ্মচারী আর এদের জীবনের গল্পগুলো কোথাও যেন একটা ধাক্কা দেয়।
আমাদের চারপাশে আমরা প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সাথে আলাপ করি, উঠি-বসি। হয়তো শোনা যায় হঠাৎ, একজন চেনা মানুষের অপরাধের কথা। আমরা শিউরে উঠে ভাবি, এতদিন একে এই চিনলাম! অথচ তলিয়ে ভাবতে যাই না ঘটনার পেছনের ঘটনার কথা।
লৌহকপাট এমন নানা মানুষের গল্প বলে যায় আর আমাদের বিচিত্র মনস্তাত্ত্বিক এক জগতের সন্ধান দেয়। আমরা দেখতে পাই বিপ্লবীদের অদ্ভুত দোলাচল বা সম্ভ্রান্ত মানুষদের কদর্যতম দিকগুলো।
ভূতনাথ দারোগার মতো একজন দুর্ধর্ষ জাঁদরেল দারোগার ভেতরেও যে স্নেহের জন্য একটা আকাঙ্ক্ষা রয়ে যায়, তা কে ভাবতে পারে?
অমন দুর্দান্ত মানুষটি নিজ পুত্রবধূর কাছে কিন্তু শিশু।
কেবল জেলের ভেতরকার মানুষগুলো নয়, জেল এবং তার সাথে জড়িত নানা মানুষের গল্প ও তাই লৌহকপাট। আর জেলে যায়ই বা কারা?
সেই আমরা বা আমাদের আশেপাশের মধ্য থেকেই তো কেউ! কেন তারা আলাদা হয়ে যায় সমাজের মূল স্রোত থেকে তা হয়তো আমরা বুঝতে চেষ্টা করি না।
এমন নয় যে সমস্ত অপরাধীর অপরাধের পেছনেই রয়েছে মর্মান্তিক কোন করুণগাঁথা, কেউ কেউ নিতান্তই অপরাধী, তা নিয়ে হয়তো তাদের অনুশোচনাও নেই। কিন্তু লেখক সেদিকে তাকান না, তাকান আলোর দিকে।
বারবার গুরুত্ব দেন শুভবোধের দিকে।
লৌহকপাট এখানেই খুব আলাদা৷
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
April 1, 2021
এই বইটা এমনই একটা বই যেটায় পাঁচ তারকা দিয়েও শান্তি পাওয়া যায়না। মনটা খচখচ করে। আর করবে নাই-বা কেন? যে অনবদ্য,অবিশ্বাস্য আখ্যান শুনিয়েছেন চারুচন্দ্র চক্রবর্তী অর্থাৎ 'জরাসন্ধ', তারপর পাঁচ তারকা আসলেই কম হয়ে যায়।
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews305 followers
August 2, 2020
কিছু বই থাকে যেগুলোতে ফাইভ স্টার দিয়েও শান্তি হয় না। আরো দু'চারটা স্টার বেশি দিতে ইচ্ছে করে।
Profile Image for Momin আহমেদ .
112 reviews49 followers
December 22, 2020
বই এর ব্যাপারে কিছু নিজে থেকে আমি বলতে পারি না।নিজের অনুভূতি গুলো ভাষায় প্রকাশ করার সক্ষমতা আমার নেই। তবে এই বই এর লেখক ই তার বই এর সমালোচকদের কিছু কথা বই এর মধ্যে লিখেছেন।আমি সেগুলোই এখানে তুলে দিলাম...

"রাস্তার মোড়ে যখন চোর ধরা পড়ে, তার কপালে জোটে পাইকারী মার। সত্যি চোর কিনা, কী চুরি করল, সেটুকুও কেউ ভেবে দেখে না। সেই লোকটাই যখন জেলে যায়, তাকে দেখে লোকে আহা-উহু করে, তখন সে কয়েদী বন্দী। বন্দীর জন্য়ে মানুষের কত দরদ, কত চোখের জল! তার কারণ বুঝি। তারা যে কী ভয়ঙ্কর চীজ, সাধারণ লোকে জানে না। কিন্তু আপনি? আপনি তো জানেন, কতজনের কত সর্বনাশ করে, তা-ও আপনি দেখেছেন নিশ্চয়। 'জেলখানার ছেলে' বলে যে একটা আলাদা জাত আছে, তা কি আপনি শোনেন নি? তাদের ছ��ঁয়াচ পাছে নিজেদের ছেলেপিলের গায়ে লাগে, আশেপাশের ভদ্রলোকেরা সেই ভয়ে সজাগ, তাও আপনার চোখে না পড়বার কথা নয়। কিন্তু কেন তারা 'মন্দ' ছাপ মেখে গোড়া থেকি 'মন্দের' পথ ধরে, সে খবরটা বাইরের লোকে না জানতে পারে, আপনিও কি জানবার ভান করছেন? তা যদি না হবে, সেই সত্যি কথাটা স্পষ্ট ভাষায় প্রকাশ করবার বাধা কোথায়? হয়তো সে সাহস আপনার নেই। কিংবা হয়তো মনে করছেন তাতে করে বাহবা পাবার সুবিধা নেই। তাই জেলখানারদাকা-ডাকাত, গুন্ডা-বদমাশের কল্পিত দুঃখের বানানো কাহিনী দিয়ে আসর মাত করছেন, তারই হাতার মধ্যে বসে শুধু সেই কারণেই যারা মানুষ হবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হল, সেই হতভাগাদের ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গেছেন।"(পৃষ্ঠা ৪৭৪-৪৭৫)

"গোড়াতেই বলে রাখি, আপনার লেখার সাহিত্যিক গুণাগুণ সম্বন্ধে আমার কিছু বলবার নেই। সাহিত্য আমি বুঝি না, তা নিয়ে মাথা ঘামাবারও প্রয়োজন বোধ করি না। আমার ইন্টারেস্ট আপনার বিশয়বস্তু,-ক্রিমিন্যাল মাইন্ড-আপনি যাকে কবিত্ব করে বলেছেন, 'আপরাধী মানুষের মানস-লোক'। দুঃখের সঙ্গে বলছি, সেখানকার রহস্যোদ্ঘাটন করতে গিয়ে আপনি দার্শনিক স্বচ্ছ দৃষ্টির পরিচয় দিতে পারেন নি, সাহিত্যিক ভাবালুতার আশ্রয় নিয়েছেন। তাই যত কয়েদী আপনি আমদানি করেছেন, কোনোটাকেই ক্রিমিন্যাল বলে চেনা যাচ্ছে না, সবাই এক একটি রোমান্টিক হিরো কিংবা হিরোইন।
"খুনি মাত্রেই মহানুভব, ডাকাত মাত্রেই হৃদয়বান। আপনার আয়রন-গেট-এর অন্তরালে একটাও আয়রন-হার্টেড অমানুষ খুঁজে পেলাম না, সব কটাই গোল্ডেন-হার্টেড সোনা হয়ে গেছে। আমি ভাবছি, কী আশ্চর্য উপাদান আপনার হাতে ছিল। আপনি সেগুলোকে সত্যানুসন্ধানের কাজে না লাগিয়ে টিয়ার-গ্যাস এর মতো ব্যবহার করেছেন। যার ফলে আপনার ভাবপ্রবন পাঠক-পাঠিকার চক্ষুযুগল থেকে প্রচুর অশ্রু-পতন ঘটেছে, আর কোনো কাজ হয় নি। আমার মনে হয়, ঐটাই আপনার উদ্দেশ্য ছিল। তা না হলে কেমন করে বিশ্বাস করি, এতদিন ধরে এত জেল ঘুরে এমন একটা অপরাধীও আপনি দেখতে পেলেন না, যার হৃদয় বলে কোনো বস্তু নেই? হয়তো দেখেছিলেন কিন্তু তার কথা বলতে চান নি, কিংবা যাদের কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে ঐ পদার্থটি আপনি বসিয়ে দিয়েছেন, যে যা নয় তার উপর সেটি আরোপ করেছেন, প্রকৃতিকে বিকৃত করেছেন, সাহিত্যের স্বার্থে সত্যকে বিসর্জন দিয়েছেন।
"কিংবা এও হতে পারে, জেলে বসে আপনার চারদিকে যে লোকগুলোকে বিচরণ করতে দেখেছেন, তারা তাদের আসল চেহারাটা আপনাকে দেখতে দেয় নি। কেউ কেউ সামনে এসে মুখ খুললেও মুখোশ খোলে নি। আপনি খোলসকে আসল বলে ভুল করেছেন, খোসাকে মনে করেছেন শাঁস।" (পৃষ্ঠা ৫০২-৫০৩)

শুধু সমালোচকদের কথা বললে লেখকের প্রতি অন্যায় হয়ে যাবে। লেখকের ও কিছু উত্তর তুলে দিলাম এবার...

"আমার বিরুদ্ধে এই পত্রলেখকের যে অভিযোগ, আমিও তার প্রতিবাদ করছি না। যে রাজ্যে আমি দীর্ঘজীবন কাটিয়ে এলাম, সেখানে 'পিশাচে'র অভাব নেই, 'পাপের মূর্তি'-ও কম দেখি নি। তবু মনে হয়েছে, সেইটাই সবটুকু নয়, তার অন্তরালে আরও কিছু আছে। কারো কারো বেলায় সেই 'আরও কিছু'-টাই আমার চোখে ভাস্বর হয়ে উঠেছে।"(পৃষ্ঠা ৫১৯)
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
June 10, 2020
ও ভাই! কী একখান জিনিস পড়ে শেষ করলাম! অনবদ্য!
এ যাত্রায় একটাই আফসোস থেকে যাবে দ্বিতীয় খন্ডের ২৩৯ থেকে ২৪৪-এই ছয়খানা পেজের আফসোস :/ পেজ ছিল না 💔
Profile Image for Musharrat Zahin.
404 reviews490 followers
August 15, 2024
আজকের রিভিউটা একটু ছোট। কারণ একে তো অনেকদিন কোন রিভিউ লেখা হয় না, তার উপর এই বইয়ের রিভিউ লিখতে গেলে মনে হয় না ঠিকঠাকভাবে পুরো বিষয়টা তুলে ধরতে পারবো। বইটা পড়া শুরু করার সময় কোন বাড়তি প্রত্যাশা ছিল না। তাই হয়তো ভালো লাগার মাত্রাটা একটু বেশি।

মাঝে মাঝেই জেলখানায় বন্দি কয়েদিদের জীবন কেমন হয়, এই জিনিসটা আমাকে বেশ ভাবায়। সবাই কি আসলেই অপরাধী? নাকি কেউ কেউ অন্যের অপরাধের অপবাদ মাথায় নিয়েই বাকিটা জীবন অন্ধকার কুঠুরির মধ্যে কাটিয়ে দেয়? অপরাধ জীবন থেকে বের হওয়ার পর তাদের কি আবার সাধারণ জীবনে সাদরে গ্রহণ করা হয়? নাকি বাকি জীবন তাদের অন্যের নিগ্রহেই কাটাতে হয়?

বইটা নিয়ে আসলে অনেককিছুই বলার আছে। কারণ চার খণ্ডে কম মানুষের গল্প তো আর বোনা হয়নি। একেক মানুষের একেক গল্প, একেকরকম তাদের মনস্ত্বাত্বিক দ্বন্দ্ব।

আর পাঁচটা বাঙালি যুবকের মতই মলয় চৌধুরী পড়াশোনার পাট চুকিয়ে নেমে পড়লেন সরকারি চাকরি খুজতে। এক সময় পেয়েও গেলেন, ছোটখাটো একটি জেলের ডেপুটি জেলারের পদ। ভারতের নানান জেল ঘুরে ঘুরে দেখা পেলেন দাগী আসামী থেকে শুরু করে ছিঁচকে চোরদের। দেখা পেয়েছেন বিনা দোষে শাস্তি পাওয়া মানুষদেরও। কথা বলেছেন তাদের সঙ্গে, তুলে ধরেছেন তাদের অপরাধ জগতে পা রাখার গল্পটা। মানুষের মন যে ঠিক কতটা গভীর তার সুচারু বিশ্লেষণ মিলবে এখানে।

লেখকের লেখার ভাষা দারুণ সাবলীল। আমি একটানা বসে চারটা খণ্ডই পড়া শেষ করেছি, এতটুকু একঘেয়েমি লাগেনি। বইয়ের যেই অংশটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে সেটা হল লেখক কখনওই অপরাধীর অপরাধটা বড় করে তুলে ধরেন না। কারণ তার প্রাপ্য সাজা সে পাচ্ছে। বরং লেখক তুলে আনেন তার জীবন থেকে আমাদের শেখার কী আছে। অনেকটা চীনা দর্শনের ইয়িন-ইয়াং এর মতো। ইয়িন অর্থাৎ অন্ধকার জগতটায় কম গুরুত্ব দিয়ে লেখক গুরুত্ব দিয়েছেন ইয়াং অর্থাৎ আলোর দিকে।

কেউ যদি কখনও ভালো বইয়ের কথা জানতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাকে 'লৌহকপাট' পড়ার জন্যই বলবো।
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books356 followers
May 26, 2020
এরকম এক একটা বই পড়া শেষ হয় আর আমার মনে হয় আমি আমার আয়ু থেকে কতগুলো বছর যেন হারিয়ে ফেলেছি। কেন মনে হয় সেকথা এখনই বলব না। আগে বইটা নিয়ে বলি।

ছিলেন তিনি জেলের কর্তা। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির সন্ধানে থেকে এক সময় এই কাজেই ঢুকে পড়েছিলেন সময়ের প্রয়োজনে। নিতান্ত আনাড়ি থেকে এক সময় চুল পাকিয়ে অবসরে গিয়েছিলেন আর এই সময়ের মধ্যে লাভ করেছিলেন অভিজ্ঞতা আর দেখেছিলেন অনেক মানুষ। কিন্তু সে সব মানুষ আমাদের লোকালয়ে থাকা আর পাঁচজন নয়। তারা একেকজন ক্রিমিনাল। কিন্তু সেই ক্রিমিনালদের মধ্যেই চারু চক্রবর্তী খুঁজে পেয়েছিলেন কিছু সোনার মানুষ।

ভারতের নানা জেলে দায়িত্ব পালনের সময় লেখক খুনি, ধর্ষক থেকে শুরু করে ছিঁচকে চোরের দেখাও পেয়েছে। সেই সঙ্গে পেয়েছেন এই অপরাধী মানুষদের অপরাধের পেছনে থাকা নানা গল্প। কয়েদীদের সঙ্গে সরকারী করতার যোগ থাকার কথা না কিন্তু আমাদের গ্রন্থের লেখকের কোমল মনটা কয়েদীদের অনেকেই পড়তে পেরেছিল। তাই মানবিক, দরদী মানুষটির কাছে তারা তুলে ধরেছিল নিজেরদের মনের কথা।

শুধু কয়েদি কেন, এক জীবনে জেলার হিসেবে তিনি দেখছেন পুলিশ অফিসারকদের, দেখেছেন ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট থেকে দেশীয় আমলাদের। জেলের লোহার কপাটের ওপারে অন্তরীন মানুষদের কথার পাশাপাশি এ বইয়ে এসেছে সেইসব কথা। কখনও লেখক আইনকে প্রশ্নের কাঠগড়ায় তুলেছেন, কখনও দরদের মাঝেও চাবুক চালিয়েছেন। তাই আমরা মখিয়া জংকে যেমন খুঁজে পাই, পরিমলকে যেমন দেখতে পাই তেমনি দেখতে পাই তাদের রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা অন্যান্য নিয়মের প্রতি লেখকের ক্ষোভ। আর সে সব তিনি প্রকাশ করেছেন অসাধারণ ভ���ষায়।

লেখকের গদ্যটি এতোই স্বাদু যে প্রথম পাতা থেকে সাহিত্য রসিকের রসনা রসের সন্ধান পেয়ে রসিয়ে উঠবে। তার সেই রসের ভেলায় ভেসে যাবে ‘লৌহকপাট’এর ওপারের অদ্ভুত নদীতে। সেই ভেলার হাল জরাসন্ধের হাতে। পাঁচশ পাতার অধিক বিস্তৃতির বইয়ে তিনি যে নিজের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা একটু একটু তুলে ধরেছেন তার কোনটি নিয়েই আমি এখানে আলোচনা করছি না কেবল সার্বিক একটা পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করলাম কেবল। চার খণ্ডের বইটি যে ভারতের অনেকগুলো ভাষায় অনূদিত হয়েছে, সেকথা বলেই বইয়ের উপযোগিতা বোঝানো যেতে পারে।

জরাসন্ধের ‘লৌহকপাট’ পড়ার ইচ্ছা বহুদিনের। কারণ, শুনেছি তার গদ্য দারুণ। তখনও জানি না বইটির বিষয় কী। শুধু গদ্যের প্রশংসা শুনে বই পড়ার লোভে খুঁজে নানা জায়গায়। এখন হলে গাঁট কেটে বাতিঘর থেকে এক কপি কিনে নিতাম কিন্তু তখন সে সঙ্গতি ছিল না। কিন্তু ‘স্লো বই’ বলে নীলক্ষেতে নাই। কপাল গুণেই পল্টনে একদিন অএয়ে গেলাম চমৎকার এই লোকাল কপি। ৮০ টাকায় বইটা কিনি ২০১৫ এর মার্চে। কিন্তু পড়া হয়নি।

কাঙ্ক্ষিত বই পেয়েও না পড়া কেন যে আমার হয়া আমি এখনও বুঝি না। কখনও কখনও বইটা বের করে আবার রেখে দিয়েছি কেননা মনে হয়েছে এতো বড় বই পড়তে পারবো না। অথচ লৌহকপাট ছেড়ে পড়েছি এর দ্বিগুণ পুরু ‘শাহজাদা দারাশুকো’ কিংবা মোগল আমলের অন্য কোন গন্ধমাদন। আজ এই বেলা ‘লৌহকপাট’ হাতে নিয়ে তরতর করে পড়ে মনে হলো ভালোই হয়েছে আগে পড়িনি। কিন্তু পড়া শেষ হতেই মনে হলো চারু চক্রবর্তীর এক জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার বয়েসটা আরও বেড়ে গেলো। অর্থাৎ, আয়ু কমে গেলো খানিকটা।
Profile Image for Asif Khan Ullash.
143 reviews8 followers
August 14, 2024
নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পাঠকপ্রিয় বই। প্রথম প্রকাশের প্রায় শত বছর পরেও যার আবেদন এতটুকু কমেনি।

বইটির তুমুল জনপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারণ অব্যশই এর বিষয়বস্তু। একজন ঊর্ধ্বতন জেল পুলিশের জবানীতে কয়েদিদের জীবনযাপন, তাদের অপরাধের বর্ণনা, আসামিজীবনের বর্ণনা সবকিছুই অত্যন্ত আকর্ষণীয়। লেখক অপরাধী ও নিরপরাধীর সাদা কালো দুনিয়া ভেদ করে এমন এক ধূসর অবস্থানে পাঠককে এনে ফেলেছেন যেখান থেকে আসলে ভালো বা খারাপের সীমারেখা টানা অথবা আইনের বিচার কী আসলেই ' সুবিচার বা জাস্টিস ' কিনা সে সিদ্ধান্ত চট করে নিয়ে ফেলা যায় না। বইটা পড়ার সময় বারবার মানবমনের বিচিত্র স্বরূপের সন্ধান পাওয়া যায়, অবাক হতে হয় ভেবে এমনটাও হওয়া সম্ভব!

তবে সব ছাপিয়ে গেছে জরাসন্ধের গদ্যরীতি। একদম অনায়াস ভাবে বৈঠকি চালে লেখা, পড়লে মনে হয় পড়ছি না, শুনছি। তাই বলে আবার লেখার মান বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ণ হয়না, এক আশ্চর্য ভারসাম্য লেখক সৃষ্টি করেছেন । লেখার অসাধারণ ফ্লুইডিটির কারণে ৫০০ পাতার উপরে পড়ে ফেলতে বিন্দুমাত্র ঝামেলা হয়না।

মাস্টরিড!
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
April 3, 2023
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে মলয় চৌধুরী চাকরীর সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে শেষপর্যন্ত কারা বিভাগে একটি চাকরি জুটালেন।
ছোটখাটো একটি জেলের ডেপুটি জেলারের পদ। এই চাকরীর সূত্রধরেই মলয় চৌধুরীর পরিচয় ঘটে সম্পূর্ন একটা নতুন জগতের সাথে। সেখানে পরিচয় ঘটে বিচিত্র সব মানুষের সাথে। যাদের অনেকই সভ্য সমাজে সভ্য ভাবে থেকেও সামান্য ভুলে বা ক্রোধকে বিসর্জন দিতে না পেরে করেছে অপরাধ আর সে অপরাধের সাজা ভোগ করতে ঠাঁই মিলেছে জেলের লোহার খাঁচার ভিতর।

আবার অনেকেই আছে যাদের অপরাধটাই পেশা। জেলেই তাদের ঠিকানা। জেলের বাইরের পৃথিবী তাদের ঠাঁই দিলেও সে ঠাঁই তার নিজে থেকে নিতে চায় না। বিচিত্র সব অপরাধের নির্দিষ্ট সব শাস্তি।

একই সাথে আছে লেখকের লেখক জীবনের প্রাপ্তি পাঠকের চিঠি, যার মাঝেও আছে বিচিত্র এবং রহস্যে ঘেরা সব মানুষের জীবন। এসব সঞ্চিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনা যা অকপটে লেখকের কাছে ব্যক্ত হয়েছে যার মধ্যে লেখক পেয়েছেনঃ বদর মুন্সী, কাশিম ফকির, মংখিয়া জং, জ্ঞানদা, পরিমল, ব্রহ্মচারী সদানন্দ। আবার এদের ঘটনার কাছে ম্লান হয়ে যায় অনাথ, কুসুম, রাজাবাহাদুর, এবং নাম না পরিচয়হীন পত্র লেখক।

চারখন্ডের বইটা অপরাধীদের জীবনের ঘটনার আলোকেই লেখা। অপরাধীদের অনুভূতি ও তাদের ঘটনা বহুল জীবন। যেখানে না পাওয়াটাই বেশী। একই সাথে লেখক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন পুলিশ ও জেলখানার নিয়ম ও ভুল ত্রুটি, যা কখন সাধারন মানুষের পক্ষে বাইরে থেকে জানা সম্ভব নয়। তবে এ জানোটা লেখকের দরদমিশিয়ে জানানো।

বইটা নিয়ে আমার কিছু বলার নাই তবে, না পড়লে জীবনে বড় একটা কিছু না অজানাই থেকে যাবে।

অপরাধ না করলে জেলে যাওয়া যায় না।
যার জেলে যেতে চান, অথচ অপরাধ করতে চান না তার এই বইটা পড়লে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারবেন জেল থেকে, লেখকের বর্ননায়।
Profile Image for Akash Saha.
156 reviews26 followers
August 30, 2021
লৌহকপাট!!!
কারাগারের লোহার গরাদের অন্তরালে সমাজের চোখে কিছু অছ্যুত মানুষের গল্প। ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস, অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করল।
Profile Image for Chitrolekha.
8 reviews5 followers
September 26, 2024
আচ্ছা, এই লেখাটা কি এমন কেউ পড়ছেন যিনি বেশ কিছুদিন একই ঘারানার বই পড়তে পড়তে ক্লান্ত, কিংবা যিনি সচরাচর 'বাংলা উপন্যাস'এর ধারা থেকে বের হয়ে 'অনেকটা অন্যরকম' কিছু পড়তে চাইছেন, অথবা নিছকই একটা আনকমন প্লটের বাংলা বই পড়তে চান— তবে জরাসন্ধের 'লৌহ কপাট' বই আপনার হাতে পার্ফেক্টলি মানিয়ে যাবে!
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই বই যাদের নিয়ে লেখা তাদের বসবাস প্রাচীরঘেরা , তাদের সাথে সাধারণ মানুষের বিভেদ গড়ে দিয়েছে চৌদ্দ শিকের গারদ। কিন্তু তারাও তো মানুষই, কী তাদের কপালে লাগিয়ে দিল 'জেল-খাটা আসামী'র তিলক, মানবিকতা থেকে কি তারা একেবারেই বঞ্চিত, তাদের দিবারাত্রির কাব্য রচিত হয় কোন সূর্যকে ঘিরে?? — এসকল প্রশ্ন কম বেশি সকলের মনেই উঁকিঝুঁকি দেয়,তবে মনের খোরাক মেটাবার মতো রসদ হাতের কাছে কই? তাই ঘুরতে বেরুতে হয় সাহিত্যিক-নির্মাতাদের দ্বারে দ্বারে।
আমি ঠিক জানি না, এসকল 'আসামী'দের জীবন নিয়ে যেসকল উপন্যাস বেরিয়েছে, তার মধ্যে ঠিক কতজন লেখক তাদের জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় তা লিখেছেন,আর কতজন মনের কল্পনা দিয়ে এঁকেছেন সেসব মানুষের জীবন-কথা। এ দিক থেকে 'লৌহকপাট' কিন্তু ফুল মার্ক্স নিয়ে উৎরে গেছে! কিন্তু কেন??
জরাসন্ধ পেশায় ছিলেন পুরোদস্তুর জেল অফিসার। তাই আসামীদেরকে তাঁর চাইতে সূক্ষ্ম চোখে আর কে দেখতে পারে? বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে তাঁর বেকার জীবনের শুরু থেকে চাকুরীর অবসর গ্রহণের পরের সময় পর্যন্ত। সমাজের সব রকমের মানুষের প্রায় সব রকমের অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি জরাসন্ধ তার কলমে তুলে এনেছেন এক 'অবিশ্বাস্য' লেখনীর মাধ্যমে। এই লেখা আমাকে নিয়ে গিয়েছিল আমাদের আশেপাশের অচ্ছুত মানুষদের অদ্ভূত গোপন কাহিনীর অভ্যন্তরে, জীবন যেখানে বাস্তবিক অর্থেই গল্পকে হাসতে হাসতে হারিয়ে দেয়! জীবন যে কত করুণ, নির্মম, অসহ্য হতে পারে- সেটা এক নতুন আঙ্গিকে পড়তে পারবেন এই বইয়ে।
সত্যি বলতে আমি এরকম লেখার প্যাটার্ন আগে কখনো পড়ি নাই! প্রথম কয়েক পৃষ্ঠা পড়তে মনোযোগ দিতে হয়েছে আলাদা করে ( সেটা 'কঠিন' লেখনীকে রিপ্রেজেন্ট করে না কিন্তু!)। এরপর পুরো বইটা শেষ করার সময় আমার ফ্লো টা এমন ছিল যে আমি পেন্সিল দিয়ে লাইন কোট কোরে সময় নষ্ট করতে চাই নি এক মূহূর্তের জন্যও! কী অবিশ্বাস্য শব্দের বুনন, আমি বোলে বোঝতে পারবো না !
আমি আসলে রিভিউ লিখতে বসেছিলাম,কিন্তু নিজের লেখার মারপ্যাচে নিজে আটকে গেছি। যা বলতে চেয়েছি আর যা লিখেছি, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক! লেখা আর বড় করতে চাই না। এই বইটা পড়ুন, পড়ুন এবং পড়ুন। এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট হবে না - বলে দিতে পারি!

[ এবার একটুখানি নিজের কথা বলি। আমার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা — সমস্তটাই বাবার চাকুরী সুবাদে জেল কোয়ার্টারে। বইয়ের প্রতি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় আমার সবচেয়ে পরিচিত জায়গার গন্ধ লেগে আছে, পার্সোনাল রেটিংয়ে তাই এই বই যে আমার কাছে আলাদা আবেদন নিয়ে এসেছে, তা বলাই বাহুল্য!
বইটাকে 'নিঁখুত' ক্যাটাগরীতে ফেলতে পারছি আমি। তবে একটা জায়গায় একটু খুঁতখুঁত লাগছে, লেখক বইয়ের চারটি পর্বকে যদি ডেপুটি জেলার, জেলার, জেল সুপার, অবসর — জীবনের এই চার ভাগে সাজাতেন, তবে হয়তো সবচাইতে ভালো হতো। এটা কেবলই আমার মতামত, নাহলে এই বইয়ের উপর মাতবরি করার কোনো ধৃষ্টতা দেখাতে চাই না আমি! ]
Profile Image for Arnab Paul.
62 reviews119 followers
March 28, 2015
কাহিনির রোমাঞ্চ,বর্ণনাশৈলী, লেখকের স্পষ্টভাষীতা সবক'টাতেই পাঁচতারা।লেখকের বাকি লেখাগুলো পড়ার ইচ্ছা প্রবল হল। পাঠ-পরবর্তী অনুভূতি প্রকাশের জন্য কবি মহাদেব সাহার কয়েকটি লাইন উল্লেখ না করলেই নয়,

"মানুষের ভেতর কতো যে দীর্ঘশ্বাস, জমাট বেঁধে আছে
কতো যে ক্রন্দন, পাতা ঝরার শব্দ, মৃত্যুসংবাদ
মানুষের বুকের মধ্যে ব্যথিত ব্যাকুল ইতিহাস আর আহত সভ্যতা
মেঘের মতো ঘনীভূত হতে হতে একেকটি মর্মান্তিক দীর্ঘশ্বাস হয়ে আছে
মানুষ তাকে বয়ে বয়ে দগ্ধ বেঁচে থাকে;
একেকটি মানুষ বুকের মধ্যে কী গভীর দীর্ঘশ্বাস বয়ে বেড়ায়, কেউ জানে না
একেকটি মানুষ নিজের মধ্যে কীভাবে নিজেই মরে যায়, হায়, কেউ জানে না!"

Profile Image for Md Khalid Rahman.
137 reviews38 followers
April 21, 2020
এই বইটা আমার জন্য হুট করে মাণিক খুঁজে পাওয়ার মতো! মনে ধারণ করার মতো বই । এমন সতেজ গদ্যও খুব বেশি লেখক লিখতে পারেন না ।
Profile Image for Shuvescha De.
40 reviews2 followers
July 12, 2020
A jail in the eyes of a deputy jailor,a govt officer. Quite interesting.
289 reviews
September 5, 2021
One of the greatest books ever written. I wish there was an English translation. If there is one, please leave the details in the comments section.
Profile Image for সা কিব.
58 reviews11 followers
February 21, 2023
ভয়ংকর সুন্দর ঢঙে লেখা একটা ডায়েরী।
Profile Image for  Sabit Ara Orpa.
78 reviews14 followers
February 20, 2024
Some books feels like কখনোই শেষ না হোক।৷ It's one of those.
Profile Image for Dr Imtiaj Ahmad.
12 reviews4 followers
May 23, 2025
লাইফে পড়া সেরা বইগুলোর একটা। প্রথমবার পড়েছিলাম ক্লাস সেভেনে...এখনো মাঝে মাঝে রিভিশন দেই!
Profile Image for Abu Raihan.
23 reviews
August 29, 2025
অনন্য অসাধারণ না বলে উপায় নেই, আমরা যে ভদ্র,সভ্য সমাজ দেখে অভস্ত্য তার ভিতরে যে কতরকম মানুষ আছে, কত কাহিনি আছে তা কে জানে? লেখকের অভিজ্ঞতা ও কলমের জোড়ে আমরা যে কিছু কাহিনি জানলাম তাই তো অসাধারণ
Profile Image for Tanjina Tamanna.
99 reviews20 followers
June 8, 2017
লেখক ইতি টেনেছেন যে কথাটি দিয়ে সেটিই আসলে অনুভূত হয় এই চার খণ্ডের বইটি পড়বার সময়।"যে রাজ্যে আমি দীর্ঘজীবন কাটিয়ে এলাম ,সেখানে পিশাচের অভাব নেই,পাপের মূর্তিও কম দেখিনি।তবু মনে হয়েছে তার অন্তরালে আরও কিছু আছে ।কারও কারও বেলায় সেই কিছুটাই আমার চোখে ভাস্বর হয়ে উঠেছে।" লেখক আলীপুর জেলের সুপারিনটেনডেনট হিসেবে চাকরি করার সুবাদে তাঁর লেখার অনেকখানিই জেলের কয়েদীদের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। এই বইটির পুরোটা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন কয়েদীদের অপরাধ,তাদের কয়েদী হওয়ার পিছনের কাহিনী,হিংস্রতা,মানুষের ভেতরে লুকানো পাশবিক প্রবৃত্তির চাক্ষুস প্রত্যক্ষ করবার রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা।এক কথায় সম্পূর্ণ ভিন্নধাঁচের,ভিন্নজগতের একটি প্রামাণ্য উপন্যাস।এক অন্ধকার জগতের আখ্যান।
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
February 7, 2019
জরাসন্ধ লেখকের ছদ্মনাম। ভদ্রলোকের প্রকৃত নাম চারুচন্দ্র চক্রবর্তী। পেশায় তিনি ছিলেন ডেপুটি জেলার। চার খন্ডের বিশাল লৌহকপাট তার চাকুরিজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। শেষের খন্ডটি অবশ্য প্রকাশ পায় তাঁর অবসরের পর।
সাধারণত লৌহকপাটের ভেতরে অপরাধীরাই থাকে কিন্তু এই লৌহকপাটের ভেতরে শুধুমাত্র অপরাধীদেরই নয় ; সাথে আরো পাবেন তাদের অপরাধ করার কারণ এবং প্রক্রিয়া বিস্তারিত । পড়তে পারেন। রিভিউতে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না কারন ঘটনা একটা দুটো নয়। অনেক ইন্টারেস্টিং ঘটনা লেখক গল্পের ছলে এর মধ্যে তুলে দিয়েছেন। চোখ বুজে তিনটি তারকা লৌহকপাটে ঢুকিয়ে তালা মেরে দিলুম।
Profile Image for Mukid.
149 reviews4 followers
November 17, 2022
বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ব শেষ করে এক তরুণ যুবক চাকরির সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে শেষপর্যন্ত যে কাজটি পেলেন, সেটি হল কারা বিভাগে। ছোটখাটো একটি জেলের ডেপুটি জেলারের পদ। সম্পূর্ণ একটা নতুন জগতের সঙ্গে পরিচয় ঘটল সেখানে।
পরিচয় হল বদর মুন্সীর মত ভয়ঙ্কর ডাকাতের সঙ্গে - খুন,জখম, নারীধর্ষণ যার কাছে ছেলেখেলা। কিন্তু সেই লোকটিই একবার ডাকাতি করার সময়ে গৃহস্বামীকে কথা দিয়েছিল, শুধু টাকা-গয়নাই নেবে - নারীর সম্মান নষ্ট করবে না। কিন্তু দলের একজন সেই হুকুম মানে নি বুঝতে পেরে, নিজেই ধরা দিল সেই অপবাদের বোঝা নিজের মাথায় নিয়ে।
Profile Image for Gain Manik.
335 reviews4 followers
March 28, 2025
আন্ডারেটেড ব‌ই। সকলের পড়া উচিত, লেখক জেলে ডেপুটি জেলার হিসেবে কাজ করতেন এবং ঐ সময়কার জেলে অন্তরীণ সাজাপ্রাপ্তদের থেকে শোনা কাহিনী বা ফাইল পড়ে পাওয়া তথ্য থেকেই এই গল্পটা লিখেছেন। লেখক ভাল করে বিবৃত করেছেন প্রত্যেকটি অপরাধের কার্যকারণ এবং সেই কারণেই কতিপয় সাজাপ্রাপ্তদের প্রতি পাঠকের করুণা জাগ্রত হবে আবার বাকিদের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক হবে।
পড়ুন,সময় বৃথা যাবে না। সব বড় ব‌ই পঠন‌অযোগ্য হয় না।
এই ব‌ইটা আসলে উপন্যাস নয়, প্রত্যেকটি অধ্যায় এক একটি নতুন গল্প, এবং সবকটি গল্প‌ই হৃদয়গ্রাহী, কোনটা বাদ দিতে পারবেন না, বরং শেষ করে মনে হবে এত দ্রুত কীভাবে শেষ হয়ে গেল!
Displaying 1 - 26 of 26 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.