Jump to ratings and reviews
Rate this book

কোয়েলের কাছে

Rate this book
যে-পালামৌকে সাহিত্যে চিরজীবী করেছেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সেই পালামৌকেই ‘কোয়েলের কাছে’ উপন্যাসে নতুন রূপে সাহিত্য পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেনএ-যুগের শক্তিশালী কথাকার বুদ্ধদেব গুহ। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে শুধু যে পালামৌ-এর চেহারা বদলই ঘটেছে তা নয়, অন্যতর দৃষ্টিও এই সৃষ্টিকে দিয়েছে নবতর মহিমা। বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, পুরনো পালামৌ-এর এইপ্রবাদ-পরিণত বাক্যটিকে মনে রেখেই আরেকটু এগিয়ে বলা যায়, অন্যরা অন্যত্র সুন্দর, বুদ্ধদেব গুহ জঙ্গলমহলে। সত্যিই অরণ্যে অনন্য বুদ্ধদেব গুহ। তিনি নিজেও একদা লিখেছিলেন, প্রকৃতিই আমার প্রথম প্রেম এবং সবচেয়ে বড় কথা, স্থায়ী প্রেম। তাঁর প্রকৃতি-প্রধান রচনা শুধু রূপের বর্ণনা নয় শব্দ আর গন্ধকেও তিনি অক্ষরে বন্দি করেন এক আশ্চর্য জাদুতে। এই শেষোক্ত জাদুর জন্যই তাঁর লেখার নিজস্ব এক আবেদন, আলাদা এক আকর্ষণ। ‘কোয়েলের কাছে’ বুদ্ধদেব গুহ-র বহু বন্দিত উপন্যাস। প্রকৃতিই এখানে প্রধান চরিত্র সন্দেহ নেই, কিন্তু সেই সূত্রে আর যে-কটি মানুষের উল্লেখ, তারাও কম কৌতুহলকর নয়। মারিয়ানার প্রেম, সুমিতা বৌদির কামনা, লালতির সোহাগ, জগদীশ পাণ্ডের হিংস্রতা, ঘোষদার কৃত্রিমতা আর যশোয়ন্তের আদিমতা—কেবল নদীর মতোই প্রাণবান এক-প্রবাহ। সৌন্দর্যে, রোমাঞ্চে, উৎকণ্ঠায়, আবেগে উজ্জ্বল উপন্যাস‘ কোয়েলের কাছে’।

184 pages, Hardcover

29 people are currently reading
524 people want to read

About the author

Buddhadeb Guha

236 books237 followers
Buddhadeb Guha (Bengali: বুদ্ধদেব গুহ) is a popular Bengali fiction writer. He studied at the well-known St Xavier's College of the University of Calcutta.

His novels and short stories are characterized by their dreamy abstractness and romantic appeal. His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels.

A highly successful chartered accountant by profession, and an accomplished musician, Guha is very urbane in his lifestyle. He was one of the first to create characters representing easy-going, upper middle-class modern Bengali families, whom readers could identify with, and that gave him instant popularity.

He is the recipient of many awards including Ananda Puraskar, 1976; Shiromani Puraskar; and Sharat Puraskar.

The Library of Congress has over fifty titles by him. His most famous novel, according to many, is Madhukori. It is considered a milestone in Bengali literature.
He is also the creator of Rijuda, an imaginary character who moves about in jungles with his sidekick Rudra. The jungles that he wrote about were mainly in Eastern India.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
126 (40%)
4 stars
120 (38%)
3 stars
48 (15%)
2 stars
11 (3%)
1 star
6 (1%)
Displaying 1 - 30 of 59 reviews
Profile Image for Sumaîya Afrôze Puspîta.
219 reviews288 followers
January 11, 2025
পালামৌ-এর জঙ্গল, জোনাকি, উড-ডাক, বাঘ, চিতা, ফুলদাওয়াই, সুহাগী নদী– প্রেমে পড়ার মতোই।

মানুষগুলো অতটা উল্লেখযোগ্য না।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews84 followers
April 5, 2021
আমি ঘরকুনো মানুষ। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে বিছানাকুনো ( এই শব্দটা কি আসলে আছে?) মানুষ! একান্ত প্রয়োজন না থাকলে ঘর থেকে তো বের-ই হয় না, বিছানা থেকেও নামি না! কিন্তু এই বিছানাকুনো (!) মানুষটাকেও যে জিনিসটা খুব টানে তা হলো পাহাড়। পাহাড় আমার কাছে বিশালতার প্রতীক। পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়ালে একদিকে যেমন নিজের ক্ষুদ্রতাকে বোঝা যায় তেমনি অন্যদিকে পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে পুরো দিগন্তকে দেখা যায়, মনে হয় আমিই যেন নিচে থাকা সমস্ত মানুষের রাজা! পাহাড়ের প্রতি আমার এই মুগ্ধতাকে যেসব বই বাড়িয়ে তোলে, সেই লিস্টে নতুন সংযোজন ‘ কোয়েলের কাছে'।

কাহিনীটা শুরু হয় কথক ‘ লালসাহেব' বা ‘ মাখনবাবু' কে নিয়ে। কলকাতার শহুরে ছেলে জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমায় পালামৌর রুয়ান্ডিতে। শুরুতে যা হওয়ার ছিল তাই হলো, বন-পাহাড়ের নির্জনতায় নিজেকে মানিয়ে নিতে ভীষণ সমস্যায় পড়লে সে। কিন্তু অচিরেই সে সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে শুরু করল যখন তার সাথে পরিচয় হলো এলাকার রেঞ্জার বোহেমিয়ান যুবক যশোয়ন্তের সাথে। বন-জঙ্গলকে নিবিড়ভাবে দেখা শিখতে লাগল সে, শিকারের খুটিনাটি বুঝতে শুরু করল, বনের জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করল। একে একে তার সাথে পরিচয় হলো ব্রজেন ঘোষ, তার পত্নী সুনিতা বউদি, বিদুষী মারিয়ানার সাথে, নিষ্ঠুর জগদীশ পান্ডের সাথে।

একদিকে যেমন নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিল লালসাহেব অন্যদিকে তেমনি ধীরে ধীরে আবিষ্কার করছিল বন ও বনের আশেপাশের মানুষের জীবনের নানা বাঁক। মারিয়ানার জীবনের ধূসর অধ্যায়, সুনিতা বউদির অতৃপ্তি, যশোয়ন্তের আক্ষেপ, জগদীশ পান্ডের ধূর্তামি। একবছরের চুক্তিতে রুয়ান্ডিতে আসা লালসাহেব অচিরেই নিজেকে আবিষ্কার করল এমন এক জালের মধ্যে যেখানে বন-পাহাড় আর আশেপাশের মানুষ তাকে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে যা থেকে মুক্ত হওয়া অসম্ভব।

বইটার যে দিকটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে তা হলো লেখকের ডিটেইলিং। ঋতু বদল, উৎসব, শিকার, পাত্র-পাত্রীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ইত্যাদি লেখক এত সুন্দরভাবে, সবিস্তারে ফুটিয়ে তুলেছেন যে বিছানায় শুয়ে শুয়েও আমি যেন পালামৌতে পৌঁছে গিয়েছিলাম! লেখকের নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে বলেই হয়তো লেখক এত সুচারুভাবে ঋতু পরিবর্তনকে বর্ণনা করতে পেরেছেন আর সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে লেখক যেভাবে লালসাহেবের পরিবর্তনকে এঁকেছেন সেটাও অনবদ্য। ভেজ্জানাচ, দুর্গাপূজা, সারহুর প্রভৃতি উৎসবের যে চিত্রায়ণ করেছেন, সেটাও খুব ভালো ছিল। আর শিকারের কথা আর কি বলব, ক্রমান্বয়ে লালসাহেবের শিকারে পারদর্শিতা অর্জনের সাথে সাথে আমিও যেন শিকারকে ভিন্ন ভিন্নভাবে দেখতে শিখছিলাম ; প্রথমদিকে ভয়ে ভয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে শিকারকে দেখা থেকে শেষদিকে শিকারের চোখে চোখ রেখে গুলি করা পর্যন্ত।

বন-জঙ্গল, পাহাড় আর শিকার ছাড়াও বইটাতে আর যে দুইটা বিষয় উঠে এসেছে তা হলো প্রেম এবং প্রতিশোধ। মারিয়ানা ও সুগত, মারিয়ানা ও লালসাহেব, যশোয়ন্ত ও সুনিতা বউদি, যশোয়ন্ত ও লালতি – প্রত্যেকটা প্রেমকে লেখক ভিন্ ভিন্ন আঙ্গিকে ও ভিন্ন ভিন্ন রূপে ফুটিয়ে তুলেছেন। কেউ এখানে শুধু শরীরকেই চায়, কেউ শরীরের প্রেমকে ঘৃণা করে আবার কেউ কেউ একসাথে চায় দুইটাই। এভাবে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে প্রতিটা প্রেম হয়ে উঠেছে অনন্য। অবৈধ শিকার আর ভালোবাসার মানুষের অধিকার নিয়ে যশোয়ন্ত আর জগদীশ পান্ডের লড়াই এবং শেয়ানে-শেয়ানে লড়াইও ছিল ভীষণ উপভোগ্য।

মোটের উপর বলতে গেলে বইটা আমাকে মুগ্ধ করেছে, ঘরে বসে বন-পাহাড়ে ঘুরিয়ে এনেছে আর সব ছেড়ে ছুঁড়ে পাহাড়ে একটা ছোট্ট ঘর বাঁধার স্বপ্নটাকে আরও দৃঢ় করেছে।
Profile Image for Tamoghna Biswas.
361 reviews148 followers
November 18, 2022
I’ve read quite a few books by Buddhadeb Guha by now, and while there’s always a certain factor to them that manages to keep me hooked to the books no matter the content, I’ve never considered him a competent storyteller.

This one is a self-professed masterpiece. There are only 2 authors whom I’ve noticed do this, claiming one of their created novels or series is a classic sort in the rest of their novels. And while at the end of the day it’s still a poor self-proclamation strategy, it kind of intrigues you for what’s in store for you in that particular novel (or series, or maybe set of characters, whatever).

Once again, I’m not unhappy that I read it, but I can’t say that I’m not disappointed, either. Just look at the story. It’s an unabashed, blatantly rewritten version of Bibhutibhushan’s Aranyak (আরণ্যক) by a significantly less competent author, who tried to make it somewhat different by integrating some romantic and sexual elements here and there.

Well, there are some more adventurous elements here than you can find in Aranyak. If there’s one thing Guha’s writing makes obvious, it’s his genuine exposure to flora and fauna, which adds to the authenticity of the descriptive part. But incorporating a load of information in any piece of fiction needs a certain kind of tact, to make it feel organic and not a show-off to the readers. I never felt Guha mastered that bit.

Still, there remains a sense of addictive melancholy to the narrative. Especially towards the later part. And the author also tried to explore certain complex emotions in that particular part. I will not say that it was fully realised, but it was still more evolved than all of his other adult fiction works I’ve read.
Profile Image for Diptakirti Chaudhuri.
Author 18 books60 followers
February 11, 2017
ক্লাস এইটে প্রথম নাম শুনেছিলাম 'কোয়েলের কাছে'র। আমরা যারা অকালপক্ক, তারা তখন 'বড়দের' বই লুকিয়ে চুরিয়ে পড়তাম আর আমার এক বন্ধু পড়ে বলেছিলো যে এটা ওর পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস! ক্লাস এইটে সব ব্যাপারেই একটা extremism থাকতো, যেটা তখন জানতাম না কিন্তু এখন মিস করি খুব। এত বছর বাদে বইটা পড়ে সেই extremismটা মনে পড়ে গেল।

পালামউ, ডালটনগঞ্জ, লাতেহার এবং সেই অঞ্চলের বাসিন্দা, গ্রাম, নদী, জঙ্গল, পরিবেশকে অদ্ভুত সুন্দরভাবে একটা বছরের পরিধিতে ধরেছেন বুদ্ধদেব গুহ। জঙ্গলের ঋতুবদলের এত ডিটেল এবং গল্পের সঙ্গে তার খাপ খাওয়ানো, এটা একটা আশ্চর্য ব্যাপার। শিকার, প্রেম, বন্ধুত্ব, খাওয়া দাওয়া, ঘুরে বেড়ানো... সব মিলিয়ে অনন্য সুন্দর এই অরণ্যের দিনরাত্রি।
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews305 followers
December 10, 2025
অনেকদিন পরে পরে বুদ্ধদেব গুহর এই বন-জঙ্গল নিয়ে লেখা বই পড়তে দারুন লাগে।
Profile Image for Sharmi.
9 reviews
February 27, 2019
চাকরির সুবাদে লেখকের পালামৌর এই জঙ্গলে আসা..ধীরে ধীরে কলকাতার মাখনবাবু থেকে পাকা শিকারী হয়ে উঠার, দীর্ঘদিন একই জায়গায় থাকতে গিয়ে রক্তের সম্পর্কের বাইরে আত্মার সম্পর্ক গড়ে তোলার, আদিবাসীদের জীবনযাত্রার সুনিপুণ ছবি এঁকে রেখেছেন। জঙ্গল-পাহাড়ের চারিধারের বর্ণনা চমৎকার ভাবে
দেওয়া হয়েছে..পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিলো আমি পালামৌর জঙ্গলেই আছি। পড়ে খুব আনন্দ পেয়েছি। 💜
Profile Image for Yeasmin Nargis.
176 reviews1 follower
October 7, 2025
ভালো ছিল

"পৃথিবীতে কারুকে না কারুকে দুঃখ না দিয়ে অন্য কারুকে আনন্দ দেওয়া সম্ভব নয়,ন্যায় অন্যায়টা রিলেটিভ ব্যাপার।"
Profile Image for Tanushree  Das.
36 reviews
September 20, 2025
To Be Honest আমার বইটি পড়ে একদম ভালো লাগেনি।
শুরু থেকেই একটু boring লাগছিল, ভাবলাম হয়তো কিছুদূর এগোলে আসল গল্প পাবো, তবে না। সেই জঙ্গলের গল্প, সেই প্রকৃতির গল্প একই হাওয়া বয়েই চলছে আমার আর ভালো লাগলো না তাই পুরোটা আমি শেষ ও করিনি। অনেকের রিভিউ দেখলাম, সবাই মোটামুটি বইটি Enjoy করেছে। তবে সবার স্বাদ তো এক নয়, আমি একদমই Enjoy করিনি, বরং একটু Boring Feel ই করেছি।
লেখকের আরও বই পড়ে বুঝেছি যে উনি প্রকৃতি পছন্দ করেন। তবে এই পশু হত্যা, প্রাণী মেরে খাওয়া বিষয় গুলো আমি পছন্দ করিনা।
একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত, দয়া করে personally নেবেন না। 🙏🏻
Profile Image for Shadin Pranto.
1,469 reviews560 followers
June 19, 2017
নতুনত্ব নাই। স্রেফ নতুন সাহিত্যের বোতলে, পুরনো উপন্যাসগুলোর সারগর্ভ মাত্র।

তবে পড়তে মজা আছে, সেটাও সাময়িকমাত্র!
Profile Image for Maliha Tabassum.
40 reviews12 followers
March 26, 2021
বুদ্ধদেব গুহ তার গ্রন্থে জঙ্গলের সাথে একান্তে নিবিষ্ট হয়ে যে পারিপার্শ্বিক চিত্র ফুটিয়ে তোলেন তা পাঠকমনে দারুন অনুভূতির সঞ্চার করে যা অনেক সময় অবর্ণনীয় হয়ে দাঁড়ায়। তার রচিত 'চারুমতি' যেভাবে এই বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা সমর্থন করে ঠিক সেভাবে "কোয়েলের কাছে" উপন্যাসটি লেখকের জঙ্গলের প্রতি আসক্তির সত্যতা নির্ধারক.....

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, প্রাপ্তমনস্কের গন্ডিতে না এলে উপন্যাস পড়া অনুচিত। কারন সাহিত্য শুধুমাত্র মনের খোরাক নয়, সাহিত্যের আরো নানাবিধ উপযোগিতা রয়েছে। এতসব উপযোগিতার মধ্যে অন্যতম একটি হলো একে অনুভব বা অনুধাবনের মাধ্যমে মনের দরজা-জানালার সংখ্যাবৃদ্ধি এবং মানবজীবনের নানাদিকসংক্রান্ত উপলব্ধি যা হয়তোবা ছোটবেলায় লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় নিয়ে বোঝা সম্ভব নয়। এই ব্যাপারটা আবার নতুন করে বুঝেছি "কোয়েলের কাছে" উপন্যাসটির মাধ্যমে।

একটি কাগজ কোম্পানীর ফরেস্ট অফিসার হিসেবে কথক আবির্ভূত হয় পালামৌ এর জঙ্গলে। কলকাতার শহুরে এই মাখনবাবুর সঙ্গী হয়ে উঠে পেশায় রেঞ্জার এবং স্বভাবে জংলি যশোয়ান্ত। লেখকের একবছরের জঙ্গুলে অভিজ্ঞতার সংঘবদ্ধ পরিণাম "কোয়েলের কাছে"।

উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে প্রকৃতির অকৃত্রিম বর্ণনা, পড়তে পড়তে মনে হবে আমি নিজেই বুঝি পালামৌ এর জঙ্গলে, রুমান্ডির পাহাড়ে রয়েছি। এতো সূক্ষ্ম বর্ণনা রয়েছে কোন কোন অংশে যে মনে হয় লেখকসত্তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যবহার করতে না জানলে বুঝি এমন লেখা বেড়োয় না সচরাচর।

"আকাশে চাঁদ ছিল। আজই বোধহয় পূর্ণিমা। একটি হলুদ থালার মতো চাঁদ পাহাড়ের মাথা বেয়ে পত্র বিরল শাল বনের পটভূমিতে গ্রীষ্ম সন্ধ্যায় ধীরে ধীরে আকাশ বেয়ে উঠতে লাগলো। নীল,নীল,নীল আকাশে। আর সেই ঘন নীলে তার হলুদ রঙ ঝরে গিয়ে অকলঙ্ক সাদা হলো। সমস্ত জঙ্গল, পাহাড় হাসতে লাগলো। সেই হাসিতে একটি খেয়ালী হাওয়া ঝুর ঝুর করে শুকনো পাতা উড়িয়ে নিয়ে নাচতে লাগলো। চাঁদনী রাতে জঙ্গল পাহাড় সোহাগী নদী প্রত্যেকে এমন এক মোহময়ী রুপ নিল যে, মনে হলো এরা সেই দিনের আলোর জঙ্গল-পাহাড় কি নদী নয়। এরা নতুন কেউ।" (পৃ-৩)

শুধুমাত্র প্রকৃতিই এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য নয়, বরং প্রকৃতি এখানে গল্পের মূল পটভূমি এবং তাকে আশ্রয় করে প্রকৃতি সংশিষ্ট যে সমস্ত চরিত্র উপস্থিত তাদের মধ্যকার প্রেম,বিরহ, ভালোবাসা, যৌনতা, আদিমতা,হিংস্রতা, বন্ধুত্বের অবতারনা করে সেখানকার জীবনাচরন সম্পর্কে লেখকের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা বলা যায় বইটিকে।

চরিত্রগুলোর জীবনের করুণ থেকে করুণতর বর্ণনা কখনো পাঠককে নাড়া দেয়, কখনো করে উত্তেজিত আবার কখনো পাঠককে জোগায় চিন্তার খোড়াক। কখনো এমনও মনে হয়, লেখক এ ধরনের পরিস্থিতিতে যে ভূমিকা পালন করেছেন আসলে তা কতটা সঠিক? সমাজ সাপেক্ষে নিষিদ্ধ কোন সম্পর্ক বা মনোভাবকে
স্বাভাবিকভাবে নেয়া কতটা যৌক্তিক?

যেহেতু জঙ্গল রয়েছে সুতরাং শিকারের বর্ণনা থাকবেনা তা কী করে হয়? তাই লেখক বাঘ চিতাবাঘ বা শম্বর শিকারের যে রোমাঞ্চকর বর্ণনা দিয়েছেন তা মধ্যমমানের কোন রহস্য রোমাঞ্চকর রচনার তুলনায় কমকিছু নয় বরং দারুন উপভোগ্য। এইসব শিকারের ঘটনার সাথে যোগ হয়েছে একটি মর্মান্তিক ঘটনা যা পাঠককে বিচলিত না করে পারে না।

চরিত্র নিয়ে আরেকটু কথা বলি, প্রতিটি চরিত্র যে যার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। প্রায় প্রতিটি চরিত্র প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ। প্রকৃতিকন্যা মারিয়ানা, একইসাথে চঞ্চল এবং অতৃপ্ত সুমিতাবৌদি, অকৃত্রিম জংলীসত্তার অধিকারী যশোয়ন্ত, সাধারন গৃহস্থ এবং কৃত্রিম ঘোষদা প্রমুখ চরিত্রের দেখা পাওয়া যায় উপন্যাসটিতে।

পরিশেষে কিছু কথা....

লেখকের চিন্তা-ধারা আর পাঠক হিসেবে আমার চিন্তা-ধারা এক নয় বিধায় লেখকের কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আমার দৃষ্টিকটু লেগেছে। মনে হয়েছে, নেহাতই কারও মন-মানসিকতা বা চেহারা-ছবি লেখকের মনমতো না হওয়ায় তিনি উক্ত ব্যক্তিটির প্রতি হওয়া অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে দেখেননি। মানুষের আদিম প্রবৃত্তিকে স্বাভাবিক স্বীকৃতি দিতে গিয়ে অপরপক্ষের প্রতি হওয়া অনাচারের সম্ভাবনাকে তিনি চেপে গেছেন।

তবুও "কোয়েলের কাছে" বইটি আমার এতোদিনে পড়া বইগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রিয় হয়ে থাকবে। জঙ্গলের জীবন্ত চিত্র অঙ্কনে লেখক বুদ্ধদেব গুহ যে অনন্য তা অস্বীকার করার উপায় নেই....
Profile Image for Niradhip.
41 reviews2 followers
April 8, 2016
আমারা যারা উত্তরবঙ্গের মানুষ, তাদের ছোটবেলা থেকেই একটা জঙ্গল প্রেম আপনা আপনি জন্ম নেয়। কতবার যে কতরকম বাহানায় গরুমারা জঙ্গলে গিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। তাই জঙ্গল সম্বন্ধেয় কোন উপন্যাস পেলে এক্কেবারে চেটেপুটে সাফ করে দি। ছোটবেলায় প্রথম যখন পালামৌ পড়লাম, তখন সত্যি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, এ যে শুধু সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এর লেখনী গুনে তা নয়, সঙ্গে যুক্ত হয় জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর নানা স্মৃতি,ফলে মনে হয় পুরো ঘটনাটি চোখের সামনে ঘটছে, অবশ্য তাঁর অনবাদ্য সাহিত্য কে অস্বীকার করার ক্ষমতা আমার নেই। সেই যে সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন জঙ্গলে থাকার একটা বিরাট গুন হোল ভাষা টা খুলে যায়, তাই তো জিম করবেটের লেখা এত সুন্দর।

পরে যখন আরন্যক পরলাম, তখন সত্যি এক চরম বিস্ময়ের ঘোরে বিভর হয়ে ছিলাম। কোয়েলের কাছে উপন্যাসটির উপর প্রত্যাশা অনেক ছিল। কেন যেন মনে হোল চরিত্রায়ণ কোথায় যেন অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। জঙ্গলের বিবরণ গুলি ভাল কিন্তু অসাধারান নয়। জঙ্গলের সেই হাড়-হীম করা রোমাঞ্চ টা খুব মিস করেছি, কিছু কিছু জায়গায় বুদ্ধদেব বাবু চেষ্টা করেছেন রোমাঞ্চ সৃষ্টি করার, কিন্তু তা যৎসামান্য। শেষটা যেন বড় তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। মনে পড়ছিল কাজী নজরুলের সেই লাইন গুলি...

“মোর আরও কথা,আরও কথা ছিল বাকি, আরও প্রেম আরও গান।”
Profile Image for Ratika Khandoker.
300 reviews34 followers
October 19, 2021
কি সুন্দর,কি সুন্দর!
এই বই আমি বেশ সময় নিয়ে পড়েছি,বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে,উপভোগ করে।ঠিক যেমন লেখক বইটি লিখেছেন প্রকৃতির রূপ বদলের একেক সময়ে,সময় নিয়ে।
কোয়েলের কাছে নাম শুনেই মনে হয় বুঝি প্রেমের উপন্যাস,কভারের সুন্দর নারী মুখ দেখে সে ধারনা আরো বদ্ধমূল হয়। হ্যাঁ,প্রেমের উপন্যাস ই বটে- পুটুস ঝোপের সাথে জোনাকির প্রেম,সুহাগী নদীর সাথে টি টি পাখির প্রেম,মহুয়ার নেশার সাথে ওঁরাও অধিবাসীর প্রেম,কোয়েল নদীর সাথে লেখকের প্রেম। রুমান্ডি তে চাকরী সূত্রে লেখক গিয়েছিলেন কোয়েলের কাছে,দীর্ঘসময় ধরে বুঁদ হয়ে ছিলেন রুমান্ডির অপরূপ বন্য সৌন্দর্যে।কাছে থেকে যেমন দেখেছেন রুমান্ডির আশ্চর্য বুনো রূপ,তেমনি দেখেছেন মানুষের মনের,সম্পর্কের বিভিন্ন দিক।যশোয়ান্ত-মারিয়ানার সাথে যেমন দোস্তি গড়ে উঠেছিল,তেমনি আপন হয়েছিল বাড়ির কাছে হামেশা ঘুরে বেড়ানো বন মোরগ টা,কে য়া কে য়া করে ডেকে যাওয়া ময়ূর গুলো,শিকারের ঝোক,পাহাড়ের চড়াই উতরাই,আর বনের সবুজ শালীনতা।
আর এসবের সাথে কি লেখকের একার ই সখ্যতা ছিল? আমি ও তো রুমান্ডিতে-ই পড়েছিলাম এই এত দিন।তাই তো আবার যখন লেখক ফিরে এলেন শহরে,ডিজেলের গন্ধে যেন দম আটকাল আমার নিজের - ই।
বুদ্ধদেবের অন্যান্য উপন্যাস ভাল না লাগলেও,কোয়েলের কাছে র কোন তুলনা হবেনা।
Profile Image for Santanu Dutta.
175 reviews4 followers
April 6, 2017
I don't know about the critics and the critical review of the book by the critics. Honestly I was never fond of or rather a good reader of the books by the author except of his Rijuda series books. I got this book when I was in the town of JSR at Jharkhand. The book fascinated me and I could not but stop myself to re read this for a couple of times. The description of Palamu is really excellent or can not be explained by a reader. The characters are appearing vividly before the eyes. May by I am not sure, the other book "Kojagar" was better than this on the same area.
I however was so fascinated by this book and the legendary forests and the river that I was forced by myself to name my daughter as Koel.
Profile Image for Rajib Majumder.
136 reviews7 followers
January 24, 2020
বইটা শেষ করলাম। জঙ্গল বড় প্রিয় আমার। আর এই কাহিনিতে আরও অন্যান্য চরিত্রগুলোর মতন জঙ্গলও এক্টা চরিত্র হয়ে উঠেছে। তাকেও দেখতে পাচ্ছি নড়ছে, কথা বলছে, সাজছে। সুগত মারা গেলে সে মন খারাপ করছে, যশোয়ন্তের পাগলামিতে হেসে লুটোপুটি করছে, আবার লালবাবু তাকে ছেড়ে চলে গেলে অশ্রুসজল চোখে চেয়ে রয়েছে। আর আমি কোন দিকে যাবো ভেবে পাচ্ছি না। লালবাবুর সাথে কোলকাতা যাবো? নাহ। কিছুতেই নয়। কিন্তু বিকাশ সেনের সাথে রুমান্ডিতেও ফিরতে মন চাইছে না। সে যে ইতিমধ্যেই রুমান্ডিকে নগ্ন করে ধর্ষণ শুরু করে দিয়েছে। তার রেকর্ডের শব্দের অত্যাচারে পাশে খয়ের গাছের নীচে থেকে ছাতারে পাখিগুলো ছ্যাঃ ছ্যাঃ করছে। কিন্তু তাদের আওয়াজ কেউ শুনতে পাচ্ছে না। শুধু আকন্ঠ মদ্যপ যশোয়ন্ত শুনে বিরক্ত হচ্ছে আর বোধহয় ভাবছে জগদীশের পরে এটাকেও শিক্ষা দিতে হবে। আর লালবাবু মন খারাপ করে হাওড়ার ট্রেনে বসে আছে....
Profile Image for Ronel Barua.
46 reviews4 followers
September 19, 2025


বইয়ের প্রথম পাতাটা খুলেই আমি যেন ঢুকে পড়লাম এক ঘন সবুজ জগতে। শহরের কংক্রিটের জঙ্গলের বাইরের এক জগৎ,যেখানে হর্নের চিৎকার নেই, নেই মানুষের ধোঁয়াটে মুখ।আছে শুধু শাল-সেগুনের নিবিড় ছায়া, অজানা পাখির ডাক আর আদিম গন্ধমাখা হাওয়া।

এই বইয়ের শুরুতেই আমার মনে পড়ল বিভূতিভূষণের “আরণ্যক”-এর কথা। বুকের ভেতর প্রশ্ন উঠল, “আরণ্যকের মতো স্বাদ কি আর কোনো বই দিতে পারে?” একটু ভয়ও লাগল। কিন্তু পাতার পর পাতা পড়তে পড়তে বুঝলাম এই বই ঠিক তার নিজস্ব পথে চলে, নিজস্ব ছন্দে কথা বলে।

আমার পরিচয় হলো এক যুবকের সঙ্গে,যিনি শহর ছেড়ে চাকরির খাতিরে চলে এসেছেন রুয়ান্ডির গভীর অরণ্যে।
লালসাহেব, অথবা যাকে আদর করে ‘মাখনবাবু’ও বলে কেউ কেউ।
শুরুতে তিনি ছিলেন শহরেরই একজন,চোখে ছিল ধোঁয়া, কানে ছিল ট্রামলাইনের আওয়াজ। কিন্তু অরণ্যে এসে যেন তার সব ইন্দ্রিয় জেগে উঠল। পাখির ডাকে ঘুম ভাঙল, কুয়াশায় ভিজল সকাল, আর সন্ধ্যার হিমে জেগে উঠল এক নিঃশব্দ প্রেম।
এখানে তার পরিচয় হলো যশোয়ন্ত পাঠকের সঙ্গে,এক প্রাগৈতিহাসিক, এক আদিম প্রকৃতির মানুষ।
সে যেন অরণ্যেরই রূপান্তরিত রূপ,ভাষায় কম, অনুভবে বেশি।
একসঙ্গে শিকার করলেন তারা। না, কেবল পশু হত্যা নয়, বরং তারা জঙ্গলকে অনুভব করলেন—প্রাণীর চোখে, পাতার স্পন্দনে, আর শিকারের উত্তেজনায়। শিকার যেন রোমাঞ্চের আড়ালে এক গভীর দর্শন হয়ে উঠল,বেঁচে থাকার রুদ্ধশ্বাস পাঠ।
আস্তে আস্তে লালসাহেবের সামনে খুলে গেল এক নতুন সমাজের পর্দা,
সুনীতা বউদি, যার চোখে লুকিয়ে আছে অতৃপ্ত প্রেম;
জগদীশ পান্ডে, যে শত্রু না বন্ধু বোঝা দায়;
মারিয়ানা,এক রহস্যময় পাহাড়ি নারী, যার উপস্থিতি ঝড় তোলে লালসাহেবের স্থির হৃদয়ে।
এই সব সম্পর্ক তার চারপাশে এক অদ্ভুত ঘূর্ণি তৈরি করল, প্রেম, দ্বন্দ্ব, আকর্ষণ, আঘাত।
এইসব মিলিয়ে বইটা যেন এক ব্লেন্ডারে মেশানো অরণ্যজীবনের ককটেল,সুগন্ধি, ঝাঁঝালো, কখনো মধুর, আবার কখনো তিক্ত।
কিন্তু বইটা শুধু গল্প নয়।
এটা একটা উপলব্ধি।
কখনো মনে হয়েছে আমি মাখনবাবুর সঙ্গে জঙ্গলের ভেতর হাঁটছি।
কখনো মনে হয়েছে, কোয়েলের ডাক আমাকেও কাছে ডাকছে।
বুদ্ধদেব গুহর ভাষা এমন…যা কেবল পড়া যায় না, অনুভব করতে হয়।
তার বর্ণনায় ঝরে পড়ে পাতা, তার সংলাপে বাজে সোঁদা গন্ধ, তার ছন্দে বাজে ঝরনার শব্দ।
প্রেম, শিকার, মানবপ্রেম, পশুপ্রেম, পাহাড়ি সংস্কৃতি সব মিলে যেন গড়ে ওঠে এক পাহাড়ি আরণ্যক।

শেষ পৃষ্ঠায় এসে বুক হালকা ভারী হয়ে গেল।
লালসাহেব কোথায় যেন মিলিয়ে গেলেন ধোঁয়াটে পাহাড়ের কুয়াশায়।
আমার মনে হলো এই গল্প আমারও হতে পারত।
আমি যদি একদিন ছেড়ে আসি শহরের হইচই, আর ডুবে যাই এক কোয়েলের ডাকে, এক যশোয়ন্তের বন্ধুত্বে, এক মারিয়ানার চোখে…
Profile Image for Suraeeya.
50 reviews3 followers
December 9, 2023
"প্রকৃতির নির্জন নিরালা মুহূর্তে আমার মনে হতো, এই সভ্যতার সত্যিকারের আবরণটি খসে যেতে চায়। তখন বোধহয় ভেতরের নগ্ন প্রাকৃত ও সত্যি - বেড়িয়ে পরে - যে সত্য রূপকে আমরা ভয় পাই।"

বিভূতিভূষণের বন্দোপাধ্যায়ের "আরণ্যক" পড়ার পর আমার বুদ্ধদেব গুহের "কোয়েলের কাছে" কাছাকাছিই মনে হয়েছে। আরণ্যক-এ লেখক বৃহদাকার আকৃতিতে ঘটনাগুলো সাজিয়েছেন, বিশদ বিস্তৃতি বর্ণনা তেমন একটা নেই তবে ঘটনাবহুল। কোয়েলের কাছে বইটিতে ঘটনাগুলো আরও ঘনিষ্ঠ।
Profile Image for Shampa Paul.
105 reviews36 followers
August 15, 2018
প্রকৃতি ও জঙ্গল সাহিত্য, সেই সাথে আদিবাসী মানুষের জীবনবর্ণনা আমার সবসময়েই প্রিয়। সেদিক থেকে প্রকৃতি বর্ণনে লেখক খুব একটা কৃপণতা করেননি। কিন্তু সবটাই কেমন যেন খুব তাড়াহুড়োয় ছাড়া মনে হলো, কোনো বিষয়ের গভীরে প্রবেশের আগেই পাঠক নিজেকে বিচ্যুত মনে করতে পারে, অন্তত আমার নিজের তা মনে হয়েছে। বইটিকে পড়ে যত না প্রকৃতিকে অনুভব করেছি তার চেয়ে বেশি ভারাক্রান্ত বোধ করেছি বইটির তথ্যবহূলতায়। আর এত বেশি পশুপাখি নিধনের কাহিনি না থাকলেও বোধহয় চলতো, কখনো কখনো বেশ খারাপই লাগছিল। এই দুই কারণেই বইটি শেষ করতে অনেকটা সময় লেগে গেলো।
Profile Image for Kishore.
103 reviews
August 30, 2024
9. They had an expedition to kill a tiger early in the morning, and they were successful in it.
10. A was enthralled by the view from Marianna's study room window.
11. Jaswant told a story about Sugan Singh.
12. Jaswant and A, upon hearing a gunshot, began following a jeep. Jaswant caught up with them and inquired about their hunting activities. Although the hunters passed derogatory remarks about forest ranger Jaswant, he let them go but mentioned to A that he would teach them a lesson. A discovered a sambar deer that had been shot in the belly and was panting with pain. With tears in his eyes, Jaswant shot the deer in the head to end its suffering.
13. Ghosh Da dropped Marianna off to see A after hearing about his fever. They grew closer that day, talking and sharing a meal of semolina pulao that Marianna had prepared. She gifted him a book to commemorate the day, and they became close friends.
14. A bison was injuring both humans and animals, and no one had been able to kill it. Jaswant, Tabar, and A went on an expedition to kill the bison, and they were successful.
15. Ghosh, Marianna, and A had a picnic on the banks of the estuary of the Koyel and Orang rivers. A was mesmerized by the idyllic setting. Ghosh Babu cautioned him against getting involved in any matters related to this place and advised him to distance himself from Jaswant.
While returning from the picnic at night, A was attacked. Although he was shot at twice, the assailant missed. A went to Jaswant's house, informed him about the incident, and spent the night there. The next day, they went to the location of the attack.
17. A found a love letter from Marianna in one of her books. The letter was written by a married man named Sugata.
18. One night, A saw Sumita and Jaswant getting close and realized they were having an affair.
19. Jaswant, Lal, and Marianna took a trip to Shirinburu to meet Sugata, who had arrived there a few days earlier. They went hunting together. It is clear to Lal that Ghosh is a DISSIDENT of Jaswant.
20. a tiger killed Sugata. A found a letter in Sugata's purse where he learned that Sugata's wife was a close friend of Marianna. The letter revealed how much Sugata loved her.
21. Sumita Boudi is pregnant.
22. Lalsaheb, or A, executed his first hunt—a cheetah. 🐆 Jaswant devised a plan to teach Jagdish Pandey a lesson by throwing their jeep off a cliff to kill them.
25 & 26. Marianna sent Lalsaheb a letter asking him to come to her house. When he arrived, he gave her Sugata's blood-soaked final letter. He also revealed that he had read the letters found in the book. Later that night, Marianna knocked on Lal's door in terror, claiming she had seen Sugata in her room and that he was getting closer to her. Lal requested her to sleep in his room.
27. Jagdish Pandey and his cohorts were not dead but were severely injured. Jaswant is now concerned about both his and Lal's lives.
28. Jaswant confided a secret to Lal: Sumita is pregnant with his child.
30. Lal's one-year contract ended and was not renewed, leaving him gloomy because he had fallen in love with the place.
31. Jaswant met Lal for the last time before Lal's departure. A day earlier, Lal had introduced his successor, Bikash Sen, who was quite different—modern and inclined towards Western things.
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Saswati Sarkar.
2 reviews
January 4, 2024
🍁বই - কোয়েলের কাছে ।
🍁লেখক - বুদ্ধদেব গুহ ।
🍁প্রকাশনা - আনন্দ ।
🍁পাঠ প্রতিক্রিয়া - শাশ্বতী সরকার ।

কাহিনী আরম্ভ হয় এক শহুরে যুবককে নিয়ে , যিনি একটি কাগজ কোম্পানির ফরেস্ট অফিসারের চাকরি নিয়ে জঙ্গল-পাহাড় ঘেরা রুমান্ডিতে এসে পড়ে । তার সেই এক বছরের জঙ্গলবাসের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাস ।

শুরুতেই স্বাভাবিকভাবেই তার বন - পাহাড়ের নির্জনতায় মানিয়ে নিতে অসুবিধা হলেও ক্রমশ সেই সমস্যা সে কাটিয়ে উঠতে শুরু করলো যখন তার পরিচয় হলো সেখানকার ফরেস্ট রেঞ্জার যশয়ান্তের সঙ্গে । যশয়ান্তের এক অদ্ভুত আদিমতার সংস্পর্শ পেতে পেতে সে চিনতে শুরু করলো বুঝতে শুরু করলো প্রকৃতিকে - অরণ্যকে - পাহাড়কে । শিখতে শুরু করলো শিকারের খুঁটিনাটি ।
মেতে উঠলো বন পাহাড়ের , মহুয়া ফুলের নেশায় ।

একদিকে যেমন শহুরে লালসাহেব নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিল বনজীবনের সঙ্গে অন্যদিকে তেমনই আবিষ্কার করছিল এই বনকে কেন্দ্র করে বনের আশেপাশের মানুষের জীবনের নানা বাঁক যা কোয়েল নদীর মতই প্রাণবান এক - প্রবাহ ।

মারিয়ানার জীবনের প্রেম , সুমিতা বৌদির অতৃপ্ত কামনা , লালতির সোহাগ , জগদীশ পাণ্ডের হিংস্রতা আর যশয়ান্তের আদিমতা -- এগুলি এমনভাবে আস্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে তাকে যা থেকে মুক্ত হওয়া অসম্ভব ।

সেই জঙ্গল - পাহাড় - প্রকৃতি , মহুয়া ফুলের নেশা ধরানোর সুবাসের মাঝেই কিছু মানুষের জীবনে ঘটে চলা নানা ঘটনা ; ভালোবাসা - প্রতিশোধ - প্রতিহিংসার গল্প তার কোলে জড়িয়ে রাখে কোয়েল নদী ।

সবশেষে বলি , বইটি আমাকে মুগ্ধ করেছে । পড়তে পড়তে যেন মনে হয়েছে পৌঁছে গেছি পালামৌর জঙ্গলে কোয়েল নদীর কাছে । যেখানে রোদ ঝলমলে উপত্যকা থেকে যেন ভেসে আসছে --
" I had an inheritance from my father .
It was the moon and the Sun .
I can move throughout the World now .
The spending of it is never done. "
Profile Image for Asikul Islam.
14 reviews4 followers
April 11, 2020
ভবঘুরে আমার পাহাড় আর জঙ্গলের প্রতি নেশা চিরকালের। কিন্তু এই বই সেই নেশাকে করে দিয়েছে আর প্রবল আর গভীর। আমার শেষ বয়সে পাহাড়ে বাস করার ইচ্ছেটাকে আরো বেশি অদম্য করে তুললো৷

যেসব বই শেষ করার পর গভীর বিষন্নতায় ভরা এক অসীম ভালোলাগার সন্ধ্যান পাওয়া যায় সেসব বইয়ের দলেই রয়ে যাবে কোয়েলের কাছে বইটি। আমার পড়া সেরা বইগুলোর দলেও জায়গা করে নিবে নিঃসন্দেহে।

পাহাড় আর জঙ্গলের এমন জীবন্ত আর দূর্দান্ত বর্ণণা আগে পড়িনি। বুদ্ধদেব গুহ মানেই পাহাড় আর জঙ্গলের জীবন্ত সুন্দর আখ্যান। পালামৌর রুমান্ডি পাহাড় আর জঙ্গল এবং তাদের মাঝে জীবন্ত কোয়েল নদীর কি অসম্ভব সুন্দর বর্ণনা৷ কলকাতার শহুরে মাখনবাবু এক কাগজ কোম্পানীর ফরেস্ট অফিসার হিসেবে সেখানে যায়। গিয়েই পায় যশোয়ান্তের মতো ভবঘুরে বোহেমিয়ান এক যুবককে। আস্তে আস্তে মাখবাবু হয়ে উঠেন পাকা শিকারী। জঙ্গল আর পাহাড়ের গভীর প্রেমে নিজেকে আবিস্কার করেন পূর্ন এক মানুষ হিসেবে। মারিয়ানার মতো বন্ধু আর সুমিতা বৌদির মতো ছত্রছায়া তার সেই পাহাড়ি জীবনে আনে নতুন স্বাদ। কিন্তু শেষ পরিণতি কি আসলেও এমন সুন্দর থাকে?

যশোয়ান্ত চরিত্রটা আমার কাছে আগাগোড়া এক মুগ্ধতার নাম। তার ভবঘুরে সাহসী আর উত্তাল জীবন আমাকে আমার অদূর ভবিষ্যতে দারুন ভাবে প্রভাবিত করবে। আমি যে চিরকাল ধরে যশোয়ান্তের মতোই একটা প্রকৃতি, পাহাড় আর জঙ্গলের কোলে ঘুরে উড়ে বেড়ানো ভবঘুরে জীবন চাই।

সবকিছু মিলিয়ে এই বই এক মুগ্ধতার নাম। যে মুগ্ধতার ছাপ সহজে মুছবেনা কোনো ভাবেই।

বইঃ- কোয়েলের কাছে
লেখকঃ- বুদ্ধদেব গুহ

পার্সোনাল রেটিংঃ- ৪.৭/৫
Profile Image for Pratik Kumar Dutta.
85 reviews1 follower
July 24, 2025
প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে বা প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা উপন্যাস আগেও অনেক লেখা হয়েছে এবং পরেও অনেক লেখা হবে; কিন্তু বুদ্ধদেব গুহ-র লেখা 'কোয়েলের কাছে' উপন্যাসটি কোথাও গিয়ে যেন একটু আলাদা.. প্রকৃতির সাথে হঠাৎ সংস্পর্শে চলে আসা মানুষ ও প্রকৃতির মাঝে জীবন কাটিয়ে দেওয়া কিছু মানুষ কিভাবে একে অপরের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে চলছে- তার এক সুন্দর বর্ণনা ফুটে উঠেছে বুদ্ধদেব গুহ-র কলমের মধ্যে দিয়ে.. তবে এই উপন্যাস কিন্তু শুধুমাত্র প্রকৃতির বর্ণনাতেই ভরে ওঠেনি; জীবনের নানান টানাপোড়েনের গল্প ধরা পড়েছে প্রতিটি পাতায়.. রুমান্ডি ও কোয়েল নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি গ্রাম্য সংস্কৃতি হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে ভেজ্জা নাচ ও সারহুল নাচ-ও.. বুদ্ধদেব গুহ-র চরিত্রচর্চার সুন্দর নিদর্শন হিসাবে পাঠকের মনে জায়গা করে নিয়েছে ঘোষদা, সুমিতা বৌদি, মারিয়ানা, যশোবন্ত ও জগদীশ পান্ডের মতো বর্ণময় সব চরিত্র.. যাদের উপস্থিতি এই কাহিনীকে করে তুলেছে আরও বেশি প্রাণবন্ত.. প্রকৃতিকে সঙ্গে করে বেড়ে ওঠা এই উপন্যাস যেমন প্রকৃতিকে চেনায়, তেমনই চেনায় প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা মানুষজনকেও..
Profile Image for Yasir Arafat.
96 reviews
January 11, 2024
এখানে কোয়েল কোনো পাখির নাম না, একটি নদীর নাম। ঝাড়খণ্ডের পালামৌ অঞ্চলের একটি নদী।
এই উপন্যাসে কাহিনীর চেয়ে প্রকৃতির বিবরণই বেশি। তবে পড়তে একটুও একঘেয়ে লাগেনি।

কলকাতার ‘লালসাহেব’ বা ‘মাখনবাবু’ যখন কাগজকলের চাকরি নিয়ে রুমান্ডি শহরে আসে, তখন এই বিচ্ছিন্ন নির্জন জঙ্গলে কী করে দিন কাটবে সেটা ভেবেই অস্থির ছিল। তবে ধীরে ধীরে প্রকৃতিকে আপন করে নেয়। একসময় উপলব্ধি করে কলকাতার চেয়ে এই বনজঙ্গলই তার কাছে বেশি প্রিয়।

এই বইটা পড়ার সময় আমার অবস্থাও প্রায় একই ছিল। প্রথমদিকে শুধু প্রকৃতির বর্ণনা দেখে খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছিলাম। একবারে খুব বেশি পৃষ্ঠা পড়তে পারছিলাম না। তবে এক তৃতীয়াংশ পড়ার পরে স্বাভাবিক গতি এসে যায়। তখন বেশ তরতরিয়ে এগিয়ে গিয়েছি। আর পড়া শেষ করে মনে হয়েছে বইটি আর একটু বড় হলে ভালো হতো, আর একটু সময় প্রকৃতির রাজ্যে ডুবে থাকতে পারতাম।
Profile Image for Satyabrata Mondal.
1 review
January 31, 2024
আনন্দ স্টোরে কিনতে টিনটিন কিনতে গিয়েছিলাম। বলা হলো অন��য একটা বই নিলে ১০০/- ছাড় পাবেন। এই বইটার ব্লার্ব টা পরে ভালো লেগেছিল বলে এটা নিয়েছিলাম।
প্রকৃতি আমার অত্যন্ত প্রিয় বিষয়। আর জঙ্গল হলে তো কথাই নেই। সেই ছোটবেলায় বিভূতিভূষণের আরণ্যক , চাঁদের পাহাড় পড়ে জঙ্গলের প্রেমে পড়েছিলাম। আবার বহুদিন পর পড়লাম এই 'কোয়েলের কাছে ' বইতে। বইয়ের প্রথম কয়েক লাইন পড়েই বুঝেছিলাম এটা আমার টাইপ।
অরণ্যে ঋতু পরিবর্তন, রোমাঞ্চকর শিকার অভিজ্ঞতা, খাওয়া দাওয়া, স্থানীয় মানুষের কাহিনী পাঠককে মাতিয়ে রাখে। যশোয়ন্ত, সুমিতাবৌদি, মারিয়ানা এই চরিত্র গুলো বেশ অনেকদিন মনে রয়ে যাবে।
পড়তে পড়তে বার বার মনে হয়েছে আমি যেন জঙ্গলেই আছি। সামনেই দেখতে পাচ্ছি সুহাগী নদীর তীরে সবাই মিলে পিকনিক করা বা যশোয়ন্ত এর সাথে হেঁটে হেঁটে জঙ্গল চেনা। কিছু অসাধারন কনভারসেশন আছে। সব মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছে আমার।
1 review
July 9, 2024
যশোয়ন্ত একটু চুপ করে থেকে বলল, মনের ভালবাসা তো সবাইকে বাসা যায় না লালসাহেব। সে একজনকেই বাসি। তবে কি জানো, সে ভালবাসার তো গাঁ বদল হয় না; সে ভালবাসা এক গাঁয়েই থাকে। জীবনে একজনকেই তেমনি করে ভালবাসা যায়। জীবনের অন্য ভালবাসাগুলো সব সেই একই ভালবাসার ভেঙে যাওয়া আয়নার টুকরো-টাকরা। টুকরোগুলো এক জীবনে দু'হাতে কুড়িয়ে জড়ো করেও আর সে ভাঙা আয়না জোড়া লাগে না। যে আয়না ভাঙে ; তা ভাঙেই।
~ বুদ্ধদেব গুহ
Profile Image for Yasin Akib .
60 reviews4 followers
June 27, 2021
অনেক সময় নিয়ে ধীরে ধীরে শেষ করলাম। শেষ করতে একটুও ইচ্ছে করছিল না। তাও শেষ করলাম। এখন মন খারাপ লাগছে। না শেষ করলেই পারতাম। চরিত্রগুলোর সাথে কখনো দেখা হবে না। কথা বলা হবে না। হাত মেলানো হবে না। কারণ চরিত্রগুলো কাল্পনিক। কিন্তু মনে হয় না কাল্পনিক। বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না যে কাল্পনিক। মন খারাপ ভাব যেতে আরো ২-৩ দিন তো লাগবেই। এখন কী করা যায়? এক কাপ কফি?
Profile Image for Rafsan.
149 reviews
August 8, 2021
I never liked Bangla literature much because it is so much concentrated on Poverty, Social Anarchism and weird SEXUAL description. I just never understood, Why so much SEX in Bangla Literature and made it boring after a while.

But This Buddhadeb Guha guy is something else! He is the maestro of sexual attraction, period. If you feel like horny, just read some GUHA, that's my moto!! :D
Profile Image for Rahul Rahul.
1 review
Read
May 31, 2022
নিজের চার দেয়াল ছাড়িয়ে কখন যে পালামৌ এর জঙ্গলে এসে পড়েছি কোনো ও খেয়াল ছিল না। শিকার আছে , রোমাঞ্চ আছে , রোমান্টিকতায় মোড়ানো অনাবিল আকর্ষণ ।এক অদ্ভুত আনন্দ প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খোঁজাটা । অনেক চাওয়া পাওয়া অনেক না পাওয়া আছে , যা নিখাদ এক জীবনদর্শন উপহার দিতে পেরেছে । তারা পড়েছেন , যারা পড়ছেন ও যারা পড়বেন তাদের জন্য অনেক শুভকামনা রইলো।।
Profile Image for Md. Nahidul Islam.
32 reviews1 follower
February 26, 2024
কখনও কখনও কোন বই পড়লে মনে হয় আমার এই জীবনটা এরকম না হলেও পারত। মনে হয় আমার জন্ম হওয়া উচিত ছিল হয়তো আরও ১০০ বছর আগে। এই নটা পাঁচটা অফিস শেষে বাড়ি ফেরা, ইট পাথরের জঙ্গলে জীবনটা পার করে দেয়ার কথা ছিল না। কোন একটা বনে জঙ্গলে, আদিম অকৃত্রিম একটা জীবন কাটানোর কথা ছিল।

সাদামাটা বইটি সেই অনূভুতি টা আরেকবার মনে করিয়ে দিল।
Profile Image for Kinshuk Majumder.
205 reviews8 followers
March 14, 2024
"কোয়েলের কাছে" - বুদ্ধদেব গুহ
আনন্দ পাবলিশার্স
মুদ্রিত মূল্য ₹২০০ (২০১৮)


"প্রকৃতি কে ভালোবাসার মতো ব্যথানীল অনুভূতি যে আর নেই..."

"পৃথিবীতে কারুকে না কারুকে দুঃখ দিয়ে অন্য কারুকে আনন্দ দেওয়া সম্ভব নয়।...ন্যায় অন্যায়টা রিলেটিভ ব্যাপার।"

"প্রকৃতি নিজের হাতে তুলি ধরে নিজের হাতে বাঁশি ধরে সেই ছবি রোজ আঁকেন, আবার রোজ মুছে ফেলেন। অথচ প্রতিদিনের ছবিই বিচিত্র।"

"মেয়েরা যাদের ভালোবাসে, তাদের সঙ্গে বোধহয় সত্যিকারের বন্ধুত্ব করতে পারে না, কারণ তাদের সত্তা সবসময় সেই পুরুষের ব্যক্তিত্বে পরিব্যাপ্ত থাকে, সবসময় ওরা ভয় পায়, পাচ্ছে ধরা পড়ে। ফলে ওরা সেই পুরুষের কাছে সবসময় উচ্চমন্যতা দেখায় বা হীনমন্যতায় ভোগে। মনে মনে মরে থাকে বলে।"

"মনটা যখন খুব নির্লিপ্ত থাকে, তখন বোধহয় কারোই কথা বলতে ইচ্ছে করে না। তখন চুপ করে থাকতে ইচ্ছে করে।"

"মৃত্যুর আগে সবাই একটু শান্তি চায়।"

"মানুষের মনকে যে লখীন্দরের বাসরঘরের মতো পরিসরে আটক রাখা যায় না এবং গেলেও যে তাতে সাপের মত সূক্ষ শরীরে ভালোবাসার প্রবেশ সম্ভব... ভয় নেই। তোমার কোনও ভয় নেই। প্রেতাত্মা হয়ে তোমাকে ভয় দেখাব না, বরং স্বর্গ যদি থেকে থাকে, সে স্বর্গের দরজায় বসে তোমার জন্য অপেক্ষা করব- কবে তুমি জঙ্গলের গন্ধ মেখে রাধাচূড়োর পুষ্পস্তবকে সেজে, সেই দারুন দরজায় এসে পৌঁছবে -তার দিন গুনব।"

"জীবনের যে সব বড় বড় পাওয়া, সমস্ত শরীর মনকে এক স্বর্গীয় দ্যুতিতে ভর দিয়ে যায়, যার রোমাঞ্চ সমস্ত শরীর, সমস্ত সত্তা বারে বারে শিহরিত হয়, সেইসব অনুভূতির স্বীকৃতি একটি বা দুটি গল্প লিখে দেওয়া যায় না। হয়তো তাঁর স্বীকৃতি কিছু দিয়েই দেওয়া যায় না। তার চেয়ে নিজের মনে মনে, নিজের একাকিত্ব, নিজের শীতার্ত দিনগুলি সেই সব দুর্মূল্য মুহূর্তর উষ্ণতার স্মৃতি দিয়ে আজীবন ভরিয়ে রাখাই ভালো।"

"যেটা সত্যি, সেটা সত্যিই। সত্যির সূর্যটাকে, চোখের সামনে দু'হাত তুলে কি বেশীদিন আড়ালে রাখা যায়?"

"তুমি যা দিয়েছো আমাকে, তোমার যা হারিয়েছে, তা তোমার অসীম ভান্ডারের এক কণা মাত্র। কিন্তু আমার শূন্য ভিক্ষাপাত্র সেই পরশ পাথরের এক কণায় সোনা হয়ে গেছে। সত্যিই সোনা হয়ে গেছে। ... আমার সকলকে শুনিয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে, আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি। আমাকে যে যাই বলুক, মারুক, বকুক, আমাকে অপমান করুক, অসম্মান করুক -সমস্ত পৃথিবী আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াক, তবু আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে আমি সমস্ত পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসি। প্রতিবারের নিঃশ্বাসের সাথে আমি তোমায় নতুন করে ভালোবাসি।"

"শীতের সন্ধ্যার একটি আশ্চর্য হৃদয়স্পর্শী রূপ আছে। হলুদ আলোয় ক্রন্দনরতা শীতের বন থেকে, ঘাস থেকে, ফুল থেকে একটি করুণ শৈত্য উঠে আমার বুকে এসে বাসা বাঁধে। বুকের মধ্যে একটা অনামা রাগের, আনামা বাজনার বিচ্ছিন্ন আলাপ গুমরে গুমরে ওঠে।"

"ভালোবাসার মানে যদি কাউকে স্তুতি করা, কাউকে চাওয়া হয়, তাহলে ভালোবেসেছি। এমন মানুষ কোথায় যে, কখনও না কখনও কাউকে না কাউকে চায়নি? তবে ভালোবাসায় যে পাওয়ার দিকটা থাকে, সে বাবতে আমার কোনো ‌অভিজ্ঞতা নেই। তাই ভালোবাসেছিও বলতে পারেন, আবার ভালোবাসিনিও বলতে পারেন। যদি কাউকে ভালবাসে থাকি, তাকে জোর করে অধিকার করার সাহস হয়নি।"

"বড় গাছ আমার খুব ভালো লাগে। ইচ্ছে করে আমি কোনো উষ্ণ গ্ৰীষ্ম সন্ধ্যায় দারুন ক্লান্ত হয়ে আমার সর্বস্ব এলিয়ে কোন গাছের ছায়ায�� বসে ক্লান্তি অপনোদন করি। আমার ইচ্ছে করে, তুমি কোন গাছ হও। কোন চেরি গাছ, কোন কৃষ্ণচূড়া গাছ কিংবা কোন জ্যাকারান্ডা গাছ, যার সুগন্ধি ছায়ায় বসে আমি বাঁচবার তাগিদ পেতে পারি।"

"আজকাল মাঝে মাঝে কেমন একটা আত্মহত্যার ইচ্ছা মনের মধ্যে উঁকি দেয়। অথচ আমার মতো‌ এমন তীব্রভাবে বাঁচতে বোধহয় আর কেউ চায়নি। তবু আজকাল আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না।"

"জীবনে একজনকেই তেমন করে ভালো বাসা যায়। জীবনের অন্য ভালোবাসাগুলো সব সেই একই ভালোবাসার ভেঙে যাওয়া আয়নার টুকরো-টাকরা। টুকরোগুলো এক জীবনে দু'হাতে কুড়িয়ে জড়ো করেও আর সে ভাঙা আয়না জোড়া লাগে না। যে আয়না ভাঙে, তা ভাঙেই।"

"তোমাকে মনে মনে অনেক চিঠি লিখব। চিঠিগুলো শুকনো শালপাতার মতো জঙ্গলে, নদীনালায় কালো পাথরে, হাওয়ায় হাওয়ায় গড়িয়ে বেড়াবে। সে চিঠি তো ডাকে যাবে না।"
Profile Image for Udayan.
319 reviews9 followers
February 20, 2017
Read it after so long and enchanted all over again.
Displaying 1 - 30 of 59 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.