Buddhadeb Guha (Bengali: বুদ্ধদেব গুহ) is a popular Bengali fiction writer. He studied at the well-known St Xavier's College of the University of Calcutta.
His novels and short stories are characterized by their dreamy abstractness and romantic appeal. His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels.
A highly successful chartered accountant by profession, and an accomplished musician, Guha is very urbane in his lifestyle. He was one of the first to create characters representing easy-going, upper middle-class modern Bengali families, whom readers could identify with, and that gave him instant popularity.
He is the recipient of many awards including Ananda Puraskar, 1976; Shiromani Puraskar; and Sharat Puraskar.
The Library of Congress has over fifty titles by him. His most famous novel, according to many, is Madhukori. It is considered a milestone in Bengali literature. He is also the creator of Rijuda, an imaginary character who moves about in jungles with his sidekick Rudra. The jungles that he wrote about were mainly in Eastern India.
খুব একটা ভালো লাগলো না। গল্পের প্লট বেশ দুর্বল মনে হয়েছে, বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি। প্রণয় ছাড়া আর কোনো চরিত্রকেই সেভাবে ভালো লাগেনি। কোথাও কোথাও বুদ্ধদেব গুহর পরিচিত স্টাইলে গল্পকথনের মাঝে জীবনদর্শন বিশ্লেষণের মুহূর্তগুলি ছাড়া তেমন কিছুই মনে রাখার মতো নয়।
১৯৯১ সালে প্রকাশিত বই, কিন্তু বইটির প্রেরণা হয়ত সে সময়ের নারী সমাজের যেই পরিবর্তন, বিশেষত স্বাধীনতায় এবং মানসিকতায় সেটাকে মাথায় রেখে। পর্ণা এবং কলি দুই বান্ধবী একটু অখণ্ড অবসর কাটাতে গিয়েছে পাহাড়ি হোটেল মন্দার এ। পর্নার ডিভোর্স হয়েছে ১ বছর হয়ে গেল, কলি এখনও বিয়ে করেনি। কলি ভালো চাকরি করছে, স্বাবলম্বী কিন্তু এখনও মা বাবার সাথেই থাকছে। পর্না ফিরেছে বাবা মার কাছেই। দুজন দুই মানসিক স্থিতি নিয়ে এসেছে মন্দার হোটেলে একটু রিফ্রেশ হতে। এখানে এসে পরিচিত হয় হোটেলের মালিক স্নিগ্ধ আর ম্যানেজার প্রণয় এর সাথে। এখানেই গল্পের শুরু। প্রথমত, দুইজন যতই আধুনিকা নারীকে represent করুক না কেন, দুইটি নারী চরিত্রই অতি মাত্রায় প্রগলভা। এত আবেগী কথায় গা গুলায়। স্নিগ্ধ এবং প্রণয় এর চরিত্র দুইটিও একই রকম আবেগী। মেয়ে দেখে গলে গেলাম টাইপ। একমাত্র দাদুর চরিত্রের কিছু কথাই ভালো লেগেছে। জোয়ান রিকশাচালক দলমার জন্য কলির যে sexual tension, সেটা বেশ বাস্তব বলে লেগেছে। বইটির সার বস্তু কিছুই নেই। কেবল পড়লাম। কোন কিছুই খুব বেশিদিন মনে থাকবে না।
⭐প্রকাশনী :- দেজ্ ⭐মূল্য :- ২৫০/- . ⭐প্রতিবার আমি বইটি শুরু করতাম, আর ওই জোর গেলে ১৭,১৮ পাতা পড়ে, গল্প শেষ। শেষ আর কিছুতেই করতে পারতাম না। কিন্তু এইবার একদম ভেবেই নিয়েছিলাম, শেষ করবো আর না পারলে আমি আর বই পড়বো না। আসলে জেদটা নেওয়া এরজন্য , এইবই আমি ২০২৩ এর জন্মদিনে উপহারে পাই। তাঁকে আর বইটি পড়ে মতামত দিতে পারিনি। তাই এত চেষ্টা যে শেষ করতেই হবে। যাক সে সব কথা ফালতু অনেক বকা হলো। আসি এবার বইয়ের কথাবার্তায় . ⭐বইয়ের বিষয়বস্তু :- দুইবন্ধু। পর্ণা এবং কলি। তাঁরা আসে কলকাতা থেকে নিদপুরা নামক একজায়গায় যা কলকাতারই খুব কাছে, ছুটি কাটাতে। একসুন্দর গ্রামো পরিবেশ এর মাঝে পুরোনো একবিশাল বাড়ি যা এখন *মন্দার হোটেল* নামে পরিচিত। সেই হোটেল এর কর্মচারী আছে বেশ কয়েকজন কিন্তু যাদের নিয়ে কথা বলা তারা হলেন, স্নিগ্ধ এবং প্রণয়। তারা দুজন স্টেশন থেকে সেই দুই বন্ধুকে নিয়ে আসে তাদের হোটেল এবং প্রায় ৭,৮ দিন তাদের ঘুরিয়ে দেখায় সেই নিদপুরা জায়গা, সেই পাহাড়ি এলাকা, আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এবং সেই হোটেল এ থাকাকালীন তাদের পরিচয় হয় এক বয়স্ক মানুষ বিধুভূষণ - র সাথে। তিনি ছিলেন স্নিগ্ধর দাদু। ⭐এবার কথা হচ্ছে তাহলে গল্প কি! গল্পটিতে প্রেমের আঁচতো আছে বটেই কিন্তু, সংক্ষেপে বলি, ⭐হোটেলের ম্যানেজার স্নিগ্ধ এবং তার অ্যাসিটেন্ট প্রণয় তারা ধীরেধীরে দুই বন্ধুকে পছন্দ করে এবং সাথে কলি এবং পর্ণাও তাদের পছন্দ করতে শুরু করে। বিধুভূষণও চাই পর্ণা এবং কলি কে স্নিগ্ধ ও প্রণয় এর হাতে তুলে দিতে, সে চায় তারা একে অপরের সাথী হোক। কিন্তু তা কি সত্যি সম্ভব !! এর মাঝে বিধুভূষণ ও ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন,,, এবং পর্না, কলি তাদেরও কলকাতা ফেরার সময় হয়, ছুটির দিন ফুরিয়ে আসে। তাহলে কি শেষ মেষ তারা চারজন দাদুর কথায় একে অপরের সঙ্গী হবে নাকি পর্ণার অতীত ভেবে পিছিয়ে পড়বে, পর্নারও বা অতীতে কি এমন ঘটে যা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াতে পর্না ভয় পায় ?? কলিও বা কেনো বিয়ে করতে বা কোনো জীবন সাথী বানাতে ইচ্ছুক নয় ?? প্রশ্ন আছে অনেক এবং তার উত্তর ও আছে, তার জন্য পড়তে হবে *অভিলাষ* লেখা 🖋️ বুদ্ধদেব গুহ। . ⭐ এবার বলি আমার মতামত :- প্রায় ২১৬ পাতার উপন্যাস। যা শেষ করতে আমি হিমসিম খেয়েছি রীতিমত। কিন্তু ওই যে বললাম, শেষ করতেই হবে এবং মতামতও জানাতে হবে। আমার খুব একটা ভালো লাগেনি আবার মোটামুটি ভালো লেগেছে। ভালো লেগেছে যা তা হলো - লেখার ধরণ, এবং কিছু কিছু উক্তি যা গল্পের মাঝে মাঝে রয়েছে যা আমার ভীষণ ভালো ও লেগেছে। কিন্তু ভালো লাগেনি যা তা হলো - ভীষণ বকবক যা না লিখলে গল্পটা হয়তো আরও বেশি ভালো লাগতো পাঠকদের। দুমদাম বহুযুগ পিছনে চলে যাচ্ছে চরিত্ররা যা বুঝতে বেশ সময় লাগছে। এক্সট্রা বেশ হেজানো ব্যাপার আছে যা খুব বিরক্ত কর। . . ⭐একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। আপনাদের মতামত জানতে আগ্রহী। . ⭐আমি বইটিকে তিনটি তাঁরা দিয়েছি। ⭐⭐⭐। আপনারা কয়টি তাঁরা দিতে ইচ্ছুক!! ইতিমধ্যেই যারা পড়ে ফেলেছেন।
এই শহরে যখন ডোডো পাখির মতো লুপ্তপ্রায় প্রেম, মধ্যমেধার ম্লানিমার রাজপাট সর্বত্র, ঠিক যখন মানুষ সভ্যতার কুঠার হেনে গাছের শরীরে করছে ক্ষতচিহ্ন, যখন আমাদের চেনা চরাচরে কোথাও উড়ে এসে বসে না প্রজাপতি অথবা মনকেমনের উডডাক, কাজ হারায় অরণ্যের পোস্টম্যান কারণ মানুষ আর চিঠি লেখে না… ঠিক তখন, এক ভঙ্গুর সময়ে, জন্মদিনের প্রাকমুহূর্তে আমরা পেলাম ভালোবাসার পরম একক, এক ভার্সেটাইল জিনিয়াস বুদ্ধদেব গুহকে। আমাদের সকলের প্রিয় লালাদাকে। একটি জার্মান শব্দ দিয়েই তাঁর আত্মাকে চেনা যায়। তা হল – পারোজিয়াস্ত। স্পষ্টবাদী, সত্য বলতে ভয় পান না, পুরস্কার ও পদের মোহ দূরে সরিয়ে তিনি একা হেঁটে গিয়েছেন এবং সঙ্গে করে আমাদের নিয়ে গিয়েছেন কখনও মহুয়াটাঁড়, কখনও মাড়োমার, কখনও বা পলাশতলি বা হাটচান্দ্রা। তাঁর অনন্যতা তাঁর গল্প উপন্যাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অরণ্য আত্মায়, অচিকিৎস রোম্যান্টিক প্রণোদনায়। কিশোরের স্বপ্নে আজও ভাসে তাঁর লেখা ‘গুগুনোগুম্বারের দেশে’ কিংবা ‘অজগরের দেশে।’ কিশোরী নর্তকী হয়ে ওঠে, যখন চোখের সামনে খুলে যায় ‘বাবলি,’ যে বইটি বিক্রি হয়েছিল দেড় লক্ষ কপি।আর আমরা যারা এই নীল গ্রহের উপর অবিরাম হেঁটে যাই বুকে যোজন যোজন উধাও নিয়ে, যারা সব থেকেও বুকের মধ্যে ভিখারি, কাঙাল, তারা নিজেদের খুঁজে পাই একটু উষ্ণতার জন্য, মাধুকরী, সবিনয় নিবেদন, অবরোহীর মতো উপন্যাসে। তাঁর উপন্যাসে অরণ্যের পটভূমিকায় গভীরতর হয়েছে মানব-মানবীর সম্পর্কের গভীর রসায়ন। বাঙালি ছেলেমেয়েদের বার্থ সার্টিফিকেটে দেখা গেছে এমন সব নাম, যা তাঁরই উপন্যাসের চরিত্র। এটাই তো পাওয়া, এটাই তো পুরস্কার এটাই তো জিতে যাওয়া।। 🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂 অভিলাষ বইটির কাহিনী শুরু ��য় দুজন স্বাধীন নারীকে নিয়ে, যারা ঘুরতে কলকাতার কাছাকাছি একটি জায়গায়। সেখানের মন্দার হোটেলের ম্যানেজার আর ম্যানেজারের এসিটেন্টকে দেখে তাদের মাঝে সুখের অভিলাষ হয়। গল্পের প্লট আধুনিক, শিক্ষিত সমাজ। এখানে কলি আর পর্ণা দুই বান্ধবী, যারা নিজেরা চাকরী করছে। স্বাধীন হওয়ায় বিয়ে-শাদি বা ভাব ভালোবাসায় তাদের তেমন ইচ্ছে নেই। পর্ণার আগে একবার বিয়ে হয় এবং সেখান থেকে সে নিজে ডিভোর্স দিয়ে আসে। আর অপরদিকে কলি এত সহজেই বিয়ে করতে চায়না। কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন তারা ঘুরতে যায় সেই হোটেলে। হোটেলের ম্যানেজার আর এসিটেন্ট ম্যানেজার। তারা দু'জনই শিক্ষিত যুবক। শুধু ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষিত নয়, তারা আসলেই শিক্ষিত। বিভিন্ন সময় তাদের সাথে সময় কাটিয়ে বড়ই অস্থির হয়ে ওঠে কলি আর পর্ণা, তাদের মনেও জেগে ওঠে সুপ্ত অভিলাষ। এদিকে ম্যানেজারের দাদু যে কিনা পর্ণা আর কলিকে দেখে জেগে ওঠেন ভাবেন তার দুই নাতিকে এই দুই কন্যার সাথে বিয়ে করিয়ে যাবেন। কন্যারাও দাদুর ইচ্ছা বুঝতে পারে, নাতিরাও পারে। কিন্তু সুখে থাকার অভিলাষ তো সবারই হয় বাস্তবতা তার কতখানিই বা পূরণ করতে দেয়।... 🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂 হয়তো এই উপন্যাস মাধুকরী, চাপরাশের মতো মোহময় করে তুলতে পারেনি কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় বর্তমান সমাজব্যবস্থা, চিন্তাভাবনা, নানা সমস্যার সাথে খুব মিল পাওয়া যায় এবং সে জীবনবোধের কথাগুলো ভালো লেগেছে। আর বুদ্ধদেব গুহর কথার ফাকে ফাকে গানের লাইন তো আছেই। সবমিলিয়ে বইটির সাথে খারাপ সময় কাটেনি।
আজ লেখকের শুভ জন্মদিন। যে-মানুষটা সারাজীবন নিজেকে নিয়ে, নিজের আশেপাশের মানুষকে নিয়ে, শব্দ নিয়ে, ভাবনা নিয়ে, ইচ্ছে নিয়ে, সর্বোপরি সীমাহীন রোম্যান্স আর অ্যাবস্ট্রাকশন নিয়ে যথেচ্ছ দুষ্টুমি করে এসেছে। ওঁর সবকিছুই, কল্পনার পুকুরে বাস্তবের পদ্ম, না কি অবাস্তব অমলতাসের শাখায় কল্পনার বসন্তবৌরি, বোঝা অসম্ভব। সব তাস দেখিয়ে দেওয়া ইলিউশনের জাদুকরের একটাও যন্ত্র লাগত না। স্টেজের মধ্যমণি হয়ে ক্রমাগত বোকা বানিয়ে যেতেন সবাইকে, অমন সার্ভিস রিটার্ন করবে কার এত বুকের পাটা?
অভিলাষ বইটির কাহিনী শুরু হয় দুজন স্বাধীন নারীকে নিয়ে, যারা ঘুরতে কলকাতার কাছাকাছি একটি জায়গায়। সেখানের মন্দার হোটেলের ম্যানেজার আর ম্যানেজারের এসিটেন্টকে দেখে তাদের মাঝে সুখের অভিলাষ হয়।
গল্পের প্লট আধুনিক, শিক্ষিত সমাজ। এখানে কলি আর পর্ণা দুই বান্ধবী, যারা নিজেরা চাকরী করছে। স্বাধীন হওয়ায় বিয়ে-শাদি বা ভাব ভালোবাসায় তাদের তেমন ইচ্ছে নেই। পর্ণার আগে একবার বিয়ে হয় এবং সেখান থেকে সে নিজে ডিভোর্স দিয়ে আসে। আর অপরদিকে কলি এত সহজেই বিয়ে করতে চায়না। কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন তারা ঘুরতে যায় সেই হোটেলে। হোটেলের ম্যানেজার আর এসিটেন্ট ম্যানেজার। তারা দু'জনই শিক্ষিত যুবক। শুধু ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষিত নয়, তারা আসলেই শিক্ষিত। বিভিন্ন সময় তাদের সাথে সময় কাটিয়ে বড়ই অস্থির হয়ে ওঠে কলি আর পর্ণা, তাদের মনেও জেগে ওঠে সুপ্ত অভিলাষ। এদিকে ম্যানেজারের দাদু যে কিনা পর্ণা আর কলিকে দেখে জেগে ওঠেন ভাবেন তার দুই নাতিকে এই দুই কন্যার সাথে বিয়ে করিয়ে যাবেন। কন্যারাও দাদুর ইচ্ছা বুঝতে পারে, নাতিরাও পারে। কিন্তু সুখে থাকার অভিলাষ তো সবারই হয় বাস্তবতা তার কতখানিই বা পূরণ করতে দেয়।......
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আমি বুদ্ধদেব গুহর মাধুকরী পড়ে খুবই অভিভূত হয়েছিলাম, সেজন্য বইটি পড়া। সে হিসেবে আমি আশাহত। তবু কিছু কিছু জায়গায় বর্তমান সমাজব্যবস্থা, চিন্তাভাবনা, নানা সমস্যার সাথে খুব মিল পাওয়া যায় এবং সে জীবনবোধের কথাগুলো ভালো লেগেছে। আর বুদ্ধদেব গুহর কথার ফাকে ফাকে গানের লাইন তো আছেই। সবমিলিয়ে বইটির সাথে খারাপ সময় কাটেনি।
গরমের ছুটিতে পড়ার জন্য ঝরঝরে বাংলা বই কিন্তু কাহিনী চিত্রায়ণ বেশ দুর্বল; একঘেয়ে। তবে রিলাক্সিং- মধ্যরাতে জঙ্গলের আদিম নিস্তব্ধতায় হারিয়ে যাওয়া- পাহাড়, প্রকৃতি এইসব টিপিক্যাল জিনিস। ।।
"জীবনে করার মতো কিছুই করার না থাকলে খামোখা বেশি বেঁচে লাভটা কি? পৃথিবীতে মানুষ বড় বেশি হয়ে গেছে। কাজ ফুরালেই চলে যাওয়া উচিত।"
"জীবিত থাকা আর বেঁচে থাকায় তো অনেক তফাৎ। যতদিন জীবিত থাকা যায় ততদিন বাঁচাই ভালো।"
"ট্রেনটা ক্রমশঃই দূরে , আরো দূরে চলে যেতে লাগলো। তারপর বাঁক নিলো আউটার সিগন্যালের কাছে গিয়ে, কৃষ্ণচূড়ার রঙের দাঙ্গা বাধানো বনের মধ্যে। দেখা গেল না আর। হঠাৎই প্লাটফর্মটা বড় ফাঁকা হয়ে গেলো। রৌদ্রালোকিত কিন্তু অন্ধকার, মানুষে ভরা কিন্তু খাঁ খাঁ।"
"যে মানুষ অন্যকে দুঃখ দিতে না পারে, এই সংসারে তার সুখী হবার কোনোই সম্ভাবনা নেই। দুঃখের সঙ্গেই তার হাতকড়া। সারাটা জীবনই।"
"সব কষ্ট নিজের বুকে নিয়েই বাঁচতে হয় আজীবন, এই সংসারের কারাগারে। এ কারাগারে ফটক থাকে না, গরাদ থাকে না, কিন্তু এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কোনো কারাগারই দেয় না।"
"সংসারে দুজন গুণীর কখনও বিয়ের মধ্যে যাওয়াই উচিত নয়। সেই সব সম্পর্ক হয় ছিঁড়ে যায়, নয়তো বড় কষ্ট করে টিকিয়ে রাখতে হয়। একজন গুণী হবে, অন্যজন তার গুণগ্ৰাহী। সেই দাম্পত্যই সবচেয়ে সুখের দাম্পত্য।"
"কারো প্রতি ভালোবাসাটা নিজস্ব গতিতে যতখানি এগোয়, বাধায় আপত্তিতে অন্যায় সমালোচনায় তা বোধহয় অনেকই বেশি গতি পায়। জেদ ধরে যায় মানুষের।"
"যে কাছে থাকলে ভালো লাগে, সে কাছে থাকতে চাইলেও কাছে তাকে রাখা যায় না। আর দূরে চলে গেলে সে সহজে আবার কাছেও আসে না। সোজা কথা সোজা করে বলতে চাইলেও বলা যায় না। জীবনের ট্রাজেডি এই।"
"আমি তোমাকে ভালবাসি - এই প্রাগঐতিহাসিক সরল সত্যবন্ধ বাক্যটি কেউ যদি উচ্চারণ করতে পারেও তবে আজকাল তা যাত্রার ডায়ালগ্ এর মতোই শোনায় এবং যে শোনে সেও হয়তো ভাবে যে, এ বড় সস্তা ভালোবাসা।"
"যাওয়া হলো না, কত অদেখা জায়গা দেখার ছিল, দেখা হলো না। অথচ জীবন কী দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।"
"সুখ কখন ও নিজের সুখ দিয়ে হয় না। পরের সুখটাই সুখ। অন্যকে সুখী দেখার মধ্যে যে সুখ, সেই সুখ তুই নিজেকে সুখী করে কিছুতেই পাবি না। অন্য দশজনের মধ্যেই তোর সুখ লুকিয়ে থাকে। সরাসরি তা দেখা যায় না।"
"কত মানুষের কতরকম দুঃখ থাকে, যা নিরসনের ক্ষমতা অন্যর হাতে নেই। এতোজনের দুঃখের কথা ভাবলে নিজের কোনো দুঃখকেই আর বড় বা বিশেষ বলে মনে হয় না।"
"একটু পরেই দিন ফুরোবে। জীবনও বোধহয় এমনকি করেই ফুরিয়ে যায়। অনুবধানে। কিছু কিনে, কিছু নেড়েচেড়ে, আর কিছুর প্রতি লোভাতুর দৃষ্টি মেলে, এ্ক সময়ে হঠাৎই উপলব্ধি করতে হয় যে, বেলা পড়ে গেছে। কত কিছুই কেনা হলো না, নাড়াচাড়া হলো না, আলো ঝলমল কত দোকানে ঢোকা পর্যন্ত হলো না। তীব্র অভিলাষের সাথে কত কিছুই অনিচ্ছায় ছেড়ে আসতে হলো অবধানে এবং অনবধানে, এই জীবনে।"
"কেউই চিরদিন একা থাকে না, যদিও একাকীত্বই আমাদের শেষ গন্তব্য। একমাত্র সঙ্গী।"
বুদ্ধদেব গুহ'র 'একটু উষ্ণতার জন্য' বইটি ভালো লেগেছিলো শুধুমাত্র অসাধারণ ডিটেইলিং এর জন্য। সেখান থেকে বুদ্ধদেব এর প্রতি কৌতূহলী হয়েই এই বইটি পড়া। অথচ ওই একই কারণে (ডিটেইলিং) এই বইটি তেমন ভালোই লাগেনি। বেশিরভাগ জায়গাতেই অতিরিক্ত বর্ণনা বিরক্তিকর আর বাহুল্য মনে হয়েছে। গল্পের পটভূমিও মন কাড়েনি। কোন চরিত্র আলাদা করে মনোযোগ আকর্ষণ করেনি। বুদ্ধদেব এর সুন্দর বিশ্লেষণ ধর্মী স্টাইলের কারণে বইটি পড়ে শেষ করা গেছে হয়ত, তবে নিঃসন্দেহে খুব বেশিদিন বইটি আমার মনের জায়গা দখলে রাখতে পারবে না।