মৃত্যু আতংকে রাজধানীতে বন্ধ হয়ে আছে বিয়ে। বাসর রাতে মারা যাচ্ছে বর এবং মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে কনে। আজ সকালে বনানী দুই নাম্বার রোডের একটি বাড়িতে একই রকমভাবে মিললো আরো একজন বরের লাশ। জানা গেছে, পরিবারটি তাদের নিকট আত্মীয় স্বজন এবং কিছু কাছের বন্ধু বান্ধব নিয়ে গতকাল রাতেই চুপিসারে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করে। এই নিয়ে গত ৪ মাসে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একইভাবে ১৭ টি মৃত্যু ঘটলেও এর কোনো ব্যাখা পাওয়া যায়নি। এসব কেবলি সাধারণ মৃত্যু নাকি হত্যা অস্পষ্ট রয়ে গেছে বিষয়। তদন্তের দায়িত্ব হস্তান্তরের ৩ মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে কিছুই বলতে পারছে না পিবিআই। তাই দিন দিন জনমনে আতংক বেড়েই চলেছে। যেখানে বিয়েকে জীবনের নতুন শুরু বলা হতো সেখানে বিয়েই এখন প্রাণঘাতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৭ টি মৃত্যুর ৯ টিই ঘটেছে গত ২৫ দিনে। এই অবস্থায় রাজধানীর পাশাপাশি আতংকিত হয়ে পড়েছে সারাদেশের মানুষ। ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়ে কবে রহস্য উদঘাটন হবে, এমন প্রশ্ন ঘুরছে সবার মনে। এই অনুসন্ধানে সময় বেশী লেগে গেলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশিষ্টজনেরা।
লেখকের নাম: নিমগ্ন দুপুর পিতা: সিরাজুল ইসলাম (অবসরপ্রাপ্ত বন্দর কর্মকর্তা)। মাতা: সালেহা ইসলাম (কবি)। লেখকের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা চাঁদপুর সদরে। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর সদর। বর্তমানে তিনি ঢাকার মিরপুরে বসবাস করেন। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স -মাস্টার্স, বিবিএ এবং এলএলবি অনার্স সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত। তিনি সাহিত্য সংগঠন কবিতান এর প্রতিষ্ঠাতা। তার সম্পাদনায় বাংলা সাহিত্যে প্রথমবারের মত কবি এবং গীতিকবিদের নিয়ে কাব্য সংকলন "অঙ্কিত অঙ্কুর" ২০২১ এর বইমেলায় প্রকাশিত হয়। লেখক মনে করেন, একজন লেখকের পরিচয় তার স্থায়ী কিংবা বর্তমান ঠিকানায় থাকে না, লেখকের পরিচয় থাকে তার লেখায়, ভাবনায় এবং মননে! যদিও লেখক এবং তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো আলাদা সত্তার অধিকারী তবুও কিছু অন্ত্যমিল থেকেই যায়! তাই লেখককে জানতে হলে তার লেখাকে ধারণ করার বিকল্প নেই। প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ: ** যে রোদে নিকোটিন পোড়ে ** মৃত্যুর মিছিল থেকে বলছি ** নিষিদ্ধ সময়ের কবিতা ** অঙ্কিত অঙ্কুর ** দ্য ব্ল্যাক মুন ** হোয়াইট ম্যাজিক- লাইফ অব ডেথ
অনেকেই রয়েছেন অতিপ্রাকৃত কিছুতে বিশ্বাস করেনা, সর্বদা সকল কিছু বিজ্ঞানের নিয়ম মেনে চলে সেটাই মনে করে এবং যা কিছু ব্যাখাতীত তাও বিজ্ঞানের কোনো না কোনো অজানা নিয়মে চলে সেটা বিশ্বাস করে থাকেন। আমি নিজেও এই দলেরই লোক। তো তেমন একজন মানুষ হচ্ছেন আমাদের উপন্যাসের মূল ডিটেকটিভ অন্বেষ চৌধুরি, একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ তিনি। তো, আগেই বলে রাখি কারো যদি গ্যামোফোবিয়া মানে বিয়ে করার প্রতি ভয় থাকে তাহলে এই উপন্যাস আপনার মনে আরও ভয় ঢুকিয়ে দিবে। কারন উপন্যাসের প্রথমেই দেখা যায় যে প্রাইভেট ডিটেকটিভ অন্বেষ চৌধুরী একটি খুনের স্পটে গিয়েছেন, খুনের ধরন খুবই পরিচিত। এই একই রকমভাবে শহরে ৩ মাসে ঘটে গেছে ১৭টি খুন, প্রতিটি খুনের ধরণ হচ্ছে বাসর রাতে কোনো অজানা কারনে বর মারা যাচ্ছে, কারন থাকে অজানা এবং স্ত্রী এর মাথা খারাপ হয়ে যায়, নিথর হয়ে থাকে। পরপর ১৭টি একই ধাঁচের বাসর রাতে স্বামীর মৃত্যু এবং স্ত্রীর পাগলের মতো হয়ে যাওয়া এবার পিবিআইকে প্রচুর চাপের মাঝে ফেলে দেয়। ডিটেকটিভ অন্বেষ চৌধুরী, যিনি খুবই বিজ্ঞানমনস্ক, এইবার তিনি চিন্তা করতে থাকেন ভিন্নভাবে, যদিও তিনি যে সদিচ্ছায় চিন্তা করেন এমন না, তাকে কিছু পরপর ঘটনা চিন্তা করতে বাধ্য করায়। কাহিনি জটিল আকার ধারণ করে যখন হত্যাগুলোতে ব্লাক ম্যাজিকের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। তো কেনো বাসর রাতেই নববিবাহিত দম্পতির এমন নিষ্ঠুর পরিণতি হচ্ছে? তবে কি শহরের মানুষেরা বিয়ে করা ছেড়ে দিবে? . বইটি পড়ে প্রথমবারের মতো হোয়াইট ম্যাজিক নামক কোনো কিছু সম্পর্কে জানতে পারি। একই সাথে অতিপ্রাকৃত কোনো কিছুর প্রতি কখনো তেমন আগ্রহ না থাকায় এবং বইতে এইসব কাহিনির উল্লেখ্য পেয়ে গুগলে গিয়ে সেগুলো সম্পর্কিত কিছু আর্টিকেল পড়ে নিয়েছিলাম। অবাক হয়েছি সম্প্রতিকালে প্রকাশিত হওয়া কিছু আর্টিকেল নিয়ে, যে এই যুগে এসেও মানুষ এখনো বৃহৎ পরিসরে এইসব চর্চা করে থাকে, বিশেষ করে স্যাটানিজম চর্চা নিয়ে। যদিও দুনিয়াতে তো অনেক কিছুই ঘটে থাকে, সল্প জ্ঞান নিয়ে আমরা আর কতো কিছুরই বা ব্যাখা দিতে পারি!
২০২৫ এ এবারের একুশে বইমেলায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিলো না তেমন। হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম আর চোখ দিয়ে স্টলের বইগুলো দেখছিলাম। এত শত বইয়ের মাঝে এই বইটায় দৃষ্টি আটকে গেলো মূলত দুইটি কারণেঃ প্রচ্ছদ আর বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা।
যাহোক, এই বইটি মূলত রহস্যধর্মী সুপারন্যাচারাল থ্রিলার উপন্যাস। লেখক নিমগ্ন দুপুরের অন্য কোনো বই কিংবা লেখা আগে পড়িনি। সুতরাং যতটুকু সম্ভব উদার মন নিয়েই পড়েছি এবং সত্যি বলতে হতাশ হইনি। গল্পের গতি ওঠানামা করেছে একেক অংশে। আর গোটা উপন্যাসটি বেশ অনেকগুলো ছোট ছোট অধ্যায়ে ভাগ করা। প্রতিটি অধ্যায় কার্ড খেলায় ব্যবহৃত বিভিন্ন গেম/কার্ডের নামে নামকরণ করা। ব্যাপারটা আমার কাছে ভিন্নধর্মী মনে হয়েছে।
সুপারন্যাচারাল মিস্ট্রি নিয়ে লিখতে হলে খুব ভালো পড়াশুনা এবং রিসার্চের প্রয়োজন হয়। লেখক সে পথেই হেঁটেছেন। গল্প-বলা এবং সেই সাথে কাহিনীর প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্তের উপস্থাপনা; এই দুইয়ের মাঝে সামঞ্জস্যতাও ছিলো এই উপন্যাসে। আজকাল থ্রিলার কিংবা রহস্য উপন্যাসে উত্তেজনার আবহ কিংবা ক্লিফ-হ্যাঙ্গারের অবতারণা করতে গিয়ে প্রায়ই গল্পের সাবলীলতা হারাতে লক্ষ্য করা যায়। এই উপন্যাসে তেমনটি হয় নি। শেষের দিকে তাড়াহুড়ো না করে আরেকটু রয়েসয়ে শেষ করা যেত। উপন্যাস যখন একদম জমজমাট মঞ্চে, সেই অবস্থায় হঠাৎ অন্যভব করলাম যে খোলা বইয়ের ডানদিকটা প্রত্যাশার চেয়েও সরু হয়ে গেছে।
উপন্যাস হিসেবে চরিত্রগুলোকে আরেকটু ফুটিয়ে তোলা যেত। পাঠক হিসেবে অন্বেষ, অভয়া, লরা কিংবা শাফেরীদের চরিত্রগুলো ছোটগল্পের মত মনে হয়েছে। অভয়া চরিত্রটিকে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে, তবে মূল চরিত্র অন্বেষের কারণে খুব একটা সুগঠিত হতে পারে নি। সব মিলিয়ে হোয়াইট ম্যাজিক-লাইফ অব ডেথ আমার বেশ ভালোই লেগেছে। এক বা দুই বসায় পড়ে ফেলার মত বই। প্রথম পৃষ্ঠা থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পাঠককে আটকে রাখার উপকরণ ছিলো এই বইয়ে।