Jump to ratings and reviews
Rate this book

চতুষ্কোণ

Rate this book
Chatushkone (The Quadrilateral) is a bengali language novel by Manik Bandopadhyay written in 1948. Manik Bandopadhyay (19 May 1908 - 3 December 1956) was a Bengali novelist and is considered one of the leading lights of modern Bengali fiction. During a short lifespan of 48 years, plagued simultaneously by illness and financial crisis, he produced 36 novels and 177 short stories.

96 pages, Paperback

First published January 1, 1948

17 people are currently reading
641 people want to read

About the author

Manik Bandopadhyay

129 books493 followers
Manik Bandopadhyay (Bengali: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়) was an Indian Bengali novelist and is considered one of the leading lights of modern Bangla fiction. During a short lifespan of forty-eight years, plagued simultaneously by illness and financial crisis, he produced 36 novels and 177 short-stories. His important works include Padma Nadir Majhi (The Boatman on The River Padma, 1936) and Putul Nacher Itikatha (The Puppet's Tale, 1936), Shahartali (The Suburbia, 1941) and Chatushkone (The Quadrilateral, 1948).

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
109 (21%)
4 stars
202 (39%)
3 stars
139 (27%)
2 stars
43 (8%)
1 star
18 (3%)
Displaying 1 - 30 of 65 reviews
Profile Image for Amlan Hossain.
Author 1 book67 followers
February 11, 2016
মানুষ নাকি চিবুকের কাছাকাছি ভীষণ অচেনা ও একা। ধরা যাক, রাজকুমার ওরফে রাজু সেরকম একজন। একা বললে ভুল হবে, সে আসলে অনেকটাই আত্মমগ্ন। রিণি, সরসী, মাধবী ও কালী- এই চার নারী তাঁকে এমন দুর্বার আকর্ষণ করে, তেমনি চুম্বকের বিপরীত মেরুর মতোই মাঝে মাঝে ঠেলে দেয় বিপ্রতীপ কোণে। রাজকুমার কখনও তাঁদের কারও কাছে গিয়ে একটু আশ্রয় খোঁজে, একটু নির্ভরতা চায়। আবার কখনও সে নিজের সত্বায় বুঁদ হয়ে থাকে, এক দুর্বোধ্য গোলকধাঁধায় নিজে নিজে পাক খেতে থাকে। সে বোধ হয় নিজেই বুঝতে পারে না, সে নিজে কী চায়।

রিণির কথাই ধরি। সংগীতপটীয়সী পাশ্চাত্যশিক্ষায় শিক্ষিত একজন নারীর কাছ থেকে রাজকুমার কী চায় ? রিণির চুম্বন আহবান যেমন সে হেলায় ফিরিয়ে দেয়, আবার বিকারগ্রস্ত সেই রিণির কাছেই সে নিজেকে সমর্পণ করে। আবার সেই রিণির কাছেই সে কোন বিচিত্র কারণে খাপছাড়া (আসলে অবিশ্বাস্যই বলা উচিত) এক আবদার করে বসে। সেটা এমনই অদ্ভুত, রিণি সে ধাক্কায় অনেকটাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। সুস্থ রিণি যেমন রাজকুমারকে দূরে ঠেলে দিত, অসুস্থ রিণি তাঁকে প্রাণপণে কাছে পেতে চায়। তার মানে কি রিণির অবচেতন মনের ইচ্ছাটাই এটা ছিল ?

সরসীর মন সেই তুলনায় অনেকটাই ঘোলা জলের মতো। সে আধুনিক, সংস্কারবিবর্জিতা। রাজকুমারের অপ্রীতিকর ও অসঙ্গত আবদারও সে রক্ষা করে। সেখানে সে নারীসুলভ ব্রীড়াকে ঝেড়ে ফেলতে একটুও কুন্ঠা করে না। কিন্তু তার পরেও সে নিজের নৈর্ব্যক্তিকতা বিসর্জন দিতে পারে? রিণির পরিণতির জন্য রাজকুমার দায়ী নয়- বার বার সেটা মনে করিয়ে দিয়ে সে আসলে কী প্রমাণ করতে চায় ?

মাধবী বরং অনেকটাই স্বচ্ছ জলের মতো। তার সংকট একটাই, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার ব্যবধানটা সে প্রায়শই এক করে বসে। রাজকুমারকে সে বসিয়েছে শ্রদ্ধার আসনে। কিন্তু উল্টো দিক থেকে সে শ্রদ্ধার বিনিময়ে নিজেকে বিকিয়েও দিতে চায়। তাঁদের সম্পর্কটা ছাত্রী-শিক্ষকের, কিন্তু আসলে সেটা মহাদেবের কাছে দেবীর অকুন্ঠ সমর্পণের মতো। রাজকুমার শ্রদ্ধার আসনটা জিইয়ে রাখিতে চাইলেও মাধবী সেই আসনে ভালোবাসার পুষ্পমালা বিছিয়ে দিতে চায়।

কালীর ব্যাপারটা আবার অন্যরকম। সে নেহায়তই উন্মার্গিক, আপাতদৃষ্টিতে অপরিপক্ব। কিন্তু সেই বোধ হয় রাজকুমারকে সবচেয়ে ভালোভাবে পড়তে পারে। রাজকুমারের প্রত্যাখানে সে আহত হয়, কিন্তু নিজেকে বাকিদের মতো বিকিয়ে দিতে যায় না।

রাজকুমার চরিত্রটা সম্ভবত মানিকের সবচেয়ে জটিলগুলোর একটি। শুধু মানিক কেন, বাংলাসাহিত্যেই আর কোনো লেখক এরকম প্রহেলিকাময় কোনো চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন কি না সেই প্রশ্ন রেখে যাওয়া যায়। সে একই সাথে যৌনতাড়িত, আবার কখনও কখনও একেবারেই শরীরবিমুখ। সে সব সময় যুক্তির কষ্টিপাথরে সব কিছু যাচাই করে নিতে চায়, আবার রিণির পরিণতির জন্য খানিকটা অযৌক্তিকভাবেই নিজেকে কাঠগড়ায় তুলতে দ্বিধা করে না। তার মানে কি তাঁর যুক্তিবাদী মনের আড়ালে একটা আবেগী স্বত্বা আছে ? কিন্তু সেটাই বা জোর দিয়ে কীভাবে বলা যায়?

নাহ, চতুষ্কোণ আসলে কাকচক্ষু জলের গভীর দীঘির মতো, যার তলের কোনো থই পাওয়া যায় না। এমন একটা বই, যেটা পড়ার পর ভালো বা মন্দ লাগার অনুভূতিটাও ঠিক বোঝানো যায় না। শুধু মনে হয়, কোথাও যেন একটা তারে টোকা পড়েছে, আর কানের কাছে সেটা অবিরাম ঝংকার তুলে যাচ্ছে, যাচ্ছে তো যাচ্ছেই...
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
September 23, 2021
রাজকুমার আকর্ষণীয় তরুণ। নারীমহলে তাকে কাছে পেতে রীতিমত কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। আধুনিক থেকে রক্ষণশীল সব ধরণের তরুণী তার সঙ্গ কামনা করে। রিণি তাকে চুমু দিতে চায়, মালতী তাকে হোটেলে নিয়ে যায়, সরসী তার ইচ্ছাপূরণ করে, রুক্সিণী তাকে বাসায় নিমন্ত্রণ করে, গিরি তাকে বাসায় খেতে নিমন্ত্রণ করে, কালী তার স্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সবাই রাজকুমারকে মায়াজালে বাঁধতে চায়।
কিন্তু রাজকুমার কাউকে ভালোও বাসে না, আবার ভোগ করার কামনাও করে না। সে মেয়েদের সাথে গল্প করে সময় কাটায়, কৌতূহলী চোখে মেয়েদের শরীরের দিকে তাকিয়ে থাকে, ষোলটা মেয়েকে একসাথে করে গ্রুপ ছবি তোলে, রিণি কে বলে 'তুমি স্নান কর আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে তোমায় দেখবো', গিরির বুকে হাত দিয়ে পালস দেখে, এসবের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টিও হয়।
রাজকুমার নারীদেহ দেখতে চায় শুধুমাত্র রিসার্চের কাজের জন্য। সে চিন্তা করে, জ্যোতিষীরা যেমন হাত দেখে ভবিষ্যৎ প্রেডিক্ট করে, সেও তেমনি নারীর নগ্ন দেহ দেখে তাদের ভবিষ্যৎ আন্দাজ করতে পারবে।
রাজকুমারকে লম্পট বলা যাবে না, কিন্তু তাকে পারভার্ট বলা যায়।
মানিকবাবু পাগলাটে ধরণের লোক ছিলেন। উনার দ্বারাই এই ধরণের সাইকোলজির মানুষকে নিয়ে লেখা সম্ভব।
Profile Image for Arupratan.
235 reviews385 followers
April 21, 2024
উপন্যাসের ছদ্মবেশে যেন একটি থিসিস লিখেছেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন চরিত্রকে যেন নিরীক্ষার উপাদান ('study participant') হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বিষয়বস্তু নির্মাণে কখনও প্রহসনের আশ্রয় নিয়েছেন, কখনও সেন্টিমেন্টের, কখনও নিজের সিদ্ধান্তে নিজেই যেন দ্বিধায় পড়ে গেছেন লেখক। মূল চরিত্র রাজকুমার আদৌ কোনো একক চরিত্র নয়, বরং মানুষের অনেকরকম চিন্তাভাবনা, চালচলন, বিকৃতি এবং বিপন্নতা নিয়ে গড়া একটি কম্পোজিট চরিত্র। আমাদের নিজেদের অনেক আচরণ এবং ব্যক্তিগত মতামতের মতোই রাজকুমারকে কখনও মনে হয় দুর্বোধ্য, কখনও কলুষিত, কখনও আপত্তিকর, কখনও আত্মবিশ্বাসী, আবার কখনও আত্মগ্লানিতে মুহ্যমান। রাজকুমার কাল্পনিক হয়েও জীবন্ত। দুর্বোধ্য হয়েও চাক্ষুষ। আমাদের সবার মতো। মানুষের মতো। দোষেগুণে দ্বিমাত্রিক নজরে তাকে বিচার করতে গেলে মস্ত ভুল হবে।

এই অদ্ভুত জটিল অথচ ভাবনার তীব্র খোরাক জোগানদায়ী উপন্যাসটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। চেতনা এবং বুদ্ধিবৃত্তির খুব গভীরে প্রবেশ করার সামর্থ্য না-থাকলে যার-তার দ্বারা এমন উপন্যাস লেখা কখনও সম্ভব নয়।


Profile Image for জাহিদ হোসেন.
Author 20 books476 followers
March 26, 2024
রাজকুমারের মত এত ন্যাকাচোদা চরিত্র মানিকের মত একজন শক্তিশালী, মহা পরাক্রমশালী লেখকের কলম দিয়ে বেরিয়েছে, ভাবতে কষ্টই হয়। এটুকু পড়ে যাদের ভ্রুঁ কুঁচকে গেছে তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ বাকিটুকু না পড়বার জন্য। কারণ একটু আলবাল বকবো।

বই পড়ে মনে হলো রাজকুমার কোন বাঙ্গালী যুবা নয়, ক্যাসানোভা টাইপ কেউ। তাকে ঘিরে প্রণয়ে আকুল এক দঙ্গল তরুণী, কলকল করছে তো করছেই। এই কলকলানি তার মনোযোগ আকর্ষণের জন্য, সঙ্গ লাভের জন্য। রাজকুমার আমাদের সবার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদের হিমুর আদলে যেন গড়া। অথবা বলা ভালো, হিমু এই রাজকুমার সাহেবের আদলে গড়া। যে মেয়েই তাকে দেখে, যাকে বলে, রীতিমত হর্নি হয়ে যায়! রাজকুমারের একটুস খানি চোখের ইশারায় শুয়ে পড়তে রাজি।

কিন্তু আমাদের রাজকুমার সবকিছুর ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলেন। কেন চলেন জানা নাই। তিনি কি গে, নাকি ধান্ধাবাজ নাকি স্যাপিওসেক্সুয়াল? তিনি অনেক কিছুই বুঝতে পারেন না, যদিও সবক���ছু দিনের আলোর মত পরিষ্কার। তবুও কেন জানি তার বোধগম্য হয় না। এই ন্যাকামিটা তিনি নিজের সাথেই করে যান। আবার বইয়ের শেষে তিনিই স্বগতোক্তি করেন, আমার কারো সাথেই কেন জানি বনলো না!

বনবে কীভাবে রে ন্যাকাচোদা?
Profile Image for Israt Zaman Disha.
194 reviews622 followers
Read
April 21, 2017
আমার ছোট মাথায় ঠিক ধরতেসে না। কেউ কোনদিন বুঝায় দিলে বা নিজের বুদ্ধি একটু খুললে তখন হয়ত বলতে পারবো কেমন লাগলো।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
Read
June 13, 2020
ম্যালা বই পড়া হইসে ঠিক, কিন্তু বোদ্ধা বা জ্ঞানী বোধহয় আর এই জীবনে হওয়া হলো না। দুঃখিত মানিক বাবু, আমি নিতান্তই মুখ্যসুখ্য মানুষ এতো জটিল প্যাঁচপুচ, মানুষের বিচিত্র সাইকোলজি আর কার্যকলাপ বুঝা আমার কম্মো না।
দিন শেষে নিজের জন্য এক রাশ হতাশ আর করুণা :/

বি.দ্র. রেটিং দিব কি? বুঝি নাই তো কিছু। 💔
Profile Image for Abid.
135 reviews23 followers
February 24, 2025
বইটা আমি প্রথম পড়েছিলাম ইন্টার লাইফে। আমার রীতিমতো মাথা দপদপ করছিল, আর অনুভূতি ছিলো "এমা...! ছেলেটা এসব কী বলচে গো!" বইটা আমায় ভীষণ ভাবিয়েছিলো। আমাকে জটিল মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার স্যাপার খুব আকর্ষণ করে। লোকে যেখানে স্বাভাবিকের ব্যতিক্রমকে "উলটাপালটা' আচরণ হিসেবে জাজমেন্ট দিয়ে দেয়, আমি তা পারিনা। আমি বুঝতে চাই, ভাবতে চাই। কেনো আমরা ডিফারেন্ট ভাবে ভাবতে পারিনা? গ্রহণ করতে পারিনা?

পরবর্তীতে ভার্সিটিতে উঠে ২য় রিড দেই বইটা। এবার আরও সূক্ষ্ম ভাবে বইটাকে পড়ি, আরও গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করি রাজকুমারকে আর বাকি সব নারীচরিত্রকে। আরো তীব্রভাবে মুগ্ধ হই আমি। বইটাকে মানিকের একটা থিসিস বললেও বোধহয় ভুল হবে না। নারীদের শরীরের সাথে মনের সংশ্লিষ্টতা উপলদ্ধির জন্য রাজকুমার চরিত্রটির যে নিজস্ব থিওরি- তার মাধ্যমে যেনো মানিকবাবু এখানে নিজস্ব ফিলসফি পূর্ণ মাত্রায় প্রকাশ করেছেন, কী বৈচিত্র্যময় চিন্তা রে বাবা! অনেক অনেক লেখকের মধ্য থেকে সেই থেকে মানিক আমার পছন্দের জগতে সম্পূর্ণ আলাদা একটা স্থান দখল করে আছেন।
Profile Image for Ashik.
220 reviews40 followers
June 6, 2025
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে দেখেছি বেশিরভাগ মেয়েদের সার্কেলে একটা করে ছেলে থাকতো এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর সেই ছেলেটার মাঝে মেয়েদের অনেক গুণাবলী প্রকট হয়ে ফুটে উঠতো, ন্যাকামির পরিমাণ বেড়ে যেত বহুগুণে। কোনো কোনো সময় ন্যাকামিতে তারা মেয়েদেরও হার মানাতো।
চতুষ্কোণের নায়ক রাজকুমার তেমনই একটা নেকু চরিত্র। এমন ন্যাকা নায়ক খুব কমই দেখেছি। একই সাথে সে ভীষণ আবেদনময়ী ও কামুক, মেয়েরা ঢলে পড়ে তার ওপর। দেখা যায় একাধিক নারী কীরূপ রাজকুমারের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে!

প্রধান চরিত্র রাজকুমারের মতো পার্শ্বচরিত্র শ্যামলও একই রকম ন্যাকামির ফেরিওয়ালা। রাজকুমার যেখানে দুই হাতে নারীদের ঠেলে পারেন না, যেখানে শ্যামল সায়ানাইড খাওয়ার হুমকি দিয়েও মালতীর মন পায় না! আফসোস!

যাইহোক, এত বিখ্যাত ও আলোচিত উপন্যাস ভালো না লাগাতে পেরে নিজেকে দোষী মনে করছি। সেইসাথে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, যার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে শুদ্ধ করতে পারি তার সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছি।
Profile Image for Saiful Sourav.
103 reviews72 followers
January 29, 2024
উপন্যাসে একা চলে ফেরা এক নাম চরিত্র 'রাজকুমার' এর দৈনন্দিন জীবনে তার প্রেম-অপ্রেমের বর্ণনা আসে । বই-পত্র, বিছানা আর প্রয়োজনীয় পোষাক ও আসবাব ঘরে । রাজকুমারের কোন একদিন মাথা ধরে । কোন একদিন সে রিনিদের বাড়ি যায় । রিনি পিয়ানোতে গান করে আর রাজকুমারকে দেখেও না দেখার ভান করে । রিনির বাবা উকিল । রাজকুমার তার সাথে আলাপ করে ফিরে যায় । রিনির সাথে লেনাদেনার বনিবনা হয়না দু'জনের জীবন দর্শনের ফারাকের কারণে । বিকেলে মাধবীকে পড়াতে যায় । রাজকুমারের প্রতি মাধবীর অবাধ ভক্তি দেখে তার চোখে গভীর হয় সংশয় । শিক্ষকের কর্তব্য যেন তাকে সচকিত করে রাখে মাধবীর সন্মুখে । কোনদিন সন্ধ্যায় হয়ত সারসীর সাথে দেখা হয় । সারসী সংস্কার মুক্ত আধুনিকা, সমাজ ও রাজনীতি বিষয়ক মাঠকর্মী । রাজকুমারের সাথে অনেক কথা চলতে থাকে, বন্ধুত্বপূর্ণ কথা বলতে থাকে । আর কালী থাকে অন্তর্মুখী হয়ে । নিম্নবর্গ থেকে আসা সামাজিকভাবে অবহেলিত মেয়ে কালীর রাজকুমারের কাছে আসা-যাওয়া, তটস্থতা যেন সমাজের চিরায়ত তেলে-জলে মিশতে না পারার গোঁড়া সংস্কার । এক-আধবার রাজকুমারকে আত্মকেন্দ্রিক মনে হলেও নারীদের সাথে কথাবার্তায় তার হৃদয়ের উপস্থিতি ও তার আবেগকে উপস্থাপন করলে মনে হয় রাজকুমারই তৎসময়ে পুরো আধুনিক একজন যে মনকে বাদ দিয়ে শরীরের কথা ঘুণাক্ষরেও ভাবে না । উপন্যাসে দেখা যায় প্রত্যেকটা চরিত্রের সাথে আলাদা সম্পর্ক বা কখনো সম্পর্কহীন সূক্ষ্ম টেনশন । বহুদিন রিনির সাথে কথা বলতে চাইলে ফিরিয়ে দেবার পর সেই সূত্রে শেষদিকে হয়ত রিনির চুম্বন অনায়াসেই ফিরিয়ে দেয় সে । মাধবীকে পড়াতে গিয়ে যে বিব্রতির সৃষ্টি হয় তা আর সহজ করতে পারে না । সারসী কাজে-কর্মে বরাবরই উদ্যমী এবং যেন এক প্রকৃত সারস । কালীর আর্থসামাজিক অন্তর্মুখী ভাব তাদের সম্পর্ককে জলঘোলা করে রাখে ।
উপন্যাস শেষ হলেও মনে হয় আরেকটু হলে ভালো হত । জানার ইচ্ছা থেকে যায় শেষ পর্যন্ত রাজকুমার কার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে । ব্যক্তিগত আকর্ষণ ও সংঘর্ষে অপরিণত সব সম্পর্ককে নিরূপণ করতে গিয়ে উপন্যাসিক চরিত্রদের পরিপার্শ্বকে তুলে ধরেন এবং তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে তার প্রভাব বা প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করেন । রাজকুমার হয়তো পরবর্তীতে সাংসারিক হয়, হয়তো হয় না । কিন্তু তার এই সমাজবদ্ধ অপরিণত প্রেমগুলোতে খাবি খেয়ে বেড়ানো কি সমাজেরই সৃষ্ট ব্যক্তি সংকট নয় কি যেখানে মানুষ অধিক যান্ত্রিক, অনধিক বিজ্ঞান সচেতন, মানবিক?
Profile Image for Arup.
13 reviews13 followers
December 9, 2018
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেকোন লেখাতেই 'মন' একটা অলিখিত চালিকাশক্তি।মানুষের মন যে পথে চলে, সে যে সবসময়ই পায়ে চলা পথ নয় সেটাই যেন লেখক নিবিড়ভাবে উন্মোচন করেন। একজন যুবক যে হয়তো শিক্ষিত এবং তার পারিপার্শ্বিক পৃথিবীতে একা,তার সঙ্গচেতনা যেভাবে আবর্তিত হয় কিছু নারীকে ঘিরে তারই আলেখ্য চতুষ্কোণ। কিন্তু সেও কোন সহজ অনুভূতি নয়,অন্তত একটি মুহূর্তকে বর্ণনা করতে লেখক কথার পর কথায় যেভাবে খুলে যান মনের অজস্র কপাট,তা আধুনিক মানুষের অন্তর্যাতনাকেই আরো তীব্র করে তোলে।

রাজকুমার শিক্ষিত তরুণ,তার জ্ঞানের উদ্ভাসে এবং পরিচয়ের সুবাদে কিছু নারীর(মেয়ে বলাই সমীচীন?)সাথে তার জীবন সম্পর্কিত।কেউ হয়ত শিক্ষিতা কেউ নয়,এরকম চারজনকে দিয়েই মানিক দৃশ্যামান করেন রাজকুমারকে। যৌনতা বলতে একালের লেখকেরা যেভাবে লেখ��ন অন্তত খুব স্থূলভাবে,মানিক তার ব্যবহার করেননি,তার যৌনতাও মানুষের অন্তর্লোক খুঁড়ে দেখবার প্রয়াস,যেভাবে রাজকুমার বুঝতে চায় মেয়েমানুষের গড়নের সাথে তার স্বভাবের কী জটিল রহস্য। এবং সেই কথা যখন একজন নারীকে জানায়,জোটে তিরস্কার। অথচ সে লোভী নয়,শুধুই একটি শরীরের বাসনা সে বোধ করে না। কিন্তু সেই বোধও ধাক্কা খেয়ে যায়,যখন হোটেলের দরজায় দাঁড়ায়,যেন ভেতরের জৈবিক প্রবৃত্তি তার অনাসক্ত মনের আবরণ কে ঘুচিয়ে দিতে চায়। এরপরও এই উপন্যাস যৌনতাসর্বস্ব নয়, যেন স্বাভাবিক প্রবৃত্তিকেই কেন মানুষ অর্গলে আবদ্ধ রাখে তাই বোঝবার প্রয়াস,জীবনের সন্ধান। তবে সে প্রচেষ্টাও রাজকুমারকে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত করা থেকে এড়াতে পারে না। আধুনিক মানুষের মত সেও বোধ করে নিজেকে খুঁজে দেখার এ যাত্রা নিঃসঙ্গ,অনিঃশেষ। এ যেন সেই,
'সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা'

যে তুমুল বিপন্নতা কে এড়ানো যায় না কিছুতেই।
Profile Image for Sajid Hasan.
7 reviews28 followers
July 10, 2021
চতুষ্কোণ- এর কথা ভাবলে কেবল একটি বিষয়ই বারবার মনে পড়ে যে, এতো অল্প পরিসরে, এতো কৃপণ কালির খরচে, এতো আঁটসাঁট কাহিনী বিন্যাসে এতো বৃহৎ উপন্যাস কেবলমাত্র মানিকই তৈরি করতে পারেন; বাংলা সাহিত্যে এর সমতুল্য হয়তো কেবল আর একজনই আছেন, তিনি বুদ্ধদেব বসু। চতুষ্কোণ- এর আলোচনায় "দ্যা আর্ট অব দ্যা নভেল" বইয়ে মিলান কুন্দেরা'র উক্তি সবথেকে প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। কুন্দেরা'র মতে, উপন্যাসে ঘটনার থেকে চরিত্র বেশি গুরুত্বপূর্ণ, চরিত্রই মূল উপাদান। মানিক তার চতুষ্কোণ উপন্যাসে সেই পথেই হেঁটেছেন প্রারম্ভ থেকে গন্তব্য অবধি। তিনি ঘটনার উপর জোর দেন নি, না জোর দিয়েছেন সমসাময়িক ইতিহাস, রাজনীতির উপর- তিনি নির্মাণ করেছেন চরিত্র, মানুষ; আর তা নির্মাণে রাজকুমারকে তিনি দিয়েছেন সবথেকে নিখুঁত ছোঁয়া। ফলশ্রুতি তে সন্দেহ নেই, রাজকুমার "একটু ফুলে ফেঁপে উঠেছে" (মানিকের নিজের ভাষাতেই), কিন্তু তা লেখকের অবচেতন মনে, অদক্ষতার ফাঁক ফোঁকর গলে নয়। সেচ্ছায়, পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের সাথে ও অতি সুক্ষ সাবধানতায় মানিক নিজে তা করেছেন। আর করেছেন উপন্যাসের খাতিরেই।

রাজকুমারের বিশালতার ছায়ার আবরণ পড়েছে মালতী, সরসী, রিনি, কালী, মনোরমা ও অন্যান্য সবার উপর; কিন্তু তাতে একথা বললে ভুল হবে যে, মানিক উক্ত চরিত্রগুলো নির্মাণে সঠিক দৃষ্টিপাত করেননি। বরং তিনি সেই দক্ষ কামার যে জানে ছুরি হতে হবে ধারালো তাই তকে পাতলা করবার প্রয়োজন আছে, আর হাতুড়ি হতে হবে শক্ত তাই তাকে গোল ও ভারি। মানিক এক ছাঁচে সব চরিত্র নির্মাণ করেননি। ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক থেকে তিনি জীবনকে দেখেছেন। ফলত, অস্তিত্ব, অস্তিত্তের সঙ্কট, মানুষের মধ্যকার দৈনন্দিন টানাপড়েনে ভরপুর হয়ে গিয়ে চতুষ্কোণ বিস্তার করেছে তার কাহিনীর ডালপালা। সাথে, সমাজ ও বাস্তবতা উঠে আসতে সময় লাগে নি।

কিন্তু শেষমেশ চতুষ্কোণ মানে রাজকুমার; রাজকুমারের আখ্যান, আলেখ্য। শশীর মত আরেক নিঃসঙ্গতার চিরায়ত প্রতিক। যার কোন অতীত নেই, কোন পারিবারিক পরিচয় নেই, কোন কর্মজীবন নেই ("রাজকুমার বেকার, তার ছুটিও নেই"), ইতিহাস নেই। রাজকুমার কেবলই 'বর্তমান', আর এই বর্তমান তাকে দাড় করিয়ে দেয় 'চিরায়ত' এর স্থানে... "হেমিংওয়ে হিরো" এর মত রাজকুমারকে বলা যায় "মানিকিয় হিরো"
Profile Image for Swajon .
134 reviews76 followers
January 16, 2017
" শব্দের মানে তারাই ঠিক করে, যে বলে আর যে শোনে। কাজ ও উদ্দেশ্যের বেলাতেও তাই! কি ব্যাপক মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা! "

" রাস্তায় নেমে গেলেই দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছ। "

" রাগ নাই, অভিমান নাই। একটি মানুষের উপরেও নয়। জড়বস্তুকেও মানুষ কখনো কখনো হিংসা করে, হোঁচট লাগিলে অন্ধ ক্রোধে ইটের উপর পদাঘাত করে, কারাগারের লোহার শিক ভাঙ্গিয়া ফেলিতে চায়। কিন্তু মানুষ নিষ্ক্রিয় নির্জীব পুতুল হইলে একটি পুতুলের মুখ তার পছন্দমত নয় বলিয়া যতটুকু বিরক্তি বোধ করা উচিত, তাও সে বোধ করে না। মানুষের মনের অন্ধকার ও দেহের শ্রীহীনতার অপরাধ সে ক্ষমা করিয়াছে। মানুষ যে কৃপণ, তাতে তার কিছুই আসিয়া যায় না, কারণ, মানুষের কাছে সে কিছু চায় না।
এই নির্বিকার ঔদার্য যেন জীবনের সেরা সম্পদ, কুড়াইয়া পাইয়াছে। দূর হইতে দিনের পর দিন শুধু চাহিয়া দেখিতে দেখিতে হঠাৎ একদিন ধনীর দুলালের খেলনাটি বস্তিবাসী শিশুর হাতে আসিলে সে যেমন আনন্দে পাগল হইয়া ভাবে, জীবনে তার পাওয়ার আর কিছুই বাকি নাই, আর্ষ শান্তি আহরণের সৌভাগ্যে বিপরীত আনন্দের উন্মাদনায় রাজকুমারেরও তেমনি মনে হইতে থাকে, এবার সে তৃপ্তি পাইয়াছে, সম্মুখে তার পরিতৃপ্ত জীবন। "
169 reviews63 followers
November 20, 2018
অন্য ধাঁচের উপন্যাস। মনের যতসব দোলাচল, যতসব ধাঁধা- ক্যানভাসে ছবির মত উঠে এসেছে। মনে হবে "ভালো লাগছে না", কিন্তু একটু পরে পরেই মনে হবে একবার "অসাধারণ", আবার একটু পরে মনে হবে "ভালো লাগছে না।" কারণ আমার মতে এটাই, সকলের সব ভালোমন্দ চিন্তা জানা গেলে তাকে আর ঠিক পারফেক্ট ভালো মনে হয় না।

সরসী মেয়েটি বেশ। বোল্ড ক্যারেকটার।

শেষপর্যন্ত এসে সমাপ্তিটি অসম্পূর্ণ। পাঠকের আরো জানার অপূর্ণতা রয়ে যায় কিন্তু নিজের মত করে ভেবে নেয়ার খোরাক থাকে না।
Profile Image for Shuvo.
84 reviews3 followers
June 30, 2024
পাঠ প্রতিক্রিয়া এককথায় '..ও... আচ্ছা.. অ্যাহ!..ধ্যাত্তেরিকি '...

কয়েকবছর পরে আবার রিরিড দিয়ে দেখতে হবে কতখানি বুঝতে পেরেছি :3
Profile Image for Meem Arafat Manab.
377 reviews256 followers
June 15, 2017
কোনো চরিত্র না, রুমটাই বড়, টেবিলটাও কখনো কখনো প্রান্তর, এই চারকোণে তবুও আটকায় থাকতে হয়।
অথবা, হয়ত, বইয়ের শেষে গিয়া, রাজু হয়ে গিয়েছে জেন্টেলম্যান, এইটাই বড়, এইটাই সত্য।

আমি আসলে জানি না বইটার সম্পর্কে কী বলা যায়, কতখানি বলা যায়।
গভীর মনে হইছে অনেক জায়গায়, অনেক জায়গা কেমন জানি খাদে নাইমা গাড়ি উল্টায়ে গেলো রে মনে হইছে।
তবে দুইটা ত আসলে একই, তাই না?
পুরা উপন্যাস সম্ভবত একটা কোনারে ঠেইলা দেয়ার দিকে আগায়, বাস্তবে থাইকাও বাস্তবের বাইরে দাঁড়ায়া আমাদের ফ্যান্টাসিরে উস্কায়ে দিতে দিতে যায়।
Profile Image for Mohammed Minhazz.
279 reviews13 followers
August 25, 2024
[চতুষ্কোণ -
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়]

চিরায়ত বাংলা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে আমি সৈয়দ শামসুল হকের “খেলারাম খেলে যা” এর নাম এতো দিন নির্দ্বিধায় উচ্চারণ করতাম, তবে এখন “চতুষ্কোণ”কেও আমি উক্ত আসনের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে গ্রহণ করলাম। “পদ্মা নদীর মাঝি” অথবা “পুতুল নাচের ইতিকথা”র মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁজে যখন চতুষ্কোণ পড়তে শুরু করলাম, আমি যেন আবিস্কার করলাম এক ভিন্ন লেখককে । ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সময় বসে উদ্ভট গল্পের ঘটনাপ্রবাহ উন্মোচন করছেন যেন তিনি শব্দের বকুলমালা গেঁথে চললেন অদৃশ্য এক প্রিয়তমার উদ্দেশ্যে।
গল্পের নায়ক রাজকুমার, নারী অনুষঙ্গী ছাড়া এক মূহূর্ত‌ও চলে না যার, নিজেকে সে রাখতে চায় সকল নারীর নাগালের উর্ধ্বে তবে এক‌ই সাথে পেতে চায় সকলকে। নারীর সৌন্দর্য নিয়ে সে তত্ত্ব বানায়, তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য যে মানসিক বা আত্মিক বৈশিষ্ট্যের একটি শক্তিশালী প্রতিফলন সে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় জড়ায়। তার এই চঞ্চল ব্যক্তিত্ব গ্রহণ করে নারীরা। রাজকুমারে যে চরিত্র নির্মাণ হয়েছে গল্পে তা বেশ প্রসংসনীয়।কামনা-বাসনা, প্রেম-দ্রোহ এবং মনস্তত্ত্ব, গল্প বলার মুন্সিয়ানায় লেখক পরিপূর্ণ করে তুলেছেন শীর্ণকায় এই উপন্যাস। আমি মুগ্ধ হয়ে পড়েছি, আপনাদেরকেও পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
Profile Image for Shahriar Kabir.
107 reviews42 followers
June 15, 2016
কারো প্রতি দাবি করে নাই বলেই কি ভালবাসার ইচ্ছা রাজকুমারের জন্য পরাক্রমে বেঁচেছিল?
চার-পাঁচ নারীর সকলেই জানে তারা রাজকুমারের নৈকট্য কামনা করে। রাজকুমারেরও কিছুটি অবিদিত নয়। নারীর প্রতি কামনা রাজকুমারের দর্শনের মাঝ দিয়ে ধরা দেয়! সবার জন্য প্রেম অনুভব করা কার জন্যই পাগল না হওয়ার মত দশা।
যার দশেক প্রেমিকা থাকে তার জন্যই বুঝিবা দশের বাইরের মেয়েটাও দেহ মন দেবার বাসনা লালন করে?
শ্যামলের প্রেমের বৃক্ষ এক মালীর জন্য জন্মে, এক মালীর অভাবেই শ্যামলকে অস্ফূট রেখে দিল।
যা প্রেম তা ধ্বংসে বিরাজ। যা বিরাজমান প্রেম তার পরিণতি অপরিণয়ে।
যার লাগি যার পোড়ে তার কাছে কেউ বাধা পড়ে থাকল না!
যার কাছে যে বাধা পড়ে থাকতে চায়, তার কাছে সেই পোড়ানিটুকু তো নাই!
প্রেম কি একের পর এক অসমাপ্ত সম্পর্ক জন্ম দিতে থাকে যার সমাপ্তি শুধু বাহ্যিক?

প্রধান চরিত্র রাজকুমার ওরফে রাজু-ময় উপন্যাস। উপন্যাসের হিরো, উপন্যাসে ঘটা পরিস্থিতির ভিলেন হয়েও হিরো! সমাজে যে বড় তার দোষটি বড় ছোট, বা কখনো দোষও নয়, দর্শনীয় দর্শন।
Profile Image for Naima Ferdous.
15 reviews8 followers
March 29, 2020
মানিক বাবু বরাবরই জানেন কেমন করে পাঠককে আচ্ছন্ন করে রাখতে হয়। একদমই ভিন্ন ধাঁচের কাহিনিতব্য "চতুষ্কোণ"।

শব্দের মানে তারাই ঠিক করে যে বলে আর যে শোনে।রাজকুমার চরিত্রটির এমন মনস্তাত্ত্বিক পরিণতি সাধারণ ভাবে ন্যাকামো বা ভারি অদ্ভুত ঠেকতে পারে। ভিন্নভাবে নারী প্রকৃতির বিশ্লেষণে পৌছুতে চেয়েছিলেন রাজকুমার। খুব বেশি ভালো লেগেছে কিনা বুঝতে পারছি না। তবে মন্দ লাগেনি অবশ্যই বলা যায়। কোথাও যেন অতি সুক্ষ্ম ভাবে সুক্ষ্ম কোনো চিন্তা বিঁধে আছে।
Profile Image for Jesan.
141 reviews5 followers
February 9, 2021
মানিকদাও শেষে এসে বাজারি লেখক হয়েছেন যৌনতাকে কেন্দ্র করে লিখে।রাজকুমার চরিত্র দিয়ে একটা জগাখিচুড়ী বানিয়েছেন মনে হচ্ছে। শরীর আর মনের তারতম্য দিয়ে মেয়েকে বিচার করতে চাই। এইভাবে চার নারীর মন ও দেহের অবয়ব পরীক্ষা করেন।শেষে এসে ভদ্রলোকের মত এক মেয়ের দায়িত্ব নেয়।এই হলো উপন্যাস।যাই হোক,এই উপন্যাস বুঝতে আমি ব্যর্থ হয়েছি।
Profile Image for Aaneela_reads.
65 reviews2 followers
April 13, 2024
এত কষ্ট করে কখনো মনেহয় কোনো বইয়ের অর্ধেক পর্যন্ত আসতে হয়নাই,এটার আসতে যত কষ্ট হয়েছে। কেবল মাত্র বন্ধু উপহার দিয়েছে দেখে নাহলে এতো ফালতু কাহিনী এবং অগোছালো কাহিনী নিজে থেকে পড়তাম না। অর্ধেক যে এসছি এটাই অনেক
Profile Image for Nusrat Jahan.
65 reviews33 followers
Read
July 6, 2018
"জীবন তো খেলার জিনিস নয় মানুষের" ।

অতি-আশ্চর্য এই যে,প্রধান চরিত্র রাজকুমার জীবনকে দেখে খেলার দৃষ্টিতেই,উপন্যাসের শেষ লাইন কি তবে তার নিজ চিন্তাকেই পরিহাস করলো নাকি ভুল প্রমাণ করলো তা ভাববার বিষয় ।বেকার রাজকুমার,যে নিতান্ত ছুটি কাটানোর বিলাসিতাও উপভোগ করতে পারেনা,সে সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে বসবাস করে।কিন্তু সব পেয়েও রাজকুমার বড় একা,খাপ খাওয়াতে পারেনা আর দশ-পাঁচটা মানুষের সাথে,আত্মিক মিল খুঁজে পায়না কারো সাথেই।
রিনিকে নিয়ে চাপা অপরাধবোধ থেকেই হয়ত তাকে শেষপর্যন্ত বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজু,সেটাও নেহায়েত মমতা থেকে,ভালবাসা থেকে নয়।রাজুদের পক্ষে কাউকে ভালবাসা সম্ভব নয়,অতিরিক্ত তত্বজ্ঞানে রাজু সবাইকে স্পেসিমেন হিসেবে দেখে,ফেলতে চায় থিওরির জালে,তাই নির্দিষ্ট কাউকে একচ্ছত্র আবেগ দেখানো রাজুর পক্ষে অসম্ভব ।মানিক মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এ রাজুকে দেখিয়েছেন পরিপাটিভাবে,দশজন যাকে কামনা করলেও যে অন্য কাউকে কামনা করতে অক্ষম।
সবাইকে ভালবাসতেই হবে-এমন কথা লিখা আছে নাকি কোথাও?
Profile Image for টক   দইয়ের  চা.
371 reviews6 followers
December 25, 2021
এরকম ভিন্ন ঘরানার গল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকেই সম্ভব। সুন্দর গল্প তবে মুগ্ধ করবে না সবাইকে।

"রাজকুমার বলে, ঘুরিয়ে বলেও বোঝাতে পারব না সরসী। যদি বলি, ভেতর থেকে জুড়িয়ে যেন ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছি, ঠিক বলা হবে না। যদি বলি, বহুকাল থেকে আমি যেন ধীরে ধীরে সুইসাইড করে আসছি, তাও ঠিক বলা হবে না। আমার এই কথাগুলি কি ভাবে নিতে হবে জান? গন্ধ বোঝাবার জন্য তোমায় যেন ফুল দেখাচ্ছি।

-কি ভাব তুমি? মোটা কথায় তাই আমাকে বল।

-কি ভাবি? ভাবি যে আমি এমন সৃষ্টিছাড়া কেন। কারো সঙ্গে আমার বনে না, সহজ সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না। অন্য সবাইকে দেখি, খুব যার সঙ্কীর্ণ জীবন, তারও কয়েকজনের সঙ্গে সাধারণ সহজ সম্পর্ক আছে, আত্মীয়তার বন্ধুত্বের, ��ৃণা বিদ্বেষের সম্পর্ক। কারো সঙ্গে আমার সে যোগাযোগ নেই। কি যেন বিকার আমার মধ্যে আছে সরসী, আর দশজন স্বাভাবিক মানুষ যে জগতে সুখে বিচরণ করে আমি সেখানে নিজের ঠাঁই খুঁজে নিতে পারি না। আমার যেন সব খাপছাড়া, উদ্ভট।"
Profile Image for Samrat Sam.
10 reviews1 follower
July 6, 2015
রাজকুমার ভাবে, অভিধান নিরর্থক। শব্দের মানে তারাই ঠিক করে, যে বলে আর যে শোনে। কাজ ও উদ্দেশ্যের বেলাতেও তাই। কি ব্যাপক মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা !
যাকে আপন করতে চাই সে ব্যথা দিবেই, প্রিয় নিষ্ঠুর হইবেই -কারণ জগতে কেউ
আপন হয় না,কেউ প্রিয় থাকে না চব্বিশ ঘন্টা।

মানিক চরিত্রের ভেতরে ঢুকে ঘোরাফেরা করেন, মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন আর পাঠকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে উপলব্ধির একটা জগত তৈরী করে দেন। পাঠক রাজকুমারের মাঝে নিজেকে খোঁজেন না কিংবা শ্যামলের মাঝেও না। পাঠক হারিয়ে যান; সেখানে মালতী, সরসী কিংবা রিণি'র ও অস্তিত্ব থাকেনা শুধুমাত্র চোখ বন্ধ করে একটা বড় নিঃশ্বাস নেয়ার ব্যাপার থাকে অনেকটা নির্জনে সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার মতই।

Profile Image for Nawroz Zahan Preety.
66 reviews2 followers
February 23, 2025
Somewhat unusual.
লেখনী - ভালো।
স্টোরিলাইন - কী জানি।
পদ্মা নদীর মাঝি দিয়ে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে পরিচয় ঘটেছিল, যে কারণে ভেবেছিলাম তার লেখা বোধ হয় আমার কাছে অখাদ্যই মনে হবে।
এটা পড়ে ভুল ভাঙলো।
অখাদ্য নয়, সুস্বাদু খাদ্যও প্রস্তুত করেছেন তিনি।
Profile Image for Rajon  Das.
21 reviews4 followers
August 19, 2021
Either it's a bullshit book or my knowledge is incomplete till now!
622 reviews2 followers
September 11, 2020
Even by Manik's standard it was a complex book. I don’t think I have understand it well enough to judge it well. Seemed to me that the main character who deemed himself so highly was kind of nuts. He seemed trapped in his own head and to find solace or some semblance of love he sought out the girls as the mood striked him. Four girls kind of falling for him felt like an exaggeration for me and that fact kind of irritated me a lot. I cannot wrap my head around the fact that this many seemingly bright girls fell for the guy who seemed to have nothing attractive in him. Is this him being aloof? Do girls really fall for the guys who are indifferent? Guess I will never know.
Profile Image for সৌম্যদীপ সুজন.
16 reviews1 follower
July 23, 2023
বইটা সেরা, অন্তত তাঁদের কাছে যাঁরা মানসিক দ্বন্দ্ব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে চান৷ রিনি, সরসী, মাধবী, কালী, গিরি, রুক্সিণী, মালতী নামের তরুণীদের সাথে প্রেমিক রাজকুমারের টানাপোড়নের গল্পটাই চতুষ্কোণের উপজীব্য। রাজকুমার চরিত্রটি মানিকের সৃষ্ট সবচেয়ে জটিল চরিত্র বললেও অত্যুক্তি হয় না। "চতুষ্কোণ" প্রেম-ভালবাসা, সাইকোলজির এক গভীর সমুদ্র, যেখানে নামলে থই পাওয়া যায় না। আমার খুব পছন্দের বই। এ ধরনের মানে, মানবমনের জটিল সমীকরণ সংক্রান্ত লেখা ভালো লাগে।
Profile Image for শৌণক.
112 reviews17 followers
March 29, 2020
এক রাজকুমার নামের রাজকুমারের গল্প। তার মনের মধ্যে ঘটে যাওয়া আনন্দ, বিষাদ, উচ্ছ্বাস, ভাবাবেগের উথালপাতালের গল্প। পড়তে সুন্দর।
Displaying 1 - 30 of 65 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.