মানুষের অনেক বড় বড় স্বপ্ন থাকে। দিলশাদের এখন কোন বড় স্বপ্ন নেই। তার সব স্বপ্নই ছোট ছোট স্বপ্ন। একসময় সে খুব স্বপ্ন দেখত। তার বারান্দাটা সে স্বপ্ন দেখার জন্যই সাজিয়েছিল। এই বারান্দায় পা ছড়িয়ে বসে নানা কিছু ভাবতে তার ভাল লাগত। বারান্দা আগের মতই আছে। সে বদলে গেছে। এখন সে ঘুমের অষুধ খেয়ে বারান্দায় এসে বসে। স্বপ্নের জন্য অপেক্ষা করে না। ঘুমের জন্য অপেক্ষা করে। (Jacket)
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
পৃথিবীর অন্যতম বিষন্নতার উপন্যাসের গভীরতায় আপনাকে স্বাগতম।
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা গুলোর মাঝে একটা পরিচিত প্যাটার্ন থাকে। বিষন্নতা-হাসিখুশি একটা নির্দিষ্ট লিমিটে দিয়ে দেন যেন। কিন্তু এপিটাফে তিনি নিজের গন্ডির অনেকটা বাইরে চলে গেছেন।
সচারচার আমরা সেরা লেখা গুলোর নাম নিতে গেলে হয় আমরা কেন জানি এপিটাফ এড়িয়ে যাই। এতটা বিষন্ন বলে? নাকি আমরা ঠিক সেই গভীরতায় পৌছাতেই পারিনি লেখক যেখানে নিয়ে গেছেন?
হুমায়ূন আহমেদ যথেষ্ট জনপ্রিয়। তার কিছু কিছু উপন্যাস নিয়ে প্রয়োজনের থেকে বেশী মাতামাতি হয় আর কিছু নিয়ে একেবারেই হয় না। হুমায়ূন আহমেদের টপ আন্ডারেটেট বইয়ের তালিকায় প্রথমেই থাকবে 'ফেরা' আর 'এপিটাফ' নামের বই দুইটা।
যত মানুষকে 'অপেক্ষা' উপন্যাসটা কাঁদিয়েছে তারচেয়ে বেশী কান্নার উপাদান আছে এপিটাফে। এই উপন্যাসে সবচেয়ে কঠিন হৃদয় মানুষেরও চোখে জল আসবেই।
উৎসর্গপত্র- শেফার স্মৃতির উদ্দেশ্যে, কালান্তক ব্যাধি বাসা বেঁধেছিল মেয়েটির ছোট্ট শরীরে। সে সেই ব্যাধিকে অগ্রাহ্য করলো। মৃত্যুকে গ্রহন করলো অসীম সাহসীকতায়। কে জানে মেয়েটির সাহস দেখে হয়তো মৃত্যুও লজ্জা পেয়েছিলো।
এই গল্পটা নাতাশার। গল্পে একদিকে ধরা হয়েছে নাতাশাকে অন্যদিকে তার মা দিলশাদকে। নাতাশার শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। তার মা টাকার জন্য ছোটাছুটি করছে। তার বাবা নেশা ভাঙ করেই টাকা উড়িয়েছে এবং এখন দিলশাদের সাথে সেপারেশন আছে। মেয়ের অসুখের খবরটা পর্যন্ত দিলশাদ তাকে দেয়নি। এতটাই আত্নসম্মানবোধ তার।
মেয়েকে দেশের বাইরে নিতে এগারোলাখ টাকার দরকার। মা দিলশাদ তার আত্নসম্মানবোধ পুরো গল্পে জলাঞ্জলি দিয়েছে। কখনো কোন দরজায় গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছে তো কেউ পাঁচশ টাকা ভিক্ষা দিয়েছে। অথচ দিলশাদ ভিক্ষা নিতে যায়নি,সে ধার চাইতে গিয়েছিলো।
গল্পের সবচেয়ে সুন্দর দিক যেটা সেটা ঐ ছোট্ট নাতাশার বুদ্ধি এবং সবকিছু গ্রহন করতে পারার অস্বাভাবিক দক্ষতা। সে তার বাবা মায়ের ঝগড়া দেখেও না দেখার ভান করে থেকেছে, গ্রহন করেছে তার আসন্ন মৃত্যু যেটা তার মা মেনে নিতে পারছে না সেটাও। ছোট বাচ্চারা কষ্ট পেলেই মাকে ডাকে কাঁদে কিন্তু নাতাশা যখনই কষ্ট পেয়েছে মায়ের থেকে লুকিয়েছে,ভেবেছে, কি লাভ মায়ের দুশ্চিন্তা আরেকটু বাড়িয়ে দেবার?
নাতাশার মা কখনোই ভাবতে চায় না সে মারা যাবে এটা সে নিতেই পারে না। কিন্তু নাতাশা তার মৃত্যুর সম্ভাবনা শুধু গ্রহনই করেনি সে আরো চায় বাড়ি থেকে তার সব ছবি সরিয়ে ফেলতে যাতে তার মৃত্যুর পর মা কষ্ট না পায়,তাকে ভুলে যায়। সে চায় একদিন তার ছোটছোট ভাইবোন আসুক, বাবা মা আবার আগের মতো হয়ে যাক। যদিও সে জানে এই আনন্দযজ্ঞে সে অংশ নিতে পারবে না তারপরও সে সবার ভালো চায়,সে চায় কাজের মেয়ে ফুলির মায়েরও একটা ভালো বিয়ে হোক,সেও ভালো থাকুক।
গল্পের কিছু কিছু কথা, কিছু কিছু চরিত্র হৃদয় কেড়ে রেখেছে। যেমন, কাজের মেয়ে ফুলির মা। নিজের মেয়ের মৃত্যুতেও যে মহিলা ভেঙে পড়েনি নাতাশাকে কষ্ট পেতে দেখলেই সে একটা কোরআন শরীফ এনে তার মাথায় রাখে,অথবা নানীজান যিনি কান্নাকাটি করেননা,স্বান্তনার কথা বলেননা, শুধু মজার মজার কথা বলে হাসান, ভালো রাখেন। পাশের ফ্লাটের একটা মহিলার সাথে নাতাশাদের পরিচয় নেই,তাও তিনি ওর বৃত্তি পাবার খবর শুনে খুশীতে আত্মহারা হয়ে যান, অসুস্থ হবার পর এসে হাতটা ধরে চুপচাপ বসে থাকেন,কিছুই বলেন না।
অর্থকষ্ট, অসুস্থতা ছাপিয়েও এই উপন্যাসে কেমন একটা দৃঢ়তা আছে,কেন জানি হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য উপন্যাসের সাথে মেলাতেই পারি না এটাকে। লেখনীর দিক থেকে,প্লটের দিক থেকে কেমন একটা ভিন্নতা কেমন একটা আলাদা আলাদা ব্যাপার। হুমায়ূন আহমেদের সব উপন্যাসই সুন্দর,এইটা আলাদাভাবে সুন্দর কিন্তু আলোচনা কম।
সেই চিরচেনা চরিত্রায়ন! চেনা মানুষজনের সঙ্গে কাহিনীর পোশাকি পরিবর্তন! তারপরও হুমায়ূন আহমেদের লেখা শেষে এসে ভালো লেগে যায়। হুমায়ূন জানতেন বাঙালির ডিমের মতো হৃদয়কে কাবু করতে হয় কিভাবে! হাবিজাবি কাজ শেষে একটু খোঁচা দেয়া আরকি! ব্যস অমনি খোলস যাবে ভেঙে, ইমোশনের বন্যায় পাঠককূল যাবে ভেসে ¬_¬"
অল্পবয়েসি নাতাশা; স্কুলে যাকে শুকনা বাঘিনী আর থলথলে বাঘিনী নামক মিসদের খপ্পরে পড়তে হয়! এতটাই অল্প বয়স তার, তবুও মৃত্যু তারই দরজায় কড়া নাড়ছে; মৃত্যুর এইসব বয়সের হিসেব করার সময় নেই! তথাকথিত হুমায়ূনীয় পুরুষ চরিত্র (হালকা করে বোহেমিয়ান টাইপ+ কিছু খারাপ বৈশিষ্ট্য+ ব্যাড হওয়া সত্ত্বেও কেউ না কেউ তাকে ভীষণ ভালবাসে) সাজ্জাদ নাতাশার বাবা; নাতাশা তার বাবাকে খুবই ভালবাসে এবং ভাইস ভারসা। নাতাশার মা দিলশাদ, ইনিও চেনা। তবে আরও বেশি চেনা কারণ তিনি মা। সাজ্জাদ-দিলশাদ জুটি হলেও সময়ের আবর্তনে সম্পর্ক সমানুপাতিক হারে জোড়া লাগার বদলে চিড়ে গেছে অনেকখানি যার ফলে আলাদা থাকার মধ্যেই শান্তির মা বিরাজমান। কাজেই দিলশাদকেই ব্যস্ত হতে হয় মৃত্যুকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানোর টাকা জোগাড়ে। টাকা জোগাড় হয় আবার হয় না! টাকা তো আর টঙ দোকানের চা না যে চাইলেই পাওয়া যাবে কিংবা দিলশাদের দুলাভাইয়ের কাছে তাইই!
দিলশাদ জানে নাতাশার কষ্ট হয় কিন্তু কতটুকু কষ্ট হয় তার কতটুকুই বা সে দেখতে পারে! চাকরি আর টাকার পেছনে দৌড়াতে গিয়েই বেশ সময় চলে যায়! তবুও একদিন সময় হয় তার, একজন মা দ্যাখে তার অল্প বয়েসি বুদ্ধিমতী মেয়েটা কেমন কষ্ট পাচ্ছে...
তারপর আমার আবারও একটি কথা মনে পড়ে- কেন মা,মা,মা এবং বাবা!?
শুরুতেই বলে রাখি, হুমায়ূন আহমেদের সবথেকে আন্ডাররেটেড বইগুলোর মধ্য একটা মনে হয়েছে এই বইটা। সব বই তার রেশ রেখে যেতে পারেনা। এপিটাফ পেরেছে।
আহমেদ ছফা হুমায়ূন আহমেদের এপিটাফ বইটি পড়ে বলেছিলেন, অন্য লেখক যেমন সৈয়দ শামসুল হক, তসলিমা নাসরিন এনাদের নষ্টামিটা শিশ্নে হলেও হুমায়ূন আহমেদের নষ্টামিটা হলো মস্তিষ্কে।
আহমেদ ছফার বইটি সম্পর্কে এমন ধারনাটাই আমাকে বইটি পড়তে আগ্রহী করে তুলেছিল এবং অবশেষে আমি বইটি পড়ে শেষ করলাম।
সম্ভবত আমি ছফা সাহেবে হুমায়ূন আহমেদের মস্তিষ্কের যে নষ্টামির কথা বলেছেন সেটা পুরোপুরিভাবে ধরতে না পারলেও আংশিক ধারনা পেয়েছি।
কিন্তু আমি কিছু এই ব্যাপারে আলোকপাত করবো না কারণ আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাতুল সরকার নই যে সামনে অসংখ্য দাঙ্গা পুলিশের সামনে একা নির্ভয় চিত্তে এগিয়ে যাব। আমি সামান্য পাঠক সারস্বত, তাই বিপক্ষে কিছু বলে সামনে অসংখ্য হুমায়ূন ভক্তদের রোষানলে পড়তে চাইনা। কারণ আমার অতীত অভিজ্ঞতা বলে কমেন্টে এরা দাঙ্গা পুলিশ থেকেও ভয়ানক।
তবে যারা আহমেদ ছফার উক্তির সত্যতা বা অসত্যতা পরীক্ষা করত��� চান তারা বইটি অবশ্যই পড়বেন। এটুকু বলতে পারি বইটি আপনার মনে দাগ কেটে রেখে যাবে, সমালোচনা করলেও যেমন ছফা সাহেবের দাগ রেখে গিয়েছিল।
বইটা সম্পর্কে আমার অতি স্নেহাস্পদ অনুজ বলেছে, বইটি ওর ভাল লাগেনি কারণ বইটির অন্যতম প্রধান চরিত্র নাতাশা। মাত্র ১৩ বছর বয়স। মেয়েটি একটি মরণব্যাধির সাথে লড়াই করে। কিন্তু বইটিতে উল্লেখিত তার দৃষ্টিভঙ্গি, আবেগ, চিন্তাশীলতা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ শুধু নয়, অনেকক্ষেত্রে মানুষের মত।
অভিযোগটা শুনে আমার ভাল লেগেছে। এই অভিযোগ থেকে বোঝা যায় ও কত গভীরভাবে প্রতিটি বই পড়ে, চরিত্রগুলি নিয়ে চিন্তা করে। তবে ওর অভিযোগের উত্তর লেখক নিজেই এই বইতে দিয়ে গেছেন। আর সেই উত্তর হলো আনা ফ্রাঙ্ক এবং তার ডায়েরী।
আমার জানা মতে আনা ফ্রাঙ্ক কোন প্রডিজি ছিলেন না। আনা ফ্রাংকের ডায়েরী পড়লে আমরা দেখতে পারি একটা সারা বিশ্বের একটি সংকটকালের কি নিখুঁত বর্ণনা আসলে যে দু:সহ সময় এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে উনি পার হয়েছিলেন সেটা অভিজ্ঞতা তার বয়স কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছিলো। ঐ যে Ziad K. Abdelnour এর একটি উক্তি আছে না, "Maturity comes with experience, not age."
ফিকশনাল নাতাশার ব্যাপারটাও তাই। এক্ষেত্রে নাতাশা এক্সেপশন নয়। শুধু একটি সাধারণ চরিত্রের অসাধারণ উপস্থাপনা মাত্র।
পরিশেষে আমার অনুজ এবং সেসব পাঠক যাদের হুমায়ূন আহমেদের লেখা ভাল লাগে আমার অনুরোধ বইটি অবশ্যই পড়বেন আর বুঝতে পারবেন কত অসাধারণ একটি লেখা এতদিন দৃষ্টির আড়ালে ছিল।
বছর দশেক আগে ক্লাসের ফাকে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়া এই বইয়ের মর্মার্থ বোঝাটা আমার জন্য সহজ হয়নি,তখন সবে মাত্র হুমায়ূন সাহিত্যের সাথে একটু আধটু এলোমেলো দেখাসাক্ষাৎ হচ্ছে,আমাকে বরং জাফর ইকবালের বইগুলো টানত বেশি,কুমিরের ছানা দেখানোর মত ঘুরে ফিরে একই কাহিনী থাকলেও কৈশোর বয়সে অধিকাংশ মানুষের মধে্যই বোধহয় হুমায়ূন আহমেদ থেকে জাফর ইকবাল বেশি জনপ্রিয়।একটা সময় পর্যন্ত আমি এই ভ্রমের মধ্যে বেশ ভালো ভাবেই কাটিয়েছি,জাফর ইকবালের বই😍বাহ্ এক নিমিষেই শেষ.হুমায়ুন সাহেব আমার কাছে ঐ পাগলাটে স্বভাবের গাজ্বালা ধরানো হিমুর জন্যই বেশি সুপরিচিত ছিলেন। নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গের মতো হয়ত রবির প্রভাবে আমার ভ্রম ভাঙ্গে নি একেবারেই তখন কিন্তু এপিটাফ ছিল সেই হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম ধাপ।
নাতাশার গল্প দিয়ে শুরু এই বইটা,নাতাশা তার জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ টা লড়ছে তখন , কিন্তু সে তো চিঠি লিখে ,ফুলির মার সাথে কথা বলে ,বাবার সাথে কল্পনায় অষ্টপ্রহর থাকলেও মা দিলশাদের ক্ষেত্রেই যেন কেমন দূরদ্বীপবাসিনী হয়ে যায়।
বাবা-মার সম্পর্কের টানাপোড়েন অনেক সময় সন্তানকে ও স্পর্শ করে, কোথাও পড়েছিলাম স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক ছিঁড়ে যেতে পারে কিন্তু বাবা মার কখনো যায় না।তারা যে বিনিসুতোয় বাধা থাকা সারাজীবন।
বাবা হিসেবে দায়িত্ব যেমন তেমনই পালন হোক না কেন মায়ের জায়গা থেকে দিলশাদ তার সর্বোচ্চ টা দিয়েছে,প্রচন্ড আত্মভিমানী হওয়া সত্ত্বেও মেয়ের জন্যই শেষ পর্যন্ত নত হয়েছে আপন দুলাভাইয়ের কুরুচিকর চিন্তাতে
একথাটা হয়ত খুব মানানসই হবে না এখানে কিন্তু আমার মনে হয় সন্তানের জন্য মা বোধহয় পৃথিবীর সবকিছু বিলিয়ে দিতে পারে, নিজের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়েও লড়তে পারে আবার ঝড়ঝাপটায় পাখির মত মমতার ছায়ায় আগলে রাখতেও মার বিকল্প কোনো যুগেই স্রষ্টা সৃষ্টি করেননি।সেই ক্ষুদ্র প্রাণকে তিলতিল করে রক্তমাংসের মানুষ করে গড়ে তোলার কঠিন কাজটা মা বলেই পারে অন্য কেউ হলে কবেই ছেড়ে দিত
ঠিক আগের পড়া হুমায়ুন আহমেদের বইটাতে হুমায়ুনের লেখার যথেষ্ট দূর্নাম করেছি। কিন্তু এ বইটা.....দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী এক বালিকার জবানীতে লেখা... ডায়েরি, কিংবা এপিটাফ? মন খারাপ করতে করতে স্বীকার করে নিলাম, ইমোশনে কিভাবে ডোবাতে হয়, হুমায়ুন আহমেদ তা জানেন। বাবাপ্রিয় মেয়েদের তো আরোই... নাহ, আর কিচ্ছু বলতে পারছি না। বইটা যখন ইউটিউবে শুনছিলাম, কেবল শুনেই গেছি- সাহিত্যমান যাচাই করার খেয়াল ছিলনা।
While many writers spend pages after pages describing what is happening inside a person's brain, what turmoil has made some to do something; the specialty of Humayun Ahmed is, he actually tells nothing. Absolutely nothing. He just sews events one after another. The rights to judge a character is all upon the readers. This 1995 novel is a remarkable example of that. Personally, I like his old novels than the recent ones. It tells the story of a little girl Natasha (নাতাশা) who is suffering from Meningioma a variant of brain tumor. And she needs to be taken to America to get any treatment started. Her father, Sajjad (সাজ্জাদ) is vagabond who has given away his prestigious career, became some kind of drunken weseal and went to live in a jungle prior to the events of the story. And the mother Dilshad (দিলশাদ)is a women who is alone struggling collecting 11 lac Taka that is required for the treatment. The story revolves around two section. One describes Natasha's day to day experience as a patient. The other describes Dilshad's quest for money leaving no stones unturned. Very small novel, but really good.
কিছু বই থাকে, পড়তে গিয়ে হৃদয়টাকে বারবার থামিয়ে রাখতে হয়। চোখ চালালেও মন পড়ে থাকে একটি লাইনে, একটি সংলাপে, একটি টুকরো দীর্ঘশ্বাসে। হুমায়ূন আহমেদের “এপিটাফ” তেমনই এক উপন্যাস। শব্দে শব্দে কষ্ট জড়ানো এক কিশোরীর গল্প, যে আসলে নিজের বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, অথচ তার ডায়েরির পাতাগুলো হয়ে উঠেছে জীবনের গভীরতম অনুভবের দলিল।
নাতাশা—নামটা শুনলেই একটা কোমল মুখ ভেসে ওঠে মনে, যে একটু অভিমানী, একটু নিরীহ, কিন্তু ভিতরে ভিতরে অসম্ভব শক্ত। ব্রেন টিউমার ধরা পড়ার পরও, সে কান্নাকাটি করে না, নিজের কষ্টগুলোকে মুখে না এনে ডায়েরিতে জমিয়ে রাখে। তার প্রতিটি লেখার পেছনে একটা অদ্ভুত পরিণত বোধ কাজ করে—যেমন যেন মেয়েটি জীবনের চেয়ে অনেক বড় কিছু বুঝে ফেলেছে সময়ের আগেই।
তার মা, সংসারের হাল ধরা একজন একা নারী—অসাধারণ এক চরিত্র। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ছুটে বেড়ান, অর্থ জোগাড়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালান, অথচ শেষ মুহূর্তে এমন এক সিদ্ধান্ত নেন যা পাঠককে কাঁপিয়ে দেয়। নিজের কষ্টকে পাশে সরিয়ে রেখে মেয়ের বাবা, সেই দায়িত্বহীন মানুষটির জন্য চিকিৎসার টিকিট কিনে আনেন। এবং নাতাশা, চুপচাপ সব দেখে নেয়—না অভিযোগ, না কান্না, শুধু একটুখানি অভিমান হয়তো জমে থাকে গলার নিচে।
উপন্যাসটি ছোট, পাতায় পাতায় নরম আলো ছড়ানো। এখানে কোনো চিৎকার নেই, নেই নাটকীয় টানাপোড়েন। আছে শুধু নীরবতা, অন্তর্দাহ আর এক কিশোরীর প্রতিদিনের দিনলিপি। এমনসব বাক্য আছে যা মুখস্থ হয়ে যেতে চায়—
“মানুষের করুণা গ্রহণ করার মতো লজ্জা আর কিছুতেই নেই।”
এই একটি লাইনেই পুরো উপন্যাসের সুর যেন বেঁধে দেওয়া হয়।
হুমায়ূন আহমেদের লেখার মুন্সিয়ানা এখানেই—তিনি চিৎকার না করেও কানে কানে দুঃখ শোনাতে পারেন। নাতাশার মতো একটি চরিত্র গড়ে তুলতে গেলে দরকার হয় অপার সংবেদনশীলতা, আর তা তিনি করেছেন যেন চোখ বুজেই। এই উপন্যাস শেষ করে চোখ ভিজে আসে না—বরং মনে হয়, কেউ যেন বুকের এক কোণে নীরবে বসে রয়ে গেল। “এপিটাফ” শুধু নাতাশার মৃত্যুর কাহিনি নয়, এটি তার জীবনের গভীরতম আলেখ্য। প্রতিটি ডায়েরি-লেখা হয়ে ওঠে একেকটি
এপিটাফ—একটি করে বিদায়ের কথা, একটি করে ভালোবাসা। পড়তে পড়তে মনে হয়, এমন একটি মেয়েকে আমরা চিনি। অথবা, আমাদেরও ভিতরে কোনো নাতাশা বাস করে—অভিমানী, চুপচাপ, অসম্ভব সাহসী।
বই যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার পড়লাম। প্রথবারের চেয়েও আজ বেশি ভালো লেগেছে আসলে কি ভালো লেগেছে? না কষ্ট লেগেছে? মাঝে মাঝে কষ্টও ভালো লাগে। এটা কষ্ট হলেও তৃপ্তি পাওয়া যায়।
হুমায়ূন আহমেদের আনুমানিক ৩০টির মতো উপন্যাস পড়েছি এই মধ্যে দুইটি গল্প আমার খুব প্রিয় কারণ গল্পগুলো হুমায়ূন আহমেদের নয় গল্প গুলো আমার! শুধুই আমার গল্প আর কারো নয়। একটা হলো এপিটাফ আর একটা হলো নির্বাসন।
একটা উপন্যাস তখন আর উপন্যাস থাকেনা যখন সেটা জীবন্ত হয়ে উঠে। এই বইটি আমার কাছে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। বইটি আমি যেই ভাবে অনুভব করেছি সেই ভাবে কেউ অনুভব করতে কেউ পারেনি পারবেও না। এমন কি লেখক নিজেও না। বিশ্বাস না করলেও সত্যি যে বইটি পড়ে মনে হয়েছিল আরে এতো আমার গল্প। আমি যদি হুমায়ূন আহমেদের মতো ভালো লেখক হতাম তবে আমাকে নিয়ে লেখা আমার গল্প হয়তো এই গল্পকে ছাড়িয়ে যেত।
গল্পটি চলেছে অসুস্থ নাতাশাকে নিয়ে। তাকে বিদেশ নেওয়া হবে চিকিৎসার জন্য। বাবা মার মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। মা ভিক্ষুকের মতো টাকা খুজে বেড়াচ্ছে লতাপাতার আত্বীয়দের কাছে। নাতাশা আর তার মাই ছিল গল্পের কথক।
এই বইটি একটি অনুপ্রেরণা মূলক বই। এই বইটি পড়ে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পাবে। আর যারা বাঁচবেই না তারা মৃত্যুকে গ্রহণ করবে অসীম সাহসিকতায়। কে জানে তার সাহস দেখে হয়তো মৃত্যুও লজ্জা পেয়ে যাবে!
বইতে একটা কথা আমি পেয়েছিলাম যেটা ছিল আমার নিজেরও মনের কথা আর সেটা হলো মানুষের করুণা গ্রহণ করার চেয়ে লজ্জা আর কিছুতেই নেই। করুণা শব্দ এবং করুণাকারি এই দুটিকে আমি মনে প্রাণে ঘৃণা করি। যদি কেউ আমাকে বলে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি কি কি জিনিস ঘৃণা করো তবে আমি প্রথমেই বলবো ক রু ণা!
এপিটাফ শব্দটি পড়লেই মৃত্যুর কথা মনে পড়ে যায়। আচ্ছা কি লেখা থাকবে আমার এপিটাফে? হয়ত কিছুই লেখা থাকবে না। হয়ত থাকবে। থাকুক বা না থাকুক আমার কিছু এসে যায় না। আমার মনে হয় মৃত্যুর পর কে কি করলো না করলো তার জানা যায় না। মৃত্যু মানেই পৃথিবীর সাথে সব সম্পর্ক উষ্ঠা দিয়ে শেষ করে দেয়া। মৃত্যুর পরও পৃথিবীর সাথে যদি সম্পর্ক থাকে তবে সেটা ভূত হয়ে। আমার বিশ্বাস ভুত বলে কিছুনেই। শুধু আমারই নয় সমগ্র ইসলাম ধর্মের মানুষের বিশ্বাস। ভূত নেই জিন আছে। খ্রিস্টান রা যাকে বলে ডেবিল।
কি নিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম পাগলের মতো কত কিছু লেখা শুরু করে দিলাম। যাই হোক এবার শেষ করতে হবে। তবে শেষ করার আগেঃ-
"দিলশাদের চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। সে শাড়ির আঁচল চোখ মুছে মা'র দিকে হাত বাড়িয়ে শান্ত গলায় বলল, তুমি কুট কুট করে কী সুন্দর পান খাচ্ছ। তোমার মুখ থেকে একটু পান দাও তো মা।"
লাইনটা আমার প্রিয় কোন লাইন নয় তবুও দিলাম কিন্তু কেন বুঝতে পারছিনা।
[পুনশ্চঃ- আমি এখনো বিশ্বাস করি নাতাশা বেঁচে আছে। কারণ, বিশ্বাস ই নাতাশাদের বাঁচিয়ে রাখে।]
পাঁচের বদলে যদি কোন বইকে দশ দেয়া যেতো, আমি তাই করতাম এই বইয়ের ক্ষেত্রে। মৃত্যুপথযাত্রী একটা মেয়ের জীবন, মনস্তত্ব, পারিপার্শ্বিকতা এত সুন্দর করে তুলে ধরেছেন যে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও মন চায় নাতাশা যেন বেঁচে ওঠে, নাতাশা যেন ভালো হয়ে যায়!
হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় দশটা বইয়ের তালিকায় এই বই আমার লিস্টের প্রথম তিনে অবশ্যই থাকবে। পৃথিবীর সব নাতাশা ভালো থাকুক, সুস্থ হয়ে যাক।
কতকাল বই পড়ে চোখে পানি আসে না। মনে পড়ে জহির রায়হানের বরফ গলা নদী বইয়ের কথা, সর্বশেষ এই বইটি পড়ে অনেক সময় নিরবে কেঁদেছিলাম , আজ এই বইটি পড়ে ঠিক তেমন কাঁদলাম অনেকক্ষণ। বইটি শেষ করতে ইচ্ছা করছিল না, শেষ করার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত ভাবলাম ইস শেষটা যেন কষ্টের না হয়, তবে অনেক আগে থেকেই পড়তে পড়তে চোখে পানি চলে আসছিল,, বইটা আমার বন্ধুর জীবনের সাথে আংশিক রিলেটেবল। ওকে ভালোবাসি বলেই মনে হচ্ছিল ওর জীবনের গল্প পড়ছি, কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। একজন মায়ের আত্মত্যাগ বইয়ের প্রতিটা মুহূর্তে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, কিছু নেতিবাচক চরিত্র এবং কিছু কোমল হৃদয়ের মানুষের কথোপকথন সত্যি হৃদয়ের অন্তরালে গিয়ে পৌঁছেছে। এইসব গল্প জীবনের মূল্য দিতে শেখায়। অবশ্যই আপনার এই বইটি পড়া উচিত,, তবে অনেক বেশি কষ্টের মধ্যে থাকলে এই বইটি পড়বেন না তাহলে আপনার মন আরো বিষন্ন হতে পারে। ধন্যবাদ
বইটা পড়ে প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমার মাকে ভীষণ মিস করেছি... সন্তানেরা কেন মা থেকে দূরে থাকবে! কেন! ভেজা চোখ নিয়ে বইটা শেষ হলো কেন এই আফসোস করছি। পরে কখনো ধীরেসুস্থে রিভিউ লেখা হবে...
একটা বড়োসড়ো বই শেষ করার পর ভাবলাম একটা হালকা বই পড়ি, তাই এই বইটা বেছে নেওয়া। কে জানতো এতো হালকা ওজনের বইটি এতো ভারী একটা কষ্টের ভার বুকে চাপিয়ে আবার টেবিলের উপর বসে থেকে মিটিমিটি হাসবে! কষ্টকে এভাবে মানুষের বুকে খুব বেশি লেখক গেথে দিতে পারেন না, যতটা না পারেন হুমায়ূন আহমেদ। নিজের অনেক বড়ো বড়ো কষ্টেও কেন যেনো এখন কান্না আসে না, চোখে জল আসে না। কিন্তু অদ্ভুতভাবেই এই বইটা আমার চোখ থেকে ৪ ফোঁটা জল বের করে নিলো। কল্পনাকে বাস্তব থেকে আরো বেশি বাস্তব করে এভাবেও ফুটিয়ে তোলা যায়!
লাস্ট টাইম হুমায়ূন আহমেদের "সমুদ্র বিলাস" পড়ে মেজাজ সাংঘাতিক বিগড়ে গেছিল। অসহ্যকর লাগছিল। গল্প পড়ে ট্রিগার হয়ে যাওয়ার যে বাচ্চামো অনেকটা তেমনই বলা চলে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিছিলাম, অনেক হয়েছে হুমায়ূন, ফুয়াদ নেক্সট কয়েক মাসে তুই যদি আর একবারো হুমায়ূন পড়িস তুই তাহলে একটা.... (থাক না বলি)
& guess what... পড়ে ফেললাম। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এই উপন্যাসটা সুন্দর ছিল। শুধু সুন্দর বললে খুব ভুল হবে, অনেকককক সুন্দর ছিল। বিষন্ন সুন্দর।
অবাক লাগে, হুমায়ূন আহমেদ কত জোস ভাবেই না ব্যালেন্স করছেন। তার লেখা ট্রাস উপন্যাস ও আছে আবার এমন আন্ডারেটেড জেম ও উনি লিখেছেন। পারফেক্টলি ব্যালেন্সড।
আমি বইটা সম্পর্ক বেশি কিছু বলব না, তাহলে হয়ত স্পয়লার বেরিয়ে আসবে মুখ থেকে। শুধু বলব, এটা অনেকটা তার ক্লাসিক উপন্যাস গুলার মতন। বিরহে গাঁথা। বইটার শেষে কাহিনি ঝুলে থাকে কারণ গল্পের সমাপ্তি দেওয়ার দায়িত্ব পাঠকের কাঁধে।
মায়ের তার সন্তানের প্রতি যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা তা আপনি এই গল্পের মাঝে খুঁজে পাবেন। খুঁজে পাবেন সম্পর্কের বিভিন্ন ভাগ, মানুষের ছলনা, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা সব সব সব। স্বামী স্ত্রীর মাঝে মতের মিল না থাকলে যে সংসারের অবস্থা হয় তাও দেখতে পাবেন এখানে। হুদাই বলি না যে, বিয়েসাদী করা হচ্ছে জীবন নিয়ে জুয়া খেলার মতন। এসব উপন্যাস পড়লেই তো বাস্তবতা একটু হলেও বোঝা যায়।
anyway.. আমি এই বইটা রিকমেন্ড করব। কারণ হুমায়ূন আহমেদের কোয়ালিটিফুল এই বইটা নিয়ে খুব বেশি কথা হয় না। সবাই নাচে গায় এক অপেক্ষা নিয়ে। অসহ্য লাগে দেখলে -,-
এপিটাফকে আন্ডাররেটেড এবং ভিন্ন ধারার বই বলা যায়। হুমায়ূনের মধ্যে লজিক, এন্টিলজিকের অদ্ভুত দ্বৈততা থাকা সত্ত্বেও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে দেখার চোখটাও ছিল বেশ দারুণ। ছোট্ট একটা মেয়ের অসুস্থতাকে উপজীব্য করে লেখা এই উপন্যাসে উনি দেখিয়েছেন আসলে রোগ প্রকৃতির ই একটা অংশ, স্রষ্টা সেই প্রকৃতিকে তার নিয়ম মতো চলতে দিয়েছেন কিন্তু বিঘ্ন যা ঘটাই, দুর্ভোগ রোগশোক এইসব আমরা নিয়্র আসি। কি অসাধারণ উপলব্ধি আহা!
শুরুর দিক দিয়ে পড়তে তেমন একটা ভালো লাগেনি। কিন্তু তারপর আস্তে আস্তে ভালো লাগতে লাগল। শেষটা এতোটা চমৎকার হবে, এতো ভালো লাগবে ভাবেনি। শেষের দিকটায় ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম। হুমায়ূন স্যারের লেখা আরো একটি চমৎকার উপন্যাস।
এপিটাফ (Epitaph) মানে, সমাধিফলকের উপর খোদাই করা সংক্ষিপ্ত লেখা যেটা মৃত কোন ব্যক্তির স্মৃতি বা গুণাবলী বর্ণনা করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে, যা মূলত গ্রিক 'এপিটাফিওস' (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় দেয়া বক্তৃতা কে বলে) থেকেই এসেছে। এটি আসলে কবর বা স্মৃতিস্তম্ভের উপরে লেখা হয়।
ভালোবাসা যদি তরল পানির মত কোন বস্তু হত, তাহলে সেই ভালোবাসায় সমস্ত পৃথিবী তলিয়ে যেত। এমন কি হিমালয় পর্বতও।
প্রচন্ড রকমের মাথা ব্যথা নিয়ে বইটা শেষ করলাম, ভেবেছিলাম মাথা ব্যথা আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু, আমার হু হু করে কান্না করতে ইচ্ছা করলো মাথা ব্যথাটাও ছেড়ে গেলো। মাঝেমধ্যে বই পড়ে কান্না করাটা দোষের কিছু না। ভালো থাকুক দিলশাদ-টিয়া পাখি- সাজ্জাদ🤍
একজন নারীর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন জিনিস কি? হয়ত তার সম্ভ্রম। কিন্তু একজন মায়ের কাছে? সম্ভ্রম নাকি সন্তান?? নাতাশা ১৩ বছর বয়সি একটি মেয়ে। খুব জটিল রোগে আকান্ত্র। মেনিনজিওমা। রোগের কারনে নাতাশার শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে। যখন রোগ এটাক করে তখন প্রচন্ড মাথা যন্ত্রনার সাথে মুখ থেকে ফেনা বের হতে থাকে। নাতাশার মা দিলশাদ। নাতাশার বাবা সাজ্জাদের সাথে তার বনাবনি হয় না। ফলে সাজ্জাদ দিলশাদের সাথে থাকে না। নাতাশার এই ভয়াবহ রোগের কথা সাজ্জাদকে বলে নি দিলশাদ। সে একাই মেয়ের চিকিৎসা করবে। আমেরিকায় পাঠাবে চিকিৎসার জন্য। প্রচুর টাকার দরকার দিলশাদের। টাকা পাবে কোথায় সে? কে দিবে এত টাকা? স্বপ্ন দেখতে খুব পছন্দ করতো দিলশাদ। যেই বারান্দায় বসে স্বপ্ন দেখতো সেই বারান্দায় বসে সারাদিনের ক্লান্তি শেষে একটু ঘুমাতে চেষ্টা করে সে। পরিচিত-অপরিচিত সকলের কাছে গিয়ে হাত পাতে কিছু টাকার জন্য। আর নাতাশা? নাতাশা জানে সে আর বেশিদিন বাচবে না। তাই সে আনা ফ্রাঙ্কের মত ডায়েরি লেখে।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ সাধারনত সব বইয়ে কিছুদুর পড়ার পরে ট্রাজেডি শুরু হয়। কিন্তু এপিটাফ ভিন্ন। বইয়ের প্রথম পাতা থেকেই এত কষ্ট যে পুরো বইটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল কেউ বুকে ভারি কিছু চাপা দিয়ে রাখছে। শেষে এসে আর চাপা থাকতে পারে নাই। চোখ থেকে তরল হয়ে বের হয়ে গেছে। পড়তে পড়তে নাতাশার পরিবারের একজন হয়ে গেছিলাম। দিলশাদের কষ্টে কষ্ট পেয়েছি। হুমায়ূন আহমেদের লেখা নিয়ে বরাবরের মতই কিছু বলবো না। তার লেখা বিশ্লেষন করার যোগ্যতা আমার নাই। তবে এপিটাফ পড়ার পর তার প্রতি শ্রদ্ধায় আরও একবার মাথা নিচু করে ফেললাম। "স্যার, আপনি সত্যিই অতুলনীয়"
এই নাহয় বই। কখনো আনন্দ, কখনো রাগ, কখনো হতাশা। এক বই পড়ে এই সবকিছু অনুভব করলাম। এতো সুন্দর করে হুমায়ূন স্যার কাহিনীটা সাজিয়েছেন। বইটা পড়ে শেষ করে আমি বইটাকে বুকে জড়িয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলাম। এতো কষ্ট হলো আমার। এখনো কি ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। নাতাশা মেয়েটা কি দারুণ। বইয়ের শেষের দিকে ফুলির মা, নানীজান, ও বাবা - মায়ের কাছে নাতাশার লেখা চিঠিগুলো? আহা, কি আবেগ। মেয়েটার কি দুঃখ। দুঃখগুলো যেন চিঠি কয়টার প্রতিটা লাইনে লাইনে ভেসে উঠেছে। চিঠি চারটে পড়ে আমার এতো খারাপ লেগেছে, আবার পাশাপাশি এতো ভালো লেগেছে পড়তে। কি বলা যায় একে? মন খারাপ করা সুন্দর? হ্যা, এইটাই ঠিক নাম এই অনুভূতির জন্যে। নাতাশার পরে সবচেয়ে ভালোলাগার চরিত্র হচ্ছে নাতাশার নানীজান। এই মানুষটাকে আমার খুব বেশি ভালো লেগেছে। কি অসাধারণ একজন মানুষ। আর নাতাশার বাবা? এরকম বাবা কিভাবে হয়? এতো রাগ লেগেছে নাতাশার বাবার উপর। মেয়েটা বাবাকে কি ভালোবাসে। হ্যা, নাতাশার বাবাও তার মেয়েকে ভালোবাসে। কিন্তু এ কেমন ভালোবাসা? মেয়ের প্রতি, স্ত্রীর প্রতি কোনো দায়িত্ব নেই? মেয়ের এতো কঠিন সময়েও সে কিনা বাংলা মদের কথা ভাবে? দিলশাদ। নাতাশার মা। এই মানুষটার জন্য বইয়ের শেষের দিকে এসে আমার এতো বেশি দুঃখ লেগেছে, ঠিক বোঝাতে পারছি না। মানুষটাকে কতো কষ্ট ও অপমানের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। দিলশাদের মেঝো বোন ও দুলাভাই। কি বিরক্তিকর এই দুইজন। এই বইয়ের সবচেয়ে অপছন্দের চরিত্র হলো দিলশাদের বড় দুলাভাই। ছি, এতো জঘন্য ও মানুষ হয়? ছি। এই বইটা অনেক মায়ার একটা বই। অনেক ভালোবাসার। অনেক প্রিয়।💚
হুমায়ুন স্যারের সেরা বইয়ের তালিকা করতে বললে এই বই আমার জন্যে দ্বিতীয় নাম্বারে থাকবে। বাবা শব্দটা আমি খুবই পছন্দ করি। আমার জীবন জুড়ে বাবা আর বাবা।কিন্তু সাজ্জাদের কথা না জানলেই বোধহয় আমার জন্যে ভালো হতো!এমন মানুষও থাকে😤নেশার জন্যে স্ত্রীর গয়না চুরি,নেশার জন্যে পরিবার ছেড়ে দেয়া আবার স্ত্রী যেখানে সামান্য টাকার জন্যে হন্য হয়ে বেড়াচ্ছে সেখানে সে ভাবছে বাংলা মদের দাম।(Bravo,i just hate him) বাবা হবে দিলশাদের বাবার মতো💕নারকেল যেমন হয়-উপরে শক্ত ভেতরে মায়াতে জড়ানো🖤
বইটা আমি তৃতীয় বারের মতো পড়ছিলাম।সবসময় কান্না শুরু হয় শাহেদা আপা যখন বলেন ''মা রে, তোর এই অবস্থা কেনো হলো?'' বলে তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। সাথে অনেক পাঠকেরও (অন্তত আমার হয়) লেখক নাতাশাকে আমাদের জীবনের সাথে সুন্দর ভাবে জড়িয়ে দিয়েছেন🖤শেষ জানতে না পেরে ভালোই লাগছে🖤মনে করে নিবো নাতাশা ফিরেছিলো- তার পরিবার মিলে সব ফুল কিনে নিয়েছিলো ঢাকার, এয়ারপোর্টে যাওয়ার সময় 🖤
আমার সারাদিনে একটা বিশাল সময় কেটে যায় ভাবনা চিন্তা করে। ভাবতে ভাবতে এটাও ভুলে যাই কি ভাবছি। তবে সবচেয়ে বেশি ভাবি মৃত্যুচিন্তা করে। আমি মারা গেলে কে কষ্ট পাবে বেশি? আমার মা? মায়ের কি সেটা সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে? নাকি আমার দিদি? যে দিনের অধিকাংশ সময় আমাকে শাপ শাপান্ত করেই কাটায়। অথবা আমার বাবা, যে বোধয় ২য় বারের মতো মাকে হারানোর কষ্টে কান্না করবে। এই ভাবনাটা সত্যি হলে কতটা মারাত্মক হতে পারে বইটা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে।
প্রিয় একজন ব্যাক্তির সুন্দর রিভিউ দেখে বইটা কিনেছিলাম। সুন্দর না বইটা। ভীষন রকম মন খারাপ করানো।
দীর্ঘদিন আগে আমি শরৎচন্দ্রের লেখা গল্প-উপন্যাস পড়া ছেড়ে দিয়েছিলাম। শুধুমাত্র এই কারনে যে পড়তে পড়তে এক সময় চোখে পানি চলে আসে। বুকের ভেতর গভীর হাহাকার বোধ হয়। আমি এই ব্যাপারটা নিতে পারিনা। এই বইটি সেই হাহাকার তৈরী করল। এতো সুন্দর গল্পের কিছুই আমি আর শুনতে চাচ্ছিলাম না। এতো কষ্ট কেন হবে?চাইলে কি সব ঠিক করা যায়না?
উপন্যাসের নানীজানের কথাগুলো এত্তো গুছানো ছিল!যদিও তাঁর সব লেখাই গুছানো। তবুও! অসাধারণ সেই লেখনী দিয়ে আবারো মুগ্ধ করলো।
বইটা ভালো লাগছিলো না বলে বার বার রেখে দিয়েছি। স্পর্শকাতর বিষয়ে বেকুবের মত আচরণ করা বিরক্তিকর কিছু চরিত্র বিরক্তিকর আচরণ করে যাচ্ছে। ভাবছিলাম বইটা শেষ হলে বাঁচি। তারপর শেষ দুইটা অধ্যায় সব পাল্টে দিলো। প্রতিটা বাক্য যেন মায়া, ভালেবাসা, দীর্ঘশ্বাস আর অশ্রু দিয়ে পরিপূর্ণ। নাতাশার মায়ের অপমান আমাকে বিচলিত করেছে। নাতাশার বিদায়ী চিঠিগুলো আমার চোখে পানি এনেছে।