ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা মেসের ঘরে হিমু শুয়ে আছে। শহর জুড়ে লোডশেডিং। আকাশে থালার মতো চাঁদ ওঠায় শহর অন্ধকারে ডুবে যায়নি। জানালা দিয়ে হিমুর ঘর জোছনা ঢুকছে। জোছনার কোনো রং থাকে না। শুধু সিনেমার জোছনা হয় নীল। হিমুর কাছে আজ রাতের জোছনা সিনেমার জোছনার মতো নীল লাগছে। নীল জোছনা গায়ে মাখতে ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে নীল রঙ চামড়া ভেদ করে ভেরতে ঢুকে যাচ্ছে। জোছনারাতে বনে যাওয়ার নিয়ম। তার কাছে শহরটাকে মাঝে মাঝে গহীন অরণ্য মনে হয়। শহরের অলিতে গলিতে হাঁটা মানে গহীন বনের ভেতরের গায়ে চলা পথে হাঁটা।
ভূমিকা প্রফেশনাল হ্যাজার্ড বলে একটা কথা ইংরেজিতে প্রচলিত আছে। বাংলায় হবে-পেশাগত বিপদ। যে দরজি ছাতা সেলাই করে তার বিপদ হলো, আঙুরে সুঁই ঢুকে যাওয়া। লেদ মেশিন যে চালায় তার বিপদ মেশিনে হাত কাটা পড়া। লেখকদের বিপদ অনেক মেশি। লেখালেখির জন্যে মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা আছে। দেশান্তরি হওয়ার ঘটনা তো বাংলাদেশেই আছে। হিমু নিয়ে যখন লেখি এক ধরনের শঙ্কা কাজ করে-না জানি কোন ঝামেলায় পড়ি! বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্টই সহনশীল। শুধু ক্ষমতাধর মানুষরা না। তারা আমজনতাকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা উপভোগ করেন, তাদের নিয়ে রঙ্গ-রসিকতা সহ্য করেন না। ক্ষমতাবানরা নিজেদের সবকিছুর উর্ধ্বে ভাবেন। আমি এই বইতে কিছু কঠিন রসিকতা করেছি। সরি, আমি না, হিমু করেছে। সমস্যা হলে হিমুর হবে। একটা ভরসা আছে, হিমু চাঁদের আলো ছাড়া কোনো কিছুই গায়ে মাখে না। হুমায়ূন আহমেদ নুহাশ পল্লী
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
সত্যি দারুন মজা পেয়েছি বইটা পড়ে।মূলত হিমু এই বইতে দেশের প্রতিটি সচেতন ও নিরপেক্ষ মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ এমনই এক বই যা শুধু হিমু ভক্তদেরই না বরং দেশ ও সমাজ সচেতন সকল পাঠকেরই দারুণ ভালো লাগবে। এত বিস্তারিতভাবে লেখকের দেশ ও দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে ভাবনার চিত্র অন্য কোন বইতে যে ফুটে ওঠে নাই তা বলাই বাহুল্য।
দারুন লেগেছে হিমুর বাবার উপদেশ টিও।
ভালো কর্ম বা সৎকর্ম করার তোমার প্রয়োজন নাই। সৎকর্ম নেশার মতো। একটি সৎকর্ম করলে আরেকটি করতে ইচ্ছা করবে। সৎকর্মের নেশা তৈরি হবে। যে-কোনো নেশাই মানুষের জন্যে ক্ষতিকর। নেশা হল নেশা। ভালো নেশা মন্দ নেশা বলে কিছু নাই। তুমি সেই সৎকর্ম করবে যা অন্যরা করতে পারছে না। অন্যদের করার ক্ষমতা নাই।
সৎকর্ম যেমন নেশা তৈরি করে অসৎকর্মও করে। নেশাগ্রস্থ হয়ে দুষ্টলোক একের পর এক অসৎকর্ম করতে থাকে।
এখন কি বুঝতে পারছ সৎকর্ম অসৎকর্ম একই মুদ্রার দুই পিঠ?
এক লোক রবীন্দ্রনাথ সেজে ঘুরে বেড়ায়, তার বাড়ি আবার আরেকজন দখল করে বঙ্গবন্ধু গবেষণাগার হিসেবে দাঁড় করেছে। এই গবেষকের আবার একজন সহযোগী আছে, নাম কিসলু। (এই কিসলু ব্যাটাকে শেষে ভাল কাজের নেশায় ধরে) তো হিমুর সুবাদে রবীন্দ্রনাথ সহ কিসলু মিয়াও হাজত বাস করে। সেখানে এক ওসিকে পাওয়া যায়, যে কিনা সাহিত্যের ছাত্র ছিল। ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার মিলে অপরাধীদের খালি পাকিস্তানী ডলা দিতে চায়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হিমু রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে কেয়া খেয়া নামের দুই শিশুর দেখা পায়। ওদেরকে এক বাড়িতে দিয়ে আসে, বাড়ির বৃদ্ধ-বৃদ্ধা খুব হ্যাপি হয়ে যায় কেয়া খেয়া নামক মেয়েদ্বয়কে পেয়ে। ওদিকে আবার দেখা যায় ওসি সাহেব কোন নায়িকার ফ্যান বনে যান। এই ওসি ভদ্রলোকের স্ত্রী তাদের বিয়ের ২য় দিনেই দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে চলে যান। তবে এখনও তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সাথে গলায় গলায় খাতির। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে ক্যাঁচাল হওয়ায় হিমুকে বারবার থানায় দেখা যায়। শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু গবেষককেও থানায় দেখা যায়, ছাত্রলীগের সম্মানিত সদস্য বলে পরিচয় দেয়ায় সেকেন্ড অফিসার তাকে নিজের ছাত্র জীবনে ছাত্রদল করার খবর জানায় এবং সেই সাথে আরও জানায় যে তাকে পাকিস্তানী ডলা দেয়া হবে। একদম শেষে দেখা যায় যে, সাথে দু'জনকে নিয়ে হিমু জোছনা খাচ্ছে এবং দয়াবতী রূপা তাদের জন্য খাবার পাঠিয়ে কাহিনীর ইতি টানে।
এই হচ্ছে অতিরিক্ত বিন্যাসবিহীন উপাদানে তৈরি......শূন্যস্থানে কী বসবে? খাসির কাচ্চি, বিরিয়ানি, কালারফুল ভেজিটেবল ফ্রাইড রাইস? এসবের কিছুই হয়নি। এদেশের পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো রকমে টেনেটুনে চলা কোনো ক্যান্টিনের টাটকা হলুদ ঝাল ভাতের (খিচুরি) মতো হয়েছে বোধহয়। দুই তারা।
লেখকরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন তাঁদের লেখনীর মাধ্যমে। হুমায়ূন আহমেদ সরাসরি প্রতিবাদে না গিয়ে প্রতিবাদ করতেন তার সৃষ্ট চরিত্র হিমুর মাধ্যমে। বাস্তব জগতে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকলেও হিমুর অ্যান্টিলজিক দুনিয়ায় কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। কিন্তু অন্যায়-অপরাধ ঠিকই আছে। বাস্তব জীবনের সীমাবদ্ধতার রেখা কাটিয়ে লেখক হিমুর কন্ঠে প্রতিবাদ করেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এই উপন্যাসে যেমন হালকাভাবে ধুয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগকে।
উপন্যাসের অনেকটা নাম পুরুষে লেখার কারণে কয়েকটা ঘটনায় হিমুর সরাসরি উপস্থিতি দেখা যায়নি। বলা যায় হিমু শুধু মাঝেমধ্যে এসে তার চাল দিয়ে গেছে। বাকি গল্প হিমুর প্ল্যানমতো বা বলতে পারেন লেখকের কলমের খোঁচায় এগিয়ে গেছে।
হিমুর বিছানার পাশে হাতলভাঙা চেয়ারে স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসে আছেন। গায়ে আলখাল্লা। হিমু তো হতভম্ব। পরে জানা গেল তার নাম ছামাদ। হিমু জিজ্ঞেস করলো ছামাদ, আপনি কি আমাকে চেনেন?
জি-না। আপনার দরজা খোলা ছিল, ঢুকে পড়েছি। গুস্তাকি মাফ হয়। আর আমারে আপনি বলবেন না। তুমি। স্রেফ তুমি। আপনার দিল যদি চায় তুইও বলতে পারেন।
তুমি কি মেসের অন্য কাউকে চেনো?
জি-না।
আমার এখানে উদয় হলে কীভাবে বলবে?
ছামাদ বিড়ি ধরাতে ধরাতে বলল, সকালে নাশতা করার জন্যে একটা পাউরুটি আর দুটা কলা কিনেছি। পার্কে যাব। বেঞ্চে বসে নাশতা করব। মাথায় এই চিন্তা। শুরু হয়ে গেল বৃষ্টি। সঙ্গে নাই ছাতা। কী করি কী করি? দেখি মেসের দরজা খোলা। ঢুকে পড়লাম। দারোয়ান আমাকে দেখল। কিন্তু কিছু বলল না। মনে হয় পোশাক দেখে টাসকি খেয়েছে। এই হচ্ছে ঘটনা। আর কিছু জানতে চান?
রবি ঠাকুর, নজরুল, গান্ধিজি—এদের ভেক ধরার প্রয়োজন কী?
ভিক্ষার সুবিধা হয়। ধরেন রবি ঠাকুর সাজিলাম, যারা রবি ঠাকুররে চিনে তারা খুশি হয়ে পাঁচ-দশ টাকা দেয়। একবার পাঁচশ টাকা পেয়েছিলাম। এক আপা দিয়েছিলেন।
চুল দাড়ি সব নকল?
জি। তবে টাইট ফিটিং, টানাটানি করলেও ছুটবে না। দাড়ি ধরে টান দিয়া দেখেন।
আলখাল্লা পেয়েছ কোথায়?
আমার এক চাচাতো ভাই আছে, নাম সামছু। এফডিসিতে কাজ করে। ডাইরেক্টর এমদাদ সাহেবের থার্ড এসিসটেন্ট। সে বানায়ে দিয়েছে।
আজ সারা দিন আছি আপনার সাথে।
সারা দিন তোমাকে নিয়ে আমি করব কী?
ছামাদ হাই তুলতে তুলতে বলল, আত্মীয়-বান্ধবের বাড়িতে নিয়া যাবেন। বলবেন, রবি ঠাকুর নিয়া আসছি। অটোগ্রাফ নিতে চাইলে নাও। ছবি তুলতে চাইলে তোলো। হিমু বিছানা থেকে নামতে নামতে বললো, চলো মাজেদা খালার ফ্ল্যাটে যাই। চা-নাশতা সেখানেই হবে।
মাজেদা খালার বাসায় গিয়ে দেখা গেল খালু সাহেব নতুন গাড়ি কিনেছেন—টয়োটা আলাফার্ডে না কী যেন নাম। নিশ্চয়ই দামি গাড়ি। হিমু ছামাদকে নিয়ে নিচে নামতেই খালু সাহেবের ড্রাইভার মজিদের সঙ্গে দেখা। এবং হিমু ছামাদকে নিয়ে সোজা টিভি চ্যানেলের অফিসে। সেখানে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ সেজে ছামাদ ঢুকে পড়েছে মন্ত্রীর সঙ্গে লাইভ টকশোতে।
এরপর আর কী পু*লিশকে খবর দেওয়া হয়েছে চ্যানেলের পক্ষ থেকে। হিমু বিনয়ের সঙ্গে চ্যানেলের এক মহিলা স্টাফকে বলল, ম্যাডাম কাজটা কি ভালো হবে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রে*ফতার—শুনতেও খারাপ।
তারপর হিমু, ছামাদ আর ড্রাইভার মজিদের ঠাঁই হয় থা*নায়। সেখানে হিমু মুখোমুখি ওসি নাজমুল হুদার। এবার হিমুর কপালে যে কী আছে!
🥬পাঠ প্রতিক্রিয়া 🥬
হুম���য়ূন আহমেদের হিমু মানেই মন ভালো করার বই। এখানে গোছানো কাহিনী লাগে না। টুকরো টুকরো ঘটনা, আলাদা আলাদা পরিস্থিতি কিংবা চরিত্র। একটা লেখকের লেখার কী ক্ষুরধার চিন্তা করুন আপনি একটা বই পড়ে নির্মল আনন্দ পাচ্ছেন যেখানে কাহিনী এগিয়ে চলে আপন খেয়াল খুশিতে। হিমুর আসলে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। সে যেমন রাস্তায় খালি পায়ে হেঁটে বেড়ায়, তার সাথে দেখা হয় বিচিত্র সব মানুষের। এই বইটিতেও কিন্তু তেমনি টুকরো টুকরো ঘটনা এবং দৃশ্যপট রয়েছে। কিন্তু তাই বলে বই বিরক্তিকর লাগবে না। বরং বেশ মজা নিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।
হিমুর চিরচেনা স্বভাব সাথে বিচিত্র সব চরিত্রের আনাগোনা। এখানে আমার ওসি নাজমুল হুদা কে বেশ পছন্দ হয়েছে। পু*লিশ এমন মজার মানুষ হয় পড়তে বেশ লেগেছে। বিশেষ করে নায়িকা রিংকির সাথে ওনার আলাপগুলো। এছাড়াও ছামাদ কে নিয়ে হিমুকে যা যা ঝামেলা পোহাতে হয়েছে এটাও বেশ উপভোগ্য ছিল। হুমায়ূন আহমেদের বড় গুণ ছিল তিনি মজা করে গল্প বলতে পারতেন। সামান্য একটা দৃশ্য যেটা বর্ণনা দিয়ে তিনি প্রাণবন্ত করতে পারতেন। এইজন্য আসলে হুমায়ূন আহমেদের অর্থহীন রসিকতাও দারুন আনন্দ দেয় বইয়ের পাতায়।
বইয়ের নাম "হিমুর নীল জোছনা" এবং হিমু কিন্তু আয়োজন করেই জোছনা দেখে। সাথে থাকতে পারে আরো কেউ। হিমুর কাজকর্ম তো বোঝা মুশকিল। তবে ভালো কাজ করলে ভালো কাজের নে*শা ধরে যায় এটা কিন্তু দারুণ দার্শনিক লেগেছে আমার। দারুন সাবলীল ভাষায় হুমায়ূন আহমেদের লেখা বরাবরই ভালো লাগার।
"আজি রজনীতে হয়েছে সময়, এসেছি বাসবদত্তা"
শেষ করছি হিমুর বলা এই লাইন দুটো দিয়ে। মাঝে মাঝে রহস্যময় প্রকৃতি হিমুকেও বোধহয় ভাবুক করে দেয়। কীভাবে? থাক বইয়ের পাতায় তুলে রাখি সেটুকু আলোচনা।
'হিমু' সিরিজের আঠারোতম বই শেষ। হ্যাঁ, 'হিমুর নীল জোছনা'-র কথা বলছি। এই বইয়ে হাস্যকর সংলাপ আর কথাবার্তার এক ফোঁটাও কমতি রাখেননি হুমায়ূন সাহেব।
এই বইয়ে আপনি দেখা পাবেন রবীন্দ্রনাথের। আসল ভেবে ভুল করবেন না যেনো। ইনি হচ্ছেন নকল রবীন্দ্রনাথ। বেশভূষা দেখে যদিও বুঝবার উপায় নাই। তবে, পায়ের দিকে তাকালে বুঝে যেতে পারেন। পায়ে স্যান্ডেল। রবীন্দ্রনাথ স্যান্ডেল পরতেন না। আর নকল রবীন্দ্রনাথ যে আসলটার মতো জুতো কিনবেন সেই টাকা নেই। যাইহোক, এই নকল রবীন্দ্রনাথের বাড়ি আবার দখল করে বসে আছেন আরেক লোক। যার নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে। বঙ্গবন্ধু গবেষণাগার। আমি তো মাত্র দু'জনের কথা বললাম। এরকম হাজার হাস্যকর উপাদান আর চরিত্রেই ভরা 'হিমুর নীল জোছনা'। হিমুর কথা বললাম না ইচ্ছে করেই। উনি উচ্চশ্রেণীর মানুষ। উনার পরিচয় দেয়ার দরকার আছে বলে মনে হয় না।
এখনো পর্যন্ত হিমুকে নিয়ে লেখা যতগুলো গল্প পড়েছি,এই গল্পটা আমাকে সবচাইতে বেশি হাসিয়েছে। চরম হাসির কিছু ঘটনা রয়েছে বইতে,যেমন নকল রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে টিভি চ্যানেলে হিমুর ইন্টারভিউ দেওয়ানো,আবার গ্রেপ্তার করতে গিয়ে অন্য আরেকজন কে গ্রেপ্তার করা। আগাগোড়া পুরোটাই দুর্দান্ত। দশে দশ।
রবীন্দ্রনাথের ছদ্মবেশী ছামাদ! তার বাড়ি দখল করে আছে কংকন ভাই! কংকন ভাইয়ের স্ত্রী সুমনা! কিসলু! কেয়া খেয়া! তাদের বাবা আফতাব (যে তার স্ত্রীকে খুন করে)! বৃদ্ধ বৃদ্ধা! নাজমুল হুদ! মিস রিনকি! গফুর! অল্প একটু রুপা! এই চরিত্র গুলো নিয়ে হিমুর নীল জোছনা।
বইটা পড়ে সত্যি খুব মজা পেয়েছি।হিমু চরিত্রটা এর আগে আমার ভালো লাগেনি কখনো।ভোগাস লাগতো! বন্ধু আজাদ বলেছিল,এত সিরিয়াস ভাব নিয়ে হিমু পড়তে হয় না! হিমুর নীল জোছনা পড়ে অনেক হেসেছি।কেন হেসেছি! জানিনা! মনে হচ্ছে দিনকে দিন আজাদ আর হিমুর মতো ভ্যাগাবন্ড হয়ে যাচ্ছি🙂
ক্লাসে এসে আবিষ্কার করলাম ট্যাবটা আনতে ভুলে গেছি। দু ঘন্টা করে মোট তিনটা ক্লাস! ব্যাক বেঞ্চে বসে অস্থির হয়ে ছটফট করছি এমন সময় বন্ধুর ট্যাবে হিমুকে পাওয়া গেল।
রূপার লাস্টের এপিরিয়েন্স আনএক্সপেক্টেড ছিল। গল্পটা এতটা ইন্টারেস্টিং না বাট পলিটিক্সকে যেভাবে ধুয়ে দিলেন তা পড়ে মজা পেয়েছি। অনেকটা সরব প্রতিবাদ যেন। হিমুর পাওয়ার নিয়েও হালকা ধারণা এই বই এ দিলেন লেখক, ইন্টারেস্টিং।
I probably read this book for the first time a decade ago. Found this on a shelf while hanging out with friends at the Bengal Boi. Had a really fun time reading this again. Full of humor from start to end. The sarcasm was absolutely spot on. If this book was written now, it'd have been a hundred times bolder move. Kudos!
i hope this book is really nice cuz like him i also love nil josona thx a lot for posting this book i am nt in bamgladesh that's y i miss to read books
হিমু চরিত্রের আসল নাম হিমালয়। এ নামটি রেখেছিলেন তার বাবা। লেখক হিমুর বাবাকে বর্ণনা করেছেন একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ হিসেবে; যার বিশ্বাস ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা যায় তবে একইভাবে মহাপুরুষও তৈরি করা সম্ভব। তিনি মহাপুরুষ তৈরির জন্য একটি বিদ্যালয় তৈরি করেছিলেন যার একমাত্র ছাত্র ছিল তার সন্তান হিমু। হিমুর পোশাক হল পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবী। হলুদ বৈরাগের রঙ বলেই পোশাকের রং হলুদ নির্বাচিত করা হয়েছিল। ঢাকা শহরের পথে-পথে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো তার কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম। উপন্যাসে প্রায়ই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়। যদিও হিমু নিজে তার কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা স্বীকার করে না। হিমুর আচার-আচরণ বিভ্রান্তিকর। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করে, এবং এই বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হিমুর অত্যন্ত প্রিয় একটি কাজ। প্রেম ভালবাসা উপেক্ষা করা হিমুর ধর্মের মধ্যে পড়ে। কোন উপন্যাসেই কোন মায়া তাকে কাবু করতে পারে নি। মায়াজালে আটকা পড়তে গেলেই সে উধাও হয়ে যায়। হিমু উপন্যাসে সাধারণত হিমুর কিছু ভক্তশ্রেণীর মানুষ থাকে যারা হিমুকে মহাপুরুষ মনে করে। এদের মধ্যে হিমুর ফুপাতো ভাই বাদল অন্যতম। মেস ম্যানেজার বা হোটেল মালিক- এরকম আরও কিছু ভক্ত চরিত্র প্রায় সব উপন্যাসেই দেখা যায়। এছাড়াও কিছু বইয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী ও খুনি ব্যক্তিদের সাথেও তার সু-সম্পর্ক ঘটতে দেখা যায়। হিমুর একজন বান্ধবী রয়েছে, যার নাম রূপা; যাকে ঘিরে হিমুর প্রায় উপন্যাসে রহস্য আবর্তিত হয়। নিরপরাধী হওয়া সত্ত্বেও সন্দেহভাজন হওয়ায় হিমু অনেকবার হাজতবাস করেছে এবং বিভিন্ন থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।
হিমু বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় ও কাল্পনিক। নব্বই দশকে হিমুর প্রথম উপন্যাস ময়ূরাক্ষী প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক সাফল্যের পর হিমু চরিত্র বিচ্ছিন্নভাবে হুমায়ুন আহমেদের বিভিন্ন উপন্যাসে প্রকাশিত হতে থাকে। হিমু ও মিসির আলি হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট সর্বাধিক জনপ্রিয় দু’টি কাল্পনিক চরিত্র। উদাসীন হিমু একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের বাঙালি তরুণদের ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বেশ অনেক দিন পর হুমায়ুন আহমেদ পড়লাম। ভূমিকা পড়েই বুঝেছি এটা পলেটিক্যাল স্যারায়ার। এটা বৃদ্ধ হাতের লেখা, ২০১০ এ প্রকাশিত। বঙ্গবন্ধু - মুক্তিযোদ্ধার সন্তান - ছাত্রলীগ - পুলিশ - র্যাব ও তৎকালীন আওয়ামী জাহেলিয়াতের বাস্তব চিত্র রসিকতার ঢঙে বলা হয়েছে। 'হিমু'র গল্প হলেও এখানে হিমুকে পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে রাখা হয়েছে, এমনটাই আমার মনে হয়েছে। তবে ভালো লেগেছে।
হিমুর বাবার একটা উপদেশ এখানে যোগ না করে পারছি না- বাবা হিমালয়, ভালো কর্ম বা সৎকর্ম করার তোমার প্রয়োজন নাই। সৎকর্ম নেশার মতো। একটি সৎকর্ম করলে আরেকটি করতে ইচ্ছা করবে। সৎকর্মের নেশা তৈরি হবে। যে-কোনো নেশাই মানুষের জন্যে ক্ষতিকর। নেশা হলো নেশা। ভালো নেশা মন্দ নেশা বলে কিছু নাই। তুমি সেই সৎকর্ম করবে যা অন্যরা করতে পারছে না। অন্যদের করার ক্ষমতা নাই।সৎকর্ম যেমন নেশা তৈরি করে অসৎকর্মও করে। নেশাগ্রস্ত হয়ে দুষ্টলোক একের পর এক অসৎকর্ম করতে থাকে।এখন কি বুঝতে পারছ সৎকর্ম অসৎকর্ম একই মুদ্রার দুই পিঠ?
বৃষ্টি ভেজা এক সকালে হিমুর ঘুম ভাঙল, বিছানায় উঠে বসতেই পিছন থেকে কেউ বলল: ঘুম ভাঙছে? গুড মর্নিং ডিয়ার স্যার। পিছন না ফিরে হিমু জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে থাকলো। পিছনে থেকে আবারো কেউ বলে উঠলো: ভাইজান কি একটু আমার দিকে তাকাবেন? সিম্পল রিকোয়েস্ট। অনিচ্ছা সত্বেও হিমু পিছনে ঘুরলো। যা দেখলো তাতে মনে হল এখনো তার ঘুম ভাঙেনি, এবং সে স্বপ্ন দেখছে। এ যে স্বয়ং কবিগুরু রবিঠাকুর তার বিছানার পাশের হাতলভাঙ্গা চেয়ারে বসে বসে কলা দিয়ে পাউরুটি খাচ্ছে! কে এই রবিঠাকুর? হিমুর স্বপ্ন? নাকি বাস্তবেই!
পুলিশইবা কেন এই রবিঠাকুরসহ হিমুকে গ্রেফতার করলো? আবার ছেড়েও দিল! সন্ত্রাসী কিসলু কেন এখন সৎকাজে সন্ধান করে? ওসি নাজমুল হুদাইবা কেন পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিতে চায়? এসকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে 'হিমুর নীল জোছনা' বইয়ে।
হিমুর সাথে দেখা ভিখারি ছামাদ এর যে কিনা বিভিন্ন নামি দামি ব্যাক্তিদের বেশ ধরতে পারে। হিমুর সাথে ছামাদ এর দেখা রবীন্দ্রনাথ এর বেশ এ। ছামাদ ভিখারি হতো না কিন্তু ছাত্র লীগ এক নেতা ছামাদ এর বাড়ি দখল করে নিসে। ছামাদকে নিয়ে এক টিভি শো তে যাওয়ার পর তোলপাড় লেগে যায় হিমু আর ছামাদকে জেলে থাকতে হয়। সেখানে ওসি সাহেব এর সাথে হিমুর ভালো খাতির হয়। জেল থেকে বের হয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ২ বোন কেয়া, খেয়া আর তাদের বাবার সাথে হিমুর দেখা। হিমু ২ বোনের দায়িত্ব নিয়ে অচেনা এক বাসায় হাজির হয়। সেখানে ২ বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা থাকেন। সেখানে খাবার চায়। তারা খাবার দেয় এবং কেয়া খেয়াকে নিজের কাছে রেখে দেয়। ছামাদ এর বাড়ির দেখাশোনার জন্য কিসলু থাকে, কিসলুকে একবার হিমু বাচিয়েছিলো। হিমু কিসলুকে ভালো কাজ করার ঝোক মাথায় ঢুকিয়ে দেয়। তারপর থেকে কিসলু সারাদিন ভালো কাজ করে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যায়।
Not that great book. Seemed nonsense at some places. Though the ending was fabulous. Rupa came after a long time. The ending at Dhanmondi lake in a moonlit night will be worth reminiscing.
Himu meets Samad, who takes the disguise of Rabindranath. His house is being coerced by a league leader. Himu takes him to a talk show in channel Akhi. Then police arrives. Haphazard things happen at the station among police officers. Finally Himu threatens Kangkon, the leader and Samad gets back the control of his house.
At the end. Himu, Samad and Kislu walks in a moonlit night in the city of load shedding to the Dhanmondi lake. Rupa sends them dinner, as Himu walked past her house.
This entire review has been hidden because of spoilers.
শুরুতে জানলাম সকাল বেলা পরপর দুইটা সিগারেট না টানলে রবীন্দ্রনাথের পায়খানা ক্লিয়ার হয় না । আরো কতই না হাস্যকর কথাবার্তা ও ঘটনা! হিমু সিরিজের পড়া সব বইয়ের মধ্যে এটি আমার অনেক বেশি প্রিয় হয়ে থাকবে। সঙ্গত নানা কারণেই অনেক সময় সমাজে বিদ্যমান কিছু অসঙ্গতি নিয়ে কিছুই বলা হয়ে উঠে না, সেসব অসঙ্গতি দূর করা তো অনেক পরের ব্যাপার। প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ আমার কাছে আরও প্রিয় হয়ে উঠলেন হাসাতে হাসাতে সেই অসঙ্গতিগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার জন্য।
নীল জোছনার রাতে জোছনা খাওয়াই উচিত, ভাত খাওয়াটা ঠিক নয় - হিমু বলে ছামাদের উদেশ্যে। এই বলে তারা বেড়িয়ে পরে শহর নামক অরণ্যে, জোছনা খেতে।
গল্পটার কিছু সুতো যেন আলগা হয়ে ছিড়ে গেল শেষের দিকে, তাই মনে একটু অস্বস্তি তয়ে গেল। কেয়া-খেয়ার কি হলো? সেই ওসি সাহেব আর নায়িকার প্রণয়ের কি গতি হলো? তার জন্মদিনে কি সেই ১৩ জন গেছিল? কত প্রশ্ন। কিন্তু উত্তর দেওয়ার দায় হিমু কোনোদিনই নেয়নি, আজও সে নিল না৷ শুধু অদ্ভুত ভাবে চমকে দেওয়াই তার কাজ - সেটাই সে করে গেছে৷ 😁
আমার সবচেয়ে প্রিয় হিমুর বই! সচরাচর হিমুর ভাবালুতার মাঝে মাঝে স্যাটায়ার গুলো অন্যরকম মাত্রা এনে দিয়েছে। হিমুর আর কোনো বইতে সমাজের অসংগতি এত প্রকট ভাবে আসেনি। লেখক ভূমিকাতে আগাম সতর্কবার্তা আগেই দিয়ে রেখেছেন! আর কল্লোল ভাইয়ের ("গল্পকথন by কল্লোল" ইউটিউব চ্যানেল ) অসাধারণ পঠনশৈলী, ইতিমধ্যে অনেকবার পড়া বইটির প্রতি নতুন করে ভালো লাগা তৈরী কর।
আমার পড়া হিমু সিরিজের প্রথম বই এটা। খুবই ছোট্ট বই। একটানা পড়ে শেষ করে ফেললাম। বেশ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যাপারগুলো যেভাবে তুলে ধরেছেনে, তা এক কথায় দারুণ। হিমু সিরিজের বেশ কিছু বই পড়বো ভেবেই শুরু করলাম এই বইটি দিয়ে। সামনে আরো পড়ার ইচ্ছা আছে।
প্রথম হিমু সিরিজের বই হিসেবে হিমুর প্রতি আগ্রহ বেড়েছে ভালোই। দারুণ ক্যারেক্টার।