This work has been selected by scholars as being culturally important, and is part of the knowledge base of civilization as we know it. This work is in the "public domain in the United States of America, and possibly other nations. Within the United States, you may freely copy and distribute this work, as no entity (individual or corporate) has a copyright on the body of the work. Scholars believe, and we concur, that this work is important enough to be preserved, reproduced, and made generally available to the public. We appreciate your support of the preservation process, and thank you for being an important part of keeping this knowledge alive and relevant.
বই : চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়ান লেখক : যোগীন্দ্রনাথ সমাদ্দার প্রকাশক : দিব্য প্রকাশ ধরণ : ভ্রমণবিষয়ক পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৩৫ প্রচ্ছদ : হাবিবুর রহমান প্রথম সংস্করণ : ফেব্রুয়ারি ২০১০ সংস্করণ : জানুয়ারি ২০১৬ ( দ্বিতীয় মুদ্রণ ) মুদ্রিত মূল্য : ২০০ টাকা ISBN : 978-984-883-018-5
ফা-হিয়ান এর পরিচিতি :
৩৩৭ সালে শানশি'তে ফা-হিয়ান জন্মগ্রহন করেন ৷ তিনিই প্রথম চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী ও পরিব্রাজক, যিনি মধ্য এশিয়া, ভারত ও শ্রীলংকা ভ্রমণ করেন এবং সে সম্পর্কে বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন ৷ তিনি মাত্র তিন বছর বয়সে বৌদ্ধ সংঘে যোগদান করেন ৷ ৩৯৯ সালে যখন তাঁর বয়স প্রায় ৬৪ বছর তখন তিনি 'বিনয় পিটক' নাম বৌদ্ধধর্মীয় গ্রন্থের সন্ধানে ভারতযাত্রা আরম্ভ করেন ৷
মধ্য এশিয়া ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে পরিভ্রমণের পর তিনি মধ্য ভারতে পৌঁছান ৷ চেংয়ান ( তৎকালীন চৈনিক রাজধানী ) থেকে মধ্য ভারতে পৌঁছাতে তার প্রায় ছয় বছর সময় লেগেছিল ৷ একে একে তিনি গঙ্গা উপত্যকায় বৌদ্ধসংস্কৃতির বিভিন্ন পবিত্রস্থান দর্শনসহ নানান দিব্যজ্ঞান লাভ করেন ৷ তিনি প্রায় ছয় বছর ভারতে পরিভ্রমণ করেন ৷
এরপর তিনি শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে সমুদ্রপথে যাত্রা আরম্ভ করে ভারত ত্যাগ করেন ৷ ফা-হিয়ানই একমাত্র চৈনিক বৌদ্ধ পরিব্রাজক যিনি, শ্রীলংকা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ বিবরণ প্রদান করেন ৷ অবশেষে, ৪১৪ সালে তিনি সমুদ্রপথে শ্রীলংকা হতে চীনের শানডং প্রদেশের চিংচৌ সমুদ্রউপকূলের উদ্যেশ্যে যাত্রা আরম্ভ করেন এবং পৌঁছাতে তিন বছর সময় লেগেছিল ৷
৪২২ সালে ফা-হিয়ান মৃত্যুবরণ করেন ৷
ব্যক্তিগত মন্তব্য :
স্কুলজীবনে চৈনিক সভ্যতার ইতিহাস পড়ার সময়ই পরিব্রাজক ফা-হিয়ান এর সাথে পরিচয় ৷ মূলত তিনি ছিলেন একজন বৌদ্ধভিক্ষু ৷ বৌদ্ধধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক, যা তিনটি গ্রন্থ নিয়ে সংকলিত ৷ এরই একটি 'বিনয় পিটক', যাতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের আচার-আচরণের বিধান , সঙ্ঘবিধান, প্রায়শ্চিত বিধান সহ নানান দিকের আলোচনা রয়েছে ৷ ফা-হিয়ান মূলত ভারতবর্ষ এসেছিলেন 'বিনয় পিটক' এর সন্ধানে ৷ কারণ, চীনদেশে তখন ভারতবর্ষ 'বুদ্ধের দেশ' নামে পরিচিত ছিল ৷
চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে ফা-হিয়ান ভারতবর্ষ আসেন ৷ তার ব্যক্তিগত লেখনি থেকে তখনকার সময়ের ভারতের বেশ্ কিছু শহরের বর্ণনা ও সেসময়ের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ,ভৌগলিক বর্ণনা, জীবনযাত্রার মান এমনকি অন্ঞ্চলের নাম সম্পর্কে জানা যায় ৷ বর্তমান নামের সাথে সেই সময়ের নামের কোন মিল নেই ৷ যেমন- তক্ষশিলা (কাশ্মীর) , কনিষ্ক (পেশোয়ার) , ভিডা (পান্ঞ্জাব) , মাটোলা (মথুরা) , সাঁচী (কানপুর) , কপিলাবস্তু (বারাণসী) , পাটালিপুত্র (পাটনা) , সিংহল (শ্রীলঙ্কা) সহ আরো স্থানের নাম রয়েছে ৷ তখনকার নদ্-নদী, জীবজন্তু, বনজঙ্গল, যান-ব্যবস্থাসহ প্রায় কিছুর নামের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় ৷
আজ থেকে প্রায় ১৬'শ বছর আগের ভারতবর্ষের চিত্র বইটিতে দৃশ্যমান ৷ কিন্ত ফা-হিয়ান যেহেতু একজন বৌদ্ধভিক্ষু ছিলেন, সেক্ষেত্রে তার লেখনিতে গৌতমবুদ্ধকে নিয়ে বেশি চর্চা হয়েছে ৷ আবার, যেহেতু ফা-হিয়ানের লেখনি চৈনিক ভাষায় সেক্ষেত্রে এই বইটি অনেকগুলো অনুবাদ বইয়ের সংকলন ৷ সেজন্যেই লেখক তিনটি ব্যক্তির কথা বারবার উল্লেখ করেছেন, যারা পরবর্তীতে ফা-হিয়ানের ভ্রমণের মর্মোদ্ধার করেন ৷ প্রথমেই “হিউয়েন সাঙ” , যার মাধ্যমে ফা-হিয়ানের বর্ণনার সত্যতা যাচাই হয়েছে ৷ কারণ, তিনিও পরবর্তী কয়েক শতাব্দী পর ভারতবর্ষ ঘুরে গেছেন ৷ এরপর, “লেগী” এবং “বিল" ৷ এই দুজন ফা-হিয়ানের লেখনিকে চৈনিক থেকে ইংরেজি ভাষায় রুপান্তর করেন ৷
বইটি লেখা হয়েছে সাধু ভাষায় ৷ কারণ, বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, যা বর্তমান থেকে প্রায় একশো বছর পূর্বে ৷ এজন্যেই বেশ্ কিছু দাতভাঙ্গা খাঁটি বাংলা শব্দের সাথে পরিচিত হওয়া যাবে ৷ বইটির ভূমিকা ও চৈনিক পরিব্রাজক অনুচ্ছেদে, চীনের প্রায় সব পরিব্রাজকের বর্ণনা সংক্ষিপ্তাকারে দেয়া আছে ৷ বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস ও তখনকার ভারত সম্পর্কে জানতে বইটি অবশ্যপাঠ্য ৷