এই বইয়ের রিভিউ দেওয়া রীতিমত চাপের কাজ। ভূমিকা তে ঠিক যেমন বলা আছে এই বই বর্ণে বর্ণে তাই। 🥰 উনিশ খানা গল্প আছে, যার কিছু বেশ মন ভালো করা, কিছু গল্প বেশ হাসির, কিছু বাস্তবের আয়না দেখানো, আর কিছু সেই সায়ক আমান স্পেশাল ভয়ানক বুক শুকিয়ে দেওয়া ভয়ের।
❤️ এই বই সায়ক আমানের লেখা অন্যান্য বইগুলোর মত ঠিক না। এটা অনেকটা সায়ক আমান Raw। মানে কোন চাপ না নিয়ে লিখেছেন যেন। আর ঠিক সেই জন্যই একটা আলাদা flavor এসেছে।
✴️ এই বইতে আপনি প্রায় সব genre এর গল্পই অল্প বিস্তর পেয়ে যাবেন। এত ধরনের লেখা এক জনের কলম দিয়েই বেরিয়েছে ভাবতে অবাক লাগে। 🤗
বেশ কিছু উপমা ভেবে রেখেছিলাম বইটা পড়ার সময়, রিভিউ লেখার সময় লিখবো ভেবে।
🔸সায়কদার অন্য বই যদি বিরিয়ানি হয় এটা তাহলে ফুলকপি-পোস্ত। 😁 🔸অন্য বই গুলো যদি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত হয় তাহলে এটা হল bathroom singing। 😁
সায়ক আমানের লেখার যদি already fan হয়ে থাকেন তাহলে এই বই আপনাকে ওনার মনের একটা (না না, আরও হাজার খানেক তো হবে) সুন্দর দিক তুলে ধরবে, যেগুলো বেশ original, আর Raw। 😁 আমার দুধর্ষ লেগেছে পড়তে। 320 পাতা মত আছে, পড়তে hardly 1.5 দিন লাগবে। আমি তাহলে 4 দিন ধরে রয়ে শয়ে আয়েশ করে কেন পড়লাম? বেশ করেছি। 😜
.... অবশেষে পড়া শেষ হল লেখক ‘সায়ক আমান’এর (বহু প্রতীক্ষিত) গল্প সংকলন ‘আঁধার জলের কোলাহল’ । এই সংকলনে আছে ‘আঠারো থেকে আঠাশ’, লেখকের জীবনের এই দশ বছর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১৯টি অপ্রকাশিত এবং অনাস্বাদিত গল্প ।
🔸এই গল্প সংকলন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলা হয়েছে - ‘এ বই এক স্টার ফেভারড পপ গায়কের হুট করে একদিন একতারা নিয়ে মেঠো পথে বেরিয়ে পড়ার মতাে ।’ তাহলে... কি এমন আছে এই গল্প সংকলনে ??
▪️উত্তরে বলতে হয় - ‘মশাই!! কি নেই এই গল্প সংকলনে ??’ প্রেম, বন্ধুত্ব, প্যাশন, হাস্যরস, ফুটবল, ছোটদের রূপকথা, সোশ্যাল স্যাটায়ার, সাইক্যো থ্রিলার, রহস্য, জীবনবোধের নিরাপত্তা, থেকে বর্তমান সমাজিক আখ্যান... সবকটি বিষয় স্পর্শ করেছে এই গল্পগুলো । কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে আমার ব্যক্তিগত প্রাপ্তি কিছু ‘নিখাদ ভালোবাসার’ গল্প... সম্পর্কের গল্প... যা লেখক সায়ক আমানের কলমের কাছে আমার মতো ‘মিডনাইট হরর স্টেশন’-প্রেমীদের প্রত্যাশা থাকে ।
🔸এই সংকলনের প্রতিটি গল্পে মানব-মনের বিভিন্ন চিরাচরিত আবেগের চিত্র তুলে ধরেছেন লেখক... আর তার সাথে মিশে আছে গান । কোথাও যেমন আছে অবিস্মরণীয় - ‘জিন্দেগি অর কুছ ভি নহি / তেরী মেরী কাহানী হ্যায়’... আবার কোথাও আছে মন কেমন করা ঝুমুর গান - ‘পিন্দারে পলাশের বন ।’
পড়তে পড়তে কোনো কোনো গল্পের শেষে হঠাৎই শিউরে উঠেছি । কোনো গল্পের শেষে যেমন ঠোঁটের কোণে একটু হাসি ফুটে উঠেছে নিজের অজান্তেই... আবার কোনো গল্পের শেষে মনকেমন করে উঠেছে, চোখের কোণ ভিজে উঠেছে হঠাৎই । আর ঠিক এখানেই.... লেখকের কলমের সার্থকতা ।
🔸যারা নিয়মিত ‘মিডনাইট হরর স্টেশন’ এর গল্প শোনেন তারা তো লেখকের ‘ভার্সেটাইলিটি’ সম্বন্ধে পরিচিত.... লেখক কখনোই নিজেকে একটা নির্দিষ্ট জঁনরায় সীমাবদ্ধ রাখতে চান না, আর আমার মনে হয় ঠিক এই কারণেই ‘সায়ক আমান’ আর পাঁচটা লেখকদের থেকে অনেকটা আলাদা ।
যারা সন্দেহ করেন - এই লেখক নাকি ভূত-প্রেত, খুনখারাপি ছাড়া কিছু লেখেন না... তাদেরকে বলবো এই বইটি অবশ্যই পড়ুন । আর নাহলে, তাদের নাক লক্ষ্য করে ছুঁড়ে.......