হেমিংওয়ের চার স্ত্রী ছাড়াও এমন কিছু নারী তাঁর জীবনে এসেছিলেন, যাঁরা তাঁর জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। তাঁদের সান্নিধ্যে আন্দোলিত হেমিংওয়ের মনোজগত। তবে কেবল প্রেমিক পুরুষ হিসেবে হেমিংওয়েকে উপস্থাপন করলে তাঁর বিচিত্র জীবনের সবটুকুর বেড় পাওয়া সম্ভব নয়। লেখক এই বইয়ে কথাসাহিত্যিক হেমিংওয়ের সেই সব নারীদের প্রসঙ্গেই লিখেছেন।
৩.৫/৫ নোবেলজয়ী আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ছিলেন বেশ অদ্ভুত মানুষ। নামকরণ থেকেই বোঝা যায় যে এই বইতে হেমিংওয়ের সাথে প্রণয়ে জড়ানো নারীদের গল্প বলা হয়েছে। অল্পবয়স থেকেই হেমিংওয়ের মাঝে একটা স্বভাব লক্ষ করা গিয়েছিলো। বয়সে বড় নারীদের প্রেমে পড়া। সেটা কি আদৌ প্রেম নাকি মোহ তা বোঝা মুশকিল। কারণ কদিন পরেই সেই নারীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতেন তিনি। তখন আবার জড়িয়ে পড়তেন নতুন সম্পর্কে। তার গোটা জীবন মোটামুটি এভাবেই কেটেছে। নারী মন জয় করার কৌশল যাকে আমরা "ফ্লার্টিং" বলি, সেক্ষেত্রেও বেশ দক্ষ ছিলেন। সঙ্গে নায়কোচিত চেহারা তো ছিলোই। সব মিলিয়ে নারীরাও তার প্রতি আকৃষ্ট হতেন বলেই জানা যায়।
হেমিংওয়ের স্ত্রী এর সংখ্যা চার। এর বাইরে আরো বেশ কজনের সাথে সম্পর্কের কথাও উঠে এসেছে নানান সময়ে। তার স্ত্রীদের মাঝে কমন ব্যাপার বলতে তারা সকলেই ছিলেন সাংবাদিক। হেমিংওয়ে নিজেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং তার আগে পরে বেশ কিছু সময় সাংবাদিকতা করেছেন, সেই সুবাদেই হয়তো।
তার স্ত্রী কিংবা প্রণয়ে জড়ানো অন্য নারীদের প্রভাব তার লেখাতে বেশ ভালোভাবে দেখা যায়। একেকটা গল্পের নারী আসলে সেই সময়ের নারীকেই ইঙ্গিত করে। তিনি অনেকটা রাখঢাকহীন ভাবেই সেসব নারীকে তুলে এনেছেন বইয়ের পাতায়। এর ফলে বই প্রকাশের পরই তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে পড়তে হতো উভয়কে। শেষ বয়সে এসে তিনি পুলিৎজার ও নোবেলের মতো নামী পুরষ্কার জেতেন, তার বই লাখের উপর কপি বিক্রি হয় কিন্তু এই সময়টাতেই তিনি প্রচন্ড ভঙ্গুর হয়ে পড়েন। মানসিক অবস্থা দিনদিন খারাপের দিকে যেতে থাকলে বেশ কবার আত্মহনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও শেষ রক্ষা যে হয়নি এ ঘটনা তো মোটামুটি সবার জানা।
লেখক ফারুক মহিউদ্দীন একপ্রকার হেমিংওয়ের জীবনীই বলে গেছেন শুধু ফোকাস রেখেছিলেন তার প্রণয়ের ব্যাপারগুলোর উপর।