Jump to ratings and reviews
Rate this book

বারুদ বসন্তের দিন

Rate this book
আরব বসন্ত—এই সুন্দর নামটির আড়ালে কিন্তু কোনও দখিনা বাতাস, কোকিলের কুহুতান নেই, বরং বদলে রয়েছে এক রক্তক্ষয়ী ইতিহাস। উত্তর আফ্রিকার তিউনিশিয়ার এক সামান্য সবজিওলা বুয়াজিজির আত্মাহুতির দ্বারা যে বিপ্লবের আগুন জ্বলে উঠেছিল তা হুহু করে ছড়িয়ে পড়েছিল মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশগুলিতে। দেশের দীর্ঘদিনের একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটাতে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নেন সেইসকল দেশের মানুষ। লিবিয়ার অধিশ্বর মুয়ম্মর আল গাদ্দাফি ছিলেন এমনই এক স্বৈরাচারী দেশনায়ক। প্রায় চার দশকের অধিক সময়কাল ধরে লিবিয়াকে শাসন করা এই রাষ্ট্রনায়কের ব্যক্তিগত জীবনটিও ছিল অতি বিচিত্র। শৌখিন, বিলাসী, খামখেয়ালি এই দেশপ্রধান শেষপর্যন্ত মরুভূমির কাছে একটি শুকনো নালার ভেতর আশ্রয় নিয়েছিলেন নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য। কিন্তু তার শেষরক্ষা হয়নি। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তারই দেশের উন্মত্ত জনগন। কেন তার এমন পরিনতি হল? কীভাবে তৈরি হয়েছিল এমন বিপুল গণঅভ্যুত্থান? সাংবাদিক অ্যানি মিসাকির চোখ দিয়ে পাঠক দেখতে পাবেন, জানতে পারবেন এক অজানা অন্ধকার ইতিহাস। এই উপন্যান সত্য ঘটনা আশ্রিত। কাহিনির স্বার্থে চরিত্রদের নাম বদল হয়েছে। । যুদ্ধ , প্রেম,বিচ্ছেদ,স্বপ্ন,ক্রুরতা, বিশ্বাসঘাতকতার আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক চক্রান্তের এক দলিল এই উপন্যাস।

216 pages, Hardcover

Published January 1, 2022

7 people want to read

About the author

Binod Ghoshal

37 books24 followers
বিনোদ ঘোষাল-এর জন্ম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ হুগলি জেলার কোন্নগরে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যে স্নাতক। মফস্‌সলের মাঠঘাট, পুকুর জঙ্গল আর বন্ধুদের সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকা আর অভিনয়ের দিকে ঝোঁক। গ্রুপ থিয়েটারের কর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। কর্মজীবন বিচিত্র। কখনও চায়ের গোডাউনের সুপারভাইজার, শিল্পপতির বাড়ির বাজারসরকার, কেয়ারটেকার বা বড়বাজারের গদিতে বসে হিসাবরক্ষক। কখনও প্রাইভেট টিউটর। বর্তমানে একটি সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় বিভাগে কর্মরত। নিয়মিত লেখালেখি করেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। ২০০৩ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর প্রথম গল্প। বৃহত্তর পাঠকের নজর কেড়েছিল। বাংলা ভাষায় প্রথম সাহিত্য অকাদেমি যুব পুরস্কার প্রাপক। ২০১৪ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমির সোমেন চন্দ স্মৃতি পুরস্কার। তাঁর একাধিক ছোটগল্পের নাট্যরূপ মঞ্চস্থ হয়েছে।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
3 (75%)
4 stars
1 (25%)
3 stars
0 (0%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 2 of 2 reviews
Profile Image for Klinton Saha.
357 reviews6 followers
April 17, 2025
তিউনিসিয়ায় বুয়াজিজি নামক জনৈক সবজি বিক্রেতা চাঁদা দিতে না পারায় পুলিশ কর্তৃক হেনস্থার শিকার হন। প্রতিবাদ করে সুবিচার না পেয়ে গর্ভনর অফিসের সামনে আত্মাহুতি দেয়। এই ঘটনা শোষিত জনগণের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন ধরিয়ে দেয়। তিউনিসিয়া ছাড়িয়ে বিদ্রোহ পার্শ্ববর্তী আরব দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে , স্বৈরশাসকদের পতন ঘটে। আরব বসন্তের সূচনা হয়।

বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপীয়ানরা লিবিয়া ভাগাভাগি করে নেয়,যদিও পরবর্তীতে লিবিয়া নামমাত্রে স্বাধীন হয়। লিবিয়ায় তেল আবিষ্কারের পর পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টি আবারও লিবিয়ার দিকে যায় , ঠিক এই সময় আবির্ভাব ঘটে মুয়ম্মর গাদ্দাফির। একাই ইতালির উপনিবেশ থেকে রক্ষা করে দেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে থাকে। জনগণের প্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হন। কিন্তু ক্ষমতার উচ্চাসনে বসে গাদ্দাফিও সময়ের সাথে স্বৈরশাসকে পরিণত হন। যে বিদ্রোহ একদিন আরব দেশে শুরু হয় তা লিবিয়াবাসীর মধ্যেও দেখা যায়। তারা গাদ্দাফির কুকর্মের গোপন নথিপত্র ন্যাটোর হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে ন্যাটোর আক্রমণে গাদ্দাফির পতন ঘটে।

যে লিবিয়া একসময় নারীদের সম্মান প্রদানে আদর্শ ছিল সেই লিবিয়া অধিপতি সর্বক্ষণ নারীদের যৌন দাসী বানিয়ে ভোগবিলাসে মত্ত থাকতেন। স্কুল বালিকা থেকে বয়স্ক নারী , এমনকি পুরুষরাও তার লোভ-লালসা থেকে মুক্তি পেত না। তার প্রাসাদের বেসমেন্টে অসংখ্য দেশ-বিদেশের নারীদের নিয়ে রীতিমত হারেম বানিয়ে রাখে। লিবিয়ায় বিদ্রোহ শুরু হওয়ার যে বারুদ জমেছিল তা আবু সালিম কারাগারে গণহত্যা চালালে জ্বলে ওঠে। সারা দেশে শুরু হয় বিদ্রোহ। গাদ্দাফির কাছের মানুষ যারা তার দুষ্কর্মের সাক্ষী ও নিজেরা নিপীড়িত তারাই ন্যাটোর কাছে তথ্য তুলে দেয়।ন্যাটো বাহিনী আক্রমণ চালায়। গাদ্দাফির বাহিনীর সাথে ন্যাটো বাহিনী ও স্থানীয় বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়‌ ।ন্যাটোর এলোপাথাড়ি আক্রমণে গাদ্দাফির বাহিনীর সাথে সাথে লিবিয়ার সাধারণ জনগণও আক্রান্ত হতে থাকে। লন্ডভন্ড হতে থাকে লিবিয়ার পথঘাট-জনপথ। অবশেষে গাদ্দাফিকে নিশ্চিহ্ন করা হয়।


ফ্রান্স থেকে অ্যানি নামক জনৈক সাংবাদিক যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় আসেন লিবিয়াবাসীর দুর্দশার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে। বিভিন্ন বিদ্রোহীরা তাকে তথ্য সংগ্রহে সাহায্য করেন।এখানে নাসরিন নামের গাদ্দাফি কর্তৃক নির্যাতিত এক নারীর দেখা পান তিনি। তার কাছে পাওয়া নোটখাতা থেকে তার সাথে ঘটা রোমহর্ষক ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়। সেও গাদ্দাফির গোপন বেসমেন্টের একজন ভুক্তভোগী। এছাড়া অ্যানি লিবিয়ার এ প্রান্ত ও প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়েছেন, সংবাদ সংগ্রহ করেছেন।মিশেছেন ভুক্তভোগী ও বিদ্রোহীদের সাথে , তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলোর সন্নিবেশন এই বই।

আরব বসন্তের উপর পড়া এটা আমার প্রথম বই। এ বিষয়ে বিস্তারিত আরো বই পরবর্তীতে পড়া হবে। তাই এই বই পুরোপুরি নিরপেক্ষ নাকি ফিকশনধর্মী সেই বিতর্কে যাবো না।তবে দুর্বল চিত্তের মানুষদের জন্য বইটি পড়া উচিত হবে না, যেহেতু অনেক রোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ আছে এতে।
Profile Image for রিয়া (ঋ_আ) মন্ডল.
23 reviews1 follower
April 29, 2025
'বারুদ বসন্তের দিন' এমন দ্বিকোটিক বিরোধমূলক নামকরণ যেকোনো উপন্যাসের কাহিনী-প্রকল্পের করুণ পরিণতিকে পূর্ব হতেই অনুধাবন করার শক্তি জোগায় না। এখানেই বোধ হয় কিছু উপন্যাস সময়কে উত্তীর্ণ করে পাঠকের মনে চিরতরে স্থান করে নেয়, এভাবেই কিছু উপন্যাস মানুষের ভালোবাসা-বেদনা-ধৈর্য-স্থৈর্য্য সমূহের সজীব চিত্র যেমন শব্দের গভীরতায় ফুটিয়ে তোলে তেমনই যুদ্ধ-হাহাকার-মৃত্যু-ক্ষমতা-তোষণ-পোষণ-হিংসা এর সমন্বয়ে সংগঠিত যন্ত্রণার চিত্র সত্য-অসত্যের দোলাচলের সম্মুখে পাঠকমনকে সুদূরপ্রসারী ভাবনায় ভাবিত করে। পরীক্ষা নেয় যে পাঠক কিরূপে এইরূপ কাহিনীর করুণ পরিণতিকে উপলব্ধি করবে!

আমার উপলব্ধি যথাযথ। সত্যের উপলব্ধি যে সর্বদা আত্মার প্রশান্তির কথা বলবে এমনটা আমি মনে করি না। বরং এক সমগ্র রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক-সার্বভৌম-সাংবিধানিক পরিস্থিতির সঙ্গে সেই দেশ বা রাষ্ট্রের মানুষ কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন সেই উপলব্ধির কথা যখন একজন ঔপন্যাসিক নিরপেক্ষভাবে বর্ণনা করেন তখন পাঠকের নিকট সেই সত্য-মিথ্যা বিশ্বাস-অসত্যের ব্যবধানটুকু ধরা পড়ে এবং মানুষের বেঁচে থাকার প্রচেষ্টার মতই দেশ-কাল এর সীমানা উপেক্ষা করেই মানুষের যন্ত্রণা, লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট, রক্তে রাঙানো ইতিহাস পাঠকের সামনে সত্য রূপেই প্রতিভাত হয়।

লেখক বিনোদ ঘোষালের নিখুঁত বর্ণনায় আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ ও লিবিয়ার মানুষের যন্ত্রণার কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে ওই দেশেরই নাগরিক নাসরিনের ডায়েরির মধ্য দিয়ে। সম্পূর্ণ উপন্যাসের কাহিনী তৈরি হয়েছে সাংবাদিক অ্যানি মিসাকির দৃষ্টিতে এবং সেই ডায়েরি পঠনের মধ্য দিয়ে লিবিয়ার অধীশ্বর পাপা মুয়ম্মর আল গদ্দাফির স্বৈরাচারী শাসনতন্ত্রের নিষ্ঠুর রক্তাক্ষয়ী ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ক্ষমতায় অন্ধ হয়ে যাওয়া এই শাসক পাপা মুয়ম্মর লিবিয়ার সুন্দরী ফুটফুটে বাচ্চা মেয়েদের তুলে নিয়ে এসে যে কি রূপে যৌনদাসীতে পরিণত করতেন তা নাসরিনের ডায়েরিতে উল্লেখিত বর্ণনায় আমরা পাই। সেই বর্বরোচিত, নোংরা যৌনক্ষুধা নিবৃত্তির কথা পড়তে পড়তে চোখে জল আসে এবং একইভাবে মনে আগুন জ্বালায় ওই নিষ্পাপ ফুটফুটে মেয়েদের করুণ পরিণতির কথা ভেবে। নাসরিনের ওই কয়েক বছরের নরকবাসের পর এক বিদ্রোহী যুবক হাফিজের সঙ্গে দেখা হয় যা তার জীবনে ভালোবাসার বসন্তের উপস্থিতিকে প্রবলভাবে আঁকড়ে ধরতে শেখায়। নাসরিন ও হাফিস ওই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে একে অপরকে জড়িয়ে নতুন করে বাঁচতে শেখে। কিন্তু হায় রে! ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস। হাফিজ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। আর নাসরিন চিরজীবনের মত বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ওর পূর্ববর্তী জীবন ও পরবর্তী জীবনের বারুদসম দিনগুলি বিরাট ক্ষতের আকার নেয় যা দূরারোগ্য। পাপা মুয়ম্মরের চরম শাস্তি হয়েছিল ক্ষুব্ধ জনতার হাতেই। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে কখনো মনে হয়নি যে লেখক সত্য হতে বিচ্যুত হয়েছেন কারণ যেকোনো দেশের যুদ্ধের ইতিহাস আমাদের সকলেরই জানা। তবে পাপা মুয়ম্মরের মত এত নিষ্ঠুর, ক্ষমতাবান, যৌনপিপাসু, জানোয়ারের অধিক নিম্নতর মানুষরূপী পিশাচ পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। পাঠকের এমনটাই মনে হবে। চরম দুর্দিনেও লিবিয়ার মানুষগুলোর লড়াই করে বেঁচে থাকা, নতুন স্বাধীন লিবিয়ার স্বপ্ন আমাদের সবাইকে যেন আশার আলো প্রদান করে। 'বারুদ বসন্তের দিন' এমনই এক কাহিনীর সাক্ষী হয়ে রইল। লেখকের অসামান্য দক্ষতার প্রতি শ্রদ্ধা রইল....🙏🙏
Displaying 1 - 2 of 2 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.