এ-কাহিনী উজ্জয়িনীর, এ-কাহিনী ইমনের।এ-কাহিনী মিঠু চৌধুরীর, এ-কাহিনী রাজেশ্বরীর। এ-কাহিনী ঋতুর, এ-কাহিনী বিষ্ণুপ্রিয়ার। এ-কাহিনী তন্ময়ের, এ কাহিনী ভেঙ্কটেশের। এ-কাহিনী গৌতমের, এ কাহিনী অণুকার। এ-কাহিনী এদের প্রত্যেকের, এবং এদের মতো আরও অনেকের। একটি বিশেষ কলেজের নয়, যে-কোনও কলেজের। স্নাতক স্তরে তিন বছরের পাঠক্রমে পড়তে-আসা একঝাঁক ছেলেমেয়ের, যারা আঠারোতে আসে, একুশে পা পড়তে না-পড়তে ছড়িয়ে যায় মহাজীবনের মুক্ত পথে। এ-উপন্যাস সেই রকমই কিছু ছেলেমেয়ের কলেজজীবনের কাহিনী। শুধুই কলেজজীবনের নয়। কলেজজীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক যে-জীবন, একইসঙ্গে সেই জীবনের নানা কাহিনীকেও টুকরো-টুকরো ফ্রেমে সাজিয়ে দিয়েছেন সম্পন্ন লেখিকা। যেমন বিচিত্র, তেমন কৌতূহলকর সেই কাহিনী গুচ্ছ।সমাজের বিভিন্ন স্তরের, বিভিন্ন ধরনের ছাত্রছাত্রী ভিড় করে মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। প্রত্যেকের মানসিকতা আলাদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, দুঃখ-সুখ, স্বপ্ন-প্রত্যাশা, রুচি-পরিবেশ ভিন্ন। তবু সেই সম্মিলিত জীবনের যে-ঐকতান,তাকেই অসাধারণ দক্ষতায় এ-উপন্যাসে ধরেছেন বাণী বসু।
Bani Basu is a Bengali Indian author, essayist, critic and poet. She was educated at the well-known Scottish Church College and at the University of Calcutta.
She began her career as a novelist with the publication of Janmabhoomi Matribhoomi. A prolific writer, her novels have been regularly published in Desh, the premier literary journal of Bengal. Her major works include Swet Patharer Thaala (The Marble Salver), Ekushe Paa (twenty One Steps), Maitreya Jataka (published as The Birth of the Maitreya by Stree), Gandharvi, Pancham Purush (The Fifth Man, or Fifth Generation?) and Ashtam Garbha (The Eighth Pregnancy). She was awarded the Tarashankar Award for Antarghaat (Treason), and the Ananda Purashkar for Maitreya Jataka. She is also the recipient of the Sushila Devi Birla Award and the Sahitya Setu Puraskar. She translates extensively into Bangla and writes essays, short stories and poetry.
Bani Basu has been conferred upon Sahitya Academy Award 2010, one of India's highest literary awards, for her contribution to Bengali literature.
অনেক চেষ্টা করলাম বই এর মধ্যে ডুব দিতে কিন্তু কিছুতেই পারলাম না। অনেক অনীহা নিয়ে শেষ করেছি। মূলত আমার কলেজ জীবন সম্পূর্ণই ভিন্ন ধাচের। তাই হয়তো এই অনীহা। তবে আসছে বছর আবার হবে মানে আবার পড়ব। সো অ্যাডেড টু মাই আনফিনিসড শেলফ।
বহুদিন বাদে কোনো বই পড়ে শান্তি পেলাম। খুব সাজানো গোছানো কোনো রিভিউ আসছে না আজ। ক্রিটিকের আসনে বসে অনেক সময় পাঠক সত্ত্বার সাথে আপোস করতে হয়। আজ আর সেটা করতে ইচ্ছে করছে না। বইটা বেশ কদিন ধরে পড়লাম, সময় নিলাম আরকি। মাঝেমাঝে এই ক্রমাগত বই পড়া, রিভিউ করা, আলোচনা - সব মিলিয়ে মিশিয়ে বেশ একটা একঘেয়েমি সেট-ইন্ করে যায়। সেটা কাটানো উচিত। উদ্যমহীন ঘরকুনো ঘাস হয়ে বসে থাকাটা গৌরবের নয়। দরজা-জানালাগুলো খুলে রাখছি তাই। হাওয়ার ছাঁটে, সূর্যের কাঠিন্য। শরৎ আসুক। তন্দ্রা কাটিয়ে উঠুক মন।
ভালো লাগাটা কিছুটা ব্যাক্তিগতও। গত সপ্তাহে ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলো। জীবনে, শেষ হলো একটি অধ্যায়। আঠারো-উনিশ থেকে একুশ-বাইশের এই সফরটি ভীষণ কাছ থেকে অনুধাবন করলাম। সবটাই ভীষণ টাটকা। ফ্রেশ। জিইয়ে রাখা মনের ভেতর। উপন্যাসটি পড়তে যাওয়া, তাই একগুচ্ছ চাবি সামলানো। বারংবার কোন এক তালায় বাজিয়ে দেখা। আপাতদৃষ্টিতে অপরিচিত যন্ত্রটি কি আদতে ভীষণ চেনা? একেবারেই কি খুলবে না একটিবারের জন্য?
বাণী বসুর লেখনী সহজ এমন দাবি করবো না। সরস গতিময় কোনো উপন্যাসের খোঁজে এলে, প্রথম কটা পৃষ্ঠায় বাঁধা পড়া স্বাভাবিক। তবে পড়ে যেতে হয়। কারণ লেখাটি, আর যাই হোক, ভীষন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। গদ্যগুণ স্বতন্ত্র। তরুণ নায়ক-নায়িকাদের মুখে রাজনীতি, সমাজবোধ, ক্লাস ডিফারেন্স বা ধর্মের জটিলতা প্রতিপন্ন করে তাদের দিক-বিভ্রান্ত করেছেন লেখিকা। মনের মধ্যে যেই অশান্ত আগুন এই বয়সের একচেটিয়া, সেই আগুনেই তাতিয়েছেন নিজের চরিত্রদের। পুড়িয়েছেন লোভ, হিংসা ও ভালোবাসার লিটমাস টেস্টে। এই গল্পের কোনো নায়ক নেই। নেই কোনো নায়িকা। আছে কেবল, নাগরিক স্বপ্নে বিভোর একটা গোটা প্রজন্মের ইয়ুথ।
এ এক অদ্ভুত জাগলিংয়ের খেলা। যেই পারদর্শিতায় এতগুলো ভিন্ন ধাঁচের চরিত্রদের সামলেছেন লেখিকা, তাও আবার মাত্র দেড়শো পাতার একটি বইয়ে। একবারও মনে হয় না, অমুক চরিত্রকে আরো একটু পেলে ভালো লাগতো। সবাই তো আছে, সবাই তো সমান, তবুও কত ভিন্ন। স্পটলাইট কারো একার ওপরে নয়। এক হয়তো, ইমন বাদে। বইয়ের প্রথম লাইনেও যার উপস্থিতি, বইয়ের শেষ লাইনেও সে। ইমন। "ইমন মিছে কথা বলে না। ইমন আশ্বাসের হাসি হাসছে।" ভারী মায়াময় সবটাই। এই মায়ার টানেই রাগ হয় ঋতুর ঔদ্ধত্যে। ইচ্ছে হয় মিঠুদের বাড়ির বারান্দায় বসে ভক্তিরসের গান শুনতে। তন্ময়ের হতাশায় হাত মিলিয়ে কমলকুমার মজুমদারে মনোনিবেশ করতে। আবার, ভেঙ্কটের সেই পেল্লাই দুটো ঘরে বসে কোনো এক অলস দুপুরে পায়রার ডাক শোনাতেও, কি এক মায়া আছে যেন।
লেখিকা আমার কলেজের অ্যালুমনাই। উপন্যাসে কলেজের কোনো নাম নির্দিষ্ট নেই। তবুও জায়গাগুলো চেনা। ভালো লাগে। বিবেকানন্দ রোডের কোচিং সেন্টার, হেদুয়ার সেই ঘাসে ঢাকা চত্বর বা রোদে-পোড়া ক্লান্ত কর্নওয়ালিস স্ট্রীট। ট্রামলাইন ধরে স্বপ্ন খোঁজার এই অবিরাম হেঁটে যাওয়াটা অনেকদিনের চেনা। যুগটা হয়তো নয়। বইখানা তাই যেন এক সাবেকি দলিল। এর পাতায় পাতায় বন্ধুত্বের অসহজ সমীকরন। এর আনাচে কানাচে কলকাতা। বড়ো হওয়ার গল্পে, মহানগরের গান। কে জানত, নতুন করে সবটা চেনায় এতো আরাম?
শেষ পাতা উল্টে তাই বলতে ইচ্ছে হয়, ভালো হোক। জীবনযুদ্ধে শামিল হওয়ার এই দৌড়ে সবার ভালো হোক।
দুরদূর এইসব বইয়ের রেটিং ফেটিং দেয়া যায় না কী ? ১৮ বছর বয়েসে পড়েছিলাম - ১৮ বছর বয়েসী চরিত্রদের নিয়ে, ১৮ বছর বয়েসীদের জন্যে লেখা বই। ১৯৯৮ সাল -ব্যাঙ্গালোরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অ্যাডমিশন পেয়ে গেছি তদ্দিনে, কলেজের পড়াশোনার খরচের জন্যে ব্যাঙ্ক লোনের অ্যাপ্লিকেশান করতে গেছিলাম অন্ধ্র ব্যাংকে বাবামার সঙ্গে, লোনটা হয়ে গেলো। তারপর মা বললো - এবার তো মাস দেড়েকের জন্যে ঝাড়া হাত পা, চঃ তোকে কিছু গল্পের বই কিনে দিই। সেইদিন কেনা লট'টার মধ্যেই এটা ছিল। দারুন নিদারুন ভয়ঙ্কর সাংঘাতিক অসাধারণ ভালো লেগেছিলো। সেই ভালোলাগাটাকে কী আর বিশ্লেষণ করা যায়? যায় না. কখনো কখনো আঙ্গুল ছুঁইয়ে সেই ভালোলাগাটার কণামাত্র রেশ পাওয়ার চেষ্টা করা যায়, ব্যাস।
একগাদা ছেলেমেয়ে, উজ্জয়নী, মিঠু, ঋতু, রাজেশ্বরী, বিষ্ণুপ্রিয়া, ভেঙ্কট, গৌতম, তন্ময়। এদের সবার কলেজ জীবনের গল্প। সদ্য আই এস শেষ করে নতুন ভর্তি। নতুন কলেজে এসেও হতাশ নয়, খুঁজে পেয়েছে পুরনো কিছু বন্ধুবান্ধব, সেই সাথে জুটিয়ে নিয়েছে আরও নতুন কিছু বন্ধু। ছেলেমেয়েরা একেকজন একেক পরিবেশ থেকে এসেছে৷ সব কিছুর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া, তাদের দিন যাপন, রাজনৈতিক দর্শন, চিন্তা ভাবনা, পরিবার, ব্যক্তিগত সমস্যা, ভবিষ্যৎ ভাবনা, টানাপোড়েন, পারিপার্শ্বিক সব কিছু এসেছে এই বইয়ে। বেশ ভাল্লাগসে।
ওদের কলেজ জীবনের শেষ পরীক্ষার দিন কিংবা রেজাল্টের দিনে জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আগ মুহূর্তটিতে যে বিষাদের ঘন্টা বাজছিল সবার মাঝে সেটা শুনে অল্প হলেও নষ্টালজিয়া আক্রান্ত হয়েছি৷ হব না-ই বা কেন, সদ্যই ছেড়ে এসেছি সেই সুন্দর দিনগুলো.. উদ্যাম ঘুরাঘুরি, আড্ডা, বন্ধু, বিভীষিকার মতো একটু একটু করে এগিয়ে আসা পরীক্ষা, একটু একটু করে উৎরে যাওয়া.. এরপর? এরপর শুধু ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া জীবনের ডাকে৷ যতো যা-ই হোক, যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুক, বন্ধুত্বটা থাকুক অমলিন৷ ❤
Actually rating according to me 4.5 হবে, অনেকদিন এরকম ইয়ুথ উপন্যাস পড়া হয়নি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবাই ছোট গল্প বা নাগরিক জীবনের অন্যান্য সমস্যা নিয়ে লেখালেখি করলেও এই বইটা একদম আলাদা ছিল, পুরোটা জুড়েই ছিল তারুণ্যের স্পর্শ,ঠিক একুশে পা দেওয়ার আগ মুহূর্তে বা পা দেওয়ার পর কারো জীবনের আনন্দ, দায়িত্ব, অভিমান, কারো আবার চাপা ক্ষোভ কষ্ট,বা নিজেকে নিয়ে জুয়াখেলার যে দুঃসাহসী চিন্তা তা একমাত্র বয়সের দোষ বলে অন্য সবাই উড়িয়ে দিলেও আমার কাছে মনে হয়েছে এগুলো তো এই বয়সেরই সৌন্দর্য,তাই হয়ত বা সবাই তার তারুণ্যকে ভীষণভাবে মনে করে আবার একুশে ফিরে যেতে চায়
কেন জানি মনে হলো অল্প পরিসরের জন্য নাকি অন্য কোন অদ্ভুত কারণে চরিত্রগুলো ঠিকমতো ফুটে বের হতে পারেনি। ফলে আমি গল্পের গভীরে যেতে পারিনি সেভাবে যতটুকু যাবার কথা ছিল!
বিদেশি সাহিত্যে Young-Adult genre দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সেই তুলনায় বাংলা তে এই genre এর জনপ্রিয়তা কম। কিশোর সাহিত্যের থেকে এই বই গুলো প্রকৃতি গত ভাবে আলাদা। বাংলায় নিঃসন্দেহে , এই ধারার অবিংসবাদী শ্রেষ্ঠ লেখক হলেন স্মরণজিৎ চক্রবর্তী । আমার মতে YA genre এর মুল হল রোমান্টিসিজম । এই রোমান্টিসিজম কেবল নারী বা পুরুষ কেন্দ্রিক না। রোমান্টিসিজম আচ্ছন্ন করে আমাদের সমগ্র চেতনা কে। রোমান্টিসিজমের আলোতে আমরা বিচার করতে শুরু করি ধর্ম, বিজ্ঞান, রাজনীতি , সমাজবাদ, এমনকি আমাদের পারিপার্শ্বিক মানুষ গুলোকেও।
আসলে আঠেরো (ষোলো ) থেকে একুশেই আমাদের কূপমুন্ডকতার অবসানের সময় , ব্যক্তিত্বের বিকাশের সময়, পৃথিবী টাকে হাতের তালু তে বন্দি করার স্বপ্ন দেখার সময়, জীবনের প্রথম ভাঙ্গা-গড়ার সময়।
একুশে পা র কেন্দ্রে আছে সদ্য কলেজ এ প্রবেশ করা , এক ঝাঁক তরুণ, তরুণী গৌতম ইমন, তন্ময়, রাজেশ্বরী, ঋতু, মিঠু, ভেঙ্কট,উজ্জ্বয়নী । এরা প্রত্যেকেই উঠে এসেছে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে। উপন্যাসে খুব স্বল্প পরিসরে সামান্য দু একটা লাইনের মাধ্যমের মাধ্যমে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন , এদের সকলের স্বাতন্ত্র্য তা। এই উপন্যাসের কোন কেন্দ্রীয় চরিত্র নেই , কারণ আমার মনে হয় উপন্যাসের প্রত্যেক টা চরিত্র আসলে আলাদা কোনও চরিত্র না, আমাদের মনের মধ্যে যে বৈপরীত্য দানা বেঁধে থাকে সেগুলোই লেখিকা এক একটা চরিত্রের মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন । সেদিক থেকে সব চরিত্র গুলো নিয়ে এক কেন্দ্রীয় চরিত্র গড়ে উঠেছে ।
১৫৮ পাতার পরিসরে বিভিন্ন ঘটনা, উপ-ঘটনার মাধ্যমে গৌতম ইমন, তন্ময়, রাজেশ্বরী, ঋতু, মিঠু, ভেঙ্কট,উজ্জ্বয়নী এরা জীবন কে উপলব্ধি করতে শেখে । সেই সঙ্গে পাঠক ও নিজের ফেলে আসা মূহুর্তগুলো নতুন করে যাপন করে। সেই স্মৃতি আর উপলব্ধি অনেক ক্ষেত্রেই অম্লমধুর।
তেইশে এসে দাঁড়িয়ে নিজের ফেলে আসা দিন গুলো কে নতুন ভাবে উপভোগ করলাম।
প্রায় ১৫০ পৃষ্ঠার বইতে এত বেশি চরিত্র এবং কোন চরিত্রই পার্শ্ব চরিত্র না। প্রত্যেকটি চরিত্রের নির্মাণ এত নিখুঁত এবং দৃঢ়।প্রতিটি চরিত্রের জীবন গল্প উঠে এসছে যা অনন্য মাত্রা যোগ করেছে।যদিও কিছু প্লটে অতিরিক্ত নাটকীয়তা রয়েছে কিংবা জীবনই এমন।
বাড়ি থেকে আসার পর থেকেই কেন যেন মনটা খুব খারাপ লাগছিল, খুব একা একা লাগছিল, ভেতর থেকে ফেটে কান্না পাচ্ছিল। আবার কারো সাথে কথাও বলতে ভাল্লাগছিলো না। কি অদ্ভুত একটা অনুভূতি! এরকম অবস্থায় পড়লে আমি খুব দ্রুত কোন হালকা একটা বইয়ের খোঁজ করতে থাকি। এবারও গুডরিডসে খুঁজতে খুঁজতে এই বইটা পেয়ে গেলাম। "একুশে পা!" আমার বয়স যখন একুশ তখন থেকেই এই বইটা পড়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু পড়া হয়ে উঠে নি। যাই হোক, মাত্র ১৫৯ পৃষ্ঠা! শুরু করলাম বইটা এবং চোখের পলকে শেষও হয়ে গেলো! এই বইটার রিভিউ আলাদা করে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বইটার ফ্ল্যাপেই যেন এর রিভিউ লেখা। পড়তে পড়তে মনে হলো, এই গল্প তো কোনভাবেই শুধু উজ্জয়নী, ঋতু, গৌতম, ভেঙ্কটেশ, মিঠু, রাজেশ্বরী, ইমন কিংবা তন্ময়, বিষ্ণুপ্রিয়ার নয় যারা একই কলেজে পড়ে এবং যাদের বয়স আঠারো, কলেজ শেষ একুশে পা দিবে। এই গল্প বরং আমার নিজের, আমার বন্ধুদের গল্প, যারা ভার্সিটির শুরুতে আঠারো ছিল শেষে একুশে পা দেয়, যারা ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ আর পরিবার থেকে পড়তে এসে নিজেদের মধ্যে আরেকটা পরিবার বানিয়ে ফেলে। এদের প্রত্যেকের ভিন্ন গল্প আছে, কিন্তু এরা যখন একসাথে হয়, তখন যেন এক আত্মায় পরিণত হয়! বইটা পড়তে পড়তে মনটা আমার ভালো হয়ে গেলো। বইটা কেনা হয় নি, পিডিএফ পড়তে হয়েছে, তাই সুন্দর একটা ছবি তুলতে পারলাম না, এর জন্যে একটু একটু মন খারাপ আছে। 😕
আমার পড়া বাণী বসুর লেখা প্রথম বই ছিল 'গান্ধর্বী'। এটা পড়ে এতই মুগ্ধ হয়েছি যে ইকরার কথা শুনে উনার 'একুশে পা' বইটাও পড়া শুরু করলাম। 'গান্ধর্বী' লেভেলের মুগ্ধ না হলেও ভালো লেগেছে।
ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে অনার্সে ভর্তি হওয়া একদল নির্দিষ্ট বয়সের কিছু বন্ধুদের নিয়ে এই বই, যারা ১৮তে কলেজে পা দিয়েছিল আর অনার্স শেষে বাইরের পৃথিবীতে যখন পা দিচ্ছে, তখন তাদের বয়স একুশ। সাধারণত একটা বন্ধুদলে বিভিন্ন ধরনের মানুষ দেখা যায়। এখানেও তাই, কিন্তু এই বই আলাদা করে মূল চরিত্র নেই। সবাই নিজেরা নিজেদের জীবনের গল্পের মূল চরিত্র। বইয়ের ফ্ল্যাপেই লেখা আছে, "এ কাহিনি উজ্জয়িনীর, ইমনের, মিঠুর, রাজেশ্বরীর, ঋতুর, ভেঙ্কটেশের, গৌতমের, অণুকার। এ কাহিনি প্রত্যেকের এবং এদেরমত আরো অনেকের। এ কাহিনি যে কোন কলেজের। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের।" তাদের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক সামাজিক জীবন খুব সুন্দরভাবে উপন্যাসে তুলে ধরেছেন বাণী বসু।
সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আসা কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে তাদের জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যায়, কত রকমের সমস্যা কীভাবে মোকাবিলা করে, উঠতি বয়সে এসে আবেগের বশে কী করে ভুল পথে পা বাড়ায়, কত রকম আঘাত সহ্য করে, সাংসারিক অশান্তির মধ্যে থেকেও কী করে কষ্ট চাপা দিয়ে মুখে হাসি ধরে রাখে, শত বাধার মধ্যেও পড়াশুনা চালিয়ে যায়- সবই আছে এই বইয়ে৷
ভার্সিটি লাইফ শুরু করার আগে পড়ে ফেলায় ভালোই হলো। প্রতিটা চরিত্রই ভালো লেগেছে, বিশেষ করে ইমনকে। একদম ইস্পাতকঠিন ব্যক্তিত্ব এই মেয়েটার। আর সবগুলো চরিত্র যেন আমাদের আশেপাশের মানুষেরই। অসম্ভব সুন্দরী রাজেশ্বরী আর ধনীর নাক উঁচু মেয়ে উজ্জ্বয়িনী, ব্যক্তিত্ববান ইমন, স্বাধীনচেতা ঋতু, রক্ষণশীল পরিবারের বিষ্ণুপ্রিয়া, প্রতিভাবান তন্ময়, পরিবারের চাপের মুখে থাকা গৌতম- এরা যেন আমাদেরই বন্ধু। তবে একসাথে সব চরিত্র নিয়ে লিখতে যেয়ে ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট সেভাবে হয়নি, তাই এক তারা কেটে দিলাম।
Being 21 and having completed my college years have contributed to my deep understanding of this book, connecting with each character on a profound level. I'm glad I stumbled upon this book exactly when it resonated most with my life.
সবটুকু মিলিয়ে এই উপন্যাসটা খুব একটা ভালো লাগে নি।মাঝামাঝি আর কি।তাই তিন। কিন্তু একেবারে শেষের পৃষ্টাটা অত্��ন্ত মনোমুগ্ধকর ছিল।এই লেখাগুলোর জন্যই পুরো বইটা একবার হলেও পড়া যায়। বাণী বসু ইউ বিউটি
Friends may come and friends may go আমরা জীবনের সিংহভাগ সময় স্কুল কলেজ ভার্সিটি তে বন্ধু বান্ধবদের সাথেই কাতাই।পরিবারের সাথেও এতোটা সময় কাটানো হয়ে ওঠে না।আমার তো মনে হয় আমি আমার বন্ধুদের কেই বেশি ভালোবাসি।কিন্তু স্কুল ঠেকে কলেজে আবার কলেজ ঠেকে ভার্সিটি তে প্রতিবার যখন বন্ধুদের ঠে���ে আলাদা হয়ে যেতে হয় তখন খোঁচাটা একদম হৃদয়ে গিয়ে লাগে।কিন্তু সময়ের সাথে জীবন ও আগায় যায়। বই এর একটা অংশ আমার বিশেষ ভাবে ভালো লাগছে।আমরা দেশের দুরবস্থায় বিভিন্ন সিস্টেম বা ব্যক্তিকে দোষারোপ করে থাকি।কিন্তু আমরা নিজেরা কি কিছু করার কথাও ভাবি দেশের জন্য?ভাবতে গেলে হয়তো মনে হতে পারে এই অবস্থায় আমি কিই বা করতে পারি একা বা আমি এতো স্যাক্রিফাইস কেন করবো।আসলে আমরা নিজেরা যদি নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে কি কম করা হয়।
অনেক চরিত্র! আর সবাই প্রধান ভূমিকায়! এরা যেন আমাদের চারপাশে থাকা সেই চিরপরিচিত ছেলে মেয়েরা যারা নতুন কলেজ জীবনে প্রবেশ করেছে।কিন্তু সবার জীবনেরই একটা নির্দিষ্ট কাহিনী রয়েছে; বাইরে থেকে পরিপাটি হলেও, ভেতর থেকে হয়তো ততটাই অগোছালো,জরাজীর্ণ। প্রতিটি চরিত্রকেই সুনিপুণ হাতে গড়েছেন লেখিকা।এককথায় অসাধারণ!
বানী বসুকে আবিষ্কার করেছি,খুব বেশি দিন হয়নি। তাঁকে খুঁজে পেয়েছিলাম মূলত মহাভারত সম্পর্কিত বইয়ের খোঁজ করতে গিয়ে। উনার মহাভারত নিয়ে একটা সিরিজ আছে। সেটা নিয়ে বেশি আগ্রহ ছিলো। কিনেছি কিন্তু পড়িনি। সিরিজ টা না পড়লেও লেখিকার টুকটাক বেশ কয়েকটা বই পড়ে ফেলেছি। শুরু থেকে খেয়াল করলাম বানী বসুর নাম করলে,প্রায় সবাই একটা বইয়ের নাম বলে, তা হলো ❝একুশে পা❞। অনেক পরে এসে বইটা হাতে পাই,আজকে পড়ে শেষ করলাম।
❝ একুশে পা ❞ পড়তে নিয়ে শুরুতে কেমন একটা হোঁচট খেলাম। গতানুগতিক লেখা মনে হচ্ছিল। তাও ধর্য্য ধরে কিছু দূর পড়লাম,এর পর একে একে এলো ' ভেঙ্কট,উজ্জয়ীনি,গৌতম,তন্ময়,ঋতু,ইমন,রাজেশ্বরী,মিঠু'। পথ চলা শুরু করেছি তাদের সাথে। একে একে তাদের গল্প এলো,বিভিন্ন দিকে ডাল পালা ছড়ালো। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যে বিষয় উজ্জ্বল হয়ে রইল,তা হলো তাদের " বন্ধুত্বের সম্পর্ক "।
জীবন বড় আজিব জিনিস। জীবনে ভালো সময়গুলো আসে আবার হাওয়ার আগে হারিয়ে যায়। জীবনের সবচে সুন্দর সময়গুলো আসে স্কুল আর কলেজে। জীবনের তখন মাতাল অবস্থা। সে ছুটতে থাকে দিকবিদিকশুন্য হয়ে। নতুন নতুন মানুষ আসে জীবনে। নতুন পথ, নতুন বিষ্ময়, নতুন বেদনারা জন্ম নেয়। ভরসা দেয়ার জন্য, কাছে টেনে নেয়ার জন্য পাশে থাকে এই বন্ধু গুলো নামক মানুষগুলো। মোহহীন,নির্লোভ,স্বার্থছাড়া সম্পর্কের নাম " বন্ধুত্ব "। কিন্তু কতদিন? সময় এগোয় তার মত,জীবনও গতি বদলায়। মানুষেরা হারিয়ে যায়,বন্ধুরা দূরে যায়। কেউ কেউ আবার থাকে, তারা হয় জন্মের সাথী। এই স্বার্থান্ধের পৃথিবীতে এমন নির্মোহ সম্পর্ক জীবনে আর আসে না। জীবনের বোঝা মানুষকে স্থবির করে দেয়। আর কেউ তখন ভেঙ্কটের মত বলে না, ❝ ফ্রেন্ডস মে কাম,ফ্রেন্ডস মে গো, বাট ভেঙ্কট উইল বী দেয়ার ফর এভার❞। বন্ধুত্ব বেঁচে থাকুক,বন্ধুরা ভালো থাকুক। আর যাই হোক,সময়ে অসময়ে কাউকে ডেকে যদি বলা না যায়,❝বন্ধু চল বিড়ি খাই,কিংবা বন্ধু বুঝচ্ছস,এই এই ব্যাপার...❞ তাহলে বেঁচে থাকা বড্ড মলিন হয়ে যাবে।
"একুশে পা" বেশ ভালো লাগলো। কলকাতার কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া কিছু ছেলে মেয়ের জীবন, তাদের বন্ধুত্ব ,প্রেম, ব্যক্তিগত জীবনের ও পারিবারিক জীবনের নানাবিধ ক্রাইসিস এসবের মিশেলে তাদের কলেজ জীবনের শেষ অব্দি এই উপন্যাসের টাইমলাইন। একটি দরিদ্র পরিবারের থেকে উঠে আসা মেয়ের স্পোর্টস পার্সন হওয়ার সাথে সাথে জীবনের লড়াই, একটি লিবারেল মুসলিম পরিবারের উদারতা, একটি শরিকি সমস্যাসঙ্কুল পরিবারের বন্ধন, এমন নানাবিধ এঙ্গেল আছে এই উপন্যাসে যা শেষ অব্দি আকর্ষণীয়। তবে দুম করে যেন শেষ হয়ে গেল.. বা শেষ হয়েও হইল না শেষ...
কলেজ জীবন প্রতিটা মানুষের জীবনেরই এক ভীষণ গুরুত্মপূর্ণ অধ্যায়|গন্ডিতে আটকানো স্কুলজীবন শেষ করে এক মুক্তির আকাশের ঠিকানা কলেজ| তিনবছরের জন্য নতুন সম্পর্ক, ব্যাস তারপর আবার সেই হারিয়ে যাওয়া; সাথে ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন| সব নস্ট্যালজিয়াগুলো একজায়গায় জড়ো করেছেন লেখক| টিনএজ লাইফের সমস্যাগুলো খুব সুন্দর করে এঁকেছেন| পড়লে মনে থাকবে বহুদিন|
একুশ পেরিয়ে বছর তিনেক। আর পাঁচটা একুশ পার হওয়া জীবনের মতই আমার টা ও তেমন সুখময় ছিলো না। কলেজের বান্দায় দাড়িয়ে বন্ধুদের চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে, উজ্জয়িনীর মত আমি ভেবেছি " আল্লাহ আমার জীবনই কেন এত দুঃখ? কেনো ঐ দম বন্ধ হওয়া রুমটায় যেতে হবে? ওদের মত কেন আমার একটা সুন্দর পরিবার নাই? বেছে বেছে আমাকেই কেন এত দুঃখ দিলো?" আসলে প্রত্যেকের জীবনেই রয়েছে কোন না কোন দুঃসময়। উপর থেকে দেখে বুঝা যায় না।
বাণী বসুর লিখা " একুশে পা" বইটিতে কোন নিদিষ্ট কোন চরিত্রের নয়। এখানে মিঠু,ঋতু,উজ্জয়িনী,ইমন,রাজেশ্বরী,বিষ্ণু প্রিয়া,তন্ময়,গৌতম, ভেঙ্কটেশের,অণুকার গল্প বলা হয়েছে। যারা কি না ১৮ তে কলেজে পা দিয়েছে আর কলেজ শেষে ২১ শে পা দিচ্ছে। সুখ-দুঃখ, ঈর্ষা,রাগ - ক্ষোভ, বন্ধুত,পলিটিক্স, জীবনের বিভিন্ন স্তরে গল্প নিয়েই এই উপন্যাস। এদের একেক জনের গল্প একেক রকম,অথচ প্রত্যকেই প্রত্যেকের সাথে জড়িয়ে রয়েছে। এক বন্ধু মহলে কত জনের দেখা মিলে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক দিক থেকে আমরা ক'জন কে জানি? সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আসা কিশোর কিশোরীর জীবন সংগ্রামের গল্প। শেষটা বিচ্ছিন্নতা। একুশে পা দেয়ার সাথে সাথেই এরা জীবনের মুক্তপথে নিজের গড়িয়ে নেয়ার পথ খুঁজে।
প্রতিটা চরিত্রই যেনো আমাদের আশেপাশে রয়েছে। প্রতিটা চরিত্রই খুব চেনা। প্রতিটি বন্ধু মহলেই যেনো এমন সব চরিত্র রয়েছে। বইটা সুন্দর মায়া ধরানো এক ন্যাস্টালজিক।
বাইশের মাঝামাঝি এসে পড়লাম বাণী বসুর উপন্যাস ‘একুশে পা’। এবং নিজের সময়ের সাথে সামঞ্জস্য থাকায় বইটি পড়ে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। আর একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় উপন্যাসের চরিত্রদের মধ্যে অনেকে Pol. Science এর শিক্ষার্থী।
এ কাহিনী উজ্জয়িনীর, এ কাহিনী ইমনের। এ কাহিনী মিঠু চৌধুরীর, এ কাহিনী রাজেশ্বরীর। এ কাহিনী ঋতুর, এ কাহিনী বিষ্ণুপ্রিয়ার। এ কাহিনী তন্ময়ের, এ কাহিনী ভেঙ্কটেশের, এ কাহিনী গৌতমের। এ কাহিনী এদের মতো আরও অনেকের।
স্নাতক স্তরে তিন বছরের পাঠক্রমে পড়তে আসা একঝাঁক ছেলেমেয়ের, যারা আঠারোতে আসে, একুশে পা পড়তে না পড়তে ছড়িয়ে যায় মহাজীবনের মুক্তপথে। এ উপন্যাস সেইরকমই কিছু ছেলেমেয়ের জীবনের কাহিনী।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের, বিভিন্ন ধরণের ছাত্রছাত্রী ভিড় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। প্রত্যেকের মানসিকতা আলাদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখ, স্বপ্ন, প্রত্যাশা, রুচি, পরিবেশ ভিন্ন। তবু সেই সম্মিলিত জীবনের যে ঐকতান, তাকেই অসাধারণ দক্ষতায় এ উপন্যাসে ধরেছেন বাণী বসু।
একুশে পা। এই উপন্যাস শুধু ওই কটি ছেলেমেয়ের নয়। প্রতিবছর কত কত ভেঙ্কট,মিঠু,তন্ময়,বিষ্ণুপ্রিয়া,রাজেশ্বরী, গৌতম,ইমন,উজ্জয়িনী,ঋতুরা জড়ো হয় এক অজানা শহরে। একেবারেই আনকোরা পরিবেশে মানিয়ে নিতে নিতে হঠাৎ কখন তাদের 'একুশে পা' পড়ে যায়!নিজেরাই বুঝতে পারে না।ডি এলে প্রথম বইটা নিয়ে বসার দিনে, সুহাসিনী দি বলেছিল," পড় দেখবি খুব ভালো লাগবে। খুব ভালো বই।এখনও একুশ হয়নি তো?" ছোটবেলায় অনেকবার পড়তে চেয়েছি এ বই।তখন হয়ে ওঠেনি। ঠিকই হয়েছে।এ যেন ঠিক আমাদের গল্প।আসলে সব কিছুরই তো একটা সময় থাকে।সেই সময় পর্বের মধ্যে দিয়ে না গেলে আসল কথাটাই উপলব্ধি করা যায় না যে।আজ শেষ হলো।শুরুর দিন থেকে আজ অবধি কেমন তরতর করে গতিময় ছন্দে কেটে গেল পড়ার সময়টুকু।এই প্রায় বর্ষপূর্তি হওয়া আমাদের কলেজ-জীবনের মত।
এই গল্প আঠারো বছরের সদ্য কলেজে পা দেওয়া একঝাঁক ছেলেমেয়ের। যারা প্রজাপতির মতো ছটফটে আবার যাদের সবার জীবন-ই রংপেন্সিল এর মতো বৈচিত্র্য। যারা একসময় একুশে পা দে এবং ছড়িয়ে পড়ে জীবনের মহাপ্রাজ্ঞনে। কলেজ জীবনের পাশাপাশি তাদের পারিবারিক জীবনের টুকরো টুকরো গল্প। তারা প্রত্যেকে আলাদা, বিচিত্র তাদের জীবন কিন্তু একত্রে তারা এক মঞ্জুরীর ফুল। প্রতিটি চরিত্র যেনো আমার খুব বেশি চেনা কারণ ১৮ বছরের সেই সুবর্ণ সময় পার করছি আমি। প্রতিটি চরিত্র যেনো নিজের বন্ধুমহলে খুঁজে পাচ্ছি আমি। খুব পরিচিত এবং মন ভরানো গল্প।
উপন্যাসে কোনো বিশেষ চরিত্র কে ঘিরে কাহিনী গড়ে ওঠেনি। এখানে মিঠু, রিতু, উজ্জয়িনী, বিষ্ণুপ্রিয়া, তন্ময়, গৌতম, ভেঙ্কট এর মত চরিত্ররা নিজেদের গল্প বলেছে। একঝাঁক স্কুল এর গন্ডী পেরিয়ে কলেজে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের গল্প। ৩ বছরের কলেজ জীবনে কীভাবে সম্পর্কের ভাঙা-গড়া শুরু হয়ে, বেকারত্ব, পিছুটান, চাকরি সন্ধান, মন ভাঙা সব পেরিয়ে জীবন গতির নতুন বাঁকে প্রত্যেকটি চরিত্র যেভাবে নিজেদের কে সামলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, এখানেই 'একুশে পা' এর জিতে যাওয়া।
একুশে পা বাণী বসু আনন্দ পাবলিশার মম: ২০০ টাকা গল্প শুরু স্কুল পাস করা তরুণ তরুণীদের নিয়ে, যারা সবে কলেজে উঠেছে। সবার ব্যক্তিগত জীবনের টানা-পড়েন, সুখ-দুঃখ, অবাঞ্চিত, অনৈতিক ইচ্ছা, ঈর্ষা, আকাঙ্খা, কলেজ পলিটিক্স, সাংসারিক কেচ্ছা, সামাজিক স্তর মিলে-মিশে একাকার এই উপন্যাসে। শেষেরটা মন কেমন করা, কলেজ শেষের বিচ্ছিন্নতা, বিষন্নতা, জীবনের মূলস্রোতে চলার অনিশ্চয়তা।
বাইশে বসে একুশে পা পড়ে ফেললাম। চোখের সামনেই যেনো কলেজের ক্লাস গুলো , ঘরবাড়ি , হেঁটে যাওয়া স্ট্রিট গুলো সব দেখে ফেললাম । কলকাতায় কখনো না যেয়ে , ঢাকাতে বসেই , ঢাকার আঙ্গিকে। কখনো মনে হয়েছে আমিই ওদের হয়ে কথা বলছি , আমিই সময়ের ব্যাবধানে সামনে এগুচ্ছি। সব তো আমার চারিপাশেই ঘটছে।
কিছু ছেলে মেয়ের কলেজ জীবনের গল্প। একেক জনের জীবনের বাস্তবতা একেকরকম। সব মিলিয়ে গল্পের কোনো মহান উদ্দেশ্য ছিল না, ছিল ওদের জীবনের টুকরো টাকরা গল্প। সেটাই ভালো লাগছে। এই প্রথম বাণী বসুর লেখা পড়লাম। আরও পড়ব আশা করি।
uponnash ta sudhu ekjn er jibon tule dhre ni... bhibinno boyesher kichu mile mishe thaka maamush der nie taader bhobisshot nie ekta uponnash... hats off... loved it