‘হিরোজ অব ইসলাম’ লেকচার সিরিজ অবলম্বনে।সেলিব্রেটি! শব্দটি শুনলেই আমাদের মাঝে এক অন্যরকম মোহ কাজ করে। সেলিব্রেটি মানেই যেন বিশেষ কেউ। আজ আমরা ঝলমলে দুনিয়ার টলমলে কিছু মানুষকে সেলিব্রেটি বানিয়ে নিয়েছি, যারা কিনা বেহুদা আর অশ্লীল কাজের একনিষ্ঠ কর্মী ছাড়া কিছুই নয়। জীবনের পদে পদে আমরা তাদের অনুসরণ করি, কায়মনোবাক্যে তাদের-ই মতো হতে চাই। কিন্তু এরা কি সত্যিকারের সেলিব্রেটি?সত্যিকারের সেলিব্রেটি তো তাঁরাই যারা যুগে যুগে ইসলামের ঝাণ্ডা বহন করেছেন, আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য নিজেদের জান ও মাল বিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁরাই সত্যিকারের সেলিব্রেটি। তাঁরাই এই উম্মাহর কিংবদন্তি। যদি কাউকে জীবনের আদর্শ বানাতে হয়, যদি কাউকে জীবনের পদে পদে অনুসরণ করতে হয়, তবে তাঁরাই হতে পারেন আমাদের অনুপম আদর্শ।আমরা কি কখনো তাঁদের মতো হতে চেয়েছি? কখনো কি তাঁদের সম্পর্কে একটুখানি জানার চেষ্টা করেছি? তা হলে কীভাবে আমরা তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করব?বিভিন্ন যুগে ইতিহাস রচনা করা উম্মাহর দশ জন কিংবদন্তির জীবনের গল্প নিয়ে এসেছি আমরা। দুনিয়ার সস্তা সেলিব্রেটিদের ভিড়ে আমরা যেন সত্যিকারের সেলিব্রেটি, সত্যিকারের কিংবদন্তিদের আমাদের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি, সে লক্ষ্যেই সন্দীপন প্রকাশন নিয়ে এসেছে ‘উম্মাহর কিংবদন্তিরা’।
শায়খ আহমেদ মুসা জিবরীলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। তার পিতা শায়খ মুসা জিবরীল রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন মদীনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেই সুবাদে আহমেদ মুসা জিবরীল শৈশবের বেশ কিছু সময় কাটান মদীনায় । সেখানেই ১১ বছর বয়সে তিনি হিফয সম্পন্ন করেন। হাইস্কুল পাশ করার আগেই তিনি বুখারী ও মুসলিম শরীফ মুখস্ত করেন। কৈশোরের বাকী সময়টুকু তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই কাটান এবং সেখানেই ১৯৮৯ সালে হাইস্কুল থেকে পাশ করেন। পরবর্তিতে তিনি বুখারী ও মুসলিম শরিফের সনদ সমূহ মুখস্ত করেন আর এরপরে হাদিসের ৬টি কিতাব (কুতুব সিত্তাহ) মুখস্ত করেন। এরপর তিনিও তার বাবার পদাঙ্ক অনুসরন করে মদীনার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরীয়াহর উপর ডিগ্রী নেন।
আহমাদ মুসা জিবরীল শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উসাইমীনের (রাহিমাহুল্লাহ) তত্ত্বাবধানে অনেকগুলো কিতাবের অধ্যায়ন সম্পন্ন করেন এবং তিনি তার কাছ থেকে অত্যন্ত বিরল তাযকিয়্যাও লাভ করেন।
শায়খ বাকর আবু যাইদের (রাহিমাহুল্লাহ) সাথে একান্ত ক্লাসে তিনি আল ইমাম ওয়াল মুজাদ্দিদ শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ আল-ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যার (রাহিমাহুল্লাহ) কিছু বইও অধ্যায়ন করেন। তিনি শায়খ মুহাম্মাদ মুখতার আশ-শিনক্বিতীর অধীনে ৪ বছর পড়াশুনা করেন। আল্লামাহ হামুদ বিন উক্বলা আশ- শু’আইবীর অধীনেও তিনি অধ্যায়ন করেন এবং তাযকিয়্যাহ লাভ করেন।
তিনি তার পিতার সহপাঠি শায়খ ইহসান ইলাহি যহীরের অধীনেও পড়েছেন। শায়খ মুসা জিবরীল (শায়খ আহমেদ মুসা জিবরীলের পিতা) শায়খ ইহসানকে অ্যামেরিকায় আমন্ত্রন জানান। শায়খ ইহসান অ্যামেরিকায় কিশোর শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীলের সাথে পরিচিত হবার পর চমৎকৃত হয়ে তার বাবাকে বলেন – ইন শা আল্লাহ আপনি একজন মুজাদ্দিদ গড়ে তুলেছেন! তিনি আরও বলেন – “এই ছেলেটি তো আমার বইগুলো সম্পর্কে আমার চেয়েও বেশি জানে!”
শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল “আর-রাহীকুল মাখতুম”- এর লেখক সাফিউর রাহমান আল-মুবারাকপুরির (রাহিমাহুল্লাহ) অধীনে দীর্ঘ ৫ বছর অধ্যায়ন করেন। এছাড়াও তিনি অধ্যায়ন করেন শায়খ মুক্ববিল, শায়খ আব্দুল্লাহ গ্বুনায়মান, শায়খ মুহাম্মাদ আইয়ুব এবং শায়খ আতিয়াহ আস-সালিমের অধীনে। এদের মধ্যে শায়খ আতিয়াহ আস-সালিম ছিলেন শায়খ আল-আল্লামাহ মুহাম্মাদ আল আমিন শানক্বীতির (রাহিমাহুল্লাহ) প্রধান ছাত্র, এবং তিনি শায়খ আশ-শানক্বিতির ইন্তেকালের পর তার প্রধান তাফসির গ্রন্থ আদওয়া উল বায়ানের কাজ শেষ করেন।
শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল শায়খ ইব্রাহিম আল হুসাইনের এর ছাত্র ছিলেন। শায়খ ইব্রাহিম ছিলেন শায়খ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন বাযের (রাহিমাহুল্লাহ) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর। শায়খ আব্দুল্লাহ আল-ক্বুদের (আল-লাজনাহ আদ দা-ইমাহ লিল বুহুতুল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতাহ – Permanent Committee for Islamic Research and Issuing Fatwas– এর প্রথম দিকে সদস্য) সাথে শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল হাজ্জ করার সুযোগ লাভ করেন। এছাড়া তিনি দুই পবিত্র মাসজিদের রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত কমিটির প্রধান শায়খ সালিহ আল-হুসাইনের অধীনেও অধ্যায়নের সু্যোগ পান।
তিনি মহান মুহাদ্দিস শায়খ হামাদ আল-আনসারির রাহিমাহুল্লাহ অধীনে হাদীস অধ্যায়ন করেন এবং তার কাছ থেকে তাযকিয়্যাহ লাভ করেন। তিনি অধ্যায়ন করেন শায়খ আবু মালিক মুহাম্মাদ শাক্বরাহ-র অধীনে। শায়খ আবু মালিক ছিলেন শায়খ আল-আলবানির (রাহিমাহুল্লাহ) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। শায়খ আল-আলবানি তাঁর ওয়াসিয়্যাহতে শায়খ আবু মালিককে তার জানাযার ইমামতি করার জন্য অনুরোধ করেন। . শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল শায়খ মুসা আল-ক্বারনিরও (রাবী আল-মাদ্বখালির জামাতা) ছাত্র। ক্বুরআনের ব্যাপারে শায়খ আহমাদ ইজাযাহ প্রাপ্ত হন শায়খ মুহাম্মাদ মা’বাদ ও অন্যান্যদের কাছ থেকে। শায়খ মুসা জিবরীল ও শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীলের; ইলম থেকে উপকৃত হবার জন্য শায়খ বিন বায অ্যামেরিকায় থাকা সৌদি ছাত্রদের উৎসাহিত করেন। শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল শায়খ বিন বাযের কাছ থেকে তাযকিয়্যাহ অর্জন করেন (শায়খ বিন বাযের মৃত্যুর তিন মাস আগে)।
শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীলের ব্যাপারে মন্তব্য করার সময়ে শায়খ বিন বায তাকে সম্বোধন করেন, একজন “শায়খ” হিসেবে এবং বলেন তিনি “(আলিমদের কাছে) পরিচিত” ও “উত্তম আক্বিদা পোষণ করেন।”
শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল নিজেকে শায়খ হামুদ বিন উক্বলা আশ-শু’আইবি রাহিমাহুল্লাহ, শায়খ আলি আল খুদাইর হাফিযাহুল্লাহ, শায়খ নাসির আল ফাহদ ফাকাল্লাহু আশরাহ, শায়খ সুলাইমান আল ‘উলওয়ানসহ ফাকাল্লাহু আশরাহ ঐসব আলিমদের সিলসিলার অনুসারী মনে করেন যারা বর্তমান সময়ে শায়খ আল-ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, আল ইমাম ওয়াল মুজাদ্দিদ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহ্হাব ও উলামায়ে নাজদের শিক্ষাকে সত্যিকারভাবে আকড়ে আছে, যারা প্রকৃত অর্থে উলামায়ে নাজদের উত্তরসূরী। তার সব শিক্ষকের মাঝে শায়খ আল আল্লামাহ শায়খ হামুদ বিন উক্বলা আশ-শু’আইবীকে রাহিমাহুল্লাহ তিনি তার প্রধান শায়খ মনে করেন, এবং শায়খ
This is an eye opener. Shows how legends became legends. Faced every trial and tribulation of their lives with utmost believe and trust in Allah. Without making any compromise in their deen whatsoever. May Allah have mercy on all of them!!