যখন খুব মন খারাপ হয় সে বসে বসে ছবি আঁকে। টুম্পা মেয়েটা। বয়স তেরো। আমেরিকায় থাকে। একটা ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বি ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় হলো সে। প্রাইজ দেড় হাজার ডলার। ড্যানিয়েল জিজ্ঞেস করল, “ঠোম্পা! তুমি কী করবে দেড় হাজার ডলার দিয়ে?” “ বাংলাদেশে যাবার জন্য প্লেনের টিকেট কিনব!” কথাটা বলার আগেও মুহূর্তেও টুম্পা জানতো না সে এই কথাটা বলবে। বলে ফেলার পর সে বুঝতে পারলো, অবশ্যই সে এই কথাটিই বলবে! তা না হলে কী বলবে সে? বাংলাদেশ! বাংলাদেশে নাকি খুব সুন্দর বৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর.....
Muhammed Zafar Iqbal (Bengali: মুহম্মদ জাফর ইকবাল) is one of the most famous Bangladeshi author of Science-Fiction and Children's Literature ever to grace the Bengali literary community since the country's independence in 1971. He is a professor of Computer Science & Engineering at Shahjalal University of Science and Technology (SUST). Before that, Iqbal worked as a research scientist in Bell Communication Research for six years until 1994.
Birth and Family Background: Iqbal was born on 23 December 1952 in Sylhet. His father, Foyzur Rahman Ahmed, was a police officer. In his childhood, he traveled various part of Bangladesh, because of his father's transferring job. Zafar Iqbal was encouraged by his father for writing at an early life. He wrote his first science fiction work at the age of seven. On 5 May 1971, during the liberation war of Bangladesh, the Pakistan's invading army captured his father and killed him brutally in the bank of a river.
Education: Iqbal passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1968 and HSC exam from Dhaka College in 1970. He earned his BSc in Physics from Dhaka University in 1976. In the same year Iqbal went to University of Washington to obtain his PhD and earned the degree in 1982.
Personal Life: Iqbal married Dr. Yasmeen Haque in 1978. Yasmeen is the Dean of the Life Science Department, Head of the Physics Department, Provost of the Shohid Janoni Jahanara Imam Hall and a researcher at SUST. They have two children - son Nabil and daughter Yeshim. Yeshim translated the book Amar Bondhu Rashed (Rashed, My Friend) written by her father. Iqbal's elder brother, Humayun Ahmed, was the most popular author and film-maker of Bangladesh since its independence. Humayun died after a nine-month struggle against colorectal cancer on the 19 July 2012. His younger brother, Ahsan Habib, is the editor of the satirical magazine, Unmad and one of the most reknowned cartoonist of Bangladesh.
Academic Career: After obtaining PhD degree, Iqbal worked as a post-doctoral researcher at California Institute of Technology (CalTech) from 1983 to 1988. He then joined Bell Communications Research (Bellcore), a separate corporation from the Bell Labs (now Telcordia Technologies), as a Research Scientist. He left the institute in 1994 and joined the faculty of the Department of CSE of SUST.
Literary career: Iqbal started writing stories from a very early age. Iqbal wrote his first short story at the age of seven. While studying in the Dhaka University Iqbal's story Copotronic Bhalobasa was published in a local magazine. But, a number of readers at that time felt that the story was based on a foreign story. To answer this allegation, he later rewrote the story and published the story in collection of stories named Copotronic Sukh Dukkho. Since then he is the most popular writer both in Bengali Science-Fiction and in Juvenile Leterature of the country.
Other Activities and Awards: Zafar Iqbal won the Bangla Academy Award, the highest award in literature in Bangladesh, in 2004. Iqbal also played a leading role in founding Bangladesh Mathematical Olympiad. In 2011 he won Rotary SEED Award for his contribution in field of education.
টুম্পা যখন হঠাৎ করে আর্ট কম্পিটিশনে ফার্স্ট হয়ে যায় তখনও সে জানতো না প্রাইজ মানি দিয়ে কি করবে। বিচারক ড্যানিয়েল জানতে চাইলে হুট করে বলে ফেললো - বাংলাদেশে যাবার জন্য প্লেনের টিকেট কিনবো। বাংলাদেশে নাকি খুব সুন্দর বৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর!
দেশকে ভালোবাসার প্রথম হাতেখড়ি হয়েছিল বৃষ্টির ঠিকানা গল্পের মতো অজস্র কিশোর উপন্যাসের হাত ধরে। খুব ছোটছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল ছোটছোট শিশু কিশোরদের মাঝে দেশাত্মবোধের বীজ বুনে দিয়েছেন। মানুষকে বিশ্বাস করার শেকড় গড়ে দিয়েছেন। Anne Frank যখন বলেছিল- In spite of everything I still believe that people are really good at heart তখনও কিন্তু মানুষের প্রতি এই বিশ্বাসের ভীত তৈরি হয়নি। শিশুমন আসলে এতো ভারী কথা বোঝার জন্য তৈরি না। বরং ড. জাফর ইকবাল তাঁর শতশত কিশোর চরিত্রগুলোর মাধ্যমে এই শক্তিশালী কথাটা খুব সহজে মাথার মধ্যে গেঁথে দিতে পেরেছেন!
সম্পর্কের গল্পগুলো সবসময় ভীষণ মায়াময় হয়। আর আমার দৃষ্টিতে বাবা-মেয়ের বন্ধুত্বের গল্প পৃথিবীর সেরা গল্প। টুম্পা যখন তার বাবার সাথে বৃষ্টিতে ভিজে তখন কেমন যেন উথাল-পাথাল এক ধরনের আনন্দ হয়!
এই গল্পটা এক কিশোরীর বাবাকে ভালোবাসার গল্প। এই গল্পটা অদেখা সবুজ দেশকে ভালোবাসার গল্প। এই গল্পটা মানসিক রোগকে ভয় না করে প্রিয়জনের পাশে থাকার গল্প। এই গল্পটা বৃষ্টির গল্প। বাংলাদেশে পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর বৃষ্টি হয় এই গল্প পড়ার আগে কোনোদিন ভেবে দেখেছিলাম?!
শৈশব হলো একজন মানুষের জীবনের সবচাইতে চমৎকার সময়। আর বৃষ্টির ঠিকানা গল্পের মতো কিশোর গল্পগুলো খুব সহজেই সেই রূপকথার শৈশবকে ফিরিয়ে দিতে পারে!
খুব সুন্দর। কিন্তু মনে প্রশ্ন থেকে গেলো। শেষ পর্যন্ত কি হলো টুম্পা আর ওর আব্বুর? আব্বু নতুন জীবন ফিরে পেলো জেনে কত আনন্দ লাগছে। আমাকে যিনি বইটি recommend করেছিলেন, ওনাকে অনেক ধন্যবাদ। এমন সুন্দর বই সাজেস্ট করার জন্য।
টুম্পা রায়হান। বয়স মাত্র ১৩। মা বাবার সাথে আমেরিকায় থাকে। নিজের বাবা না। সৎ বাবা। তার বাবা মারা যাননি, পাগল হয়ে যাওয়ায় তার মা তাকে নিয়ে আমেরিকায় চলে এসেছেন। এখানে এসেই তার সৎ বাবাকে বিয়ে করেছেন। সৎ বাবার সাথে তার সম্পর্ক ভাল না। কথায় কথায় খোট দেয়। সবচেয়ে বেশী খোটা দেয় বাংলাদেশকে নিয়ে। যদিও সেও কিনা বাংলাদেশী। তাই বাংলাদেশকে নিয়ে একটা ছোট ধারনা গড়ে উঠেছিল তার মনে। ভুল ভাংগে একদিন ক্লাসে আসা সাবস্টিটিউট ভুগোল টিচারের মাধ্যমে। তার কারনেই টুম্পা বাংলাদেশকে নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে। জানতে থাকে বাংলাদেশকে নিয়ে।
আমেরিকায় আর ১০টা ছেলেমেয়ের মতন চলতে পারে না টুম্পা। তাকে বাসা থেকে বের হতে দেয় না তার বাবা মা। তাই বাসায় বসে বসে সে ছবি আকে। তার ছবি আকার হাত অসাধারন। এতটাই ভাল যে সে ছবি আকার প্রতিযোগিতায় ২য় হয়ে ১৫০০ডলার জিতে নেয়। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে যে, সে এই টাকা দিয়ে কি করবে সে বিন্দু মাত্র চিন্তা না করে বলে বাংলাদেশে যাওয়ার টিকিট কাটবে।
যা ভাবা সেইই কাজ। বাড়িতে অনেকটা যুদ্ধ করেই সে বাংলাদেশে আসে। ছোট খালার বাসায় ওঠে টুম্পা। সেখানেই সে তার বাবা, বুলবুল রায়হান, এর কথা জানতে পারে। জানতে পারে তার বাবা অনেক বড় চিত্রশিল্পী। স্কিতজোফ্রেনীয়াতে আক্রান্ত হয়েই তার আজ এই অবস্থা। টুম্পা ঠিক করে খুজে বের করবে সে তার বাবাকে।
বারোবছর পর বইটা পড়লাম, বারোবছর আগের আমি-র প্রশ্ন ছিল, বৃষ্টিতে ভিজতে বাংলাদেশ আসা লাগবে কেন? আমার দোষ নাই, আমি এইসব কম বুঝি, কম বুঝতাম - সোজাকথায়, কাঠখোট্টা প্রকারের মানুষ হলে যা হয়...
এরপরও এটা এমন একটা বই যেটার কথা মনে থেকে গেছে এতগুলো বছর....
টুম্পার বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছাটা শুধু বৃষ্টির জন্য ছিল না...নিজেকে জানার একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল, নিজের দেশের ওপর একটা টান- যেই দেশের স্মৃতি তার মনেই ছিল না কিন্তু তাতে কৌতূহল হার মানেনি...
যা কিছু ভালো লেগেছেঃ
ছোট খালা - আমার বড়খালাও ঠিক এমন, তার কাছে গেলে কখনো না খেয়ে পারা যায় না, হাসিখুশি একটা মানুষ আবার হুটহাট আবেগে ভেসে যান, জানতে মন চায় - এমন খালা কী বাংলার ঘরে ঘরেই আছেন?
বাবা- মেয়ের যে সম্পর্কের যে চিত্র ফুটে উঠেছে- এটা নিয়ে আমি খুব বেশি বলতে চাই না, ভালো জিনিস নিয়ে বেশি কথা বলতে নেই, মায়া কম হয়ে যায় এটা আমার ধারণা
যা ভালো লাগেনিঃ
স্কেতজোফ্রেনিয়ার ব্যাপারটি, কারো এত সিভিয়ার স্কেতজোফ্রেনিয়া এত সহজে কমানো যায়, এটা একটু বেশিই লেগেছে আমার কাছে...প্রায় অবাস্তব হয়ে যায়, হয়তো নাটকীয়তা আনতে কাজটি করা হয়েছে
আরেকটা ব্যাপার যেটা চোখে বেধেছে, সেটা টুম্পার সাথে শুভ চৌধুরীর ব্যবহার...টুম্পা ভুল তো করেছে কিন্তু তার সাথে যেই ব্যবহার করেছে সেইভাবে একটা চৌদ্দবছরের মেয়ের সাথে করা যায় না, যাক গা আমি হয়তো বেশিই বিশ্লেষণ করে ফেলছি!
"বৃষ্টির ঠিকানা" মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি কিশোর উপন্যাস যা ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি টুম্পা নামের আমেরিকা প্রবাসী তেরো বছরের এক কিশোরীকে নিয়ে। সে যখন খুব ছোট ছিল, তখন তার স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত বাবাকে ফেলে তার মা তাকে নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমায়। তার সৎ বাবাও একজন বাংলাদেশি। তার কাছ থেকে টুম্পা বাংলাদেশ সম্পর্কে নেগেটিভ আইডিয়া পেয়ে এসেছে ছোট থেকেই।
হঠাৎ টুম্পাদের ক্লাসে সাবস্টিটিউট টিচার হিসেবে ক্লাস নিতে আসেন মিসেস ক্রিস্টিনা হেনরিকসন। টুম্পার জন্ম বাংলাদেশে জেনে তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা এলেন গিন্সবার্গের 'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড' কবিতার কথা, জর্জ হ্যারিসনের 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশের' কথা বলেন। শুনে টুম্পা মুগ্ধ হয় আর সুযোগ খুঁজতে থাকে বাংলাদেশে আসার জন্য।
সেই সুযোগও পেয়ে যায় টুম্পা। ছবি আঁকার কম্পিটিশনে ২য় হয়ে ১৫০০ ডলার প্রাইজমানি পায় সে। সেই টাকায় টিকেট কিনে টুম্পা চার সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে আসে এবং নাটকীয়ভাবে খুঁজে পায় তার জন্মদাতা বাবাকে...
♦ উপন্যাসটিতে টুম্পা ও তার বাবার কেমেস্ট্রি আমাকে মুগ্ধ করেছে। একজন মেয়ের সান্নিধ্যে তার বাবা কতটা মোটিভেটেড হতে পারে, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত "বৃষ্টির ঠিকানা" উপন্যাসটি।
♦ আরেকটি বিষয় খুব ভাল লেগেছে। সেটা হল উপন্যাসটিতে দেশপ্রেমকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। জাফর ইকবাল স্যারের এ দিকটি আমার বেশ ভালো লাগে। তিনি তাঁর লেখায় বাংলাদেশকে সব সময় পজিটিভ দিক থেকে দেখান। এজন্য তাঁর লেখার প্রতি আলাদা টান অনুভব করি ছোটবেলা থেকেই।
ভিন্নধর্মী এই উপন্যাসটি পড়ার জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে শেষ করছি। ধন্যবাদ :)
Sometimes life gives us something we couldn't even think of! Having faith is precious, so our lives is! So preciously precious! So adorably adorable (:
My kidd sister rated Brishtyr Thikana, this remarkable book completed her first 1dozen - book milestone at quarantine days! But from me, this is solid solid 5! I just went back to my childhood - reading days "(
বাংলাদেশে নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বৃষ্টি হয়। টুম্পারা এভাবেই বৃষ্টিতে ভিজুক। টুম্পারা আনন্দে থাকুক, ভালো থাকুক।
যখন খুব মন খারাপ হয় সে বসে বসে ছবি আঁকে। টুম্পা মেয়েটা। বয়স তেরো। আমেরিকায় থাকে। একটা ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বি ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় হলো সে। প্রাইজ দেড় হাজার ডলার। ড্যানিয়েল জিজ্ঞেস করল, “ঠোম্পা! তুমি কী করবে দেড় হাজার ডলার দিয়ে?” “ বাংলাদেশে যাবার জন্য প্লেনের টিকেট কিনব!” কথাটা বলার আগেও মুহূর্তেও টুম্পা জানতো না সে এই কথাটা বলবে। বলে ফেলার পর সে বুঝতে পারলো, অবশ্যই সে এই কথাটিই বলবে! তা না হলে কী বলবে সে? বাংলাদেশ! বাংলাদেশে নাকি খুব সুন্দর বৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর।🤍
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর "ছুটি" গল্পের কিশোর ফটিকের বয়স সম্পর্কে বলেছিলেন " তেরো– চৌদ্দ বছরের ছেলের মত পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখের আধো-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই প্রগলভতা।..... শৈশব এবং যৌবনের অনেক দোষ মাফ করা যায়, কিন্তু এই সময়ের কোনো স্বাভাবিক অনিবার্য ত্রুটিও যেন অসহ্য বোধ হয়।"
কিন্তু, তেরো–চৌদ্দ বছর বয়স মাত্রই কি শুধু বড়দের সাথে, নিজের সবথেকে কাছের মানুষদের সাথে দূরত্ব তৈরি হওয়া? শুধুই বাঁধভাঙা আবেগ আর অভিমানের বেলা? সবক্ষেত্রে হয়ত থিওরিটা এক হয় না। কোনো কোনো তেরো– চৌদ্দ বছরকে নিতে হয় তার বয়সের থেকেও অনেক বড় কিছু দায়িত্ব।
এমনই একজন তেরো বছরের কিশোরী টুম্পাকে নিয়ে শুরু হয় গল্পটা। খুব ছোট্ট বেলায় মায়ের সঙ্গে আমেরিকায় চলে আসে , সেখানেই বড় হয় । কিন্তু, সাধারণ রক্ষণশীল বাঙালি পরিবারের মেয়ে হওয়ায় আমেরিকান টিনএজারদের মত কোনো সুবিধাই নেই টুম্পার। স্কুল আর ছবি আঁকা নিয়েই তার ছোট্ট জগৎ। টুম্পার বাবা আসলে তার আসল বাবা নয়, সৎ বাবা। তার আসল বাবা নাকি পাগল ছিল! এ নিয়ে প্রায়ই তার সৎ বাবার কাছ থেকে খোঁটা শুনতে হয় তাকে। সব চুপচাপ সহ্য করে টুম্পা আর ভাবে তার বাবার কথা, দেশের কথা। "বাংলাদেশ" - পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর বৃষ্টি নাকি হয় এই দেশটাতে। সেই বৃষ্টি আর বাবাকে দেখার স্বপ্ন নিয়ে দিন কাটায় সে। কিন্তু একদিন হঠাৎ ম্যাজিকের মত পূরণ হয়ে যায় তার বাংলাদেশে যাওয়ার স্বপ্ন। টুম্পার স্কুলের টিচার, মিসেস হেনরিকসনের উৎসাহে এক আর্ট কম্পিটিশনে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হয়ে পায় দেড় হাজার ডলার!! তারপর অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেই টাকায় কেনা টিকিটে টুম্পা বাংলাদেশে যায়। তারপর টুম্পা নামে বাবাকে খোঁজার অভিযানে। কিন্তু কীভাবে খুঁজবে টুম্পা? শেষ পর্যন্ত কি সত্যিই খুঁজে পাবে টুম্পা তার বাবাকে? কেমন আছে তার বাবা? এতদিন পরে কি বাবা আদৌ চিনতে পারবে টুম্পাকে?
আমার পড়া মুহম্মদ জাফর ইকবালের অন্যতম সেরা বই। এক টিনএজারের জীবন, তার স্বপ্ন, চিন্তা-ভাবনা নিয়ে লেখা দারুণ একটা বই। সাথে বাবার জন্য মেয়ের ভালোবাসার তীব্রতা কতটা হতে পারে, তারও খুব ভালো প্রমাণ পাওয়া যায়। দেশপ্রেম, বাবা - মেয়ের ভালোবাসা সব মিলিয়ে অসাধারণ একটা কাহিনী।
১৩ বছরের টুম্পা অনেক ছোটবেলা থেকেই তার মা আর সৎবাবার সাথে আমেরিকায়। টুম্পার তার নিজের দেশ সম্পর্কে তেমন ধারনা ছিল না।কারন তার সৎবাবা সবসময় বাংলাদেশ নিয়ে বাজে কথা বলত খোঁটা দিত। বাংলাদেশ সম্পর্কে সুন্দর তথ্য সে জানতে পারে তার ভূগোল ক্লাশের শিক্ষিকার কাছে,বাংলাদেশে যে সত্তরের দিকে জর্জ হ্যারিসন, জোন বায়াজ,রবি শংকরের কনসার্ট হয়েছিল তা টুম্পার অজানা ছিল শুধু তাই নয় সে আরও জানতে পারে বাংলাদেশের যুদ্ধ নিয়ে এলেন গিনসবার্গের কবিতা " সেপ্টেম্বর অন জেসোর রোড" এর কথা। আর তখন থেকেই তার মনে গেঁথে যায় বাংলাদেশে যাওয়ার বাসনা। এই ছোট টুম্পার জীবনটা সাধারন কিশোরীদের মত ছিল না। সবকিছুতে অতিরিক্ত শাসন,সৎবাবার দৈনন্দিন অযথা খোঁটা তো আছেই আর এইসব উপেক্ষা করার জন্য তার শখের ���াজ ছবি আঁকা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তার এই শখের কারনেই এক আর্ট প্রতিযোগিতায় দিত্বীয় স্থান অধিকারী হয়। আর সেই প্রাইজ মানি দিয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। টুম্পা দেশে যাওয়ার পর জানতে পারে তার আপন বাবা বেঁচে আছেন কিন্তু কোথায় সেটা কী জানে না। ছোট টুম্পা তখনই প্রতিজ্ঞা করে তার বাবাকে খোঁজে বের করবে। এই বইটি অনেক আগে পড়া হয়েছিল ,অসম্ভব ভালো লাগার একটা বই। জাফর ইকবাল স্যার���র অন্যান্য কিশোর উপন্যাস থেকে ভিন্ন। এই বইটি পড়ে একজন কিশোরের বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরও বাড়বে। স্মার্টফোনের যুগে এখনকার অনেক কিশোর -কিশোরীরাই বাংলাদেশের কিছু ঘটনা জানে না।শুধু দেশপ্রেম নয়,একজন বাবার প্রতি মেয়ের ভালোবাসাটুকুও এই বইতে খুব সুন্দরভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
'মানুষের মনে যখন অনেক আনন্দ হয়, তখন তারা বৃষ্টিতে ভেজে।'
স্যারের লেখা বইগুলোর মধ্যে আমার অন্যতম প্রিয় এই বইটি। আমার জীবনের অনেক ইচ্ছার মধ্যে একটি ইচ্ছে হল বইটির উপর ভিত্তি করে একটা সিনেমা নির্মাণ করা। জানি না কখনও সে যোগ্যতা অর্জন করতে পারব কি না। ততদিন পর্যন্ত মনের গহীনে ইচ্ছেটাকে লুকিয়ে রাখতে দোষ কী!!
বাবা নায়ক ...... মেয়ে নাইকা............... এমন গল্প জাফর স্যার কিভাবে যে লিখলেন, আমি বইটা পড়ে কয়দিন শূন্যতা অনুভব করলাম... আসাধারন বই............ এই বইয়ের সাথে কোন বইয়ের তুলনা হয় না......
“বাংলাদেশে নাকি খুব সুন্দর বৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর........।” বলেন তো এই লাইনগুলো কোন বইয়ের? কে লিখেছেন? বইটির নাম বৃষ্টির ঠিকানা, লিখেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। প্রখ্যাত লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের পরিচয় তো সবারই জানা। তবুও হালকা-পাতলা লিখতে হয়। বাংলা কিশোর সাহিত্যে অন্যতম লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তার বই পড়ে নি এমন পাঠক হয়তো বাংলাদেশে খুব কমই আছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের বই পড়ার শুরু জাফর ইকবালের বই দিয়ে। আমাদের শৈশব ও কৈশোরের সময়গুলোকে রঙ্গিন ও প্রাণবন্ত করেছেন তার কিশোর ও সাইন্স ফিকশন বই দিয়ে। সেদিন আকাশ মেঘলা। টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে। স্কুল বন্ধ। বাসায় বসে সময় কাটছে না। বুকসেলফ-এর দিকে তাকাতেই বইটি নজরে এলো। পৃষ্ঠা উল্টাতেই ফ্ল্যাপের লেখাগুলো চোখে পড়লো। মনে হলো- পড়ে দেখি বইটা। সংক্ষিপ্ত আলোচনাঃ তেরো বছরের ছোট্ট মেয়ে টুম্পা। থাকে আমেরিকায়। ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসে। যখনি মন খারাপ হয়, তখনি ছবি আঁকে। আমেরিকায় মা ও বাবা আসলে সৎ বাবার সাথে থাকে। একটি ভাইও আছে। টুম্পার সৎ বাবা তাকে ঠিক সহ্য করতে পারে না। কথায় কথায় বলে, টুম্পার শরীরে পাগলের রক্ত। টুম্পার বাবাও নাকি পাগল। টুম্পা জানে না, তার বাবা পাগল কিনা? বাবার সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। বাবা কী করতেন? কেমন ছিলেন? অনেক আগেই তার বাবা ও মা আলাদা হয়ে যায়। তার মা আমেরিকায় চলে আসে। টুম্পার মনে অনেক প্রশ্ন। উত্তর জানা নেই। জানতে হলে যেতে হবে বাংলাদেশে। টুম্পার কাছে তো দেশে যাওয়ার টিকেটের টাকাও নেই। এ জন্যই টুম্পার সারাক্ষণ মন খারাপ। টুম্পার জীবনে ঘটে যায় চমৎকার এক ঘটনা। সেটি ঘটে তার স্কুলে। স্কুল মানেই নানা মজার মজার ঘটনার কারখানা। টুম্পার স্কুলেও হয়েছে তাই। একদিন ক্লাসে জ্যামিতি স্যারের পরিবর্তে আসেন ভূগোল ম্যাডাম মিসেস হেনরিকসন। জ্যামিতির ক্লাসে ভূগোল ম্যাডাম পড়াবেনই বা কী? তাই তিনি গল্প করতে শুরু করলেন। গল্প করতে করতে তিনি একেকজনের দেশ সম্পর্কে জানতে চান এবং নিজের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। এভাবেই গল্পে গল্পে টুম্পার পরিচয় পান এবং শুরু হয় টুম্পার জীবনে এক নতুন মোড়। কি সেই মোড়? কি ঘটেছিলো ক্লাসে? ক্লাসের সেই ঘটনার মোড় টুম্পার জীবনে বয়ে আনে অনাবিল আনন্দ এবং ভয়। ভয়ের কারণ হলো- যে আনন্দের ঘটনা তার জীবনে ঘটতে যাচ্ছে, তাতে তার সৎ বাবা কিছুতেই রাজী হবেন না। অবশেষে ঘটে সেই ঘটনা। টুম্পার বাবা রাজী হন। সেই ঘটনার বদৌলতে বদলে যায় টুম্পার জীবন। বৃষ্টির দেশ, সুন্দর বৃষ্টির দেশ দেখতে টুম্পা বাংলাদেশে আসবে, কিন্তু কিভাবে সম্ভব হলো এই অসম্ভবের ঘটনা? বাংলাদেশে আসে টুম্পা এক মাসের ছুটিতে। ছোট খালার বাড়িতে। ছোট খালা তো টুম্পাকে দেখে কী করে না করে। আনন্দে দিশেহারা। টুম্পা তার বাবাকে খুঁজতে থাকে। একদিন এমনি করে টুম্পার সাথে দেখা হয় এমন একজনের যে কিনা তার বাবার খোঁজ দিতে পারেন। সেই লোকের সাথে কথা হয় টুম্পার। তবে কী টুম্পা খুঁজে পাবে তার বাবাকে? জানতে হলে বইটা পড়তে হবে। ব্যক্তিগত মতামতঃ অন্যদের মত আমি খুব বেশি জাফর ইকবালের বইয়ের ভক্ত হতে পারি নি। আমি উনার ৫-৬ টা বই পড়েছি। বাকীগুলো কেন পড়ি নি তার উত্তর আমার নিজেরও জানা নেই। আসলে গত কয়েকবছর ধরে ফিকশন ও নন-ফিকশন বই বেশি পড়ছি। থৃলার বা ফ্যান্টাসী এবং কিশোর সাহিত্য তেমন পড়া হয় না। মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত বৃষ্টির ঠিকানা বইটি প্রায় ৪-৫ বছর পর পড়ছি। এর মাঝে মুহম্মদ জাফর ইকবালের আর কোনো বই পড়া হয় নি। তাই আমার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। প্রথম ১০-১৫ টা পৃষ্ঠা পড়তে মোটামুটি ভালোই লেগেছে। কিন্তু পরে আর ভালো লাগে নি। টুম্পার বাবার অসুখ, ছিনতাই, বাবার ছবি আঁকা গল্প গুলো পরিচিত ছবির দৃশ্যের মত মনে হয়েছে। ভালো লাগার বিষয় হলো বইটি শিশু কিশোরদের জন্য একদম উপযুক্ত একটি বই। এই বইটি পড়লে এই ধরণের বই পড়ার আগ্রহ জন্মাবে। অভিভাবকরা নিঃসন্দেহে বইটি তাদের সন্তানের হাতে তুলে দিতে পারেন।
প্রথম যখন এই বইটা পড়ি, আমার বয়স হয়ত ১০-১১। আজকে উনত্রিশ বছর বয়সে অফিসে বসে কেন যেন পিডিএফ পড়তে শুরু করলাম। এখনও একই রকম আবেদন এই বইটার।
বৃষ্টির ঠিকানা মুহাম্মদ জাফর ইকবালের অন্যতম সেরা লেখা তো বটেই, আবহমান বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ; নিরীহ কিশোর উপন্যাস হওয়ার পরেও। এই বইটা এমন একটা পিরিয়ডের প্রতিনিধিত্ব করে যে সময় নতুন মিলেনিয়ামের প্রথম প্রজন্মের সত্ত্বা কেবল তৈরি হচ্ছে - সাহিত্য, গান, ক্রিকেট সব মিলিয়ে দেশকে ভালোবাসার বা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্বিত হবার যে শক্তিটা পেয়েছিলো একটা পুরো প্রজন্ম, যেটার পরিণতি ছিল শাহবাগ আন্দোলন, বৃষ্টির ঠিকানা সেই মুভমেন্টের অনেকগুলো মুভিং পার্টসের একটা।
এই প্রজন্মে যখন মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল সব ভেঙে ফেলা হচ্ছে আর ইতিহাস যাচ্ছে মুছে, যেই প্রজন্ম পাকিস্তান আর বাংলাদেশের পতাকাকে জোড়া দিয়ে প্রোগ্রাম করে আর সেটা নিয়ে বিভিন্ন ফিরিস্তিও দেয়, সেই সময়ে একটা বৃষ্টির ঠিকানা কারও লেখা দরকার, আনফরচুনেটলি আমরা সেইরকম লেখক আজকাল দেখছি না।
রিভিউ অনেকেই দিয়েছেন আমি একটু অন্য কথা বলি। যারা বৃষ্টি পছন্দ করেন না , উপভোগ করতে জানেন না একবার বই টা পড়ার অনুরোধ থাকল। কে ���ানে পড়তে পড়তে হয়তো টুম্পার অনুভূতি আর আপনার অনুভূতি মিশে এক হয়ে যেতে পারে।
this is a very good book.It is about tumpa, a Bangladeshi girl, who lives in america with her mother, step dad and step brother. This story is about Tumpa, meeting her father in Bangladesh