Jump to ratings and reviews
Rate this book

সীতায়ন

Rate this book
জন্ম থেকে জীবনের অন্তিমলগ্ন পর্যন্ত অভাবিত দুর্ভাগ্যের তমসা যাঁর ছায়াসঙ্গিনী, তাকেই সন্ধানী আলোয় নবরূপে নবতর আবিষ্কারের প্রয়াস। কেবল রামায়ণের ধ্বনিসাম্যে সীতায়ন নয়, এই ধ্রুপদী উপন্যাস জনকনন্দিনী সীতার জীবন-পরিক্রমার এক আধুনিক গদ্যগাথা।
ষষ্ঠত্রিংশতি বর্ষে উপনীতা সীতা তখন সন্তানসম্ভবা। এই আলোকসামান্যা চিরন্তনী সেই মুহূর্তে হোমশিখার মতো পবিত্র মাতৃত্বের বিভায়। বহুন আকাঙ্ক্ষিত সুখমরুৎ-এর স্পর্শ অনুভব করছেন তিনি। সহসা প্রজানুরঞ্জক রাম লোকাপবাদের ভয়ে বৈদেহীকে বিসর্জনের সংকল্প নিলেন। তাঁর আদেশে নৈমিষারণ্যে বাল্মীকির আশ্রমসংলগ্ন একটি স্থানে সীতাকে নির্বাসনে রেখে গেলেন লক্ষণ। গর্ভিণী স্ত্রী ও গর্ভস্থ সন্তানকে উপেক্ষা করে দাশরথি সেদিন রাষ্ট্রতত্ত্বকে উচ্চে স্থান দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আর্য-রাষ্ট্রতত্ত্ব আসলে হৃদয়হীন পুরুষশাসনের আগ্রাসন ও বিবিধ উদ্দেশ্যসাধনের শস্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। চির দুঃখের পথে চলতে চলতে লব-কুশের জননী এই সত্যটি উপলব্ধি করে হয়ে উঠেছিলেন এক পরিবর্তিত, আত্মনির্ভর, স্বয়ম্প্রভ সীতা। কিন্তু কীভাবে ? কোন্‌ তপশ্চর্যায় ? তারই নিবিড় আলেখ্য মল্লিকা সেনগুপ্তের এই অভিনব উপন্যাস।

http://www.amazon.in/Sitayan-Mallika-...
http://banglaliveshopping.com/sitayan...
https://readbengalibooks.com/index.ph...
http://www.rubanshop.com/book/sitayan...

151 pages, Hardcover

Published November 1, 1996

5 people are currently reading
58 people want to read

About the author

Mallika Sengupta

17 books12 followers
মল্লিকা সেনগুপ্ত-র জন্ম ২৭ মার্চ ১৯৬০, কলকাতায়। পেশায় সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক। ডক্টরেট, গবেষণার বিষয় ছিল বাংলা উপন্যাসে বিবাহবিচ্ছিন্না নারীদের উপস্থাপনার সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ। ১৯৮৫তে অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন। মহারাণী কাশীশ্বরী কলেজে। কবিতা লেখার শুরু ১৯৮২ সাল থেকে তখন এম এ ক্লাসের ছাত্রী। কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন তিনটি উপন্যাস ও তিনটি নারীচেতনার প্রবন্ধগ্রন্থ। পেয়েছেন সুকান্ত পুরস্কার, কেন্দ্রীয় সরকারের জুনিয়র রাইটারস ফেলোশিপ, অনীতা-সুনীল বসু পুরস্কার, আলপনা আচার্য স্মৃতি পুরস্কার ইত্যাদি। কবিতাপাঠ ও আলোচনায় আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছেন সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, ইউ এস এ, চেক রিপাবলিক ও ঢাকায়। উইকিপিডিয়া, ইনডিয়া পোয়েট্রি ইনটারন্যাশনাল, দি আনসেভারড টাঙ, ইনডিয়া টুগেদার ইত্যাদি নানা ওয়েবসাইটে তাঁর কবিতা ও জীবনতথ্য পাওয়া যায়। ১৯৮৯ থেকে আমৃত্যু ‘ভাষানগর’-এর সম্পাদক, কবি সুবোধ সরকারের সঙ্গে। প্রয়াণ ২৮ মে ২০১১।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
11 (33%)
4 stars
12 (36%)
3 stars
6 (18%)
2 stars
3 (9%)
1 star
1 (3%)
Displaying 1 - 5 of 5 reviews
Profile Image for Tiyas.
442 reviews111 followers
August 1, 2023
কদাচিৎ কোনো বইয়ের সম্মুখীন হই, যা আমার পাঠক সত্বাকে ঠিক মধ্যিখানে চিড়ে, দুটি স্বতন্ত্র ভাগে বিভক্ত করে দেয়। এই বইটিতেও হয়তো তার অন্যথা হতো না, যদি আদিকবির অকৃত্তিম রামায়ণকে আমি ভালো না বাসতাম। আমার এই অনুরক্তি, কেবল ভক্তিভাব নয়। বরং মহাকাব্যের সমস্ত দোষ-গুণের সংমিশ্রণেই, এক প্রগাঢ় স্বীকৃতি। উপন্যাসটি মাত্র দেড়শ পৃষ্ঠার, তবুও পড়তে লেগে গেলো বেশ কিছু সময়। বিষয়বস্তর আপাত গূঢ়তা এবং মানবিক দ্বন্দ্বের খাতিরে বেশ কচ্ছপসম গতিতে পড়লাম বলা যায়। খারাপ লাগে। এমন বইতে, যেচে দু-আড়াই তারা ব্যয় করতে মন চায়না। মল্লিকা সেনগুপ্তের লেখা পড়ার সৌভাগ্য আমার পূর্বে হয়নি। লেখিকাকে আবিষ্কার করাতেই আমার 'সীতায়ন' পাঠের স্বার্থকতা। যেমন সংযমী গদ্য, তেমন অপূর্ব শব্দ-চয়ন। যেকোনো পৌরাণিক উপাখ্যানে এইতো কাম্য!

উপন্যাসের আঁধার হিসেবে লেখিকা বেছে নিয়েছেন রামায়ণের 'উত্তরকান্ড'-কে। সীতার অরণ্যে নির্বাসন, লব-কুশ জন্ম, রামের অশ্বমেধ যজ্ঞ, সীতার রহস্যময় অন্তর্ধান, মূল কাঠামো এই। বহুল বিতর্কিত এই অধ্যায়টির ঐতিহাসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক পণ্ডিতে। যার পক্ষে-বিপক্ষে তর্কের শেষ হবে না কোনোকালেই। প্রক্ষেপণের অভিযোগে জর্জরিত এই কাণ্ডের নির্বাচনেই লেখিকা স্পষ্ট করে দেন, এই উপন্যাস, আর যাই হোক, চিরাচরিত রামায়ণ-কাব্য নয়।

হালফিলের বাজারে, ইংরেজি বা বাংলায় ব্যাঙের ছাতার মতন অজস্র পৌরাণিক রিটেলিং বিক্রি হয়। চিরায়ত গল্পকথার আদৃত ছকে, লেখকের নিজস্ব মতবাদে আরোপিত হয়ে, রিয়ালিজমের ভনিতায় বিকিয়ে যায় সেসব। ওসবে আমার কোনোকালেই রুচি হয় না, সেটা আর আলাদে করে বলার নয়। '৯৬ সালে লেখা হওয়ায়, এই উপন্যাসটিকে এসবের সাথে একঘরে ফেলতে পারলাম না। তবে সাদৃশ্য বিস্তর। পার্থক্য একটাই, সে সময়, পৌরাণিক আবহে লেখাকে কেবলমাত্র বাজার-গরমের পন্থা হিসেবে দেখা হতো না। গৃহীত হতো, প্রকৃত সাহিত্য-চয়নের ভিন্ন এক মার্গ হিসেবে।

তবে এই কয় দশকের পার্থক্যে, বইয়ের মূল তর্কে ত্রুটি থেকে গেছে। লেখিকা "হেথায় আর্য, হেতা অনার্য" বক্তব্যেই নিশ্চল থেকে, লিখে গিয়েছেন একটা গোটা উপন্যাস। আজকের যুগে, এই ভীষণ অবসোলিট বহিরাক্রমণের থিওরির ভিত্তিতে কোনো উপন্যাস পড়ে আরাম পাওয়া মুশকিল। রামচন্দ্র ও রঘুবংশীদের সাদা-চামড়ার আর্য নিপীড়ক রূপে অবতীর্ণ করে, তাদের বিরুদ্ধে ভিড়িয়ে দিয়েছেন গোটা অসুর তথা অনার্যদের। তারা নির্যাতিত, কালো চামড়ার এক লুপ্তপ্রায় জাতি। অস্তিত্বরক্ষার লড়াইয়ের তারা রাবণের স্তুতি বাক্য করে, বিষোদগার করে রাম-লক্ষণ-বিভীষণদের প্রতি!

লেখিকা অবশ্য একবারের জন্যেও বাল্মীকির রামচন্দ্রের কৃষ্ণবর্ণের উল্লেখ করেন না। যেমন উল্লেখ করেন না, হনুমান বা বানরদের অবস্থানের কথা। পুরো উপন্যাসে বানরদের প্রসঙ্গ টেনেছেন এক কি দুইবার। কোথায় তারা? তারাও কি 'আর্য'? যেই বনজ, জঙ্গুলে প্রজাতিটির সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে প্রচণ্ড লড়াই করলেন রাম, উপন্যাসে তারাই হাপিস! জটিলতা এড়াতে, লেখিকার এই সাদা-কালো বিভাজনে তাদের জায়গা মেলেনি। মহর্ষি বিশ্রবার পুত্র হওয়া হেতু রাবণ কি নিজেও একজন তথাকথিত 'আর্য' হওয়ার দাবি রাখে না?

দুঃখের কথা, এসবের খাতিরে 'সীতায়ন'-এ অনেকাংশে সীতাকেই অন্তরালে রেখেছেন লেখিকা। পাতার পর পাতা, রাক্ষস উপজাতিদের গল্প বলতে গিয়ে, সীতাকেই উপেক্ষা করেছেন যেন। তবুও, যতটুকু লিখেছেন, সেখানে চরিত্র হিসেবে তার সীতা স্বতন্ত্র, তেজী এবং ভীষণ দৃঢ়। অনাদরে নির্বাসিত হয়ে যার কোমলতায় মরচে পড়ে। তবুও সে দুঃখিনী, তপোবনে অন্তরালে বিরহ বেদনায় মূর্ছিত হন বারংবার। কি সুন্দর বর্ণন! এখানেই উপন্যাসটির চরম সম্ভাবনার কথা ভাবলে আক্ষেপ হয়। বইয়ের শুরুতেই দায়িত্বের গুরুভারে আক্রান্ত বিমূঢ় লক্ষণ, বৈদেহীকে রাখতে আসেন বাল্মীকির আশ্রমে। সে এক করুন হৃদয়বিদারক দৃশ্য! মন ভারী হয় অচিরেই।

শ্রীরামের চরিত্রায়নে লেখিকা তুলেছেন নারীবাদের নিনাদ। তাতে কোনো ক্ষতি দেখিনা। খোদ বাল্মীকির সীতা নিজে যেভাবে অগ্নিপরীক্ষার পূর্বে স্বামীকে শ্লেষাত্মক আক্রমন করেছিলেন, তা অধুনা পৃথিবীর নিরিখে ফেমিনিসম-এর নিদর্শন না হয়ে যায় না। তবে খারাপ লাগে, যখন সূর্পনখার মতন খল-চরিত্রকেও লেখিকা দেখেন সহানুভূতির নজরে। তাও আবার লক্ষ্মণ চরিত্রকে অ্যাবিউসার প্রতিপন্ন করে! বোঝাই যায়, এই লেখাতে কোনো পুরুষকেই রেহাই দেননি তিনি, 'অনার্য' রাজন হলেও, রাবণের পরস্ত্রীকাতরতার উল্লেখে কোনো রাখঢাক করেননা তিনি। এই অ্যাপ্রোচ হয়তো বা একপক্ষীয়, তবুও উপন্যাসের অভিপ্রায়ে সৎ।

প্রশ্ন জাগে, উপন্যাসটির নাম তবে সীতায়ন কেন? এ জিনিস আর যাই হোক, সীতার পূর্ন যাত্রা তো নয়। এই ছোট কলেবরে, চরিত্রটি সেইভাবে বিকষিত হলো কই? সীতার স্মৃতিচারণে, উঠে আসে রামের সাথে কাটানো বনবাসের দিনস্মৃতি। ফিরে আসে, বন্দিনী অবস্থায় লঙ্কার রাক্ষসদের কাছ থেকে অনুধাবনের অনুভূতি। এখানে লেখিকা দুটো কার্য্য সাধন করেছেন। এক, ক্ষত্রিয়দোষে রামচন্দ্রকে রাঙিয়েছেন হিংস্র লোলুপতার রঙে। দুই, নির্দ্বিধায় জানিয়েছেন, রাক্ষসদের প্রতি প্রভূত সহানুভূতি। রামায়ণের মূলে আদতে যে রামেরই হিংসা, সেই দাবিই করেছেন বারংবার। তবে এই ছেঁড়াছেঁড়া স্মৃতিসমূহে স্থান পায় না, বৈদেহীর মেয়েবেলার গল্প। এড়িয়ে যান মিথিলার উল্লেখ বা তার বোনেদের কথাও। বরং সীতার মুখে অদম্য পুরুষতন্ত্র, কঠোর ব্রাহ্মণবাদ ও ঘৃণ্য চতুর্বর্ণ প্রথার সমালোচনা করিয়েই লেখিকা সন্তুষ্ট। রাম সেখানে কেবলই ব্রাহ্মণবাদ নিয়োগের খড়গ! একবিংশ শতাব্দীর আতশকাচে, ত্রেতা যুগের বিনির্মাণ আরকি। ধুস!

২.৫/৫
Profile Image for Soumyabrata Sarkar.
238 reviews39 followers
January 9, 2018
সীতায়ন। নাম থেকেই আন্দাজ করা যায়, এ সীতার কাহিনী। কিন্তু রামায়ণের সাথে তুলনা করলে, এই রচনা অনেকটাই সংকীর্ণ। যেখানে রামায়ণে আছে রামের জন্মের পূর্ব থেকে শেষ অব্দি ঘটিত কাহিনী, সেখানে এই সীতায়ানের আখ্যান সীতার বনবাসকালের জীবন ও স্মৃতিচারণ থেকে তাঁর অন্তর্ধান অব্দিই সীমিত। সময়কাল সংক্ষিপ্ত হলেও, লেখিকা অনেক গভীর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছেন পাঠককে। আর্য-অনার্য দ্বন্দ্ব, বর্ণাশ্রম, জাতিভেদ, ব্রাহ্মণ ঋষিদের দ্বারা নিজস্বার্থসিদ্ধির হেতু কৃত ব্যাভিচার, নানা রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চালের বেষ্টনে সমাজকে নিয়ন্ত্রিত করার সমাজব্যবস্থা, পুরুষ সমাজে নারী ও শূদ্রদের স্থান, রাজতান্ত্রিক রাজ্যে রাজা ও তাঁর প্রজা,পরিবার,পারিষদ, পুরোহিতের সাথে সম্পর্ক ও ব্যবহারে পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি।
রাম ও লক্ষ্মন ই শুধু নন, বরঞ্চ কম বেশি সব পুরুষ চরিত্রই এই কাহিনীতে হয় নারী-বিদ্বেষী নয় নারী কে হীন চোখে দেখতে অভস্ত্য। সীতার বাক্যবানে জর্জরিত বাল্মীকি, অগস্ত্য ও রাম তাই বারবারই সীতাকে ধমকে চুপ করতে, নয় লাজ-লজ্জার আড়ম্বরে বাক্য-নিয়ন্ত্রণ করতে বদ্ধ পরিকর। মহিলা মাত্রই তাঁকে নমনীয় ও তাঁর স্থান অন্তর্মহলে, এই অভিব্যক্তি সবার, সে ঋষি ই হোক কি রাজা কিংবা অরণ্যের অধিকারী। সেদিক থেকে অনেকটাই একতরফা লেগেছে এই বিবরণ।
অনেক ফাঁক ই থেকে গেছে সীতার দৃষ্টিতে ও কথায়, তাঁর কাহিনীর এই প্রচেষ্টায়। সীতার এত কিছু স্মৃতিচারণ এর মধ্যে নেই তার বাল্যকাল। নেই তার মা সুনয়না ও পিতা জনক। এমনকি যে সমসাময়িক কালে বর্ণিত হয়ে���ে এই কাহিনী, তখনও তাঁরা বর্তমান, কিন্তু অনুপস্থিত এই কাহিনীতে। একই কথা বলা যেতে পারে, সীতার বাকি বোনেদের ক্ষেত্রে। তাঁরা শুধু একটি পংতি তেই স্থান পেয়েছেন, শেষের দিকে। নেই সীতার শিক্ষা দীক্ষার কথা, যা তিনি পেয়েছেন মিথিলায়, বা নানা ঋষি মুনিদের আশ্রমে। যেহেতু বর্ণাশ্রম ও জাতিভেদ নিয়োগে হিরণ্যগর্ভর শিকলে একতরফা দৃষ্টিভঙ্গিতে রামকে দেখানো হয়েছে, তাই হয়তো উল্লেখ নেই শবরী, গুহ ও হনুমানের কথা, যারা উপরে বর্ণিত চরিত্রের মতোই তখনও জীবিত, অথচ রামের সখ্য ও বন্ধু। কৌশল্যা, কৈকেয়ী, সুমিত্রা, ভরত ও শত্রূঘ্ন এখানে শুধু কাগুজে চরিত্রই থেকে গেছেন।
কিন্তু এতো কিছু ফাঁক থাকা সত্ত্বেও, কাহিনীর ভাষা, ছন্দ ও স্বাদ পাঠকের মনকে নাড়া দিয়ে যায়। কাল্পনিক আখ্যানে শম্বুক ও তাঁর সাথীদের উপাখ্যানই সব চেয়ে সুন্দর লেগেছে। সীতার সাথে পাঠক ও প্রশ্নের পর প্রশ্নে বিদ্ধ করতে চাইবেন সমাজে ছড়িয়ে থাকা অন্যায়কে। প্রজাহিতাকাংক্ষী রামচন্দ্র কতটা সফল রাজা, স্বামী এবং পিতা হিসেবে, সর্বোপরি একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে তিনি কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে আসে পাঠকের মনে। লেখনীর স্বাচ্ছন্দ্যে এই রচনা সুখপাঠ্য।
তবে সীতার আঙ্গিকে রামায়ণ এর চেয়ে ভালো পেয়েছি দেবদত্ত পত্তনায়কের রচিত ইংরেজি লেখায় : Sita ও ভোলগা রচিত তেলেগু থেকে অনুবাদিত ইংরেজি রচনা : The Liberation of Sita বইয়ে।
Profile Image for Klinton Saha.
353 reviews5 followers
December 26, 2024
সীতা হওয়া সহজ নয়;
সীতা হতে হলে শত লাঞ্ছনা-বঞ্চনা সহ্য করতে হয়, স্বামীর প্রেয়সী হওয়া সত্ত্বেও স্বামীর দায়িত্ব ও প্রজাদের মনোরঞ্জনের জন্য নির্বাসিত হতে হয়, প্রসবকালে কাছের মানুষের সান্নিধ্য বঞ্চিত হতে হয়, একাকী সন্তান বড়ো করতে হয়, সন্তান পিতৃপরিচয় জানতে চাইলে মুখ বুজে অশ্রুপাত করতে হয়, অনার্য ধ্বংসে স্বামী মেতে উঠলে স্বামীকে নিবৃত্ত করা যাবে না কেননা অন্তঃপুরবাসিনীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়, প্রতীক্ষা শেষে স্বামীগৃহে প্রবেশ করতে হলে দিতে হবে পুনরায় সতী-সাবিত্রী হওয়ার পরীক্ষা। এতকিছুর পরেও যখন কারো হৃদয় জায়গা পাওয়া না যায় তখন প্রবেশ করতে হবে পাতালের গহীনে।
তাই সীতা হওয়া সহজ নয়,সবাই সীতা হতে পারে না।

বাল্মীকির আশ্রমে সীতার বনবাস,লব-কুশের জন্ম, আর্য-অনার্য সংঘাত,শম্বুক হত্যা, অশ্বমেদ যজ্ঞ ও সীতার পাতাল প্রবেশ - এই হলো বইয়ের আলোচ্য বিষয়।লেখক যেহেতু নারী তাই বইটি সমাজে নারীদের অবস্থান ও দৃষ্টিকোণ থেকে লিখেছেন।
1 review
November 30, 2019
আচ্ছা,কখনো ভেবে দেখেছেন রামায়ন যদি আর্যসন্তান বাল্মীকি না লিখে কোনো অনার্য লিখতেন ! তখনও কি তা বীরগাথাই থাকতো , নাকি বৈদেশিক কোনো প্রবল পরাক্রান্তের দ্বারা নিজের সংস্কৃতি ও মানুষদের হারানোর হাহাকার মিশে থাকতো তাতে । এমনকি যদি শ্রীরামপত্নী জানকীর জবানবন্দিতেও রামায়ন রচিত হতো তাহলেও হয়তো উঠে আসতো রামের জীবনের এক মিস্টার হাইড । এই বইটি সেরকমই একটি প্রচেষ্টা। একাধারে অগ্নিপরীক্ষার পর ও বনবাসের যন্ত্রণা , লবকুশের দ্বায়িত্বপালন সম্বন্ধে রামের আশ্চর্যরকম নিঃস্পৃহতা ও একাকি মাতৃত্বের মধ্যে দিয়ে জানকীর চারিত্রিক কাঠিন্যের বিকাশ এবং অপরদিকে অনার্যদের রামের হাতে স্বজন হারানোর হাহাকার ও তারপরে কতক বাধ্য হয়েই আর্যায়নের মাধ্যমে বর্ণাশ্রমের সবচেয়ে নিচু পদে সামিল হওয়ার এক ব্যাতিক্রমি গল্প তুলে ধরেছে এই বইটি ।
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books356 followers
April 9, 2021
রামায়ণের সীতাকে তুলে আনা সম্ভব ছিল, সেখানে আর্য অনার্য তত্ত্ব আর 'নারী সর্বদা নির্যাতিতা' ট্যাগলাইন এসে যাওয়ায় শেষ অবদি আসলে একটা উপন্যাস দাঁড়াইল কিন্তু 'সীতায়ন' হয় নাই।
Displaying 1 - 5 of 5 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.