মনোজদের বাড়িতে অনেক লোকজন, আর তাদের প্রত্যেকেরই নানা বাতিক। এই বাড়িতে একটা ছেলের ফটোগ্রাফ আছে, অবশ্য সেটা কার বা কোথা থেকে এলো কেউ তা জানে না। ছবিটা মনোজ প্রায়ই বের করে দেখে। কিন্তু একটা সময় এই ছবিকে ঘিরেই গল্প জমে ওঠে।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক।
তিনি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ময়মনসিংহে (বর্তমানে বাংলাদেশের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন—যেখানে তাঁর জীবনের প্রথম এগারো বছর কাটে। ভারত বিভাজনের সময় তাঁর পরিবার কলকাতা চলে আসে। এই সময় রেলওয়েতে চাকুরিরত পিতার সঙ্গে তিনি অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শীর্ষেন্দু একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ও দেশ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত।
তাঁর প্রথম গল্প জলতরঙ্গ শিরোনামে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরে সেই একই পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে তাঁর প্রথম উপন্যাস ঘুণ পোকা প্রকাশিত হয়। ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম উপন্যাসের নাম মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
আহা! কি নেই এ বাড়িতে!! ভজুবাবুর মতো বাজারু - যে বাজারে গেলেই জিনিসপত্রের দাম অর্ধেক কমে যায়! ভজুবাবু কিন্তুক মেঝোকাকা। ছোটো কাকা হলো - হারাধন। সে হলো একাধারে পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, ব্যায়ামবীর্। কতো কিছুই না তিনি আবিস্কার করেছেন!! টস্তল! চাগম! লামড়ো!! এর মধ্যে টস্তল হইলো টর্চ পিস্তল! চাগম আর লামড়ো মানে কি কন তো??
আরোও আছে গোরিমান!গোরিলা হনুমান! সব হারাধন তথা ছোটোকাকুর আবিস্কার। আরও আছেন - বরদাচারন। সে হলো গিয়ে গোয়েন্দা। গলায় বাইনোকুলার আর কোমড়ে পিস্তল নিয়ে সর্বদা খোজাখুজিতে ব্যস্ত। তিনি কখনো সদর দরজা দিয়ে ঢুকেন না।পাচিল টপকে ঢুকেন। সদর দরজা দিয়ে যে গোয়েন্দা ঢুকে - সে গোয়েন্দা নামের কলংক। সবচেয়ে ভালো গোয়েন্দা হলো - যে সিধ কেটে ঢুকে।বরদাচরনও সিধ কেটে ঢুকেন - তবে সেটা মাঝে মাঝে।অধিকাংশ সময় দেয়াল টপকে। আরও আছেন কিরমিরিয়া - যিনি কিছু হলেই বিলাপ করতে বসেন!একবার খুকুর খাতা হারালো - আর কিরমিরিয়া বসলেন বিলাপ করতে!! খুকুর খাতা হারালো রে!! এখন আমার খুকুর কি হবে রে!খুকুকে যে মাস্টারমশাই বকে দিবে রে!আমার খুকুর কি হবে এখন রে! আরও আরও মজার মজার সব চরিত্রেরা এই বাড়িতে থাকেন।
তবে ঘটনার সূত্রপাত একটা ছবিকে নিয়ে। ছবিটা এ বাসায় আছে বহুদিন থেকে। কিন্তু ছবিটা এ বাসার কারও না। কেউ কোনোদিন দেখেও নাই এই ছবির ছেলেটাকে।ছেলেটা যে বাড়ির সিড়িতে বসে আছে - সেই বাড়িটাও কেউ কখনো দেখে নাই। তাহলে কোথা হতে এলো এই ছবিটা - এ বাড়ির ছবির এলবামে?? বিশাল রহস্য না??
অতি সত্বর পড়ে ফেলুন। অনাবিল মজার পাশাপাশি কখন যে বইটা শেষ হয়ে যাবে টের টিও পাবেন না।
খুবই মজার একটা বই। এতটা জোর দিয়ে বলার কারণ হলো, প্রতি পৃষ্ঠাতে হাসার মতো কিছু ছিলো। কিছু হাসির বই থাকে যেগুলো শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনাকে আনন্দে, হাসিতে মুখরিত করে রাখবে, এটি ঠিক তেমন একটা বই।। বইটিতে যা যা ঘটছিলো এবং চরিত্রগুলো যা বলছিলো তা বেশ অদ্ভুত কিন্তু প্রচন্ড হাস্যকর ((বইটি পড়তে পড়তে আপনিও হয়তো বলবেন "what the hell going on here" 😂😂))
আমি বইটা আজ সকালে শেষ করলাম। তবে কিছু কিছু অংশ মনে পড়লে এখনো হাসি পাচ্ছে 😂😂 এটা আসলেই এমন একটা বই যে, যেটার কোন অংশ যেকোনো সময়ে মনে পড়ে হাসি আসবে খুব করে। আর, যদি কখনো ভারী বই পড়তে পড়তে বোর হোন তাহলেও এই বইটি রিলিফনেসের ওষুধ হিসেবে কাজে দিবে। আর বুঝতেই পারছেন শীর্ষেন্দু বাবুর রসবোধ এবং হিউমার কতটা মারাত্মক। তাছাড়া লেখাও বেশ ভালো উনার
বইটির প্রতিটা চরিত্র আপনাকে বেশ মজা দিবে। কিছু চরিত্র মনে জায়গা করে নিয়েছে। যেমনঃ গানের মাস্টার গণেশ(😂), নিয়মিত ঘরের বাজারে করা ভজহরি, কিছু মনে আসে করে করেও মনে না আসা শ্রুতিবাবু, নিজস্ব ল্যাবে অদ্ভুত জিনিস তৈরী করা এবং হিংস্র পশু পালন করা হারাধন, ডিটেকটিভ বরদাচরণ ইত্যাদি ইত্যাদি।। (বিঃদ্রঃ বইটির শুরুতে দেখলাম চরিত্র বেশি তাই টুকিয়ে রেখেছিলাম, কারণ অনেকসময় চরিত্র চরিত্র বেশি হলে ভুলে যাই)
বইটি হয়তো অনেকে পড়েছেন। তবে না পড়ে থাকলে পড়ে ফেলুন এবং হাসতে থাকুন 🌻
দারুণ মজাদার একটা বই। মনোজদের বাড়ির সব চরিত্র ও এদের অদ্ভুত কর্মকাণ্ড নিয়েই গল্প। শুরু থেকেই বেশ মজার। মনোজের মেজ কাকা, বাবা, ছোট কাকা, ঠাকুমা সবার কীর্তিকলাপ-ই আজব। সেইসাথে ওদের গৃহ শিক্ষক ও গানের শিক্ষকেরও। অবশ্য সবথেকে মজা পেয়েছি মেজ কাকার কর্মকাণ্ডে। দুর্ঘটনাবশত পিস্তল পেয়ে বেড়াল থেকে বাঘ হয়ে উঠেছিল যে। শীর্ষেন্দুর লেখায় জাদু আছে। যেমন সংলাপ তেমন বর্ণনাভঙ্গি। অগুনতি বার জোরে করে হেসে উঠেছি। এই অস্থির, বিষণ্ন সময়ে বনলতা সেনের মত দুদন্ড স্বস্তি দিয়েছে বইটা।
আজই মাত্র সবাইকে বলে বেড়াচ্ছিলাম, এখন আর কিছু পড়েই হাসি আসেনা। ওমা এই বই পড়ার পর হাসি যেন থামতেই চায়না।😂 প্রতিটা পেইজে আমি যেন হাসির উপাদান পাচ্ছিলাম। মন খারাপ থাকুক আর ভালো থাকুক, সবাইকে এই বই পড়ার অনুরোধ আমি করবোই,কিন্তু আমি জানি অনেকেই এই বই পড়ে ফেলেছেন। তবুও এরকম বই বারবার পড়া যায়,তাইনা? পাঠকের রাত ৩টায় এরকম অট্টহাসি দেখে তার বাবা ঘোষণা দিয়েছেন,কাল রাত ১০টা থেকে যেন মোবাইল,বই জমা দিয়ে যেন বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হয়☹️ এই বয়সে যদি সামান্য হাসির কারণে আব্বুর কাছে বকুনি খেতে হয়,তাহলে কেম্নে কি! মনোজদের মতো না হলেও,লিলিদের বাড়িটিও মাত্র ৫জন মানুষ নিয়ে বড়ই অদ্ভুত রকমের। সুখে থাকুক সবার পরিবার এই আশা নিয়ে আজকের মতো এখানেই রাত্রিকালীন বই পড়ার সমাপ্তি। যাক অনেকদিন পর যেন মন খুলে হাসলাম বইটা পড়তে গিয়ে। আগে পড়া থাকলেও আবারো পড়ুন, আর হাসুন বেশি করে। না পড়া থাকলেও দ্রুত পড়ে ফেলুন। 💜
অদ্ভুতুড়ে সিরিজের প্রথম বই "মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি" আমার খুব ভালো লেগেছে। যদিও এটা কিশোর সাহিত্য কিন্তু, সব বয়সী পাঠক পড়তে পারবেন। গল্পটা অনেক মজার! হিউমার গুলায় না হেসে পারা যায় না! কিন্তু গল্পের নামটা "মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি" না হয়ে "মনোজদের বাড়ির অদ্ভুত লোকজন" হলে ভালো হত, কারন এই বাড়ি এবং গ্রামের প্রতিটি চরিত্র বিচিত্র এবং মজার।
আদ্যাশক্তিদেবী বুক সমান গোবরের গর্তের মধ্যে পোঁতা। ঘন গোবরের টালের ভিতর থেকে নিজে-নিজে বেরিয়ে আসবেন সে সাধ্য নেই। ঘন মধুর মধ্যে পড়লে মাছি যেমন আটকে যায়, তাঁর অনেকটা সেই দশা। অনেকক্ষণ চেঁচামেচি করায় গলা বসে গেছে, বাক্য বেরোচ্ছে না। তিনি দুহাত বাড়িয়ে সবাইকে বলতে চাইছেন, "ওরে তোরা আমাকে টেনে তোল।" কিন্তু সে-কথায় কেউ কান দিচ্ছে না। দুঃখবাবু আর গণেশবাবু এসে গোয়ালঘরে ঢুকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছেন। গণেশবাবুর চাদরের তলায় গরুর দড়িটা লুকোনো আছে,কিন্তু সেটা বের করতে সাহস হচ্ছে না। মনোজ দুঃখবাবুকে জিজ্ঞেস করল, "মাস্টারমশাই গোবরের ইংরিজি কী?" "কাউডাংগ।" "আর পিসিমা হল আন্ট,না?" "হ্যাঁ।" "তা হলে গোবরে পিসিমা কেন, এর ইংরিজি হবে হোয়াই আন্ট ইজ ইন কাউডাংগ, না মাস্টারমশাই?" "হুঁ।" "ল্যাজে গোবরের ইংরিজি কী হবে মাস্টারমশাই?" [...] দুঃখবাবু দুঃখের সঙ্গে মাথা চুলকালেন।বললেন, "টেইল ইন কাউডাংগ। অ্যান্ড কাউডাংগ ইন টেইল।"
'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি' আসলেই অদ্ভুত। বাড়ি ভর্তি নানা বয়সী মানুষ এবং তাদের অদ্ভুত সব কাণ্ডকারখানায় সজোরে না হেসে থাকা দায়। এই যেমন- গানের মাস্টার 'গণেশ' গলায় দড়ি দেবে বলে গোয়ালের তেজী গরু 'হারিকেন' এর গলায় দড়ি খুলে আনে,হারিকেন ছাড়া পেয়ে খেলার মাঠে গিয়ে দর্শকদের ঢুঁস মারে, ওদিকে চোখে ছানী পড়া মালি 'রামু' হারিকেন ভেবে পালোয়ান 'হরশঙ্কর' গোয়ালার মোষ এনে গোয়ালে বাঁধে এমন অজস্র ঘটনায় বইখানা পরিপূর্ণ।
এক কথায় বই এর প্রায় সবগুলো চরিত্রকে এক আধটু পাগল মনে করে তাদেরকে নিয়ে আপনি এত জোরে বারবার হেসে উঠবেন, যাতে আপনার আশেপাশে মানুষ থাকলে এইভাবে হাসতে দেখে আপনাকেও আধপাগল হয়ে গেছেন ভেবে বসতেও পারে। 🤣
আমি প্রথম বইটা পড়েছিলাম যখন স্কুলে পড়ি।আমার পড়া শীর্ষেন্দুর প্রথম উপন্যাস ছিল 'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি'।
এ বইটা বেশ ক'বার পড়েছি,আজ অনেক বছর পরে আবার পড়ে একটা ব্যাপার খুব ভালো লাগলো। মনের দিক থেকে বুড়িয়ে গেলেও বইটা ঠিক আগের মতো এখনো হাসায়। ❣️
মোটা দাগে বড় ছোট সকলের জন্য খুবই ইঞ্জয়েবল! মাস্ট রিকমেন্ডেড। এত দারুন শিশু কিশোর বই লাস্ট কবে পড়েছি তা মনে করার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে খুব একটা লাভ হবে না মনে হয়৷
মনোজদের বাড়িটা আক্ষরিক অর্থে আসলেই অদ্ভুত। শুধু এই বাড়ির না, এই বইয়ের প্রতিটা চরিত্র অদ্ভুত! বিগত ১ মাসে বই তেমন পড়া হয়নি বললেই চলে। (এই এইটেই শুনলুম ম্যালাদিন সময় করে, মির্চির পরিবেশনায়) বইটা শুনে যা বুঝলাম তা হচ্ছে- যদিও শিশু কিশোরদের জন্য লেখা তবে এই বয়সে এসেও হাসাহাসি করার অনেক ইলিমেন্ট আছে (ভরপুর বলা চলে) যদি হালকা মাথায় পড়া যায়; ব্যক্তিগত অভিমত এটা কেননা বইখানা পড়ে আমার হাসি পায়নি, হাসি না পেলেও এই ব্যস্ত সময়ে আমাকে হালকা করে ফুঁ দিয়ে গেছে। কাজেই তিনটি তারা। তবে এটাও বুঝেছি আরামের সময়ে বেশ হাসির খোরাক জোগাবে এই বই।
আসলে এই বই যে পড়বো তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। এই বই পড়ার প্রতি আগ্রহ পেয়েছি হারুন ভাইয়ের এই সিরিজ পড়া দেখে :D এবং আমিও সিরিজটা সময় করে চালিয়ে যাবো ভাবছি!
ওহো!! ভজুবাবুর ডাকাতদলের গান (মির্চির পরিবেশনা) আমার কাছে চমৎকার লেগেছে :D
একটা আফসোস হচ্ছে, অদ্ভুতুড়ে সিরিজের সাথে যদি কিশোর বয়সে পরিচয় হতো, তাহলে কত আনন্দ নিয়ে পড়তে পারতাম! যারা টিনএজার বা যাদের মনের বয়স এখনো টিনএজে পড়ে আছে, তারা খুব করে হাসবে বইটা পড়ে। আর যারা বড় হয়ে গম্ভীর হয়ে গেছেন, কিশোরদের বই পারতপক্ষে এড়িয়ে চলেন, তাদেরও ভালো লেগে যেতে পারে বইটা। হাইস্কুল পড়ুয়া কিশোরদের উপহার দেওয়ার জন্য পারফেক্ট এই সিরিজের বইগুলো।
আমার রেটিং চার তারা। কিশোর বয়সে পড়লে চোখবুঁজে পাঁচতারা দিতাম।
নচ্ছার এক কাক দিয়ে হল দিনটির সূত্রপাত, রোদে দেয়া ডালের বড়ি ঘেঁটে দিয়ে সে কী তার ভাব-ডাঁট! ঠাকুমা গেলেন বেজায় চটে,"ঠোকর ও মারে?!এ কী বলিহারি!" পুরুতমশাইকে ব্যাপার স্যাপার জানালেন তাড়াতাড়ি। "কাকরূপী আত্মা" কইলেন পুরুত শ্রদ্ধাভরে,"সংস্কৃত ও বলে,নিশ্চয় বড় জাত! " "নমো নমো" বলে জলদি ঠাকুমা মাথায় ঠেকালেন হাত। খেলেন পিসীমা গোবরে আছাড়,শুরু হল ওদিকে শোর সুযোগ বুঝে গরু "হারিকেন" দিল এক ভো দৌড়। বদমাশ গরু- হারিকেনকে দিয়ে দুপুরের সূত্রপাত, সেঞ্চুরি মনোজ করেই ফেলবে,তখুনি সব চোপাট! স্কুলমাঠে হারিকেনের তাড়া খেয়ে সব দিল পড়িমরি দৌড় স্কুল-ক্রিকেট সব ভেস্তে গেলেও বরদাচরণের ছিল নজর। গোয়েন্দা সে,ভাল গোয়েন্দা গরুকে করবে কুপোকাত, সকালে হারানো পিস্তলের খাপে আনমনে দিল হাত। হারানো সেই পিস্তল দিয়ে রাতের সূত্রপাত, মেজকাকার হাতে পিস্তলটি এল এবার করবেন-ই বাজিমাত। লিস্টি তে তার বহু মানুষ যাদের দিতে হবে বেশ ঢিট, ডাকাত দলের হাতে পড়ে তিনি প্রথমেই খেলেন ফিট। ডাকাত দল আজ বড় দাঁও মারবে গন্তব্য রাজার বাড়ি হারানো এক ছবি নিয়ে সেথা কুরুক্ষেত্র হল ভারি। ঘটন-অঘটন ঘটাচ্ছে সব চরিত্র সারি সারি, এদের নিয়েই ঠায় দাঁড়িয়ে "মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি"।
বইটা নিয়ে কোনো কথাই উঠবে না! বাংলায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিশু-কিশোর সাহিত্যের তালিকায় এটি খুব, খুউব উঁচুতে থাকবে। তবে আমার দুঃখ হয় এই নতুন সংস্করণে সুধীর মৈত্রের প্রচ্ছদটা না থাকার জন্য। ওটা ক্লাসিক ছিল। পুরো বইটাই লা-জবাব। ইনফ্যাক্ট, বইয়ের তুলনায় ওই সিনেমাটা এতই "তাতিরাতাচি গামা হন্ডুরাস" টাইপের ভুলভাল ছিল যে ওটাই আরও বেশি করে বুঝিয়ে দেয়, অদ্ভুতুড়ে সিরিজের শুরুতেই শীর্ষেন্দু কী একখানা স্ট্যান্ডার্ড সেট করে ফেলেছিলেন! এখনও পড়েননি বইটা! বলেন কী? এক্ষুনি পড়ুন!
বইটির নির্দিষ্ট কোনো প্লট নেই কিন্তু বইটি ইউনিক সব চরিত্রে ভরপুর। প্রতিটি চরিত্রের মধ্যেই এমন কিছু আছে যা অন্য চরিত্রগুলোকে ছাপিয়ে যেতে চায়, মনে হচ্ছিল যেন প্রতিটি চরিত্রই প্রতিযোগিতায় নেমেছে নিজেকে সেরা প্রমাণ করার জন্য।
আমি এই বইয়ের কোনো ঘটনা বলে বইটির উপভোগ্যতা কমাতে চাই না। শুধু এটুকুই বলি, এখনও যদি বইটি না পড়ে থাকেন তবে এখনই পড়া শুরু করে দেন। পড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত, মনে হয়না আপনি বইটি রাখতে পারবেন বলে, আমি তো পারিনি আর আপনি?
আনন্দমেলার সম্পাদকের অনুরোধে রাশভারী লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় লিখে ফেললেন তাঁর প্রথম শিশুতোষ গল্প।এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে “মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি” এর সৃষ্টি। গল্প শুরু হয় মনোজদের বাড়িতে এক অচেনা ছেলের ফটো থেকে।কেই বা এই ছেলে আর তার ফটো এ বাড়িতে কিভাবেই বা এলো! জানতে চাইলে পড়তে হবে। গল্পের রেশে আমাদের সাথে পরিচয় হয় মনোজের পরিবারের ঠাকুমা,বিধবা তেজস্বিনী ঠাকুরঝি,রাখোবাবু,বিজ্ঞানী হারাধন কাকা,বাজারের ত্রাস ভজবাবু,পুরুতমশাই সতীশ,মাস্টার দুঃখহরণবাবু,গানের মাস্টার গনেষ ঘোষাল,ডিটেকটিভ বরদাচরণ সহ আরো অনেকের।তাদের অদ্ভুত কর্মকান্ড আর হাস্যকর লেখনীর জাদুতে বুড়ো ���েকে ছুড়ো সবাই এ গল্পের প্রেমে পড়বেই পড়বে। একটু মন খুলে হাসতে চান?পড়ে ফেলুন “মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি”।আর সাথে দেখে ফেলতে পারেন ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই বইয়ের ফিল্ম অ্যাডাপশন। হাসতে থাকুন,ভালো থাকুন।
অনেকদিন পর কোন বই পড়ে প্রাণখুলে হাসলাম।উপন্যাসের নামের প্রতি প্রতিটি চরিত্র সুবিচার করেছে,অদ্ভুত বাড়িই বটে।জোর করে হাসানোর কোন প্রচেষ্টা নেই।হাস্যরসাত্মক সংলাপ আর অদ্ভুত কর্মকাণ্ডে ভরপুর উপন্যাসটি এককথায় অসাধারণ!
অদ্ভুত বাড়ির অদ্ভুত সব ক্যারেক্টার। 'অদ্ভুত সুন্দর' এই বই পড়েছিও অদ্ভুত এক জায়গায়। হাসপাতালের করিডোরে শরীর-নাকে ফিনাইলের অদ্ভুত গন্ধ মেখে খিলখিল করে হেসেছি। অদ্ভুত সব মানুষ তাকায়ে ছিলোও খুব অদ্ভুত ভাবে। হাসতেও পারব না নাকি? আশ্চর্য!!
মনোজদের বাড়িটা আসলেই অদ্ভুত ।এখানে এ বিজ্ঞানী তো ও আবার বন্দুক হাঁকিয়ে যাচ্ছে ডাকাতি করতে- একজন যাচ্ছে মারামারি করতে তো বাচ্চারা আছে নিজেদের খেয়ালে । পুরাই হ-য-ব-র-ল অবস্থা ! অবশ্য লেখক যদি এভাবে না লিখে আরো খানিকটাও গুছিয়ে লিখতেন, তবে আবার লেখনশৈলীতে সেটা প্রভাব ফেলত ।এটাই সুন্দর, সাবলীল ।যেকোন ধরনের লেখাই শীর্ষেন্দুর হাতে প্রাণ পেয়ে যায় । এরকম হাস্যরসাত্মক জিনিসটা কারো ভালো না লেগে যায় না ।
পড়তে অনেক দেরি করে ফেলেছি, আরো আগে পড়া উচিত ছিল। শুরুর দিকের হাস্যরসগুলো খুব ভালো লেগেছে। গল্প বলতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। অনেকটা ফ্যামিলি ড্রামার মতো। রাজ্যের অযৌক্তিক আর নাটকীয় সব জিনিসে ভরপুর। ছোটদের উপযোগী।
এরকম বই অনেকদিন পড়ে পড়লাম, যদিও মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি দ্বিতীয়বার পড়ছি। প্রথমবার পড়েছিলাম অনেক আগে, ক্লাস ফাইভে থাকতে সম্ভবত, গল্পের সবকিছুই ভুলে গিয়েছিলাম প্রায়। বাংলা কিশোরসাহিত্যে শীর্ষেন্দুর অদ্ভুতুরে সিরিজের বইগুলো অনন্য, আরেকটু বাড়িয়ে বলতে পারি, এগুলোর জুড়ি মেলা ভার। তার লেখার ধরণ, সেন্স অফ হিউমার অন্য পর্যায়ের। প্রতিটা পৃষ্ঠাতেই হাসার মতো কিছু না কিছু রয়েছে। ভজহরি, হারাধন, দুঃখুবাবু চরিত্রগুলো আগেও খুব ভালো লেগেছিল, এবার তার মাত্রা আরেকটু বাড়ল। বইয়ে চরিত্রের সংখ্যা নেহাৎ কম না, তাই কিছু চরিত্রের কথা ভুলে গেছি। প্রাণ খুলে হাসার মতো একটা বই।
গল্প শুরু হয়েছিল একটা ছবি থেকে। সেই ছবি পাওয়া যায় মনোজদের ছবির এ্যালবামে। কিন্তু সেই ছবি কার, তা কেউ জানে না। ছবিটা একটা বাচ্চা ছেলের। এটা নিয়েই মূলত ছোটখাট একটা রহস্য। তবে এটাকে রহস্য গল্প মনে হয়নি, আমার বিশ্বাশ লেখকও এটাকে রহস্য উপন্যাস হিসেবে লেখেন নি, তার চেয়ে বরং এই গ্যারান্টি দিতে পারি, বইটার প্রথম্ থেকে শেষ পৃষ্ঠা আপনাকে আনন্দ দেবে, প্রাণখুলে হাসতে বাধ্য করবে।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের এই বিখ্যাত কিশোর উপন্যাসটির মধ্যে আলাদা করে বলতে হয় হাস্যরসের কথা। এর কাহিনিটি স্থির নয়। বরং বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে একত্র করে লেখা। যদিও শেষে গিয়ে একটি সমাধান পাওয়া যায়। এখানে, লেখক কোনো নির্দিষ্ট চরিত্রকে প্রধান করেননি, আছে অনেকগুলো ছোট ছোট চরিত্র।
এলাকার লোকজন বোধহয় আমাকে মেনে নেবে না। কিন্তু গল্পটা কেমন যেন অগোছালো লেগেছে। প্রচুর ইলিমেন্ট আছে, কিন্তু এদের মধ্যে ঠিক কোহেরেন্স( মানে ওইটের বাংলা হয়ত সাযুজ্য) কম।হাসিগুলির মাঝে একটা স্পেস থাকা উচিত ছিল, মাঝে ২-১ টা সিরিয়াস কিসিমের জিনিস না থাকলে হাসতে আর কত পারা যায়! আর বয়সটাও বোধহয় বেড়ে গেছে আমার। 😭😭
তবে বইটা মজার। হাসিনি একেবারে তা নয়, বিশেষ করে হারিকেনের অংশটুকুতে।কিন্তু সবাই যেভাবে উচ্চস্কেলে( স্কেল আবার কি? বইয়েরও কি স্কেল থাকে?) প্রশংসা করেছে, তাতে আমি সানডে সাসপেন্সে শুনে একটু হতাশই হয়েছি। মানে আলাদা আলাদাভাবে এর প্রতিটা ঘটনাই হয়ত হাসাতে পারে খুব, কিন্তু সব একসাথে হয়ে আমার জন্য কেমন যেন ওভারডোজ হয়ে গেছে।
কিছু কিছু বই পড়লে মনে হয় ইসস এই কালে কেন জন্মালাম আগের দিন কত ভালো ছিল। কত সহজ সরল ছিল জীবন যাপন। তখনকার দিনে সব কিছুই সাদাসিধে ছিল। পুলিশের ঘুস খাওয়া, ডাকাতের ডাকাতি সবকিছুতেই কত সারল্য।
অনেকদিন পর মন খুলে হাসলাম এরকম সারল্যতা দেখে। এ হাসি একদম ভিতর থেকে হাসছে। একদম আগেরকার দিনের মত। কোনো ভেজাল নাই।
কাকের হাতে নাকানিচুবানি, হারিকেন নামের গরু, বাজার করতে পাকা ভজুবাবু, ব্যায়ামবীর সায়েন্টিস্ট, অদ্ভুত মাস্টার, আছাড় খেতে পটু ঠাকুরঝি, কিপটে রাজা, ডাকাত আর একটুখানি অ্যাডভেনচার। খুবই বিচিত্র কিছু চরিত্র কিন্তু হাস্যরসে ভরপুর। আসলেই মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি, আর অদ্ভূতুরে সিরিজ। নামকরণ পুরোপুরি সার্থক।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বই এর আগে কখনো পড়া হয় নি।এটাই প্রথম বই।পড়ার সময় এই বইটা কেমন লাগবে তা নিয়ে সন্দেহ ছিলো।তাই এতদিন পরে বইটা পড়লাম।
এখন আসি বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে।'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি' নামটা শুনেই অনেক কিছু আন্দাজ করা যায়।তো মনোজদের বাড়ির সদস্যদের উদ্ভট সব কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে বইটাতে।এর মধ্যে আবার এসে পড়ে গোয়েন্দা বরদাচরণবাবু।উনি নামে গোয়েন্দা হলে কি হবে উনার সব আচরণও বিদ্ঘুটে।এরকম বিভিন্ন চরিত্রের বিচিত্র সব ঘটনার উপর ভিত্তি করেই বইটার কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে।
নিঃসন্দেহে বইটা পড়ে ছোটরা অনেক মজা পাবে।তবে আমি যে মজা পাইনি তা কিন্তু নয়।আমারও বইটা ভালো লেগেছে এবং আমিও ভালোই হেসেছি। তবে আরো আগে পড়লে বোধহয় ভালো লাগার মাত্রাটা আরো বেশি হতো।
প্রথম কোন কিশোর উপন্যাস পড়লাম। বেশ ভালো লাগলো। হাসির উদ্রেক সৃষ্টি করে এমন রসদ ছিলো ঢের। ভজহরি বাবুর কান্ডকারখানা বেশ আনন্দ বহন করেছে। কিরমিরিয়া চরিত্রটাও বেশ হাসিয়েছে।