Jump to ratings and reviews
Rate this book

চাচা কাহিনী

Rate this book
‘চাচা কাহিনী সৈয়দ মুজতবা আলীর বিখ্যাত গল্পগ্রন্থগুলাের প্রধানতম। প্রায় প্রতিটি গল্পই বিদেশের পটভূমিকায়, বিশেষ করে বার্লিন প্রবাসী বাঙালি তরুণ ছাত্র- যাদের মধ্যে তিনি নিজেও একজন তাদের নিয়েই রচিত। চাচা কাহিনী’র মতাে এমন বিশুদ্ধ উপাদেয় আন্তর্জাতিক রসের পরিবেশন বাংলা ভাষায় আগে কখনাে দেখা যায়নি বললেও অত্যুক্তি হবে না।

121 pages, Hardcover

First published January 1, 1952

68 people are currently reading
1320 people want to read

About the author

Syed Mujtaba Ali

82 books447 followers
Syed Mujtaba Ali (Bengali: সৈয়দ মুজতবা আলী) was a Bengali author, academician, scholar and linguist.

Syed Mujtaba Ali was born in Karimganj district (in present-day Assam, India). In 1919, he was inspired by Rabindranath Tagore and started writing to the poet. In 1921, Mujtaba joined the Indian freedom struggle and left his school in Sylhet. He went to Visva-Bharati University in Santiniketan and graduated in 1926. He was among the first graduates of the university. Later, he moved to Kabul to work in the education department (1927–1929). From 1929 to 1932 he studied at the universities in Berlin, London, Paris and Bonn. He earned Ph.D. degree from University of Bonn with a dissertation on comparative religious studies in Khojas in 1932.
In 1934-1935 he studied at the Al-Azhar University in Cairo. Subsequently, he taught at colleges in Baroda (1936–1944) and Bogra (1949). After a brief stint at Calcutta University (1950), Mujtaba Ali became Secretary of the Indian Council for Cultural Relations and editor of its Arabic journal Thaqafatul Hind. From 1952 to 1956 he worked for All India Radio at New Delhi, Cuttack and Patna. He then joined the faculty of Visva-Bharati University (1956–1964).

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
602 (59%)
4 stars
316 (31%)
3 stars
77 (7%)
2 stars
12 (1%)
1 star
6 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 75 reviews
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
January 18, 2021
হাস্যরস আর কাকে বলে!
লেডি-কিলার সরকার বলল, মাইরি চাচা, আপনার সৌন্দর্যবোধ আর কবিত্বশক্তি দুইই আছে। অমনতরো বিপাকের মধ্যিখানে আপনি সবকিছু লক্ষ্য করলেন !
এহে! এটা পড়ে ইমপেরিয়াল ব্লু
মিউজিক সিডির বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে গেছিল :3
ব্রেকফাস্ট খেতে গিয়ে দেখি কর্তার খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। লজ্জা পেলুম, কিন্তু সেটা পুষিয়ে নিলুম লোহার নালে নালে এমনি বমশেল ক্লিক করে যে, মাদাম আঁৎকে উঠলেন। মনে মনে বললুম, হিন্দুস্থানীকি তমিজ ভী দেখ লিজিয়ে!
হাঁ! হাঁ! দেখ লিজিয়ে!


সাহিত্য আকাশে মুজতবা সাহেবের নাম এমনি এমনি তারার মতো জ্বলজ্বল করে না। বার্লিন শহরে ‘হিন্দুস্থান হৌসে’ বসে চাচার মাধ্যমে মুজতবা সাহেব যে কাহিনী শুনিয়েছেন! এমন ধারা রচনা বোধহয় আর নেই। থাকলেও আমার পড়া হয় নি!
এই গুরুতর হাস্যরসের মাঝে মাঝেই বেশ কয়েকটা গল্পে হঠাৎ করে চিকন সূক্ষ্ণ পিনের খোঁচা খেয়ে সোজা হয়ে যাওয়ার মধ্যেও একটা রসিকতার ব্যাপার ছিল। কি স্যাটায়ার! :)

যাইহোক বাংলা ভাষায় লেখা বই, তার পাঠকও বাংলা ভাষা-ভাষী। বাঙালির ইমোশনই আলাদা। বিনা আওয়াজে হাসতে গিয়ে আবার চোখের পানি না বেড়িয়ে যায়!

~১২ ডিসেম্বর, ২০২০
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
March 6, 2022
সাধে কী আর ফ্রান্সিস বেকন বলেছিলেন, ‘‘Old wood best to burns,old wine to drink,old friends to Trust and old author to read!’’
Profile Image for ফারহানা জাহান.
Author 5 books57 followers
March 29, 2021
চাচাকাহিনির প্রথম গল্প- 'স্বয়ংবরা'

"আড্ডা জমাবার বুনিয়াদ হচ্ছে চণ্ডীমণ্ডপ, কাছারি-বাড়ি, টঙ্গিঘর, বৈঠকখানা_এক কথায় জমিদারী প্রথা।" এই দিয়ে ছোট্ট গল্পটার শুরু। চাচার 'কাঠগড়ায় দাঁড়ানো' নিয়ে পাতা এক বৈঠকের গল্প। মুজতবা সাহেবের সরল রসবোধের মুন্সীয়ানা তো সাথে আছেই। অল্প সময়ে পড়ার মজার বই।

একটা লাইনে একটু বেশিই মজা পেয়েছি, সেটা লেখা থাক।
"চাচা বললেন, " ইউরোপে কোল্ড-ব্লাডেড খুন হয়, আর ভারতে কোল্ড-ব্লাডেড বিয়ে হয়। এবং দুটোই ভেবেচিন্তে, প্ল্যানমাফিক, প্রিমেডিটেটেড।"

ভেবেছিলাম প্রতিটা গল্পেরই সংক্ষিপ্ত কিছু প্রতিক্রিয়া লিখে রাখবো। কিন্তু তা হয়ে উঠলো না।
তবে মাঝে মাঝেই যে এক-দুটো গল্প আবার পড়া হবে এটুকু নিশ্চিত। তখন নাহয় আবার এডিট করে দিলাম।

মন খারাপ হোক কিংবা ব্যস্ততা হোক, এখান থেকে টুক করে এক-দুটো গল্প পড়ে ফেললে মনটা হালকা হয়ে যায়। সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্যরস সত্যিই দারুণ উপভোগ্য।
Profile Image for Tasnim Dewan  Orin.
159 reviews79 followers
June 24, 2020
“ইউরোপে cold blooded খুন হয়, ভারতবর্ষে কোল্ড-ব্লাডেড্ বিয়ে হয়।” This is an absolute truth from this book. And none other than the master of satire and master of sarcastic comedy Mujtaba Ali wrote this masterpiece. I would love to read it again and again because each time I discover complete new things from this book.
Profile Image for Nusrat Faizah.
99 reviews37 followers
June 19, 2023
বাক্যের এমন গঠন আর বহু ভাষার ব্যবহার আমি অন্য কোনো বইয়ে পড়ি নাই।কিছু গল্প বেশ ইউনিক,কিছু গল্প ভালোবাসা-মমতায় ভরা।
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
August 29, 2020
প্রায় প্রতিটি গল্পই বিদেশের পটভূমিকায়, বিশেষ করে বার্লিন প্রবাসী বাঙালি তরুণ ছাত্র- যাদের মধ্যে লেখক নিজেও একজন- তাদের নিয়েই রচিত সৈয়দ মুজতবা আলীর 'চাচা কাহিনী'। এমন বিশুদ্ধ উপাদেয় আন্তর্জাতিক রসের পরিবেশন বাংলা সাহিত্যে বিরল।
Profile Image for সন্ধ্যাশশী বন্ধু .
368 reviews12 followers
March 31, 2025
বইটা আসলেই ভীষণ ভালো। শুরুতে একটু খটমট লাগলেও,পরে যখন গল্পে ঢুকে গেছি চমৎকার লয়ে পড়ে গেছি। 


মুজতবা আলী মানেই হাস্যরস। এই বইয়ের প্রতিটা গল্পে হাস্যরসের ছড়াছড়ি। বাইরের প্রেক্ষাপটে রচিত প্রতিটা গল্প। শুরুর দিকের গল্প গুলো তে ❝চাচার❞ উপস্থিতি পাওয়া যায়,এগুলোতে হাস্যরসের মাত্রা একটু বেশি। পরের গল্পগুলো ও সুন্দর। 


মুজতবা আলীর লেখা পড়লে, উনার অগাধ পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাওয়া যায়। অসামান্য মেধাবী একজন মানুষ।
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews16 followers
August 13, 2021
সৈয়দ মুজতবা আলী'র লিখা আমার খুব কম পড়া হয়েছে। শবনম পড়ে একরাশ বিরক্তির পর এই বইটা যেন ছিল আর্শীবাদ। পড়া শেষে মনে হয়েছে এমন বই পড়া হয়নি বহুদিন। বইয়ের বেশিরভাগ গল্পের প্রেক্ষাপট ইউরোপ আর লিখার ক্ষেত্রে প্রচুর কঠিন শব্দ ব্যবহার করা সত্ত্বেও হাস্যরসের কোনো খামতি চোখে পড়েনি। লেখক দুঃখ-কষ্টের সাথে হাস্যরস এমনভাবে মিশিয়েছেন যা এই বইকে নিয়ে গেছে অনন্য মাত্রায়। বাংলাসাহিত্যে এমনটা খুব কম লেখক করতে পেরেছেন। আর এটাই লেখকের বিশেষত্ব, যা এই বইকে করেছে মাস্টারপিস।
Profile Image for Turna Dass.
145 reviews
August 28, 2025
এবার ভুল করে পড়ে ফেলেছি ।এরপর আমি জার্মান,রাশিয়ান আর ফ্রেঞ্চ ভাষার শেখার পর আবার আসব।

তবে বাংলা না জানলে (না,খাঁটি বাঙালি না হলে)এমন দারুণ রসমঞ্জুরি আস্বাদন করতাম না।যাকে বলে ২-৩ ঘণ্টা লেটে আসা রূপসা ট্রেন মিস করার মতো অবস্থা!!!

রেটিং-চাচা,আপন প্রাণ বাঁচা/৫
June 22, 2020
১৯২৯। বার্লিনের একমাত্র উপমহাদেশীয় প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান হৌস। সেখানেই আড্ডা বসে গোটা কয়েক আড্ডাবাজ বাঙালীর। মাঝে মাঝে জর্মনরাও যোগ দেয় চক্রের কারোর আমন্ত্রণে। তাতে যেমন হিন্দুস্তান হৌসের প্রচার-পসার হয় তেমনি আড্ডাও জমে। চক্রের নিয়মিত সদস্যদের মধ্যে আছেন সংগীতপ্রেমী গোস্বামী ওরফে গোঁসাই, ভাষাবিশারদ রায় সাহেব আর চ্যাংড়াদের মধ্যে লেডি কিলার পুলিন সরকার আর গৌলাম মৌলা আলী অর্থ্যাৎ লেখক নিজে। গলাবদ্ধ কোটধারী বহুদিনের জর্মন নিবাসী ভারতীয় বাঙালী চাচাই চক্রের চক্রবর্তী। ‘চাচা কাহিনী’ মূলত আড্ডার আলাপ আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চাচার বর্ণিল জর্মন জীবনের নানান গল্পের বয়ান। চাচার উচ্চাঙ্গের জার্মান ভাষা শেখা যেই প্রাশান কর্ণেলের গল্প আছে এতে। আছে তীর্থহীনা গ্রেটা আর মা-জননী নার্সের সন্তান আঁকড়ানোর গল্প।
চাচার গল্প ছাড়াও এতে আছে লেখকের প্যারিস যাত্রায় কাফে-দে-জেনিতে কাটানো এক সন্ধ্যার গল্প, মহারাজ সয়াজী রাওয়ের জাহাজযাত্রায় উপহারস্বরুপ প্রাপ্ত সিংহ-জোড়ার গল্প। করুণরসে সিক্ত ‘পুনশ্চ’ বা হালকা কৌতুকধর্মী ‘বেঁচে থাকো সর্দিকাশী’র সাথে ‘পাদটীকা’ গল্পে ঐপনিবেশিক বাস্তবতায় পণ্ডিত জীবনের তিক্ত চিত্রও তুলে ধরেছেন লেখক। ‘লাটের তিন ঠ্যাংগের কুকুরের পিছে খরচ পচাত্তর টাকা আর পন্ডিতের আটজনের সংসারের জন্য মাসিক বরাদ্দ পঁচিশ টাকা’ – লাইনটা যতটা বাস্তব ততটাই প্রতীকি।
Profile Image for হাসান নাহিয়ান নোবেল.
105 reviews169 followers
October 17, 2019
ইবরাহিম ভাই একবার বলসিল, মুজতবা আলী সাহেবের সেরা হচ্ছে চাচা কাহিনী। বইটা অনেকদিন পর আবার পড়লাম, এবং ভেবে দেখলাম—কথাটা সত্য হলেও হতে পারে।

সৈয়দ মুজতবা আলী এত রস পান কোত্থেকে—কে জানে! টইটম্বুর হয়ে আছে একেকটা লেখা। আর কী অনুবাদের শক্তি—জার্মান মেয়ে হাসতে হাসতে বলছে, ‘ডু লীবার গের গট্‌’—সেটার অনুবাদ তিনি করছেন—‘হে মা কালী!’

তবু এই বইটার বিশেষত্ব এই যে, মুজতবা আলীর রস কেবল নিরবিচ্ছিন্ন আনন্দের না। আদ্ধেকটা বই-ই তোমাকে কাঁদাবে। চাচা কাহিনী পড়তে পড়তে যদি কেউ এক পশলা কেঁদে নেয়—তাহলে বলা মুশকিল ও কান্না কীসের।

তবে কিনা, কান্না যেটারই হোক—সেটার কারণ যে বেশ গভীর হবে—এতে সন্দেহ থাকার কথা না। তিন পাঅলা কুকুরের গল্পটা তো বোধহয় এদেশে কিংবদন্তীই হয়ে থাকবে। নিশ্চয়ই সৈয়দ মুজতবার চারপাশের সব মানুষ এমন রঙ লাগিয়ে, মসলা মাখিয়ে কথা বলেন না। কাজেই লেখা যে ঝলমল করতে দেখি, আর স্বাদে যে মনে জল এসে পড়ে—ওর দায় মুজতবা সাহেবের ঘাড়েই বর্তানো যায়।

আগেও বলেছি, বলতেই হবে, মুজতবা আলীর ভাষার জোর অসাধারণ!
Profile Image for Nile.
144 reviews8 followers
January 14, 2014
He amuses as always. the entertaining light humorous style narration but with a deep philosophical message. You will enjoy reading this one.
Profile Image for Akash.
446 reviews149 followers
September 21, 2022
জার্মানি, বিশেষত বার্লিনের প্রেক্ষাপটে লেখা সৈয়দ মুজতবা আলীর বই "চাচা কাহিনী"।

চাচার আসল নাম ইরশাদ চৌধুরী। বার্লিনের ''হিন্দুস্থান হৌসে'' রেস্তোরায় লেখক নিজে, চাচা, পুলিন সরকার, শ্রীধর মুখুয্যে, সূর্য রায়, মৌলবী সাহেব, গোলাম মৌলা- এরকম কজন মিলে আড্ডা। আর সেই আড্ডাগুলোয় উঠে আসে হরেক রকম কাহিনী। জীবনকে আবিষ্কারও করা যায় নানাভাবে।

বইটিতে এমন গল্প আছে মোট এগারোটি। প্রতিটি গল্প যেমন হাসাবে তেমনি কাঁদাবে। মনে হবে যেন আপনিও চাচাদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। বাঙালির আড্ডা যে কত মধুর, পান্ডিত্য আর হাস্যরসে ভরপুর ছিল তা অনুধাবন করতে পারবেন। মনে হবে আপনি স্বর্গে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।

সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো রসবোধ, পান্ডিত্য, ভাষাজ্ঞান আর ভ্রমণপিয়াসু নরম মন খুব স্বল্প লেখকেরই ছিল। তার প্রতিটি বই বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ, অপরূপ সৃষ্টি। আমার মনের গভীর প্রদেশে সৈয়দ মুজতবা আলীর বাস। তার মতো হওয়ার ইচ্ছা আমার প্রবল।

এগারোটি গল্পের রিভিউ ১১ লাইনে লিখব।

স্বয়ংবরাঃ জার্মান এক তরুণী চিরকুমার চাচাকে গাঁটছড়া বেঁধেই বিয়ে করতে চেয়েছিলেন! শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল বিয়ে!!!

কর্ণেলঃ সংকরায়ণ বিরোধী জার্মান হের ওবের্স্ট নামে এক কর্ণেলের বাড়িতে কেমন কেটেছিল চাচার দিন! রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করতে কি পেরেছিলেন কর্ণেল!!!

মা-জননীঃ কুমারী-মা সিবিলা লোকলজ্জার ভয়ে তার সন্তানের সাথে কি করেছিল! চাচার ভূমিকা কি ছিল!! সমাজ নাকি মাতৃত্ব- কার জয় হলো!!!

তীর্থহীনাঃ ভালোবাসায় প্রতারিত যক্ষ্মায় আক্রান্ত গ্রেটে নামের তরুণীর কি হয়েছিল অবশেষে! আর তার সাথে মুজবা আলী ও গির্জার কি সম্পর্ক!!

বেলতলাতে দু-দু’বারঃ চাচার সাথে অস্কারের জার্মান পরিবারের সম্পর্ক কেমন ছিল! অস্কারের প্রেমিকা এবং জার্মান প্রেমিক যুগলের সাথে চাচার কি ঘটেছিল!! অস্কার চাচাকে কতটা ভালোবাসতো এবং চাচা নাজি পার্টি করা অস্কারের প্রতি কৃতজ্ঞ কেন!!!

কাফে-দে-জেনিঃ ফ্রান্সের এক অভিজাত ক্যাফেতে যে ভাষা-বিশারদ ও চিত্রশিল্পীর সাথে চাচার কথা হয় তারা কেমন ছিল! তাদের কথা আর সৃষ্টিকর্মের মধ্যে ফারাক কতটুকু!! তারা কি সত্যিই উঁচুমানের শিল্পী নাকি সবই ভুয়া!!!

বিধবা-বিবাহঃ বরোদার মহারাজা সয়াজি সিং এক হাবশি রাজার থেকে উপহার পেয়েছিলেন একজোড়া সিংহ-সিংহী। কিছুদিন পর সিংহ মারা যাওয়ার ফলে নতুন স্বামীকে কি মেনে নিতে পেরেছিল মানুষের মতো এত প্রেম মনের সঙ্গোপনে লুকিয়ে রাখা বিধবা সিংহী!!

রাক্ষসীঃ পশ্চিম ভারতের পার্সি সম্প্রদায়ের বৃদ্ধা মহিলার শেষকৃত্যে ভয়ঙ্কর কি এমন ঘটেছিল যে তাতে ভয়ে মারা যায় অনেকে এবং পাগল হয়ে যায় বাকি সবাই!!

পাদটীকাঃ লেখকের জবানিতে বলা মর্মস্পর্শী গল্পটা পড়ে যে কেউ কাঁদবে! স্কুল পরিদর্শনে আসা সাহেবের কুকুরের প্রতিটা পা এর খরচের সমতুল্য অর্থে চলে পণ্ডিত মশাইয়ের সুবিশাল পরিবার! অগাধ জ্ঞান আর অসীম অভাব কি পেরেছিল পন্ডিত মশাইকে গ্লানিবোধ থেকে বাঁচাতে!! পন্ডিত মশাইয়ের জ্ঞানের কি কোনো মূল্য নেই!!!

পুনশ্চঃ ফ্রান্সের বেশ্যা জেলির সাথে লেখকের কেমন সম্পর্ক ছিল! জীবনের সংকটাপন্ন অবস্থায় জেলি শহরে বেশ্যাগিরি না করে আত্মহত্যা করতে গ্রামে গিয়েছিল কেন!! লেখক কেন জেলিকে সাহায্য করল না!!!

বেঁচে থাকো সর্দিকাশিঃ জার্মানির মিউনিখের ডাক্তারের প্রেমের সাথে লেখকের সর্দি-কাশির কি সম্পর্ক! রোমান্টিক কমেডি কাকে বলে!!

সৈয়দ মুজতবা আলী ''চাচা কাহিনী'' গ্রন্থে চাচা, মৌলবি সাহেব কিংবা নিজের জবানিতে জার্মানি, ভারত বা ফ্রান্সের পটভূমিতে লিখেছেন গল্পগুলো। প্রতিটি গল্পে যেন মানবজীবনের আয়না, সুখ-দুখে, আনন্দ-বেদনায় ভরপুর।

বৈঠকী আবহ, অপরূপ রসবোধ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন কবিতা বা গানের বাণীর ব্যবহার "চাচা কাহিনী'' কে পূর্ণতা দান করেছে।

সৈয়দ মুজতবা আলী প্রতিটি বই (দেশে বিদেশে, শব্‌নম, পঞ্চতন্ত্র, হিটলার) আমায় হাসায়, কাঁদায়, অন্তরে গভীর প্রেমবোধ জাগায়, বিশ্বের নাগরিক হতে, নতুন নতুন ভাষা আর বিশ্ব ভ্রমণ করতে উৎসাহিত করে। বহুভাষাবিদ, আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া ঘুরে বেড়ানো, গভীর রসবোধ, প্রেমিক, পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট সৈয়দ মুজতবা আলীকে কুর্ণিশ।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for পটের দুধের কমরেড.
209 reviews25 followers
May 22, 2019
সৈয়দ মুজতবা আলী সাহেবের আপদমস্তক ছিলো বিশুদ্ধ সাহিত্যরসে পরিপূর্ণ৷ কখনো জর্মনির বার্লিনে 'হিন্দুস্থাব হৌসে'র এককোণে বাঙালিদের আড্ডার গপ্পো অথবা প্যারিসের সংকীর্ণ গলিতে স্মৃতিকথার যোগসূত্রে লেখকের ১১টি গল্পের উপাখ্যান৷ যেখানে ঠাঁই পেয়েছে 'তীর্থহীনা' 'মা-জননী'র মত বেদনার বিবর্ণ কাব্য, আবার 'বেঁচে থাকা সর্দি-কাশি'র মত অমৃত নির্যাস! অবশ্য পাঠ্য৷ ধন্য হে আলী সাহেব! ধন্য!
Profile Image for Ashik.
220 reviews40 followers
July 13, 2024
"পানশাস্ত্রে এর চেয়ে বড় নাস্তিকতা আর কিছুই হতে পারে না। বিয়ারে জল!"

৯ বছর আগে যেমন হেসেছিলাম, আজও হাসলাম। আবার ৯ বছর পর হাসা যাবে।
Profile Image for Nipabithi Toa.
7 reviews19 followers
May 1, 2018
দম ফাটানো হাসির গল্পের বই নয়,কিন্তু সূক্ষ্ম হাস্যরস যে তার থেকে কম মূল্যবান কিছু নয় এরই উদাহরণ 'চাচা কাহিনী'।হাস্যরসের সাথে ছিল 'মা জননী','তীর্থহীনা'র মতো বিষাদের স্পর্শ পাওয়া গল্প, আর ছিল অসাধারণ সব দর্শনের প্রয়োগ।

"বহু বৎসর হয়ে গিয়েছ���,সেই ইস্কুলের সামনে সুরমা নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে কিন্তু আজো...."
সৈয়দ মুজতবা আলী <3
গর্ব করবার মতো যথার্থ বলতে যাকে বোঝায়, তিনিই তিনি।
Profile Image for A. M. Faisal.
76 reviews20 followers
June 25, 2025
One of my favorite writers without doubt. Wit, subtlety alongside linguistic wisdom. The perfect combo to snatch readers when travelling was still a daylight's dream to many. A Bengali who refused to be E. Pakistani to be an Indian and then again became Bangladeshi.
The Assamese scholar Syed Mujtaba Ali.
Only if he could restrict his bad habits!
the tales in Weimer Germany
Profile Image for Shahed Zaman.
Author 28 books256 followers
May 28, 2019
এর কোনো জবাব হয় না!
Profile Image for Shahriar Rahman.
84 reviews13 followers
February 9, 2023
অতুলনীয়, অনবদ্য, অনন্য, অসাধারণ… বিশেষণের কমতি পড়বে নির্ঘাত তবুও এই বই নিয়ে আমার মুগ্ধতা “অপ্রকাশিত”ই রয়ে যাবে! উফফ! কীভাবে এই রত্ন আমি সাতবছর যাবৎ বুকশেলফে ফেলে রেখেছিলাম? যাক গে, সবুরে মেওয়া ফলে, আমার ফললো “চাচা কাহিনী”।
সত্য বলতে কী, মুজতবা রস আস্বাদনের জন্যে হয়ত আমি নিজেই এতদিন প্রস্তুত ছিলাম না, প্রস্তুত “হচ্ছিলাম”! বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম এই লোকের লেখা ঠিক “লঘুপাচ্য” না, তাকিয়ে থাকবো আর পড়া হয়ে যাবে, এমন না। এই ভদ্রলোকের লেখা “এটেনশন” ডিজার্ভ করে। তবে একবার ঠিক ঠিক তা দিতে পারলে, ওয়াও, পুরো “আঁশাঁতে” (Enchanted) হয়ে পড়তে হয়!
এই গল্পগ্রন্থের পটভূমির সামান্য অংশ প্যারিসে, বেশিরভাগই জার্মানিতে। আলী সায়েব পড়তে গিয়েছিলেন “জর্মনি”-তে, অদ্ভুত এক সময়ে, একদম প্রথম আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে। সেখানেই জন কয়েক ভারতীর আড্ডাখানা “হিন্দুস্তান হৌস”-এ (Hindustan House) বসে চক্রবর্তী চাচা গল্প বলেন আর তা মুগ্ধ হয়ে শোনেন শ্রীধর মুখুয্যে, পুলিন সরকার, সূর্য রায়, গোলাম মৌলারা। আর এদের সাথে সেই হিন্দুস্থান হৌসের ভেতরে আমাদের চোখ কান হিসেবে থাকেন লেখক, নিজের মুখে সেই গল্প শুনিয়ে যেতে থাকেন আমাদেরকে। তাঁর সাথে আমরা চলি কখনো বার্লিন, কখনো মিউনিখ, কখনো রাইনল্যান্ডে… হা করে গিলতে থাকি সেসব কাহিনী। এমন আলাপী ঢঙে, এমন ভঙ্গিতে, এমন তীক্ষ্ণ রসবোধের সাথে, এমন সরেস গল্প বাংলা ভাষায় আমাদেরকে আর কেউ শুনিয়েছেন? আমি জানি না…
কালজয়ী লেখা বোধকরি সেগুলোই যেগুলো আমাদেরকে একই সাথে একাধিক বীপরিত অনুভুতির সাগরে ফেলে দিয়ে হাবুডুবু খাওয়াতে পারে। চাচার মুখে “স্বয়ংবরা” শুনে মুচকি হেসেছি, “কর্নেলের কাহিনী” শুনে তার ঋজু শিরদাঁড়ার পরিচয় পেয়ে মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়েছি, “মা-জননী” পড়ে সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা দেখে চোখে পানি এসেছে, “রাক্ষসী” পড়ে ভয়ে গা হিম হয়ে এসেছে, “পাদটীকা” পড়ে শিক্ষকেরা আজও যে আমাদের সমাজে কী দূরবস্থায় রয়েছেন তা ভেবে ডুকরে কেঁদে উঠেছে মন আর “পুনশ্চ” এবং “বেঁচে থাকো সর্দি-কাশি” পড়ে হো হো করে হেসে উঠেছি, একই সাথে খুব করে ইচ্ছে করেছে প্রেমে পড়তে। মাত্র ১২৩টা পাতার কলেবর, এরমধ্যেই এতগুলো অনুভূতির সমাহার, অসাধারণ বললেও কম বলা হয় না কি?
পুরোটা বইয়ের লেখনী, শব্দের পর শব্দের খেল, তুলনা, উপমা, বিশেষণ সবই অতুলনীয়, চাইলে পুরো বইটাই তুলে দেয়া যায়। কিন্তু নিজে যেহেতু একইসাথে প্রকৃতিপ্রেমী আর ভালোবাসার কাঙাল, তাই বুঝি সবচাইতে বেশি হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে এক রূপসীর রূপের বর্ণনা, হুবুহু তুলে দিলাম তা নিচে -

“রেস্তোরায় ঢুকেই থমকে দাড়ালাম। দেখি, এক কোণে এক অপরূপ সুন্দরী। নর্থ সী দেখেছেন? তবে বুঝতেন হবো হবো সন্ধ্যায় তার জল কী রকম নীল হয় - তারই মতো সুন্দরীর চোখ। দক্ষিণ ইতালিতে কখনো গিয়েছেন? না? তবে বুঝতেন সেখানে সোনালি রোদে রূপালি প্রজাপতির কী রাগিণী - তারই মত তার ব্লন্ড চুল। ডানয়ুব নদী দেখেছেন? না? তাহলে আমার সব বর্ণনাই বৃথা। ডানয়ুব নদীর শান্ত-প্রশান্ত ভাবখানা তাঁর মুখের উপর। অথচ জানেন, ডানয়ুব অগভীর নদী নয়। আর ডানয়ুবের উৎপত্তিস্থল দেখেছেন? না? তাহলে বুঝতেন সেখানে তন্বঙ্গী ডানয়ুব যে রকম লাজুক মেয়ের মত এঁকেবেঁকে আপন শরীর ঢাকতে ব্যস্ত, এ-মেয়ের মুখে তেমনি ছড়ানো রয়েছে লজ্জার কেমন যেন একটা আঁকুবাঁকু ভাব।”


আমার কেন যেন খুব আনন্দ হচ্ছে, বহু বহু সময়ের প্রচেষ্টার পর কিছু একটা পাবার আনন্দ। এত এত প্রিয় মানুষের মুখে শুনেছি মুজতবা আলীর লেখা নাকি ঘোর লাগা, অসাধারণ, ৬-৭ বছর ধরে চেষ্টা করেছি, সে লেখার সাথে “কানেক্ট” করে উঠতে পারিনি। এত বছর পর শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারছি, সৈয়দ মুজতবা আলী কেন “গুরু মুজতবা আলী”। আমার আনন্দ হবে না বলো?
Profile Image for Shahab Mosharraf.
84 reviews5 followers
August 25, 2023
অনেক অনেক দিন ধরে ক্যারি করে পড়ে শেষ করলাম বইটা। মুজতবা আলীর বইয়ের সুধা ফুরাবার নয়।
Profile Image for Tamanna Binte Rahman.
184 reviews140 followers
December 14, 2022
শুরু করেছিলাম সেই কবে! পড়াই হচ্ছিল না। আজকে অলস সন্ধ্যায় চাচাকাহিনী পড়ে ফেললুম। বাংলায় রম্য কাহিনী লেখায় তার জুড়ি মেলা ভার। আমার অন্যতম প্রিয় রম্য লেখক। তবে তাই বলে যে সবগুলো গল্পই রঙ্গরসে ভরা তাওনা। কিছু গল্প পড়ে রীতিমত মন খারাপই হয়েছে। বিশেষ করে মা-জননী।

মাঝে মাঝে মনে হয় এত আধুনিক মানসিকতার লেখক কী আর আছে বাংলাদেশে? ভ্রমণ তো আমরা কতজনই করি, তবুও তার মত করে লিখতে পারি কই! আমি নিজে যখন থেকে আমার ভ্রমণ কাহিনী লিখতে শুরু করেছি, চেষ্টা করেছিলাম বোরিং না করে হাস্যরসের মাধ্যমে লিখতে। কিন্তু সে আর হল কোথায়! তখনই বুঝলাম রম্য গল্প লেখা আমার কম্য নয়। লেখককে স্যালুট। ছোটোবেলায় তার লেখা না পড়লে ভ্রমণের স্বাধ এভাবে জাগতো কিনা কে জানে! বড়বেলায় আরেকবার পড়ে নিলাম যেন ইউরো ট্যুরে মিলিয়ে দেখতে পারি কী কী পরিবর্তন হল। কোনো একদিন তখন আমিও হয়তো লিখব আবার নতুন করে। লেখকের জন্য একরাশ ভালবাসা।

৫ তারা না দিয়ে আর উপায় কী?
Profile Image for Mohammad Thowhid.
57 reviews7 followers
April 29, 2024
ত্রি-চরণে স্মরি: চাচা-কাহিনি

এক চাচা ও তাঁর ভক্তবৃন্দ মূল চরিত্র, বিদেশ-বিভুঁইয়ে চাচার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার ঘনঘটা। হাসি-কান্না-দুঃখ-বেদনা সমস্ত অভিজ্ঞতায় ঠাসা গল্পগুচ্ছ। চাচার টেবিলের সদস্য এবং পাঠক মাত্রই মুগ্ধ হবেন।
Profile Image for Zannat.
41 reviews15 followers
January 12, 2020
ভালো বইগুলো সবসময়ই দেরিতে ���ড়ি 🙂
Profile Image for Shafiul Hasan.
59 reviews
April 8, 2024
বেঁচে থাকো সর্দি-কাশি
চিরজীবী হয়ে তুমি


অসাধারণ একটা বই। বইটার বেশিরভাগ গল্প বিদেশের পটভূমিতে রচিত এবং তা চাচা ইরশাদ চৌধুরীর অভিজ্ঞতা থেকে বর্ণিত। এখানে গল্পগুলো বলা হচ্ছে আড্ডার ছলে। অর্থাৎ চাচা এবং তাঁর কিছু বন্ধু বার্লিনের 'হিন্দুস্তান হাউস' নামক এক হোটেলে বসে যেন নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছে। হয়তো কোনো একটা বিষয় যেমন বিয়ে, নাৎসিবাদ, মা-মেয়ের দ্বন্দ্ব ও ভালোবাসা ইত্যাদি সম্পর্কে কথা উঠল আড্ডায় আর তখনই চাচা তার অভিজ্ঞতা থেকে অনুরূপ কোনো নিজের জীবনের কাহিনী বললেন। প্রতিটা গল্পই অসাধারণ, হাস্যরসে ভরপুর। তবে সে হাস্যরস কখনোই স্থুল নয়, অতি সূক্ষ্ম। আর তার সাথে অতি উচ্চমানের দার্শনিক কথাও বলেছেন সমানতালে, এটা বোধহয় মুজতবা আলী বলেই সম্ভব হয়েছিল। আবার যৌবনে শান্তিনিকেতনে পড়ার কারণেই হোক আর যে কারণেই হোক তাঁর উপর রবীন্দ্রনাথের প্রভাবও স্পষ্ট, প্রায় প্রতিটা গল্পেই কবিগুরুর বিভিন্ন কবিতা ব্যবহৃত হয়েছে।

বইয়ে মোট ১১টি গল্প স্থান পেয়েছে। তাদের কোনোটি যেমন হাস্যরসের যোগান দেয় আবার কোনোটি তেমনি আপনাকে বিষণ্ণও করবে। প্রতিটা গল্পই তার প্রবাসে অবস্থানকালের। 'মা-জননী' -এর মতো হৃদয় ছোঁয়া গল্প যেমন আছে এতে, তেমন 'বেঁচে থাকো সর্দিকাশি' -র মতো নির্মল রসের গল্প আছে।

এককথায়- সুখপাঠ্য!
212 reviews4 followers
September 25, 2022
সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখার কোনো তুলনাই হয় না। তিনি ছোটগল্পে যেমন চমক দিতে পারেন, তেমনি ভাষার সুনিপুন কারুকার্যে ধরে রাখতে পারেন পাঠকের অখণ্ড মনোযোগ। আর রসবোধ? সে এক ভিন্ন দুনিয়ার! একটার পর একটা গল্পে যেন চোখ বুজে ছক্কা মেরে গেছেন।

পড়ে ধন্য হলুম।
Profile Image for Asif Khan Ullash.
144 reviews8 followers
August 18, 2025
বাংলা সাহিত্যে সৈয়দ মুজতবা আলীর মত উইটি লেখক মনে হয় আর আসবে না। রম্য রচনাকে তিনি অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলীর তুলনা তিনি নিজেই, সূক্ষ্ম সেন্স অফ হিউমারের সাথে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রবলেম্যাটিক দিক তুলে ধরেছেন তা এককথায় অনবদ্য। চাচা কাহিনী বইটিও এর ব্যতিক্রম নয়।

আমার কাছে থাকা কপিটি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত। ১১৬ পৃষ্ঠার ছোটখাট এই বইটির পৃষ্ঠা ও বাধাইয়ের মান ভালোই কিন্তু ধ্রুব এষের করা প্রচ্ছদ আমার একেবারেই ভালো লাগেনি, মনে হয়েছে ধ্রুব সাহেব কোন এফোর্টই দেননি। অবশ্য ইদানীং সময়ে ধ্রুব এষের করা অন্যন্য প্রচ্ছদের যা অবস্থা তার তুলনায় এটা ভালোই আছে বলতে হবে।

বইয়ের মূল চরিত্র হচ্ছেন ইরশাদ চৌধুরী তথা চাচা। হিন্দুস্তান হৌজে পুলিন সরকার, সূর্য রায়, গোলাম মৌলা, আমাদের লেখক সাহেব প্রমুখদের নিয়ে চাচার দরবারী আড্ডা। মুজতবা আলীর লেখার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে তিনি এমন ভঙ্গিতে উপস্থাপন করেন যে মনে হয় নিজে আড্ডায় বসে শুনছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে চাচার বিভিন্ন অভিজ্ঞতাই মুজতবা আলী তার চিরাচরিত উইটের সহিত লিপিবদ্ধ করেছেন। জার্মান ভাষার পন্ডিত জার্মানীর বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী মহলে তুমুল জনপ্রিয় চাচা অভিজ্ঞতার ঝুলি বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় গল্পে টই টম্বুর, কী নেই সেখানে! জনৈকা জার্মান খেলোয়াড়ণীর কল্যাণে ফরাসী কুহকীনির মায়াজাল থেকে উদ্ধার, গোড়া জার্মানের জানের চেয়ে মান বড় নীতি নিয়ে টিকে থাকার লড়াই, নাৎসি চেতনাধারীর বন্ধুত্বের স্বাদ, পার্সি বুড়োর ভুত দর্শন, ব্রাক্ষ্মণ পন্ডীতের আক্রোশ, সর্দি জ্বরের কল্যাণে বিবাহ প্রস্তাব ইত্যাদি বহুমাত্রিক দূধর্ষ অভিজ্ঞতার অধিকারী আমাদের চাচা। মুজতবা আলীর কলমে সেই অভিজ্ঞতা গুলো যেন প্রাণ লাভ করেছে।

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কালের রম্য রচয়িতাদের কথা বলতে গেলে অবধারিতভাবে যে দুটো নাম আসে তা হলো শিবরাম চক্রবর্তী ও সৈয়দ মুজতবা আলী। তবে দুজনের রচনার ধরণ ও বিষয়বস্তু অনেক ভিন্ন। মুজতবা আলীর লেখায় রসের সাথে বিভিন্ন দেশের বিশেষ করে ভারতবর্ষের সংস্কৃতি, ইতিহাস পরিষ্কারভাবে উঠে আসে। মুজতবা আলীর যেকোন লেখা পড়লেই বোঝা যায় তিনি কতটা বিচক্ষণ, জ্ঞানী ও অসাধারণ সেন্স অফ হিউমারের অধিকারী ছিলেন। তার লেখনী, সাধারণ বিষয়কে দেখার অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গী, লাইনের মাঝে মাঝে স্যাটায়ারিক বর্ণনা তার লেখাগুলকে সমৃদ্ধ করেছে, প্লট যেমনই হোক তার লেখনীর গুণে তা সুখপাঠ্য হয়ে ওঠে। অব্যশই তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন রত্ন।
90 reviews2 followers
September 3, 2021
মুজতবা সাহেবের 'চাচা কাহিনী' পড়তে গিয়ে মোজার্ট কিংবা বিঠোফেনের ক্লাসিকাল মাস্টার পিস গুলোর কথা মনে পড়ল! খুব নিচু স্বরে, ধীর লয়ের করুণ সুরে শুরু হয়ে হুট করে দ্রুত লয়ের ঝড় আরম্ভ হয়ে যায়, এই বেহালার ছড়ির টানে বুকে চিন চিন করে উঠল তো আবার পিয়ানোর ঝংকারে মন যেন কোন দিগন্তে পালিয়ে যাচ্ছে।

এই বইতেও এমন জটিল সব আবেগ যেন বার বার ফুলে ফেপে উঠছে কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে সেই কৌতুক আর রঙ্গরস বাজছেই! তা ঠাট্টা আর কৌতুক আছেও বই কি! এমন সুক্ষ আর শৈল্পিক রসিকতা বিরল। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরার জোগাড় । একটা নমুনা দেই,
তীর্থহীনা থেকে, "তারপর উইলি আমায় সালঙ্কারে বুঝিয়ে দিল, রাইন-নদীর ওপারে হাইস্টারবাখার রোট। সেখান থেকে প্রায় আধ মেইল দূরে টাডেয়াস তীর্থ । সে তীর্থের দেবতা বল, পীর বল, বড়কর্তা হচ্ছেন সেন্ট ইয়ুডাস টাডেয়াস । বড় জাগ্রত পীর। ভক্তিভরে ডাকলে পরীক্ষা তো নিশ্চিত পাস হবে, যথেষ্ট ভক্তি থাকলে জলপানিও(বৃত্তি) পেতে পার । আর যদি মেয়েছেলে ঠাকুরকে ডাকে তবে সে নির্ঘাৎ বর পাবে - আশী বছরের বুড়ির পক্ষে বাইশ বছরের বড় পাওয়া নাকি ঠাকুরের কৃপায় সসেজ-বিয়ার (ডাল-ভাত)..." এর পর চাচা সেই সেই তীর্থে যাওয়ার পর তার উক্তি, "বন্ন পৌঁছে দেখি সেখানেই তীর্থের ঝামেলা লেগে আছে...এক আশী বছরের বুড়িকে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠলুম- আমার বয়স তখন তেইশ..." হাহা!
অথচ এই গল্পের শেষে এই হাসি-ঠাট্টার এই মোড় কিভাবেই না পাল্টে যায়!

পুরো বই জুড়েই এমন কারিশমা চোখে পড়েছে। এই যেখানে হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে আসবে একটু পরে গিয়েই আবার নড়ে চড়ে বসা লাগবে, কঠিন সব রুঢ় সত্য বলি আর দৃষ্টিকোণই বলি কিভাবেই না চলে আসছে।

বিশেষ করে 'tower of silence' এর ব্যাপারটা এত ভয়ানক এবং অবিশ্বাস্য যে google করে নিজে চেক করেও মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে ।

বহুদিন এত সাধু আর উপভোগ্য বই পড়া হয় নি । ভারিক্কি শোনালেও বলতে হচ্ছে, ছ্যাবলামো ধরণের রসিকতার এই যুগে এমন শৈল্পিক রম্য রচনা অমৃত মনে হয়েছে!
Displaying 1 - 30 of 75 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.