Jump to ratings and reviews
Rate this book

আর কতদিন

Rate this book
যুদ্ধ বিগ্রহের সমাপ্তিরেখা খোঁজা হয়েছে 'আর কতদিন' জহির রায়হানের একটি বড় গল্প। উপন্যাসিকাও বলা চলে। এর প্রেক্ষাপট যে ঠিক কি তা বলে মুশকিল। আপাত দৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বলা গল্প বলে মনে হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের গল্পে চির চেনা যেসব চিত্র আমরা ফুটে উঠতে দেখি, সেসবের উপস্থিতি আছে এই গল্পেও। তারপরও এই গল্পটি শুধু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকেই ধারণ করেনি। শুধু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরে নি। এই গল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ বিগ্রহ হচ্ছে, সামগ্রিকভাবে সেটিকেই তুলে ধরেছে। এই গল্পের শুরুতে দেখা যায় ১৯ জন নর-নারী ঘাতকের ভয়ে লুকিয়ে আছে। পরে তাদের আশ্রয় দিলেন এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধার পুত্র তপুও নিখোঁজ। তপু খুঁজে চলেছে তার প্রেমিকা ইভাকে। ঘাতকের আঘাতপিষ্ট নরকাগ্নি থেকে তপু উদ্ধার করল ভীতসন্ত্রস্ত ইভাকে। তারা আরেকটা ছোট ছেলেকেও খুঁজে পেল। ছোট ছেলেটাকে নিয়ে ছুটতে লাগল তারা। আর স্বপ্ন দেখতে লাগল বর্ণিল আগুনের। ওদিকে তপুর মা-ও হেঁটে চলেছে। বিশ্বের সব ছেলেহারা মায়েদের মিছিলে। নির্যাতিতা নারীদের মিছিলে। আর এদিকে তপু আর ইভা ফিরে এল তপুদের বাড়ি। ততক্ষণে তপুর বাড়ির অন্য পুরুষেরা আক্রমনে জর্জরিত হয়ে ক্রোধান্বিত হয়ে উঠেছে। নিজের ভাই বা নিজের ছেলেকেই তারা মারতে ধেয়ে এল। ছোট ছেলেটিকে নিয়ে তপু আর ইভা আবারো ছুটতে লাগল। এই দৌড় শুধু তাদের একার না। এই দৌড়ে আরও আছে বিশ্বের অসংখ্য জাতি ধর্মের অসংখ্য মানুষ, ঘাতকের হাত থেকে বাঁচতে যারা ছুটে চলেছে অবিরত। তপুর মায়ের মত মায়েদের মিছিল শেষ হবে কবে? তপু আর ইভাদের ছুটে চলা পথের শেষ কোথায়? পথ চলতে আর বাকি কত দিন, সেই প্রশ্ন সামনে রেখেই শেষ হয়েছে এই গল্প। এই গল্পের মাধ্যমে খোঁজা হয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর যে পৃথিবীব্যাপি হয়ে চলা এই যুদ্ধ থামবে কবে, আর কতদিন নিরীহ

28 pages, Hardcover

First published January 1, 1970

7 people are currently reading
409 people want to read

About the author

Zahir Raihan

28 books418 followers
Zahir Raihan (Bangla: জহির রায়হান) was a Bangladeshi novelist, writer and filmmaker. He is perhaps best known for his documentary Stop Genocide made during the Bangladesh Liberation War.

He was an active worker of the Language Movement of 1952. The effect of Language Movement was so high on him that he made his legendary film Jibon Theke Neya based on it. In 1971 he joined in the Liberation War of Bangladesh and created documentary films on this great event.

He disappeared on January 30, 1972 while trying to locate his brother, the famous writer Shahidullah Kaiser, who was captured and killed by the Pakistan army. Evidences have been found that he was killed by some armed Bihari collaborators and disguised soldiers of Pakistan Army.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
224 (40%)
4 stars
226 (40%)
3 stars
94 (16%)
2 stars
8 (1%)
1 star
4 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 73 reviews
Profile Image for বিমুক্তি(Vimukti).
156 reviews88 followers
September 30, 2020
—বুঝলি মামা, মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে দৌড় দিতে।
চায়ের কাপ হাত থেকে নামিয়ে ওয়াছি আমার দিকে সন্দেহের দিকে তাকালো। “ক্যান?”
“ঘটনা আছে ভাই। তোরে বোঝাব কেমনে এইটাই ভবতেছি।”
“বুঝা, বুঝব।”
“সমস্যাটা এই শালার সোসাইটির । কিছুতেই শান্তি নাই। এই যে ট্রাকটা দেখতেছস তো, এই ট্রাকই একদিন আমাদের এক বন্ধুকে চাপা দিব। ঐ যে ছেলেটা দেখতেছছ, ঐ লোক তো একদিন তোরে থাপ্পড়ও মারবার পারে।”
“ক্যান! আমারে মারবো ক্যান?”
“তুই যে শ্রেয়ার পিছনে ঘুরতেছস, এই জন্য মার খাবি। ছেলেটা মন্টু ভাইয়ের আন্ডারে কাজ করে। তোর উপরে নজর রাখতেছে, শ্রেয়ারে নিয়া বাড়াবাড়ি করলেই তোরে এসে কলা ভর্তা করবো।”

“ভাই সত্যি বলতেছিস নাকি? না ফাজলামো করতেছিস শালা!”
“না ভাই সত্যিই বলতেছি। তুই মামারে জিগা।”
“মামা, ঐ পোলাডা কি মন্টু ভাইয়ের সাপোর্টার?”

কাদের মামা চা বানাতে বানাতে বলল,“হ। মন্টুর লগেই তো ঘুরাঘুরি করে দেখছি।”

শোনে ওয়াছির মুখ একদম সাদা হয়ে গেলো। “দূর! এই কোন ক্যাচালে পড়লাম!”
“এখন বল পালাইতে চাইতেছস নাকি?”
“হ ভাই, এখন বুঝতে পারতেছি ব্যাপারটা। তবে, পূজার আগে পালাব না।”
আমি চোখ ছোট করে বললাম,“পূজা দিয়ে তুই কি করবি?”
“ভাই পূজাটা শ্রেয়ার সঙ্গে কাটাব ঠিক করছি। তাই প্রতিমা বিসর্জনের আগে আমি নড়তেছি না।”
“এখন বুঝো ঠ্যালা। গতবার আমি স্কুলে সরস্বতী পূজা এরেঞ্জ করছিলাম বলে আমারে কুলাঙ্গার, মালাউন, মুসলিম নামের কলঙ্ক কতো কিছুই না বললি। পরে আরিফ আজাদের বই হাতে দিয়া বলছিলি লাইনে আসতে।”
“ভাই তোর নামটাই হিন্দুগো মতোন। তাই একটু তোর পিছনে লাগছিলাম আর কিছু না। তুই ঐটা এখনও মনে রাখছিস?”
“আর এখন তো নিজেই শালা হিন্দু মাইয়ার লগে লাইন মারতেছ। এখন ঐসব কথা কোয়াই গেলো?”
“ধুর ব্যাটা! ওরে বিয়ার পর মুসল্মান বানামু।”

“বুচ্ছি তোরে নিয়া পালানো যাইব না। তুই শালা নিজেই পুরা নষ্ট হয়া গেছিস।”
“ক্যান?”
“প্রেম করতেছিস ভাই ভালো কথা।কিন্তু এইখানেও মুসলমান হওয়ার শর্ত তুইল্যা দিলিই তো সব নষ্ট কইরা। যে বইটা পড়ে পালায় যাওয়ার কথা ভাবতেছি, ঐটায় তোদের মতো লোকেরাই হলো খুনী। শালা ধর্মান্ধ।”
“ভাই এতো চ্যাতছ ক্যান? আমি তো তোর মতো এতো জ্ঞানী না যে এতোসব বুঝব। কোন বইটা পড়ছস ঐটা বল। দেখি এমন কোন ছাই!”

“জহির রায়হানের আর কতোদিন। এখনই পড়ে ফেলতে পারিস। মাত্র ১৭ পৃষ্ঠার বই। তোরে ইপাব দিতেছি দাঁড়া। ইনবক্স চেক কর। পাইছস?”
“হ।”
“পড়।”


ওয়াছি পড়া শুরু করলো, আর আমি ওর দিকে পিঠ ঘুরিয়ে কাদের মামাকে বললাম,“মামা এইবার সিগারেট আমাদের ধরা উচিৎ। দাও তো একটা।”
“তোমার বাপ অফিস থেকে আসার সময় জিগাইয়া তারপর দিমু। এখন আমি পারুম না।”
“ধুর মিয়া। কি যে করো। অনান্য পাড়ার দোকানিরা পুলাপানদের নিজে যেচে সিগারেট আগায় দেয়। আর তুমি এখনও আমাগো ধরতেই দিলা না। এই পাড়ায় থাকলে আর জীবনে সিগারেট ধরা আমাদের হবে না। খালি এক বাবারে বলা। মেজাজ নষ্ট কইরা দাও মিয়া! একটা সিম্পল সিগারেটেও আজ পর্যন্ত টান দেয়া হইলো না।”
“চানাচুর ওয়ালা আসতেছে। চানাচুর খাও। হুদা চিল্লাও ক্যান?”
আমি সিগারেট না পাওয়ার দুঃখ ভুলতে দুই ঠোঙা চানাচুর নিলাম। ততোক্ষণে ওয়াছি পড়া শেষ করেছে। আমি একটা ঠোঙা ওর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,“কি বুঝলি?”
“দাঁড়া, বুঝতে দে।”
এরপর ওকে বুঝার সময় দিতে হয়। আমি তাই পা দুলিয়ে দুলিয়ে চানাচুর খাচ্ছি আর কাদের মামাকে ব্যবসায় উন্নতি সাধনের কিছু টিপস দিচ্ছি।
একটু পর ওয়াছি চানাচুর খেতে খেতেই বলল,“জহির রায়হান লোকটা দারুণ লিখত। এই পনেরো ষোলো পৃষ্ঠায় কি বোমাটা ফাটাইল দেখলি। আমারও এবার সব ছেড়ে দৌড় তুলতে ইচ্ছা করতেছে। শালা লাইফ সাক্স!”
“মামা গল্পটা কাদের একটু বল তো।”
“বইয়ের শেষ পাতায়ই তো লেখক বুঝায় দিছে, এই গল্প ভিয়েত্নাম, পাকিস্তান, ভারত, আফ্রিকা, বুখেনওয়াল্ড….আরকি যেসব জায়গায় লোকদের ধরে জানে মাইরা ফেলা হইতেছে সেইসব জায়গার লোকদের গল্প। এইকালে জহির রায়হান বাইচ্যা থাকলে হয়তোবা সিরিয়া, আফগানিস্তান, কাশ্মীর এইসব জায়গায়ও উল্লেখ করতেন।”

“এতো লোক মারা হইতেছে ক্যান এইটা বুঝতে পারছিস?”
“কি লিখছে পড়স নাই।
তবু মানুষ মানুষকে হত্যা করে।
ধর্মের নামে।
বর্ণের নামে।
জাতীয়তার নাম।
সংস্কৃতির নামে।

বুঝাই তো যাইতেছে,এইসব আজাইরা বিষয়ের জন্য লোকজন যত্তোসব আকাম কুকাম করে।”

“ধুর ব্যাটা। এইসব আজাইরা জিনিস হয় কেমনে? ধর্ম,সংস্কৃতি,জাতীয়তা তো একেকটা ভিত্তি। কিন্তু এইগুলাতে অন্ধ হয়া গেলেই তো সমস্যা। তখন না মানুষ অমানুষ হয়া যায়।
আর ঐ উনিশটা সাধারণ মানুষ যখন নিজে বেঁচে থাকার জন্য এক নবজাতককে মেরে ফেলল, ঐ পার্ট কি বুঝলি?”
“এই যে এই নষ্ট সমাজে থেকে থেকে আমরাও একদম নষ্ট হয়ে যাইতেছি বা যাব….হলো কি না?”
“এক্কেবারে খাপে খাপ। এখন তুই তাকায়া দেখ, তোর আশে পাশে কি কোনো সুস্থ স্বাভাবিক ধর্ম কিংবা সংস্কৃতি চর্চা , অথবা সুস্থ জাতীয়তাবাদ দেখতে পাইতেছিস? আমি যখন হিন্দুদের আচার অনুষ্ঠানে যাই, তখন তুই আমার নামের সঙ্গে মুনাফিক জুইড়া দিয়া ধর্ম রক্ষা করস। ইন্ডিয়ারে এক হাত দেইখ্যা জাতীয়তাবাদ দেখালি, কিন্তু জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য দাড়ায়ে হিন্দি গান গাইলে কিছু হয় না। আবার ইন্ডিয়া গরুর জন্য সোয়েটার বানায় দিতেছে যেনো ওদের শীত না লাগে, আবার আমাগো কুরবানিই হয় না ইন্ডিয়ান গরু ছাড়া। তো ব্যাপারটা কি বুঝলি?”

“পুরা দুনিয়া নষ্ট হয়া গেছে এইটা বুঝতে পারতেছি। কিন্তু এখন যে আমরা যে তপু আর ইভার মতো দৌড় তোলার কথা ভাবতেছি এতে লাভটা কি? সবকিছুই যখন নষ্ট, সবখানেই যখন আন্ধাইর তখন বিশ্বের কোন জায়গায় গিয়ে আলো পাবো বল তো? ওরা তো পায় নাই। খালি দৌড়াইতেই আছিল। তাই এই দেশ ছেড়ে কোথায় পালাব বল।”


আমি এইবার বিরাট বিজ্ঞের হাসি দিয়ে বললাম,“তুই দৌড়াবি ঠিক আছে। কিন্তু তোরে তো আর দৌড়ায়া একদম পৃথিবীর অন্য কোণায় চইলা যাইতে তো বলতেছি না। দৌড়াবি যতক্ষণ না শ্রেয়ার সঙ্গে প্রেম করার সময় ওর ধর্ম বদলানোর চিন্তাটা মাথা থেকে না যায়। এই কাদের মামার মতো লোকদের কাছে দৌড়ে আসবি, ইনি সিগারেটের ব্যবসা কইরাও আমাদের হাতে সিগারেট দিতেছেন না। দৌড়াবি যতোদিন না নববর্ষ পালন কইরা পরের শুক্রবার মসজিদে আইসা আমার সঙ্গে এই হিন্দুয়ানি কর্মের কুফল নিয়া তর্ক করা না বন্ধ করস। তপু আর ইভার মতো দৌড়ায় যাবি খালি। একদিন ঠিকই সমাজ নাহোক নিজে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁইচা যাবি।”

ওয়াছি এবার মাথা নাড়তে নাড়তে বলল,“এইবার ঠিক বুঝলাম ব্যাপারটা।”

পুনশ্চ: আমি যদ্দুর জানি আমার কোনো পরিচিতজনের goodreads নামের বস্তুটির সঙ্গে কোনো পরিচয় নেই। তবে কোনোভাবেও যদি এই রিভিউ আমার বা ওয়াছির কোনো আত্মীয় স্বজনের চোখে পড়ে যায় তবে জেনে রাখবেন, রিভিউ সম্পূর্ণ সত্য হয়েও হয় নাই। আমার ঐ সিগারেট চাওয়ার ঘটনাটা ডাহা মিথ্যা। দরকার হলে এ কথার সত্যতা কাদের মামার কাছে যাচাই করে নিবেন।
Profile Image for Abu Rayhan Rathi.
108 reviews
December 22, 2020
কিন্তু! সবাইকে হতাশ করে দিয়ে ঊনিশ জন মানুষের অভিসম্পাত কুড়োতে কুড়োতে শিশুটি ভূমিষ্ট হলো।

আর সঙ্গে সঙ্গে, দেহের সমস্ত শক্তি দিয়ে, ঊনিশ জনের একজন সেই বাচ্চাটির গলা টিপে ধরলো।


বাইরে শত্রু।তারা চিৎকার ��রছে ঊনিশ জন মানুষকে হত্যা করার জন্য।আর তাদের আগলে রেখেছে এক বুড়ি,বুড়ো,তিন ভাই আর তেরো-চৌদ্দ বছরের একটি মেয়ে।অপরদিকে ভয়ে জর্জরিত মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে বাড়ির ভেতরে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে। যেখানে সোজা হয়ে দাড়ানো তো দূরের কথা হাঁসের মতো গাদাগাদি হয়ে থাকতে হয়।

এমন সময় ওরা টের পায়,চিৎকার করা মানুষ নামের পশুগুলো তাদের অতি সন্নিকটে।তখনই ঊনিশ জনের মানুষের মধ্যে একজন সন্তান-সম্ভবা মহিলার প্রসব বেদনা শুরু হয়।মানুষগুলো ক্রুর চোখে জানান দেয় এটি উপযুক্ত সময় নয়।মহিলাটি আপ্রাণ চেষ্টা করে কিন্তু পারে না।ভূমিষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষগুলোর মধ্যে একজন গলা চেপে ধরে সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া নবজাতকটির।নিজেদের প্রাণের স্বার্থে কেউ মানুষটিকে বাধা দেয় না। এমনকি সন্তানটির বাবাও। পৃথিবীর প্রতি একবুক ঘৃণা আর বিতৃষ্ণা নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু ও তার মা।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এটি পুরো বইয়ের কাহিনীর সারাংশ নয়।বইটির একটি খন্ডিত অংশ মাত্র।আর ঐ অংশটুকু নিয়েই আমি বইটির আলোচনা করেছি।
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
373 reviews274 followers
October 9, 2014
জোরে একটা ধাক্কা খেলাম...খুব জোরে...

২০ পৃষ্ঠার একটা উপন্যাস, ছোট ছোট একেকটা বাক্য, কখনো দুই-এক শব্দের বাক্য কিন্তু জোরে ধাক্কা দিয়েছে...

"অন্ধকারের নীচে সমাহিত মৃত নগরী।
প্রাণহীন।
যেন যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত তার অবয়ব।
দীর্ঘ প্রশস্ত পথে কবরের শূন্যতা।
ভাঙা কাচের টুকরো। ইটের টুকরো। আর মৃতদেহ।
কুকুরের।
বিড়ালের।
পাখির।
আর মানুষের।
একটা।
দুটি তিনটি।"


এখানে লেখক জেনোসাইডের ভয়াবহতাকে, মানুষ ও মানবিকতার মৃত্যুকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে পাঠককে আঘাত করেছেন। সবখানেই লাগাম ছাড়া হিংসা আর প্রতিশোধ ছিঁড়েখুঁড়ে খায় মনুষ্যত্বকে, পৃথিবীর সর্বত্রই এক চিত্র-

"ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে হিরোশিমায়। আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটা এক সাদা কুত্তার বাড়িতে বাঁদি ছিলো। তার প্রভু তাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে হত্যা করে মেরেছে ভিয়েতনামে। আর আমার ভাই, তাকে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মেরেছে ওরা। কারণ সে মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতো।"


এই পশুত্বের শিকার নির্দোষ প্রাণহীন মানুষগুলো যেন আমি, আমরা।

"তপু আর ইভা চমকে উঠলো।
দেখলো। সেই অসংখ্য মৃতদেহের মাঝখানে ওদের দুজনের মৃতদেহও পড়ে আছে।"


আমার যারা মনুষ্যত্বকে ছিঁড়েখুঁড়ে যে খাচ্ছে তারাও আমরা নিজেরাই।

"শব্দের রাক্ষসগুলো আবার তাড়া করেছে পেছন থেকে।
পাগলা কুকুর নয়।
শূকর-শূকরী নয়।
কতগুলো মানুষ।
কতগুলো চেনা মুখ।
মায়ের। বাবার। ভাইয়ের বোনের।"


উপন্যাসটির প্রকাশকাল ১৯৭০। আচ্ছা, জহির রায়হান ১৯৭১ সালের পর কি নিজের এই উপন্যাসটি পড়েছিলেন? কী ভাবছিলেন তিনি? ওপারে বসে কি তিনি ভাবতে পারেন কিছু? তাহলে তিনি নিজের লাশ দেখে কি এই উপন্যাসটার কথা ভাবেন? আমি এই ক'দিন আগে পড়ছিলাম ১৯৭১:চুকনগরে গণহত্যা। সেই বইটির রিভিউ তে দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য উদ্ধৃত করেছিলাম। একটি নরেন্দ্র গাইনের,
"গোলাগুলি থাইমে গেল দুই তিন ঘণ্টা পর দেখি বহুলোক মইরা পইড়া আছে। যা দেখলাম, মা মইরা গেছে, শিশু বাঁইচা আছে। মরা মায়ের দুধ খাচ্ছে। দুধ খাওয়ার জন্য কানতেছে। এত লাশ হাঁটার জায়গা নাই। মরার উপর দিয়ে হাঁটি চলে আসলাম..."


আরেকটি সমরেশ মণ্ডলের,
"নদীতে এত লাশ ছিল যে নদী হাইটেই পার হওয়া যেত..."


আর আজ পড়া বইটির দুটো জায়গা উদ্ধৃত করি। প্রথম অংশঃ
"একবছর নদীতে কোনো স্রোত ছিল না। মরা মানুষের গাদাগাদিতে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শকুনরা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে দু-বছর ধরে।"


দ্বিতীয় অংশঃ
"একটি মৃত মা মাটি আঁকড়ে পড়ে আছে। আর স্তন থেকে চুইয়ে পড়া দুধে আর রক্তে মাটি ভিজে গেছে। পাশে চার-পাঁচ বছরের একটি আহত ছেলে শূন্যদৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে ওদের দিকে। আর একটি শিশু আকাশের দিকে হাত-পা ছুঁড়ে তীব্র কান্না জুড়ে দিয়েছে।"


নাহ...এই বই পড়া ঠিক হয়নি। বইপড়া শেষ হয়েছে আরো দুই ঘণ্টা আগে, এখনো আমি ক্রমাগত ঘামছি...
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
December 13, 2020
আর কতদিন!!!????

মানবজাতি বাঁচবে যতদিন। কি? বিশ্বাস হয় না! প্রমাণ দেবো? আচ্ছা, তাহলে হোক প্রমাণ!

কিসের প্রমাণ?


আমি মানবাত্না; আমি ধ্বংসযজ্ঞ, আমিই মৃত্যু আর আমি জাতিস্মর। আমি সব মনে রেখেছি। আমি মৃত্যু দেখেছি, দেখেছি ধ্বংস-স্তূপ, রক্তের নদীও তো দেখলাম নব গর্ভবতী নারীর মতো প্রস্ফুটিত হয়ে আছে, একটি শিশুকেও দেখেছি ফুটতে শুরু হওয়া কলির মতোন হাত তুলে বিশ্বাস করে উপরে তাকিয়ে বিচার দিচ্ছিল। আমি কত যুদ্ধ দেখেছি! হিটলার মরে গেছে! তুমিও দেখেছো বোধহয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, পাকিস্তান পাক-পবিত্র হয়েছে, মা-বোনেরা অপবিত্র!
আমি দেখেছি, অনেক দেখছি, আর দেখতেও পাচ্ছি যা সামনে ঘটবে!


দাঁড়াও! দাঁড়াও! হিটলারকে দেখেছি কিন্তু বাংলাদেশ কখন হলো আবার!?

ছিলে না বুঝি! কতসালে এই সাদাকাগজে বন্দী হয়েছো!?

১৯৭০ এ :(

আরে তাহলে তো বুঝবেই না। ১৯৭১ এ যে যুদ্ধ হল! কত লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্ত দেখলাম! কতক নারীকেও দেখলাম লাঞ্ছনা সইতে না পেরে আমাকে আলিঙ্গন করতে এল! সিরিয়া, ফিলিস্তিনের আর কিছু আছে কিনা দেখতে ইচ্ছা করে নি। ঐ বাচ্চার বিচার দেয়ার দৃশ্য দেখেই মন ভরে গেছে। মায়ানমারের আচার-ব্যবহারও একই। নিজের দেশের মানুষের সাথে কেউ এমন করে! এদিকটায় বসে আছি শুধু। এরা ভাল হবে না। সর্বোত্তম হয়ে কি লাভ হল? কোনো লাভ নেই!


কিন্তু তুমি আবার কে?? এত কিছু জানো কিভাবে? আর এত হতাশই বা কেন?


কি!??? আমি বড্ড হতাশ??? খুব নেগেটিভিটি আমার মধ্যে!? তুমি যা ভাবো তাই-ই তাহলে।
পরিচয় তো দিয়েছি-ই। আমি তো আগেই বললাম আমি ধ্বংসযজ্ঞ, মৃত্যু ¬_¬
একটা কথা বলি! আমার থেকে তুমিই বেশি হতাশ।কেউ শেষটা জানতে চায় তখনই যখন তার আর সহ্য ক্ষমতা থাকে না। আমি সব দেখি তো!

হ্যা! আমার আর সহ্য হয় না। আর কতদিন??

বললাম না! মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে ঠিক ততদিন!¬_¬

~১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

11 reviews51 followers
February 17, 2014
আমরা এখন কোথায়?
সাইপ্রাস?
ভিয়েতনাম?
আফ্রিকা?

বারবার ঘুরে ফিরে এই প্রশ্নখানা এসে বুঝিয়ে দেয়, "আর কতদিন" কোন বিশেষ দেশের গল্প নয়। আবার, কোথাও স্পষ্ট বোঝা যায়, এগল্প কোন বিশেষ ধর্ম, বর্ণ, জাতের মানুষেরও নয়। তবে ২৮ পৃষ্ঠার এই গল্পে কাদের কথা আছে!?

তোমার আমার দেশ আলাদা, চল তবে যুদ্ধ করি। ধর্ম আলাদা, চল দাঙ্গায় নামি। বর্ণ আলাদা, তোমার রক্ষে নেই। যুগে যুগে, দেশে দেশে জাতীয়তাবাদ, ধর্ম, বর্ণ, জাতের নামে যত অন্যায়, খুনোখুনি হয়েছে তার একটা সামগ্রিক চেহারা উঠে এসেছে এই বইটিতে। একটা বাক্সে বন্দী কতগুলো মানুষকে ছেলেমেয়ের বাধা তুচ্ছ করে দিনের পর দিন বাঁচিয়ে রাখেন এক মা, খুঁজে ফেরেন তাঁর হারিয়ে যাওয়া ছেলে তপুকে। এখানটায় মনে হবে, আপনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কোন গল্প পড়ছেন। কিন্তু তাড়া খেয়ে পাগলের মত ছোটা তপুর সাথে যখন একই ভাবে তাড়া খেয়ে পালানো লোকদের দেখা হয়ে যায়, আর তাদের বলতে শোনা যায়, "ওরা আমার ছেলেটাকে হত্যা করেছে হিরোশিমায়। ওরা আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে মেরেছে বুখেনওয়াল্ডে গুলি করে।", ভুল ভেঙ্গে যায়। খুনি, ধর্ষকের আলাদা কোন চেহারা, দেশ, ধর্ম, জাত নেই। আবার, ধর্ষিত আর খুন হয়ে যাওয়া মানুষগুলো, তাড়া খেয়ে পালানো মানুষগুলোরও আলাদা কোন জাত নেই। মনে হয়, যেন দুটো জাত আছে। একটা জাত মার খায়, আরেকটা জাত মার দেয়! তবু মানুষ ভুলে যায়, ভুল করে। আর ত��ই তপুর মা ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মূহুর্তে বদলে যান। ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাক্সবন্দী মানুষগুলোর উপর চড়াও হতে যান দা, ছুরি, লোহার শিক নিয়ে। কারণ? যারা তপুকে খুন করেছে তাদের আর এদের আশ্রয়ে নির্ভয়ে ঘুমন্ত মানুষগুলোর ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, ভাষা এক। অতএব, প্রতিশোধ অনিবার্য!

তবে, খুনোখুনি আর ধ্বংসের মানব ইতিহাসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনো পৃথিবীতে টিকে আছে ভালবাসা। খুঁজতে খুঁজতে তপু ফিরে পায় ভালবাসার ইভাকে। তপুকে আবার ফিরে পেয়ে সংসার, সন্তানের স্বপ্ন দেখে ইভা। "কেন ভালবাস?"- এই সুপ্রাচীন প্রশ্নের এক সুপ্রাচীন উত্তর শোনা যায়,"ভাল লাগে, তাই ভালবাসি।" কুড়িয়ে পাওয়া একটি শিশুর মা বনে যায় ইভা, অবলীলায়! সেই সন্তানকে হারিয়ে তপু আর ইভা যখন দিশেহারা, তখন তপুর মনে হয় মায়ের কাছেই আছে পরম আশ্রয়। বহুদিন পর মায়ের দোরগোড়ায় এসে পরম নির্ভরতার হাতেও যখন খুনের দাগ দেখা যায়, ইভা তখন ভয় পেয়ে আবার ছুটতে শুরু করেছে। আর তপু? সন্তান হারিয়েছে,এবার যেন মাকেও হারাতে হল তার! তাহলে? পালাও, ছুটে চল...!

মাত্র ২৮ পৃষ্ঠায় ছোট ছোট কতগুলো বাক্যে লেখা এই গল্প এক নিঃশেষে পড়েছি। দুঃখ, অনিশ্চয়তা, রক্ত আবার এরই মাঝে ভালবাসা, এমনকী কখনও নিতান্তই রাস্তার ধারে পড়ে থাকা একটি বাচ্চাকে বাঁচানোর জন্য আকুলতা- এসবই এতো জ্বলজ্বল করে চোখের সামনে যে, মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়! এতো ছোট আকারে লেখা গল্পের পরিসর এতো বড় যে দ্বিতীয়বার পড়েও একই রকম মুগ্ধ হয়েছি, যেমন হয়েছিলাম প্রথমবার। জহির রায়হানের সহজ, সাবলীল আর জীবন্ত লেখনীতে আবারো মোহগ্রস্থ হয়েছি। এত কম বয়সে তিনি চলে গেলেন! বড্ড ক্ষতি হয়ে গেল বাংলা সাহিত্যের।
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
December 7, 2020
কি পড়েছি,কি বুঝেছি, কি জেনেছি এই সবটুকু বোধ না হয় আমারই থাক, অনুভূতি প্রকাশের ভাষা তো সবসময় থাকে না,সবার থাকে না,সবটা থাকাটাও হয়ে ওঠে না।বোঝার আর বোঝানোর জন্য অনুভূতিশূন্য ভাবলেশহীন পৃথিবীতে মানুষ,শব্দ খুঁজে পাওয়া ও যায় না।

ভয়,দ্বিধা,শঙ্কা, মানবিকতা বা অমানবিকতা,হত‍্যা,স্বপ্ন আর নানা কথার ফাঁকে শুধু এই একটি জায়গাই আমার মন জুড়ে রয়ে গেল

"তুমি আমাকে ভালোবাসতে গেল কেন বলো তো?
-জানি না,ভালো লেগেছে,ভালো লাগে,তাই ভালোবাসি"

রেটিং:🌠🌠🌠🌠
Profile Image for Sukanta Bhattacharjee .
52 reviews11 followers
August 24, 2021
মানুষে মানুষে বিভেদ নতুন কোন কিছু নয়। শুধু, বিভেদ বললে ভুল হবে। হিংসা, সংঘাত, মারামারি, খুনোখুনি চলছিল, চলছেই। বিজ্ঞান বলে, বিবর্তনের নামে মানুষ আধুনিক হয়েছে। কোথায় আধুনিকতা? কোথায় মানবিকতা? পত্রিকার পাতায় সহিংস কলাম গুলো চোখে আঙুল দিয়ে কি দেখিয়ে দেয় না, কত বড় মিথ্যার চাদরে আমরা আরামে ঘুমিয়ে আছি?

মাত্র কুড়িটা পৃষ্টার মধ্যে রায়হান সাহেব তুলে ধরেছেন একটা প্রগাঢ়, প্রাচীন সত্যকে৷ যে সত্যকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। আমি অস্বীকার করতে পারি না। সাদাচোখে আমরা সবাই ভালোমানুষির ভেক ধরে চলেছি। মনের বাগানে করে চলেছি হিংসার চাষাবাদ। এই ফসল নষ্ট হোক, ধ্বংস হোক। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, সাদা কালোর বিভেদ ঘুচুক৷।
আক্ষেপ করে আমরাও একে অন্যকে প্রশ্ন করি, এভাবে আর কতদিন চলবে? আমরা কি পারিনা নিজেকে প্রশ্ন করতে, "আর কতদিন?"
Profile Image for Rafia Rahman.
416 reviews215 followers
July 26, 2023
যুদ্ধ!

শুধুই কি একটা শব্দ? না...
আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ, নিকৃষ্ট, বিভৎস, নির্মম, জঘন্য একটা শব্দ।

পৃথিবীর সেই আদিকাল থেকেই সৃষ্টির সেরা জীবেরা খেলে যাচ্ছে রক্তের নৃশংস খেলা। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ক্ষমতা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে লড়াই করেই যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। আশ্চর্য লাগে ভাবতেই কীসের আশায় পৃথিবীকেই মানুষ নরক বানিয়ে তুলেছে?

কয়েক পেজের একটা বই কিন্তু কি চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে যুদ্ধের ভয়াবহতা! তপু, ইভা কখনও কি ভেবেছিল যে গৃহে তার প্রিয়জনেরা আছে সেখানে অন্যদের প্রিয়জনেরা নিরাপদ নয়? যুদ্ধ দুর্বলকে যেমন শক্তিশালী করতে পারে তেমনি নিরীহকে নৃশংসও করতে পারে। যুদ্ধ এমন একটা সময় যে বলা যায় না কার ভাগ্যে কী আছে তো কে কীভাবে পরিবর্তন হয়ে যাবে! শুধু একটা আশা থাকে যুদ্ধ শেষ হলে শান্তি ফিরে আসবে... কিন্তু যারা যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখেছে, প্রিয়জনদের হারিয়েছে তারা কি কোনোদিন শান্তি পাবে? অন্ধকার স্মৃতিগুলোর সাথে কি সারাজীবন যুদ্ধ করে যেতে হবে না?

এখনও যখন নানু-নানী, দাদু-দাদীদের থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো শুনি ভয়ে গায়ে কাটা দিয়ে ওঠে!
Profile Image for Zunaed.
54 reviews119 followers
September 27, 2016
"একটা ছেলে সামনে এগিয়ে যেতে আরেকজন পেছন থেকে ধরে ফেলল। কোথায় যাচ্ছ?
দরজা খুলে দেব।
না। না। না। অনেকগুলো কণ্ঠস্বর একসাথে প্রতিবাদ করল।
না। না। না।
কেন?
ওরা আমাদের মেরে ফেলবে।
মরতে হলে বিশ্বাস করেই মরব।"
এরা মরে। বিশ্বাস করেই মরে। ধর্মের নামে। জাতীয়তার নামে। ভাষার নামে। গোত্রের নামে। দোষ না করেই মরে। অথবা দোষ করেই মরে। মানবজন্মের অপরাধ কি যেনতেন অপরাধ?তাই,
"অন্ধকারের নীচে সমাহিত মৃত নগরী।
প্রাণহীন।
যেন যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত তার অবয়ব।
দীর্ঘ প্রশস্ত পথে কবরের শূন্যতা।
ভাঙা কাচের টুকরো। ইটের টুকরো। আর মৃতদেহ।
কুকুরের।
বিড়ালের।
পাখির।
আর মানুষের।
একটা।
দুটি তিনটি।"

কে নেই এই লাশের মিছিলে? কোথায় যায়নি এই লাশের কাফেলা?
"ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে হিরোশিমায়। আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটা এক সাদা কুত্তার বাড়িতে বাঁদি ছিলো। তার প্রভু তাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে হত্যা করে মেরেছে ভিয়েতনামে। আর আমার ভাই, তাকে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মেরেছে ওরা। কারণ সে মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতো।”

মানুষ এখন 'সভ্য'। আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাই তার অস্ত্রও আগের চেয়ে বেশি। অনেক শক্তিশালী। আর হাতে লেগে থাকা রক্ত? সেও অনেক বেশি। দিন দিন আরো 'সভ্য' হচ্ছি। আরো হব। আরো রক্ত দিয়ে কিনব 'সভ্যতা'। রক্ত দিয়ে 'সভ্যতা'র কেনাবেচা চলেছে আগে। চলছে আজো। চলবে। কিন্তু কতদিন? আর কতদিন?
Profile Image for Naeem Ahmed.
64 reviews4 followers
January 10, 2025
"তুমি কাঁদছো কেন গো। কেঁদে কী হবে। আমার দিকে চেয়ে দ্যাখো আমি তো কাঁদি না। অফুরন্ত মিছিলের একজন বললো। ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে হিরোশিমায়। আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটা এক সাদা কুত্তার বাড়িতে বাঁদি ছিলো। তার প্রভু তাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে হত্যা করেছে ভিয়েতনামে। আর আমার ভাই, তাকে ফাঁসে ঝুলিয়ে মেরেছে ওরা। কারণ সে মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতো।"

জহির রায়হানের প্রায় সমস্ত বই পড়া হয়ে গেল আমার (একুশে ফেব্রুয়ারি বাদে)। তাঁকে আমি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা ঔপন্যাসিক বলবো। এতো সরল ভাষায় কঠিন কঠিন কথা বলার নৈপুণ্য আর কারো মাঝে দেখিনি আমি।
এই বইটা মাত্র বিশ পৃষ্ঠার। আর এই অল্প জায়গার মধ্যেই লেখক তাঁর যে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, তা আমাকে অবাক করেছে। প্রতিটা শব্দের বুনন ছিল অসাধারণ। আর এই বইতেই আমি পেয়েছি আমার এই অব্দি পড়া সব থেকে নির্মম কিছু বাক্য।
বইটা আমার আবার পড়া লাগবে!




আজ আবার পড়লাম বইটা। আগের মতই অসাধারণ লাগলো!
Profile Image for Miraj.
27 reviews39 followers
November 29, 2020
'ছোট মরিচের ঝাল বেশি' কথাটার যেনো বাস্তব উদাহরণ এই বইটি।
মাত্র ২৮ পৃষ্ঠার এই লেখা আপনাকে বিশাল একটা ধাক্কা দিতে বাধ্য।
Profile Image for Faiza.
217 reviews21 followers
July 16, 2025
10/10 recommended as mandatory text in educational institutions. Timeless masterpiece.
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
November 25, 2020
থমকে আছি এটা শেষ করে!!
কি বিষন্নতা আর হাহাকারে ঘেরা লেখা!
Profile Image for Nowrin Samrina Lily.
157 reviews15 followers
September 26, 2021
কিন্তু! সবাইকে হতাশ করে দিয়ে ঊনিশ জন মানুষের অভিসম্পাত কুড়োতে কুড়োতে শিশুটি ভূমিষ্ট হলো।

আর সঙ্গে সঙ্গে, দেহের সমস্ত শক্তি দিয়ে, ঊনিশ জনের একজন সেই বাচ্চাটির গলা টিপে ধরলো।

নিচে মৃত্যুর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ওরা এখন এ ঘরে এসে আশ্রিত মানুষগুলোকে খুঁজছে। প্রসূতির চোখ জোড়া হয়তো পৃথিবীর প্রতি ঘৃণায় একবার কুঞ্চিত হলো। তারপর বিবর্ণ মণিতে প্রাণের চিহ্ন রইলো না। আর বাচ্চাটার সঙ্গে সঙ্গে তার মা-ও মারা গেলো।

এতোটুকু পড়ে নিজেকে সামলানো আসলেই দায় হয়েছিল :(
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for HR Habibur Rahman.
284 reviews54 followers
January 11, 2022
ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে হিরোশিমায়। আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটা এক সাদা কুত্তার বাড়িতে বাঁদি ছিলো। তার প্রভু তাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে হত্যা করে মেরেছে ভিয়েতনামে। আর আমার ভাই, তাকে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মেরেছে ওরা। কারণ সে মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতো।।
Profile Image for Salmir Saadat.
35 reviews22 followers
February 25, 2018
এতছোট উপন্যাস এতভালো লাগবে ভাবিনাই।উপন্যাস না ,কবিতা পড়তেছিলাম মনে হচ্ছিলো।
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
September 11, 2021
চারিদিকে শুরু হয় দাঙ্গা। এটা একটা দেশের জনগোষ্ঠীর ধর্মের কারনে ছেড়ে যেতে হবে নিজের চেনা জানা সব কিছু। এখন নিজের দেশ আর নিজের রইলো না।
এই দাঙ্গার ফলে এক পরিবারে এসে আশ্রয় নেয় ১৬/১৭ জন মানুষ, এদের মধ্যে আছে বৃদ্ধ, শিশু ও সন্তান সম্ভবা এক মহিলা। বাইরে থেকে এদের উপস্থিতি বুঝতে পারলে রক্ত ভাসিয়ে দিবে তাই বাড়ির বুড়ি মহিলা খুব সাবধানে ওদের লুকিয়ে রাখে। কিন্তু তার তিন ছেলে এতে খুব বিরক্ত, তারা চায় না এদের আশ্রয় দিতে।

একই ভাবে বুড়ির ছোট ছেলে তপু আটকে আছে, বেঁচে আছে না মারা গেছে তা তারা জানে না। এক সময় খবর আসে তপু মারা গেছে। এবার এই আশ্রিত দের তাহলে কি করবে এরা?
কারন এদেরই ধর্ম ভাইয়েরা তপুকে মেরে ফেলেছে।

দেশ বিভাগকে কেন্দ্র করে দাঙ্গায় যে ভয়াবহ রুপ নেয় তা জহির রায়হার স্পষ্ট তুলে ধরেছেন " আর কত দিন" বইটাতে। নিজের স্বজন হারানো প্রতিহিংসাপরায়ন মন আরও এক হিংস্রতার জন্মদেয় যা সেই পরিস্থিতিতে একটা ভয়াবহ রুপ ধারন করে।
Profile Image for Afifa Habib.
89 reviews273 followers
December 3, 2020
আমি স্তব্ধ হয়ে বসে আছি। এই বই সম্পর্কে কিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব না। এর গভীরতা একবার স্পর্শ করে ফেললে মনের ভেতরটাও গভীর বিষাদে ছেয়ে যায়। আর সেই বিষাদের কালো ছায়া কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে নিজের ভেতরটাই।
কোথায় ছিল এতদিন বইটা? আমি জানতাম না কেন এটার কথা?
Profile Image for Sultan Ahmed.
31 reviews28 followers
December 6, 2020
হাল আমলের ৪০০ পেজের বেস্ট সেলার উপন্যাসের চেয়ে ২৮ পেজের এই ছোট বইয়ের মূল্য অনেক বেশি।
তপু আর ইভার সাথে আমিও যেনো ছুটে চলছিলাম।জীবনের জন্য।বাঁচার জন্য।সুখের জন্য।
Profile Image for Sidratul Muntaher.
4 reviews2 followers
August 11, 2021
আদি থেকে আজ পর্যন্ত আমরা মানুষ যেন এই চক্রের মধ্যেই আবদ্ধ। পড়া শেষ হলেও মনে হবে এখনো ওই চক্রের মধ্যেই আছি।
শুরু আছে ঠিকই, শেষ অসীমে!
Profile Image for Rocky Rahman.
106 reviews10 followers
January 9, 2025
বইটার মূল বিষয়বস্তু হলো যুদ্ধের নৃশংসতা, কোনো নির্দিষ্ট যুদ্ধ নয়, এই মানব সভ্যতার সকল যুদ্ধের নৃশংসতা হোক তা ধর্ম, বর্ণের, জাতীয়তার যুদ্ধ।
বইয়ের একটি লাইনেই তা ফুটে উঠে,
"ওরা আমার ছেলেটাকে হত্যা করেছে হিরোশিমায়। ওরা আমার  মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটাকে ধর্ষণ করে মেরেছে  আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে মেরেছে বুখেনওয়াল্ডে গুলি করে।"
পুরো বইটা জুড়ে একদল থেকে একদল মানুষ লুকিয়ে বেঁচে রয়েছে, কিন্তু সেই ঘাতকরা কারা? উত্তরটা খুবই নৃশংস। সেই উত্তরে লুকিয়ে রয়েছে মানুষের সবথেকে নিকৃষ্ট পরিচয়। সেই জন্যই তো মানুষ ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন বর্ণ, ভিন্ন দেশের, ভিন্ন মতাদর্শের মানুষের প্রতি মমতা প্রদর্শন করলেও একসময় গিয়ে তারাও তাদের উপর নৃশংসতা চালায়।
ঠিক একই কারনে পুরো বইতে তপু যেনো তার পরিবারের কাছে ফিরত যায় সেই দোয়া করি, তপু যখন যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় দেখে তখনও দোয়া করি তপু যেনো পরিবারের কাছে ফিরতে পারে, কিন্তু তপু যখন পরিবারের কাছে ফেরত যায় তখন আমাদের কাছে পুনরায় মানব জাতির নিকৃষ্ট লুকোনো সেই আদিম পরিচয় উন্মোচন হয়ে উঠে।
আচ্ছা, ১৯৭০ সালে বইটা রচনাকালে জহির রায়হান কি একবারও ভেবেছিলেন পরের বছরই তার দেশে এতো বড় একটা গণহত্যা হবে!
Profile Image for Mosharaf Hossain.
128 reviews99 followers
November 25, 2016
না ভীষণ ধাক্কা খেয়েছি। এখনো ঘামছি। এত কম শব্দে, এত কম কথা���় একজন লেখক কীভাবে পারে মগজে আগুন ধরাতে? শিরা উপশিরায় রক্তস্রোত বাড়িয়ে দিতে? জহির রায়হান বলেই সম্ভব?

"নিজের সন্তানের নির্মম মৃত্যুর কথা ভেবে অবিরাম বৃষ্টিধারার মাঝখানে নীরবে দাড়িয়ে রইলেন তিনি।
দুচোখ থেকে ঝড়ে পড়া অশ্রু, বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে, দু গণ্ড বেয়ে গড়িয়ে পড়লো নীচে। তুমি কাঁদছ কেন গো। কেঁদে কি হবে। আমার দিকে চেয়ে দেখ আমি তো কাঁদি না। অফুরন্ত মিছিলের একজন বললো। ওরা আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে হিরোশিমায়। আমার মাকে খুন করেছে জেরুজালেমের রাস্তায়। আমার বোনটা এক সাদা কুত্তার বাড়িতে বাঁদি ছিলো। তার প্রভু তাকে ধর্ষণ করে মেরেছে আফ্রিকাতে। আমার বাবাকে হত্যা করেছে ভিয়েতনামে। আর আমার ভাই, তাকে ফাঁসে ঝুলিয়ে মেরে ওরা। কারণ সে মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতো।
কিন্তু আমি তো কাঁদি না। তুমি কাঁদছ কেন।
বিষণ্ণ বুড়িমা স্তব্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন সেই লোকটার দিকে। লোকটা থামলো না। একহাঁটু পানি আর কাদা ডিঙিয়ে সে এগিয়ে গেলো। সামনে। সহস্র শরণার্থীর অবিরাম মিছিলে। "

আর কতদিন জহির রায়হানের ছোট্ট একটি উপন্যাস, যেখানে লেখক অনবদ্য শৈল্পিক ছোঁয়ায় চিত্রায়িত করেছেন বিপন্ন মানবতাকে। ‘আর কত দিন’ শুরু হয়েছে হতাশার পিঠে আশার কথা শোনাবার আকুতি নিয়ে, মানবতাকে রক্ষার নীরব আর্তনাদ নিয়ে। অল্পকটি কথায় লেখক মানবতার শত্রু এসব পশুদের অনাচারকে তুলে ধরেছেন। প্রতিটা চরিত্র শুধু বারবার প্রশ্ন করে যায়, আর কতদিন এই অনাচার? হিংসা? রক্ত নিয়ে খেলা? আর কতদিন এতসব মৃত্যু?
August 1, 2021
এই বইয়ের রিভিউ দেওয়া যায় না। এই বই নিজেই এর রিভিউ। ২২ পৃষ্ঠা! সব মিলিয়ে। কিন্তু এই এর প্রত্যেক টা লাইন গায়ে শিহরণ তোলার মতো।

হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা ইতিহাসের সেই প্রাচীন, বর্বরতম অধ্যায় টাকে কলম দিয়ে বন্দি করেছেন তিনি। জহির রায়হান। সেই তাদের কথা তুলে এনেছেন যারা কিনা নিজেদের ভাইদের,মা দের, মেয়েদের জন্য প্রচন্ড ভালোবাসা দেখায়,প্রচন্ড আবেগ ওদের, প্রচন্ড রকম ভাবে কবিতা রাখে, প্রচন্ডরকম ভাবে ভালোবাসে। অথচ ওদের সেই হৃদয়, সেই কবিতার হাত সেই ভালোবাসার জন্য ব্যাবহৃত হওয়া ঠোঁটের দুজোড়া আস্তরণ অন্য কারো ভাইদের জন্য,মাদের জন্য,মেয়েদের জন্য ভালোবাসা দেখায় না। সেখানে শুধুই হিংসা৷ শুধুমাত্র ঘৃণায় ভরপুর সেটি।

সেই দীর্ঘদিন, দীর্ঘসময় ধরে চলে আসা হাজারো, লক্ষ দীর্ঘশ্বাসের নির্লজ্জতার ইতিহাস ‘আর কতদিন।’
Profile Image for Henry Ratul.
64 reviews116 followers
September 30, 2017
** আর কতদিন **
** ৫ তারকার মধ্যে ৩ তারকা **

"জহির রায়হান" বরাবরই তার সমকালীন সময়ের থেকে চিন্তা-ধারায় বেশ এগিয়ে ছিলেন। তার প্রকাশ পায় তার গল্প-উপন্যাসের মধ্য দিয়ে।

লেখকের প্রত্যেকটা উপন্যাস সামাজিক এক একটা বিষয়কে তুলে ধরে। ঠিক এই উপন্যাসটি satire-এর মাধ্যমে তুলে ধরেছে জাতিতে-জাতিতে, ধর্মে-ধর্মে, বর্ণে-বর্ণে বিভেদ কিংবা দ্বন্দ্বের কথা।

উপন্যাস হিসেবে "আর কতদিন" বেশ ছোট হলেও পড়বার সময় গভীর মনোযোগের প্রয়োজন; যেহেতু satire-এর মাধ্যমে লেখক দ্বন্দ্ব-বিদ্বেশ্যের কথা তুলে ধরেছেন।

৩ তারকা দেয়ার কারণে satirical ধরনের লেখা আমার খুবই অপছন্দের। কেননা গল্প/উপন্যাসটার গভীর অর্থ বুঝবার জন্য প্রয়োজন হয় গভীর মনোযোগের। অনেক পাঠক হিসেবে ধরা মুশকিল হয়ে পরে যে লেখক কি বুঝাতে চাচ্ছেন।
Profile Image for Maysha Maliha  Mite.
8 reviews3 followers
June 10, 2021
"তবুও মানুষ মানুষকে হত্যা করে।
ধর্মের নামে।
বর্ণের নামে।
জাতীয়তার নামে।
সংস্কৃতির নামে।"

'আর কতদিন'! দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সেদিন এখনো আসেনি। এখনো পৃথিবীতে যুদ্ধ - বিগ্রহে মানুষ মরছে। প্রথমে চিন্তা করছিলাম কোন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এই উপন্যাস রচিত হয়েছে। পরে ইন্দোনেশিয়া, গ্রীস, সাইপ্রাস, ভিয়েতনাম, জেরুজালেম, হিরোশিমা সবগুলা নাম দেখে বুঝলাম সারা বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত। এই প্রেক্ষাপট এখনো একটু বদলায়নি। মানুষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কতটা নিষ্ঠুর হয়, যুদ্ধই না কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা এত অল্প পরিসরে ফুটে উঠেছে! এই নিষ্ঠুরতম পৃথিবীতে তপু আর ইভার ভালোবাসার জায়গা কতটুকুই বা!

হ্যাপি রিডিং☺
১০.০৬.২০২১
Profile Image for Imran Shorif Shuvo.
86 reviews30 followers
August 5, 2021
অন্যান্য রিভিউগুলো পড়ে বড্ড ওভাররেটেড মনে হয়েছিল। তবে এখন পড়ার পর তেমনটা আর ঠেকছে না।
ইবনে সিনা যেমন দৈর্ঘ্যের হিসেবে বড় না চেয়ে প্রস্থের হিসেবে বড় জীবন চেয়েছিলেন, তেমনই দৈর্ঘ্যে ক্ষীণকায় হলেও এই বইটি অসাধারণ গভীরতার!
অবশ্যপাঠ্য বই, চোখ বুজে সুপারিশ করার মতন।
Profile Image for Rakib Hasan.
455 reviews79 followers
December 24, 2020
মাত্র ২০-২৫ পৃষ্ঠার একটা গল্প, ছোট ছোট বাক্য, কিন্তু অদ্ভুৎ রকমের বিষন্নতায় ভরা। অল্প মুহূর্ত আমিও তপু,ইভার সাথে ছিলাম বাচার আকুতি নিয়ে।
Profile Image for Maysha Rashid.
10 reviews7 followers
October 21, 2025
প্রতিটি লাইন কি মারাত্মক ‼️
Profile Image for Rana Khan.
106 reviews
December 30, 2021
আমি মানুষকে বলতে চাই...

- মানুষ তুই করেছিসটা কি? 😞
Displaying 1 - 30 of 73 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.