Leela Majumdar (Bengali: লীলা মজুমদার Lila Mojumdar) was a Bengali writer. Her first story, Lakkhi chhele, was published in Sandesh in 1922. It was also illustrated by her. The children's magazine in Bengali was founded by her uncle, Upendrakishore Ray Chaudhuri in 1913 and was later edited by her cousin Sukumar Ray for sometime after the death of Upendrakishore in 1915. Together with her nephew Satyajit Ray and her cousin Nalini Das, she edited and wrote for Sandesh throughout her active writing life. Until 1994 she played an active role in the publication of the magazine.
Creative efforts : An incomplete bibliography lists 125 books including a collection of short stories, five books under joint authorship, 9 translated books and 19 edited books. Her first published book was Boddi Nather Bari (1939) but her second compilation Din Dupure (1948) brought her considerable fame From the 1950s, her incomparable children's classics followed. Although humour was her forte, she also wrote detective stories, ghost stories and fantasies.
Her autobiographical sketch 'Pakdandi' provides an insight into her childhood days in Shillong and also her early years at Santiniketan and with All India Radio. Apart from her glittering array of children's literature, she wrote a cookbook, novels for adults (Sreemoti, Cheena Lanthan), and a biography of Rabindranath Tagore. She lectured on Abanindranath Tagore and translated his writings on art into English. She translated Jonathan Swift's Gulliver's Travels and Ernest Hemingway's The Old Man and the Sea into Bengali. Satyajit Ray had thought of filming Podi Pishir Bormi Baksho. Arundhati Devi made it into a film in 1972. Chhaya Devi played the role of the young hero, Khoka's famed aunt Podipishi.
Awards : Holde Pakhir Palok won the state award for children's literature, Bak Badh Pala the Sangeet Natak Akademi Award, Aar Konokhane Rabindra Puraskar. She had also won the Suresh Smriti Puraskar, Vidyasagar Puraskar, Bhubaneswari Medal for lifetime achievement, and Ananda Puraskar. She has been awarded the Deshikottama by Visva Bharati, and honorary D.Litt. by Burdwan, North Bengal and Calcutta Universities.
মন ভালো করার জন্য আদর্শ একটা বই। নির্বিকারচিত্তে নিরীহ কৌতুক বলেই হাসতে হাসতে কীভাবে পেটে খিল ধরিয়ে দেওয়া যায় তা লীলা মজুমদার অবলীলায় দেখিয়েছেন (এতোদিন পর সব মতামত গ্রহণ করার সুযোগ নেই অবশ্য।) লেখিকা বলেছেন, চার ধরনের গল্প সবচেয়ে বেশি জমে- ভূতের গল্প, চোরের গল্প, প্রেমের গল্প আর বাঘের গল্প। কিন্তু শুধু এদের গল্প নয়, লেখিকা যে কোনো ধরনের গল্পই জমিয়ে বলতে পারঙ্গম। তাঁর বয়ানে প্রায় শতবর্ষ আগের মানুষ ও সময় জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠেছে। এমন সরস ও আনন্দঘন বই আমি খুব বেশি পড়িনি। হাইলি, হাইলি রেকোমেন্ডেড!
এক ঝকমকে রৌদ্রছায়াময় দুপুরে তীব্র গরমে তিষ্ঠোনো যখন প্রায় পরাবাস্তবের কাছাকাছি ঠিক সেই সময় এক পশলা বৃষ্টির মতো প্রশান্তির প্রাঙ্গনে আনাগোনা হলো লীলাদেবীর মনিমুক্তোখচিত সরেস সুন্দর নির্মল লেখনী "খেরোর খাতা"।
প্রতি পরতে যার অতি আদরে কখনো আড়ম্বরে কখনো বা অতি সাধারন কিন্তু সুশোভিত শব্দে সাজিয়ে দিয়েছেন শৈশব থেকে প্রৌঢ় কালের সব গল্প।হাস্য রসে অনায়াসে ঝাঁপি খুলে ঝুড়ি ভরে রাঙিয়ে উঠা সময়ের পরিক্রমনরেখায় অতিক্রম করার মোহনীয় শক্তির ব্যঞ্জনাময় সুললিত সৌষ্ঠব বর্ননায় পটে আঁকা ছবির মতো ফুটে উঠেছে সব না দেখা চরিত্রের আলোকিত আনন্দময় অবয়ব।
পড়ে হেসেছি,ক্লান্তমনে কিঞ্চিত সব মন খারাপের পাখিরা হুটোপুটি ছেড়ে চুপটি করে মিষ্টি সুরে মুখরিত কল্লোলে গেয়ে উঠেছে,
ভালো থাকার গানেরা বইয়ের পাতায় লুকিয়ে রয়েছে এখনো এই জগতে।
"ত্রিশ বছর আগে সম্পাদকমশাইরা গল্প চাইলেই আমি জিজ্ঞাসা করতাম, ‘কীসের গল্প লিখব?’ তাঁরা বলতেন, ‘হয় প্রেমের, নয় ভূতের, নয় চোরের।’ কাজেই আমিও বুঝে নিলাম ওই তিনটিই হল ছোট গল্পের প্রধান উপজীব্য। তারপর অনেক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি ওই তিনটির মধ্যে আবার শেষেরটিই হল প্রধান, প্রথমটি নয়। এখন দেখছি চারদিকে ছড়িয়ে আছে চোরের গল্পের সামগ্রী। জ্যান্ত জ্যান্ত চোরের গল্প, বানাতেও হয় না"
খেরোর খাতাকে আসলে বলা যেতে পারে আত্মজৈবনিক-হাস্যরসাত্মক বই। এইসব মজার গল্পে উঠে এসেছে এমন সব মানুষ যারা লীলা মজুমদারের কাছের, যেমন: উনার মা-বাবা, রবীন্দ্রনাথ এর চিকিৎসা দেখে লীলার চিকিৎসা করার সখ জাগা, আশেপাশে এবং ঘরের মানুষের bitching(কারণ সেই সময়ের মানুষ একসাথে থাকতো এবং বিচিং করতো। তবে একসাথে থাকতো, যা দরকার। কিন্তু আজকাল আমাদের আত্মীয় বা পাশের প্রতিবেশীর সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। আমরা নিজদের নিয়ে এই ধোঁয়া ধোঁয়া, প্রাণশূন্য শহরে দারুণ ব্যস্ত)
তো লীলা মজুমদারের এই গল্পগুলো মিষ্টির মতো। দিনে দু তিনটা করে মুখে নিবেন, আর মন ভাল হয়ে যাবে। নিজের চারপাশের মানুষ নিয়ে লীলা মজুমদারের এই মজার গল্পগুলো আপনাকে খুব যে হাসাবে এমন না, তবে লেখার স্টাইলে এমন এক হাস্যরসাত্মক ব্যাপার আছে যার কারণে আপনি মনের কোনো এক কোণে হাসবেন এবং গল্পের ঐ বাস্তবিক চরিত্রগুলোর জন্য আপনার মায়া জন্মাবে। কারণ গল্পগুলো পড়তে পড়তে আপনি nostalgic হয়ে যাবেন। আমার ছোট বেলা বেশি কেটেছে নানা-বাড়িতে। সেখানে একসাথে অনেক মানুষ, এক-এক রুমে আড্ডা। তবে সেই ছোটকালে দেখতাম আমার নানা-বাড়িতে অনেক আত্মীয় স্বজনের আসা-যাওয়া ছিলো। তাছাড়া প্রতিবেশীরাও অনেক আসতো এবং আমাদের আশেপাশে ছিল এমন সব মজার মজার চরিত্র।।
এই বইয়ের লেখা চলিত হলেও সেই সময়ের চলিত বলে একটু ভিন্নরকম। কিন্তু লীলা মজুমদারের লেখাতে একটা স্বতন্ত্র ব্যাপার আছে। উনি এমন স্টাইলে লিখেছেন যাতে হাস্যরসাত্মক একটা ব্যাপার থাকে, কিন্তু পড়তে একটু কঠিন লাগলেও মনোযোগ দিয়ে পড়লে বেশ মজার। উদাহরণ: "স্বামীদের বিষয়ে বাস্তবিক একটা এনসাইক্লোপিডিয়া লেখা যায়। কী যে ওঁদের পছন্দ আর কী যে নয়, তাই বোঝা দায়। সুন্দরের কথাই ধরি। আমরা যাদের সুন্দরী বলি, তাদের দেখে নাক সেঁটকাবেন। অথচ ওঁদের বন্ধুবান্ধবদের হতকুচ্ছিৎ ন্যাকা বউদের রূপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ! গিয়ে হয়তো দেখা যাবে রোগা, হটকা, উটকপালী, এ কান থেকে ও কান হাঁ— যাক গে বলে লাভ নেই! এর ওপর আরও আছে, অন্যদের বাড়ির রান্না আর সেখানকার গিন্নিদের ঘরকন্নার প্রশংসা কোন স্বামী না করেন? বাড়িতে যা দেখলে পিত্তি জ্বলে যায়, অন্যদের বাড়িতে ঠিক তাই দেখে ভাল লাগে! এর ওপর কোনও কথা হয়!"
তো সব মিলিয়ে ছোট্ট এই গল্পগুলোর সাথে আমার বেশ মজার সময় কেটেছে। আর চরিত্রগুলো বেশ নস্টালজিক করে দিয়েছে কারণ চরিত্রগুলো তো ছিলো আপনার, আমার, আমাদের আশেপাশের মানুষ!
ব্যুফে ডেজার্টের মত বই। এত সুন্দর আর মিষ্টি স্মৃতিকথাগুলো, মনে হয় একের পর এক দই, মিষ্টি, ক্ষীর, পায়েস, কেক, পুডিং খাচ্ছি। বাঘ, চোর, প্রেম, ভূত, কুসংস্কার, রেলগাড়ি, গিন্নি, স্বামী, মালিকানা, বেড়াল, খাওয়া দাওয়া, মাছধরা সব মিলিয়ে হারিয়ে যাওয়া সোনালি সময়ের অসাধারণ জীবন্ত ছবি যেন।
'ছেলেবেলা' নামক জিনিসটা বড়ই বিচ্ছিরি। বড় হলে বেছে বেছে শুধু তার ভালো জিনিসগুলোই মনে পড়ে, আর তার কাছে ফিরে যাবার জন্য মন কেমন কেমন করতে থাকে।
যদিও বিষয়টা আদতে অতটা সরল নয়, ছেলেবেলায় আমরা সবাই বড় হতে চাইতাম, আর বড়বেলায় এসে ছোটবেলায় ফিরতে চাই। আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই জীবনের পুরোটা সময় ছেলেবেলাকে ধারণ করতে পারেন, যারা পারেন তারা সৌভাগ্যবান।
লীলা মজুমদার এই দলে পড়েন। তাঁর লেখায় যেরকম মোলায়েম ভাবে, শীতের হালকা ওমের মতো, গরমকালে গলাপানিতে পুকুরে বসে থাকার মতো, কিংবা শরতের বিকেলে আলতো করে একটা ঘুড়ি কেটে দেয়ার মতো একটা ব্যাপার আছে, সেটা খুব সহজেই পাঠককে টাইম ট্র্যাভেলের আস্বাদ দেয়।
বইয়ের বর্ণনা, পাত্র-পাত্রী কোনোটাই আমাদের ঢাকায় বড় হওয়া স্মৃতির বা সংস্কৃতির সাথে যায় না। কিন্তু একেবারেই কি যায় না? মায়ের মমতা, ভাই-বোনদের সাথে খুনসুটি, চাচাতো মামাতো আত্মীয়দের সাথে অম্লমধুর ওঠাবসা - এই সবগুলো আমাদের সবার জীবনের শৈশব কৈশোরের অমূল্য সম্পদ। এ সম্পদ হারালে বোঝা যায় কি হারিয়েছি।
এ বই তাই যেন দেরাজের এক কোণে খুঁজে পাওয়া ছোট্টবেলার ট্রাংক।
শীতের ছুটির রোদেলা সকালের মতো ঝলমলে। এমন অনসূয়া সরসতামাখা লেখা (এবং অসূয়ার আঁটি-ছিবড়ে ফেলে শুধু রসটুকুতে সিক্ত লেখা) এখন আর সহজে চোখে পড়ে না।
ননী ভৌমিক আর লীলা মজুমদারের লেখা পড়তে বসলে বাংলা শব্দের এমন নতুন ব্যবহার চোখে পড়ে, যাতে মুগ্ধ না হয়ে পারি না। সিলিং ফ্যানের মোটর হাউজ়িঙের বাংলা সংলাপে তুলে ধরেছেন লীলা, 'পাখার হাঁড়ি'। কী সহজ, কী মিষ্টি! সরলরৈখিক দূরত্বকে ডাকুস্তানি লব্জে বলে as the crow flies, লীলা মজুমদার একে ধরে মাতৃস্নেহে পাটে পাটে ভাঁজ করে গুঁজে দিয়েছেন বাংলার তোরঙ্গে, 'কাগ-ওড়া কুড়ি মাইল...'। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, সব ভাষাতেই কিছু গৃহিণীপনা আছে; লীলা মজুমদারের লেখা পড়তে গেলে কথাটার গুরুত্ব নতুন করে টের পাই।
অনেকটা হালকা চালে লেখা গল্পগুলো বেশ ভালোই লাগল। কিন্তু গল্পগুলোকে যতটা মজা পাবার মতো করে বলার চেষ্টা করা হয়েছে, ঠিক ততটা মজা লাগে নি, অনেকটা আরোপিত ভাব আছে
সামরিক সদরে বছরের শেষ আর শুরুতে দাপ্তরিক চাপ তুঙ্গে থাকে। মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে "উইন্টার এক্সারসাইজ" তো আছেই। তো এইসকল কাজে-অকাজে ডিসেম্বর জানুয়ারিতে বইপত্তর থেকে সাময়িক দূরত্বে থাকতে বাধ্য হচ্ছিলাম। এরই ফাঁকে নতুন বছর শুরু করলাম লীলা মজুমদারের "খেরোর খাতা" দিয়ে। মনে হলো, কয়েকটা গল্প ক্যাজুয়ালি লিখেছেন, তবে নিখাদ আনন্দ পেলাম। সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্য রচনা পড়তে হলে চারিপাশ সম্পর্কে একটু আইডিয়া রাখা লাগে, এনার লেখায় ওইটা লাগে না। বারো থেকে বিরাশি, সব বয়সীদের জন্যেই প্রযোজ্য। হালকা চালে লিখে যান, এই বইতে যেমন ইচ্ছেমত টপিকে লিখেছেন।
"বলেছি তো চার রকম গল্প খুব উতরোয়: বাঘের, প্রেমের, চোরের আর ভূতের" - এই বইতে সব আছে। পঞ্চাশটার মতো গল্প, বেশিরভাগই ভালো। মাঝে কয়েকটাতে নিজের আত্মীয় স্বজন কয়েকজনের কাহিনী লিখেছেন। সেগুলো একটু মলিন লেগেছে। বাকি - খুব হেসেছি।
(এই মহিলা উপেন্দ্রকিশোরের ভাতিজি, প্রমোদরঞ্জনের মেয়ে, সুকুমার রায়ের চাচাতো বোন, সত্যজিতের ফুপি। তবে শুধুমাত্র জেনারেশনাল ইন্টেলেক্ট নিয়েই এনাকে জাজ করা যাবে না, তিনি স্বমহিমায় উজ্জ্বল। রবীন্দ্রনাথের প্রিয়পাত্র ছিলেন, শান্তিনিকেতনে পড়াতেন, অল ইন্ডিয়া রেডিও, আকাশবাণীতে কাজ করেছেন, সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন, নিজেকে শিশু সাহিত্যিক, সুসাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন)
"পদিপিসির বর্মি বাকসো" এখন পর্যন্ত আমার পড়া লেখিকার সেরা বই।
বহু-বহু-বহুদিন পর কোনো বই পড়ে শেষ করতে পেরেছি, ভাবতেই শান্তি লাগছে!
বেশ মজার বই। ব্লকে থাকলে এমন কিছু বই আবার পড়ার অভ্যাসটা চাঙা করে নিতে খুব ভালো কাজে দেয়। তার অন্যতম কারণ লীলা মজুমদারের সহজ-সুলভ গল্পচারিতা, একবার শুরু করলে তরতর করে পড়া হয়ে যায়।
আগের মতো ভালো লাগার অংশগুলো টুকে রেখে পাকাপোক্ত পাঠপ্রতিক্রিয়া দেওয়া আবার কবে হবে জানি না! আপাতত শেষকটা লাইনই এখানে টুকে রেখে যাই৷
জানেন, আমি আমার বাবার ৮৪ বছরের মামিকে দেখেছি পদ্মফুলের মতো সুন্দর, বসে বসে হুঁকো খাচ্ছেন! তবে আবার আধুনিক কাকে বলব? এই বলে খেরোর খাতা বন্ধ করলাম।<\blockquote>
অসম্ভব মায়াবী একটা বই। ছোটবেলায় অনেকগুলো চকলেট একসাথে পেলে অনেকদিন ধরে জমিয়ে একটু একটু করে খেতাম, যাতে শেষ না হয়ে যায়। তেমনি বহুদিন পর একটা গল্প সংকলন অনেকদিন ধরে জমিয়ে একটু একটু করে পড়লাম। লীলা মজুমদারের অনবদ্য লেখনীতে খেরোর খাতার প্রত্যেকটা গল্পই ছিলো দারুন উপভোগ্য।
আমাদের চারপাশে যত মজার ঘটনা আর গল্প ছড়িয়ে আছে তার অল্পকিছুও যদি লেখা যায় তবে তা একেকটা খেরোর খাতা হয়ে যাবে। লীলা মজুমদার খেরোর খাতায় তাঁর চারপাশে ঘটে যাওয়া মজার সব ঘটনা আর গল্প বলেছেন আমাদের। তবে গল্পগুলো অনেক পুরোনো, কিছু গল্প শতবছর আগের। এজন্য বোধহয় গল্পগুলো আমাদের একটু বেশি রোমাঞ্চিত করবে।
বিশেষকরে চোরের, ভূতের, বাঘের, রসের, লেখক আর বইপাড়ার গল্পগুলো একটু বেশিই মজার। কিছু গল্প পড়ে তো এমন হেসেছি যে বুকের ব্যথাটা প্রচন্ড বেড়েছে; তবুও অসুস্থতার মধ্যে হাসি আটকিয়ে রাখতে পারিনি। অন্য গল্পগুলোও সমান আনন্দ দিয়েছে। তবে অল্পকিছু গল্প একদম ভাল লাগেনি। ৪৭টা গল্পের মধ্যে সব গল্প তো সমানভাবে ভাল লাগবেই না। তবে ৪০টা গল্পই যে ভাল লেগেছে আমার।
লীলা মজুমদারের সহজ-সরস গদ্যে লেখা গল্পগুলো সকলবয়সী পাঠকের জন্য সমানভাবে উপভোগ্য। এই বইটা আমার জন্য যেন রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করেছে।
আধুনিক বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির স্রষ্টা যদি হয় ঠাকুর পরিবার, তো তার বিকাশ ঘটিয়েছে রায় পরিবার। একটা মাত্র পরিবার থেকে যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী এতজন সদস্য থাকতে পারে সেটা বিশ্বাসই হতে চায় না। তাদেরই মেয়ে লীলা রায়, যদিও তাকে আমরা লীলা মজুমদার হিসেবেই চিনি। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে তিনি তার ঠাকুরদা'র ভাই উপেন্দ্রকিশোর এর মতই কিংবদন্তী, আর তার লেখনীও যেন মা-মাসীদের মত ওমে ভরা মিষ্টি সুবাসের। লীলা মজুমদারের টুকরো টুকরো স্মৃতি নিয়ে 'খেরোর খাতা', আর সেটা পড়লে ��নে হয় শীতের সকালে (ঢাকার পচা শীত না, মফস্বলের বা গ্রামের হিম ঠাণ্ডা) চুলার পাশে বসে চিতই আর ভাপা পিঠা খাচ্ছি। সেই শৈশব আর সেই আরামের সকাল আর ফিরে আসবে না, যেমনটা ফিরবে না লেখিকার স্মৃতির মানুষগুলো, কিন্তু সেই স্মৃতি হাতড়েই আনন্দ। বেশিরভাগই তার পরিবারের মানুষজনের (আর সে এক লতায়-পাতায় ছড়ানো বিশাল পরিবার) আর পাড়া-পড়শীর গল্প, কিন্তু কী মধুর আর মজার আর মমতায় জড়ানো সব কথা, মনে হয় শুধু পড়তেই থাকি আর ভাবতেই থাকি আর আবারও পড়তেই থাকি। কোন এক ছুটির সকালে এই বইখানা নিয়ে বসে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সবটা শেষ করে মনে হতেই হবে, যে জীবনে বই আছে আর সে বইতে লীলা মজুমদারের লেখা আছে, সে জীবনটা শত বাধা পেরিয়েও সুন্দর।
A most brilliant compilation of hilariously witty comedic essays. Amazing how the simplest of stories in the world, written in the most unpretentious manner, make for the best reads.
যা কিছু লিখেছেন তা হয়েছে অসাধারণ , গল্প সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার জন্য যাঁর কখনই খুব কষ্ট করতে হয়নি। লিখে দিলেই তাতে চমৎকার এক মাধুর্য মিশে থেকেছে বরাবরই।
ছোট থেকে বেড়ে ওঠা, নানা জায়গাতে ঘুরে ফিরে নানান সব অভিজ্ঞতা, বড়দের থেকে গল্প শুনে শুনে বড় হওয়ার সেই সবই নিয়ে লীলা মজুমদার এর "খেরোর খাতা"। তবে সব লেখাই মজার। ঘটনা গুলো সব সত্য। সুন্দর সাজানো পরিপাটি কোন গল্প নয়। নিজের জীবনের সত্য সব মজার ঘটনা। এটা যে রম্যরচনা তা পড়ার আগে জানা ছিলো না। আর প্রতিটা গল্পো এতোটা মজার শেষ করেও মনে পড়লেই হাসি পাচ্ছে। অসাধারণ একটা বই।
ভাষার মাসে কি পড়েছি না পড়েছি তা নিয়ে মাসকাবারি ব্লগ পোস্টের অংশ-
দাদাভাই ‘খেরোর খাতা’ দিয়েছিল কয়েক বছর আগে। আমি এখন সেটা শেষ করে ‘পাকদন্ডী’ ধরেছি। ‘খেরোর খাতা’ লীলা মজুমদারের জীবনে নানা রকম মজার মজার মানুষের গল্প দিয়ে ভরা। বেশিরভাগই নির্মোহ এবং নির্লোভ মানুষ। বইটা শেষ করে মনে হয়েছে, এসব না পড়লে ‘আরো টাকা দরকার, কারন অমুকে তমুকে অমুক জায়গায় খেতে গেছে, আমারও যেতে হবে চেক ইন দিতে’, এই যে একটা নয়া নেশা, তা যে কি পরিমান অর্থহীন, তা বুঝতে হয়তো সাহায্য করবে। বই জুড়ে মন থেকে ভীষন ধনী মানুষগুলোর কান্ডগুলো পড়ে শুধু তাদের মতো মানুষদের সাহচর্যই মনে মনে চাওয়া শুরু করার কথা সব পাঠকের। আমারো মনে হয়েছে এরকম লোক বাদে কারোর সাথে মেলামেশা করে কি লাভ? এও মনে হয়েছে, গাড়ির বনেটের উপর এক পা ঠেকিয়ে রোদচশমা পরে দূরে তাকিয়ে আছে, এমন পোলাপান যে কি পরিমাণ ‘বোরিং’ তাও বুঝতে এই বই সাহায্য করবে। 😋
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া খেরোর খাতা লীলা মজুমদার প্রকাশক-আনন্দ মুদ্রিত মূল্য-250 টাকা। গল্প তো লেখেন অনেকেই, কিন্তু গল্প কইয়ে হন কজন? সত্যজিতের লীলু পিসি সেই গল্প কইয়ে। ইংরেজি সাহিত্যে গোল্ড মেডেলিস্ট তিনি। অথচ, তিনি যখন লেখেন গল্প মনে হয় শীতের মরা বিকেলে গরম চাদর মুড়ি দিয়ে ঠাকুমা দিদিমার কাছে গপ্প শুনছি। আর যদি সে গল্প হয় লীলু পিসির ব্যক্তিগত জীবনের খোশ গপ্প, তখন নড়বার উপায়টি কি আর আছে? আমরা চোখ বড় বড় করে গিলব সে গপ্প। কখনো বুক করবে দুরু দুরু। হেসে গড়িয়ে পড়ব খিল খিলিয়ে। আড্ডা গপ্পের দোসর হবে একবাটি ঝাল মুড়ি। মুচমুচে চানাচুর, পেঁয়াজ, সর্ষের তেল, লঙ্কা কুচি। ঠিক যেন লীলুপিসির খেরোর খাতাটি। খাওয়া দাওয়ার গপ্প, পটোদিদির কথা, চোরের গল্প, হেমেন।রায়ের মাছ ধরার গপ্প, কোলকাতার আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানো ভূতের গপ্প, গিন্নিদের গল্প, সেকেলে কলকাতার সাহেব মেমদের গল্প, পিতা প্রমদারঞ্জনের জঙ্গল জীবনের গল্প এমন কত কি! জনৈক লাটু বাবুর দজ্জাল স্ত্রী কিভাবে ভূতকে চোর ভেবে মুগুর পেটা করেছিলেন, আর ভূতে দিয়েছিল নাকখত আছে সে গল্পও। অথবা,জ্যাঠামশাই উপেন্দ্রকিশোরের প্রতিবেশী শিশুসাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের মান-অভিমানের বন্ধুত্ব। লীলু পিসির বিজয় মেসো কিভাবে বাঘের ছানাদের পোষ মানতেন তাদের সাথে করতেন শেকহ্যান্ড সে সব গল্পও আছে। কুঁড়ে প্রেমেন মিত্তিরের কাছ থেকে পূজাসংখ্যার লেখা আদায় করতে কি নিদারুন ফন্দি এটেছিলেন যুগান্তরের তৎকালীন সম্পাদক পরিমল গোস্বামী, সাহিত্যিকদের সেসমস্ত খোশগপ্প আছে । আর আছে রবীন্দ্ররসিকতা। সে গপ্প,লীলু পিসির প্রথম যৌবনের। রবীন্দ্রনাথের চিঠি পেয়ে তখন সদ্য যোগ দিয়েছেন শান্তিনিকেতনের শিক্ষকতায়। এক বিকেলে রবীন্দ্রনাথের ঘরে গিয়েছেন, দেখলেন কবির আরাম কেদারার সামনে শ্বেতপাথরের জলচৌকির উপর সাদা ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে বসে এক অপূর্ব সুন্দর পুরুষ। কবি আলাপ করিয়ে দিলেন তাঁর সাথে। তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। লীলু পিসি মুগ্ধ দৃ���্টিতে তাকিয়ে রইলেন তাঁর দিকে। পিসি লিখেছেন-"এমন সুন্দর মানুষ বাস্তবিকই আর দেখিনি"। প্রাজ্ঞ কবি বুখেছিলেন সবই। একটু হেসে , একটু কেসে কবি বললেন-"...মনে রেখো ও বিবাহিত"। লীলা মজুমদারের খেরোর খাতা বিচিত্র মানুষদের বিচিত্রতর জীবনমাল্য।
"বই তো নয়, যেন নিটোল এক আড্ডা।" সত্যিই তাই। আর এই আড্ডার মধ্যমণি লীলা মজুমদার। বইয়ে পাতা উল্টোতে উল্টোতে কখন যে সময়টা কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না। বিচিত্র সব বিষয়ের এক অনবদ্য সংকোলন এই "খেরোর খাতা।" কি বিষয় নেই এতে তার সন্ধান পাওয়ায় দুর্লভ। ভূত,ডাক্তার, খাওয়া দাওয়া, সাপ, বাঘ, কুসংস্কার, নেশাখোর, মেয়ে-চাকুরে, ভালবাসা, বই-পাড়া - সব বিষয়ের সমাহার রয়েছে এই রম্যরচনাই। একটাই যা আক্ষেপ বড্ড তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো এই "খেরোর খাতা।" আরও কিছুক্ষণ চললে মন্দ হতো না।
This book deserves all the stars. I just hope one day someone will translate this book in English so that readers from all across the globe can get acquainted with this masterpiece! I recommend this semi-autobiographical book to everyone who is even remotely interested in Bengali culture and its literature...
এ বই কেন আমি এতদিন পড়িনি, সেটা ভেবেই মন খারাপ হচ্ছে। নাহলে বাকি সব কিছুই এর মন ভালো করা। লীলা মজুমদারের সহজ কথ্য ভাষায় লেখা ছোট ছোট গল্পের সমাহার এই বইতে। অবশ্যই সুখপাঠ্য। পড়তে পড়তে নিজের মনেই হেসে উঠেছি। এই বই সত্যই সম্পদ।