Jump to ratings and reviews
Rate this book

তিন গোয়েন্দা #1

তিন গোয়েন্দা

Rate this book
Adapted from "The Secret of Terror Castle" (Alfred Hitchcock and The Three Investigators, #1).

188 pages, Paperback

First published August 1, 1985

98 people are currently reading
1262 people want to read

About the author

Rakib Hassan

579 books391 followers
রকিব হাসান বাংলাদেশের একজন গোয়েন্দা কাহিনী লেখক। তিনি সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দা নামক গোয়েন্দা কাহিনীর স্রষ্টা। তিনি মূলত মূল নামে লেখালেখি করলেও জাফর চৌধুরী ছদ্মনামেও সেবা প্রকাশনীর রোমহর্ষক সিরিজ লিখে থাকেন।
থ্রিলার এবং গোয়েন্দা গল্প লেখার পূর্বে তিনি অন্যান্য কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি রহস্যপত্রিকার একজন সহকারী সম্পাদক ছিলেন।রকিব হাসান শুধুমাত্র তিন গোয়েন্দারই ১৬০টি বই লিখেছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০টি বই অনুবাদ করেছেন। তিনি টারজান সিরিজ এবং পুরো আরব্য রজনী অনুবাদ করেছেন। তাঁর প্রথম অনুবাদ গ্রন্থ ড্রাকুলা।
রকিব হাসান লিখেছেন নাটকও। তিনি "হিমঘরে হানিমুন" নামে একটি নাটক রচনা করেন, যা টিভিতে সম্প্রচারিত হয়।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
788 (62%)
4 stars
329 (25%)
3 stars
113 (8%)
2 stars
20 (1%)
1 star
19 (1%)
Displaying 1 - 30 of 59 reviews
Profile Image for Arefin.
25 reviews35 followers
November 6, 2016
একটা সময় ছিলো যখন তিন গোয়েন্দার বই ছাড়া একটা দিন কল্পনাই করতে পারতামনা। কেমন বুঁদ হয়ে থাকতাম এক একটা বই এর ভেতর! অবস্থাটা এমন ছিলো যে তখন যে ৫০/৬০ টা ভলিউম বের হয়েছিলো তার কোনটার মধ্যে কি বই আছে তার সবটাই ছিলো আমার নখদর্পনে। প্রতিটা বইয়ের নাম সিরিয়ালি মুখস্থ বলে যেতে পারতাম। কি প্যাসনেটটাই না ছিলাম!! যে মনযোগ আমি ওদিকে দিয়েছি তার কিয়দাংশও যদি সে সময় পাঠ্যবই এর পেছনে দিতাম, বোধ করি, বাবা মা আমাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তা আরেকটু কম করতেন।


এবার আষাঢ় মাসের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। সারাদিন টিপটিপ কিংবা ঝম ঝম যে ভাবেই হোক বৃষ্টি পড়ছে তো পড়ছেই। ছুটির দিন। তাই বাইরে বের হবার তাড়া নেই। এই সময় বিকেল গুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। বৃষ্টি পড়ছে। আলো ফুরিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ এর মধ্যেই একটা অপার্থিব ভাব চলে আসে। এরকম একটা সময়ে বই পড়তে যে কি আনন্দ তা যে বুঝতে পারলোনা তার জন্মই বৃথা। আজকালকার বই বিমুখী ছেলে মেয়ে গুলো যে কি মিস করে চলেছে তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না।

তিন গোয়েন্দাকে হঠাৎ খুব মিস করছি এই একনাগাড় বৃষ্টির কারণেই। তখন এইরকম বৃষ্টি পড়লে আমি সোজা গিয়ে আমার জানালার পাশে বসে যেতাম। রহস্যের বই গুলোতে বেশির ভাগ সময়েই বৃষ্টি পড়ে। বাইরের বৃষ্টি, বইএর ভেতরের বৃষ্টি, দুটোয় মিলে সে কী অতীন্দ্রিয় পরিবেশের সৃষ্টি করতো তা বর্ণণা করার মত না।

বই পড়তে পছন্দ করি কারণ তা পরিবেশের মধ্যে নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করে। এখন আমি এক জগৎ এ আছি। বই এর ভেতর জগৎটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। আমার প্রিয় তিন গোয়েন্দা গুলোও একটু অন্যরকম। পড়লে মনে হয় চারপাশে কেমন যেন গুমোট একটা ভাব। কিছু একটা যেন ঠিক নেই! মনে পড়ে ‘প্রেতের ছায়া’ বইটির কথা। পড়ে যাচ্ছি তো যাচ্ছিই। কিন্তু কিশোর মুসা রবিন এর দেখা পাচ্ছিনা। অথচ এদিকে কয়েকটা মেয়ে তাদের বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে এসে একের পর এক মরতে বসেছে! ওই বই এর শেষে ছোট খাটো এমন এক টুইস্ট ছিলো যে রীতিমত চমকে গিয়েছিলাম।
‘বিপজ্জনক খেলা’র কথা বলা যায়, যেখানে এক পাগল লোকের খপ্পরে পড়েছে তিন গোয়েন্দা আর তাদের বন্ধুরা। নির্জন এক দ্বীপ এর মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদেরকে। হাতে কিছু সময় দিয়ে বলা হল পালাও ওই বনের মধ্যে। আর এক ঘন্টা পর তোমাদেরকে শিকার করা হবে!! কাহিনীটা খুব জনপ্রিয় এক বিদেশী বইএর। কিন্তু জানিনা এ বই গুলো পড়তে পড়তে যেমন গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যেতো মূল বইগুলো পড়লে তেমনটা হবে কিনা।


এখন মনে হয় একটু বড় হয়ে গেছি। সেবা প্রকাশনীর ছোট সাইজের পেপারব্যাকে তিন গোয়েন্দা পড়া এখন সম্ভবত আমার গা গতরের সাথে মানানসই না, কিন্তু যখন কোন বই এর পেছনে ‘হ্যাল্লো কিশোর বন্ধুরা
আমি কিশোর পাশা বলছি অ্যামিরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে। হলিউড থেকে মাত্র কয়েকমাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি। নাম…………’
দেখি তখন নিজেকে সংবরণ করা এখনো একটু কষ্টসাধ্য হয়েই দাঁড়ায় বৈকি!!
Profile Image for Ismail.
Author 66 books204 followers
July 23, 2018
বহু বছর পর রিভাইস দিলাম। বুঝলাম, এ-জিনিস পড়ার জন্য বয়স কোনও বাধা নয়। আগের মতই ভাল লেগেছে।
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
November 21, 2019
১. তিন গোয়েন্দার ১ম বই পড়ছিলাম, তাই খুব excited ছিলাম
২. খুব ই ভাল ছিল। একদম perfection যাকে বলে আরকি। শেষে ভালই অবাক হয়েছিলাম
৩. প্রথম দিকে মনে হচ্ছিল বাচ্চদের জন্য বইগুলো, এরপর পড়ার সময় মানসিকতা বাচ্চাদের মত করে ফেললাম(অন্য বইয়ে যেভাবে ভাল-খারাপ যাচাই করি তা সব বাদ দিলাম)। অতঃপর, পূর্ণ satisfactionএ শেষ করলাম এই বই ❤
৪. আর, এই ভলিউম-১ এর মালিক হতে পেরে নিজেকে বড়লোক feel হচ্ছে 😁
Profile Image for Hamima Afroz Lopa.
30 reviews121 followers
August 27, 2019
"হাল্লো, কিশোর বন্ধুরা ―
আমি কিশোর পাশা বলছি, আমেরিকার রকি বীচ থেকে।
জায়গাটা লস আ্যঞ্জেলেসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে,
হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।
যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি,
আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি, নাম
তিন গোয়েন্দা।"


এই লেখা দেখলেই সেই স্কুলবেলার কথা মনে পড়ে যায়। তখন বই পড়া হত ঠিকই, কিন্তু 'তিন গোয়েন্দা' পড়া শুরু করিনি। স্কুলে এটা সবার হাতে হাতে ছিল সেই সময়। নিউজপ্রিন্টের ছোট খাট বই ভলিউম আকারে বের হতেই থাকে। ঐ নিউজপ্রিন্ট অনেক অসহ্য একটা জিনিস ছিল আমার কাছে। কিন্তু ক্লাসের লেকচার বাদ দিয়ে টেক্সট বইয়ের ভিতরে লুকিয়ে এই জিনিস পড়ে মানুষ কী আনন্দ পেত সেটা জানার ইচ্ছা ছিল। তারপরও ঐ নিউজপ্রিন্টের কারণেই হয়তো পড়া হয়ে উঠে নি। একদিন এক বইয়ের দোকানে জিনিসপত্র সব গোজগাজ করার সুবাদে একপাশে তিন গোয়েন্দার একগাদা স্তুপ দেখতে পাই। ওখানে দেখেই কিনে ফেলি দুটো ভলিউম। এক-দুই বাদ দিয়ে এক লাফে ভলিউম ৬৭ আর ৬৯। ৬৭ কিনেছিলাম কারণ আমার প্রিয় সংখ্যাগুলোর ভিতর ওটা একটা আর ৬৯ কিনেছিলাম হয়তো গল্পগুলোর নাম ভালো লাগার কারণে। এই দুটোতে রকিব হাসান আর শামসুদ্দীন নওয়াব দুজনেরই গল্প ছিল। অনেক পরে অবশ্য জানতে পারি শামসুদ্দীন নওয়াব ছদ্মনামে অনেকেই গল্প লিখে থাকেন। তবে ভলিউম ৫৮ পর্যন্ত রকিব হাসানের গল্পগুলো আসলেই দুর্দান্ত ছিল। তখন তো আর এত কিছু বুঝতাম না। যে ভলিউমে গল্পের নাম দেখে বেশি পছন্দ হত সেটা কিনতাম। তবে ঐ ৬৭ আর ৬৯ পড়ার পর আমার আর বেশি কেনা লাগে নি। আমার ভাই-ই ভলিউম-১০০ পর্যন্ত প্রায় সব গুলো কিনে ফেলেছিল। এরপরে স্কুল শেষ হয়ে গেলে আর ধরে দেখা হয়নি কখনও এগুলো। এতগুলো বছর পর ভাবলাম পড়ে দেখা যাক, আগের মত ভালো লাগে কিনা। এমনিতেই কোন ভলিউম টা পড়েছি আর কোনটা পড়িনি সেটা তেমন একটা মনে নেই। গল্পের নাম দেখলে মনে পড়ে এটা হয়তো পড়েছিলাম কিন্তু কাহিনী তেমন একটা মনে নেই। আর যেটার কাহিনী একটু-আধটু মনে আছে সেটার নাম মনে নেই। এখন আর সবগুলো ভলিউমও নেই। হারাতে হারাতে অল্প কিছু আছে। আমার ভাইয়ের কালেকশন মানে বই হারাতেই হবে। আবার কিছু কিছু ভলিউম দুটো করে আছে। এটাও আমার ভাইয়ের কীর্তি। মানুষ ভুলে এক বই দুবার কিভাবে কিনে সেটা আমার জানা নেই। যা আছে ওগুলো এখন অন্য বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পড়বো বলে ঠিক করেছি। ভলিউম-১ এর এই গল্পটি আমার প্রথম পড়া সবচেয়ে প্রিয় তিন গোয়েন্দা গল্প। এগুলো পড়তে পড়তে মনে হচ্ছে কিশোর, মূসা, রবিন আর জিনার সাথে আবার ফিরে গিয়েছি সেই কৈশোর বেলায়। কী অদ্ভুত সুন্দর দিন ছিল তখন...!!!
Profile Image for Taufiq Ahmed.
26 reviews29 followers
April 29, 2017
‘তিন গোয়েন্দা’ তথা আমার জীবনের এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়ের শুরু এই বইটা দিয়েই। ক্লাস থ্রি তে পড়ার সময়ই বইটা আমার বাবা কিনে দেয়। তখন কেবল ৫ টাকার ছোট ছোট বই আর পত্রিকার সাথে পাওয়া ম্যাগাজিনই পড়তাম। সেগুলোর কোনটাই ১০-১৫ পাতার বেশি হত না। তাই সা��স করে এই ২৮০ পৃষ্ঠার বইটা শুরু করতে পারিনি। মাঝে মেঝে কেবল প্রথম ১-২ পাতা পড়তাম। একদিন সাহস করে একটানা বেশ কয়েক পাতা পড়ে ফেললাম। সেই শুরু। এরপর যতদিন রাকিব হাসান লিখে গেছেন ততদিন পর্যন্ত সমান ভালোবাসা নিয়ে প্রতিটা বইই পড়ে গেছি।
Profile Image for Mehnaz.
233 reviews51 followers
January 14, 2013
Childhood read. I can't believe I used to be crazy for this series once!
Profile Image for Sudipta.
227 reviews
September 12, 2013
ওহ! সেই স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ে যায়! সেই বয়সে এই তিন গোয়েন্দা মনে হয় অনেকের কাছেই ভাল লাগত! তবে শেষের গল্পগুলো বা ভলিউমগুলো মনে হয় একটু কম জনপ্রিয় হয়েছিল। আর এখনকার ভলিউম বা গল্পের কথাগুলোর কথা জানি না। কারণ, এখন আর সেভাবে পড়া হয় না। গুডরিডসে সবগুলো বই এন্ট্রি হচ্ছে দেখে ভাল লাগল।
Profile Image for Mohammad  Saad.
85 reviews43 followers
January 1, 2021
whenever I read any book of Tin Goyenda series I become nostalgic!
Profile Image for Henry Ratul.
64 reviews116 followers
August 25, 2017
ছোটবেলায় (ক্লাস সেভেনে) টিফিনের টাকা বাঁচাই কিনে পড়সিলাম। কি দিন ছিল সেইগুলো। :") ক্লাসে লুকাই লুকাই পড়সিলাম। কিন্তু বইখানা আমার কাছে নাই। হারাই গেসে। :(
Profile Image for Tanvir K.
9 reviews3 followers
December 25, 2022
প্রসংগঃ সেবা'র তিন গোয়েন্দা আর আমরা

আশির মাঝামাঝি, তখন পড়ি ক্লাস থ্রিতে। বিকেলে খেলার সময় পাড়াতুতো এক বড়ভাই প্রায় জোর করে হাতে দুটো বই গছিয়ে দিল। একটা ছিল বায়োনিক ম্যান মেহেদি আর একটা তিন গোয়েন্দা। সেই থেকে শুরু।

অন্ধভক্ত কাকে বলে ও কত প্রকার এটা যারা এই সিরিজটি নিয়মিত পড়েছেন তারা সকলেই জানেন। আমি জানি না এর মাঝে কতগুলো জেনারেশন এই তিন গোয়েন্দা পড়ে বড় হয়েছেন।এদের সংখ্যা কম নয় তা বুঝতে পারি যখন দেখতে পাই বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে বেরুচ্ছে তিন গোয়েন্দা।যা এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে একটা ব্র্যান্ড।

গতকাল এই তিন গোয়েন্দা নিয়েই বেশ রূঢ় একটা পোস্ট চোখে পড়ল আর সেই সাথে মনে পড়ে গেল অনেক মজার আর বিষণ্ণ স্মৃতি। মনে হচ্ছে তিন গোয়েন্দার একসময়ের পাঠক হিসেবে আমাদের আসলেই দায়িত্ত্ব এবং অধিকার রয়েছে দু'এক লাইন লেখার।

আমি জানি অনেক পাঠক এখানে আছেন যারা ব্যস্ততার কারণে এড়িয়ে যান কিংবা লিখে জানানোর ইচ্ছে থাকলেও আর হয়ে ওঠেনা কিন্তু উচিত হবে অন্তত এক লাইনের মন্তব্য করা হলেও সেটা কিন্তু নিজের অস্তিত্বকে জানান দেয়া।

আমি ভাগ্যবান কারণ তিন গোয়েন্দার প্রথম বইটি দিয়েই আমার যাত্রা শুরু এবং অন্ধভক্ত বনে যাওয়া। একটা সময় ছিল নিজেকে তাদের একজন ভাবা এবং ??? কার্ড বানিয়ে সেটাকে জোর করে বাস্তবরুপ দেয়ার চেষ্টা করাটা ছিল আমার এবং আমার বন্ধুদের নিত্ত নৈমত্তিক ব্যাপার।

এই তিন গোয়েন্দা ছোটবেলার একটা বিশাল অংশ হয়ে ছিল এবং সবসময় থাকবে। রকিব হাসান নামটা ততটুকুই প্রিয় ছিল যতটুকু এই তিন গোয়েন্দা। তিন গোয়েন্দার চরিত্রগুলো কেমন, চাচা, চাচী, জিনা, শুটঁকি টেরি, হ্যান্সন, মিস্টার ক্রিস্টোফার, চীফ ফ্লেচার, শোঁপা, সেই সব সাইকেল, সবুজ ফটক এক কিংবা গোবেল দ্বীপ কোন কিছুই এত বছরেও ভুলিনি আর একমুহুর্তও লাগল না মনে করতে।

কাজেই পাঠকরা যখন কিছু জানাবেন সেটাকে অবশ্যই গুরুত্ত দিতেই হবে একজন লেখককে।কারণ পাঠকের কাছে এই স্বপ্নের মতো, বন্ধুর মতো চরিত্রগুলোকে এনে দিয়েছেন লেখক নিজেই। আর প্রিয়তম বন্ধুর অধঃপতন কেউ মানতে চাইবে না।

প্রশ্ন দাড়াঁচ্ছে গড়মিলটা হচ্ছে কোথায়? আমার তিন গোয়েন্দা পড়ে বড় হওয়া মগজে যে উত্তরটা এসেছে সেটাই দেব।

আমরা বদলেছি। তিন গোয়েন্দা বদলেছে।ক্ষেত্রবিশেষে বদলেছে তিন গোয়েন্দার লেখক। আর এটুকুই যথেষ্ট সমস্যার গোড়ায় একটু চোখ বোলানোর জন্য।এটুকুই হতে পারে সমাধান খোঁজার জন্য উদ্যোগের শুরু।

আমার এখনো মনে আছে আমার পড়া শেষ তিন গোয়েন্দা ছিল গাড়ির যাদুকর। এরপরে বিচ্ছিন্নভাবে দু'একটা পড়েছি কিন্তু আর পড়া হয়নি। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য কারণ এর আগ পর্যন্ত সিরিজের প্রতিটি বই আমার সংগ্রহে আর সেই ছেলেমানুষের মতো অর্ডার করে বানান ব্যক্তিগত লাইব্রেরি সীল মেরে রাখা সমস্ত বই।

যদি ভুল না করে থাকি, গাড়ীর যাদুকর বইটিতে তিন গোয়েন্দা দুম করে বেমালুম বদলে গেল। কিশোর মুসা গাড়ি হাঁকাচ্ছে, রবিন মেয়ে পটিয়ে বেড়াচ্ছে, সে আর মানতে পারলাম না। হারিয়ে গেল আমার প্রিয় বন্ধুগুলো আর ফুরিয়ে গেল আমার তিন গোয়েন্দা পড়বার আগ্রহ।

আমি নিশ্চিত বলতে পারি আমার মতো পাঠক আমি একা নই, কয়েক লক্ষ কিংবা কে জানে কোটিও হতে পারে। পাঠকের আবেগকে ছোট করে দেখবার কোন উপায় নেই।যুক্তির খাতিরে বলাই যায় মানুষ বদলায়, কিন্তু ক'জন কিশোর সেটা মানবে?

এই গোটা ব্যাপারটায় আসলে রকিব হাসান, শামসুদ্দীন নওয়াব কিংবা সেবা প্রকাশনীর যে কোন হাত নেই সেটা বুঝতে পেরেছি যখন তিন গোয়েন্দা যেসব বিদেশী মূল বই এর আদলে রুপান্তর করা হয়েছে সেগুলো সংগ্রহ করেছি, পড়েছি।

সেগুলো পড়ে তিন গোয়েন্দা, রকিব হাসান আর সেবা প্রকাশনী কে আবার নতুন করে ভালবেসেছি। রবার্ট আর্থারের সেই "থ্রি ইনভেস্টিগেটরস" কিংবা এনিড ব্লাইটনের "ফেমাস ফাইভ" এর মত সিরিজকে পুরোপুরি দেশী কিশোর কিশোরীদের মনের মত করে সাজিয়ে পরিবেশন করা গোটা বাংলাদেশে একটা মাত্র প্রকাশনীর পক্ষেই সম্ভব আর সেটা হচ্ছে সেবা প্রকাশনী। বছরের পর বছর তাঁরা অক্লান্তভাবে এই কাজটা করে যাচ্ছেন। এই জন্যে যদি তাঁদের আমরা ধন্যবাদ না দেই তাহলে আর পাঠক হিসেবে নিজেকে পরিচয় না দেয়াই ভাল। সেবা যদি না থাকত তাহলে রকিব হাসান, শামসুদ্দ্দীন নওয়াব কিংবা কাজী মায়মুর হোসেন এর মতো লেখককেই তো আমরা পেতাম না, জীবনে পড়া সবচাইতে প্রিয় সিরিজ তিন গোয়েন্দা তো পরের কথা।

সেবার প্রতি আমাদের আর যাই হোক ভালবাসার কমতি হবার কোন কারণ আমি দেখি না। প্রশ্ন যখন আসে তিন গোয়েন্দাকে নিয়ে অসন্তুষ্টি কেন? উত্তরটা আসলে খুবই সহজ।

মূল তিন গোয়েন্দা যাদের আদলে লেখা হয়েছে রবার্ট আর্থারের সেই গল্পগুলোর প্রতিটিই বলতে গেলে রুপান্তর হয়ে গেছে। ফেমাস ফাইভের আদল ভেঙ্গেও করা হয়ে গেছে বেশ কিছু তিন গোয়েন্দা। এরপরে চাহিদা আর সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যেসব বইগুলো আমার ধারণা সেবার লেখকরা পাচ্ছেন বা পেয়েছেন সেগুলোর কোনটাই জোড়ালোভাবে আমাদের "ক্লাসিক" তিন গোয়েন্দাকে ফিরিয়ে আনতে পারেনি।

এটা মাথায় রাখা ভাল, দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজটি কিন্তু রবার্ট আর্থার মারা যাওয়ার পরেও চলেছিল কিন্তু পাঠকরা সেইসব গল্প পছন্দ করে নি। একই ব্যাপার ঘটছে এখানেও। এতে আমরা কি আমরা ধরে নেব সেবা প্রকাশনী র ব্যাপারটায় আন্তরিকতার অভাব? আমি ব্যক্তিগতভাবে সেটা মনে করিনা।

তাঁরা অবশ্যই চান এই সিরিজটা তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখুক সেটা যে কোন প্রকাশনাই চাইবে। কিন্তু সেই চেষ্টাটায় সাধুবাদ না দিয়ে কিংবা কি করলে পাঠক তিন গোয়েন্দাকে ফিরে পাবে সেই আলোচনায় না গিয়ে লাগাতার এঁকে তাঁকে দোষ দিয়ে আমরা কী হাসিল করতে চাইছি? লেখক কিন্তু মানুষ এবং তিনিও অনুভূতি আর প্রতিক্রিয়ার উর্ধে নন। নিউটনের সূত্র সবজায়গাতেই খাটে।

একজন লেখক যদি পেশা হিসেবে লেখালেখি করেন তাহলে সেটাকে সম্মান করতেই হবে। আর যখন এটা পেশা তখন সেখানে অর্থ, সম্মান, ব্যক্তিগত মতামত অনেক কিছুই জড়িত। যদি সেটা মানতে আমাদের কষ্ট হয় তাহলে চলবেনা।

তিন গোয়েন্দা রকিব হাসান লিখতেন , এখনও তিনি লেখেন যতদূর জানি। কাজেই এটাই সত্যি তাঁর জায়গা নিতে যে কোন লেখকেরই ঝক্কি পোহাতে হবে। এটা একটা চ্যালেঞ্জ এবং সেবার যেই লেখকই তিন গোয়েন্দা লিখছেন তাঁকে এটা মাথায় রাখতেই হবে।

এই গেল নামের সমস্যা কিন্তু মূল ব্যাপারটা গল্পে। তারা কোন গল্পগুলো বেছে নিচ্ছেন সেটা গুরুত্তপুর্ণ। আমি মনে করি এই ইন্টারনেট এর যুগে তাঁরা যদি চান একটু কষ্ট করলে অনলাইনে ঘাঁটলে তারা তিন গোয়েন্দার আদলে গল্প এবং সিরিজ তারা পেয়ে যাবেন যেগুলো "তিন গোয়েন্দা"র নাম এর সঙ্গে সামঞ্জশ্য বজায় রাখে। বিদেশী ছোটদের গল্প উপন্যাসগুলো খুব সহজেই বয়স এবং জনরা অনুযায়ী সার্চ করলে বই বেরিয়ে আসবে। এরপরে ইবুক কিংবা বই পাওয়াটা সময় আর সুযোগের ব্যাপার।

গোয়েন্দা গল্প যদি অন্যদিকে গড়িয়ে চলে যায় তাহলে পাঠকের অসন্তুষ্টি হতেই পারে। আর এটা একটা অসম্ভব জনপ্রিয় সিরিজ।

যারাই লিখছেন এখন তিন গোয়েন্দা তাঁদের কাছে বিনীত অনুরোধ, দয়া করে তিন গোয়েন্দাকে রকিবীচের সেই সময়গুলোতে ফিরিয়ে আনুন। ফিরিয়ে আনুন সেইসব চরিত্রগুলো যাদের কারণে তিন গোয়েন্দার আজ এই হাতাহাতি লেগে যাওয়ার মতো জনপ্রিয়তা। অবশ্যই খানিকটা কল্পনাকে কাজে লাগাতেই হবে মূল বইয়ের কিছু চরিত্রকে ঢেলেও সাজাতে হতে পারে কিন্তু এতে করে তিন গোয়েন্দা সেই আগের মতই পাঠকের তুমুল ভালবাসা ফিরে পাবে, যিনি লিখবেন তাঁর সম্মান বাড়বে বৈ কমবে না। আর সেবা প্রকাশনীর লেখকদের পক্ষেই এটা সম্ভব এইটুকু আমরা বিশ্বাস করি।মাসুদ রানার ক্ষেত্রে আপনারা সেই সময়টুকু দিয়েছেন, তিন গোয়েন্দাকেও দিন। আর অনেক পাঠক আছেন যারা প্রচুর বিদেশী বই পড়েন, তাঁরাও দয়া করে সিরিজ কিংবা স্ট্যান্ড এলোন বই রিকম্যান্ড করুন সম্ভব হলে।

তিন গোয়েন্দার মতো সিরিজগুলোর এই দারুণ জনপ্রিয়তা আর লেখক পাঠক দু'পক্ষের ভালবাসাকে পুঁজি করে কিছু মানুষ সেবা প্রকাশনীর মান এবং এর সংস্লিষ্টদের নিচে টেনে নামানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন সেটা বুদ্ধিমান পাঠকদের ধরতে পারা উচিত এটুকুই শুধু বলবো। সবাইকেই নিজের জায়গা থেকে ভাল কিছু করার এবং বলার উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে কারণ কালে কালে তিন গোয়েন্দারও তিরিশ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।

#তিন_গোয়েন্দা
#তানভীর_ইবনে_কামাল
২০১৮
Profile Image for Shahed.
11 reviews
August 12, 2013
My second read of this awesome series, and one of the best of it's name. The story is about the three teen detectives (pun fully in'tin’ded) commencing their own investigative agency. And seeking a recommendation from a top tier hollywood director to kickstart their firm. Comprising of hushingly intense moments, hairpin turn of events and light, relatable teen humour. This book is a must read for anyone up for reading teen thrillers. And this is one hell of a book in the series that has created a huge generation of young bengali book-reading-thrill-seekers. PEACE OUT!
Profile Image for Ishak Al Mamun  Rohan.
76 reviews
March 16, 2024
ছোটবেলায় অনেক ৩ গোয়েন্দা পড়ছি। কিন্তু এটাই সেই বই যার মাধ্যমে ৩ গোয়েন্দার আবির্ভাব ঘটেছিলো। তাদের প্রথম সমস্যা সমাধান। কেসটা প্রেডিক্টেবল ছিলো। শুরু থেকেই আমার সমাধান এটাই ছিলো যদিও মাঝখানে কিছু রংঢং যোগ করা হয়েছে।


ভালো লাগছে। আগের মতো সেই অনুভুতি। রকিব হাসানের লিখা মানেই নস্টালজিয়া। কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড ও মুসা আমানের সাথে অতিপ্রাকৃত টেরর ক্যাসলের এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
Profile Image for Lubaba Marjan.
119 reviews46 followers
July 31, 2024
মনে পড়ে গেল একদম শুরুর সোনালী সময়টা! যখন প্রথম তিন গোয়েন্দা পড়েছিলাম। 🥺🖤
Profile Image for Rizal Kabir.
Author 2 books45 followers
November 23, 2019
পড়তে পড়তে আফসোস করছিলাম শুধু, এই বই এতদিন কেন পড়িনি। আমি থ্রিলার লেখার ফ্যান সাত-আট বছর ধরে, আরো আগে থেকে এই ধরণের লেখার ভক্ত হলে অবশ্যই পড়ে ফেলতাম।
তিন গোয়েন্দা শুরু করবো করবো বলে জীবনের অনেকগুলো শীত-গ্রীষ্ম-বসন্ত পার করে ফেলেছি সত্যি বলতে।
But anyway, better late than never.
কিছু জায়গায় একটু ছেলেমানুষী লেগেছে, তবে খাঁটি ও নির্ভেজাল কিশোর উপন্যাস যেহেতু - এই ব্যাপারটা খুব আনন্দের সাথেই মেনে নিচ্ছি।
দেশ ছাড়ার আগে জনৈক বড়ভাই গোয়েন্দাগিরির পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্যই হয়তো 'বুড়ো বয়সে' তিন গোয়েন্দা ধরেই ফেললাম।
কিশোর-মুসা-রবিনের ভূবনে পা-দিয়ে ভালই লাগছে।
Profile Image for Gilgamesh .
45 reviews4 followers
September 28, 2025
খুব বেশি এক্সপেকটেশন নিয়ে পড়া শুরু করি নাই। তবে বেশ দারুণ উপভোগ্য ছিলো।
Profile Image for Dilrahba Nabila.
25 reviews2 followers
August 16, 2020
"তিন গোয়েন্দা" একটা ভালোবাসা। আমার ছোটবেলাটাকে অনেক বেশি সুন্দর আর মজাদার করে দিয়েছে। কিশোর, রবিন, মুসা, জিনা, ফারিহা, রাফি, কিকো, ফগ এবং তাদের গোয়েন্দাগিরি, মজা করা, দেশ বিদেশে গিয়ে রহস্য সমাধান করা, এডভেঞ্চারগুলো লোভনীয়। মেরি চাচীর ফ্রুট কেক, মাংস ভাজা। পুরো বইটা একটা ভালোবাসা।
Profile Image for Khan Ashraf  Alif.
135 reviews7 followers
October 7, 2019
তখন ইন্টারনেট ছিল না, লাইব্রেরির যুগ; কমিকস আর বিভিন্ন ক্লাসিকস গল্পের বই পড়ে শেষ করে ফেলার দরুন বই না পেয়ে তিন গোয়েন্দা কিনে নিয়ে বাসায় ফেরা। এরপর শুরু হয় একদিনে দু'টো করে বই শেষ করা আর পড়তে পড়তে চমৎকার সব অ্যাডভেঞ্চার ভিজুয়ালাইজ করার দিন ❤ রকিব হাসানের জন্য একরাশ ভালবাসা। (শ দিয়ে নামের কুলাঙ্গার, যে তিন গোয়েন্দা সিরিজটিকে গোবরে আর নর্দমায় ফেলেছে তার জন্য একরাশ নিন্দা ও ঘৃণা)
Profile Image for Samia Rashid.
294 reviews15 followers
December 15, 2024
তিন গোয়েন্দা আমার কাছে শুধুমাত্র বই নয়, এগুলো আমার কাছে ভালোবাসা এবং স্মৃতি 💜

আমার সংগ্রহে আছে ৩০টার মত ভলিউম। স্কুলে থাকতে পাগলের মত তিন গোয়েন্দার বই কিনতাম আর পড়তাম। আজ থেকে প্রায় ২০বছর আগের কথা হবে! টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে কি রিকশাভাড়া বাঁচিয়ে বই কিনতাম। আমার স্কুলের কাছেই একটা পুরাতন বইয়ের দোকান ছিল, আমার এক বান্ধবী চিনিয়েছ��ল দোকানটা। দুজন মিলে একসাথে যেতাম বই কিনতে। পুরাতন এক একটা ভলিউমের দাম নিত ২০টাকা! সেই সময়ে ২০টাকার মূল্য ছিল অনেক। দুজন মিলে আলাদা আলাদা ভলিউম কিনে বই আদান প্রদান চলত। চলত নিজেদের কে উপহার দেওয়াও।

তিন বান্ধবী মিলে নিজেরা হয়েছিলাম-কিশোর, মুসা আর রবিন! ক্লাসে বসে বইয়ের গল্প, নিজেরা রহস্য খোঁজা, কার্ড বানানো, কিশোর-মুসা-রবিন সেজে অভিনয় করা, কি না করিনি তখন!

ক্লাসে পড়ার বইয়ের নীচে তিন গোয়েন্দা রেখে লুকিয়ে পড়তাম! বাসায় বিকালে ঘুমানো বাধ্যতামূলক ছিল, মাঝে মাঝে না ঘুমিয়ে বালিশের নিচে বই রাখতাম, ঘরে কেউ না থাকলে পড়তাম আবার কেউ ঘরের কাছে আসতে নিলেই বইটা বালিশের নিচে পগারপার করে ঘুমের ভান করে মটকা মেরে পড়ে থাকতাম! কি ভীষণ সুন্দর দিন ছিল সেগুলো। খুব বেশি মনে পড়ে ছেলেবেলার কথা। কোথায় যেন হারিয়ে গেল সেই সুন্দর শৈশব আমার।

এখনকার যুগের টিনেজারদের কাছে হয়ত তিন গোয়েন্দা নামটা অনেক অপরিচিত একটা নাম! তাদের হাতে অনেক কিছু আছে সময় কাটাবার জন্য-মোবাইল, টিভি, ট্যাব ইত্যাদি। আমার সময়টায় হয়ত খুব কম সংখ্যক জিনিস ছিল আনন্দ পাবার বা অবসর কাটানোর জন্য কিন্তু সেগুলো ছিল শ্রেষ্ঠ কিছু জিনিস, তার মধ্যে তিন গোয়েন্দার নাম থাকবে সবসময়ই।
Profile Image for Sadman Shikhar.
6 reviews
November 25, 2016
লাইফ এর প্রথম বই পড়া শুরু এই তিন গোয়েন্দা সিরিজ দিয়ে,সেই 2004 সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ভালোলাগা অটুট.....
Profile Image for Mehjad Mehrin.
125 reviews11 followers
December 13, 2023
কোনো রিভিউ দিচ্ছি না। তিন গোয়েন্দা আর ছোটবেলা নিয়ে অল্প একটু স্মৃতিচারণ করছি শুধু।

সেমিস্টার ফাইনালের প্যারা দেখে সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে বসে আছি। তবুও ফাঁকিবাজি করার কোনো না কোনো উপায় খুঁজে বের করা হয়েই যায়। সারাবছর কোনো কারণ ছাড়া রিডার্স ব্লকে ভুগলেও পরীক্ষার আগে সবসময় বই পড়ার একটা ঝোঁক উঠে। রিভিশন দিতে গিয়ে পড়ালেখার বিতকিচ্ছিত অবস্থা দেখে বিরক্ত হয়ে উঠে গেলাম। আপন মনে লেখা-পড়ার সিস্টেম নিয়ে যা তা বলতে বলতে সোফার এক কোনায় "তিন গোয়েন্দা" হাতে নিয়ে বসে পড়লাম।

অনেকদিন পর হাতে নিয়েছি দেখেই নাকি জানি না, উলটে পালটে বইটা দেখতে গিয়েই কভারের পেছনে চোখ আটকে গেলো।

"হ্যালো, কিশোর বন্ধুরা-
আমি কিশোর পাশা বলছি, আমেরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলেসে, প্রশান্ত মাহাসাগরের তীরে, হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।
যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি, আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি, নাম "তিন গোয়েন্দা"। আমি বাঙালী। থাকি চাচা-চাচীর কাছে। দুই বন্ধুর একজনের নাম মুসা আমান,
ব্যায়ামবীর, আমেরিকান নিগ্রো; অন্যজন আইরিশ আমেরিকান,রবিন মিলফোর্ড, বইয়ের পোকা। একই ক্লাসে পড়ি আমরা।
পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ডে লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের নিচে পুরানো এক মোবাইল হোম-এ আমাদের হেডকোয়ার্টার।
তিনটি রহস্যের সমাধান করতে চলেছি-
এসো না, চলে এসো আমাদের দলে।"

এই অংশ পড়েই মন ঠান্ডা হয়ে গেলো। তিন গোয়েন্দা!! কত আবেগ, কত স্মৃতি যে লুকানো আছে এই সিরিজের পেছনে। কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলাম সেই সময়গুলোতে।

আমাকে আমার তিন গোয়েন্দার প্রথম কপি অনেক ছোটোবেলায় স্টেশনের এক দোকান থেকে কিনে দিয়েছিলো আমার বাবা।। সেই সময় এই বই পড়ে আমার মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই একটা ভলিউম বেশ কয়েকবার পড়ে ফেললাম। ছোট থাকতে স্মৃতিশক্তি অনেক ভালো ছিলো দেখে প্রথম ৮-১০ পাতা মোটামুটি মুখস্ত হয়ে গিয়েছিলো।

ছোটবেলায় দাদুবাড়িতে ঈদ করতে গেলে দাদু-দাদা সব ভাইবোনকে টাকা দিতো। সেই টাকা নিয়ে সবাই হইচই করতে করতে চলে যেতাম দাদুবাড়ির কাছের ছোট্ট এক দোকান "শিক্ষা বিপনী"-তে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে কেনা শুরু করলাম "তিন গোয়েন্দা"-র একেকটি ভলিউম। এরপর প্রতি ঈদের জন্য মুখিয়ে থাকতাম। কখন ঈদ আসবে, দাদু-দাদা টাকা দিবে আর একটি তিন গোয়েন্দার বই হাতে আসবে।

ক্লাস ফোরে থাকতে একই বেঞ্চের বাসিন্দা আমরা ৪ জন তো রীতিমতো নিজেদেরকে গোয়েন্দা ভাবা শুরু করেছিলাম। তিন গোয়েন্দার দেখাদেখি স্কুলের ডায়েরীর একদম প্রথম পৃষ্ঠায় চারটা প্রশ্নবোধক দিয়ে রেখেছিলাম।

পড়ার বইয়ের মাঝখানে "তিন গোয়েন্দা" রেখে পড়ার সময় কত বার যে ধরা খেয়েছি তার কোনো হিসেব নেই। স্কুলে তো ক্লাসের মাঝখানে পড়ার জন্য একবার বই নিয়েও গিয়েছিলো। আর আম্মু-বাবার হাতে পড়ার বইয়ের মাঝখানে গল্পের বই রেখে পড়া অবস্থায় প্রচুর ধরা খেলেও; খুব সম্ভবত নিজেরাও নিজেদের ছোটোবেলায় একই কাজ করেছেন দেখেই হয়ত তেমন একটা ধমক দেয়নি আমাকে।

ইন্সটা রিল দেখে দেখে ডোপামিন বুস্ট নেওয়ার কারণে আজকাল মনোযোগ খুবই কমে গিয়েছে, অর্ধেকের বেশি জিনিস মনে থাকে না, যা মনে থাকে সেসবও খুব আবছা ভাবে মনে থাকে। কিন্তু বই সংক্রান্ত ছোটোবেলার বেশিরভাগ স্মৃতিই এখনো বেশ ভালো মনে আছে। তিন গোয়েন্দা পড়তে গিয়ে ছোটোবেলার স্মৃতিগুলোতে একটা নস্টালজিক ট্রিপ দিয়ে আসলাম।

আমার কথা ফু্রালো, নটে গাছটিও মুড়ালো।

বিদ্রঃ বাংলা বই, বাংলা রিভিউ লেখা অনেক কমে গিয়েছে। সত্যি বলতে গেলে বাংলা রিভিউ একদমই লেখা হয় না। বছরের শেষের দিকে এসে মনে হলো, "কাজটা ঠিক হচ্ছে না।" এজন্য আবার বাংলায় রিভিউ লিখে আস্তে আস্তে বাংলা রিভিউ লেখার অভ্যাসটা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

Profile Image for Tisha.
205 reviews1,118 followers
April 14, 2025
তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। একদিন ক্লাসে এক ফ্রেন্ডের হাতে দেখলাম ছোট একটা, ময়লা ময়লা টাইপ পাতার বই। তার কাছ থেকে চেয়ে একটু চোখ বুলিয়ে দেখলাম, মানে একটু পড়েই ফেললাম আর কি। তিনটা গল্প ছিল ঐ ভলিউমে। তার মধ্যে একটা ছিল পোচার। সেটাই পড়া শুরু করেছিলাম। ক্লাসে পুরোপুরি শেষ করতে পারি নি, তাই বাসায় নিয়ে এসেছিলাম বইটা।এরপর আর কোন থামাথামি নেই। একের পর এক শেষ করেছি ভলিউম! বাবা প্রত্যেক মাসে তিনটা ভলিউম কিনে দিতো, মানে নয়টা গল্প। মাঝে মাঝে অবশ্য জোর করে আরও বেশি কিনতাম! :P এর চেয়ে চমৎকার কোন গিফট পৃথিবীতে থাকতে পারে বলে মনে হতো না তখন। বাসায় তাই ভলিউমের পাহাড় তৈরি হয়ে গিয়েছিলো প্রায়!আমি ছুটির দিনের অপেক্ষায় বসে থাকতাম। কারণ সেই দিনগুলোতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা আমি তিন গোয়েন্দা পড়তাম। ‘হাল্লো, কিশোর বন্ধুরা- আমি কিশোর পাশা বলছি...” কিংবা “খাইছে” এইসব লেখা এক মুহূর্তেই মন আনন্দে ভরিয়ে দিতো! কিশোর, মুসা, রবিন, মেরি খালা, পাশা চাচা, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আমান, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মিলফোর্ড, জিনা, রাফি, শুঁটকি টেরি (যদিও ��িরক্তিকর ছিল!)......কত্ত প্রিয় নাম (আরও অনেকে বাদ পড়েছে যদিও! মনে করতে পারছি না সব নাম এখন! :( ) আমার কাছে এরা সবাই রীতিমতো সত্যিকারে মানুষ ছিল। এতো বেশি অবসেসড ছিলাম! কতবার যে পড়েছি এক একটা গল্প! সবচেয়ে বেশি পড়েছি মনে হয় এই ছায়াশ্বাপদ। এটা আমার প্রিয় ছিল খুব।সুন্দর ছিল দিনগুলো...বেশি সুন্দর...:')
Profile Image for Habibur Rahman Hady.
33 reviews7 followers
April 15, 2022
তিন গোয়েন্দা:

কিছু দিন আগেই রেন্ট-আ-রাইড কোম্পানির কুইজে সীমের বিচি গুণে রোলস রয়েসে চড়ার ৩০ দিনের সুযোগ পেয়েছে কিশোর!
সেই সুযোগটাই কাজে লাগালো তারা তিনজন।
বেশ নাটকীয়তার সাথে বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ডেভিস ক্রিস্টোফারের সাথে দেখা করলো। ডেভিস ক্রিস্টোফার তাদেরকে তার ছবির শ্যুটিংয়ের জন্য একটা ভূতুড়ে বাড়ি খুঁজে দিতে বলেন। তাও আবার এমন ভূতূড়ে বাড়ি হতে হবে যেখানে সত্যি সত্যি ভূত থাকবে!
বাড়ির সন্ধানে নেমে পড়ল তিন গোয়েন্দা।
খুঁজতে খুঁজতে চলে গেল হলিউডের অদূরে পাহাড়ের গায়ে থাকা টেরর ক্যাসলে। সেখানে সত্যিকারের ভূত আছে কিনা সেটা জানতে রাতে টেরর ক্যাসলে উপস্থিত হয় তিন গোয়েন্দা।
দেয়ালে লাগানো ছবির দিকে তাকাতেই ছবির চোখটা মুসাকে চোখ টিপে দিলো! রাত বাড়তেই আতঙ্ক এসে ভর করতে থাকলো তিনজনের উপর।

সত্যিই কি ক্যাসলে ভূত আছে?

তিন গোয়েন্দার প্রথম কেস এটা। যার মাধ্যমেই তারা পরিচিত হতে থাকে। দারুণ একটা কেস।
প্রথম যখন পড়ি তখন কিশোর মনে এতটাই ছাপ ফেলেছিল যে এখনও সেই স্বাদটা মনে আছে!
নিজেই যেন কিশোর পাশা হয়ে গেছিলাম।

নিঃসন্দেহে 'তিন গোয়েন্দা' দারুণ এক কিশোর থ্রিলার।
Profile Image for Rienhart.
4 reviews
March 1, 2024
যখন এটা পড়ছিলাম তখন সপ্তম শ্রেণিতে ছিলাম। ভূত-প্রেতের গল্প এমনিতেই ভালো লাগতো না, কিন্তু আগেই বেশ কিছু তিন গোয়েন্দা পড়ে সিরিজের ভক্ত হয়ে গেছিলাম, তাই শেষ না করেও থামতে পারছিলাম না। যখন রহস্য উদঘাটন হলো, তখন এতো ভালো লেগেছিলো যে আমার পড়া সেরা ৩টা তি.গো.র মধ্যে এটা জায়গা পেয়েছিলো। প্রায় ১১ বছর পরে এটার মূল বইটাও পড়া হয়, মূল বই পড়তে যেয়ে রকিব হাসানের রুপান্তরের সৌন্দর্যে বার বার মুগ্ধ হয়েছি।
Profile Image for MeRaj Rudba.
38 reviews1 follower
July 29, 2021
It was nice to have a new type of detective series. It was so well written that readers are bound to love the main three characters.

I was wondering why didn't I read this series when I was in my teenage! The book is pretty small. But the story is very rich. I am looking forward to reading the next adventures of the three investigators.
Displaying 1 - 30 of 59 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.