এই দুর্দান্ত কৌতূহলকর থ্রিলারের পটভূমি ভারতবর্ষের কাছাকাছি এক পাহাড়ী রাজ্য। একনায়কতন্ত্রী শাসনব্যবস্থাধীন এই রাজ্যের স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে তলে-তলে চলতে থাকে বিপ্লব সংগঠনের প্রয়াস। আকাশলাল ছিল এই বিপ্লববাহিনীরই নেতা। প্রশাসনিক তৎপরতায় বিদ্রোহ দমিত হল; গা ঢাকা দিল আকাশলাল ও তার প্রধান সঙ্গীরা। পুলিশের জাল কেটে বেরুতে গিয়ে একে-একে নিহত হল আকাশলালের সঙ্গীরা। অবশেষে একদিন আকাশলালও হল বন্দী। পুলিশী হেফাজতে আকস্মিক মৃত্যু ঘটে গেল আকাশলালের। সম্ভাব্য জনরোষ ও উত্তেজনা এড়াতে চুপিচুপি কবর দেওয়া হল তাকে। আশ্চর্য, কীভাবে যেন আবার একদিন ফিরে এল অমর বিপ্লবী আকাশলাল। কীভাবে? আট কুঠুরি ও নয় দরজার কী সেই অনন্য রহস্য যার সহায়তায় মৃত্যুকেও জয় করল আকাশলাল? তারপর?
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুরন্ত রহস্য-রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ভরপুর ‘আট কুঠুরি নয় দরজা’। সম্পূর্ণ মৌলিক, তবু যে-কোনও রুদ্ধশ্বাস বিদেশী থ্রিলারকেও হার মানায় সমরেশ মজুমদারের কীর্তিময় কলমের এই কাহিনী।
Samaresh Majumdar (Bangla: সমরেশ মজুমদার) was a well-known Bengali writer. He spent his childhood years in the tea gardens of Duars, Jalpaiguri, West Bengal, India. He was a student of the Jalpaiguri Zilla School, Jalpaiguri. He completed his bachelors in Bengali from Scottish Church College, Kolkata. His first story appeared in "Desh" in 1967. "Dour" was his first novel, which was published in "Desh" in 1976. Author of novels, short stories and travelogues, Samaresh received the Indian government's coveted Sahitya Akademi award for the second book of the Animesh series, 'Kalbela".
সমরেশ মজুমদার-এর জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা-বাগানে। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র। কলকাতায় আসেন ১৯৬০-এ। শিক্ষা: স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স, পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ। প্রথমে গ্রুপ থিয়েটার করতেন। তারপর নাটক লিখতে গিয়ে গল্প লেখা। প্রথম গল্প ‘দেশ’ পত্রিকায়, ১৯৬৭ সালে। প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’, ১৯৭৫-এ ‘দেশ’ পত্রিকায়। গ্রন্থ: দৌড়, এই আমি রেণু, উত্তরাধিকার, বন্দীনিবাস, বড় পাপ হে, উজান গঙ্গা, বাসভূমি, লক্ষ্মীর পাঁচালি, উনিশ বিশ, সওয়ার, কালবেলা, কালপুরুষ এবং আরও অনেক। সম্মান: ১৯৮২ সালের আনন্দ পুরস্কার তাঁর যোগ্যতার স্বীকৃতি। এ ছাড়া ‘দৌড়’ চলচ্চিত্রের কাহিনিকার হিসাবে বি এফ জে এ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পুরস্কার। ১৯৮৪ সালে ‘কালবেলা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার।
আনন্দবাজার রবিবাসরীয়-তে ধারাবাহিক প্রকাশের সময় এই উপন্যাসটা গোগ্রাসে গিলতাম। সত্যি বলতে কি, রবিবারের জন্য অপেক্ষা করতাম এই লেখাটা পড়ব বলেই। পরে বই আকারেও লেখাটা আবার পড়েছিলাম। তার এতদিন পরেও, এত-এত থ্রিলার পড়েও এই বইটা আমার মনোজগতে একটা আলাদা অবস্থান দখল করে আছে। কেন? তিনটে কারণ খুব সহজে চিহ্নিত করতে পারছি। প্রথমত, এত গতিময় পলিটিক্যাল থ্রিলার বাংলায় আর একটিও পড়িনি। দ্বিতীয়ত, কোন দেশে এই ঘটনা ঘটছে তার নাম উল্লেখ না করেও নেপালের সেই সময়কার প্রতিটি রাজনৈতিক চোরাস্রোত আর সেখানে ক্ষমতার দখলের পেছনে নানা শ্রেণির অন্তর্দ্বন্দ্ব এত ভালোভাবে ফুটিয়েছেন লেখক— যা প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হয়। তৃতীয়ত, এই উপন্যাসে ষড়রিপুর দাপটের মধ্যেও যেটা আমাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল তা হল এতে ধুসর চরিত্রদের বিপুল সংখ্যাধিক্য। এতে কোনো নায়ক নেই, যদি না সময় বা নিয়তিকে আপনি নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবু এই উপন্যাসের একটি তারা আমি খসিয়ে দেব, কারণ এর শেষটা থেকে গেছে খোলা— যা দিয়ে আপনি আপনার মনের মতো যেকোনো পরিসমাপ্তি ভরে নিতে পারেন। কিন্তু লেখকের তরফে সেটা আমার তরফে অকারণ শর্টকাট নেওয়া বলে মনে হয়েছে— বিশেষত যেখানে বাকি উপন্যাসটা অনেক যত্নে, খুঁটিনাটির দিকে অনেকখানি যত্ন দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল। সুযোগ পেলে অতি অবশ্যই পড়ুন।
এই বইটা দিয়েই সমরেশ মজুমদারের লেখার সাথে পরিচয়। সম্ভবত ক্লাস ৮ এ থাকতে পড়েছিলাম। শেষটা পড়ে অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। কান্নাও করেছিলাম সম্ভবত। সমাপ্তি এক বুক কষ্ট দিয়ে গেছে। বারবার মনে হচ্ছিল কেন এমন হলো? এতো কষ্ট, এতো আত্নত্যাগ!!! শেষটার জন্যই সম্ভবত আজ ৮+ বছর পরও বইয়ের কাহিনী মনে আছে। শেষটা এমন নাহলেই যেন ভালো হতো! কিন্তু তাহলে কি আজও মনে থাকতো?
দারুণ একখান সময় কাটালাম বইটার সাথে। একদম খাসা জিনিস। আর শেষ নিয়েও নেই কোন আফসোস বা অভিযোগ। ছোট ছোট টুইস্ট আর থ্রিলিং এ ভরপুর এরকম আরো কিছু বই চায় (অনুবাদ বাদে)। যদি কোন সহৃদয়বান বন্ধুবান্ধবী থাকেন পারলে কয়টা সাজেস্ট কইরেন। একান্ত কৃতজ্ঞ থাকব।
কুঠুরি নিয়ে কোন চিন্তা টিন্তা করি নাইক্যা । শুধু মুগ্ধ হয়ে পড়ে গেছি। সমরেশের রাজনৈতিক উপন্যাস বেশ কিছু পড়েছি কিন্তু রাজনৈতিক থ্রিলার এই প্রথম। অনেক রিভিউ পড়ে বুঝলাম অনেকেই গল্পের শেষে ধোঁয়াশার মধ্যে পড়ে গেছে।চিন্তাই ছিলাম এই অধম বান্দাও হয়তো পড়বে । কিন্তু নাহ। আমার কাছে ঠিক ঠাকিই লেগেছে। বিশেষ করে ম্যাডাম যখন আকাশলালকে বললেন 'আমি যাকে তৈরি করেছি তার প্রয়োজন আমার চেয়ে বেশি আর কে জানবে' ।। পুরো সময়টা জুড়ে এটা যে ম্যাডামের একটা সাজানো নাটক ছিলো তা বুঝতে কী আর বাকি থাকে (আকাশলালের অনুভূতি, ত্রিভুবনের সংলাপ সবকিছু বুঝে সুঝে)? । যাইহোক হোক এটা আমার কাছে বিনোদনের একটা ফুলস্কয়ার প্যাকেজ ছিল বইকি ।
সমরেশ মজুমদারের লেখার একটা বড় বৈশিষ্ট্য তিনি বিপ্লবীদের নিয়ে লেখেন। শাসকতন্ত্র বিশেষ করে শোসক তন্ত্রের বিপক্ষে গড়ে উঠা সংগঠন থাকে তার লেখার মধ্যে। আট কুঠুরি নয় দরজাও এর ব্যাতিক্রম নয়। এটাও সেই রাজনৈতিক থ্রিলারের মধ্যেই পরে। শুধু এর সাথে রয়েছে সায়েন্স ফিকশনের কিঞ্চিৎ ছোয়া! বিপ্লবী নেতা আকাশলালকে নিয়ে গল্প। যিনি কিনা বিপ্লব করে আসছেন রাষ্টের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যার মাথার মূল্য ১০লক্ষ! দীর্ঘদিন বিপ্লবের পর তিনি আজ ক্লান্ত কিন্তু হার ছাড়েন নি। এখনও কাজ করে যাচ্ছেন আড়ালে। সাথে আছে তার বিশ্বাসভাজন কিছু সহচরী। কিন্তু কতদিন আর এভাবে লুকিয়ে থাকা? পুলিশ কমিশনার থেকে উপরতলার কর্মকর্তা সকলে তাকে ধরার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাকে ধরা যাচ্ছে না। এমন সময় হঠাত একদিন পুলিশ কমিশনারের কাছে খোদ আকাশলাল ফোন করে জানাল তিনি ধরা দিচ্ছেন। তাও প্রকাশ্যে! কিন্তু আত্মসমর্পণের কিছুকাল পরেই তার মৃত্যু হয়! আর তখন থেকেই শুরু হয় রহস্যের। আকাশলালকে নাকি এখনো জীবিত!
উপন্যাসটি একবারে খারাপ বলবো না তবে আরো ভাল হয়তো হতে পারত। একদম মৌলিক থ্রিলার আর পলিটিক্যাল বিভিন্ন রসদ সব একে বেশ ভাল একটি উপন্যাস হওয়ার দিকেই নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এর ঘটনার প্রবাহে খাপছাড়া ধরনই একে তা হতে দেয় নি। উপন্যাসটি কোনদিকে যাচ্ছে তা লেখক চিন্তা ভাবনা না করেই এগিয়ে নিয়ে গেছেন এমন মনে হয়েছে। তাই সমাপ্তিটা ঠিক মেলাতে পারি নি পুরো বইয়ের সাথে। আবার কিছু কিছু চরিত্র বেশ অপ্রয়োজনীয়ও মনে হয়েছে যারা না থাকলেও গল্পে তেমন প্রভাব ফেলতো না। সমরেশের উপন্যাসের ভাল দিক হচ্ছে তিনি নারীদের বেশ ভাল অবস্থানে রাখেন। এখানেও ম্যাডাম, পৃথা, হেনা বা অনীকা সিং এর মত ফিমেইল চরিত্রগুলো বেশ স্ট্রং এবং ব্যাক্তিত্বপূরণ ছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ম্যাডামতো আকাশলালকেও ছাড়িয়ে গেছেন ব্যাক্তিত্বে! পলিটিক্যাল গেমটা বেশ সুন্দরভাবে এখানে প্রকাশ পেয়েছে। পলিটিক্স কতটা ডিপ হতে পারে তা এখানে বোঝা যায়। বিপ্লব বিষয়টাও কতটা ভংগুর হতে পারে তা দেখানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্য একটি ব্যাপার ছিল সাধারণ মানুষের কাপ্রুষতা। মনে মনে তারা হয়তো বিপ্লবকে সমর্থন করে যাচ্ছে কিন্তু যতক্ষন পরযন্ত না বিপ্লবের ফল তাদের হাতে তুলে দেয়া হবে ততদিন পর্যন্ত তারা নিজ ঘরে বসে অত্যাচার সহ্য করে যাবে আর দোষারোপ করবে। মাঠে নামার সময় তারা নেই! এটাই একটা বিপ্লবকে দমিয়ে দিতে সক্ষম। বলাই বাহুল্য এর সাথে বর্তমান সময়ের বেশ কিছু ঘটনার মিল পেয়েছি বৈ কি! :p
ওভার হাইপড লেগেছে। হয়তো এতো বছর ধরে প্রশংসা শুনে আসতে আসতে অনেক বেশি এক্সপেকটেশন ছিল। বেশিরভাগেরই ভালো লেগেছে। যাদের ভাল লাগেনি তাদের একটা মেজর কারণ ছিল খাপছাড়া লেখা। সত্যি কথা বলতে গেলে আমার কাছে খাপছাড়া লাগেনি কিন্তু কি যেন একটা অনুপস্থিত ছিল। সমরেশের কাছ থেকে এই রাজনৈতিক ঘরানার ভাল লেখা আরও পেয়েছি বলেই হয়তো ভাল লাগেনি। রহস্যময়ী 'ম্যাডামের' রহস্য খোলাসা না করাটা এবং আকাশলালের স্ট্রাটেজির আসল কারণ বর্ণনা না করাটাই আমার কাছে মাইনাস পয়েন্ত বলে মনে হয়েছে বইয়ের। কাহিনীর বিস্তারটা যদিও ভালই ছিল। ইদানীং কি বিপরীত স্রোতের মাছ হয়ে গেলাম নাকি! সবার যা ভাল লাগছে তা একেবারেই মন টানছেনা। কিছুদিন বিরতি দিয়ে আরেকবার বইটা পড়ে দেখতে হবে একই ইম্প্রেশন হয় নাকি।
খুবই আগ্রহ নিয়ে শুরু করেছিলাম। শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল, এরপর কি হবে এটা জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে ছিলাম। কিন্তু শেষটা কেন যেন আমার কাছে একেবারেই যুৎসই মনে হয়নি। ফিনিশিংটা একদম বাজে লেগেছে। আরো অনেক ভালো হতে পারত।
পূর্বকথা: স্কুল কলেজে থাকতে যতগুলো থ্রিলার বই পড়েছি, তারমধ্যে অন্যতম সেরা বই ছিলো এইটা. আবার পুনরায় ০১ ডিসেম্বর, ২০২২ এ বইটা পড়তে ইচ্ছে করে. হুট করে শেষের দিকের কিছু অংশ পড়া হয়ে ওঠেনা. এখন শেষ করে ফেললাম.
বই'আলাপ: আমি মুলত থ্রিলার পড়তে পছন্দ করি. আর এইটা খাস পলিটিক্যাল থ্রিলার বই. কোনো স্পয়লার ছাড়ায় দু'একটা কথা লিখে যায়.
কাল্পনিক কোনো একটা দেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক খেলার প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে এখানে. এই বইয়ে কয়েকটা ক্যারেক্টর আছে যেইগুলা আপনার মাথা পুরা আওলায় ফেলবে. সমরেশ মজুমদারের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ যে এত প্রখর এই বইটা পড়লে বোঝা যাবে.
দুইটা ক্যারেক্টর, আকাশলাল এবং ম্যাডাম. এই দুইজন এই বইয়ের মেইন ফ্রেম. একদম শেষের দিকে একটু বোরিং লাগতে পারে, তবে আমি বলবো পড়া চালিয়ে যাইতে.
৭ দিন আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিছেন সমরেশ মজুমদার. তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি.
লেখক শুরু থেকে শেষ অবধি একদম জমিয়ে রেখেছিল। দারুণ সাসপেন্স! একটা ভালো থৃলারের যা যা প্রয়োজন সবই এতে ছিল। জাস্ট এন্ডিংটা পুরোই বারোটা বাজিয়ে দিল। আফসোস!!!
বইটা নিয়ে যেরকম আলোচনা দেখেছি আমার বইটা নিয়ে আগ্রহ এবং আশা একটু বেশি ছিলো । কিন্তু খারাপ না লাগলেও এক্সপেকটেশন সেই তুলনায় পূরণ হয়নি । কিন্তু খুব যে খারাপ লেগেছে তাও না।
খারাপ লাগে নি। ভালই। বিপ্লবের কাহিনী পড়তে ভালো লাগে। পাহাড়ি এলাকা, সাথে বিপ্লবী কিছু মানুষ, পরিবেশটার মধ্যে "গর্ভধারিণী" উপন্যাসের মিল পেলাম যেন। কিন্তু কাহিনীটা কেমন যেন বাস্তবতার সাথে মেলে না। কোন কোন জায়গায় মনে হচ্ছিল যেন কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী পড়ছি। কিছু রহস্যের খোলাসা হলে মনে হয় ভালো লাগতো। সমরেশ মজুমদারের লেখা আমার কাছে আপন আপন মনে হয় খুব।
এতো সুন্দর করে শুরু করা গল্পের শেষটা এমন ক্যান? গর্ভধারিণী আর আট কুঠুরি নয় দরজা দুটো বই-ই কাছাকাছি সময়ে পড়েছিলাম৷ মনে আছে, দুইটা বিখ্যাত বই পড়েই হতাশ হয়েছিলাম প্রচন্ড। এতো সুন্দরভাবে শুরু করে, পুরাটা প্লট গুছিয়ে শেষটা এমন 'কেলো' করে দিলেন কেন? -_-
“আট কুঠুরি হল শরীরের আটটা গ্রন্থি। পিটুইটারি, থাইমাস, থাইরয়েড, প্যরা থাইরয়েড, এলড্রিনাল, প্যারোটিড, প্যাংক্রিয়াস, ওভারিস। এই শরীরটা বেঁচে আছে এই আটটি গ্রন্থির মধ্য দিয়ে হর্মোন সিক্রিয়েশনের জন্য। আর এই আটটি গ্রন্থির সঙ্গে শরীরের নয়টি দ্বার যুক্ত। তিনতলা হল, মস্তিস্ক, কোমর থেকে শরীরের ঊর্ধ্বভাগ এবং নিম্নভাগ। নাক, কান, চোখ, মুখ ইত্যাদি নয়টা দ্বার এই তিনতলায় ছড়িয়ে আবদ্ধ ,যা স্নায়ুশক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা যায়।``
নামের ব্যাখ্যা,যা বইয়েই দেওয়া আছে। পলিটিকযাল থ্রিলার। বেশ ভালোই।
A L𝐚b𝐲r𝐢n𝐭h𝐢n𝐞 𝐏o𝐥i𝐭i𝐜a𝐥 𝐓h𝐫i𝐥l𝐞r: 𝐀 𝐑e𝐯i𝐞w o𝐟 "আট কুঠুরি নয় দরজা"
𝗕𝗼𝗼𝗸 𝗡𝗮𝗺𝗲: আট কুঠুরি নয় দরজা/ At Kuthuri Nay Daraja/ Aat Kuthuri Noy Daraja/ Eight Chambers, Nine Doors 𝗪𝗿𝗶𝘁𝗲𝗿: সমরেশ মজুমদার/ Samaresh Majumder 𝗚𝗲𝗻𝗿𝗲: Political Thriller 𝗠𝘆 𝗥𝗮𝘁𝗶𝗻𝗴𝘀: 4 Stars/ ⭐ ⭐ ⭐ ⭐
𝗕𝗼𝗼𝗸 𝗗𝗶𝘀𝗰𝘂𝘀𝘀𝗶𝗼𝗻: "আট কুঠুরি নয় দরজা" by সমরেশ মজুমদার is a gripping political thriller that explores the complexities of revolution, power dynamics, and human nature.
Before delving into the plot, let's unravel the intriguing title. "আট কুঠুরি নয় দরজা," translating to "Eight Chambers, Nine Doors," initially sparks curiosity about a hidden location. This curiosity leads to a fascinating revelation within the narrative, connecting the body's eight glands with nine orifices. The eight chambers represent the body's glands: neuroendocrine organs (Pituitary gland and hypothalamus), pineal gland, pancreas, ovaries or testicles, thyroid gland, parathyroid gland, and adrenal glands. These glands play a crucial role in the body's hormonal secretion, intricately connected with the nine gates of the body which are Two eyes, two ears, mouth, nostrils, anus and genitals.
Turning to the plot, set against the backdrop of a small fictional Himalayan nation (with hints mirroring Nepal's political history, adding an intriguing layer for informed readers), the story centers around Akashlal, a revolutionary leader with a hefty bounty on his head. He is sought by the authoritarian government for his relentless efforts to overthrow the oppressive regime.
Samresh masterfully crafts a labyrinthine story where Akashlal's decision to surrender to the police, only to have his dead body stolen for a daring operation, sets the stage for a series of twists and turns that keep readers on the edge of their seats. The narrative is further enriched by the entanglement of Dr. Sajan and his wife Pritha, a vacationing couple who unwittingly become embroiled in Akashlal's mysterious world.
The novel's strength lies in its intriguing premise, suspenseful plot that keeps readers engaged, and Samresh's thought-provoking exploration of political themes and the interplay between politics and economics. One of the standout aspects of the book is its diverse array of characters. From the determined Akashlal to the ruthless police commissioner Vargis, each character is meticulously crafted, adding depth and layers to the narrative. The inclusion of strong female characters, such as Madam and Pritha, challenges traditional gender roles and brings a refreshing perspective to the story.
However, the book has its flaws. While the initial chapters are gripping and well-paced, some readers felt the narrative lost momentum in the latter half, with the ending failing to resolve all plot threads satisfactorily. The dense philosophical discussions and musings, though insightful, may challenge some readers and slow the overall pace. The ambiguity surrounding Akashlal's true motives and the revolutionaries' ultimate goal leaves questions unanswered. Additionally, the science fiction elements, while intriguing, felt underdeveloped.
In conclusion, "আট কুঠুরি নয় দরজা" is a thought-provoking thriller that will keep readers guessing until the very end. Despite its flaws, the novel invites readers to delve into a labyrinth of intrigue and interpretation, making it a worthwhile read for those seeking a captivating journey into the complexities of revolution and human nature, thus preparing readers to step into a labyrinth with more doors than answers.
যখন বাংলাদেশের স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হলো এবং হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালো... ঠিক সেই সময়ে পড়েছি 'আট কুঠুরি নয় দরজা' যেখানে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে প্রতিরোধ এবং একজন নেতা যিনি হলেন আকাশলাল। শেষ পর্যন্ত যদি একটা গণঅভ্যুত্থান হতো তাহলে হয়তো গল্পটা আরও জমতো এবং পাঠককে ছুয়ে যেতো...
ক্ষমতা সবাই চ���য়। কেউ চায় নিজে রাজা হতে, আবার কেউ হতে চায় রাজার রাজা। সেই রাজার-নীতি মানে পলিটিক্স নিয়েই গল্পের অবতারণা। গল্পটা ভারতের সীমান্তবর্তী এক ছোট্ট পাহাড়ী রাজ্য নিয়ে। রাজতন্ত্রের নামে শিশু রাজাকে সামনে রেখে "বোর্ড"ই মূলত একনায়কতন্ত্র চালায় সেখানে। একনায়কতন্ত্রের কারণেই সেখানকার নিয়মনীতি অনেকটাই আলাদা। সে দেশের মানুষও দুইটি অসম ভাগে বিভক্ত। বৃহৎ ভাগটি দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাহাড়ী নিম্নবিত্তের মানুষ। ক্ষুদ্র ভাগটি দেশের মূল ভূখণ্ডে থাকা অভিজাত উচ্চবিত্ত গোষ্ঠী। স্বাভাবিকভাবেই বোর্ডের আচরণ দুই গোষ্ঠীর জন্য একদমই ভিন্ন। অভিজাত পরিবারকে সে দেয় বিলাসী আর নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের অঙ্গীকার; অন্যদিকে পাহাড়ীরা বোর্ডের কাছে একপ্রকার জঞ্জালের মতই। পুলিশ সেখানে শাসনের একচ্ছত্র অধিপতি, পাহাড়ীদের গ্রেপ্তার, গুম, খুন, ধর্ষনের কোন জবাবদিহিতা দিতে হয় না তাদের। বোর্ড-পুলিশের বাইরেও আরেকজন আছেন যিনি পুরো দেশের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজন, সবাই তাকে "ম্যাডাম" বলে ডাকে। ম্যাডাম বোর্ডের সদস্য নন, কিন্তু তার আঙ্গুল হেলনে যেন বোর্ডের সিদ্ধান্তও নড়ে যায়, স্বয়ং মিনিস্টারও তার কথা শোনেন। কিন্তু তার এত ক্ষমতার কেন্দ্র কোথায় সেটা কেউই জানে না। অসমতা যেখানে আছে, সেখানে অসমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকবেই, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী থাকবেই। এখানেও তাই বিপ্লবী দল আছে, যারা চায় তাদের বিরুদ্ধে সকল অন্যায়ের প্রতিশোধ নিয়ে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে। আর বোর্ড চায় এই বিপ্লবীদের যেকোন উপায়ে ধ্বংস করতে। উপন্যাসের শুরু এমন একটা সময়ে যখন বিপ্লবীদের প্রদীপের সলতে পুড়তে পুড়তে প্রায় শেষ কোঠায় চলে এসেছে। একেবারেই যে নিভে যায়নি তার কারণ বিপ্লবী নেতা আকাশলাল। অন্য সব বিপ্লবীদের কচুকাটা করার পরেও এই আকাশলালে অধরাই থেকে গেছে। পুরো পাহাড়ী এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও আকাশলালের টিকিটাও পায়নি পুলিশ। অথচ তাদের নাকের ডগায়ই নানা রকম কীর্তিকলাপের স্বাক্ষ্য রেখে যাচ্ছে বিপ্লবীরা। দেশের সাধারণ মানুষেরা প্রকাশ্যে সমর্থন না করলেও ভেতরে ভেতরে সবাই আকাশলালকে পছন্দ করে। এজন্যই আকাশলালের মাথার জন্য দশ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেও কোন ফল পাননি পুলিশ কমিশনার ভার্গিস। ভার্গিস জানেন সাধারণ মানুষ আকাশলালকে পছন্দ করলেও খুব বেশিদিন লোভ সংবরণ করতে পারবে না, আকাশলালকে ধরতে তাই শুধু একটা বিশ্বাসঘাতকতা প্রয়োজন। এমন সময়ই বোর্ড থেকে আদেশ আসে ভার্গিসের হাতে আর মাত্র ৩ দিন সময়, এই সময়ের মধ্যে আকাশলালকে ধরতে না পারলে চাকরি যাবে ভার্গিসের। হঠাৎ করে বোর্ডের এত তাড়াহুড়ার কারণ বুঝতে পারার আগেই একের পর এক ঘটে যায় আকস্মিক কিছু ঘটনা। দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী বসন্তলালের পচতে থাকা মৃতদেহ আবিষ্কার হয় তার বাংলোতে। ইন্ডিয়া থেকে আসা যে দম্পতি এই মৃতদেহ আবিষ্কার করে তারাও বিপ্লবীদের সাহায্যে উধাও হয়ে যায় লজ থেকে। ওদিকে আকাশলালের কাছ থেকে নিজে থেকেই আত্মসমর্পন করার আহ্বান আসে। আবার তখন উৎসবের জন্য সারা দেশের মানুষ ভিড় জমিয়েছে শহরে। এত বছর পর হঠাৎ করে কেন ধরা দিতে চায় আকাশলাল? কে মারল ব্যবসায়ী বসন্তলালকে? বিপ্লবীদের সাথেই বা সেই ডাক্তার দম্পতর সম্পর্ক কী? কেনই বা উধাও হয়ে গেল সেই দম্পতি? সবাই নিজের চাল দিচ্ছে, নাকি তারা সব অন্য কারো ঘুঁটি? পলিটিক্স, মনস্তত্ত্ব আর বিজ্ঞান, সব মিলে এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলার মত বই।
আট কুঠুরি নয় দরজা, কোনখানে তালা নেই আর সেই ঘর তিনতলা৷ আট কুঠুরি হলো শরীরের আটটা গ্রন্থি। মানুষের শরীরটা বেঁচে থাকে এই আটটি গ্রন্থির মধ্যে দিয়ে। আর এই আটটি গ্রন্থির সাথে শরীরের নয়টি দ্বার যুক্ত। মানে নয়টা দরজা। তিনতলা হলো - মস্তিষ্ক , কোমর থেকে দেহের উপরের অংশ, আর শরীরের নিম্নভাগ।
উপন্যাসটির কাহিনী গড়ে উঠেছে ভারতবর্ষের পার্শ্ববর্তী এক পাহাড়ঘেরা রাজ্যকে কেন্দ্র করে, যে রাজ্যে যেকোনও মানুষের পেছনে একটা কাহিনী আছে। হয় সেটা তোষামুদি করে আত্মরক্ষার, নয় অত্যাচারিত হয়ে সর্বস্ব ক্ষয়ের। শুরুতেই দেখা যায় এক ডাক্তার দম্পতি ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় শহরটিতে। পথিমধ্যে তাদের গাড়িটি দুর্ঘটনায় পডার পর থেকে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে থাকে। নিছক ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যেই কি তারা রওয়ানা হয়েছিল নাকি এটি সুদূরপ্রসারী কোনও পরিকল্পনার অংশ?
উপন্যাসের মূল চরিত্র আকাশলাল, যে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে সরিয়ে জনগণকে সংগঠিত করে বিপ্লবের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চায়। তার একান্ত সহকারী বিপ্লবী ডেভিড, হায়দার ও ত্রিভুবন যাদের অতীত জীবনকে ক্ষতবিক্ষত করে রেখেছে এই পঁচা-গলা শাসনব্যবস্থা। আকাশলালকে ধরতে দশ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা সত্বেও তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। স্বভাবতই পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। পুলিশ কমিশনার ভার্গিসের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সরকারের উপরমহল থেকেও চাপ আসতে থাকে।
আরেক রহস্যময়ী চরিত্র হলো শহরের অন্যতম ধনী এক বিধবা মহিলা, সবাই তাকে ম্যাডাম বলে ডাকে। যিনি উপন্যাসের শুরু থেকেই কুহকজাল বিছিয়ে রেখেছেন। শাসনতন্ত্রের সাথে সরাসরি যুক্ত না হলেও স্বয়ং মিনিস্টারের টিকিটিও তার হাতে বাঁধা।
হঠাৎই আকাশলাল ঘোষণা দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এমনটা সকলের কাছে অভাবিত ছিল। পুলিশি তত্তাবধানে হঠাৎই তার মৃত্যু হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায়ও তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ম্যাডামের পরামর্শে সুরতহাল ছাড়াই তাকে কবর দেওয়া হয়। তবে কেন সমাধিস্থ করার পর কবর থেকে তার লাশ চুরি হলো? কড়া পুলিশ প্রহরার মধ্যেও কীভাবে এ কাজ সম্ভব হলো? মৃত মানুষ কি কখনও ফিরে আসতে পারে? পুলিশ কমিশনার ভার্গিসের শেষ পরিণতি কী হয়েছিল? শেষপর্যন্ত সত্যিই কি রাজ্যে আইনের শাসন গড়ে উঠেছিল? নাকি সবটাই ছিল রাজনৈতিক কোনও চাল আর এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে আসল ক্রীড়নক। গল্প এগিয়ে যেতে থাকে।
একে একে আকাশলালের ঘনিষ্ঠ সকল সহযোগী মারা যেতে থাকে। শেষমেশ তার ভাগ্যেই বা কী লেখা ছিল? প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে আপনাকে পড়ে যেতে হবে উপন্যাসটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। রহস্য এবং রাজনীতির মিশ্রণে টানটান উত্তেজনা ধরে রাখেন লেখক।
রাজনীতির মাঠে যে কে কখন খেলোয়াড়, আর কে গুটি হয়ে ওঠে তা নিশ্চিতভাবে কেউই বলতে পারে না। ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করতে চাই - "It is dangerous to be right when the Government is wrong."
প্রিয় চরিত্রঃ আকাশলাল, যে কিনা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করতে নিজের জীবনেরও পরোয়া করে না।
প্রিয় উক্তিঃ সম্পর্ক পাল্টাতে পাল্টাতে যখন শীতল থেকে শীতলতর হয়ে যায়, তখন যে পক্ষ দুঃখ পায় সে কি মূর্খ?
প্রথম দুশো পৃষ্ঠা কি দুর্দান্তই না ছিলো বইটার!লেখক এতো অসাধারণ পলিটিক্যাল থ্রিলারের শেষটা এমন ভজঘট কিভাবে পাকালেন ভেবে পাচ্ছি না।লেখক খুব সম্ভবত এন্ডিংটা বাস্তবসম্মত করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার লেখনীতে সেটা হয়ে গেছে কনফিউজিং।
ফিনিশিং প্রচন্ড বাজে।প্রথম দুশো পৃষ্ঠার মুগ্ধতার জন্যে দুই তারা দিলাম।
এই বই যখন পড়ি তখন থ্রিলার কী জিনিস জানিনা। অথচ তখন পাঠচক্রে ছোটদের সোভিয়েত ইউনিয়ন পড়ি। আমার চারপাশে কমিউনিস্ট বিপ্লবের গল্প বলা বড় ভাইয়ে ভর্তি। সিনেমা দেখি `` the legend of Bhagat sing "। ঠিক সে সময়ে এই বই যে কী একটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল মনে তার সাক্ষী রয়ে গেছি শুধু আমি আর বুকসেলফে থাকা এই বই।
সমরেশ মজুমদারের বইয়ের সাথে পরিচয় অনেক দেরিতে হয়।
কিন্তু এইটাই আমার পড়া সমরেশ মজুমদারের বেস্ট বই ।
ম্যাডাম নামের চরিত্রের ভক্ত হয়ে গেছি। কি মহিলা! প্রত্যেকটা চরিত্রই মানবিক। হোক সে ত্রিভুবন, হায়দার, পুলিশ কমিশনার বা আকাশলাল। পুরো বইটা পড়ার পর ইচ্ছা হইছে যদি কাহিনীটা নেটফ্লিক্সের এক-দুই সিজনের কোন সিরিজ হতো!! ( হে হে। তাইলে যারা বইটা সম্পর্কে এখনো জানে না তারাও এনজয় করতে পারতো।)
বইয়ের নাম 'আট কুঠুরি নয় দরজা' দেখে ভেবেছিলাম কোনো কুঠুরির ভেতরে গুপ্ত কিছু লুকোনো আছে হয়তো৷ এই ভুল ভাঙ্গে বইয়ের ১৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় যেয়ে। মানুষের মোট গ্রন্থি আটটি। পিটুইটারি, থাইমাস, থাইরয়েড, প্যরা থাইরয়েড প্রভৃতি। এই শরীরটা বেঁচে আছে এই আটটি গ্রন্থির ভেতর দিয়ে হরমোন সিক্রিয়েশন করার জন্য। আর এই আটটি গ্রন্থির সাথে যুক্ত শরীরের নয়টি দ্বার। আর তিনতলা হলো শরীরের মস্তিষ্ক, কোমর থেকে শরীরের ঊর্ধ্বভাগ এবং নিম্নভাগ। চোখ, মুখ, নাক, কান প্রভৃতি নয়টা দ্বার নিয়ে ছড়িয়ে আছে যা স্নায়ুশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। বড়ই রহস্যময় এই মানবশরীর।
এই বইটা আম্মুই অনেকদিন ধরে পড়ার জন্য বলছিল। আজকাল থ্রিলার ঘরানার বই পড়তে একটু বেশিই ভালো লাগছে (জীবনে থ্রিলের বড্ড অভাব
আকাশলাল, যাকে ভার্গিস নামের পুলিশ কর্মকর্তা খুঁজছেন। যার মাথার দাম দশ লক্ষ টাকা। কি কারণ তাকে এভাবে খোঁজার যার জন্য সরকার নির্ঘুম কাটিয়ে দিচ্ছে এমন কি শহরের প্রতাপশালী মিনিস্টার, ভার্গিসও দিন দিন আশাহীন হয়ে পড়ছে! লাল মারুতিতে ডক্টর স্বজন এবং তার স্ত্রী পৃথার ছুটে চলার পেছনে কারণ রয়েছে আকাশলাল নামের সেই লোকটির গোপন এক চিকিৎসার। সেই চিকিৎসার পেছনে রয়েছে এক শ্বাসরুদ্ধকর গল্প। স্বজন জানেও না কেন তাকে এসব করানো হচ্ছে। গাড়ির তেল ফুরিয়ে যাওয়ার পর একটা সময় এক বাংলোয় আশ্রয় নেয়ার সময় স্বজন আবিষ্কার করে বাংলোর নিচের ঘরে এক কফিনের ভেতরে লাশ। কার লাশ তারা জানেনা। এবং সেই বাংলোয় এক প্রকার আটকে থাকে। সেই লাশের সাথে কিসের যোগাযোগ রয়েছে হয়তো এই শহরের ম্যাডাম বলে পরিচিত সেই মহিলাই জানে, যার পুরুষদের প্রতি একটা অন্যরকম ধারণা জন্মানো। চিতা নামে পরিচিত আকাশলাল একসময় ধরা দেয় ভার্গিসের কাছে এবং ধরা দেয়ার পরই হার্ট এটাকে মৃত্যু হয় এবং ঠিক সেদিন রাতে কবর দেয়ার পরেই আকাশলালের সঙ্গী হায়দার, ডেভিড, ত্রিভুবন আকাশলালকে কবর থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং দূর্ভাগ্যবশতঃ ডেভিড ভার্গিসের হাতে খুন হয়। শহরের চানঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে ভার্গিস ম্যাডামের আশ্রয় নিলেও শেষ পর্যন্ত আর রক্ষা হয় না। এক ঘোর রহস্যে ঘেরা গল্পের মোড় দ্রুত বদলাতে থাকে। এক পর্যায়ে ভার্গিস পদত্যাগ করলেও আকাশলালের প্রভাব যেনো বাড়তেই থাকে। মৃত্যুর পরেও কীভাবে আকাশলাল জীবিত হয়ে ফিরলো সেই রহস্যও ভার্গিসের নিকট পরিষ্কার না হওয়ায় এক প্রকার আশাই ছেড়ে দেন। কিন্তু গল্পের শেষটা ছিলো অন্যরকম! ভার্গিস নিজেও জানেনা তার কপালে কি লেখা আছে। মৃত আকাশলাল, যে নাকি দেশদ্রোহী হিসেবে চিন্হিত, যাকে সাধারণ জনগণ ভালোবাসে, কি কারণে সরকার তাকে আটক করবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে কেনই বা আকাশলাল ওরফে চিতার এই লুকোচুরি খেলা এসব কিছু জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে এই বই!
রিডার্স ব্লকে পড়ার পর বইটি আমি অনেক সময় নিয়ে পড়ি এবং খুব দ্রুত বইয়ের মাঝে ডুবে যাই। এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় থ্রিল, রোমান্টিক সবকিছু মিলে একটা অন্ধকার রহস্য সৃষ্টি করেছে। যদিও শেষটা আমি মানতে পারিনি, এমন কি বইয়ের এন্ডিংটাতে আমি পুরোপুরি কনফিউজড ছিলাম। আমার মনে হয় যারাই বইটি পড়েছেন প্রায় সবারই এমন হয়েছে। শেষে আসলে কি হয়েছিলো, আকাশলালের আসল পরিচয় এসব কিছু আমার কাছে ধোঁয়াশা ছিলো। আমি মনে করি এই জায়গাটা পাঠক নিজ নিজ চিন্তা থেকে ভেবে নিলেই ভালো হয়।