Jump to ratings and reviews
Rate this book

মুমিনের ক্যারিয়ার ভাবনা

Rate this book
কেমন হবে একজন খাঁটি মুমিনের ক্যারিয়ার? কী হবে তার জীবনের লক্ষ?
ক্যারিয়ার মানেই আমরা বুঝি টাকা এবং সম্মান। ক্যারিয়ারের মধ্য দিয়ে মানুষ সম্মান খোঁজে, ক্যারিয়ারের মধ্য দিয়ে মানুষ টাকা খোঁজে। কিন্তু ক্যারিয়ারের মধ্য দিয়ে সম্মান খোঁজা, ক্যারিয়ারের মধ্য দিয়ে টাকা খোঁজা, এটা মুমিনের লক্ষ হতে পারে না। কারণ, মুমিন বিশ্বাস করে, টাকা আসে আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে। রিজিক আসে আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে এবং সম্মানও আসে আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে। আল্লাহ তাআলা রিজিকেরও মালিক, সম্মানেরও মালিক।
এটা আল্লাহ তাআলা যে কাউকে ক্যারিয়ার ছাড়াই দিতে পারেন, এটা আমাদের বিশ্বাস।
সুতরাং আমাদের ক্যারিয়ারটা হবে অন্যান্য মানুষের চেয়ে আলাদা। একজন মুমিনের ক্যারিয়ার হবে মূলত দুইটা উদ্দেশ্যে, একটা হচ্ছে দাওয়াহ, আরেকটা হচ্ছে, সাদাকাহ। একজন মুমিন উপরে উঠবে, অনেক উপরে উঠবে। একজন মুমিন সম্পদ উপার্জন করবে, অনেক সম্পদ উপার্জন করবে, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তার লক্ষ্য থাকবে দুইটা। একটা হচ্ছে, সদাকাহ করা, এবং দুই নম্বরে হচ্ছে, দাওয়াহ করা। দ্বীনের দাওয়াহ করা। মানুষের কাছে দ্বীনটাকে উপস্থাপন করা।

152 pages, Unknown Binding

7 people are currently reading
49 people want to read

About the author

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
21 (63%)
4 stars
10 (30%)
3 stars
2 (6%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 10 of 10 reviews
Profile Image for Sabrina.
14 reviews30 followers
September 13, 2023
বর্তমান জামানায় আমাদের পড়ালেখা, শ্রম – সবকিছুর মূলে রয়েছে ক্যারিয়ার। কিন্তু একজন মুমিনের ক্যারিয়ার কেমন হওয়া উচিৎ, ক্যারিয়ার নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিৎ সে বিষয়ে খুব কমই কথা হয়। এমনকি এটা নিরেট দুনিয়াবি বিষয় বলে মনে করা হয়। তাই ইসলামকে এর সাথে আমরা একেবারেই সম্পৃক্ত করি না। অথচ মুসলিম হিসেবে আমার সকল কাজ-কর্মই তো দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিৎ। উক্ত বইয়ে লেখক মুসলিম হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রতি আমাদের কেমন দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিৎ সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।

বইয়ে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু ছিল রিযিক। ইসলামে রিযিক কেবল অর্থ-সম্পত্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আরও বিস্তৃত। এই বই পড়লে রিযিকের ধারণাও স্পষ্ট হয়ে যাবে।

এছাড়া নারীদের ক্যারিয়ার নিয়েও আলোচনা রয়েছে। এখানে একটা বড় রকমের অংশে ছিল পুঁজিবাদের সমালোচনা। নারীদের ট্রেডিশনাল গৃহব্যবস্থাপনার কার্যক্রম থেকে বেড়িয়ে কীভাবে বর্তমান চাকরি ক্ষেত্রে বিচরণ শুরু হল এবং এক্ষেত্রে পুঁজিবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা রয়েছে।

সবশেষে লেখক কিছু দিক-নির্দেশনাও দিয়েছেন। ক্যারিয়ার নিয়ে ইসলামভিত্তিক লেখা বাজারে আর কয়টা আছে জানি না। তবে এই বইটা আমি অবশ্যই সকল মুসলিম তরুণ-তরুণিকে রিকমেন্ড করব।
Profile Image for Mehraj Hussain kawsar.
94 reviews33 followers
June 4, 2023
A must read!!

একজন মুমিনের জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করা,আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। আবার একই সাথে জীবনের নানান প্রয়োজন পূরণে তাকে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে বহুমুখী চেষ্টা তৎপরতা চালাতে হয়। তাই অনেক সময় আবার মনে হয় হয়তো এই দুটো উদ্দেশ্য একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক। কিন্তু না, বাস্তবতা ভিন্ন। আর পুরো বই জুড়ে এই বক্তব্যটাই লেখক জোরালো ভাবে পেশ করেছেন বলে আমার মনে হয়েছে, আল্লাহু আ'লাম।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে রিযিক একটি পূর্বনির্ধারিত বিষয়। তাই আমি যা যতই চেষ্টা চালাই না কেন বা যতই গা এলিয়ে বসে থাকি না কেন আমার নির্ধারিত অংশ আমার কাছে পৌঁছাবেই। কিন্তু আমরা কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা আদেশকৃত যে আমরা যেন সম্মানের সহিত নিজেরা হ্বক হালাল পন্থায় রিযিকের তালাশ করি। অপরের দান দখিনা বা হারাম কোনো পন্থা অবলম্বন না করি। তাই আমাদেরও উচিত সে অনুযায়ী আমল করা।

এমনকি একটা পরিমাণ অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করা তো উলামায়ে কেরাম ফরযও বলেছেন। তা ঠিক কতোটুকু এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা বইটিতে রয়েছে। আর তার বাইরেও অতিরিক্ত আয় করার উদ্দেশ্যে চেষ্টা করাও যে খারাপ কিছু নয় বরং আমাদের মূল উদ্দেশ্য(দ্বীন প্রতিষ্ঠা) পূরণের ক্ষেত্রে বরং সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তার সাপেক্ষে শক্ত যুক্তি তুলে ধরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই যুহুদের প্রশ্ন এসে যায়। নানান সংশয়ও সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু এসব সন্দেহ ও সংশয় অসাধারণ পন্থায় দূর করা হয়েছে বইটিতে।

অবশ্যই কেউ যদি তার প্রয়োজন পূরণ হওয়ার পরে আর অতিরিক্ত আয় রোজগারের জন্য মেহনত না করতে চায় এবং বাকি সময়টুকু কেবল ইবাদতের মেহনতে ব্যয় করতে চায় তবে আলেমদের মতে এটাই উত্তম পন্থা। কিন্তু বেকার সময় অপচয় করার কোনো সুযোগ নেই।

বইয়ের বড় একটা অংশ জুড়ে আলোচনা এসেছে বোনদের ক্যারিয়ার ভাবনা কেমন হবে তা নিয়ে। ইসলাম তাদের কি নির্দেশনা দেয় আর পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত এই সমাজ তাদের কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। তাদেরকে সবিস্তারে নানান উপকারী ও কার্যকরী দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেগুলোর উপর আমল করতে পারলে অনেক উপকারী হবেন ইন শা আল্লাহ।

তাছাড়া জেনারেল পড়ুয়াদের জন্যেও বাস্তবমুখী কিছু উপদেশ ও দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেগুলোর উপর আমল করতে পারলে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করবে ইন শা আল্লাহ। বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন, আমীন। উস্তাদকে আরও বেশি বেশি দ্বীনের খেদমত করার তৌফিক দিন,হেদায়েত দিন,হেফাযতে রাখুন, আমীন। সকল প্রশংসা এই বিশ্বজাহানের একক স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহর।
Profile Image for Fahad Ahammed.
386 reviews44 followers
August 3, 2025
ক্যারিয়ার, ইনকাম, টাকা, সম্মান, খরচ, দান আবার পাশাপাশি ধর্মীয় আচার সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যায়। জট পাকানো ভাবনায় চিন্তার খুরাক দিবে এই বই।
Profile Image for Al Faisal Kanon.
151 reviews1 follower
June 9, 2025
আউটস্ট্যান্ডিং বই! ইসলামী চিন্তাধারায় থেকে সাম্প্রতিক সময়ে এতো ভালো ভালো সব লেখা আসছে! এই বইটার কন্সেপ্টটা দেখেন। এখনকার সামাজিক ব্যবস্থায় তরুণেরা তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ সিরিয়াস বলা চলে। এখন, একজন মুসলিম, যে কিনা দুনিয়ার সাথে সাথে আখিরাতকেও বিবেচনায় রাখতে চায়, তার ক্যারিয়ার ভাবনাটা কেমন হবে? তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ব্যবস্থায় তাদের চিন্তাচেতনা কেমন হতে হবে? এসমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতেই এই বই।
লেখক বলছেন, প্রচলিত সংজ্ঞায় ক্যারিয়ারের মূল লক্ষ্য দুটি- ১) টাকা উপার্জন কর ২) নিজের উন্নতি ও আত্মমর্যাদা অর্জন করা। সহজ করে বললে, ক্যারিয়ার = টাকা + সম্মান। ছোটবেলা থেকে আমরা শিখে এসেছি 'পড়ালেখা করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে', 'তোমাকে অনেক বড় হতে হবে, বড় ডাক্তার / ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে'। এভাবেই টাকার ভিত্তিতে সম্মান নির্ধারিত হওয়ার চিন্তা নিয়ে আমরা বড় হই। কিন্তু ইসলাম বলে, সম্মান টাকার সাথে সম্পর্কযুক্ত না, সম্মান জমিজমা বা রাজনৈতিক প্রভাবের মতো বিষয়গুলোর সাথেও জড়িত না। বরং সম্মান একমাত্র ঈমানের সাথে জড়িত, সম্মান ইসলামে অটলতার সাথে জড়িত। যে ঈমানকে পরিপূর্ণ করেছে, যে আল্লাহকে রাজি করতে পেরেছে, সেই সম্মান পাবে।

মূলত, ষোড়শ শতকে পুঁজিবাদী অর্থনীতি ব্যবস্থার জন্ম হলে এক ধরণের চিন্তা সমাজে ছড়িয়ে যায়। নতুন এই মানসিকতায় সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন অন্য সবার চেয়ে ওপরে ওঠা, অপরকে পিছে ফেলা আর টেক্কা দেওয়ার প্রচেষ্টা। আরেকজনের কী হলো, তা দেখার বিষয় নয়; অপরের জন্য স্যাক্রিফাইস করা বলতে সেখানে কিছু নেই; বরং আরেকজনকে পেছনে ফেলতে হবে, টেক্কা দিতে হবে। ভ্রাতৃভাবের চেয়ে প্রতিযোগিতাই দরকারি মানসিকতা এই নতুন ব্যবস্থাতে। এর বিপরীতে ইসলামীক ভাবাদর্শে ক্যারিয়ার কে উপস্থাপন করেছেন লেখক। তিনি বলছেন, ‘বেশি বেশি কামাই করবে, বেশি বেশি ভোগ করবে’– এটা পশ্চিমের রিজিকের কন্সেপ্ট। আর ইসলামের কথা হচ্ছে যে, না, তুমি সেটাই কামাই করবে, যেটা আল্লাহ তাআলা লিখে রেখেছেন। তুমি যতই চেষ্টা করো না কেন, তুমি তার বেশি কামাই করতে পারবে না। একইভাবে, আল্লাহ তোমার জন্য যে রিযিক লিখে দিয়েছেন সেটা কেড়ে নেবার ক্ষমতা কারো নেই। এখন তুমি সেই রিযিক হালালভাবে অর্জন করবে, নাকি হারামভাবে করবে; শরীরকে কষ্ট দিয়ে করবে, নাকি আরামে করবে; ইজ্জতের সাথে করতে চাও, নাকি অপমানের সাথে-এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। কিন্তু এটার পরিমাণ ফিক্সড, এর চেয়ে বেশি কামাই করতে আমরা পারব না। লেখক স��থে এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, জীবিকা তথা আয়সম্পদ হচ্ছে রিজিকের অংশ, আর রিজিক হচ্ছে তাকদিরের অংশ। রিজিক মানে শুধু টাকা নয়, শুধু খাবার নয়; রিজিক মানে সবকিছু- টেনশন ফ্রি জীবন, রোগমুক্ত জীবন এগুলোও। অর্থাৎ, রিজিক শুধু বস্তুগত কোনো বিষয় নয়, বরং এর সাথে অবস্তুগত দিক ও আছে। যেমন বস্তুগত রিজিক হচ্ছে 'ওষুধ'; অবস্তুগত রিজিক হচ্ছে 'রোগমুক্তি'। মানে, ওষুধ আপনি সেবন করবেন, কিন্তু ওষুধ সেবন করলেই যে সবসময় রোগমুক্তি লাভ হবে, তা নয়। একইভাবে, বস্তুগত রিজিক হচ্ছে ঘুম; অবস্তুগত রিজিক হচ্ছে সতেজতা। বস্তুগত রিজিক আল্লাহ তাআলা আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেছেন; জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেছেন; কিন্তু অবস্তুগত রিজিক আসে একমাত্র আল্লাহ তাআলার থেকে। তবে, তিনি চাইলে বস্তুগত রিজিক ছাড়াও ওই বিষয়গুলো আমাদেরকে দিতে পারেন। আমাদের মুশকিলটা হলো, আমরা রিজিক বলতে এই খাবার ও অর্থসম্পদকেই শুধু বুঝি। আর বাকি যে রিজিকগুলো আছে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই।


যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, তা মুসলিমদের ক্যারিয়ার গঠন বা রিজিক সংগ্রহের উপায় কী? লেখক বলছেন, পরিশ্রম, অধ্যবসায়, চেষ্টা এগুলো তো আছেই, এর বাইরেও বেশকিছু পন্থা দিয়ে আল্লাহ তাআলা রিজিক পৌঁছানঃ ১) সালাত ২) তাকওয়া বা স্রষ্টানুভূতি ৩) তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা করা ৪) ইসতিগফার করা ৫) কামাইয়ের চেষ্টা ৬) আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ৭) বিবাহ করা। কোরআন হাদিস সূত্রে পাওয়া এই পথগুলো অবলম্বন করলে আপনি অবাক হয়ে দেখবেন, আপনার অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে, কোন টাকা পয়সা ছাড়াই; কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই আপনার উদ্দেশ্য সফল হয়ে যাচ্ছে। আপনার প্রয়োজনগুলো মিটে যাচ্ছে। কীভাবে মিটে যাচ্ছে আপনি নিজেও জানেন না। আল্লাহ তাআলা মিটিয়ে দিচ্ছেন বা আপনার প্রয়োজন মিটিয়ে দিচ্ছেন। মানে, বরকত দিচ্ছেন। তবে সেই সাথে একথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দুনিয়ার উপকরণ অবশ্যই প্রয়োজনীয় ও জরুরি তবে, দুনিয়ার জীবনকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। দুনিয়ার সাথে হাত লাগাতে হবে, অন্তর লাগানো যাবে না। দুনিয়া থাকবে হাতে, মনে নয়। কাজেই, পুরো দিন যেন শুধু জীবিকার পেছনেই ব্যয় না হয়। পশুর মতো শুধু জীবিকার তালাশে আমাদের সারা দিন, পুরো শক্তি, পুরো জীবন ব্যয় হওয়া আমাদের জন্য অপমানজনক। আপনার দিনের, শক্তির, সময়ের, জীবনের, চিন্তাশক্তির একটা অংশ অবশ্যই আল্লাহর ইবাদতে দিতে হবে।

খুবই মুগ্ধ হয়েছি বইয়ের শেষ অংশের প্র্যাকটিক্যাল টিপসগুলো নিয়ে। সবাইকে বইটা পড়ার আমন্ত্রণ জানাই।
December 8, 2025
ইসলাম একটা দ্বীন। পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থাপনার বিধান। এখানে 'নৈতিক শিক্ষা' বলে আলাদা কোনো জীবনব্যবস্থাপনার অংশ আসতে পারে না। তাহলে এটা ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার দুই-আলাদা সম্পূরক বিধান তৈরি হয়ে গেলো। কিন্তু ইসলাম তো নিজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ, তাহলে নৈতিক শিক্ষার আলাদা অংশ আসলো কোথা থেকে? 'ইসলামের নৈতিক শিক্ষা' এমনটা হলেও সঠিক ছিল!

◑ এখানেই পশ্চিমাদের পাতানো জাল... সরাসরি আঘাত করা সম্ভব না-হ‌ওয়ায় নৈতিক শিক্ষার ফাঁদে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রচার করছে। একাডেমিক ধর্মীয় কিতাবে তথ্য-উদাহরণ এমন ভাবে সাজাচ্ছে যেনো ধর্ম বিষয়টা ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখতে শিখে। ধর্মটা রাষ্ট্রে থাকবে না, সমাজে থাকবে না, অর্থব্যবস্থায়‌ও থাকবে না।
শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসাবে encyclopedia britannica বলছে- "নতুন চিন্তা-মানসিকতা আসার পর সামাজিক ও অর্থনৈতিক একটা পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষাবিষয়ক চিন্তাধারাও পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আগে শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল, লিখতে-পড়তে পারা (promote literacy), শৃঙ্খলা শেখানো (mental discipline)। জীবনে কীভাবে চলতে হবে-সেগুলো শেখানো। আর নৈতিক চরিত্র (good moral character) গঠন করা। কিন্তু সমাজে নতুন যে পরিবর্তন এলো, তাতে এখন শিক্ষার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ভিন্ন হয়ে গেল।"

◑ অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল ফাসফেল্ডের মতে- "ষোড়শ শতকে(১৫০১-১৫৯৯) এই নতুন শিশু অর্থনীতি (পুঁজিবাদ) থেকে জন্ম নিল নতুন মনোভাব-বাজার-মানসিকতা, যার মূল্যবোধগুলো ভিন্ন ধরনের। ধর্মের শিক্ষা ছিল, আর্থিকভাবেও প্রত্যেকে অপরের জন্য দায়ী। বিপরীতে নতুন এই মানসিকতায় সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন অন্য সবার চেয়ে ওপরে ওঠা, অপরকে পিছে ফেলা আর টেক্কা দেওয়ার প্রচেষ্টা। ভ্রাতৃভাবের চেয়ে প্রতিযোগিতাই দরকারি মানসিকতা এই নতুন ব্যবস্থাতে। ব্যবহারের নৈতিকতার চেয়ে সম্পদ সংগ্রহের দ্বারা মানুষের বিচার হতে লাগল।"

পশ্চিমাদের বানানো পদ্ধতি আমাদের সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যে নেই। তাই আমরা উল্লসিত হতে পারি কিন্তু তার ভিতর তৃপ্তি বা সন্তুষ্টির পরিপূর্ণতা খুঁজে পাই না। সত্যিকার অর্থে প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই, ফলে সর্বদা উচ্চতর-মুখী সম্মান ও বিলাসিতা অর্জনের লোভে উপস্থিত অবস্থার প্রয়োজনীয়তা আমাদের জন্য কতটুকু দরকার ছিল তা অনুভব করতে পারি না। ফলে প্রয়োজনীয়-তাটা পূরণ হ‌ওয়ার সন্তুষ্টি থেকে বঞ্চিত হ‌ই। প্রতিবার প্রতিযোগিতার চূড়ায় পৌঁছানোর দৌড়ে লেগেই-থাকি, সবসময় শীর্ষে থাকার পরিশ্রম করি যার কোনো নির্দিষ্ট সীমা-লক্ষ্য নেই। এমন‌ই অনবরত গাধার মতো ছুটে নিজের আসল জীবন, সহজাত প্রবৃত্তির জীবন দুর্দশা করে ফেলি। কিন্তু একটা সময় এমনটা ছিল না। তাই আমরা বলতে চাই, এটা আমাদের প্রকৃতিজাত পদ্ধতি নয়; মানুষের ফিতরাতের সঙ্গে এ পদ্ধতিটা যায় না। বরং এটা আমাদেরকে নতুন করে শেখানো হয়েছে, আমাদেরকে এতে প্রভাবিত করা হয়েছে।

→পশ্চিমাদের পাতানো নৃশংস ফাঁদ সম্পর্কে অবগত, তা থেকে প্রতিকার এবং মুসলিমদের জন্য ক্যারিয়ার সম্পর্কে সুষ্ঠু গন্তব্যের দিকনির্দেশনা, এগুলোর তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা 'ডা. শামসুল আরেফীন' লেখক অত্যন্ত চমৎকার ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। ওনার সাবলীল লেখার ধরণের জন্য প্রতিটা বিষয় অনুধাবনের মধ্যে পাকাপোক্ত ভাবে গেঁথে যায়।
Profile Image for Ibnul Fiaaz Dhrubo.
124 reviews3 followers
July 10, 2024
শক্তি ভাই একদম কাঠখোট্টা কথাবার্তা লেখেন। টু দ্য পয়েন্ট। এরপরও তার লেখা বই একবার পড়া শুরু করলে মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়তেই থাকি। কারণ তার লেখার বিষয়বস্তু আর অন্য কিছু নয়, বরং আপনার আমার জীবনের ব্যবহারিক দিকগুলো নিয়েই মূলত উনার বইয়ের আলোচনা। যেমন এই বইটা, ক্যারিয়ার নিয়ে।

ক্যারিয়ার জিনিসটা অনেক ইন্টারেস্টিং। কারোর ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের সেবা করা, আর কারোর ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্য হচ্ছে পুঁজিবাদের দাসত্ব করা। প্রথমটা স্বাভাবিক (যেহেতু স্বাভাবিক তাই এটা নিয়ে এত কথা বলা হয় না), দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটা ক্ষতিকর- সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য, সর্বোপরি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।

এজন্য একজন মুমিন হিসেবে আমাদের ক্যারিয়ার কেমন হবে, তার আদর্শই বা কী হবে, সেটা আমাদের ঠিক করে নিতে হবে। তবে দ্বীনের ক্ষেত্রে কোনো আপোস নয়। অনেক সাহাবি মিলিয়ন মিলিয়ন সম্পদের মালিক ছিলেন, তবুও দ্বীনকে কখনো পাশে রেখে দেননি। সাহাবিদের সম্পদের যে তালিকা বইয়ে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে তা দেখে আমি রীতিমত অবাকই হয়েছি। এমন না যে জানতাম না। জানতাম, তবে এভাবে কখনও চিন্তা করে দেখিনি যেভাবে লেখক চিন্তা করেছেন। তারা যেমন স্বচ্ছল ছিলেন, তেমন�� প্রচুর সাদাকাহ করেছেন। এতে তাদের সম্পদ শুধু বাড়েই নি, বরং এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় হয়েছেন।

বিশেষ করে অনেক বোনের জানার ইচ্ছা থাকে ফিতনার এ যুগে তারা নিজেদের ক্যারিয়ার কীভাবে গড়বেন। ঘরে-বাহিরে কীভাবে কী করলে ভালো হয় তার জন্য বিস্তারিত দিকর্দেশনা লিখেছেন। অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। বইটি পড়ার পরামর্শ থাকবে। অবশ্যপাঠ্য একটা বই।
Profile Image for Shamsuddin  Ahmmad Shimul.
56 reviews8 followers
October 10, 2023
ক্যারিয়ার মানেই আমরা বুঝি টাকা এবং সম্মান, টাকা এবং সম্মানের জন্য ক্যারিয়ার তথা দুনিয়ার জীবনের পেছনেই আমরা আমাদের জীবনের বড় একটা সময় ব্যয় করি, অথচ টাকা অর্থাৎ রিজিক আল্লাহর হাতে যা পূর্বলিখিত তাকদিরের অংশ। একজন মুমিনের সত্যিকারের ক্যারিয়ার হবে দাওয়াহ এবং সাদকাহ এবং সে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে আখিরাতকে সামনে রেখে এটাই একজন মুমিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ যে বিষয়ে বইটিতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে
Profile Image for Md Rana.
5 reviews1 follower
January 18, 2024
A must-read for Muslims. Changed my views on career.
Displaying 1 - 10 of 10 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.