Jump to ratings and reviews
Rate this book

রাত ভ'রে বৃষ্টি

Rate this book
‘It’s over—it happened—there’s nothing more to say. I, Maloti Mukherji, someone’s wife, and someone’s mother—I did it. Did it with Jayanto. Jayanto wanted me, and I him … How did it happen? Easy. In fact I don’t know why it didn’t happen before—I’m surprised at my self-restraint, at Jayanto’s patience.’ Banned when it was first published in the Bengali in 1967 on charges of obscenity, It Rained All Night went on to become a bestseller. Maloti, an attractive middle-class Bengali girl, marries the bookish college lecturer Nayonangshu only to find him insecure, sexually timid and unable to satisfy her. She discovers passion in the arms of the confident, earthy journalist Jayanto whose love provides her solace from the demands of her wifely duties. Maloti and Jayanto’s growing intimacy does not go unnoticed by Nayonangshu, but his pride restrains him from reaching out to his wife. Bold, explicit and shockingly candid, It Rained All Night is an unforgettable tale of desire, adultery, jealousy and love.

91 pages, Hardcover

First published January 1, 1967

36 people are currently reading
793 people want to read

About the author

Buddhadeva Bose

105 books122 followers
Buddhadeva Bose (also spelt Buddhadeb Bosu) (Bengali: বুদ্ধদেব বসু ) was a major Bengali writer of the 20th century. Frequently referred to as a poet, he was a versatile writer who wrote novels, short stories, plays and essays in addition to poetry. He was an influential critic and editor of his time. He is recognized as one of the five poets who moved to introduce modernity into Bengali poetry. It has been said that since Tagore, perhaps, there has been no greater talent in Bengali literature. His wife Protiva Bose was also a writer.

Buddhadeva Bose received the Sahitya Akademi Award in 1967 for his verse play Tapaswi O Tarangini, received the Rabindra Puraskar in 1974 for Swagato Biday(poetry) and was honoured with a Padma Bhushan in 1970.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
230 (22%)
4 stars
458 (44%)
3 stars
253 (24%)
2 stars
65 (6%)
1 star
32 (3%)
Displaying 1 - 30 of 204 reviews
Profile Image for Mosharraf Hossain.
Author 3 books57 followers
June 29, 2015
একটা মানুষের একটাই রূপ থাকে না। সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, সংকটের মতো ভিন্ন পরিস্থিতিতে একজন মানুষ-ই ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করবে এটাই স্বাভাবিক। একজন মানুষকে আরেকজন হয়তো একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই যেতে দেখেছে, এবং সে নাও জানতে পারে অন্য পরিস্থিতিতে সে কেমন আচরণ করবে। পরিচিত মানুষটার এই অচেনা দিকটা যখন সামনে আসে অনেক ক্ষেত্রেই তখন শুরু হয় পারষ্পারিক মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব; বিশুদ্ধ–অবিশুদ্ধ চিন্তা , পবিত্র-অপবিত্র কল্পনা , অনুকূল-প্রতিকূল সিদ্ধান্ত, মঙ্গল-অমঙ্গল কামনা, দেহ-মনের বৈপরীত্য , জ্ঞানী–অজ্ঞানীর অলিখিত প্রতিযোগিতা , ভাঙা-গড়ার অনিঃশেষ জটিল খেলা,আর শেষ সময়ে এসে দেখা যায় মানুষটার ১৫ আনাই দেখা হয়নি, ১ আনা নিয়েই জীবনটা পাড় হয়ে গেছে, বাকি রয়ে গেছে ১৫ আনা।

একদিকে যেমন বহুল পঠিত অন্যদিকে তেমনি ব্যাপক ভাবে নিন্দিত এই উপন্যাসে উঠে এসেছে কলকাতার মধ্যবিত্ত সমাজের স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্কের মাঝের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জটিলতা, নির্ভরতার মাঝের চোরা ফাটল, বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচল, ভালবাসা মন্দ-বাসার হেয়ালী ভাব বিনিময়,আঁকড়ে ধরা আর ছেড়ে যাবার মাঝের রঙিন সুতোর পলকা বাঁধনের নিখুঁত বুনট।

১৯৭০ সালের ১০ ডিসেম্বর কলকাতার আদালতে অশ্লীল হিসেবে বইখানাকে চিহ্নিত করে আদেশ দেয়া হয়েছিল সকল কপি সহ পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলার। অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছে বিবাহিত সম্পর্কের বাইরেও শারীরিক সম্পর্কের অস্তিত্ব থাকার মতো ঘটনা উপন্যাসের ভাঁজে উঠে আসায়, অভিযোগ উঠেছে কিশোরদের হস্ত মৈথুনের মতো প্রচলিত কিন্তু অনুচ্চারিত জৈবিক ক্রিয়াকে সাহিত্যের মাঝে উচ্চারিত করায়। স্বামী স্ত্রী- র পরস্পরকে ভালো না বেসে, শারীরিক সম্পর্ক না রেখেও পাশাপাশি সহাবস্থান করে সংসার করার অস্বাভাবিক কিন্তু প্রবহমান জীবন প্রণালীকে যেমন তুলে আনা হয়েছে তেমনি তুলে এনে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হয়েছে প্রচলিত অস্বাস্থ্যকর যৌন রীতি কে আর তাইতো অশ্লীল হিসেবে আখ্যায়িত রাত ভ’রে বৃষ্টি।

উত্তম পুরুষে লেখা উপন্যাসটি পথের বাঁক বদলেছে মালতী আর নয়নাংশুর যবানীতে। নয়নাংশু; ছাত্রী থেকে প্রিয়তমা স্ত্রীতে পরিণত করে মালতীর প্রচলিত সামাজিক ধ্যান ধারনা ভেঙ্গে তাকে নতুন করে গড়তে চায়, করতে চায় নিজস্ব চিন্তা চেতনার অংশীদার, দিতে চায় সাহিত্যের রূপ সুধার অমৃত সাধ। প্রেম আর শরীরের দ্বন্দ্বে নয়নাংশুর কাছে শরীরের সাথে শরীরের সম্পর্ক থাকতে পারেনা যদি মন সরে দাঁড়ায়। শরীরের তার ছিঁড়ে গেলেও আসলে মানুষ বেঁচে থাকে। ঠিক স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই বেঁচে থাকে। সমাজের আর সমস্ত মানুষের মতো। আর এখানেই হয়তো জীবনের জয়। শরীরকে শরীর থেকে অথবা মনকে শরীর থেকে অথবা শরীর-মন দুটোকেই দূরে সরিয়ে দিয়েও মানুষকে একত্রে বাঁচতে বাধ্য করে জীবন। এই তো জীবনের বয়ে যাওয়া! যেমন বোঝে নয়নাংশু : “... তুমি আর মালতী- ধীরে-ধীরে বুড়ো হবে- যেমন চারদিকে কোটি-কোটি মানুষ- অন্ধ মূর্খ, অচেতন- তেমনি বেঁচে থাকবে বছরের পর বছর। ... ভালোবাসা জরুরী নয়, স্বামী-স্ত্রী জরুরী, বেঁচে থাকাটা জরুরী।”

মালতী; লাজুক মুখে স্বামীর ঘরে এসে মালতী চায় তার স্বামী তাকে ভালবাসার তীব্র জোয়ারে উন্মাতাল করে তুলক। চায় প্রেম-শরীরের অকাট্য নিকট সম্পর্ক। "ভালোবাসা জৈব, ভালোবাসা যৌন, শরীর না-থাকলে কিছুই থাকে না ভালোবাসার। বিদ্যুতের মতো, বৈদ্যুতিক সংস্পর্শের মতো- শরীরের সঙ্গে শরীরের প্রেম। ঘরে সব সময় আলো জ্বালতে হয় না কিন্তু সুইচ টিপলেই জ্বলে ওঠে, যেহেতু তারের মধ্যে বিদ্যুৎ চলছে সব সময়। এও তেমনি। আছে শরীরে শরীরে বৈদ্যুতিক যোগ, তাই যখন প্রেম করো না তখনও থাকে প্রেম, শিরায়-শিরায় ব’য়ে চলে সারাক্ষণ- তাই কথা মধুর, হাসি মধুর, কাছে থাকা মধুর, দূরে যাওয়া মধুর, কলহ মধুর, কলহের পর মিলন আরো বেশি মধুর। সবই শরীর।”

প্রেমিক-স্বামী পুরুষটিকে কাছে না পাওয়ার, অপূর্ণ চাওয়ার আক্ষেপ মালতীকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়; যে-অপূর্ণ চাওয়া নারীকে ধীরে দূরে ঠেলে দিতে পারে; যে অপূর্ণতায় নারী ধেয়ে যেতে পারে প্রবল ভাবেই পূর্ণ হতে নতুন প্রেমের দিকে, নতুন পুরুষের দিকে। আক্ষেপ নিয়ে মালতীকে বলতে শোনা যায় - আমার অবাক লাগছে যেমানুষ হাতে-কলমে প্রেম করতে পারে সে শুধু প্রেমের কবিতা পড়বে বা শোনাবে কেন বা প্রেম নিয়ে কেন শুধু কথাই বলবে?

বুদ্ধদেব বসু ছোট্ট এই উপন্যাসে দুইজন আলাদা আলাদা মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে দিয়েছেন স্ত্রী-পুরুষ দু’জনেরই নিজস্ব গোপন মানবিক আকাঙ্ক্ষার অব্যক্ত নিখুঁত বর্ণনা। বর্ণনা করতে গিয়ে মানব মনের গভীরে ডুব দিয়ে ছেকে এনেছেন সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুভূতিগুলোকে। একি ঘটনাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণনা করে শরীর আর মনের দ্বন্দ্বের বিরোধিতাকে স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে বুদ্ধদেব অতিক্রম করে গেছেন প্রচলিত চিন্তার পরিধিকে। বাস্তবতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানব মনে নতুন করে নতুন ভাবে প্রচলিত সম্পর্কগুলোকে নিয়ে চিন্তার আবির্ভাব ঘটিয়ে উপন্যাস হিসেবে রাত ভ’রে বৃষ্টি একটি সার্থক উপন্যাস।
Profile Image for Md. Rahat  Khan.
96 reviews25 followers
June 16, 2021
বইটা অশ্লীল! পরকীয়ার বই ! উত্তেজনার শুড়শুড়ি! ধুর ছাই কী বই পড়তেছি! — বইটা পড়ার পর এরকম রিয়্যাকশনই দেয় বেশির ভাগ মানুষ।
কিন্তু আসলেই কী তাই? বইটার আলাদা একটা মর্মার্থ তো অবশ্যই আছে।অন্তত আমার মতে।সাংসারিক জীবনের কলহ নতুন কোনো ব্যাপার না।বহু সাহিত্যিক শুধুমাত্র এই বিষয়টাকেই কেন্দ্র করে লিখে গেছেন।তবে “রাত ভ’রে বৃষ্টি” কোন দিক থেকে আলাদা?
মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে।স্বামী স্ত্রীর বন্ধন যখন আলগা হয়ে যায় তখন তারা ঠিকই বুঝতে পারে যে কোথাও কিছু একটা ঠিক নেই।নানা ধরণের ধারণা জাগে মনে,জাগে প্রশ্ন।নিজেকে নিয়ে প্রশ্ন,সঙ্গীকে নিয়ে প্রশ্ন।একে অপরকে নিয়ে বিভিন্ন ধারণা মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করে,অনেক ভুল ধারণা আবার অনেক সঠিক ধারণা ।যখন একে অপরকে তারা জবাবদিহিতা করে তখন সম্পর্কে চিড় ধরে।
বুদ্ধদেব বসু তার এই উপন্যাসটি ব্যক্ত করেছেন মূল চরিত্র মালতী এবং নয়নাংশুর নিজ নিজ পরিপেক্ষিতে।লেখক দুজনের বয়ানে পরিস্থিতির আখ্যান দিয়ে পাঠককে দ্বিধা দ্বন্দে ফেলে দেন এবং পাঠক ঠিক কোন পক্ষকে সমর্থন করবে তা চাপিয়ে দেন খোদ পাঠকের ঘাড়ে। মালতীর দিক থেকে মালতী ঠিক,নয়নাংশুর দিক থেকে নয়নাংশু ঠিক।
দুজনে একই ঘরে বসবাস করছে কিন্তু যেন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। দুজনে যেন একে অপরকে জয় করার উদ্দেশ্যে বেঁচে রয়েছে।দাম্পত্যের কঠিন শিকলে নিজেদের আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিজেরাই যেন পরষ্পরের বিরোধ করছে।
মালতীর কথা দিয়েই উপন্যাসের শুরু—“হয়ে গেছে , ওটা হয়ে গেছে এখন আর কিছু বলার নেই। আমি মালতি মুখোপাধ্যায়, একজনের স্ত্রী, একজনের মা। আমি ওটা করেছি, করেছি জয়ন্তর সঙ্গে। আমি চেয়েছি জয়ন্তও চেয়েছে । নয়নাংশু হয়ত ভাবছে আগেই করেছিলুম, কিন্তু না আজই প্রথম। আজ রাতে চারঘন্টা আগে এই বিছানায়।”
এমন চমকপ্রদ,অকপট এবং শক্তিশালী বাক্য দিয়ে মালতী নিজের চরিত্রের পর্দা মেলে ধরে।ধীরে ধীরে বলে চলে নিজের অব্যক্ত কথা।নয়নাংশুর মনের সঙ্গে নিজের মনের বিস্তর ফাঁড়াক কীভাবে তৈরি হয়েছে।নয়নাংশু কীভাবে মালতীকে নিজের মত করে গড়ে নিতে চেয়েছে মালতীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে।মালতীর জীবনে জয়ন্তের আবির্ভাব ঘটলে মালতী ভালবাসার স্বাদ পায়।হেলে পড়ে জয়ন্তের দিকে।জয়ন্ত এবং মালতীর মানসিক মিলের যথার্থ কারণ পাওয়া যায় উপন্যাসটিতে।এবং নয়নাংশুর কাছ থেকে আস্তে আস্তে কীভাবে মালতী দূরে সরে গিয়েছে সেই ঘটনার আভাস পাওয়া যায় মালতীর বয়ানে।
নয়নাংশুর বর্ণায়নে যেটুক অংশ উঠে এসেছে তা আরো জটিল।নয়নাংশু চরিত্রটা মালতী থেকে আরো বৈচিত্র্যময়। সে বাঁচতে চায় নিজের মত।বন্ধু বান্ধবের মধ্যে পরিচিত করতে চায় নিজেকে এবং মালতীকে।তবে অছিলায় মালতীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।নয়নাংশু নিজেকে ছাপিয়ে বন্ধুমহলে মালতীর বেশি পরিচিতি পাওয়া পছন্দ করে না।সেখানেই মূল বিরোধ।সে মালতীকে ভালবাসে,বুঝতে পারে যে মালতী আর তাকে ভালবাসছে না,কিন্তু মালতীর কষ্ট সহ্য করতে পারে না।তাই জয়ন্ত এবং মালতীর মেলামেশা দেখেও দেখে না।
নয়নাংশুর অতিক্রান্ত জীবন নিয়েও সামান্য বর্ণনা করেন লেখক।অল্প বয়সে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নয়নাংশুর সাংসারিক জীবনে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে।
মালতী এবং নয়নাংশুর জীবনের বৈপরীত্য দেখা যায় সবখানেই।যৌনজীবন নিয়ে তাদের ধারণা একে অপরের বিপরীত, মালতী বলে,“যদি ভালবাসায় শরীর না থাকত তবে কত সুখীই হতাম আমি নয়নাংশু।”
নয়নাংশু বলে, “আমরা সুখী হতাম যদি তোমার আমার অন্তত শরীরের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকতো। অন্তত কেন বলছি, শরীরটাই আসল, চরম সর্বস্ব , ওটাই স্বামী স্ত্রীর নির্ভর, বিয়ের নির্ভর।”
নিজ নিজ বয়ানে তারা একে অপরের জীবনকে ব্যাখ্যা করে, একে অপরের দুর্বলতাকে দেখিয়ে দেয়।ভালবাসা-সংসার সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য পেশ করে।একে অপরের সাথে একসাথে থাকার অভিনয় করে যায়।নিজেদের ব্যক্তিত্বকে তারা এতটুকু নিচে নামাতে নারাজ।এভাবেই তৈরি হয় দূরত্ব।এভাবেই ‘রাত ভ'রে বৃষ্টি’ হয়ে ওঠে নারী ও পুরুষের ভগ্ন সাংসারিক জীবনের এক শক্তিশালী আখ্যান।
ছোট খাটো এই উপন্যাসটা পাঠকের মনকে দাম্পত্য জীবনের নানাদিকে বিচরণ করিয়ে শেষে একটা আশাতীত মন্তব্য ছুড়ে দেয়,“ভালবাসা জরুরী নয়,স্বামী স্ত্রী জরুরী বেঁচে থাকাটা জরুরী।একটা হাত কেটে গেলেও বেঁচে থাকে মানুষ,একটা ফুসফুস নষ্ট হ’লেও বেঁচে—থাকে— সে তুলনায় কত ছোট এই ক্ষতি,কত তুচ্ছ এই ঘটনা।ধূসর কালো নয়,উজ্জ্বলও নয়,হিংস্র সুন্দর মহৎ নিষ্ঠুর ভোগী ত্যাগী—কোনোটাই নয়—কোটি কোটি মানুষ—জীবন—অফুরন্ত,মূর্খ,অন্তহীন।”
শেষটা কে কিভাবে নেবে তা একান্তই পাঠকের নিজস্ব ব্যাপার।
Profile Image for Rajat Ubhaykar.
Author 2 books1,997 followers
November 17, 2018
Is there a human being anywhere who can satisfy each and every desire of another person? When you're young you have one sort of outlook on life, you have a vibrant yet unused body. It is then that you may, in a flash, find yourself enchanted by everything about some person or the other. You set him or her apart from all other people. You feel that if you could have that person, you'd need nothing more. But when you do actually get him or her, let's suppose through marriage, that infatuation withers and falls in the span of one summer, is washed out in one monsoon.

Finished reading this devastating book last night. It didn't rain all night, in fact it didn't rain at all, but I could feel the water seep through the pages of the book which were awash in an endless torrent, a metaphorical flash flood overwhelming the dreary desert of the protagonists' passionless marriage.

As you may have guessed, It Rained All Night chronicles the gradual unraveling of a loveless marriage, when a third man, 'a man of action' no less, inveigles himself into the unhappy equation of the couple Nayanangshu & Maloti. Translated from the original Bengali (Rat Bhore Brishti), it is structured as alternate chapters narrated from the perspective of the wife and the husband respectively.

Coming to the protagonists themselves, Nayanangshu is a bookish, frustratingly gentlemanly person who instead of grabbing Maloti as his own, makes feeble, cautious advances that leave much to be desired. Maloti for one can't stand it that his idea of love is so drawn from the books he reads that he would rather read out poetry to her all night instead of actually making love. While sexually dissatisfied, Maloti is happy looking after the household and minding her own business until goaded by her husband to develop her own 'individuality' and learn more about the world by mingling with his visiting male friends. However, inspite of his liberal inclinations, Nayanangshu remains a hypocritical,patriarchal liberal at best, a tolerant tyrant eager to mould Maloti in his own image, instead of letting her blossom in her own right. So when Jayanto, a poor, yet energetic magazine editor, makes his entry into their household, it doesn't take long for the sparks of illicit desire to light up and the seeds of marital discontent are sown.

The subject and plot may seem fairly run of the mill by present standards, but the shockingly candid articulation of female desire caused so much outrage when the book was released in 1967 that it had to be banned. Read in the present context, I see this book as a provocative exploration of desire, the meaning of marriage, and what it means to actually 'love' someone, all of it beautifully written. And the end is devastating, just devastating.

Highly recommended!
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
July 24, 2020
অশ্লীলতার তকমা লাগিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে বুদ্ধদেব বসুর 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' উপন্যাসটিকে নিয়ে। বইটা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নাকি প্রাপ্তমনস্কদের? বলতে বাধা নেই, বইটার কন্টেন্ট খুব সাহসী। অশ্লীল তো নয়ই প্রচন্ড রকমের বাস্তব। আসলে বিয়ে কিংবা সম্পর্ক-এ দু'টোই খুব আজব একটা ব্যাপার। মানুষ কখন কী চায়-নিজেও জানে না।
নয়নাংশু, স্ত্রী মালতী ও সন্তান বুন্নিকে নিয়ে বেশ সুখী সংসার। উদারমনা এ দম্পতির মাঝে চলে আসে তৃতীয় ব্যক্তি। শুরু হয় টানাপোড়ন। নৈতিক এবং অনৈতিক সম্পর্কের দায়ভার, বিচিত্র মন, আত্মাভিমান, দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ, সমাজ ইত্যাদি ইত্যাদির ভিড়ে চিঁড়েচেপটা হয়ে যাওয়া দুইটি প্রানীর মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের গল্প।আরেকটা ব্যাপার যেটা ভালো লেগেছে সেটা হলো বইটার দৃষ্টিভঙ্গি। যদি শুধু মালতীর জবানিতে লেখা হতো, আমরা হয়তো সমানে নয়নাংশুকে দোষারোপ করে যেতাম। কিংবা যদি নয়নাংশুর জবানিতে লেখা হতো, তবে হয়তো নষ্টা, ভ্রষ্টাচারী বলে মালতীকে দায়ী করে যেতাম। এই বইয়ে উঠে এসেছে দু'পক্ষের যুক্তি। এবারে বিচারের ভার আপনার হাতে। পাঠক.. কিছু ভেবেছেন কি?
Profile Image for শুভঙ্কর শুভ.
Author 11 books51 followers
December 24, 2019
এই বই পড়ে আপনি পাগল হয়ে যাবেন। কারন কি? বলছি, সবুর করেন একটু, তাহলেই তো...। কথা হলো, দুইজন- বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর চাওয়া পাওয়া, মন বিশ্লেষণ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, এবং সেগুলা যার যার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখেছেন লেখক। তো আপনি যখন বইটা পড়ছেন তখন দুইজনেরই দৃষ্টিভঙ্গিগুলো চোখের সামনে দেখছেন। যেন আপনি বিচারক, আর ওরা বাদী-আসামি। বলুন মাথাটা খারাপ হবে না? কারন আপনাকে বুঝতে হবে কারটা ভুল, কারটা সঠিক? ভুল হলে ভুল কেনও? আর সঠিকইবা কেনও? ইত্যাদি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে আপনি তখন নিজের মন আর বিবেককেই দুই ভাগে ভাগ করে ফেলবেন। তাহলে কি দেখা গেলো, যে এই দুইপক্ষকে নিয়ে আপনিও আপনার মতবাত দাঁড় করাতে চাচ্ছেন। তাই না? তাহলে একবার ভালো করে ভেবে দেখুন আপনি সহ এখানে তিনপক্ষ হয়ে গেল। আর যদি হোন বিবাহিত! তাহলে, আপনি এই বইটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতেও পারেন, রাগে ক্ষোভে অশ্লীল বলে ফেলতে পারেন আর দশজন কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো। পুরোটাই আপনার ব্যপার।
তবে বইটা নেহাত অশ্লীল আর ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার মতো বই না। বরং খুবই তাতপর্যশীল বর্তমান সমাজের জন্য।
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
March 11, 2022
It rained all night! বইটির শুরু প্রধান চরিত্রের নিজের স্বামী ব্যতিরেকে অন্য কাউকে নিজের অভ্যন্তরে নেয়ার নির্লজ্জ স্বীকারোক্তি দিয়ে। নির্লজ্জ বলার কারণ মানুষ জেনারেলি সমাজ আর ধর্মের অধীন; এক ঘর লোকের সামনে নিজের বিয়ে করা বউকে জড়িয়ে ধরলে কিংবা চুমু খেলে সেটা যদি হয় বেহায়াপনা তাহলে মালতী মুখার্জীর এই অকপট অবৈধ সম্পর্কের স্বীকারোক্তি ভারি ধরনের বেহায়াপনা।

বেশ....যখনই রাত ভরে বৃষ্টি বইয়ের নাম সামনে আসে ঠিক তখনই আসে প্রাপ্তবয়স্ক আর প্রাপ্তমনস্কতার প্রশ্ন। আসলে কোন প্রশ্ন উঠে আসা উচিত??

কমবয়���ী শিক্ষক নয়নাংশু আর শিক্ষার্থী মালতী সময়ের ব্যবধানে প্রেমে পড়েছিল এবং তারপর বিয়ে। শুরু হয় প্রেমের বিয়ের সুখী জীবনযাপন, তারপর সুখী থেকে অসুখী হওয়ার গল্প শুরু। আসলে ওদের প্রেম সত্যিকারের ভালবাসায় পরিণতি পেয়েছিল কি? কিন্তু সাথে সাথেই প্রশ্ন আসে- ভালবাসা কী? (কইতে পারি না🥱)
মানুষ প্রেমে পড়ে মূলত বাহ্যিক দিক থেকে। তারপর সময় গড়ায়, দীর্ঘসময়ের পাশাপাশি পথচলা কিংবা ওঠাবসায় একে অপরকে জানা যায় হয়তো। এখানেও প্রশ্ন আসে- ঠিক কতটুকু জানা যায়?? কতটুকু!!? পুরোপুরি তো কখনও নয়। নয়নাংশু আর মালতীর মধ্যে মানসিকতার মিলের থেকে ���মিলই বেশি।

বই পড়ুয়া ধীর স্বভাবের নয়নাংশু চেয়েছিল মালতীকে আপন ছাঁচে গড়তে, অথচ মালতীরও কিছু আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন ছিল এই সম্পর্ককে ঘিরে। এইসব ভাঙাগড়ার খেলা খেলতে চাওয়া একটা বড় ধরনের বোকামি। দু'জন ভিন্ন মানসিকতার মানুষের একটা সুস্থ সম্পর্কের ধর্মই হচ্ছে একে অন্যের স্বভাব মিলেমিশে একাকার হয়ে একটা ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে চলে যাওয়া। সেখানে একজন আরেকজনকে ভাঙতে চাওয়া মানে সম্পর্কের গলা চেপে ধরা ¬_¬" যখন চললো ভাঙাগড়ার খেলা আর মালতী মুখার্জী এসব দমবন্ধ করে মেনে নিতে শুরু করলো তখনই শুরু হলো মানসিক অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং সময়ের ফেরে কখনও তা বাহ্যিক ঘৃণায় পরিণত হল। উপন্যাসিকের বর্ণনামতে নয়নাংশুকে সমাজের পোশাকি ভাষায় কাপুরুষ বলা চলে। কাজেই যখন ঘরে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে জয়ন্তের (জয়ন্ত পুরোপুরি নয়নাংশুর বিপরীত, ভীষণ ম্যানলি সে) আগমন ঘটলো এবং মালতী খুঁজে পেল তার মনের মতো সঙ্গী নয়নাংশু সব বুঝতে পেরেও চুপ করে রইল। তখন শুরু হল নয়নাংশু আর মালতীর আপন মগজে ভীষণতর মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব যেখানে নিজেরা নিজেদেরকে সমানতালে জাস্টিফাই করে চলেছে। পাঠক! আপনি নিজেও হয়তো তাদের সেই জাস্টিফিকেশনে সায় দেবেন, দেবার মতোই। এখানেই শেষ হয় প্রাপ্তমনস্কতার পাঠ। স্থান পায় হিংসা কিংবা প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা এবং উঠে আসে বোঝাপড়া, নৈতিকতা আর বিশ্বস্ততার প্রশ্ন। নয়নাংশু আর মালতী এক আধুনিক জগতেরবাসিন্দা হয়েও বোঝাপড়া কিংবা মন খুলে কথা বলতে পারেনি কোনো এক কারণে যার ফলে বিস্তৃত হয়েছে অনৈতিকতা, ঘটেছে বিশ্বস্ততার অপমৃত্যু কেননা মিস্টার জয়ন্তও কারো স্বামী এবং বাবা।

বিয়ে কী সুন্দর একটা জিনিস। দুটো পরিবার একটা সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। দু'জন মানুষ পায় আজীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গী। অন্যদিকে-
"বিয়ে! কী জটিল, কঠিন, প্রয়োজনীয়, সাংঘাতিক মজবুত একটা ব্যাপার, আর কী ঠুনকো! দু-জন মানুষ সারা জীবন একসঙ্গে থাকবে — পাঁচ, দশ, পনেরো বছর নয়, সারা জীবন — এর চেয়ে ভয়ংকর জুলুম, এর চেয়ে অমানুষিক আদর্শ, আর কী হতে পারে?"


শেষে এসে বুদ্ধদেব বসু লিখলেন-

“ভালবাসা জরুরী নয়,স্বামী স্ত্রী জরুরী বেঁচে থাকাটা জরুরী।একটা হাত কেটে গেলেও বেঁচে থাকে মানুষ,একটা ফুসফুস নষ্ট হ’লেও বেঁচে—থাকে— সে তুলনায় কত ছোট এই ক্ষতি,কত তুচ্ছ এই ঘটনা।ধূসর কালো নয়,উজ্জ্বলও নয়,হিংস্র সুন্দর মহৎ নিষ্ঠুর ভোগী ত্যাগী—কোনোটাই নয়—কোটি কোটি মানুষ—জীবন—অফুরন্ত,মূর্খ,অন্তহীন।” কোন দুঃখে মনে হল ভালবাসা জরুরি নয়!? স্বামী স্ত্রী বেঁচে থাকাটা জরুরী!? সমাজের হালচাল দেখে!? তাহলে ডিভোর্স কিংবা সেপারেশনের মতো শব্দ দুটির জন্ম কেন? এত সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থা থাকতেও কেন হাঁটতে হবে অনৈতিকতার পথে?


এইবারে মনের কথা বলি! প্রাপ্তবয়স্ক আর প্রাপ্তমনস্ক শব্দের কাঁথায় আগুন🙄
বই পড়াকালীন মনে হচ্ছিল দুইজন এসে কানের কাছে প্যান প্যান করতেছে যে, আমার কোনো দোষ নাই; সব দোষ ওর। অথচ দু'জনের কেউই ফাজিল কম না🙄 যাক গা..
বুদ্ধদেব বসুর লেখা সরল, তরতর করে পড়া যায়। তাই দুইটি তারা।

~ ১১ মার্চ, ২০২২

Profile Image for Shimin Mushsharat.
Author 1 book369 followers
June 16, 2021
তিন-চারদিন আগে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর 'হে আমার বিষন্ন সুন্দর' কবিতার দু'লাইন চোখে পড়ে। তখন থেকে মনে মনে আওড়ে যাচ্ছি : 'হে আমার বিষন্ন সুন্দর/দু’চোখে ভাঙন নিয়ে কেন এই রুক্ষ দুঃসময়ে এলে'। 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' পড়লাম অল্প সময়ে, রুদ্ধশ্বাসে। কোনো লাইন আন্ডারলাইন করার দেরিটুকুও করিনি। শুধু এই লাইনটা—'কিন্তু একটা কথা ঠিক জেনো; ছেঁড়া তার আর জোড়া লাগবে না, হারানো সুর ফিরে পাবে না কখনো—' এই লাইনটা অনেকবার পড়তে হলো। বইটা একবার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো একবার পড়ার প্রয়োজন হলো। সবচেয়ে যা যত্নের, অসাবধানে তার হাত ফস্কে যাওয়াই বোধকরি চিরন্তন নিয়ম।
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews772 followers
May 22, 2021
নয়নাংশু কিংবা মালতী কারো ভাবনার সাথেই পুরোপুরি এক হতে পারছিলাম না। তাই পড়তে গিয়ে জায়গায় জায়গায় ভীষণ বিরক্তির উদ্রেকও ঘটেছিল। তবে লেখনী সাবলীল আর ঝরঝরে।
Profile Image for Rani  Chatterjee.
64 reviews
April 8, 2025
"So it's true, when all is said and done, grief is the price we pay for love"

by E.A. Bucchianeri

গল্পে ৩ জন - মালতী, নয়নাংশু/ অংশু, আর জয়ন্ত।
একসময় অংশুর ছাত্রী ছিল মালতী, অংশু বই পড়াশোনা উপন্যাসে ডুবে থাকা শিক্ষক। একপ্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়েই কথা বলে মালতী। তাদের মধ্যে ভালোবাসা হয়। বিয়ে করে। নতুন সংসারে শশুরবাড়িতে মালতী বেশি কিছু করলে অংশু নিজেই মানা করে, মালতীর মনে হয় অংশু তাকেই চায়। পরে ওরা নিজেদের ফ্ল্যাটে আসে। তাদের একটি কন্যা হয়।
সময়ের সাথে মালতী আর খুঁজে পায়না বিবাহিত জীবন, সম্পর্ক, বন্ধনের রসদ। অংশু যেনো কোনকিছুই ঠিক দেখিনা, মালতী কে বোঝেনা, বই এর একটা ভীষণ জগৎ তার। আর কাজ। মালতীর ভালোলাগা , ইচ্ছে এসবের কি কদর আছে অংশুর কাছে? কি চায় অংশু? অংশুই মালতীকে বলে তার বন্ধুদের সাথে মিশতে, সময় কাটাতে। অংশু মালতীকে দিয়ে দেয় অবাধ স্বাধীনতা, কিন্তু কোথাও যেনো তাদের সম্পর্কের দড়িটাও দূরে হয়ে যায়। মালতীর আর ভালো লাগেনা অংশুর নীরবতা, নিরপেক্ষতা, শরীর। মালতীর মনে হয়, অংশুর অফিস কলিগ মেয়েটির সাথে অংশু জড়ালেও তার আসে যায়না।
অংশু মালতীকে ভালবাসে । কিন্তু ভালবাসা কি শরীর, নাকি উপন্যাসের শরীরের মতো তুচ্ছ জিনিসের বাইরে মনের মিলন, তা ঠিক করে উঠতে পারেনা। পরে মনে হয়, দুটোই দরকার। বরং শরীরের প্রয়োজন ভীষণ বেশি। মনের বহিঃপ্রকাশ শরীরে। তাও শরীরের মিলনে কোথাও যেনো একটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ।
এসবের মাঝে মালতীর ইচ্ছেগুলো মিলে যায় অংশুর বন্ধু জয়ন্তর সাথে। জয়ন্তই সেই পুরুষ, যেরকম মালতী চায়। তাই, জয়ন্ত কে সে ভালোবেসে ফেলে। অংশু পুরোটা জেনেও কোনো ঝামেলা করেনা। ভেতরে ভেতরে গুমরোয়।
গল্পের থিম টা এরকম হলেও, লেখাটা না পড়লে বোঝা যাবেনা বুদ্ধদেব বাবুর লেখনী কত সুন্দর। কি সূক্ষ্ম ভাবে বর্ণনা করেছেন মালতী আর অংশুর মনের ভাবনা। গল্প পড়ার সময় আপনি হয় নিজেকে, বা পরিচিত কাউকে দেখতে পাবেন মালতীর বা অংশুর জায়গায়। না দেখতে পাওয়ার সুযোগই নেই। মালতী অংশু যেনো আমাদের আশেপাশে থাকা নানা স্বামী স্ত্রীর গল্প।
মালতী অংশুকে প্রথমে ভালবাসলেও পরে হয়তো অভ্যেস বসত থাকে, তার বিরক্ত লাগে, তার শরীরে মনে গোটাটাই জয়ন্ত। মালতীর কাছে ভালোবাসাটা যেনো সময়ের ওপর নির্ভরশীল, যেভাবে এগিয়েছে, সেভাবেই মেনে নিয়েছে মালতী। হতে দিয়েছে যা মন করতে চায়। সে জানে অংশু কিছু বলার ক্ষমতা রাখেনা।
অংশু ক্ষমতা রাখেনা তা না। অংশু মালতীকে ভীষণ ভালোবাসে। জয়ন্ত না এলে মালতী আধ মরা থাকে। অংশু ভাবে, তার থেকে অংশু একাই কষ্ট পাক। ভালবাসার অর্থ হাতড়ে বেড়ায় অংশু। মেলাতে পারেনা কিছুতেই। মেলাতে চাইলে মালতী চলে যায় আরো দূরে। মালতীর ওপর সে প্রতিশোধ নিতে চায় নিঃশব্দে। কিন্তু নেবে কিনা, নিলে কিভাবে মেনে, বুঝতে পারেনা। ক্লান্ত হয়ে পড়ে নিজেই।

অংশু ভাবে মালতী জয়ন্ত কে চায়। তাই তাদের মাঝে সব শেষ। আর কিছু হবার নেই, মেরামতের জায়গা নেই। মালতী ভাবে, সে ���তদিন চেয়েছিল অংশু একটু ওকে ওর মতো করে ভালবাসুক, একটু বুঝুক। কিন্তু অংশু বোঝেনা, তাই কিছু আর হওয়ার নেই।
দুজনেই দুজনকে চায়, বা হয়তো আগে চাইছিল, কিন্তু দুজনই বুঝে উঠতে পারলনা। এই আলাদা চাহিদা নিয়ে কোনো কথপোকথন তারা করলনা। ভালোবাসাটাকে যেতে দেওয়া হলো।
এরম কত সম্পর্কেই হয়ে থাকে। দুজনই নির্দোষ। দুজন শুধু আলাদা। দুজনের ভাবনা আলাদা, চাওয়া পাওয়া ইচ্ছে আলাদা। না পাওয়া দুদিকের ইচ্ছের মধ্যে আটকে আছে একটা হয়ে যাওয়া সংসার।
ঠিক কি কারণে বইটি ban হয়েছিল জানিনা। হওয়ার কারণ দেখিনা। অবশ্য সত্য কথা সত্য বলা আছে। কি বা বেশি কারণ চাই। বইটি অশ্লীল নয়। পড়ে দেখা উচিত বইটি অবশ্যই।
বুদ্ধদেব বাবুর মধ্যে , মালতীর মধ্যে, অংশুর মধ্যে দেখবেন ভাবছেন আপনি নিজেও। পাঠকের জীবনেও যেনো রাত ভরে বৃষ্টি। যে বৃষ্টি পাঠকের স্মৃতির, পাঠকের পাওয়া - না পাওয়ার হিসেব খাতা ভিজিয়ে দেওয়ার বৃষ্টি। মনের গভীরে বৃষ্টি।
Sahir ludhiyanvi মশাইয়ের একটা sher মনে এলো এই প্রসঙ্গে -
kaun rota hai kisi aur ki khaatir ai dost
sab ko apni hi kisi baat pe rona aaya

বই শেষ করার পর আমার মনের অবস্থাও এটাই।

৪.৫/৫
৫ হয়তো দিতাম। কিছু কিছু জায়গা তসলিমা নাসরিনের মতো লাগছিল লেখার ধরন। বারবার একই কথা। মনে হলো আরেকটু অন্যভাবে যদি লেখা যেতো।
Profile Image for HR Habibur Rahman.
284 reviews54 followers
June 20, 2025
অশ্লীল, লুতুপুতু কাহিনি, পরকীয়া। কি যা-তা লেখা! এসবও কেউ লেখে? এসবও লেখা যায়! ভাবতেই অবাক লাগে এরকম লেখাও মানুষ লেখে!
- এতসব কথার কোনটা সঠিক? সবগুলোই নাকি কোনটাই না?

কিন্তু আসলেই কী অশ্লীল? আপাতদৃষ্টিতে আসলেই তাই। কারণ রবীন্দ্রনাথ, বিভূতিভূষণ, শরৎ পড়ার পরে, এবং আমরা যারা সিনেমাতে ভালোবাসার সিনে গোলাপ ফুলে দেখেছি তাদের কাছে এই লেখা অশ্লীল লাগা অস্বাভাবিক কিছু না। অস্বাভাবিক কিছু না শুধু অশ্লীল বলে চালিয়ে দেওয়া যদি মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দেওয়া যায়।

রবীন্দ্রনাথে পরকীয়া নেই? শরৎচন্দ্রে নেই? কই তারা তো এভাবে, এত এক্সপ্লিসিটলি লেখেননি! "নৌকাডুবি"-তে বউ বদলকেও কত ভালো ভাবে উপস্থাপন করেছেন। "গৃহদাহ"-তে পরকীয়ার নাম দিয়েছেন 'ত্রিকোন প্রেম'। ওভাবেও তো পারতেন বুদ্ধদেব বসু। পারতেননা?

পারতেন অবশ্যই। কিন্তু বুদ্ধদেব বসু যা দেখাতে চেয়েছেন, যা বুঝাতে চেয়েছেন তা হয়তো এতোটা গভীরভাবে ফুটে উঠতোনা। এতোটা এক্স্ট্রিমলি ইফেক্ট ফেলতোনা। কোনো সময় মালতী আর কোনো সময় নয়নাংশুর উপর রাগ জন্মাতোনা। বা জন্মাতোনা ভালোবাসা। করুণা আসতোনা হৃদয়ে অংশুর জন্য। অংশুর ত্যাগের জন্য। বা করুণা জন্মাত না মালতীর প্রতি, মালতীর কথা অনুযায়ী,  অংশুর ঔদাসিন্যের জন্য। অথবা মালতীর নাটক বুঝে প্রেম না বোঝার ব্যাপারটা হয়তো এতোটা এ্যাফেক্ট করতোনা।

উপন্যাসের সমস্ত কিছুই বাস্তব জীবনে ঘটে। কিন্তু বাস্তবতা বাস্তব জীবনে যত সহজে মেনে নেওয়া যায়, গল্পে তা পারা যায়না। বাস্তবে ঘটে চলা জিনিসে ততোটা রিফ্লেক্ট করা যায়না, যতোটা যায় গল্পের ক্ষেত্রে। বাড়ির পাশে ঘটে চলা অন্যায় প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে কিন্তু সেটার ক্ষেত্রে বিচারক্ষমতা ঠিক ততোটা কাজ করেনা যতোটা করতো সেটা গল্প হিসেবে কারোর কাছ থেকে শুনলে। শোনার/পড়ার সময় মগজ টগবগ করে, হাজারটা ক্যালকুলেশন করে, প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এমোনি এক বাস্তব গল্প " রাত ভ'রে বৃষ্টি"। যে গল্পে বসু চেষ্টা করেছেন গল্পকে বাস্তব জীবনের সাথে মিলাতে। যে গল্পে ঘটেনি "পয়েটিক জাস্টিস" বা ঘটেনি কোনো নাটকীয়তা, যে নাটকীয়তার জেরে এক হয়ে যাবার সুযোগ ছিলো দুজনের। যে গল্প পড়ে মগজ ক্যালকুলেশন তো করে কিন্তু সেটাতে কাজ হয়না। বাস্তবের বাস্তবতার মতো গল্পের কাছে হার মেনে যায়। বাস্তবের বাস্তবতার মতো মগজকে সরিয়ে রাখতে হয়।

বাস্তব জীবনের কাহিনী ফুটিয়ে তোলাতে এই গল্পের জুড়ি মেলা ভার। জীবনে অনেক কিছুই ঘটে যা দেখতে যত সহজ মনে হয়, করতে গেলে ততোই কঠিন লাগে। অপর মানুষকে (বন্ধু-বান্ধব) কোনো কিছু বুঝিয়ে বলা, বাঁধা-নিষেদ করা, অথবা তাদের ভুলগুলো (ইচ্ছাকৃত/অনিচ্ছাকৃত) ধরিয়ে দেওয়া যতোটা সহজ , নিজের (পরিবারের) মানুষদের ক্ষেত্রে ততোটাই কঠিন। অপর মানুষদের বুঝিয়ে বলতে কষ্ট হয়না, নিজের গুলোকে বলতে গেলে নমনীয়তা হরায় যায়। মনে জেগে ওঠে রাগ, অভিমান। তখন কথা হারায় তার মাধুর্য। সহজে বলার মতো কথাগুলোই হয়ে ওঠে তিক্ততায় ভরা। ঠিক যেমন টা নয়নাংশুর ক্ষেত্রে ঘটেছে। পড়ার সময় মনে হয় "আরে বলেনা কেন? করেনা কেন? কী আসে যায়?" কিন্তু ভাবলে মনে হয়, এত সহজ না। আমরাও পারিনা, মালতী-নয়নাংশুরাও পারেনি। পারেনি সহজ করে নিতে সকল বিবাদ। পারেনি ছেড়া তার জোড়া লাগাতে।


কত সহজেই মানুষ দূরে চলে যায়। ফিরে আসেনা। আসতে চেষ্টা করেনা। নদীর ওপারের জন্য নিশ্বাস ছেড়ে সর্বসুখ হাতাতে গিয়ে এপারের দিকে আর ফিরে আসতে পারেনা। একটা সময় ভুল পথটাকেই সঠিক হিসাবে দেখানোর জন্য চালনা করে নতুন নতুন ধারণার, যুক্তির। মালতীর যুক্তি গুলোর মতো। নয়নাংশুকে দোষ না দেওয়ার কিছু নেই। নদীতে বাঁধ দিলে যেমন নদী তার সহজ গতিপথ হারায়, মালতী যা না তাকে তা বানানোর জন্য সেও তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। কিন্তু সব কিছু জেনেও মালতী ফিরে আসতে পারেনি, আসতে চায়নি, অন্যায়ের পরও অনুশোচনা হয়নি, বরং অন্যায়কে জাস্টিফাই করার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। নয়নাংশুকে মালতীর যে ছায়া খারাপ হতে দেয়নি, মালতী নয়নাংশুর সে ছায়াকে পরোয়া পর্যন্তু করেনি। যে জয়ন্ত মালতীর ছোট খাটো বিষয়ের যতোটা খেয়াল রাখে, সে জয়ন্তই হয়তো নিজের বউয়ের ক্ষেত্রে ঠিক ততোটাই উদাসীন।


প্রথমের অশ্লীল শব্দ আর রগরগা বর্ণনা যে শেষে এতোটা হৃদয়বিদারক হবে তা কে আন্দাজ করতে পারত! শুধু মালতীর বয়ানে কাহিনি এগোলে হয়তো নয়নাংশুকে দোষ না দিয়ে কেউ থাকতোনা। কিন্তু দুজনের বয়ানে এগোনোতে সামঞ্জস্য এসেছে। বরং মুখোস উন্মোচিত হয়েছে। কতো কিছু জেনে শুনেও মানুষকে চুপ থাকতে হয়। কিছু না জানলেই বরং জীবন সুন্দর। কত কিছু ভেবেও বলা হয়ে ওঠেনা। কল্পনাতে কত সুন্দর করেই না গোছানো যায় কথা। কিন্তু মুখে বলা হয়ে ওঠেনা। মুখে বলতে গেলেই বেমানান লাগে। মালতীর প্রতি আমি সহমর্মিতা দেখানোর জোর চেষ্টা করেও পারিনি। পারিনি তার জন্য দরদ দেখাতে যার নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা জন্মায়নি। যে নিজের ক্ষেত্রে, নিজের দিকটা শুধু দেখে যুক্তি দাড় করিয়ে নিজেকে জাস্টিফাই করার পায়তারা করে তাকে আর যাই করা যাক, শোধরানো যায়না, বুঝানো যায়না। যে মালতী তার কল্পনাতে চায় তাকে তার স্বামী তাকে জোর করুক, সেই স্বামী তাকে আসলেই জোর করলে হিতে বিপরীত হতো। বুঝেছিলো সে কথা নয়নাংশু। বুঝিয়েছেন সে কথা বুদ্ধদেব। সে জন্য ছেড়া তার জোড়া লাগতে দেননি। উপন্যাসে রাখেননি কোনো পয়েটিক জাস্টিসের ছোঁয়া। 



- রাত ভ'রে বৃষ্টি
- বুদ্ধদেব বসু
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
October 4, 2022
আমার পড়া বুদ্ধদেব বসুর প্রথম বই এটা। ভালো লাগলো। মালতী আর নয়নাংশুর মানসিক এবং সাংসারিক টানা পোড়েন অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয় মনে। সে প্রশ্নের উত্তরও খুঁজতে হয় নিজেকেই। উত্তরের খোঁজে ভ্রমণ করতে হয় নিজের ভেতর।
Profile Image for Moumita Hride.
108 reviews65 followers
April 15, 2020
অশ্লিলতা পাই নি। তবে উপন্যাস টা খুবই ভালো লেগেছে... খুবই বাস্তববাদী গল্প। আর লেখা তো অসাধারন।
Profile Image for Shadin Pranto.
1,469 reviews560 followers
September 29, 2019
ইয়ে মানে.. বাবা আদমের কাল থেকেই নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানবসন্তানের তীব্র আকর্ষণ। আমিও বাইরে নই। হঠাৎ জানতে পারলুম 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' নামক একটি নিষিদ্ধ গ্রন্থ আছে। যেখানে নিষিদ্ধ কথাবার্তা লেখার জন্য 'বিজ্ঞ' আদালতে বইখানা নিয়ে দীর্ঘকাল হট্টগোল চলেছে। নিষিদ্ধ ছিল বহুদিন। তখন স্কুলে পড়ি। এমন বই ই তো মনে মনে খুঁজছি! গ্রন্থখানা তখনো চর্মচোখে দেখিনি। অথচ দিলমে লাড্ডি ফুটতে লাগল। কতো মজা হবে বইটা পড়তে তা নিয়ে আকাশ-কুসুম কল্পনা করছিলাম।

পুরাতন বইয়ের দোকানে গিয়ে চুপিচুপি বইটার কথা বললাম। আর বইওয়ালা প্রকাশ্যে ক'টি তুচ্ছ কাগজের বিনিময়ে নিষিদ্ধ গ্রন্থখানা আমায় দিয়ে দিলো। আমি তো অবাক! ভাবলাম, যাক কম দামে পেয়েছি। দোকানদার যদি জানতো এটা নিষিদ্ধ পুস্তক তাহলে বেশি দাম হাঁকাতো। আমারই লাভ হলো।

নিষিদ্ধ পুস্তক পাঠ করব - এই খুশিতে বাসায় চলে এলাম। স্কুলের অপাঠ্যপুস্তকগুলো দ্রুত শেষ করলাম। রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে ফেললাম 'নিষিদ্ধ পুস্তক'।

এখনো মনে আছে, ছোট্ট বইটা শেষ করে রাগ হয়েছিল। ভাবলাম কী না কী আছে। অথচ নিষিদ্ধ কিছু আমি হতভাগা খুঁজে পেলাম না। তখন মনে হচ্ছিল, এই বইয়ের তথ্যদাতা, বইওয়ালা সবাই মিলে আমায় ঠকিয়েছে। নিজেকে সান্ত্বনা দিতে দু'চারখানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বও দাঁড় করিয়েছিলাম! যেমন- দোকানদার আমাকে নকল বই গছিয়েছে।

বুদ্ধদেব বসুর কলমের সাথে যারা পরিচিত, তারা জানেন বসুর লেখনী একেবারেই আলাদা। অন্য রকমের স্বাদ তাঁর পদ্যে-গদ্যে দু'য়েই আছে। 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' - এর বাইরে নয় বরং অন্তর্ভুক্ত।

সাত কিংবা আট বছর আগে পড়েছিলাম। কাহিনি কিংবা চরিত্রের নাম সবই বিস্মরণ হয়েছি। কিন্তু এই বইয়ে ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা সঙ্গে দরকারি যৌনতাকে বসু বেশ রঙিন করে লিখেছিলেন - এটুকু দিব্যি মাথায় আছে।
Profile Image for Akash.
446 reviews148 followers
July 18, 2023
"শিকলে বাঁধা কুকুরের মতো আমাদের শরীর, মন তাকে টেনে নিয়ে যায় — মন যখন যেদিকে ছোটে কেউ ঠেকাতে পারে না, কিন্তু শরীরটা জড়বং জড় পদার্থ বলে পিছনে প'ড়ে থাকে। নতুন কিছু হয়নি, শুধু মনের হুকুম তালিম করেছে তোমার শরীর, মালতী"

ভাগ্যিস সুসময়ে 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' পড়েছি। ৫'শ তারা দিলাম। মনের একটা অংশ অপরিপক্ক ছিল আমার; পুষ্ট হল আজ। খুব অল্প বই-ই মনে চিরস্থায়ী জায়গা দখল করে। ঠিক যেমন 'আরণ্যক' করেছিল। আজ 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' সেই জায়গা দখল করল।

উপন্যাসের মালতী নয়নাংশু'কে নয়, যেন ভবিষ্যত আমাকে কথাগুলো বলেছে। আর আমিও আমার ভুলগুলো আজ এই মুহূর্তে শুধরে নিলাম। আর নয়নাংশু যেন আমার হয়ে আমার ভবিষ্যত হবু বউকে (যদিও বিয়ে করার ইচ্ছা নাই; তবুও বলা যায় না) মনের সব কথা বলে দিয়েছে।

যারা অতিরিক্ত সাহিত্যনুরাগী, বিবাহিত কিংবা বিবাহবিচ্ছেদের যন্ত্রণায় পীড়িত তাদের জন্য অবশ্যপাঠ একটা বই।

যে বইটা আমাকে ভাবাবে, পরিপক্ক করবে সেটাই তো ভালো বই, মনে রাখার মতো বই। বইটা আমার এত্ত ভাল্লাগসে যে সবাইকে সুপারিশ করতে ইচ্ছে করছে।
.

১৮ জুলাই, ২০২৩
Profile Image for Smitha Murthy.
Author 2 books417 followers
January 27, 2018
I picked this book up entirely by chance on a visit to a second-hand bookstore. I haven't read much of Bengali literature, and a book that was banned seemed a good place to amend that. I loved the way Buddhadeva Bose has brought together two narrators, who each bring their perspective on the marriage they are building or destroying, depending on your point of view.

At times, it can seem overly melodramatic, but unusual for those times is the portrayal of adultery. Too often, we vilify adultery without understanding what drives us to have an affair, and the institution that compels us to stay in court-sanctioned marriages. Here then is a rare portrayal of the nuances of adultery, the layers that can behind the surface of a marriage, and the choices we make in the exploration of the relationships that bind us. A good read that must have been even better if read in Bengali.
Profile Image for Ahtims.
1,673 reviews124 followers
March 16, 2017
It was a compelling read. I didnot like the story but it had the ability to hold me spellbound.

At around 40% I was sure I will give it 2 stars at the most, but things shifted towards a more powerful narration.

The two narrators, Maloti and Angshu have been married to each other for 12 years, and have a 10 year old daughter, Bunni.
Noyanangshu is a peculiar person, who internalizes his feelings and abhors display of affection and weakness. He likes to think himself a liberal gentleman, but in his wife's eyes is actually a tyrant who wants things to proceed his way. He is of the opinion that a person should not be confined by marriage, and should be allowed to 'graze' far and wide.
Maloti, who fell in love with her young English teacher, Noyanangshu initially idolizes him and agrees to all his terms. But off late, she is realizing his negative points with more and more force, and is fed up of him and their marriage to such an extent so as to avoid physical relations with him.
Angshu makes Maloti interact with his male friends, and slowly but surely, Jayonto, the slightly ragamuffin weekly publisher cum journalist and Maloti are attracted towards each other, culminating in physical intercourse.... from the point of which the story starts.
6 alternative chapters lead us into the minds of Maloti and Angshu, both are right, both are wrong .. and both are to be blamed.
I sort of sided with each when they put forth their viewpoints, but if I am asked to chose sides, I would tilt towards Maloti, as she seems to be the more normal of the couple, who just sought love and companionship, which was not provided by her husband.

This story made me think a lot about the institute of marriage, its restraints and its freedom. Was a very powerful book, and one thing which left me wondering is why the couple never sought any counseling, as at varying points they both want to make amends and lead life as husband and wife, despite Jayanto happening.

Profile Image for Hillol.
13 reviews
March 4, 2017
দাম্পত্য জীবনের কানাগলি ঘুরে এসে নিদারুণ মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে জর্জরিত এই উপন্যাস। অবশ্য মাঝে মাঝেই মনে হয়েছে উপন্যাসটা কবিতা হয়ে ঢুকে পড়ছে মনের অন্দরে। কখনো কখনো অস্বস্তি বোধও গ্রাস করে বেয়াড়া সত্যের মুখোমুখি হয়ে। বর্ণনা রীতিটা বড্ড আকর্ষণীয় মনে হল। যেন কোন পক্ষকেই অবহেলা করতে চান নি লেখক। বিশেষভাবে সুপারিশ করার মতো একটা বই।
Profile Image for Rocky Rahman.
106 reviews10 followers
December 5, 2024
এটা প্রাপ্তবয়স্কদের বই না, এটা প্রাপ্তমনষ্কদের বই।
পৃথিবীর সকল মানুষেরই বিয়ে, সম্পর্ক নিয়ে নানা ধরনের কৌতুহল কাজ করে, সকলেই প্রত্যাশা করে বিয়ের পর তার জীবন নানা রংবেরঙে ফুটে উঠবে, মৃত গোলাপ জীবিত হয়ে যাবে।
কিন্তু বিয়ের পর সকলেরই মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, স্ত্রী শুধু তখন স্বামীর দোষ দেখতে পায় এবং স্বামী শুধু স্ত্রীর দোষ। দুজনের মাঝে মানসিক বোঝাপড়াটা কমতে থাকে, শরীরের প্রতি শরীরের আকর্ষণও।
মালতী নয়নাংশুর স্ত্রী, আমরা একদম প্রথম পৃষ্ঠায় দেখতে পাই মালতী পরকীয়ায় জড়িত। তার স্বামীও সেটা জানে, আগে থেকেই।
এরপর আমরা মালতীর জবানবন্দিতে জানতে থাকি, মালতীর মানসচেতনা, বরং অনেক কিছুতেই মালতী নিজেকে ছাড়িয়ে নারীদের মানসচেতনাই ফুটিয়ে তুলেছে। তখন আমাদের মনে হয় সকল দোষ তার স্বামী নয়নাংশুরই।
কিন্তু যখন আবার আমরা নয়নাংশুর জবানবন্দি শুনি, তখন মনে হয় সবটাই এক বিরাট ভুল বুঝাবুঝি, নয়নাংশুকে তখন এক ভদ্র দুর্বল মানুষ মনে হয়।
এইযে স্বামী স্ত্রী দুজনেরই মানসচেতনা, মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা জানতে পারা, এগুলোর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারা সম্পর্কে ছোট্ট ছোট্ট জিনিসগুলোও মানুষকে কিভাবে কাছে টানে এবং দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।
যদিও হয়তো পুরুষ হবার কারনেই, আমার নয়নাংশুর প্রতি খুব মায়া লেগেছে, সে পুরোদস্তুর একজন ভদ্রলোক যাকে বলা যায়, স্ত্রীর অপকর্ম জেনেও চুপ মেরে বসে থাকা, একইসাথে তা আমার কাছে কাপুরুষোচিত কর্ম বলেও মনে হয়েছে।
কিন্তু নর-নারীর মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা জানতে হলে বইটি পড়তে পারেন।
Profile Image for Khowla Hasan Roza.
34 reviews4 followers
July 12, 2022
যে বইটি বের হতে না হতেই অশ্লীল ও নৈতিকতা বিরোধী উপাধি দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ব্যর্থ করে দেবার অপপ্রচেষ্টা চালানো হয়, সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরতে আদৌ কি সে বই ব্যর্থ হয়েছে? যে বইটির জন্য লেখককে দাঁড়াতে হয়েছিল অপরাধীর কাঠগড়ায় সে বইটি এক কুৎসিত সত্য তুলে ধরতে কি সক্ষম হয়নি ? ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, নৈতিকতা-অনৈতিকতার যে সংজ্ঞা আমরা জানি তাই কি নির্ভুল , তাই কি একবারে সঠিক? ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নের কি চমৎকার উত্তরই না দিলেন বুদ্ধদেব বসু বইটিতে।
গল্পের নায়ক নয়নাংশু নিজের স্ত্রী মালতীকে গড়ে তুলতে চেয়েছিল আধুনিক নারী হিসেবে যে অন্য আট-দশ নারীর চেয়ে হবে অনন্য ও ব্যক্তিত্ববান। মালতীর দৃষ্টিকোণে, নয়নাংশু কেড়ে নিয়েছে তার নারীত্ব, তার সত্ত্বা। তার দৃষ্টিভঙ্গি হলো নয়নাংশু তাকে ভালোবাসে না, সে যে মালতীকে ভালোবাসে এই ধারণাটা কে নয়নাংশু ভালোবাসে। ফলে স্বামী স্ত্রীর এই পারস্পরিক মনোমালিন্য চলাকালীন সময়ে নাট্যমঞ্চে তৃতীয় পক্ষের প্রবেশ ছিল সহজ এবং স্বাভাবিক। এক পর্যায়ে শুরু হয়ে যায় স্বামী স্ত্রীর এক কুৎসিত মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব, একে অপরকে মানসিক ভাবে আঘাত করার খেলা। কিন্তু এই খেলার শেষ কোথায়?
বইটি পড়ে যেকোনো এক পক্ষের হয়ে ওকালতি করা যায় না। এক দিকে নয়নাংশুর জন্য দুঃখে ব্যথিত হয় হৃদয় , অন্যদিকে মালতীর আচরণের পক্ষেও যুক্তি দাঁড় করানো যায় বেশ কয়েকখানি।
আমাদের সমাজের ফাঁক ফোকর, নারী পুরুষের মনস্তত্ত্ব, সত্য মিথ্যা , ন্যায় অন্যায় এবং নৈতিকতা অনৈতিকতাকে বুদ্ধদেব বসু বইটিতে করেছেন চরম ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। বইটির ফ্ল্যাপ পড়ে জেনেছি এটি বুদ্ধদেব বসুর সর্বাধিক বিক্রি হওয়া বই। বইটি পড়ার পর মনে হলো এই বইটি সর্বাধিক বিক্রিত বই হবে এটাই কি স্বাভাবিক নয়?
Profile Image for Gorab.
843 reviews153 followers
September 15, 2021
Picked it as a part of Banned books challenge. This book was banned while published in 1967 for charges of obscenity.

Interesting premises right from page one. Within the first 3-4 pages:
Wife's having an affair with husband's friend. Husband is aware of it, but pretends on the face he doesn't know. Wife and lover know that husband knows! And husband knows that they know he knows :D

Then there are alternate chapters narrated by husband and wife, each justifying their actions from their point of view. There are no black and white characters here - loved reading through their thoughts. Felt a little repetitive in the middle.

Overall a good one if you like Indian translations, or extramarital themes.

Profile Image for শাহ্‌ পরাণ.
259 reviews74 followers
June 27, 2022
ভালোবাসা আর ভালোবাসি এই ধারনাকে ভালোবাসার মাঝে একটা পার্থক্য আছে। কাউকে ভালোবাসলে তাকে সময় দিতে হয়, তার চাওয়া পাওয়াগুলো দেখতে হয়, কিছুটা তার ইচ্ছামতো নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় তাকে কিছুটা নিজের ইচ্ছে মতো গড়ে নিতে হয়। সহজকথায় আপোষ করতে হয়। আপোষ না থাকলে কোন সম্পর্কই টিকে না, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আরো আগে টিকে না।
এই অতিসাধারণ সত্য উপলব্ধিটা দুজন স্বামী-স্ত্রীর না থাকার কারনে দুজন মানুষ কিরকম প্যানপ্যানানি করতে পারে তার উদাহরণ হলো এই বই।
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews26 followers
December 12, 2023
বুদ্ধদেব বসুর লেখা পাঠকমহলে ব্যপক সমাদৃত। 'রাত ভ'রে বৃষ্টি' দাম্পত্য জীবনের খেরোখাতার মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। বিবাহের পর সম্পর্কের টানাপোড়েন ও বিচ্ছেদের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে স্বামী ও স্ত্রী'র আত্মপক্ষ সমর্থনের বয়ান উপন্যাসটি।

একটি সম্পর্ক কীসের জোরে টিকে থাকে? বিশ্বাস, ভালোবাসা, পছন্দ অপছন্দের গুরুত্ব দেওয়াসহ আরো কিছু বিষয় থাকে যার মাধ্যমে সম্পর্কগুলো সুন্দর থাকে। আবার অনেকসময় সমাজের ভয়ে ভেঙে পড়া সম্পর্কগুলো টেনে নিয়ে যান অনেকে।

নয়নাংশু ও মালতীর প্রেমের বিয়ে। এক সন্তান বুন্নিকে নিয়ে সবই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড়ের মতো তাদের মাঝে প্রবেশ করে জয়ন্ত। বইয়ের পোকা নয়নাংশু বই পড়ে যেসব ধারণা অর্জন করেছে সেসব তার ব্যক্তিগত জীবনেও প্রয়োগ করতে চায়; কিন্তু মালতী সংসারী ধরনের মেয়ে। যৌথ পরিবারে থাকতে চাইলেও নয়নাংশু তাকে আলাদা ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। সেখানেই নয়নাংশুর বন্ধুদের সাথে মিশতে শুরু করে মালতী। ভালো লেগে যায় জয়ন্তকে। জয়ন্তও নয়নাংশুর সাথে আড্ডা দেওয়ার চাইতে মালতীর সাথে আড্ডা দিতেই যেন এই বাড়িতে আসে।

জয়ন্তর সাথে কিছুদূর আগানোর পর মালতী বুঝতে পারে নয়নাংশুর চাইতে জয়ন্ত অনেক বিশ্বাসী। জয়ন্ত সবসময় মালতীর খোঁজখবর রাখে, তার গল্প শুনতে চায়। মোট কথা মালতীর কাছে মনে হয় নয়নাংশু যা দেয়নি, জয়ন্ত তাই দিচ্ছে। একসময় জয়ন্তর সাথে বিছানায় যেতেও গায়ে বাঁধেনা মালতীর। এই ব্যাপারগুলো নয়নাংশুর কাছে চাপা থাকেনা। কিন্তু উপরে উপরে দুইজন এমনভাবে চলে যেন কিছুই হয়নি। অথচ তাদের সম্পর্কের মাঝে পাহাড়সম দেয়াল দাঁড়িয়ে গিয়েছে।

উপন্যাসের শুরু হয়েছে মালতী ও জয়ন্তর অবৈধ অভিসার পরবর্তী ভাবনা নিয়ে। নয়নাংশুর অনুপস্থিতিতে এরূপ হীন কার্যকলাপে লিপ্ত হয় মালতী। কিন্তু সে নিজের পক্ষে সাফাই গাইতেও দ্বিধা বোধ করেনা। সে চায় নয়নাংশুও যেন তার অফিসের সহকর্মী অপর্ণার সাথে পরকীয়ায় জড়ায়, যাতে করে তার নিজের অনৈতিক কার্যকলাপের বৈধতা পায়। মালতী বোকার মতো ভেবে গিয়েছে জয়ন্ত তার শুভাকাঙ্ক্ষী। যেহেতু সে নিয়মিত তার খোঁজখবর নেয়, তার ভালো মন্দ দেখে, তাকে সময় দেয়। কিন্তু মালতী এটা বুঝতে পারেনি যে, সে বিবাহিত এবং তাকে বিছানা পর্যন্ত নিতে হলে বিশেষভাবে সময় দিতে হবে। অথচ মালতী সেটাকেই ভালোবাসা বলে ধরে নিল!

নয়নাংশু কলেজের শিক্ষক থেকে বিজ্ঞাপন সংস্থার চাকুরে। সবসময় বই পড়ে, বইয়ের জ্ঞানগুলোকেই বাস্তব জীবনের পাথেয় বলে ধরে নিয়েছিল। কিন্তু দাম্পত্যজীবনে তত্ত্বের প্রয়োগ করতে গিয়ে নিজের সংসারকে বানের জলে ভাসিয়ে দিয়েছে। নয়নাংশুর উচিৎ ছিল সংসারের প্রতি আরো মনোযোগী হওয়া। তাছাড়া নিজের স্ত্রী'র পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারগুলোকেও গুরুত্বের সাথে দেখা প্রয়োজনীয়। নিজের ভাবনাগুলো জোরপূর্বক মালতীর উপর চাপিয়ে দিয়ে সম্পর্ক নষ্টের জন্য সেও দায়ী। অন্যদিকে মালতীর কার্যকলাপও গ্রহণযোগ্য নয়।

বইটিতে পাঠক যখন দুই পক্ষেরই আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেখবেন, তখন দ্বিধান্বিত হয়ে যাবেন। আসলে ভুলটা কার ছিল? আমার দৃষ্টিতে দুইজনই তাদের সম্পর্কের এহেন অবস্থার জন্য দায়ী। তত্ত্বকথা ও ব্যক্তিগত আলোচনা রয়েছে যা কোনো কোনো পাঠকের একঘেয়ে লাগতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক বলার চাইতে বইটা প্রাপ্তমনস্কদের জন্য বলা শ্রেয়। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
July 20, 2020
রাত ভ’রে বৃষ্টি মানে লেখক বুঝাতে চেয়েছেন সারা রাত ধরে বৃষ্টি পড়ছে আরকি। ত��� আমি তো জানতাম ঝড় বাদলার রাত মানেই ভূত প্রেতের উপদ্রব জাতীয় কিছু । না মানে বাঙাল তো সাধারণত বৃষ্টির রাত ছাড়া ভূত নামাইতে পারে না সাহিত্যে তাই ভাবলাম আরকি ভূতের বই হইবে… দুই তিন পাতা পড়ে দেখি স্বামী স্ত্রীর পরকীয়ার স্যাঁতস্যাঁতে স্বীকারোক্তি । একজন আরেকজনের এই চারিত্রিক দুর্বলতা ঐ শারীরিক দুর্বলতার কথা বইলা দুনিয়ার কমপ্লেইন শুরু করছে ! তাদের শীতল যুদ্ধ চলতেছে সংসারে ! পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শুধু সমস্যা আর সমস্যা । তুমিতো আমাকে বুঝো নি , তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারলে না , চিনলে না , ফিরে এসো জয়ন্ত …এইধরনের লুতুপুতু অভিযোগ ।উপন্যাসের পাত্র পাত্রী দুইজনেই দোষৈকদর্শীতায় নিঃসন্দেহে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে ।
এর নাম রাত ভ’রে বৃষ্টি না দিয়ে ‘’রাত ভ’রে নীরব কাইজ্জ্যা ফ্যাসাদ’’ দিলেই তো হতো
পড়তেছি আর ভাবতেছি এই নির্বোধ দম্পতি সারা দুনিয়ার পাঠকের কাছে কনফেস না করে কোথাও বসে নিজেদের সাথে আলোচনা কইরা একটা সিন্ধান্তে আসলেই তো পারে !
ভাবছিলাম সারা রাত বৃষ্টি পড়তেছে ; হয়তো শেষের দিকে কোন একটা ভূত এসে দুইজন রে ভয় দেখাবে তখন ভয় পাইয়া তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায় যাবে । পারস্পরিক কলহ ভুলে একে অপরের কাছে নিজেদের দূর্বলতা স্বীকার করবে এরকম কিছু কিংবা ভূত হয়তো স্বামী বা স্ত্রী কারো একজনের উপর আছর করে তাকে উন্মাদ বানায়ে দিবে । উন্মাদ রে এসাইলামে রেখে ফিরে আসার সময় অপরজন টের পাবে তারা নিজেদের কত ভালোবাসতো …… কিন্তু তাও না। তারা দুজনা একে অন্যের দিকে একটার পর একটা অস্ত্র প্রয়োগ করতেছে । দুইজন ই ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে অথচ কেউ হারতেও চাচ্ছে না আবার জিততেও চাচ্ছে না, কারণ তারা দুজনেই জানে দাম্পত্যযুদ্ধ এমন একটা যুদ্ধ যেখানে ফলাফলের উপর জয়-পরাজয় নির্ধারণ করা হয় না, বরং …………আরে ধুরু কি অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে ভ্যাজরভ্যাজর করতেছি !
যাইহোক এ বই বুদ্ধদেব বসুর , অবুঝ মন মানসিকতার স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এক্কেবারে ভুল বুঝাবুঝির কারণে মানসিক রক্তপাতের একটা নমুনা দেখানোর চেষ্টা ছাড়া কিছু নয় ! মনে হচ্ছিলো কিন্ডারগার্টেন এর দুই পিচ্চি একে অপরের উপর অভিমান করে টিফিন টাইমে একই ক্লাসরুমের দু প্রান্তে বসে নিজেদের কিভাবে হেনস্থা করা যায় তার ফন্দি আঁটছে মনে মনে ।
তবে মূল দুঃখটা কি জানেন ? সারা রাত ভইরা এইভাবে বৃষ্টি পড়লো ! কি সুন্দর একটা ভৌতিক পরিবেশ ছিলো আহা! তার কি নিদারুণ অপচয় করলো লেখকে ! ছ্যাঃ
Profile Image for Sumaiya.
37 reviews3 followers
August 1, 2025
" ছেঁড়া তার আর জোড়া লাগবে না, হারানো সুর ফিরে পাবে না কখনো - যে তোমাকে ভালোবাসে না তার সঙ্গে, যাকে তুমি ভালোবাসতে ভুলে যাবে তার সঙ্গে - এমনি করে বাঁচবে, এমনি করে সুস্থ শরীরে বুড়ো হবে। কিন্তু কী এসে যায়, বলো- ভালোবাসা জরুরী নয়, স্বামী-স্ত্রী জরুরী, বেঁচে থাকাটা জরুরী। একটা হাত কাটা গেলেও বেঁচে থাকে মানুষ, একটা ফুসফুস নষ্ট হলেও বেঁচে থাকে- সে তুলনায় কত ছোটো এই ক্ষতি, কত তুচ্ছ এই ঘটনা। ধুসর - কালো নয়, উজ্জ্বলও নয়, হিংস্র সুন্দর মহৎ নিষ্ঠুর ভোগী ত্যাগী কোনোটাই নয়- কোটি কোটি মানুষ - জীবন - অফুরন্ত, মূর্খ, অন্তহীন। তুমি এমন কী মহাপুরুষ যে অন্য রকম পাবে? ওঠো নয়নাংশু, তাকিয়ে দ্যাখো আজকের এই ঝকঝকে দিনটির দিকে, তোমাদের এই নতুন জীবনকে অভ্যর্থনা জানাও। "

❤️❤️
Profile Image for Ahmed Aziz.
381 reviews69 followers
April 6, 2019
বিকেল আর সন্ধ্যা মিলিয়ে বইটা পড়ে শেষ করে ওঠার পরপরেই বাইরে কালবৈশাখী শুরু হল। মানুষের মনস্তত্ত্ব, ভালোবাসা, কামনা, শরীর, হিংসা, দ্বেষ কোনো কিছুর উপরই কি আসলেই মানুষের নিয়ন্ত্রণ আছে? হঠাৎ কালবৈশাখির ঠান্ডা ধুলোমাখা বাতাসের ঝাপটা মনে আর শরীরে যতটা শান্তির পরশ বুলিয়ে যায় প্রতিদিনের চিরাচরিত শান্ত সকাল কি এতটা শান্তি দেয়???
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
April 5, 2021
শহরের মধ্যবিত্ত স্বামী-স্ত্রী বা বিবাহিত নারী-পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্কের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করা হয়েছে বুদ্ধদেব বসুর এই উপন্যাসে।
দারুণ লেগেছে! অশ্লীল বা অশালীন তো লাগেইনি, বরং বিষয়বস্তু ও লেখা অনেক বাস্তবিক মনে হয়েছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুগ্ধ হয়ে পড়ে গেছি।
9 reviews9 followers
March 11, 2015

অনেক দেরিতে হলেও পড়লাম বুদ্ধদেব বসুর বহুলালোচিত আর প্রকাশের আগে কিছুটা সময়ের জন্যে নিষিদ্ধ উপন্যাস ‘রাত ভ’রে বৃষ্টি’। নিজের বাড়ির বুক শেলফের কোনায় কোনায় কতো না-পড়া বই পড়ে আছে দেখে নিজেই অবাক হই। খুব ছোট বই, খুব অল্প সময়ে পড়া হয়ে গেলো।


পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, সেই সময়ে তিনি বিভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতা, অনুভূতি কী অন্য চোখেই না দেখতেন! নিঃসন্দেহে তিনি গতানুগতিকতার থেকে আলাদা ভাবনা ধারণ করতেন। সে-সময়ের প্রেক্ষাপটে তাঁর এই লেখাটি আলোচনায় আসার মতো ছিলো বই কি। তখন নারীরা নিজেরাই তাঁদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কথা বলতে ভয় পেতেন, লজ্জা পেতেন, দ্বিধা করতেন। সে-জায়গায় তিনি পুরুষ হয়ে তাদের না-বলা কিংবা চেপে-যাওয়া অনুভূতিগুলো নিয়ে অনেক কথা লিখেছেন। সেই অনুভূতিগুলো ন্যায় কী অন্যায় সেটার বিচার করবে সময়।


এই উপন্যাসের যথার্থতা বিচার করার মতো বোদ্ধা আমি হই নি হয়তো এখনো, তবু নারী হিসেবে উত্তম পুরুষে কথা বলে-যাওয়া এর মূল নারী চরিত্র মালতীর সাথে আমিও একাত্ম হয়েছি অবচেতনায়। ভালো-লাগা শব্দটা বেশ হালকা মনে হয়, আমি মনে-দাগকাটা কিছু কথা অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে চাই।

উপন্যাসের নায়িকা মালতীর আত্মোপলব্ধি,


“আমার ছোট্ট শরীরটার তলায় অমন প্রকাণ্ড একটা কালো মেঘ কোথায় লুকিয়ে ছিলো এতদিন? তবে কি নয়নাংশুকে আমি কখনোই ভালবাসিনি? বাসিনি তা নয়, কিন্তু ওকে আমি পুরোপুরি কখনো দিইনি নিজেকে–এতোদিনে সেটা বুঝতে পারছি–একটা অংশ সরিয়ে রেখেছি না জেনে– সেই গোপন গভীর চরম অংশ তোমারই জন্যে আমি জমিয়ে রেখেছিলাম, জয়ন্ত। সে আমার স্বামী, রাতের পর রাত বছরের পর বছর আমি শুয়েছি তার পাশে, তার আর আমারই সন্তান বুন্নি–কিন্তু ও সবে কিছু এসে যায় না। কয়েক মিনিট সময়ের মধ্যে, বিনা চিন্তায়, বিনা ইচ্ছায় বিনা ভালোবাসায় কি স্ত্রীলোকের গর্ভে সন্তান আসে না? আমি এখন বুঝতে পারছি যে সাত সন্তানের মা হ’য়েও কোনো মহিলা কুমারী থেকে যেতে পারেন–হয়তো ঘরে ঘরে এমন গৃহিণী অনেক আছেন যাঁরা একটা বোবা শরীর নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন তিরিশ বছরের বিবাহিত জীবন। আর তা তাঁরা জানেন না পর্যন্ত। আমিও কি জানতাম আমার গোপন রহস্য, জয়ন্তর সঙ্গে দেখা না হ’লে? অংশু পারেনি–নতুন বিয়ের পরেও কখনো পারেনি আমাকে নিজের মধ্য থেকে এমনি ক’রে টেনে বের ক’রে আনতে, ভাসিয়ে নিয়ে ডুবিয়ে দিতে যেন অঝোর মেঘ ঝ’রে ঝ’রে পড়লো–নিঃশেষে নিঃশেষে।”


অভিমানী স্ত্রী মালতী বলেছে,

“নয়নাংশু আমাকে সভ্যভব্য মালতী ব’লেই ডাকে, আদরের সময় নিজে অনেক কিছু বানিয়ে নেয় কিন্তু লোটন বলে ডাকে না, তার মতে ওটা নাকি মানায় না আমাকে, ওটা ‘ন্যাকা’ নাম, অর্থাৎ আমার বিয়ের আগেকার কুড়ি বছরের জীবনটাকে সে উড়িয়ে দিতে চায়। কিন্তু তুমি নিলে আমার জীবনের অংশ, আমার অতীতের আর বর্তমানের, আমার কথা শুনে-শুনে ক্লান্তি নেই তোমার; আমি বুঝতে পারলুম তোমার জীবন এখন আমাকে ঘিরে–ঘিরে ঘুরছে। সেটা তুমি খুব সরলভাবে সহজভাবে মেনে নিয়েছো, তা নিয়ে কোনো ভয় নেই তোমার, লজ্জা নেই- কত সহজে আমার হাত ধরেছিলে তুমি, কানে কানে ‘লোটন’ বলে ডেকেছিলে, আড়ালে যখন ‘তুমি’ বলো মনে হয় যেন চিরকাল আমি তা-ই শুনেছি, আর তাই তো যেদিন প্রথম আমাকে জাপটে ধরে চুমু খেলে আমি অবাক হলাম না, ভাবলাম না এটা ভালো হলো না মন্দ হলো, শুরু সারা শরীরে থরথর করে কেঁপে উঠলাম যেন আমি ষোলো বছরের কুমারী।”


আত্মগ্লানিতে ভোগা মালতী বলছে,

“কেউ যেন না ভাবে আমি নয়নাংশুর দুঃখ দেখতে পাইনি বা চেষ্টা করিনি তাকে সান্ত্বনা দিতে। তখন পর্যন্ত জয়ন্তর সঙ্গে কিছুই হয়নি আমার, কিন্তু আমি দেখছি নয়নাংশু কেমন অদ্ভুত বদলে যাচ্ছে, হাসি কমে গেছে মুখের–আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে ভালো করে জবাব দেয় না–অন্তত একজন মানুষের কাছে আমি যে তাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি এইটেই ভালো লাগছে না তার। আমি কি তখন কম চেষ্টা করেছি নয়নাংশুকে খোশমেজাজে রাখতে? রাঁধতে আমি ভালোবাসি না, উনুনের আঁচে আমার মাথা ধরে, কিন্তু এই সময়ে আমি নিজের হাতে রান্না করেছি যা-যা তার বিশেষ পছন্দ, ঝি-চাকর থাকা সত্বেও তার শার্ট-প্যান্ট ইস্ত্রি ক’রে দিয়েছি নিজের হাতে, জুতো পালিশ ক’রে দিতেও পরোয়া করিনি। সে আরামপ্রিয় মানুষ, তার উপর একটু পরিচ্ছন্নতার বাতিক আছে–আমি অনেক খেটে অনেক যত্নে ঝকঝকে রেখেছি ফ্ল্যাটটিকে, আলোয় নতুন শেড আর সোফায় নতুন ঢাকনা পরিয়ে উজ্জল রেখেছি বসার ঘর–কিন্তু সে-সব যেন চোখেই পড়েনি তার। অথচ আমার হাতের কোনো একটি ছোটো কাজও জয়ন্তর চোখ এড়ায় না, যদি কোনদিন কানের দুল বদল করি তা পর্যন্ত লক্ষ করে সে, আমি যখন টিপট থেকে চা ঢালি তখন টের পাই তার দৃষ্টি আমার হাতের উপর।”

নিজের পক্ষে যুক্তি সাজাতে গিয়ে মালতী ভেবেছে,

“ও-সব ভালোবাসাবাসি অংশুর মতো লোকদের বানানো ব্যাপার-একটা ধারণা, কল্পনা, হয়তো একটা আদর্শ যার কাছাকাছি পৌঁছতে পারে না কেউ, আর সেই আপসোসে তা নিয়ে শুধু কথা বলে। এমন মানুষ কে আছে যে অন্য একজনের সব ইচ্ছে মেটাতে পারে? অল্প বয়সে এক ধরনের মন থাকে, চনচনে চাঙ্গা থাকে অব্যবহৃত শরীর, হঠাৎ কোনো একজনের সব-কিছুই ভালো লেগে যায়। অন্য সব মানুষ থেকে আলাদা ক’রে নিই তাকে, মনে হয় তাকে পেলে আর-কিছু চাই না-কিন্তু তখন তাকে পাওয়া গেলো, ধরা যাক তারই সঙ্গে বিয়ে হ’লো যখন, তখন মোহাচ্ছন্ন ভাবটা এক গ্রীষ্মেই ঝ’রে পড়ে, এক বর্ষার জলেই ধুয়ে যায়। তারপর থাকে স্বার্থ, থাকে একত্র বসবাসের ফলে মমতা, থাকে অভ্যাস, পুরানো চটিজুতোর আরাম-আর থাকে শরীর। কিন্তু শরীরও কত সহজে ক্লান্ত হয় বিমুখ হয়, কত সহজে অন্য সুখের স্বপ্ন দ্যাখে-যদি না কারো বোকা হ’য়ে জন্মাবার মতো সৌভাগ্য হয়, কিংবা চোখে থাকে এমন ঠুলি যাতে সামনের মানুষটিকে ছাড়া আর-কিছুই সে দেখতে পায় না, জয়ন্ত আমাকে যত কথা বলেছে, তারমধ্যে ‘ভালোবাসা’ কথাটা একবারও উচ্চারণ করেনি-আমি সেজন্য কৃতজ্ঞ তার কাছে...”

স্বামী নয়নাংশুর অভিমানও কাচের বাসনের মতো ঝনঝন শব্দে ভেঙ্গেছে,

“হায় ভালোবাসা। যেন তা মুখের কথার উপর নির্ভর করে-যেন তা চোখে ভেসে ওঠে না, ধরা পড়ে না গালের রঙে, হাতের নড়াচড়ায়, এমন কি পর্দা ঠেলে ঘরে ঢোকার ধরনে, নিচু হ’য়ে চা ঢেলে দেবার ভঙ্গিটুকুতে পর্যন্ত। তা আলোর মতো সহজ, রোদের মতো নির্ভুল-সেখানে কোনো তর্ক নেই, তা চিনে নিতে এক মুহূর্ত দেরি হয় না। এই কথাটাই আমি বলার চেষ্টা করেছিলাম মালতীকে অনেক কষ্টে, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে–তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালবাসো আমি কেন তা অনুভব করি না? কেন করো না তা আমি কী ক’রে বলবো! ব্যস, এর উপর আর কথা নেই। একটা দেয়াল, বোবা দেয়াল, মাথা ঠুকলে শুধু মাথা ঠোকার প্রতিধ্বনি বেরোবে।”


প্রতি দিনের জীবন পরিক্রমায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কতো অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যায়। এই ক্লান্তিকর নাগরিক ব্যস্ততায় নর-নারীর একান্ত চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্ব এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ব্যক্তিত্বের সংঘর্ষ, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, ব্যক্তিগত হতাশা কতকিছুই আসলে তার কারণ হতে পারে। কোনো জয়ন্ত এখানে একটি উপলক্ষ্য মাত্র। তাই বারে বারে মালতী আর নয়নাংশুর অংশ আমরা জানতে পাই, জয়ন্তের অনুভূতি নিয়ে কিন্তু একটি কথাও লিখেন নি লেখক। আমার চোখে দাম্পত্য জীবন নিয়ে মালতীর হতাশা বের করে আনতে জয়ন্তকে সামনে এনেছেন মাত্র লেখক। পতি পত্মী অউর বোহ বা থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বারেরা কারোর কাছে নিমিত্ত মাত্র, কারোর কাছে নিয়তিরাত্রি।


প্রসঙ্গত, কদিন আগে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড নোট’ পড়লাম। প্রথম অর্ধেকটা বেশ টেনে রেখেছিলো, শেষের দিকটা বিরক্তিকর ছিল। একই কথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এতো বার লেখা। অনেকটা জনপ্রিয় সিনেমা বানানোর জন্যে চিত্রনাট্যকাররা যেমন ‘স্পাইসি মশলা’ ঢোকান সেইরকম। আর এতো চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যে নোট লিখবে সে কখনো আত্মহত্যা করতে পারবে না। আত্মহত্যা করে মানুষ ঝোঁকের মাথায়, চিন্তা ভাবনা করে আত্মহত্যা করা আমার দৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভব। কিন্তু তারপরও একটা জিনিস আমার মনে হয়েছে, একজন স্বামীর কাছে উপেক্ষিত স্ত্রী, প্রেমিক বা বন্ধুর কাছে অবহেলিত হলে কী ধরনের অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যেতে পারে সেধরনের মানসিক অবস্থা চিত্রণে তিনি বেশ অনেকটাই সফল হয়েছেন। যেমন বুদ্ধদেব সফল হয়েছেন, উপেক্ষিত স্ত্রী মনের গুঞ্জরিত গোপন ভাবনাগুলো সামনে বের করে আনতে।


যাঁরা সবকিছু শুধু ন্যায়-অন্যায়ের পাল্লায় বিচার করেন না, যাঁরা জীবনের সাদা-কালোর বাইরের গ্রে পার্টটা অনুভব করেন তারা বইটা পড়তে পারেন। মানুষ যে শুধু আদর্শ বা শুধু অপরাধের রূপকথার চরিত্র নয়, রাক্ষসও হতে পারে শ্রেক আর রাজকুমারও হতে পারে ময়ূরবাহন, সেই বাস্তবতার ঘরোয়া স্বরূপ জানতে কিংবা হৃদয়ের পতনঅভ্যুদয়বন্ধুর পন্থার যুগযুগ সঞ্চিত যাত্রীদল যে-সামাজিক মানুষ, তার অন্তরের অন্দরমহলের ওঠাপড়ার কাহিনি জানতে চাইলেও এই বইটা একটা আবশ্যিক পাঠ্য হতে পারে। প্যাস্কেলের সেই কথাটাও বলে নিতে পারি, হৃদয়ের আছে যুক্তি, যা কেবল হৃদয়ই জানে।

তানবীরা
১৮/০১/২০১৫
Profile Image for Alvi Rahman Shovon.
467 reviews16 followers
April 6, 2023
সুন্দর ঝরঝরে লেখনী। সেই ষাটের দশকে লেখা বইখানা এখনো পড়লে মনে হয় কত্ত আধুনিক।
Profile Image for Sneha.
56 reviews96 followers
February 16, 2022
বইটা দুজন সুখী মানুষের অসুখী হওয়ার গল্প। বই এর প্রধান চরিত্র মালতী এবং নয়নাংশু।
ভালোবেসে বিয়ে, স্বপ্নের সংসার, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি, তারপর অভিমান জমে জমে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া এবং সবশেষে দূরত্ব বেড়ে গিয়ে অন্য কারো প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়া ।  সহজ গল্প।  আশেপাশে তাকালে প্রচুর এরকম ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা বাইরে থেকে দেখি  কেউ ভিতর টা দেখতে পারি না, এখানে বুদ্ধদেব বসু স্বামী স্ত্রীর দূরত্ব সৃষ্টির দিকটা তুলে ধরেছেন। এখানে মালতীর যুক্তিতে মালতী সঠিক এবং নয়নাংশুর যুক্তিতে নয়নাংশু সঠিক। দুজন ই দুজন কে ভালোবাসে  কিন্তু যে বন্ধনে তারা আবদ্ধ ছিল সেই অদৃশ্য বন্ধন টা ভেঙে গেছে, যার ফলস্বরূপ দুজনেই কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু মুখোমুখি বসে সব ঠিক ক���ে নিতে পারছে না।
দুজনেই দুজনের যুক্তিতে সঠিক হচ্ছে, দুজনেই কষ্ট পাচ্ছে, এবং দুজইনেই ভুল স্বীকার করে নিতে চাইছে,সব ঠিক করতে চাইছে৷ কিন্তু হচ্ছে না। মনে মনে গুছিয়ে ভাবতে পারছে কিন্তু বলার সময় সেটা অগোছালো হয়ে যাচ্ছে । ভালোবাসার জায়গায় তিক্ততা তৈরি হচ্ছে তবুও তারা একসাথে থেকে যাচ্ছে!
স্বামী স্ত্রীর ঝামেলায় যে গভীর তম বিষয় থাকে সেটা ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। যে ভাষাগুলো ব্যবহার করেছেন সেগুলো দরকার ছিল হয়তো! এটা কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল বুঝতে পারছি না!

একক ভাবে মালতী বা নয়নাংশু কোনো চরিত্রই ভালো লাগে নি, দুজনের কারো ভাবনার সাথে মত মেলে নি তবুও ওরা যেভাবে একে অপরের দোষ তুলে ধরেছে সেটাও অস্বীকার করতে পারছি না। এসবই লেখকের হাতের গুণ।

গল্পে হয়তো একটু বেশিই খোলামেলা লেখা হয়েছে, কিন্তু সেটা গল্পের সাথে মানিয়ে নেয়, কিংবা হয়তো নেয় না, কিছু যায় আসে না তাতে। লেখক যে বিষয়টা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন সেটা খুব সুন্দর সাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
Profile Image for Momin আহমেদ .
112 reviews49 followers
April 21, 2020
মাথা টা জ্যাম হয়ে আছে।অনেক শক্তিশালী লেখনী বই এর।কিন্তু বিষয়বস্তু............
মানুষের সম্পর্ক নিয়ে হয়তো মানুষ নিজেও নির্জন সময়ে এমন ই ভাবে।কিন্তু এগুলো শুধু অলস মনের ই চিন্তা।এর কোনো অর্থ হয় না।কোনো ফল হয় না।
মালতী আর জয়ন্তর সম্পর্ক ঠিক নাকি ঠিক না এই নিয়ে যুক্তি তর্ক করার কোনো মানে হয় না।সংসারে অসুখী মানুষের জীবনে হয়তো এমন ঘটনা অহরহ হচ্ছে কিন্তু একে যুক্তি দিয়ে কখনোই প্রতিষ্ঠিত করতে যাওয়া অসম্ভব।
Displaying 1 - 30 of 204 reviews

Join the discussion

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.