Jump to ratings and reviews
Rate this book

পালামৌ

Rate this book
ভ্রমণ-নেশার মায়ার খেলা যুগ যুগ ধরেই মানুষের ভেতরে বাস করে এসেছে। পালামৌ গল্পে লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এমনই এক মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়ার অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন। যদিও এই ভ্রমণকাহিনী যতটা না কাহিনী, তার চেয়ে মানবিক উপাখ্যানের গল্প হিসেবেই ধরা দিবে পাঠকের হৃদয়ে।

পালামৌ সর্বপ্রথম ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রমথনাথ বসু ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়। মোট ছয় কিস্তিতে প্রকাশিত এই লেখা পরবর্তীতে পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়।

38 pages, Hardcover

First published January 1, 1882

22 people are currently reading
370 people want to read

About the author

Sanjib Chandra Chattopadhyay

2 books6 followers
Sanjib Chandra Chattopadhyay (Bengali: সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) was a Bengali writer, poet and journalist. He was the elder brother of Bankim Chandra Chattopadhyay

Sanjib Chandra was born to an orthodox Brahmin family at Kanthalpara, North 24 Parganas. He was educated at Hooghly Mohsin College founded by famous Bengali philanthropist Muhammad Mohsin and Presidency College, Calcutta. He was one of the first graduates of the University of Calcutta.

Sanjib Chandra is widely regarded as a key figure in literary renaissance of Bengal as well as India. Some of his writings, including novels, essays and commentaries, were a breakaway from traditional verse-oriented Indian writings, and provided an inspiration for authors across India.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
104 (18%)
4 stars
246 (43%)
3 stars
160 (28%)
2 stars
36 (6%)
1 star
15 (2%)
Displaying 1 - 30 of 101 reviews
Profile Image for Md. Rahat  Khan.
96 reviews25 followers
March 20, 2021
বইটা নবম-দশম শ্রেনীর পাঠ্যসূচিতে কাট-ছাঁট করে দেওয়া ছিল। খুবই টেকনিক্যাল ওয়েতে কাঁট-ছাট করে দেওয়া ছিল বলতে হবে। রেসিস্ট অংশটুকু ফিল্টার করে বাদ দিয়েছে তারা। বঙ্কিমের মত তার বড় ভাই সঞ্জীবও বর্ণবাদী ছিলেন। আটত্রিশ পৃষ্ঠার পিচ্চি একটা বইতেও বর্ণবাদী মানসিকতা ঢেকে রাখতে পারলেন না!
‘বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’ এই বাক্যটা কে না জানে? ‘পালামৌ’ বইয়ের কুখ্যাত একটা লাইন। কিন্তু সঞ্জীবের এই বন্য হল এখানে কোল উপজাতি। তারা কালো, তাই কুৎসিত। বঙ্গের চা-বাগানে তাদের মানায় না, পালামৌয়ের জঙ্গলে মানায়। মুসলিম বিদ্বেষও পেয়েছি এক জায়গায়। জাতিবিদ্বেষ যত সূক্ষ্মই হোক আমি পারসোনালি মেনে নিতে পারি না। অবশ্য লেখনী চমৎকার। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, ছোট্ট এক আরণ্যক পড়ছি। আরণ্যকের উদাহরণ টানা হয়তো কারো কারো কাছে অযৌক্তিক মনে হতে পারে। কারণ আরণ্যক উপন্যাস। আর পালামৌ বিশুদ্ধ ভ্রমণকাহিনী, আসলে বাংলা সাহিত্যের প্রথম ভ্রমণকাহিনী। তবে আমার মনে হয় পালামৌ তার ছোট পরিসর নিয়েও আরণ্যকের মত বৃহৎ কিছু হতে পারত, যদি কলকাতার বাবু সঞ্জীবচন্দ্র পালামৌয়ের স্থানীয়দের সাথে নিজের দূরত্ব ঘোচাতে পারতেন।
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
October 15, 2021
অসাধারণ, অনবদ্য লেখনী ❤❤❤
সাধু ভাষায় লেখা, কিন্তু এইটুকুও মনোযোগ সরেনি।
কারণ লেখক বেশ savage একজন মানুষ 😂
উনার নিজেকে নিয়ে নিজের মজা করার ব্যাপারটা বেশ মজার ছিল। আরো অনেক মজার মজার কথা ছিল 😂

আর most importantly, উনি যেভাবে প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েছেন! আহা আহা আহা!
মনে হচ্ছিল প্রকৃতি দেখার চেয়ে পড়ে আনন্দ বেশি।
তার বর্ণনা থেকে বুঝা যায় লেখকরা প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ অন্যভাবে দেখে। তারা যেন প্রকৃতির সাথে কথা বলে, মনোভাব বিনিময় করে

সবমিলিয়ে বেশ রস মিসিয়ে, মজা মিশিয়ে তৈরী করেছেন এই লেখা। আর এই পিচ্ছি বইটা যে একটা masterpiece তা বলার অপেক্ষা রাখে না❤
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews772 followers
August 21, 2023
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এই ভদ্রলোক তাঁর কর্ম জীবনের স্মৃতি আর পাহাড় প্রীতি নিয়ে লিখেছেন পালামৌ। ক্ষীণকায় একখানা বইয়ের পরতে পরতে তিনি যেই বর্ণবিদ্বেষের চিত্র এঁকেছেন সে কথা আর কী বলব!

"এই অঞ্চলে প্রধানতঃ কোলের বাস। কোলেরা বন্য জাতি, খর্ব্বাকৃতি, কৃষ্ণবর্ণ; দেখিতে কুৎসিত কি রূপবান্‌, তাহা আমি মীমাংসা করিতে পারি না! যে সকল কোল কলিকাতা আইসে বা চা-বাগানে যায়, তাহাদের মধ্যে আমি কাহাকেও রূপবান্‌ দেখি নাই; বরং অতি কুৎসিত বলিয়া বোধ করিয়াছি। কিন্তু স্বদেশে কোল মাত্রেই রূপবান্‌, অন্তত আমার চক্ষে। বন্যেরা বনে সুন্দর; শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।"

"আবার পালামৌর কথা লিখিতে বসিয়াছি; কিন্তু ভাবিতেছি এবার কী লিখি? লিখিবার বিষয় এখন ত কিছুই মনে হয় না, অথচ কিছু না কিছু লিখিতে হইতেছে। বাঘের পরিচয় ত আর ভাল লাগে না; পাহাড় জঙ্গলের কথাও হইয়া গিয়াছে, তবে আর লিখিবার আছে কী? পাহাড়, জঙ্গল, বাঘ, এই লইয়াই পালামৌ। যে সকল ব্যক্তিরা তথায় বাস করে, তাহারা জঙ্গলী, কুৎসিত, কদাকার জানওয়ার, তাহাদের পরিচয় লেখা বৃথা।"

কোল ভারতের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। বর্তমান ভারতের বিহারের অন্তর্গত ছোটনাগপুর, সিংভূম, রাঁচি, মানভূম প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাসকারী কৃষিজীবী এই জনগোষ্ঠী আদিতে অরণ্যচারী ছিল। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা বয়ান বন্যেরা বনে সুন্দর; শিশুরা মাতৃক্রোড়ে ইশকুলের ক্লাসে শিক্ষনীয় ভাবসম্প্রসারণ হিসেবে পাঠ করেনি এমন বাংলা ভাষাভাষী একজনও পাওয়া যাবেনা। অথচ কে জানত এই বিখ্যাত উদ্ধৃতির আদি উৎস এই!

লেখকের সাধুভাষা স্বাদু ছিল। তবু তাঁর বর্ণবাদী চিত্রের বিবরণ পড়তে হয়েছে বলে এক তারার বেশি দিতে পারছি না।
Profile Image for Ayan Tarafder.
144 reviews17 followers
April 23, 2021
'পালামৌ' একটা ছোটখাট স্মৃতিচারণমূলক ভ্রমণ কাহিনী !

কিছু কিছু জায়গার লেখকের প্রকৃতির বর্ণনা এবং সেটাকে জীবনের নানান কোণ থেকে মিলিয়ে দেখাতে পারা - রীতিমতো দূর্দান্ত লেগেছে! যেমন, এক জায়গায় রুক্ষ মৃত্তিকাশূন্য পাথরের ফাঁকে বেড়ে উঠা অশ্বত্থগাছ দেখে উনি লিখেছেন, "তখন মনে হইয়াছিল, অশ্বত্থবৃক্ষ বড় রসিক, এই নীরস পাষাণ হইতেও রস গ্রহণ করিতেছে। কিছু কাল পরে আর একদিন এই অশ্বত্থগাছ আমার মনে পড়িয়াছিল, তখন ভাবিয়াছিলাম বৃক্ষটি বড় শোষক, ইহার নিকট নীরস পাষাণেরও নিস্তার নাই। এখন বোধহয় অশ্বত্থগাছটি আপন অবস্থানুরূপ কার্য্য করিতেছে; সকল বৃক্ষই যে বাঙ্গালার রসপূর্ণ কোমল ভূমিতে জন্মগ্রহণ করিয়া বিনা কষ্টে কাল যাপন করিবে, এমত সম্ভব নহে। যাহার ভাগ্যে কঠিন পাষাণ, পাষাণই তাহার অবলম্বন।"

তবে উনার লেখা পড়ে, মোটা দাগে ,মানুষ হিসেবে তরুণ বয়েসের সঞ্জীব চন্দ্রকে আমার পছন্দ হয় নি। তরুণ সঞ্জীবকে দাম্ভিক, নাকউঁচু বর্ণবাদী মনে হয়েছে। যেমন একজায়গায় তিনি লিখেছেন, "যে সকল কোল কলিকাতা আইসে বা চা-বাগানে যায়, তাহাদের মধ্যে আমি কাহাকেও রূপবান্‌ দেখি নাই; বরং অতি কুৎসিত বলিয়া বোধ করিয়াছি।"... পরে অবশ্য এই বলে সান্তনা দিয়েছেন যে 'কোল' নৃ-গোষ্ঠী র মানুষেরা বনে তাদের নিজেদের এলাকাতেই সুন্দর দেখায়... বন্যেরা বনে সুন্দর!! আবার আরেক জায়গায় লিখেছেন, "যে সকল ব্যক্তিরা তথায় বাস করে, তাহারা জঙ্গলী, কুৎসিত, কদাকার জানওয়ার, তাহাদের পরিচয় লেখা বৃথা।" কী অদ্ভুত মানসিকতা !!!
সাথে উনি আবার ঔপনিবেশিকদের পক্ষ নিয়েও সাফাই গেয়েছেন, " মৌরিনামক আদিম জাতি বলিষ্ঠ, বুদ্ধিমান্‌, কর্ম্মঠ বলিয়া পরিচিত, ... মৌরি দুর্ব্বল নহে ... তথাপি এ জাতি লোপ পায় কেন? তুমি বলিবে সাহেবদের অত্যাচারে? তাহা কদাচ নহে, ক্যানেডার অধিবাসী সম্বন্ধে সাহেবরা কতই যত্ন করিয়াছিলেন, কিছুতেই তাহাদের কুলক্ষয় রক্ষা করিতে পারেন নাই।" বোঝা যায় বৃটিশ সরকারের তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর, বিহারের পালামৌ তে ডেপুটি মেজিস্ট্র্যাট হিসাবে যোগ্য উত্তরসূরিকেই পাঠিয়েছিলেন। যদিও জানা যায়, কর্মজীবনে শেষ পর্যন্ত খুব একটা বনিবনা হয়নি উনার !!

তবে সবচে হৃদয়বিদারক ছিলো, একদিন এই ভদ্রলোক তাবুর ভেতরে 'সাহেবী ঢঙ্গে কুক্কুরী লইয়া ক্রীড়া' করবার সময় বাইরে থেকে একজন উনাকে “খাঁ সাহেব" বলে ডাকায় উনি অপমানিত বোধ করে কিছু না দেখেই “হারামজাদ্‌” “বদ্‌জাত” বলে তাড়িয়ে দেন। কারণ, "আমাকে “খাঁ সাহেব” বলিয়াছে, বরং “খাঁ বাহাদুর” বলিলে কতক সহ্য করিতে পারিতাম, ভাবিতাম, হয়তো লোকটা আমাকে মুছলমান বিবেচনা করিয়াছে, কিন্তু পদের অগৌরব করে নাই।" !!! ঘটনা এইখানে শেষ হলেও হয়ে যেত হয়তো , কিন্তু কিছুক্ষণ পর উনার তাবুতে এক বিপদ্গ্রস্থ বৃদ্ধ ও অল্প বয়স্কা মেয়ে এলে ডেপুটি মেজিস্ট্র্যাট সাহেব বললেন, "আমি অনিমেষ লোচনে সুন্দরী দেখিতে লাগিলাম; কেন আসিয়াছে, কোথায় বাড়ী, এ কথা তখন মনে আসিল না। আমি কেবল তাহার রূপ দেখিতে লাগিলাম"। কিন্তু যেই মুহূর্তে জানলেন এই বৃদ্ধই তাকে “খাঁ সাহেব" বলে ডেকেছিলেন সাথে সাথে চিৎকার করে তাড়িয়ে দিলেন কিছু না শুনেই। পরে জানা গিয়েছিলো ওই দুই হতভাগ্য, জংগলে তাদের সব সঙ্গী সাথী মারা যাওয়ায় এবং সব টাকা পয়সা সব শেষ হয়ে যাওয়ায়, দুইদিন না খাওয়া অবস্থায় খানিকটা সাহায্যের জন্য এসছিলো, আর উনি কিছু না শুনেই তাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন। দিনকয়েক পর সেই মেয়ের মারা যাবার খবর পাওয়া যায়।

তবে একটাই বলবার মত জায়গা, যে লেখক এখানে ভালো মানুষ সাজার চেস্টা করেননি। যা ঘটেছে তাই বর্ননা করেছেন এবং পরবর্তী জীবনে সে কৃত কর্মের জন্য অল্প বিস্তর অনুতাপের কথা জানিয়েছেন।

সাহিত্যরসিকদের মাঝে এই বইকে নিয়ে একধরনের মুগ্ধতার আঁচ টের পাওয়া যায় ,বলা হয়ে থাকে,এটা বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল ভ্রমণ কাহিনী। তবে প্রায় দেড়শো বছর আগের এই লেখা পড়তে গিয়ে অন্তত আমি সেই ঘোর লাগা মুগ্ধতা অনেক জায়গাতেই ধরে রাখতে পারি নি ।

লেখা শুরু করবার সময় তিন তারা দিয়ে শুরু করেছিলাম । লেখা শেষ করতে করতে বিরক্ত হয়ে এক তারায় ঠেকলাম !!
Profile Image for Utsob Roy.
Author 2 books77 followers
February 5, 2017
বইটি খানিকটা ভ্রমণকাহিনী, খানিকটা স্মৃতিচারণমূলক লেখা। সদ্য ঘটা ভ্রমণের না, অর্ধবিস্মৃত যৌবনের স্মৃতি বৃদ্ধবয়সের পরিণত চোখে আবার দেখে লেখা। এই বইয়ের সমালোচনা লেখার বড় সমস্যা হচ্ছে, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন একবার। মোটামুটি বইটার মান সম্পর্কে ভালো ধারণা তার সমালোচনাতেই পাওয়া যাবে।

আমি যা দেখছি তা হলো, ৪৩ পৃষ্ঠার একটি বই আমার জানাশোনার কয়েকটা জানলা একসাথে খুলে দিলো। বইটা পড়ার আগে বঙ্কিমচন্দ্রের কোনো বড় ভাইয়ের অস্তিত্বই ছিল না আমার কাছে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত লেখার ধরণে তিনি বঙ্কিমের চেয়ে অনেক স্বচ্ছল, রসবোধ এবং কবিত্বেও কমতি নেই। বইটা থেকে বেশকিছু জায়গা হয়ত উদ্ধৃতি দেওয়া যেত তবে তার মেধা ও প্রজ্ঞা এবং তার সাথে লেখার স্বচ্ছলতা বোঝাতে নীচে একটু উদ্ধৃতি দিলাম। এখানে 'পট'-কে আমরা দৃশ্যকল্প বলতে পারি-

"কোন পটের বন্ধনী কী, তাহা নির্ণয় করা অতি কঠিন; যিনি তাহা করিতে পারেন, তিনিই কবি। তিনিই কেবল একটি কথা বলিয়া পটের সকল অংশ দেখাইতে পারেন, রূপ গন্ধ স্পর্শ সকল অনুভব করাইতে পারেন। অন্য সকলে অক্ষম, তাহারা শত কথা বলিয়াও পটের শতাংশ দেখাইতে পারে না।"
Profile Image for Mosharraf Hossain.
Author 3 books57 followers
January 15, 2015
খুবই ছোট্ট একটা বই, বাংলা সাহিত্যের প্রথম ভ্রমন কাহিনী হিসেবে স্বীকৃত হলেও একে কিছুটা ভ্রমন আর কিছুটা আত্মজৈবনিক স্মৃতিচারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। নিয়মিত কাহিনীর গতিপথ পরিবর্তন হলেও সুপাঠ্য।

খাপছাড়া ভাবে শেষ হয়ে যাবার কারণে তিন তারা দিতে চেয়েছিলাম, তবে সবুজ প্রকৃতির কিছু বর্ণনা আর শেষ বয়সে এসে যুবাকালের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লেখক তার লেখার মধ্যে যে সজীবতা ধরে রাখতে পেরেছেন সেজন্য চার তারা।
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
373 reviews274 followers
January 29, 2015
ভ্রমণ কাহিনী বা স্মৃতিচারণ যাই বলি, ছোট্ট একটি বই যার মুল অংশ ২৪ পৃষ্ঠা তার সম্পর্ক বড়সড় একটা রিভিউ লিখে বসার মানে হয় না। শুধু দুটো শব্দ বলবো 'সবুজ' ও 'সুন্দর'। তাই তিনতারা। আর বাংলা সাহিত্যে এই বইটির অবদান সাপেক্ষে আরো একটি তারা...
Profile Image for Ahmed Aziz.
381 reviews70 followers
December 1, 2023
পাহাড়ের আর জঙ্গলের রাজত্ব পালামৌ এর কোল আদিবাসী এলাকায় লেখকের কাটানো সময়ের অদ্ভুত সুন্দর স্মৃতিকথা। কোল নারীদের কঠোর পরিশ্রমে গড়া অসাধারণ দেহসৌষ্ঠব, বাঁধনছেঁড়া হাসি, চাঁদের আলোয় দল বেঁধে দেহে কোলাহল তুলে মাতাল করা নাচ, বাঘ শিকার, কোল যুবতীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার পাতানো নিয়মে আসুরিক বিবাহ, তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে মহাপিশাচ মহাজনের শোষণ সব মিলিয়ে দুর্দান্ত সব স্মৃতিচারণ। ইংরেজদের প্রতি অন্ধভক্তি আর মাঝেমধ্যে সাধারণ মানুষের প্রতি চরম বর্ণবিদ্বেষী কিছু দৃষ্টিভঙ্গির জন্য দুই তারা কম দিলাম।
Profile Image for তানজুম ফেরদৌস.
56 reviews5 followers
Read
July 4, 2025
"মানুষের হৃদয় বড়ই অদ্ভুত – একদিকে সে সভ্যতার আরামে নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে চায়, আবার একা হয়ে গেলে জঙ্গলের নিস্তব্ধতা খুঁজে ফেরে।"
Profile Image for Munem Shahriar Borno.
202 reviews12 followers
February 4, 2024
যতটা না ভ্রমণ কাহিনী, তার থেকে বেশি সমাজ চেতনা আর জীবনবোধে ভরপুর এ বই। বছরান্তে আমিও ঘুরতে যাই; সমুদ্র-পাহাড় আমারো পছন্দ। আই উইশ, আমি সঞ্জীব বাবুর মত করে দেখতে পারতাম, আমার ভাষাতেও এতো রস থাকতো আর আমি ওনার মত আত্মসমালোচক হতে পারতাম!

".......কোলের সমাজ এক্ষণে যে অবস্থায় আছে, তাহাতে সেখানে মহাজনের আবশ্যক নাই, যদি হিন্দুস্থানী সভ্যতা তথায় প্রবিষ্ট না হইত, তাহা হইলে অদ্যাপি কোলের মধ্যে ঋণের প্রথা উৎপত্তি হইত না। ঋণের সময় হয় নাই। ঋণ উন্নত সমাজের সৃষ্টি.......সমাজের স্বভাবতঃ যে অবস্থা হয় নাই, কৃত্রিম উপায়ে সে অবস্থা ঘটাইতে গেলে, অথবা সভ্য দেশের নিয়মাদি অসময়ে অসভ্য দেশে প্রবিষ্ট করাইতে গেলে, ফল ভাল হয় না......."

কি নির্মোহ সত্য অনায়াসে বলে ফেললেন! আপনাতে মুগ্ধ না হইয়া উপায় নাই।
Profile Image for Afifah Mim.
38 reviews52 followers
September 22, 2023
অতীব সুন্দর ভাষ্যে প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনা; - সাথে: খানিক বর্ণবিদ্বেষ, জাতবিদ্বেষ...
==> সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের সুযোগ্য ভাইই বটে। :)

+

"বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"- অতোসুন্দর বাক্যটার মূল উৎসের কনটেক্সট দেখে- এখনো কিছুটা হতভম্ব আছি। -_-

>

(পারসোনালি, এইসব মেধাবীদেরও "নিজ সময়েরই সন্তান" হিসেবে মেনে নিতে কিছুটা কষ্টই হয়। এনারা তাদের সময়ের উর্ধ্বে উঠতে পারলে কতোটা ভালোই না হইতে পারত! --- অবশ্য, আমার এইসব জাজমেন্টাল ভাবনাগুলো কমাইতে হবে।)
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Abhishek Saha Joy.
191 reviews56 followers
July 9, 2020
'পালামৌ'কে বলা হয়ে থাকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমনকাহিনী।কিন্তু আসলেই কি এটা ভ্রমনকাহিনী?আমার কাছে তেমন মনে হয় নাই।'বন্যেরা বনে সুন্দর,শিশুরা মাতৃক্রোড়ে' - এই উক্তিটি লেখকের সেটা ছাড়া আর তেমন কিছুই জানার নাই।
Profile Image for Akash.
446 reviews148 followers
October 11, 2022
ছোটবেলায় যখন 'পালামৌ' পড়েছিলাম তখন কিছুই বুঝি নাই। আজ যখন ১০ বছর আবার পড়লাম তখন প্রতিটি লাইন অনুভব করলাম পঞ্চন্দ্রীয় দিয়ে। অসাধারণ ছিল 'পালামৌ' এর সাথে আমার দ্বিতীয় ভ্রমণ। প্রতি দশ বছর অন্তর অন্তর 'পালামৌ' এর সাথে ভ্রমণ করব।

বই থেকে আমার ভাল লাগা ভালোবাসার এক টুকরো অংশ হুবুহু তুলে দিলাম,

"অদ্য যাহা ভাল লাগিতেছে না, দশ বৎসর পরে তাহার স্মৃতি ভাল লাগিবে। অদ্য যাহা সুখ বলিয়া স্বীকার করিলাম না, কল্য আর তাহা জুটিবে না। যুবার যাহা অগ্রাহ্য, বৃদ্ধের তাহা দুষ্প্রাপ্য। দশ বৎসর পূর্বে যাহা আপনিই আসিয়া জুটিয়াছিল, তখন হয়ত আদর পায় নাই, এখন আর তাহা জুটে না, সেই জন্য তাহার স্মৃতিই সুখদ।"

আহা! কী ভয়ঙ্কর সুন্দর কথা!!! শৈশব মনে পড়ে।
Profile Image for Rumana Nasrin.
159 reviews7 followers
July 27, 2016
পড়তে গিয়ে এতো হোঁচট না খেলে ৪ তারকা দিতাম। ভ্রমণ কাহিনী আমার সব সময়ই প্রিয়। :)
Profile Image for Chandreyee Momo.
219 reviews30 followers
November 21, 2021
বহু আগে পাঠ্যবইয়ে পড়েছিলাম সংকলিত অংশটা। এবার পুরো বইটা পড়ে আরো অনেক বেশি ভাল লাগলো। আঠারো শতকের একজন লেখকের এক ছোট্ট ভ্রমণকাহিনী। কিন্তু এখনো কতটা সমাদৃত। তার প্রমাণ পেলাম।
Profile Image for শোয়েব হোসেন.
193 reviews13 followers
December 16, 2022
এই বইটা যে বাংলা সাহিত্যের প্রথম ভ্রমণ কাহিনি এবং সঞ্জিব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সাহেব যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অগ্রজ সেটা না জেনেই বইটা তুলে নিয়েছিলাম। উনিশ শতকের শেষ দিকে লেখা বই হিসেবে লিখনশৈলী অসম্ভব সাবলীল। বঙ্কিমের চেয়ে বেশি তো অবশ্যই।
রবীন্দ্রনাথের ভাষ্যমতে লেখকের লেখায় 'গৃহিনীপনা'-এর অভাব রয়েছে। অর্থাৎ তিনি প্রায়ই প্রসঙ্গান্তরে চলে যান। আমার কাছে বরং এই জিনিসটাই বেশি ভালো লেগেছে। যখন এক প্রসঙ্গের মাঝে অন্যকথার অবতারণা করেছেন তখনই তার রসবোধের পরিচয় মিলেছে।
কিছু জায়গায় সূক্ষ্ম রেসিজম, সেক্সিজমের আভাস মিলেছে, যার কারণে পাঁচ তারকা দেয়া গেলো না।
Profile Image for Nayeem Samdanee.
58 reviews14 followers
June 19, 2020
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণকাহিনী, কাজেই পড়তেই হয়। আকারে একেবারেই ছোটো, এক বসায় পড়ে ফেলা যায়। ভ্রমণের বর্ণনাগুলোর চেয়ে অবশ্য জীবন ও পরিপার্শ্ব বিষয়ে লেখকের সুগভীর বক্তব্য আমার কাছে বেশি উপভোগ্য মনে হয়েছে। লেখায় গাম্ভীর্যপূর্ণ রম্যভাব আছে, লেখকের ঝকঝকে বুদ্ধিমত্তার আভাস পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় বক্তব্য শুরু করেও সেগুলো দীর্ঘায়িত না করেই হঠাৎ প্রসঙ্গান্তরে চলে গেছেন—সম্পূর্ণ হলে হয়তো আরো ভালো লাগতো।
Profile Image for Koushik Ahammed.
150 reviews12 followers
October 22, 2020
হুদাই এতোটা আগ্রহ নিয়ে পড়তে নিয়েছিলাম।

সহজেই ফালতু বলে বাতিল করে দেওয়া যায় এই বই।
Profile Image for Afra Anan Anan Saba.
117 reviews25 followers
May 8, 2021
সামান্য বর্ণবাদী-ধর্মবাদী স্মৃতিচারণমূলক ভ্রমণকাহিনী।
Profile Image for Mohibullah Khan.
19 reviews1 follower
August 20, 2024
ঝরঝরে লেখনী, বিশেষত অডিওবুক শোনাতে মনে হচ্ছিলো সঞ্জীব বাবু নিজে সামনে বসেই ভ্রমণের গল্প শোনাচ্ছেন। বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণকাহিনি একে বলাই যায়। ভীষণ ভালো লেগেছে এই লাইনগুলো -

অদ্য যাহা ভাল লাগিতেছে না, দশ বৎসর পরে তাহার স্মৃতি ভাল লাগিবে। অদ্য যাহা সুখ বলিয়া স্বীকার করিলাম না, কল্য আর তাহা জুটিবে না। যুবার যাহা অগ্রাহ্য, বৃদ্ধের তাহা দুষ্প্রাপ্য। দশ বৎসর পূর্ব্বে যাহা আপনিই আসিয়া জুটিয়াছিল, তখন হয়তো আদর পায় নাই, এখন আর তাহা জুটে না, সেই জন্য তাহার স্মৃতিই সুখদ।
Profile Image for Tamanna Binte Rahman.
184 reviews140 followers
October 17, 2021
ভ্রমনকাহিনী নিয়ে বর্ণিত এই বই নিয়ে তাবৎ সাহিত্যপ্রেমিদের মাতামাতির কার্যকারণের কোন ব্যখ্যাই খুঁজে পেলাম না। হতে পারে যেসময়ে লেখা হয়েছে তার আগে কেউই আর এমন ভ্রমনকাহিনী লেখেননি। এই বই নিয়ে মুগ্ধতা আরো অনেক লেখকের লেখায় পড়েছি তাই পড়বার আগ্রহ ছিল খুব।
ভাই বঙ্কিমের মতন সঞ্জিবও বর্ণবাদী, উন্মাষিক মানসিকতার উর্ধ্বে উঠতে পারেননি। ছোট্ট লেখার পরতে পরতে তাই বর্ণবাদী বর্ণনা। সে লেখা যত মধুরই হোক, যত কাব্যিকই হোক, যত ঘোরলাগাই হোক হৃদয়কে টানলোনা একেবারেই। এর সাথে কোনভাবেই আরণ্যকের তুলনা চলেনা।
তাই ১ তারা দিয়ে ক্ষান্ত হলাম।
Profile Image for K. R. B. Moum .
209 reviews17 followers
October 14, 2017
মুক্তচিন্তা বা বাকস্বাধীনতার প্রসঙ্গ তখনই আসে যখন নির্দিষ্ট কোনো ভাব প্রকাশে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। তাই যখনই আমরা চিন্তার মুক্তির কথা বলি, আমরা আমাদের উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত থাকি না।

কিন্তু সময় ভিন্ন রকম ছিল কখনো। এ বইয়ের লেখক তাঁর সমসাময়িক চিন্তাধারার প্রতি ন্যায্যতা দেখিয়েছেন, এটুকু বুঝেছি।
Profile Image for Rizal Kabir.
Author 2 books45 followers
June 24, 2020
নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা ধারণ করলেও বাংলা সাহিত্যে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ঠিক জ্বলে উঠতে পারেন নি কখনোই। নিজের রাজ্যে খামখেয়ালি সম্রাট ছিলেন বলা যায়, দুয়েকটি চমক দেখিয়েছেন কেবল।

পালামৌ এক বসায় পড়ে ফেলার মত বই। এটি ঠিক ভ্রমণকাহিনী না জীবনকাহিনী তা নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে দুটোর একটি হিসেবেও ঠিক পূর্ণতা পায়নি পালামৌ। এটিকে কিছুটা সংকর বলা চলে, তবে সে তাত্ত্বিক আলোচনায় না যাই।
বাংলা সাহিত্যের দিকপাল বঙ্কিমের অগ্রজ হলেও, দুজনের লেখায় ভিন্নতা অনেক। সাধুভাষায় লিখিত এই বই মাধুর্য এবং মোহনীয়তার দিক থেকে সঞ্জীবচন্দ্রকে নিয়ে গেছে অসামান্য উচ্চতায়। এমনকি ছোটবেলা থেকে পড়ে আসা ভাব সম্প্রসারণের সেই বিখ্যাত লাইনঃ "বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"– এটির উৎসও সঞ্জীবচন্দ্রের পালামৌ।

বইয়ের কলেবর অতি ক্ষুদ্র, তবে এর মাঝেই লেখক নিজের মুন্সিয়ানা ঠিকই দেখিয়েছেন। তীক্ষ্ণ রসবোধ এবং নিগূঢ় পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার প্রকাশ পেয়েছে স্থানে স্থানে। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে পালামৌ একটি জেলা। তবে লেখক যে সময়ের কথা বলেছেনঃ ঐ সময়ে এটি মূলত একটি পরগণা ছিল। কোথাও পাহাড় কিংবা পাহাড়ঘেরা তৃণভূমি, কোথাও অরণ্য – এর মাঝেই রয়েছে স্থানীয় অধিবাসীদের বসতি। প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাত্ম হয়ে বাস করে কোল উপজাতি। তীব্র এক মমত্ববোধ সহকারে নৃতাত্ত্বিক এই গোষ্ঠীর কথা বর্ণিত হয়েছে বইয়ে। সরল জীবনযাত্রা, উপজাতীয় বৈবাহিক রীতি, আদিবাসী নৃত্যের বেশ মনোমুগ্ধকর বিবরণের পাশাপাশি উঠে এসেছে প্রভাবশালী হিন্দু জমিদার কর্তৃক তাদের নিত্যনৈমিত্তিক বঞ্চনার ঘটনাও। রবীন্দ্রনাথ ঠিকই ধরেছিলেন, সর্বত্র ভালবাসিবার ও ভালো লাগিবার একটা ক্ষমতা দেখাইয়াছেন লেখক।

টুকরো স্মৃতির গাঁথুনী কিংবা ঘটনার গভীরতা এই বইয়ের বিশেষত্ব নয়, বরং এই বইয়ের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ছন্দময় ও প্রাণবন্ত উপস্থাপন। এত সাবলীলভাবে পালামৌ-এর প্রকৃতিকে জীবন্ত করেছেন লেখক, যে একে মনুষ্য অস্তিত্বের অংশ বলেই মনে হয়েছেঃ
হঠাৎ একটি লতার প্রতি দৃষ্টি পড়িল; তাহার একটি ডালে অনেক দিনের পর চারি পাঁচটি ফুল ফুটিয়াছিল। লতা আহলাদে তাহা আর গোপন করিতে পারে নাই, যেন কাহারে দেখাইবার জন্য ডালটি বাড়াইয়া দিয়াছিল।

কিংবা কখনো তার সাথে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বাসঘাতক প্রজাতিকে তিরস্কার করতেও ছাড়েন নি -

আমায় দেখিয়া পক্ষী উড়িল না, মাথা হেলাইয়া আমার দেখিতে লাগিল। ভাবিলাম, "জঙ্গলী পাখি হয়ত কখন মানুষ দেখে নাই, দেখিলে বিশ্বাসঘাতক চিনিত।" চিনাইবার নিমিত্ত আমি হাসিয়া বন্দুক তুলিলাম; তবু পক্ষী উড়িল না, বুক পাতিয়া আমার মুখপ্রতি চাহিয়া রহিল। আমি অপ্রতিভ হইলাম, তখন ধীরে ধীরে বন্দুক নামাইয়া অনিমিষলোচনে পক্ষীকে দেখিতে লাগিলাম; তাহার কি আশ্চর্য্য রূপ!

খুব পরোক্ষভাবে কলোনীয়াল সমাজব্যবস্থার কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে বইয়ে। সেই সাথে নিজের প্রচ্ছন্ন অহমিকার ছাপও দেখিয়েছেন লেখক। কয়েক জায়গায় পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, সরাসরি পাঠকের সাথে যেন এক ধরণের কথোপকথন চলছে। লেখক মাত্রই পাঠককে গল্প বলেন, কিন্তু সঞ্জীবের প্রকাশভঙ্গি অনেকটাই দৃঢ় এবং জমকালো।

সঞ্জীবের সাহিত্যজীবন আরেকটু বিস্তৃত হতে পারতো – হয় নি তার কারণ বোধ হয় লেখক নিজেই। স্বয়ং বঙ্কিম তার অগ্রজকে নিয়ে বলেছেন, "ওঁর প্রতিভার এক অংশ উজ্জ্বল, অপরাংশ ম্লান, কখন ভষ্মাচ্ছন্ন, কখন প্রদীপ্ত।”
অনুভূতির ছন্দপতনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন নি লেখক, আপন সূরের স্বাধীনতা দিয়েছেন মনকে। এজন্যই বোধ হয় প্রচুর সম্ভাবনাময় এই লেখার ইতি টেনেছেন বেশিদূর না গিয়েই। স্থানিক বিবরণের সাথে উপমহাদেশীয় জীবনযাত্রাকে সুন্দরভাবে জারিত করেও পাঠক-তৃপ্তির আগেই স্বেচ্ছায় যতি টেনেছেন।
বন্য জীবনের সাথে তথাকথিত স্বচ্ছন্দ জীবনের তুলনা করে মাঝের দিকে লেখকের একটা কথা খুব ভাল লেগেছেঃ
পেনাল কোড যত ভাল হয়, সাহস তত অন্তর্হিত হয়।

পালামৌ-কে ভ্রমণকাহিনী না বলে লেখক তার বুড়ো বয়সের স্মৃতিচারণ বলেছেন নিজে, তবুও একেই বাংলা সাহিত্যের একদম প্রথমদিকের ট্রাভেলগ বলেই মনে করা হয়। তবে এটি সত্য যে, পাঠকসমাজকে সঞ্জীবসুধা-বঞ্চিত করার দায় আমি লেখকের ওপরই চাপাবো কমবেশি।

কে জানে, তিনি হয়তো এমনটিই চেয়েছিলেন।
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
April 16, 2023
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর "পালামৌ" একটি ভ্রমণ কাহিনি।
নতুন বয়সে লেখক একবার বেড়াতে যান পালামৌ এ।
সকলের অনুরোধের পরেও লেখক সেই ভ্রমণ কাহিনীটা লেখেন নি।
বহুদিন পর শেষ বয়সে এসে লেখক সেই ভ্রমণের কাহিনীটা লিখে ফেলেন "পালামৌ" এ।

পালামৌ কোন বড় শহর নয়, এটা একটা পরগনা। তবে তা বন আর পাহাড়ে ঘেরা। বন বলতে শাল তমালের বন নয়। শাল গাছ থাকলেও অন্য বড় কোন গাছ নাই সেই বনে। পুরো বনে আছে লতা আর পল্লবে ঘেরা।
তবে মৌয়া গাছের বিস্তর সমাহার সেখানে। তাছাড়া বাঘও দেখা যায় সে জঙ্গলে।

পাহাড় দিয়ে ঘেরা থাকলেও পাহাড়ের পাদদেশে আছে জনবসতি। তবে সেখানে বাস করে কোলেরা। কোল বন্যজাতি, দেখতে খাটো ও কালো।
সব মিলিয়ে ত্রিশ বত্রিশটি ঘর বাস করে।
কোল পুরুষেরা ঘরে বসে সন্তান পালন করে আর মেয়েরা বাইরে কাজ করে।

এছাড়াও গহীন পাহাড়ে বাস করে অসুরেরা। এরাও বন্য জাতি।
তবে এরা লোকালয় বা মানুষ দেখলে দূরে পালিয়ে যায়।

লেখক পালামৌ ঘুরে দেখেছেন পাহাড়ের সৌন্দর্য, বন আর প্রকৃতি।
এছাড়া দেখেছেন
পাহাড়ের পাদদেশে বসে শেষ বিকেলে পৃথিবীর রং ফেরা। যা পাহাড়ে বসেই দেখা যায়। এই টানেই প্রতি বিকালে লেখক ছুটে গেছেন পাহাড়ে। দেখেছেন পৃথিবীকে আর জেনেছেন নিজের মনকে। নির্জন স্থানে গেলেই নিজের মনকে পাওয়া যায়।

এছাড়াও জেনেছেন বন্য জাতির আচরণ ও রীতিনীতি। দেখেছেন পাহাড়ি ফুল ও পাখি।

"পালামৌ" লেখকের পালামৌ এ কাটানো দিনগুলোর কাহিনী। যেখানে তিনি তুলে এনেছেন সকল কাহিনী যা তিনি দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন।

"পালামৌ" লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর আমার পড়া প্রথম বই। বইটা সাধুভাষায় লেখা।
ভ্রমণ কাহিনি আসলে এমনটাই হতে হয়।

ছোট থেকে অনেক বার পড়ে ও মুখস্থ করে এসেছি---

" বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"

অথচ আজই এই বইটা পড়ে জানতে পারলাম এটা লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর লেখা এবং তা "পালামৌ" বইয়ে।

এমন অনেক সুন্দর সুন্দর কথা লিখে গেছেন এই ছোট্ট সুন্দর বইটাতে
Profile Image for Ahmed Atif Abrar.
719 reviews12 followers
July 4, 2019
নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে কেটেকুটে গল্পটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। আমি স্থির করেছি: যা পাঠ্যপুস্তকে পড়ছি, সেটার সম্পূর্ণটা যাতে পড়ে নিতে পারি। পালামৌ পাঠ সে প্রকল্পেরই আওতাধীন।

বাঙালি বাবুরাও যে পদের স্বার্থে ইংরেজ বাবুর মতো আচরণ করেছেন, সেটা প্রস্ফুটিত হয়েছে এখানে‌। বিষয়টা যে হাস্যকর, তা স্বয়ং সঞ্জীবচন্দ্রই স্বীকার করেছেন।
তাছাড়া ভ্রমণকাহিনিটা মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন লাগলেও একটা অচেনা রাজ্যের চমৎকার বিবরণ মুগ্ধ করেছে আমাকে–যে আমি ভ্রমণকাহিনি হতে দূরেই থাকতে চাই! মানুষের মনের সূক্ষ্ম খেলা সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার বেশ মনোযোগ ছিল বোঝা গেল। তাছাড়া রূপ সম্পর্কে এক নতুন তত্ত্ব দিলেন লেখক। সহজাত তো অবশ্যই!
Profile Image for Zauad Mahmud.
37 reviews7 followers
July 6, 2025
যেহেতু বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ উপন্যাস হিসেবে পালামৌকে ধরা হয় তাই বেশি একটা সমালোচনার যাওয়া সমীচীন বোধ করি না। তবে আমার কাছে সার্থক বলে মনে হলো না। অপূর্ণ লাগলো কিছুটা, অবতারণা বেশি। ভ্রমণকাহিনী হিসেবে বলার চেয়েও সান্ধ্যকালীন আড্ডা বলা যেতে পারে। পরিধি অল্প হওয়াতে বিরক্তির উদ্রেক ঘটার আগেই পড়া শেষ হয়ে গেলো।
Profile Image for Arif Hossain.
43 reviews2 followers
April 25, 2021
বঙ্কিম এর "আনন্দমঠ" পড়ার পর যে অল্প-স্বল্প ক্রোধ জন্মেছিলো তা আরো পূর্ণতা পেল তার বড় ভাইয়ের "পালামৌ" পড়ে। "কোল" জাতি আর লেখকের কিছু ব্যক্তিগত দর্শন ভালো লেগেছে।
এক কথায় বলা যায়, লেখনী সুন্দর কিন্তু মিশে আছে অলসতা।
Profile Image for Masud Khan.
87 reviews17 followers
December 30, 2020
ভাল লেগেছে। মনে হলো আরণ্যকের ছোট ভার্শন পড়লাম। সাধু ভাষায় লিখিত, ওই আমলে চলতি ভাষার প্রচলন ঘটে নাই।
Profile Image for Arif  Raihan Opu.
212 reviews7 followers
July 1, 2021
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল ভ্রমণ কাহিনী বলা হয় পালামৌ। লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর লেখনিতে পালামৌ এর বর্ননা উঠেছে। তিনি চাকরিসূত্রে পালামৌ থাকা অবস্থায় সেখানের মাটির গল্প ও আদিবাসীদের গল্প তুলে ধরেছেন তারা পালামৌ গ্রন্থে।
.
পালামৌ এর ব��্ননা যখন তিনি প্রথম পেয়েছিলেন তখন ভেবেছিলেন এটি দারুণ একটি শহর। কিন্তু রাচি থেকে যখন পালকি বাহকদের সাথে পালামৌ পৌছুলেন দেখলেন যে শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল। সেখানে থাকে কোল নামের এক জাতি। তারা বেটে খাটো ও কৃষ্ণাভ। এর এখান থেকে এসেছে, "বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।
.
কোল জাতি সম্পর্কে যদি বলা হয় তবে তাদের সংসারে নারীরাই প্রধান। তারাই সংসারের চালিয়ে থাকে৷ সেখানে পুরুষরা কিছুটা অলসও তাই তারা বয়সেএ ভারে নুয়ে পরে, কিন্তু নারীরা থাকে যৌবনের প্রতিমূর্তি।
.
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যখন পালামৌ লেখা শুরু করেন তখন তিনি বলে দিয়েছিলেন যে এটা সাধু ভাষায় লেখা। আর এটা যে যুবকদের ভাল লাগবে তাও নয়। যদিও লেখার মধ্যে কাঠিন্য রয়েছে তবে সাহিত্যের সাথে এর দাত কষাকষি নেই। কিন্তু লেখকের সমালোচনা করা আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে কঠিন। কারণ রবি ঠাকুর ওনার প্রশংসায় বলেছেন যে, "তিনি যতটা কাজ দেখাইয়াছেন তাহার সাধ্য তদপেক্ষা অধিক ছিল......সঞ্জীবের প্রতিভা ধনী, কিন্তু গৃহিনী নহে"।
.
লেখক যখন পালামৌ এর বর্ননা দিয়েছেন তখন তার ভেতর প্রকৃতি নিয়ে এক আলাদা অনুভূতি কাজ করেছিল। এই যেমন পাথরের ফাকে অশ্বথ বৃক্ষের থাকা, নিরস জায়গাতেও রস খুজে পাওয়া। এছাড়া জাতির উৎসব, সামাজিকতা, জীবনধারা স্বল্প পরিসরে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন৷
.
অপর দিকে পালামৌতে গিয়ে লেখক পাহাড়ের প্রেম পরেছেন। সেদিক থেকে বলা যায় আমি পাঠক হিসেব বললেও আমি নিজেও পাহাড় অনেক ভালবাসি।
.
লেখকের একটি লেখা থেকে দেখা যায় যে তিনি প্রকৃতির সাথে নিজের ও সবার যে সম্পর্ক রয়েছে তা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেছেন, " বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"- এটার বিশ্লেষণে যাব না। তবে এটা আমরা সবাই মোটামুটি জানি। সবার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। সবার জন্য নির্দিষ্ট পরিবেশ রয়েছে। তারা বাইরে সে ঠিক বেমানান। কেউ যখন ঠিক সেই পরিবেশ বা গন্ডির বাইরে চলে যায় তখন তারা প্রভাব পরিলক্ষিত হয় সব জায়গাতে।
.
"পালামৌ" নিয়ে বলতে গেলে আরও অনেক কিছু বলা হয়ে যাবে। তার চেয়ে এখানেই শেষ করি। শুধু শেষ করার আগে বলি, লেখক তারা লেখা বা কর্মস্থলে কোথাও আপোষ করেননি। তার সাথে কর্মচারী কর্মকর্তাদের মতের মিল হয়নি কখনো। তাই তো ভ্রমনের শেষ দিকে লিখেছেন, "আমাদের দেশি মদ একবার বিলাতে পাঠাইতে পারিলে জন্ম সার্থক হয়, অনেক অন্তর জালা নিবারণ হয়।"
Profile Image for Farhana Sufi.
495 reviews
September 8, 2016
যে সময়ে বাঙালী সেভাবে ভ্রমণ করতো না, সে সময়ে লেখা ভ্রমণ-কাহিনী পড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সাধু ভাষা পড়তে অনভ্যস্থতা আছে, তবে পড়তে গিয়ে একটা জিনিস বারবার মনে হলো তা হলো, সাধু চলিতের মিশ্রণকে যে গুরুচণ্ডালী দোষে দুষ্ট বলা হতো, আজকের বাংলা-ইংলিশ মিশ্রণ, বিশেষ করে বাংলিশ লেখার চল এ যুগের গুরুচণ্ডালী ধরা হবে না কেন? আরেকটা জিনিস উপলব্ধী করলাম, বাংলায় যে খুবই ভিন্ন ভিন্ন বানান ও উচ্চারণের অনেক সমার্থক শব্দ আছে সেগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। ভাষা সহজ ও উন্মুক্ত হবার পাশাপাশি যেন বাংলা ভাষার বৈচিত্র richness সেটা কমছে।

দুই একটা বিষয়ে লেখকের চিন্তাভাবনা বিজ্ঞানসম্মত মনে হয়নি, মুচকি হেসেছি। আমেরিকান রেড-ইন্ডিয়ানদের অনেক গোষ্ঠী বা অস্ট্রেলিয়ান মাওরি জাতির বিলোপের পেছনে ইউরোপীয় অভিবাসন সরাসরিই যুক্ত বলে এখন মনে করা হয়। কিন্তু লেখকের খুব সহজ করে সরলভাবে কোল জাতির নারী-পুরুষ, আর্থ-সামাজিক বর্ণনা অনেক ভালো লেগেছে, প্রকৃতির কথাও। পাহাড় নিয়ে বাঙালীর ভ্রান্তি পড়ে মজা পেয়েছি। খুব সাধারণ করে লেখা বাঙালী বধূর বর্ণনাও।
Displaying 1 - 30 of 101 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.