Jump to ratings and reviews
Rate this book

অবিশ্বাসের দর্শন

Rate this book
তৃতীয় সংস্করণের ভূমিকা

সিলেট থেকে প্রকাশিত ‘যুক্তি’ পত্রিকার সম্পাদক অনন্ত বিজয় দাশ ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটি সম্পর্কে ফ্ল্যাপে লিখেছিলেন, ‘আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বশেষ তত্ত্ব-তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে লেখা অবিশ্বাসের দর্শন বইটি বাংলাভাষী ঈশ্বরবিশ্বাসী থেকে শুরু করে সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, নিরীশ্বরবাদী কিংবা মানবতাবাদী এবং সর্বোপরি বিজ্ঞানমনস্ক সবার মনের খোরাক জাগাবে। ধর্মান্ধতা এবং কুসংস্কার মুক্তির আন্দোলনের মাধ্যমে আগামী দিনের জাত-প্রথা-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেনিবৈষম্যমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখা মানুষের গণজোয়ারকে এই বই প্রেরণা জোগাবে’। সে প্রত্যাশা কতটা পূরণ হয়েছে আমরা জানিনা, তবে বইটি যে বহু পাঠকের হৃদয়ে একটি স্থায়ী আসন তৈরি করে ফেলেছে সেটি বলাই বাহুল্য। ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং প্রথাগত ধর্ম নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা সমৃদ্ধ ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটি শুদ্ধস্বর থেকে প্রথমে প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র প্রথম দিনে। প্রথম সংস্করণের যে কয়টি কপি ছাপা হয় তা ২০১১ সালের মেলার প্রথম দশ দিনেই শেষ হয়ে যায়। বইয়ের চাহিদার কারণে মেলার শেষ দিকে দ্বিতীয় দফায় আবার ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বইটির প্রথম সংস্করণের অতিমূল্যের কারণে অনেক পাঠকের কাছে বইটি পৌঁছাতে পারছে না এই বিবেচনায় এবং ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ায় ২০১২ সালে ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় পেপারব্যাকে। মাত্র এক বছরে পেপারব্যাকে ছাপানো সহস্রাধিক কপি নিঃশেষ হয়ে যায়। ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটি বাংলাভাষী শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে পৌঁছুবে এমন একটা সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা লেখকদের মনে ছিলো না–তা নয়, কিন্তু বইটি সাধারণ পাঠকদের মাঝেও যে ভাবে আলোড়ন তৈরি করেছে তা ছিলো সত্যিই অপ্রত্যাশিত। অনেক পাঠক বইটি পড়ে জানিয়েছিলেন, প্রয়াত ড. হুমায়ুন আজাদের ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটির পর ঈশ্বর-ধর্ম সংক্রান্ত এতো গভীর আলোচনাসমৃদ্ধ বই বাংলা ভাষায় আর প্রকাশিত হয় নি। অসাধারণ কাব্যিক ভাষায় লেখা ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটি আমাদের দুইজন লেখকেরই প্রিয় বইয়ের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে। ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটিকে সে বইয়ের সাথে তুলনা আমাদের জন্য বিব্রতকর, কিন্তু সেই সাথে অনেক আনন্দ এবং গর্বেরও।

এলাম আমরা কোথা থেকে, কোথায়ই বা যাচ্ছি আমরা, এই অনন্ত মহাবিশ্বের সূচনা হল কীভাবে, এর শেষই বা কোথায়, এই মহাবিশ্ব তৈরি বা চালানোর পেছনে কী আছেন কোনো অপার্থিব সত্ত্বা?, তিনি কি আমাদের প্রার্থনা শোনেন এ প্রশ্নগুলো শতাব্দী-প্রাচীন চিরচেনা প্রশ্ন। প্রশ্নগুলো নতুন নয়। নানা ধরণের উত্তরসমৃদ্ধ বইও বাংলা ভাষায় কম লেখা হয় নি। তবে এ ধরণের অধিকাংশ প্রচলিত বইয়ে যুক্তির চেয়ে স্থান পেয়েছে অন্ধবিশ্বাস, বিজ্ঞানের বদলে স্থান পেয়েছে কূপমণ্ডুকতা। অবিশ্বাসের দর্শন বইটিতে আমরা সেই পুরনো ধারা অনুসরণ করিনি। চিরায়ত গড্ডালিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে আমরা বরং প্রশ্ন করেছি, পাঠকদেরও অনুরোধ করেছি ‘ক্ষতবিক্ষত হতে প্রশ্নের পাথরে’। সেই সাথে নির্মোহভাবে উপস্থাপন করেছি এই অন্তিম প্রশ্নগুলোর রহস্য উন্মোচনে বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অর্জনগুলো। এই চিরচেনা প্রশ্নগুলোর উত্তর সন্ধানে বিজ্ঞানের অর্জন স্থান পাওয়ায় তা চুয়াডাঙ্গা থেকে সুদূর আইসল্যান্ড প্রবাসী বাংলাভাষী বহু বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকের মনে আলোড়ন জাগিয়েছে। বইটি প্রকাশের পর থেকে অসংখ্য মানুষ ফোন, ইমেইল, ব্লগ, ফেসবুক, টুইটারে তাদের মতামত জানিয়েছেন। বিজ্ঞান, মুক্তচিন্তা, সংশয়বাদ এবং যুক্তিবাদ নিয়ে বাংলায় প্রকাশিত যে সমস্ত বই বাজারে আছে, তার মধ্যেও অগ্রগণ্য বই হিসেবে পাঠকেরা অবিশ্বাসের দর্শনকে স্থান দিয়েছেন। কোনো ধরনের প্রচারণা ব্যতীত ফেসবুকে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বইটিকে পছন্দ করেছেন, অনেকেই রেখেছেন তাদের প্রিয় বইয়ের তালিকায়। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। ফেসবুক ছাড়াও টুইটার, ব্লগ, বইয়ের ওয়েবসাইট গুডরিডস ডট কম সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে পাঠকেরা বইটি সম্পর্কে তাদের মতামত জানিয়েছেন। বাংলা উইকিপিডিয়ার নিবন্ধসহ বেশ অনেক ধরনের নিবন্ধ/প্রবন্ধে মুক্তমনা লেখকেরা বইটিকে উদ্ধৃত করেছেন। বিগত বছরগুলোতে বইটি নিয়ে বেশ কিছু মূল্যবান আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং ম্যাগাজিনে। যেমন, অবিশ্বাসের দর্শন বইটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা স্থান পেয়েছিল সুসাহিত্যিক আহমদ মাযহার সম্পাদিত ‘বইয়ের জগৎ’ পত্রিকার নবম সংখ্যায়। নৃবিদ্যার ছাত্র এবং সাহিত্য সমালোচক শফিউল জয়ের করা সেই শিরোনাম ছিল ‘অবিশ্বাসের দর্শন: যৌক্তিকভাবে মনকে জাগানোর ঐকান্তিক প্রয়াস’ ।সেই রিভিউটিতে শফিউল জয় ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ বইটিকে বাংলা সাহিত্যের জগতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বই হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, এবং রিভিউটি সমাপ্ত করেছিলেন এই বলে– ‘প্রতিক্রিয়াশীল আর অবৈজ্ঞানিক ধর্মগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অসুস্থভাবে মন জুগিয়ে এসেছে মানুষের, এখন না হয় মন আমাদের যুক্তির আলোয় জেগে উঠুক’। শফিউল জয়ের এই ঐকান্তিক কামনা যেন আমাদের প্রত্যাশারই নান্দনিক প্রকাশ।

বইটির আরেকটি মূল্যবান রিভিউ করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পদার্থবিজ্ঞানী এবং সুলেখক ড. প্রদীপ দেব। মুক্তমনা ব্লগে প্রকাশিত ‘অবিশ্বাসের দর্শন: নবযুগের যুক্তিবাদীর দৃপ্ত পদক্ষেপ’ শিরোনামের এ রিভিউটিতে প্রদীপ দেব যে কথাগুলো উল্লেখ করেছিলেন তা আজও আমাদের জন্য নির্মল আনন্দ এবং অফুরন্ত প্রেরণার নৈমিত্তিক খোরাক -

'পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ প্রচলিত ব্যবস্থার সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু খুব সামান্য সংখ্যক কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ আছেন যাঁরা পৃথিবীটাকেই বদলে ফেলার চেষ্টা করেন। দিনের পর দিন নিরলস সংগ্রাম চেষ্টা পরিশ্রম অধ্যবসায় দিয়ে পৃথিবীটাকে একটু একটু করে ঠিকই বদলে ফেলেন এই ব্যতিক্রমী মানুষেরা। অথচ তার সুফল ভোগ করেন সবাই যাদের মধ্যে তাঁরাও আছেন যাঁরা ক’দিন আগেও এ পরিবর্তনের ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন। ধর্মবাদীদের সাথে মুক্তমনাদের পার্থক্য এখানেই যে ধর্মবাদীরা বড়...

303 pages, Paperback

First published February 1, 2011

55 people are currently reading
842 people want to read

About the author

অভিজিৎ রায়

13 books198 followers
[Dr. Avijit Roy is a Bangladeshi-American blogger, published author, and prominent defender of the free thought movement in Bangladesh. He is an engineer by profession, but well-known for his writings in his self-founded site, Mukto-Mona—an Internet congregation of freethinkers, rationalists, skeptics, atheists, and humanists of mainly Bengali and South Asian descent. As an advocate of atheism, science, and metaphysical naturalism, he has published eight Bangla books, and many of his articles have been published in magazines and journals. His last two books, Obisshahser Dorshon (The Philosophy of Disbelief) and Biswasher Virus (The Virus of Faith), have been critically well-received and are popular Bengali books on science, skepticism, and rationalism. }



লেখক হবার কোন বাসনা ছিলো তা নয়। কিন্তু ছোট্ট একটা স্বপ্ন হয়তো ছিলো একটা মনের গহীনে। স্বপ্নটা পালটে দেবার। সেই পালটে দেবার স্বপ্ন থেকেই ২০০১ সালের দিকে একদিন সমমনা কয়েকজন লেখকদের নিয়ে তৈরি করে ফেললাম মুক্তমনা সাইট (www.mukto-mona.com)। এর পর থেকেই সাইটটির বিস্তৃতি বেড়েছে। এখন বাঙালি বিজ্ঞানকর্মী, যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদীদের কাছে মুক্তমনা একটি বিশ্বস্ত নাম। ২০০৭ সালে মুক্তবুদ্ধি, বিজ্ঞানমনস্কতার প্রসার আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সম্যক অবদান রাখার প্রেক্ষিতে তার মুক্তমনা সাইট অর্জন করেছে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি পদক।

শখের বশে টুকিটাকি লেখা লিখছিলাম ইন্টারনেটে, ম্যাগাজিনে আর দৈনিক পত্র-পত্রিকায়। পছন্দের বিষয় প্রথম থেকেই ছিলো আধুনিক বিজ্ঞান এবং দর্শন। আমার সেসময়ের চিন্তাভাবনার গ্রন্থিত রূপ ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ (২০০৫)। এরপর একে একে অনেকগুলো বইই বের হয়েছে। তার মধ্যে, মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে (২০০৭, পুনর্মুদ্রণ ২০০৮), স্বতন্ত্র ভাবনা : মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি (২০০৮), সমকামিতা: বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান (২০১০,পুনর্মুদ্রণ ২০১৩), অবিশ্বাসের দর্শন (২০১১, দ্বিতীয় প্রকাশ: ২০১২, তৃতীয় প্রকাশ: ২০১৪), বিশ্বাস ও বিজ্ঞান (২০১২), ভালবাসা কারে কয় (২০১২),এবং শূন্য থেকে মহাবিশ্ব (২০১৪: প্রকাশিতব্য)। পাঠকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে, বইগুলো পাঠকদের ভাল লেগেছে। অনেকেই বইগুলোকে ‘ব্যতিক্রমী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, কেউবা আবার আগ বাড়িয়ে বলেছেন ‘মাইল ফলক’। তা যে ফলকই হোক না কেন, আমি এই বইগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখে একটি ব্যাপার বুঝতে পারি যে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থী, তরুণ-তরুণী ও সাধারণ মানুষেরা বিজ্ঞান বিমুখ নয় মোটেই, নয় দর্শনের প্রতি অনাগ্রহীও। ভাল বই তাদের আগ্রহ তৈরি করতে পারে পুরোমাত্রায়।

পেশায় প্রকৌশলী। পড়াশুনা করেছি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট), পি.এইচ.ডি করেছি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরে (এন.ইউ.এস)। বর্তমানে আমেরিকায় কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত । অবসর সময় কাটে বই পড়ে, লেখালিখি করে, গান শুনে, জীবনসঙ্গিনী বন্যার নিয়মিত বকা খেয়ে, আর নিঃসীম আঁধারে আলোকিত স্বপ্ন দেখে - ‘মানুষ জাগবে তবেই কাটবে অন্ধকারের ঘোর’...

['অবিশ্বাসের দর্শন' বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে]

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
129 (50%)
4 stars
72 (28%)
3 stars
30 (11%)
2 stars
10 (3%)
1 star
14 (5%)
Displaying 1 - 17 of 17 reviews
Profile Image for Monirul Hoque Shraban.
171 reviews52 followers
August 27, 2016
description

বইটা একটা প্রাচীন ফিলসফি নিয়ে। যে ফিলসফি প্রতিটা সভ্যতায় প্রতিটা যুগেই বিদ্যমান ছিল। ঈশ্বরের অস্তিত্ব। দর্শনের বইগুলো সাধারণত খটমটে হয়ে থাকে! উপন্যাস যত দ্রুত সাবলীলে পড়া যায় কিংবা প্রবন্ধ পড়তে যেমন সচরাচর খুব একটা বেগ পেতে হয় না, সেই জায়গায় দর্শনের বইগুলো হজম করা একটু কষ্টসাধ্য। তবে “অবিশ্বাসের দর্শন” নামের এই বইটা সেই আওতায় পড়ে না। ক্যাটাগরির দিক থেকে দর্শনের বই হলেও এটা পড়তে খুবই সাবলীল। ধরতে গেলে সবটা বইতেই বিজ্ঞানের আলোকে সবকিছু আলোচনা করা হয়েছে। আর বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনাই তো সবচে মজার।

মুক্তমনায় বইটার সফট কপি পাওয়া যায়। সেই ২০১২ সাল থেকেই সফট কপি পড়ে আছে। দর্শনের বই দেখে দশ হাত দূরে থাকি। কিন্তু ইদানীং বেশ কয়েকজন উন্মুক্ত মননের কিছু ব্লগারকে মেরে ফেলায় মন খুব ব্যথাতুর হয়ে ওঠে, সবচে বেশি মর্মাহত হই স্বয়ং বইয়ের লেখক অভিজিৎ রায়কে মেরে ফেলাতে। এবং সিদ্ধান্ত নেই আস্তিকতা ও নাস্তিকতা বিষয়ে আদ্যোপন্ত একদম গোড়া থেকে জানতে হবে। সেই ইচ্ছা থেকে হার্ড কপি সংগ্রহ করে পড়তে শুরু করি। একবার শুরু করে কোথাও আটকাতে হয়নি, একেবারে শেষ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে। লেখকদের হাতে খুবই মুন্সিয়ানা আছে।

বইতে লেখকদ্বয় সাফ সাফ ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তারা নাস্তিক। তাদের চিন্তা ও বিশ্লেষণ করার ধরণে কোনো বিশ্বাসের প্রভাব নেই। সবকিছুর প্রভাব মুক্ত হয়ে থাকা লেখালেখির একটা ভালো দিক।

আমরা সাধারণত নিজেদের বুদ্ধিমত্তা দিয়েই আশেপাশের ঘটনাগুলোকে বিশ্লেষণ করতে পছন্দ করি। আমরা নিজেরা যেটাকে বিশ্বাস করি সেই অবস্থানে থেকেই একটা ঘটনা বা কারণের বিচার করি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এই বিচার ত্রুটিপূর্ণ। বাক্য দুইটা কঠিন হয়ে গেলো? একটা উদাহরণ দেই। পৃথিবী ও চাঁদ। পৃথিবী থেকে চাঁদকে দেখছে যদু নামের একটি ছেলে, আর চাঁদ থেকে পৃথিবীকে দেখছে মধু নামের একটি ছেলে। যদু বলছে চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলছে, আর মধু বলছে উল্টো, পৃথিবী চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলছে। এর জন্য পরীক্ষক পাঠানো হলো, পরীক্ষক দুই জায়গাতেই গিয়ে দেখলো দুজনের কথাই আপাত দৃষ্টিতে সঠিক। চাঁদ থেকে দেখলে মনে হয় পৃথিবী ঘোরে আর পৃথিবী থেকে দেখলে মনে হয় চাঁদ ঘোরে। এখন একই সাথে দুইটা ব্যাপার কীভাবে সত্য হবে? পরীক্ষক কীভাবে বিচার করবেন?

এই ক্ষেত্রে বিচারের সঠিক পন্থা হলো, যদু আর মধুর মতামত শুনে নিয়ে উভয়ের স্থান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি স্থান থেকে বিচার করা। চাঁদ আর পৃথিবীর কোনোটা থেকেই না দেখে অন্য একটা অবস্থান থেকে পর্যবেক্ষণ করা। হতে পারে সেটা সূর্য কিংবা বৃহস্পতি গ্রহের পৃষ্ঠ। তখন উভয়ের দাবির প্রেক্ষিতে সঠিক সিদ্ধান্তটা নেয়া যাবে। এই ব্যাপারটার নাম আপেক্ষিকতা।
description
চিত্রঃ একই সাথে দুই বিপরীত তথ্য কখনো সত্য হতে পারে না। একটা না একটাকে ভুল হতে হবে।

আমি মনে করি আমরা যাই বিশ্বাস করি না কেন ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্বের ব্যাপারটা এভাবে বিচার করা উচিৎ। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি আর তাই আমার বিশ্বাসের স্বপক্ষে যত যুক্তি আছে তা আমলে নিয়ে অন্য মত ও যুক্তিগুলো আমলে না নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলে বিচারটা যৌক্তিকভাবে অবশ্যই ত্রুটিপূর্ণ হবে। উভয়ের দাবিদাওয়াকে আমলে নিয়ে দুই দল থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা অবস্থান থেকে যাচাই করাটাই হবে উত্তম পন্থা। আমি আমার বিপক্ষ দলের মতামত পছন্দ করি না বলেই যে সে মত গ্রহণের অযোগ্য হয়ে যাবে তা কিন্তু না। আমি একটা জিনিস অপছন্দ করি, এর অর্থ এই না যে সেটা ভুল।

আরো একটা উদাহরণ দেই। আমি পাঙ্গাস মাছ খাই না। মানে অপছন্দ করি। এখন যদি আমার অপছন্দটা সঠিক হয় তাহলে বাজারে বিপর্যয় দেখা দিবে! উল্লেখ্য বাজারে সবচে বেশি যে মাছটা বিক্রি হয় সেটার নাম পাঙ্গাস। (শহরের বাজারের কথা জানি না, কিন্তু প্রায় সব গ্রামেই এই অবস্থা।) পাঙ্গাস না থাকলে গ্রামের বাজার গরম হয়ে যায়।

আস্তিক নাস্তিক প্রসঙ্গে ফের আরেকটা উদাহরণ দেই। আমি ছিলাম পারিবারিকভাবে ‘দেওবন্দী’ মুসলিম। দেওবন্দীদের কেও কেও তাবলীগী দল বলে থাকে। অনেকে বিকৃতভাবে ‘ওহাবী’ বলে থাকে। এই মতের/দলের এক কিংবদন্তী ইসলামিক স্কলার হচ্ছে ‘নূরুল ইসলাম ওলীপুরী’। আমি উনার বই খুব পছন্দ করতাম। অন্যদিকে আমি জাকির নায়েকের বক্তব্য পছন্দ করতাম। দুজনের ট্যালেন্ট ও উপস্থিত বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হতাম। ২০১০ সালের শেষের দিকে ওলীপুরী সাহেব একটা চটি বই লিখেন “জাকির নায়েকের আসল চেহারা” নামে। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে ওলীপুরী হুজুর জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে গিয়ে এই বইটা লিখেছেন। আমি এই বই হাতে পেয়ে পড়লাম বিশাল ফ্যাঁকড়ায়! এখন কই যাই? দুজনের কথাই ভালো লাগে। একজন যদি সত্য হয় তাহলে অবধারিতভাবে অন্যজন মিথ্যা হবে। :/ । প্যারাডক্সে পড়ে গেলাম। শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিলাম ‘দুজনের বক্তব্যই ভালো লাগে’ এই ধারা থেকে বের হয়ে একদম তৃতীয় পক্ষের একটা জায়গা থেকে তাদের বিচার করতে হবে। এই পথে পরে আমি একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছিলাম।

description
চিত্রঃ ‘জাকির নায়েকের আসল চেহারা’ নামের বই।

তেমনই বড়সড় ব্যাপারেও এভাবেই বিচার করে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। এটাই সবচে সেরা পথ। এই ব্যাপারে অবিশ্বাসীদের যুক্তি ও মতামত জানতে “অবিশ্বাসের দর্শন” বইটি খুব কাজে দিবে। আর যারা বিজ্ঞানমনস্ক তাদের বেলায় তো কথাই নেই। যারা বিজ্ঞান ভালোবাসে তাদের কাছে বইটি গ্রহণযোগ্য হবে, কারণ বইটির প্রায় সবটাতেই বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের যত ব্যাপার আলোচনা করা হয়েছে তার সবই বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে। ভাষাগত দিক থেকেও খুব উন্নত। উল্লেখ্য অবিশ্বাস নিয়ে হুমায়ুন আজাদও অনেক লিখেছিলেন। উনার লেখার সমস্যা হচ্ছে লেখাতে কোনো রাখ ঢাক রাখেননি। ভাষাগত দিক থেকে এটা আমার চোখে সীমাবদ্ধতা হিসেবে ধরা পড়ে। অভিজিৎ রায় ও রায়হান আবীরের লেখা বইটা এই দিক থেকে উত্তীর্ণ।

তবে বইটা যে একেবারে সোনায় সোহাগা হয়ে গিয়েছে তাও না। যে যে কথাগুলো বলেছেন, যে যে বর্ণনাগুলো দিয়েছেন তার ক্রমান্বয়তা ও সজ্জা সন্তোষজনক নয়। আরও ভালো, আরও সু-সজ্জিত হতে পারতো। অনেকগুলো যায়গাতেই আলোচনা মূল লাইন থেকে বিচ্যুত হয়ে দূরে সরে গিয়েছে। যে শিরোনাম দিয়ে একটা অনুচ্ছেদ শুরু হয়েছে সে বিষয় থেকে দূরের কথাবার্তা চলে এসেছে। এমনটা না হলে বইটার ওজন আরও বাড়তো, আকারে ছোট হলেও।

এই যা, যৌক্তিক ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে কথা বলতেই বিশাল এক লেখা করে ফেললাম! এত লেখা পড়ার সময় কই? তাহলে আজ ইস্তফা দেই। আরেকদিন বইটির ভেতরের কলকব্জা নিয়ে লিখব। আর সবার কাছে অনুরোধ রইল বইটা পড়ে দেখার। পড়তে অনেক মজার।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Hasnat Sujon.
36 reviews16 followers
February 27, 2018
কোত্থেকে জানি ক্লাসের মাঝখানে ধর্ম নিয়ে কথা চলে আসলো। আমি ছেলে-মেয়েগুলোর চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। কথা বলছি না। শুধু শুনছি। তারাই কথা বলছি। তারপর একজন আমার দিকে তাকিয়ে কী একটা বিষয়ে জিজ্ঞেস করলো, স্যার! আপনার কী ধারণা।

আমি টানা ১৫ মিনিট ধর্মের পক্ষে কথা বলে গেলাম। কোরআন-বাইবেল-মহাভারত ইত্যাদি ইত্যাদি থেকে রেফারেন্স দিলাম। সবাই সন্তুষ্ট। তারপর বললাম, কী? ধর্মই ঠিক, তাই না? সবাই উত্তর দিলো, জি স্যার।

আমি আবার ১৫ মিনিট কথা বললাম। এবার ধর্মের বিভিন্ন দিক প্রশ্ন করা শুরু করলাম। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বার্ট্রান্ড রাসেল, অভিজিৎ রায়ের কাছ থেকে রেফারেন্স দিলাম। এখন সবার চোখে-মুখ দেখলাম বিভ্রান্তি। আমি বললাম, কী? ধর্ম যত ঠিক ভেবেছিলে, ততোটুকু ঠিক না? এখন সবাই চুপ।

আমি বললাম, তোমাদের দ্বিধার, বিভ্রান্তির কারণ কী জানো? তোমাদের জ্ঞানের গভীরতা নেই। তোমরা কোন একটা ধর্মে বিশ্বাসী, এর একমাত্র কারণ তোমরা ঐ ধর্মে বিশ্বাসী একটা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছো। আর কোন কারণ নেই। এই কারণে যখন আমি ধর্মের পক্ষে বলেছি সবাই খুশি, সব বুঝে গিয়েছো। যখন বিপক্ষে বলেছি, কেউ বিপরীতে একটা যুক্তি দিতে পারোনি। এর কারণ হচ্ছে, তোমাদের কোন দিকেই পড়াশোনা নেই। না পক্ষে, না বিপক্ষে। আরো একবার বলি-পড়ো, পড়ো, পড়া প্র্যাক্টিস করো। ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র্যাক্টিস করো।

যারা জানতে চান, পড়তে চান- অবশ্যই পড়ুন।
Profile Image for আহসানুল করিম.
Author 3 books27 followers
February 25, 2022
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। সেবছর প্রবাসী পাঠকদের জন্য একটা অনলাইন বুকস্টোর চালু করেছিলাম এক বন্ধুর সাথে মিলে। নাম দিয়েছিলাম বই-ওয়ালা ডট কম। বাংলাদেশ থেকে ফেরার সময় লাগেজ ভর্তি করে বেশ কিছু বই নিয়ে ফিরছিলাম। যেসব বইগুলোর চাহিদা বেশি তেমন কিছু বই যাতে ক্রেতাদের কম দামে দেওয়া যায় সেজন্য। ফেরার সময় ফ্লাইটে পড়ার জন্য সেই বইগুলোর মধ্য থেকে এই বইটি ব্যাকপ্যাকে নিয়েছিলাম।

আমার ফ্লাইট ছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল বেলায়। বিমান আকাশে ডানা মেলে দেওয়ার সাথে সাথে বইটি পড়তে শুরু করি। আবু ধাবিতে রাতের দিকে যখন বিমান অবতরণ করে, এয়ারপোর্টে কোথাও ফ্রি ওয়াইফাইতে কানেক্ট করে জানতে পারি লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিমান বন্দরে যখন আমি মোবাইলে এই সংবাদ পড়ছি, তখন আমার একটি আঙ্গুল বুকমার্ক হয়ে এই বইটির দুই মলাটের মাঝে গুঁজে রাখা। ওদিকে লেখকের স্ত্রী বন্যা আহমেদের হাতের আঙ্গুলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ততক্ষণে হাত থেকে। বারবার ভাবছিলাম, মাঝ আকাশে আমি যখন বইটি পড়ছিলাম সেরকম একটি মুহূর্তে মুহুর্মুহু ধারালো অস্ত্রের কোপে জর্জরিত হচ্ছিলেন লেখক অভিজিৎ রায়।

এটা বইয়ের রিভিউ নয়। যুক্তিবাদি বিজ্ঞানমনস্ক মানবতাবাদী একজন লেখককে শ্রদ্ধা জানিয়ে যাওয়া।
Profile Image for Salwa.
Author 2 books10 followers
December 16, 2015
A lot of information from various resources that I have not read in Bengali before. It is great to bring this school thoughts to bengali readers. A lot of historical backgrounds to religion's and belief's origin is really appreciated. All in all a great book to read to understand why one should question beliefs.

Now for the criticism. The later chapters in the book looked like compiled in a haste by scouring through Muktomona blog posts. Too many reference to Muktomona website blogpost but no link is provided. Without link such reference to writer's own blogpost can often come off as narcicism or arrogance, rather than as pointer to more information. It is kind of sad and unfortunate too that the writer has nothing but his own contributions to point to Bengali literature, as very few have written on such topic. I also thought the new age atheist leaders were portrayed as such revered figures as if they are the prophets or something. Some but I would give similar respect to Dawkins and Avijit Roy for being free-thinkers and scientist. One maybe more knowledgeable than the others, but human nonetheless. I guess what bothers me is that I sense sort of blind favoritism to the leaders, without questioning their thoughts ( which should be basis of a-theism, questioning any belief/info).

Lastly, I picked up this book the day after Avijit Roy was murdered for writing it. Throughout the book his reference to how other writers had been attacked, tortured for writing on this topic, and his frustration, agony, and sympathy for those writers were evident in his writings. It was more unnerving that he too had to join their club.
Profile Image for Abid Hasan.
32 reviews
June 23, 2021
বিজ্ঞান ও ধর্মের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত এবং বেশিরভাগ সময়ই সাংঘর্ষিক। ধর্মের নামে ধর্মীয় কিতাবের ভুল ব্যাখ্যা, গোড়ামি, কিংবা ধর্মের অপব্যবহার যুগে যুগে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করেছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে অধিকাংশ নাস্তিকই ধর্ম আর ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা কে এক ভেবে ভুল করে, যে ভুলটি এই বইতেও করা হয়েছে। সাধারণত, কোন গবেষণা চলে স্বাধীন ভাবে সত্য (ফ্যাক্ট) কি তা জানবার জন্য। এই বইয়ের লেখকদ্বয় সত্য (ইশ্বরের অনুপস্থিতি তে বিশ্বাস) কি তা জেনে তাকে স্টাব্লিশ করার জন্য যুক্তি দাঁড় করিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় ইশ্বর ও তাঁর সৃষ্টির রহস্যভেদ করার ক্ষমতা মানুষের নেই (অন্তত এখন পর্যন্ত)। যেখানে ত্রিমাত্রিক জগতের বাইরেই মানুষ গিয়ে পৌঁছতে পারেনি সেখানে ইশ্বরকে আবিষ্কার করা বা তাঁর সৃষ্টির রহস্য ভেদ করে ফেলা কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়!
Profile Image for নাঈম রিজভী.
2 reviews4 followers
April 5, 2013
বিশ্বাস নামক অপবিশ্বাস ভাঙ্গার জন্য যত দিকে আলোকপাত করা উচিত ছিল তার সবগুলো দিকই উঠে এসেছে এই বইটিতে। loved it <3 <3
Profile Image for সুদীপ সরকার.
4 reviews1 follower
September 16, 2018
বইটিকে আমার আসলে খানিকটা পরিচয়মূলক গ্রন্থ বলেই মনে হল! মানুষের মনে সংশয়, প্রশ্ন জাগিয়ে তুলবে এটাই বইটার মূল লক্ষ্য, প্রশ্ন জেগে উঠলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ সেটা জানার পেছনে ছুটবে, আর তখনই বিষয়ভিত্তিক রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা আছে অনেক বই ও ব্লগের নাম। বইটিতে আংশিক তথ্য, উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়বস্তু বোঝানো হয়েছে, বিষয়ের গভীরে ঢোকা হয়নি। একারণেই হয়ত খানিকটা অতৃপ্তি রয়ে গেল। আর কিছু কিছু জায়গায় রেফারেন্সটা একটু বেশিই মনে হয়েছে!

ভাবতেই খারাপ লাগছে, মুক্তচিন্তার চর্চার কারণেই অভিজিৎ রায়কে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। অভিজিৎ রায়, আপনি বেঁচে থাকবেন আপনার লেখনীতে, আপনার ছড়িয়ে দেয়া মুক্তচিন্তায় - অন্যের মস্তিষ্কে....

বি.দ্রঃ বইটিকে রেটিং দেয়া নিয়ে রীতিমত দ্বিধাদন্দ্বে ভুগেছি, ৩/৪ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করেছি বেশকিছুক্ষণ ধরে। শেষপর্যন্ত ৩ দিলাম কেবলমাত্রই বিষয়ের গভীরে না ঢোকার জন্যে!
Profile Image for Ruhin Joyee.
51 reviews149 followers
September 28, 2013
The information could be better organized. Also some facts repeating themselves bore the reader. All over not bad.
Profile Image for Iftekhar Naim.
58 reviews5 followers
March 31, 2015
Full of thought provoking questions, ideas, and arguments.
Profile Image for Farha Crystal.
46 reviews68 followers
October 7, 2015
অভিজিৎ রায় এবং রায়হান আবীর তাদের “ অবিশ্বাসের দর্শন” বইটিতে সর্বাধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার , অগ্রগতি ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে , ধর্মের উপযোগিতা ছাড়াই শুধুমাত্র ডারউইনী পদ্ধতিতে সমাজকে টিকিয়ে রাখার জন্য পরার্থপরায়নতা , সহযোগিতা , নৈতিকতা আর মূল্যবোধের মত অভিব্যক্তিগুলো জীব জগতে উদ্ভুত হতে পারে যা বিবর্তনের পথ ধরে আর ও বিবর্ধিত আর বিকশিত হবে ।
ঈশ্বর অনুকল্পের কোন রকম সাহায্য নেওয়া ছাড়াই কো���়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশানের সাথে সমন্বিত করা স্ফীতি তত্ত্ব মহাবিশ্বের উত্পত্তির প্রাকৃতিক এবং যোক্তিক সমাধান দিতে পারে ।
ধর্ম নিরপেক্ষতার আভিধানিক অর্থ রাষ্ট্রীয় , শিক্ষানীতি প্রভৃতি ধর্মীয় শাসন থেকে মুক্ত থাকা বুঝায় । নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস নয় ।
তাই নাস্তিকদের এই অবিশ্বাসকে সংশয়বাদী , বিজ্ঞানমনস্ক , যুক্তিবাদী দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করে মানবতার ধর্ম পালন করাকেই আদর্শ মনে করেন আধুনিক যুগের নব্য নাস্তিকেরা। বইটিতে খুব সুন্দর করে রেফেরেন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞানের আধুনিক আবিষ্কারগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
বইটিতে প্রায়শ রিচার্ড ডকিন্সের “The Selfish Gene “ বইয়ের কথা উল্লেখ আছে । তাই
“The selfish gene “ বইটি আগে পড়ে পরে অবিশ্বাসের দর্শন বইটি পড়া মনে হয় পাঠকদের জন্য অধিক সুবিধাজনক হবে ।
Profile Image for Shafaat.
93 reviews113 followers
December 19, 2015
Okay, I am cutting a star because the world famous paleontologist and evolutionary biologist Stephen Jay Gould is mentioned here as a 'archaeologist'. They are nowhere near.
This sort of misinformation is unexpected, they portray a lack of enquiry on the part of the authors. I hope they proofread and correct it in the next edition.
1 review1 follower
June 7, 2015
বদলে দিয়েছে এত দিনের আঁকড়ে ধরে থাকা বিশ্বাস আর মুল্যবোধ
Profile Image for Deep Sarkar.
14 reviews2 followers
September 16, 2025
আমাদের উপমহাদেশের অধিকাংশ মানুষ নাস্তিকতা সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে । কেউ মনে করে নাস্তিকদের কাজই হল মানুষের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত দেওয়া, কেউ মনে করে নাস্তিকতা হল যা খুশি করবার ছাড়পত্র কারণ নাস্তিকদের নৈতিকতা বলে কিছু নেই, কেউ-কেউ এটাকে মানসিক ব্যাধি মনে করে আর কেউ-কেউ এর সবকটি দিয়েই নাস্তিকদের সংজ্ঞায়িত করে ।

"অবিশ্বাসের দর্শন" বইটি মূলত নাস্তিকতা নিয়ে এই সমস্ত ধারণাগুলোকে খণ্ডন করেছে এবং তা করেছে কোনো বাগাড়ম্বর বা আস্ফালনের মাধ্যমে নয়, বরং যুক্তি ও তথ্যের সাহায্যে । নাস্তিকতা বলতে প্রকৃত অর্থেই যা বোঝায়, "অবিশ্বাসের দর্শন" সেটা চমৎকার ভাবে উপস্থাপনা করেছে ।

সোজা ভাষায়, *নাস্তিকতা হচ্ছে বিজ্ঞানমনস্কতা*; অর্থাৎ আমাদের এই ব্রহ্মান্ডের সমস্ত ঘটনাবলীকে বৈজ্ঞানিক মননের লেন্সের মধ্যে দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা এবং আমাদের পরিচিত প্রাকৃতিক নিয়মের কোনোটা দিয়ে তাদের ব্যাখ্যা করা যায় কিনা তা বুঝতে চেষ্টা করা ।

*ঈশ্বরকে যেন-তেন প্রকারণে অস্বীকার করা নাস্তিকতার কাজ নয়*; সত্যি বলতে কি, ধর্মপ্রচারকরা যদি ঈশ্বরকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে এতো উঠে-পড়ে না লাগতো, নাস্তিকরা তাঁদের মাথাব্যথার কারণ হত না । নাস্তিকদের অস্ত্র হল যুক্তি আর ঈশ্বরের ব্যাপারটা হল বিশ্বাসের; বিশ্বাসকে শত যুক্তি দিয়েও খণ্ডন করা যায় না । কিন্তু বিজ্ঞানের মহিমা এমনই যে আজ ধর্মপ্রচারকরাও বিজ্ঞানের আলোকে ঈশ্বরকে প্রতিষ্ঠা করতে চায় কারণ তাতে অনেক সুবিধা: একদিকে নাস্তিকদের মুখ যেমন চিরকালের মতো বন্ধ করা যাবে তেমনি অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে শোষণ করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে । মুশকিলটা হয়েছে যে এনাদের বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনো নেই কিংবা বিজ্ঞানের দর্শন কী তাও জানা নেই । তাই এমন-এমন সব ঘটনার মধ্যে এনারা ঈশ্বর টেনে আনেন যা ইতিমধ্যেই ঈশ্বর ছাড়াই ব্যাখ্যায়িত হয়ে গিয়েছে । নাস্তিকরা যখন সেটা ধরিয়ে দেয় তখনই তাঁদের মাথা গরম হয়ে যায় । তাই এজেন্ডা যদি কারও থেকেই থাকে, সেটা ধর্মপ্রচারকদের আছে । নাস্তিকরা কেবল তাঁদের যুক্তিগুলোর ভুল ধরিয়ে দিয়েছে মাত্র ।

কেউ যদি কোনোদিন ঈশ্বরের স্বপক্ষে অকাট্য যুক্তি দিতে পারে নাস্তিকদেরও তখন ঈশ্বরকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না । কিন্তু ঈশ্বরকে এমনভাবেই সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যে তাকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার উপায় রাখেনি কোনো ধর্ম । কারণ ঈশ্বরকে বিজ্ঞানের ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রতিষ্ঠা করাটাই এক সময় ধর্ম প্রচারকারীদের লক্ষ্য ছিল ।

*নাস্তিকরা নৈতিক নয় বা হতে পারে না এই ধারণাটাও ভুল* । এমন ধারণার নেপথ্যে আসলে রয়েছে এই বিশ্বাস যে ধর্মই হল সকল নৈতিকতার উৎস কারণ ঈশ্বরের নির্দেশ ছাড়া কী "ঠিক" আর কী "ভুল" সেটা বিবেচনা করার কোনো উপায় নেই । কিন্তু সত্যিই কি তাই? তাহলে তো আমাদের উপমহাদেশের দেশগুলোতেই মনুষ্যত্বের বিকাশ সবচেয়ে বেশি হওয়া ছিল । ধার্মিকদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি মানবিকতাবোধ থাকা উচিত ছিল । কিন্তু হয়েছে কি ঠিক উল্টোটাই নয়? ধর্মীয় নৈতিকতাবোধ থেকেই কি মানুষে-মানুষে বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়নি?

ধর্মীয় নৈতিকতার আরেকটি অত্যন্ত নিকৃষ্ট দিক হল এগুলি সাধারণ মানুষকে দিয়েও পশুর মত আচরণ করিয়ে নিতে পারে । ধরা যাক, কোনো ধর্মের ঈশ্বর নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনো নারী যদি তাঁর শরীরকে বিশেষ কায়দায় আবৃত না করে, তবে সেই নারীকে পতিতা বলে মনে করো এবং তাকে ধর্ষণ করলেও তা নৈতিকভাবে "ঠিক" বলে গণ্য হবে । এটাকে ঈশ্বরের আদেশ ভেবে বিশ্বাসীরা নির্দ্বিধায় পালন করতে উদ্যত হলে সেটা কিরকম ভয়ঙ্কর ব্যাপার হবে ভাবা যায়?

ঈশ্বরকে না মানলে মানুষ যথেচ্ছ দুরাচার ও নৃশংসতায় লিপ্ত হবে, এই ধারণাটাই ভিত্তিহীন । কারণ প্রথমত, মানবিক হতে গেলে ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই; ইউরোপের উন্নত দেশগুলোই তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ । কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হল, অন্য একটা মানুষকে অকারণে কষ্ট দেওয়া উচিত নয় বা তাঁর ক্ষতি করা উচিত নয় এটা বুঝতে কোনো ঈশ্বরের চোখরাঙানি বা স্বর্গের লোভ লাগে না, লাগে কেবল বিবেক ।

দ্বিতীয়ত, নাস্তিকতার নামে আজ অবধি কোনো নৃশংসতার নজির আছে বলে আমার জানা নেই । স্তালিন, মাও, পল পটরা নাস্তিকতার নামে মানুষ হত্যা করেনি, করেছিল তাঁদের চরম মতাদর্শের কারণে । সমস্যাটা সেই একই— আমরাই ঠিক, বাকি সবাই ভুল । যারা ভুল, তাঁদের হত্যা করো । নাস্তিকদের কাছে নৈতিকতার কোনো নৈর্ব্যক্তিক মানদণ্ড না থাকতে পারে কিন্তু সেক্ষেত্রে অন্তত "ঠিক", "ভুল" নিয়ে সংশয়ের অবকাশ আছে । যেখানে কোনো সংশয় নেই, সেখানে মানুষের নির্মম হতেও কোনো বাধা নেই ।

লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার কারণ হিসেবে বলতে শুনেছি তিনি নাকি ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন (অবশ্যই যে ধর্মের লোকেরা তাকে হত্যা করে কেবল তাঁদেরই ধর্ম নিয়ে "মিথ্যাচার", বাকি ধর্মদের ব্যাপারে তিনি কি বলেছেন কিছু আসে যায় না )। মজার ব্যাপার এটাই যে বইটিতে ধর্মের সমালোচনায় কোনো পক্ষপাত নেই। তিনটে বড় ধর্মের সমালোচনা করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি রেফারেন্সসহ লেখা হয়েছে ।

যদি মিথ্যাচার হয়েই থাকে কোনো, তাহলে কেউ চাইলেই সেই রেফারেন্সগুলো ঘেঁটে দেখিয়ে দিতে পারতো যে বইটিতে যা লেখা হয়েছে তা ভুল । কিন্তু দুঃখের বিষয়, তা হয়নি । বরং লেখককে হত্যা করে হত্যাকারীরা দেখিয়ে দিয়েছে যে বইয়ের কথাগুলোই আসলে সত্যি । শুধু তাই নয়, নাস্তিকদের উপর এই নৃশংসতা প্রদর্শন যত বৃদ্ধি পাবে, নাস্তিকতার মননও তত বেশি জনপ্রিয়তা পাবে । খ্রিস্টানরাও একটা সময় গিওর্দানো ব্রুনোকে পুড়িয়ে মেরেছিলো পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে বলার জন্য । কিন্তু তাতে সত্যকে রোখা গেল কই?

তবে বইটায় যে আস্তিকদের সমস্ত যুক্তিই প্রশ্নাতীতভাবে খণ্ডন করে দেওয়া হয়েছে এমন নয় । অভিজিৎ রায় এবং রায়হান আবির দুজনেই বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই পুরো ব্যাপারটা দেখেছেন, দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয় । যেমন নৈতিকতার আলোচনায় Morality argument কিংবা মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে Kalam cosmological argument এর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়নি কারণ তাতে দর্শনের গভীরে ঢুকতে হত এবং সম্ভবত বইটি পাঠকদের কাছে বেশ খানিকটা দুর্বোধ্যও হয়ে যেত ।

এটুকু বলতে পারি, এই বইয়ের বক্তব্য বুঝতে পারলে ঈশ্বরের স্বপক্ষে অনেক এলেবেলে যুক্তির ফাঁক-ফোঁকর খু��� সহজেই ধরা ফেলা যাবে ( যেগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রায়শই দেখা যায় আর কি) । সেই দিক দিয়ে নাস্তিকতার প্রথমপাঠ হিসেবে বইটি বেশ উচ্চমানের । বইটি কাউকে নাস্তিক হতে উদ্বুদ্ধ করেনি কিংবা কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাত দেখায়নি । কেবল নাস্তিকতার দর্শনকে প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণনা করেছে ।

এরপর পাঠক বইটি পড়লে আশা করি নিজেই বিচার করতে পারবেন যে নাস্তিকতা দর্শন হিসেবে ঠিক হোক বা ভুল, সেটা এতো ঘৃণিত হওয়ার কোনো কারণ সত্যিই আছে কিনা ।
Profile Image for Tamim wn.
114 reviews
March 21, 2024
অনেক কিছু জানতে পারলাম। তবে একটা কথা না বলেই নয়। লেখক যেই আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, তিনি তো আল্লাহই নন। ইসলাম সম্পর্কেও লেখকের প্রচুর জানার ঘাটতি রয়েছে।
Profile Image for Joy OKIMURO.
46 reviews6 followers
April 28, 2017
সমাজে অনৈতিকতা, অশ্লীলতা, অসহিষ্ণুতা, নাস্তিকতা ও উগ্রতা ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এধরনের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক বই চমৎকার ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এক চিমটি বিজ্ঞানের সাথে দুই চা চামচ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (Sci-fi) এবং এক গ্লাস ইসলাম-বিদ্বেষ মিশিয়ে জোরসে একটা ঝাকুনি দিলেই প্রস্তুত হয় একেকটা বিজ্ঞানধর্মী গ্রন্থ!!
Profile Image for S. A. Khan.
3 reviews
August 14, 2017
ভাবনার জগতে সবচেয়ে বৃহৎ ও বিস্তৃত পরিসরে নাড়াচাড়া দেয়া একটা বই
Displaying 1 - 17 of 17 reviews

Join the discussion

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.