Humayun Azad (Bangla: হুমায়ূন আজাদ) was a Bangladeshi author and scholar. He earned BA degree in Bengali language and literature from University of Dhaka. He obtained his PhD in linguistics from the University of Edinburgh in 1976. He later served as a faculty member of the department of Bengali language and literature at the University of Dhaka. His early career produced works on Bengali linguistics, notably syntax. He was regarded as a leading linguist of the Bangla language.
Towards the end of 1980s, he started to write newspaper column focusing on contemporary socio-political issues. Through his writings of 1990s, he established himself as a freethinker and appeared to be an agnostic. In his works, he openly criticized religious extremism, as well as Islam. In 1992 Professor Azad published the first comprehensive feminist book in Bangla titled Naari (Woman), largely akin to The Second Sex by Simone de Beauvoir in contents and ideas.
The literary career of Humayun Azad started with poetry. However, his poems did not show any notable poetic fervour. On the other hand his literary essays, particularly those based on original research, carried significant value.
He earned a formidable reputation as a newspaper columnist towards the end of 1980s. His articles were merciless attacks on social and political injustice, hypocrisy and corruption. He was uncowed in protesting military rule. He started to write novels in 1990s. His novel Chappanno Hazar Borgomile is a powerful novel written against military dictatorship. Azad's writings indicate his distaste for corrupt politicians, abusive military rulers and fundamentalist Islam. Nevertheless, his prose shows a well-knit and compact style of his own. His formation of a sentence, choice of words and syntax are very characteristic of him. Although he often fell victim to the temptation of using fiction as a vehicle of conspicuous political and philosophical message, he distinguished himself with his unique style and diction.
On August 11, 2004, Professor Azad was found dead in his apartment in Munich, Germany, where he had arrived a week earlier to conduct research on the nineteenth century German romantic poet Heinrich Heine. He was buried in Rarhikhal, his village home in Bangladesh.
In 2012, the Government of Bangladesh honored him with Ekushey Padak posthumously. Besides this, he was honored with Bangla Academy Award in 1986.
একজন এক্সট্রিম লেখকের এক্সট্রিম জোরালো, তীক্ষ্ণ ও সাহসী লেখা। প্রবচনগুচ্ছকে পাঁচতারা। কিন্তু একতারা কাটতে হচ্ছে লেখকের নিজের লেখা ভূমিকার জন্য। ভূমিকাটি হয়ে উঠেছে পূর্ববর্তী কাঁদা ছুড়াছুঁড়ির কন্টিনিউয়েশন। বইটির টাইমলেস অ্যাপিলের অনেকটাই খেয়ে দিয়েছে ভূমিকাটা। ------------------------------ [পুনশ্চ: প্রবচনগুচ্ছকে পাঁচতারা বলার মানে এই নয় যে আমি ওনার ২০০ প্রবচনগুচ্ছের ২০০টির সাথেই একমত, বেশ কিছু কনফিউশন থেকে শুরু করে শক্ত দ্বিমত রয়েছে। পুনশ্চ ২: তিনি বেঁচে নেই। থাকলে ওনাকে আমার একটা এবং শুধুমাত্র একটা প্রশ্ন করার ছিল, উনি নিজেকে বাঙালী মনে করেন কিনা?]
মুগ্ধতা নিয়ে শুরু করে শেষ হলো বিরক্তি নিয়ে। গভীর ভাবনা আর প্রবল প্রকাশের মধ্য দিয়ে ভীষণ জাজমেন্টাল, নার্সিসিস্ট, সেক্সিস্ট হুমায়ুন আজাদের দেখা পেলাম যেন। বিরক্তি অনুভব করতে করতে মনে হলো, তিনি তো একজন ব্যক্তি। কোনো ঐশী পুরুষ তো নন, যার প্রতিটা বাক্যে অখণ্ড সত্য খুঁজে নিরাশ হওয়া যায়। যে ব্যক্তিপুজা, ভাবমূর্তির উপাসনাকে তাচ্ছিল্যভরে তিরস্কার করেছেন হুমায়ুন আজাদ, তার গণ্ডিতে তাকেই যেন বন্দি না করি। সব কথা গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। যেগুলো গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে সেগুলো ভালো লেগেছে বললে কম বলা হয়। যে প্রাবল্য নিয়ে হুমায়ুন আজাদ বেঁচেছেন, লিখেছেন সেই প্রবল স্পৃহাকে ভালোবাসি।
"বাঙালি আন্দোলন করে, সাধারণত ব্যর্থ হয়, কখনোকখনো সফল হয়; এবং সফল হওয়ার পর বাঙালির মনে থাকে না কেনো তারা আন্দোলন করেছিলো"
"বাঙলাদেশে কয়েকটি নতুন শাস্ত্রের উদ্ভব ঘটেছে; এগুলো হচ্ছে স্তুতিবিজ্ঞান, স্তবসাহিত্য, সুবিধাদৰ্শন, নমস্কারতত্ত্ব"
ছোট একটা বই। পেন্টের পকেটে নিয়ে ঘুরাঘুরি করা যায়। বাসস্ট্যান্ডে, বাসে, ভ্রমণে যেকোনো সময় বইটা পড়া যায়। আসলে বইটা এমনই, সবসময় পড়ার মতো। প্রতি পৃষ্ঠাতে অল্প অল্প কিছু বাক্য। তবে এই বাক্যগুলো প্রচন্ড শক্তিশালী এবং ধারালো!! একটা মানুষের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে পারে এই বাক্যগুলো
তবে কিছু কিছু কথাতে আমি একমত ছিলাম না।। এটাও বেশ স্বাভাবিক যে, আপনি এখানের সব কথার সাথে একমত হবেন না।। তবে এটা সত্য যে, বইটা আরো কয়েকবার পড়ব 🌻
"বিনয়ীরা সুবিধাবাদী, আর সুবিধাবাদীরা বিনয়ী"
"মৃত সিংহের থেকে জীবিত গাধাও কতো জোতির্ময় উজ্জ্বল"
"সৎ মানুষ মাত্রই নিঃসঙ্গ, আর সকলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু"
" আমার লেখার যে- অংশ পাঠককে তৃপ্তি দেয়, সেটুকু বর্তমানের জন্যে, আর যে-অংশ তাদের ক্ষুব্ধ করে সেটুকু ভবিষ্যতের জন্য।"
লেখক যখন কোন লেখা লেখেন তা- সেই সময়, সমাজ, পরিবেশ বা কোন ব্যক্তিকে উপলক্ষ্য করে নিজের অভিব্যক্তি। দুই এক লাইনের প্রবচনে যে অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটলো তার থেকে বেশী টুকু থেকে গেলো লেখকের মনে। যার ফলে আমরা কিছু লাইনের সঠিক মানে হয়তো খুজে পাই না, এতে করে সবটার সাথে আমরা একমত হতে পারি না। একমত হতেই হবে এমনটাও লেখক বলছেন না। প্রবচলের বৈশিষ্ট্যই এমন। বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করতে গেলে তা আর প্রবচন থাকে না। ছোট্ট এই পকেট সাইজের বইটাতে লেখক তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন মাত্র।
বাণীসংগ্রহ টাইপের বইয়ের প্রতি আমার একটু এলার্জি কাজ করে। প্রথমতঃ, একটা লাইন সবসময় লেখক প্রকৃতপক্ষে যা বোঝাতে চেয়েছেন, সেই প্রসঙ্গকে পরিপূর্ণভাবে চিত্রিত করতে পারে না। লাইনটা সহ গোটা অনুচ্ছেদ তুলে দিলে হয়তো কাভার হতো।
দ্বিতীয়তঃ, খুঁজে খুঁজে জনপ্রিয়/বিতর্কিত লাইনগুলো সংগ্রহ করে বই বানানো সস্তা মার্কেটিং ট্রিক মনে হয়। ‘হিমুর বাবার উপদেশাবলি’ নামক বই দেখে যেমন মেজাজ খারাপ হয়েছিল। কে জানে, সোশাল সাইটের যত জায়গায় আজাদের কথা কপি করা চটুল স্ট্যাটাস, এবং ভুল জায়গায় ভুল প্রেক্ষাপটে, সাবটেক্সটের মাহাত্ম্য বোঝার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করে যে রেফারেন্স দিতে দেখি— সেসবের সাথে এরকম বইগুলোর হয়তো সরাসরি সম্পর্ক আছে!
বইতে মোট ২০০টা উক্তি সংকলিত হয়েছে। পড়তে খারাপ লাগবে না, তবে ওজনবিহীন লাগবে অনেক কথাই। খেলো লাগবে। আজাদকে স্বজাতিবিরোধী, খোলাখুলি বাঙালি-হেটার মনে হতে পারে। উনি ওমনই, কিন্তু বইতে একটা কন্টিনিউয়াস ইন্টারনাল লজিক থাকে যার ফলাফল হিসেবে আসে কথাগুলো, এইখানে তা স্বভাবতঃই অনুপস্থিত। এসব ক্ষুদ্র সমস্যায় আপত্তি না থাকলে চোখ বুলাতে পারেন।
ক্লাস সেভেনে যখন পড়ি তখন হুমায়ুন আজাদের একটা বই হাতে নিয়েছিলাম পড়ার জন্য।মেজ ভাইয়া তখন বলেছিলেন,"এই বয়সে হুমায়ুন আজাদের বই না পড়াই ভালো। যখন জীবনের ভালো মন্দ বোঝা শিখবে তখন তার লেখা পড়বে।নয়তো অনেক বিশ্বাসে আঁচড় ধরতে পারে।" এরপর আর তাঁর লেখনি পড়া হয়নি।মনের মধ্যে বাধা কাজ করতো।কয়েকদিন আগে হুমায়ুন আজাদের ৫"x ৬" এর ৬৪ পাতার এই বইটি আমার সামনে আসে।খুলে দেখলাম কয়েকটা প্রবচনই তো। দেখি পড়ে।
বেশি স্পষ্টকথা হজম করা কষ্টকর। হুমায়ুন আজাদের এই বইয়ে এমন কিছু লেখা রয়েছে যা হজম করা কষ্টকর কিন্তু সত্য। কিছু প্রবচন অবাক করে দেয়, কিছু প্রবচন বিশ্বাস করতে মন চায় না। কয়েকটা লিখে রাখলাম যাতে পাঠকরা আগ্রহ পায়। আর এতোদিনে ভরসা হয়েছে নিজের উপর। একজন লেখকের সব কথা যে বিশ্বাস করতে হবে এমনতো নয়। ভালো লেখাগুলোই নাহয় মনের মধ্যে ধারণ করবো।
একটা প্রবচন ছিলো এরকম " বাঙালি আন্দোলন করে,সাধারণত ব্যর্থ হয়, কখনো কখনো সফল হয় ;এবং সফল হওয়ার পর বাঙালির মনে থাকেনা কেনো তারা আন্দোলনে করেছিল।" সত্যিই নয়কি? আবরার হত্যার সময় সবাই তার হত্যার বিচার নিয়ে আন্দোলন করলো, রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের উপর কথার ছোড়াছুড়ি করলো। কিন্তু আবরার কেনোই বা মরলো তার কারণ নিয়ে কেউ কথা বললো না। চুক্তিটা অগোচরেই রয়ে গেলো।
আরও কয়েকটা প্রবচন-
# ধনীরা যে মানুষ হয়না তার কারণ কখনো অন্তরে যায়না। দুঃখ পেলে ব্যংকক যায়,আনন্দে ওরা আমেরিকা যায়, কখনো নিজের অন্তরে যেতে পারেনা। কেননা অন্তরে কোনো বিমান যায় না।
# নিজের নিকৃষ্টকালে চিরশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য রয়েছে বই; আর সমকালের নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য রয়েছে টেলিভিশন ও সংবাদপত্র।
# বাস্তব কাজ অনেক সহজ অবাস্তব কাজ থেকে। আটঘন্টা একটানা শ্রম গাধাও করতে পারে,কিন্তু একটানা একঘন্টা স্বপ্ন দেখা রবীন্দ্রনাথের পক্ষেও অসম্ভব।
# আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রূপসী��� একটু নগ্ন বাহু দেখে ওরা হৈচৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনীর উলঙ্গ দেহ দেখে একটুও বিচলিত হয়না।
# পা বাংলাদেশের মাথার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।,পদোন্নতির জন্য এখানে সবাই ব্যস্ত, কিন্তু মাথার যে অবনতি ঘটছে, তাতে কারো উদ্বেগ নেই।
# যে বুদ্ধিজীবী নিজের সময় ও সমাজ নিয়ে সন্তুষ্ট, সে গৃহপালিত পশু।
ব্যক্তিগত রেটিং-৮/১০
পজেটিভ ও নেগেটিভ দিক -
কিছু কিছু প্রবচন সত্যি অসাধারণ ছিলো। হজম করা কষ্ট হলেও সত্য ছিলো।
নারীদের ও ধর্ম নিয়ে লেখা কিছু প্রবচন ভালো লাগেনি।
তারপরও বইটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো। সবসময় একই ধারাবাহিকতার বইই কি পড়তে হয়। মাঝে মাঝে ভিন্য মতবাদের মানুষের মতামত শুনলে সমস্যা কোথায়।
১৯৮৯ সালে যখন ‘অরুনিমা’ নামে একটি ছোটো সাময়িকীতে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের প্রবচন গুচ্ছ বেরোয়, দেশ জুড়ে সাড়া পড়ে। একটি প্রথাগত সমাজ হঠাৎ ঘা খেয়ে চিৎকার ক’রে ওঠে। মেতে ওঠে প্রতিক্রিয়াশীলবর্গ, হুমায়ুন আজাদকে স্তব্ধ ক’রে দেয়ার জন্যে। তাঁর অপরাধ তিনি প্রকাশ করেছেন নিষিদ্ধ সত্য। বাঙলায় প্রবচন রচনার কোনো ঐতিহ্য নেই, হুমায়ুন আজাদ সৃষ্টি করেছেন সে- ঐতিহ্য। তাঁর সংহত, তীব্র, মর্মভেদী, অপ্রথাগত প্রবচনগুচ্ছে ধরা পড়েছে বাঙলার অন্তর রূপ, যা অশুভ। হুমায়ুন আজাদ প’চে যাওয়া ভালো ভালো কথা বলেন নি, বলেছেন নির্মম সত্য।'লাল নীল দীপাবলি'র পর হুমায়ুন আজাদের পড়া দ্বিতীয় বই।
আমার যেগুলো প্রবচন ভালো লেগেছে-
~সত্য একবার বলতে হয়; সত্য বারবার বললে মিথ্যার মতো শোনায়। মিথ্যা বারবার বলতে হয়; মিথ্যা বারবার বললে সত্য ব’লে মনে হয়।
~কারো প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রাখার উপায় হচ্ছে তার সাথে কখনো সাক্ষাৎ না করা।
~উচ্চপদে না বসলে এদেশে কেউ মূল্য পায় না। সক্রেটিস এদেশে জন্ম নিলে তাঁকে কোনো একাডেমির মহাপরিচালক পদের জন্যে তদ্বির চালাতে হতো।
~জীবন খুবই মূল্যবান;জীবনবাদীরা যতোটা মূল্যবান মনে করে, তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। আর শিল্পকলা জীবনের থেকেও মূল্যবান।
~মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা, তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক, আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক।
১. "মানুষ সিংহের প্রশংসা করে, কিন্তু আসলে গাধাকেই পছন্দ করে।"
২. " আগে কাননবালারা আসতো পতিতালয় থেকে, এখন আসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। "
৩. " আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রুপসীর একটু নগ্নবাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে ওরা একটুও বিচলিত হয় না। "
৪. " পরমাত্মীয়ের মৃত্যুর শোকের মধ্যেও মানুষ কিছুটা সুখ বোধ করে যে সে নিজে বেঁচে আছে।"
৫. "প্রতিটি দগ্ধ গ্রন্থ সভ্যতাকে নতুন আলো দেয়।"
৬." মহামতি সলোমনের নাকি তিন শো পত্নী, আর সাত হাজার উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।"
৭. "বাঙালি মুসলমানের এক গোত্র মনে করে নজরুলই পৃথিবীর একমাত্র ও শেষ কবি। আদের আর কোনো কবির দরকার নেই।"
৮."বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে।"
৯. "আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলো অসংখ্য শুয়োরবৎসকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে।"
১১. "শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম।"
১২." প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে, ফাসিঁকাঠে ঝোলে।"
১৩. "বেতন বাঙলাদেশে এক রাষ্ট্রীয় প্রতারণা। এক মাস খাটিয়ে এখানে পাঁচ দিনের পারিশ্রমিক দেয়া হয়।"
১৪."পুরস্কার অনেকটা প্রেমের মতো; দু-একবার পাওয়া খুবই দরকার, এর বেশি পাওয়া লাম্পট্য।"
১৫."কবিরা বাঙলায় বস্তিতে থাকে, সিনেমার সুদর্শন গর্দভেরা থাকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রাসাদে।"
১৬."মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক।"
১৭."বুদ্ধিজীবীরা এখন বিভক্ত তিন গোত্রে। ভণ্ড, ভণ্ডতর, ভণ্ডতম।"
১৮." পা, বাঙলাদেশে, মাথার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পদোন্নতির জন্যে এখানে সবাই ব্যগ্র, কিন্তু মাথার যে অবনতি ঘটছে, তাতে কারো কোনো উদ্বেগ নেই।"
১৯. "হায় ! থাকতো যদি একটি লম্বা পাঞ্জাবি, আমিও খ্যাতি পেতাম মহাপণ্ডিতের।"
২০."রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিলো না, কিন্তু দরকার ছিলো বাঙলা সাহিত্যের। পুরস্কার না পেলে হিন্দুরা বুঝতো না যে রবীন্দ্রনাথ বড়ো কবি; আর মুসলমানেরা রহিম, করিমকে দাবি করতো বাঙলার শ্রেষ্ঠ কবি হিশেবে।"
২১."এখানে অসতেরা জনপ্রিয়, সৎ মানুষেরা আক্রান্ত।"
২২." মৌলিকতা হচ্ছে মঞ্চ থেকে দূরে অবস্থান।"
২৩."এরশাদের প্রধান অপরাধ পরিবেশদূষণ : অন্যান্য সরকারগুলো পুরুষদের দূষিত করেছে, এরশাদ দূষিত করেছে নারীদেরও।"
২৪."বাস্তব কাজ অনেক সহজ অবাস্তব কাজের থেকে ; আট ঘন্টা একটানা শ্রম গাধাও করতে পারে, কিন্তু একটানা এক ঘন্টা স্বপ্ন দেখা রবীন্দ্রনাথের পক্ষেও অসম্ভব।"
২৫."একটি নির্বোধ তরুণীর সাথেও আধ ঘণ্টা কাটালে যে-জ্ঞান হয়, আরিস্ততলের সাথে দু-হাজার বছর কাটালেও তা হয় না।"
২৬."প্রতিটি সার্থক প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে পায় নি, প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।"
২৭."তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার জন্যে দুটি জিনিশ দরকার : বন্দুক ও কবর।"
২৮."যতোদিন মানুষ অসৎ থাকে, ততোদিন তার কোনো শত্রু থাকে না; কিন্তু যেই সে সৎ হয়ে উঠে, তার শত্রুর অভাব থাকে না।"
২৯."ভক্ত শব্দের অর্থ খাদ্য। প্রতিটি ভক্ত তার গুরুর খাদ্য। তাই ভক্তরা দিনদিন জীর্ণ থেকে জীর্ণতর হয়ে আবর্জনায় পরিণত হয়।"
৩০."মূর্তি ভাঙতে লাগে মেরুদণ্ড, মূর্তিপূজা করতে লাগে মেরুদণ্ডহীনতা।"
৩১."সৌন্দর্য রাজনীতির থেকে সব সময়ই উৎকৃষ্ট।"
৩২.বাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে বই খুলুন, অবাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে টেলিভিশন খুলুন।"
৩৩."এমন এক সময় আসে সকলেরই জীবনে যখন ব্যর্থতাগুলোকেই মনে হয় সফলতা, আর সফলতাগুলোকে মনে হয় ব্যর্থতা।"
৩৪."রাজনীতি ও সংস্কৃতি সম্পুর্ণ বিপরীত বস্তু ; একটি ব্যাধি অপরটি স্বাস্থ্য।"
৩৫."মহিলাদে�� ঘ্রাণশক্তি খুবই প্রবল। আমার এক বন্ধুপত্নী স্বামীর সাথে টেলিফোনে আলাপের সময়ও তার স্বামীর মুখে হুইস্কির ঘ্রাণ পান।"
৩৬."আগে প্রতিভাবানেরা বিদেশ যেতো; এখন প্রতিভাহীনেরা নিয়মিত বিদেশ যায়।"
৩৭."অধিকাংশ সুদর্শন পুরুষই আসলে সুদর্শন গর্দভ; তাদের সাথে সহবাসে একটি দুষ্প্রাপ্য প্রাণীর সাথে সহবাসের অভিজ্ঞতা হয়।"
৩৮."বিশ্বের নারী নেতারা নারীদের প্রতিনিধি নয় ; তারা সবাই রুগ্ন পিতৃতন্ত্রের প্রিয় সেবাদাসী।"
৩৯."কারো প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রাখার উপায় হচ্ছে তার সাথে কখনো সাক্ষাৎ না করা।"
৪০."চারাগাছেও মাঝেমাঝে ফোট�� ভয়ংকর ফুল।"
৪১."হিন্দুবিধানে পুরুষ দ্বারা দূষিত না হওয়া পর্যন্ত নারী পরিশুদ্ধ হয় না!"
৪২." উচ্চপদে না বসলে এদেশে কেউ মূল্য পায় না। সক্রেটিস এদেশে জন্ম নিলে তাঁকে কোনো একাডেমির মহাপরিচালক পদের জন্যে তদ্বির চালাতে।"
৪৩."সব ধরনের অভিনয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে রাজনীতি; রাজনীতিকেরা অভিনয় করে সবচেয়ে বড় মঞ্চে ও পর্দায়।"
৪৪."সক্রেটিস বলেছেন তিনি দশ সহস্র গর্দভ দ্বারা পরিবৃত। এখন থাকলে তিনি ওই সংখ্যার ডানে কটি শূন্য যোগ করতেন?"
৪৫."বাঙালি মুসলমান জীবিত প্রতিভাকে লাশে পরিনত করে, আর মৃত প্রতিভার কবরে আগরবাতি জ্বালে।"
৪৬."এখানে সাংবাদিকতা হচ্ছে নিউজপ্রিন্ট-বলপয়েন্ট-মিথ্যার পাচঁন।"
৪৭."মানুষ মরণশীল, বাঙালি অপমরণশীল।"
৪৮."সত্য একবার বলতে হয়; সত্য বারবার বললে মিথ্যার মতো শোনায়। মিথ্যা বারবার বলতে হয়; মিথ্যা বারবার বললে সত্য ব’লে মনে হয়।"
৪৯."ফুলের জীবন বড়োই করুণ। অধিকাংশ ফুল অগোচরেই ঝ’রে যায়, আর বাকিগুলো ঝোলে শয়তানের গলায়।"
৫০."বদমাশ হওয়ার থেকে পাগল হওয়া অনেক মানবিক।"
৫১."আমাদের অধিকাংশের চরিত্রএতো নির্মল যে তার নিরপেক্ষ বর্ণনা দিলেও মনে হয় অশ্লীলগালাগাল করা হচ্ছে।"
৫২."বিনয়ীরা সুবিধাবাদী, আর সুবিধাবাদীরা বিনয়ী।"
৫৩."দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম প্রেম ব’লে কিছু নেই। মানুষ যখন প্রেমে পড়ে, তখন প্রতিটি প্রেমই প্রথম প্রেম।"
৫৪."মার্ক্সবাদের কথা শুনলে এখন মোল্লারাও ক্ষেপে না, সমাজতন্ত্রের কথা তারা সন্তোষের সাথেই শোনে; কিন্তুশরীরের কথা শুনলে লম্পটরাও ধর্মযুদ্ধে নামে।"
৫৫."কোন কালে এক কদর্য কাছিম দৌড়ে হারিয়েছিলো এক খরগোশকে, সে-গল্পে কয়েক হাজার ধ’রে মানুষ মুখর। তারপর খরগোশ কতো সহস্রবার হারিয়েছে কাছিমকে, সে-কথা কেউ বলে না।"
৫৬."আমার লেখার যে-অংশ পাঠককে তৃপ্তি দেয়, সেটুকু বর্তমানের জন্যে; আর যে-অংশ তাদের ক্ষুব্ধ করে সেটুকু ভবিষ্যতের জন্য।"
৫৭."পৃথিবীতে একটি মাত্র দক্ষিনপন্থী সাম্যবাদী দল রয়েছে। সেটি আছে বাঙলাদেশে।"
৫৮."শ্রেষ্ঠ মানুষের অনুসারীরাও কতোটা নিকৃষ্ট হ’তে পারে চারদিকে তাকালেই তা বোঝা যায়।"
৫৯."বাঙলার প্রতিটি ক্ষমতাধিকারী দল সংখ্যাগরিষ্ঠ দুর্বৃত্তদের সংঘ।"
৬২."পৃথিবী জুড়ে সমাজতন্ত্রের সাম্প্রতিক দুরবস্থার সম্ভবত গভীর ফ্রয়েডীয় কারণ রয়েছে। সমাজতন্ত্রের মার্ক্সীয়, লেলিনীয়, স্তালিনীয় আবেদন ছিলো, কিন্তু যৌনাবেদন ছিলো না।"
৬৩."স্বার্থ সিংহকে খচ্চরে আর বিপ্লবীকে ক্লীবে পরিণত করে।"
৬৪."সৎ মানুষ মাত্রই নিঃসঙ্গ, আর সকলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু।"
৬৫."বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।"
৬৬."পুঁজিবাদী পর্বের সবচেয়ে বড়ো ও জনপ্রিয় কুসংস্কারের নাম প্রেম।"
৬৭."জীবনের সারকথা কবর।"
৬৮."শাশ্বত প্রেম হচ্ছে একজনের শরীরে ঢুকে আরেকজনকে স্বপ্ন দেখা।"
৬৯."প্রেম হচ্ছে নিরন্তর অনিশ্চয়তা; বিয়ে ও সংসার হচ্ছে চূড়ান্ত নিশ্চিন্তির মধ্যে আহার, নিদ্রা, সঙ্গম, সন্তান, ও শয়তানি।"
৭০."ইতিহাস হচ্ছে বিজয়ীর হাতে লেখা বিজিতের নামে একরাশ কুৎসা।"
৭১."পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ শহীদের নাম মা।"
৭২."গত দু-শো বছরে গবাদিপশুর অবস্থার যতোটা উন্নতি ঘটেছে নারীর অবস্থার ততোটা উন্নতি ঘটে নি।"
৭৩."মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা, তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক, আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক।"
৭৪."মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায় আসে না; যায় আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।"
বইয়ের নামঃ হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ ধরণঃ উক্তি, বাণী, শ্লোক ও প্রবাদ-প্রবচন লেখকের নামঃ হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদের বিখ্যাত উক্তির সংকলন এই বইটি । সমাজে নানান ধরণের উক্তি প্রচলিত আছে । তিনি সমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম সমকালীন যেকোনো ইস্যুতে কথা বলেছেন নির্দ্বিধায়। যেকোনো বিষয়ে সত্য প্রকাশেন ছিলেন তিনি অনন্য যার বহিঃপ্রকাশ তার এই উক্তি গুলো।তিনি অবাধে প্রকাশ করেছেন নিষিদ্ধ সত্য। এই জন্যই হয়ত তার প্রবচন গুল সমাজে প্রচলিত। তার বিখ্যাত প্রবচনগুলোর মধ্যে ৪৪ ট প্রবচন এই বইতে লিপিবদ্ধ আছে।
নো রেটিং। লা রোশাফুকোরে দিয়া মাপতেছি না; কিন্তু অধ্যাপক আজাদ রিয়েলি ভানসর্বস্ব লোক। উনার প্রবচনগুলাও ওহী তৈয়ার করতে ট্রাই করল আরকি! ওহীর মতো চিন্তাগত সাবজেকটিব সততা, সেইটা তো নাই আসলে উনার চিন্তায়- তাইলে সেই চেষ্টাই বা ক্যান! আরেকটা পয়েন্ট বলি। বেশি কথা খরচ করা এই বহির জন্য কামের কাজ হইবে না। আপনি যদি এই চিন্তা শুরু থেকেই করতে বসেন যে আপনে মাক্সিম লেখবেন, তাইলে এই মাক্সিম আপ্নারে ফ্যালাসির দিকে লইয়া লাবে। আয়োজন কইরা মাক্সিম লেখার আইডিয়াও একটা কন্সটিটিউশনাল বেকুবির মতো অ্যাক্ট; ক্রিয়েটিভ জোনে। :)
This book is full with his quotes from all of the books he had written in his whole life. Sharp and brave sentences that actually shows the real face of Bangladeshi nationalism, extremism, fanaticism and so on.
কিছু প্রবচন আগেই জানা ছিল অতি বিখ্যাত হওয়ার কারণে। বেশির ভাগ ভালো লাগলেও কিছুর সাথে একমত হতে পারিনি। রাজনীতি, ধর্মান্ধ, বাঙালি বা সময়ের প্রতি আফসোস বা ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই নিজেকে বলেছেন, "আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।"
বরাবরের মতই তীক্ষ্মধার লেখনী। "দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম প্রেম ব'লে কিছু নেই। মানুষ যখন প্রেমে পড়ে, তখন প্রতিটি প্রেমই প্রথম প্রেম। " "গাধা একশ বছর বাঁচলেও সিংহ হয় না" "সবচেয়ে হাস্যকর কথা হচ্ছে, একদিন আমরা কেউ থাকব না" "পৃথিবীতে যতোদিন অন্তত একজনও প্রথাবিরোধী মানুষ থাকবে, ততো দিন পৃথিবী মানুষের "