What do you think?
Rate this book


Paperback
First published February 1, 1994
"আলো-অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে(বোধ)
স্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে;
স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়- ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়;
আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
সব কাজ তুচ্ছ হয়- পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা- প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয় ।
...
সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে ।
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো; তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর; কোনো নিশ্চয়তা
কে জানিতে পারে আর ? শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর ? প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার ।
...
স্বপ্ন নয়,- শান্তি নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে ।
পথে চ'লে পারে- পারাপারে
উপেক্ষা করিতে চাই তারে;
মড়ার খুলির মতো ধ'রে
আছাড় মারিতে চাই, জীবন্ত মাথার মতো ঘোরে
তবু সে মাথার চারিপাশে,
তবু সে চোখের চারিপাশে,
তবু সে বুকের চারিপাশে,
আমি চলি, সাথে সাথে সেও চ'লে আসে ।
আমি থামি,-
সেও থেমে যায়;
...
মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়- প্রেম নয়- কোনো এক বোধ কাজ করে ।
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চ'লে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে :
সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয় !
অবসাদ নাই তার ? নাই তার শান্তির সময় ?
কোনোদিন ঘুমাবে না ? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবে না কি ? পাবে না আহ্লাদ
মানুষের মুখ দেখে কোনোদিন !
মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন !
শিশুদের মুখ দেখে কোনোদিন !"
"সেই মেয়েটা এর থেকে নিকটতর হলো না;(হাজার বর্ষ আগে)
কেবল সে দূরের থেকে আমার দিকে একবার তাকালো
আমি বুঝলাম
চকিত হয়ে মাথা নোয়ালো সে
কিন্তু তবুও তার তাকাবার প্রয়োজন--সপ্রতিভ হয়ে
সাতদিন-আটদিন-ন'দিন-দশদিন
সপ্রতিভ হয়ে--
সমস্ত চোখ দিয়ে আমাকে নির্দিষ্ট করে
অপেক্ষা করে--
সেই মেয়েটা এর চেয়ে নিকটতর হলো না ।
কারণ, আমাদের জীবন পাখির মতো নয়
যদি হতো
সেই মাঘের নীল আকাশে
(আমি তাকে নিয়ে) একবার ধবলাটের সমুদ্রের দিকে চলতাম
গাংশালিকের মতো আমরা দু'টিতে ।
আমি কোনো এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছি...
তুমি কোনো এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছো...
হয়তো হাজার-হাজার বছর পরে
মাঘের নীল আকাশে
সমুদ্রের দিকে যখন উড়ে যাবো
আমাদের মনে হবে
হাজার-হাজার বছর আগে আমরা এমন উড়ে যেতে চেয়েছিলাম ।"
"শরীরে এসেছে স্বাদ বসন্তের রাতে,(পাখিরা)
চোখ আর চায় না ঘুমাতে;
জানালার থেকে ওই নক্ষত্রের আলো নেমে আসে,
সাগরের জলের বাতাসে
আমার হৃদয় সুস্থ হয়;
সবাই ঘুমায়ে আছে সবদিকে-
সমুদ্রের এই ধারে কাহাদের নোঙ্গরের হয়েছে সময় ?
... ...
আজ এই বসন্তের রাতে
ঘুমে চোখ চায় না জড়াতে;
ওই দিকে শোনা যায় সমুদ্রের স্বর,
স্কাইলাইট মাথার উপর,
আকাশে পাখিরা কথা কয় পরস্পর ।"
"আমার এ-গান(সহজ)
কোনোদিন শুনিবে না তুমি এসে-
আজ রাত্রে আমার আহ্বান
ভেসে যাবে পথের বাতাসে,
তবুও হৃদয়ে গান আসে ।
ডাকিবার ভাষা
তবুও ভুলি না আমি-
তবু ভালোবাসা
জেগে থাকে প্রাণে;
পৃথিবীর কানে
নক্ষত্রের কানে
তবু গাই গান;
কোনোদিন শুনিবে না তুমি তাহা, জানি আমি-
আজ রাত্রে আমার আহ্বান
ভেসে যাবে পথের বাতাসে-
তবুও হৃদয়ে গান আসে ।"
"কারা কবে কথা বলেছিলো ।(কারা কবে)
ভালোবেসে এসেছিলো কাছে,
তারা নেই, তাদের প্রতীক হয়ে তবু
প্রাচীন কয়েকটি গাছ আছে;
নক্ষত্ররা রয়ে গেছে নদীর উপরে
চারিদিকে প্রান্তর ও ঘাস,
দু-চারটে ঘরবাড়ি নীড় ও শিশির
কূলে-কূলে একলা আকাশ ।
তারা ছিলো, তারা কেউ নেই;
মনে করে জীবন তবুও তার নিবিড় বিনয়ে
নিজেকে আগুনে ক্ষয় করে জেগে থাকে
স্থির, আরো স্থির আলোকের মত হয়ে ।"
"জানি - তবু জানি(আট বছর আগের এক দিন)
নারীর হৃদয়-প্রেম-শিশু-গৃহ-নয় সবখানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয়-
আর এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হ'য়ে শুয়ে আছে টেবিলের পরে ।
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে বসে এসে,
চোখ পাল্টায়ে কয়: ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে ?’
চমৎকার !
ধরা যাক দু-একটা ইঁদুর এবার-
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার ?
আমিও তোমার মতো বুড়ো হবো - বুড়ি চাঁদটারে আমি
ক’রে দিবো কালীদহে বেনোজলে পার;
আমরা দুজনে মিলে শূন্য ক’রে চ’লে যাবো জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।"