হুমায়ুন আজাদের 'সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে'র বিষয় নারীপুরুষের শারীরিক ও হৃদয়সম্পর্কের কাঠামোটি। নারী পুরুষ পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে, এটা তাদের নিয়তি; এবং আরো মর্মান্তিক নিয়তি হচ্ছে তাদের আকর্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হবেনা। অসামান্য গদ্যে হুমায়ুন আজাদ এ উপন্যাসে উদ্ঘাটন করেছেন নারী পুরুষের সম্পর্কের নিয়তি- সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে।
Humayun Azad (Bangla: হুমায়ূন আজাদ) was a Bangladeshi author and scholar. He earned BA degree in Bengali language and literature from University of Dhaka. He obtained his PhD in linguistics from the University of Edinburgh in 1976. He later served as a faculty member of the department of Bengali language and literature at the University of Dhaka. His early career produced works on Bengali linguistics, notably syntax. He was regarded as a leading linguist of the Bangla language.
Towards the end of 1980s, he started to write newspaper column focusing on contemporary socio-political issues. Through his writings of 1990s, he established himself as a freethinker and appeared to be an agnostic. In his works, he openly criticized religious extremism, as well as Islam. In 1992 Professor Azad published the first comprehensive feminist book in Bangla titled Naari (Woman), largely akin to The Second Sex by Simone de Beauvoir in contents and ideas.
The literary career of Humayun Azad started with poetry. However, his poems did not show any notable poetic fervour. On the other hand his literary essays, particularly those based on original research, carried significant value.
He earned a formidable reputation as a newspaper columnist towards the end of 1980s. His articles were merciless attacks on social and political injustice, hypocrisy and corruption. He was uncowed in protesting military rule. He started to write novels in 1990s. His novel Chappanno Hazar Borgomile is a powerful novel written against military dictatorship. Azad's writings indicate his distaste for corrupt politicians, abusive military rulers and fundamentalist Islam. Nevertheless, his prose shows a well-knit and compact style of his own. His formation of a sentence, choice of words and syntax are very characteristic of him. Although he often fell victim to the temptation of using fiction as a vehicle of conspicuous political and philosophical message, he distinguished himself with his unique style and diction.
On August 11, 2004, Professor Azad was found dead in his apartment in Munich, Germany, where he had arrived a week earlier to conduct research on the nineteenth century German romantic poet Heinrich Heine. He was buried in Rarhikhal, his village home in Bangladesh.
In 2012, the Government of Bangladesh honored him with Ekushey Padak posthumously. Besides this, he was honored with Bangla Academy Award in 1986.
উপহাস যিনি করেন, প্রচলিত সমাজের নিয়ম অনুসারে ধরেই নেয়া হয়, তিনি, যাকে উপহাস করলেন, তার চেয়ে অনেক বেশী বুদ্ধি ধরেন। বুদ্ধিমত্তার এই পার্থক্যই উপহাসকারীর ভেতরে উপহাসিত ব্যক্তির ওপর এক ধরনের অধিকারবোধের জন্ম দেয়; নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হবার অধিকার। মানব চরিত্রে যুগ যুগ ধরে এটিই আচরিত হয়ে আসছে। এ কারণেই কাউকে মুখ ভেংচি কাটলে মানুষ অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে, কিছুটা বিপন্ন অনুভব করে, আর মনে মনে হয়ত ভেংচি কেটে দেয়া ব্যক্তির সাথে নিজের বুদ্ধিমত্তার কোথাও বেশকম হয়ে গেলো কী না তা হিসেব করতে থাকে। ভেংচি খাওয়ার দলে কেউ আসলে থাকতে চায় না। সবাই মুখ ভ্যাংচাতেই চায়। আবার, সমাজে এমন এক শ্রেনীর মানুষও আছেন যারা তাদের সকল ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, উপহাস ও মুখ ভ্যাংচানিকে একটি বিন্দুতেই কেবল কেন্দ্রীভূত করেন। সেই বিন্দুটি হল যৌনতা। পৃথিবীর যে কোন ভাষায়ই কাউকে অপমানের চূড়ান্ত করতে হলে যৌনতাকেই টেনে আনতে হয়। সবচেয়ে খারাপ খারাপ গালিগুলো যৌনতা কেন্দ্রিক। সবচেয়ে মুখরোচক নিন্দা যৌনতা কেন্দ্রিক। অপমান করবার সংক্ষিপ্ততম রাস্তা, সেও যৌনতা কেন্দ্রিক-ই। খালি গায়ে শর্টস পরে ক্লাসরুমে যাওয়াটাকে সমাজ যেমন নিন্দনীয় হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে, তিরস্কারের অস্ত্র হিসেবে যৌনতার ভাষাও ঠিক একইভাবে অরুচিকর বলেই নির্ধারিত হয়েছে। যৌনতা সংক্রান্ত শব্দের প্রয়োগে বিদ্রুপ করাটায় খুব একটা মেধার প্রয়োজন আসলে পড়েনা। মানব শরীরের তিন-চারটি প্রত্যঙ্গের নাম ও তাদের সমার্থক কয়েকটি শব্দ জানলেই চলে। বাকিটা কেবল বিদ্রুপের লক্ষ্য ব্যক্তির পরিবারের সদস্য-সদস্যাদের সাথে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যে কারো সাথে কাল্পনিক যৌনক্রিয়া ঘটিয়ে সেই শব্দগুলোর যথার্থ প্রয়োগ মাত্র। যৌনতার বুদ্ধি সকল প্রাণীরই সহজাত বুদ্ধি। বিনা আয়াসেই এ বুদ্ধির উদ্ভব ঘটানো সম্ভব। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ যদি মানুষের বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক হয়, ব্যঙ্গের সকল উপকরণকে যৌনতায় কেন্দ্রীভূত করাটা চিন্তার সীমাবদ্ধতার পরিচায়ক।
‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’ হুমায়ূন আজাদের ‘প্রচ্ছন্ন ব্যঙ্গ’ উপন্যাস। হাসির উদ্রেককারী একটি বাক্যও এখানে নেই। আছে শুধুই নিরেট কাঠখোট্টা ব্যঙ্গে মানব চরিত্রের যৌনকাতর সত্ত্বাটির বিশ্লেষণ। উত্তম পুরুষে বর্ণিত গল্পের নায়ক মাহবুব একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, ব্রিজ বানানো যার পেশা। সেতু বলার চেয়ে ব্রিজ বলাটাই তার কাছে শ্রেয়তর। নদীর ওপর ব্রিজ বানাতে বানাতে মাহবুব একসময় মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্রিজ দেখতে পায়। প্রতিটি সম্পর্কই আসলে এক একটি ব্রিজ, যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে মানবিক বোধগুলো। কিন্তু মানুষ যখন প্রবল ভাবে যৌনতৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠে, সম্পর্কের ব্রিজ গুলোকে সব একে একে ভেঙ্গে পড়তে দেখে মাহবুব, ভেঙ্গে যায় তার মানবিক বোধগুলো। এই ভেঙ্গে পড়ার গল্পটিকে ফোটাতে হুমায়ূন আজাদ ব্যবহার করেছেন তাঁর একান্ত নিজস্ব ঘরানার গদ্যের। মাহবুবের যৌনকাতরতার ভেতর দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন সমাজের চিত্রটা, যেখানে কমবেশী সবাইই একইরকম তৃষ্ণার্ত। হুমায়ূন আজাদের ব্যঙ্গের ধরণটা তাঁর নিজের মতই। সরাসরি কথার আধিক্য বেশী, তবে খুব শ্রতিমধুর কিছু নয়। শিল্পিত কিছু তো নয়ই। প্রচুর অপ্রাসঙ্গিকতা এবং ভাবালুতা আছে উপন্যাসে, একটা সময়ে যা বিরক্তির উদ্রেক করে। বাড়ীর কাজের মেয়ে কদবানুর “বুকের দুটি পেঁপে” কিংবা মাহবুবের হস্তমৈথুন কে “মধুর চাক ভেঙ্গে মধু বের করা” নাম দিয়ে তার হাস্যকর বর্ণনা দিয়ে উপন্যাসকে দীর্ঘায়িত করেছেন। এ ধরনের ভাষার প্রয়োগ খুব বেশী নেই মূলধারার প্রচলিত সাহিত্যে, সেটিরই সুযোগ লেখক নিতে চেয়েছিলেন কী না কে জানে! প্রায়ই মনে হয়েছে স্রেফ এই শব্দগুলোর প্রয়োগের উছিলাতেই ১৪৪ পৃষ্ঠার উপন্যাস তিনি লিখেছেন!
হুমায়ূন আজাদের পর্যবেক্ষণ বেশ তীক্ষ্ণ, এটি তিনি নিজেও খুব ভালো উপলব্ধি করতে পারতেন এবং তা প্রকাশ করার ব্যাপারে তাঁকে প্রায়শয়ই বেশ উদগ্রীব ঠেকেছে। এ কারণেই উপন্যাসের বিভিন্ন অংশ কেবল তাঁর পর্যবেক্ষণ শক্তির প্রদর্শনী-ই, সাহিত্য সেখানে কমই ছিলো।
প্রিটেনশন, ভাবালুতা, পর্যবেক্ষণ, মানব চরিত্রের বিশ্লেষণ, সব মিলিয়ে ভালো মন্দ দুই-ই ছিলো ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’-তে, তবে আমার বিচারে মন্দ দিকই বেশী লেগেছে। লেবু বেশী কচলালে তিতা হয়, অনর্থক যৌনতা উপন্যাসটিকে নোংরাই করেছে কেবল।
বিশেষ সতর্কীকরণঃ ১৮ বছরের নিচে কিশোর কিশোরীদের এই বইটি নিজ দায়িত্বে পড়তে হবে। বাবা-মা টের পেলে তাদেরই পিঠের ওপর সব কিছু ভেঙ্গে পড়তে পারে!
এই পোস্টের উদ্দেশ্য কোন ধরণের রিভিউ দেয়া নয়, পাঠ প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে। সামগ্রিকভাবে হুমায়ুন আজাদ পড়ে আমার যে অনুভূতি গুলো হয়েছে তা লেখার চেষ্টা করেছি। হুমায়ুন আজাদ আমার প্রিয় না অপ্রিয় লেখক সে বিষয়ে আমি ঠিক নিশ্চিত নই। তবে তাঁর উপন্যাস ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল’ আর ‘মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ’ সহ বেশ কিছু প্রবন্ধ আমার পড়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় পড়লাম ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’। বইটা শেষ করার পর প্রথম যে চিন্তাটা আমার মাথায় ঘোরাফেরা করছে তা হল, বই এর ওপরে প্যারেন্টাল গাইডেন্স বা কে বা কারা পড়তে পারবে সে সম্পর্কিত চিহ্ন বা কথা থাকা দরকার। বইটির প্রাসঙ্গিক/ অপ্রাসঙ্গিক এডাল্ট কন্টেন্টের জন্য এ কথা তুলছিনা, সত্যি বলতে যৌনতা কোথায় প্রাসঙ্গিক আর কোথায় তা অপ্রাসঙ্গিক সে সম্বন্ধে আমার ধারণা পরিস্কার নয়। আমার কাছে মনে হয়েছে স্বভাবের দিক থেকে আজাদের প্রত্যেকটি বই-ই বিষন্নতায় পরিপূর্ণ। মানুষের বাচ্চা বিয়ানোর প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তার প্রত্যেকটি আচার-আচরণ, চলাফেরা লেখকের অপছন্দনীয় এবং তা থেকে পাঠকের মনে বিষয়গুলো আদতেই কুৎসিত এমন ধারণা জন্মাতে পারে। এটা অবশ্য ঠিক যে হুমায়ুন আজাদের লেখার যা ধরণ তাতে একজন মাইনর হয়তো পুরো বইটা পড়ার আগ্রহ পাবেনা কিন্তু অতি আগ্রহী কোন শিশু পাঠক যদি দুর্ভাগ্যক্রমেও তার একটা বই পড়ে ফেলে তবে সেটা ঐ পাঠকের জন্য খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হয় না। লেখকের ‘মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ’ আমি পড়েছিলাম মানসিকভাবে পরিপূর্ণ হয়ে বেড়ে ওঠার আগে। বইটা নিতে আমার বেশ কষ্টই হয়েছিল। একই কথা পরিণত কিন্তু মানসিক ভাবে অপ্রাপ্তবস্ক পাঠকের বেলাতেও প্রযোজ্য। এবার আসি ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’র ব্যাপারে। বই এর সারকথা এর নামের মধ্যেই আছে। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষের সম্পর্ক, তা সে পারিবারিক কিংবা অপারিবারিক যেটাই হোক না কেন, কত ঠুনকো তা তুলে ধরাই এর প্রধান উদ্দেশ্য বলে মনে হয়েছে। বাবা মা, স্বামী স্ত্রী কিংবা প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্কগুলোর আড়ালে মানুষগুলো মূলতঃ একা। সম্পর্কের ভিত্তিটা যত মজবুতই হোক না কেন, যে কোন কাঠামোর মতই একটি নির্দিষ্ট সময় পর সম্পর্কের কাঠামোটাও ভেঙ্গে পড়বে প্রকৃতির নিয়মেই।
গোটা বইটা পড়তে বেশ সময় লেগেছে। হুমায়ুন আজাদের অন্যান্য বইগুলোর মতই এ বইও অনেক হেয়ালিতে ভরা কিন্তু তার চাইতেও বেশি সমস্যা উৎপাদন করেছে হুমায়ুন আজাদের সরল ও সরাসরিভাবে বলা সত্য কথাগুলি। বই এর মূল ���জাটাও সেখানেই মনে হয়েছে। পাঠক হিসেবে আমি বেশ দুর্বল চিত্তের। তাই, আজাদের সরল কিন্তু ধারালো বক্তব্য গুলো নিতে আমার বেশ সময় লেগেছে বৈকি। হুমায়ুন আজাদের বই পড়লে আমার নিরর্থক মানব জীবন আরো বেশি অর্থহীন মনে হয়। আশেপাশের সবাইকে অসৎ আর কুটিল মনে হতে থাকে। বই এর সব কিছুকে মিথ্যা ভাবতে ভালো লাগে কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয় এমন কিছু কি আমি কখনো আমার আশেপাশে ঘটতে দেখি নাই? লেখকের অন্যান্য বই এর মত এই বই ও আমাকে এ নিয়ে ‘ডিলেমা’র মধ্যে ফেলেছে। বরাবরের মতই হুমায়ুন আজাদের নিজস্ব ভঙ্গিমায় লেখা এ বই বিষয়বস্তুর দিক থেকে আমার পছন্দ হয় নাই (লেখকের অন্যান্য বই গুলোর মতই), কিন্তু অপ্রিয় কথা গুলো কাউকে বলতে দেখলে ভালো লাগে। অন্তত এই কথা গুলো আর কেউ এভাবে বলে নাই। অপ্রিয় সত্য গুলো বলার জন্য কারো থাকার প্রয়োজন রয়েছে। হুমায়ুন আজাদের বই হিসেবে ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’ গতানুগতিক। আমার কাছে উপন্যাসটির এমন কোন কিছু চোখে পড়েনি যা দ্বারা এটিকে লেখকের অন্য উপন্যাস থেকে আলাদা করা যাবে। কিন্তু হুমায়ুন আজাদ পড়তে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য এটি রিকমেন্ডেড।
ইয়েটসের "দ্যা সেকেন্ড কামিং" কবিতাটা পড়ার সময় মনে পড়লো হুমায়ুন আজাদের "সবকিছু ভেঙে পড়ে" নামে একটা উপন্যাস আছে। সে হিসেবেই পড়ে ফেলা। বইয়ের শুরুটা বেশ সুন্দর। কাব্যিক, মোহময় বর্ণনা। পড়তে বেশ লাগছিলো। কিন্তু অতিরিক্ত কাব্যিক বর্ণনা এবং একটা কথাকে অযথাই তিন চারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনার ফলে এটা একটা অত্যন্ত বিরক্তিকর উপন্যাসে পরিণত হয়। যৌনতার অতিরিক্ত কচলাকচলির কারণে এটাকে সাহিত্য কম আবর্জনা বেশি মনে হয়েছে। এখন পর্যন্ত পড়া এটাই হুমায়ুন আজাদের সবচেয়ে বাজে লেখা৷
হুমায়ূন আজাদের ভাষা আশ্চর্য সুন্দর। কিন্তু এই তীব্র এবং কিছু ক্ষেত্রে অসহনীয় কদর্য কিছু সত্যের প্রকাশে এমন সুন্দর ভাষার প্রয়োগ বড়ই বিস্ময়কর! কিছু বই পড়লে সবকিছু অবিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে, বিষণ্ণতা গলা চেপে ধরতে আসে। এটি তেমনই এক উপন্যাস। রেটিং এর ধোঁয়াশা থেকে রেটিং দিলাম না।
বেশ অনেক দিন পর আরেকটা বই পড়লাম। হুমায়ূন আজাদের 'সব কিছু ভেঙে পড়ে'। মানুষ অনেক বিচিত্র। চিন্তাভাবনা, আইডিওলজি...সবকিছুই আলাদা একজন থেকে অন্যজনের। আরেকটা ব্যাপার আলাদা। সম্পর্ক! চোখে দেখতে না পেলেও এই একটা বিশ্বাসে পৃথিবীবাসি বিশ্বাসী। লেখক বইটা লিখেছেন আসলে সম্পর্ক কে ঘিরেই, কিংবা বলা যায় ভেঙে পড়তে থাকা সম্পর্ক গুলোকে ঘিরে। গভীর একটা অনুভূতি দিতে চেয়েছেন লেখার মাধ্যমে, কারণ সম্পর্কের মতো ঘোলা আবার তীব্র কিছু পৃথিবীতে নেই। এমন কিছু রূপক আর এমন কিছু ব্যাপার আছে এখানে যেটা আমরা কেউ সচরাচর বলিনা, বলতে পারিনা আসলে। বইয়ের যৌনতা নিয়ে কিছু বলব না। এটার মাপকাঠি কতটুকু থাকলে ভালো, আমার ধারণা নেই। তবে লেখক মনে হয় এর মাধ্যমে ভেতরের স্পর্শকাতর ব্যাপার তুলে ধরে হালকা ব্যাঙ্গ করতে চাইলেন। লেখক স্পর্শকাতর ব্যাপার নিয়েই মনেহয় লিখতে পছন্দ করেন। যাইহোক, ভিন্ন চিন্তাভাবনা আমার ভালো লাগে। তবে আমি হয়তো আরেকটু অন্যরকম আশা করেছিলাম। বইটার নিগুঢ় বক্তব্য মনে হয় আরও অল্প কথায় বলা যায়। তবে পড়তে ভালো লেগেছে।
বিষন্নতা দিয়ে শেষ হলো। হুমায়ুন আজাদ বইটিতে সমাজ বাস্তবতার একটি অন্ধকার দিক তুলে ধরেছেন, যা নিয়ে সচারাচর কেউ লিখে না, নিষিদ্ধ মনে করে। ব্যাপারগুলো অতি স্বাভাবিক। অনেকের জীবনেই এসব ঘটে যায়, তবে কোথাও প্রকাশ পায় না। সম্পর্কের সৌন্দর্যে আমরা পুলিকত হই। কিন্তু, কুৎসিত বাস্তবিকতা চোখে ধরা দেয় না। বইটি সেই কুৎসিত বাস্তবতাকে ঘিরেই লেখা।
নারী পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে আমার পড়া (এখন পর্যন্ত) সেরা বই 'সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে'। বইটিতে আমাদের বাস্তব চরিত্রগুলোর নগ্ন এবং নির্মোহ উপস্থাপন হয়েছে। যদিও কয়েকবার মনে হয়েছে, মাঝে মাঝে একটু নারীদের প্রতি পক্ষপাত করা হয়েছে, পুরুষদের আবেগটাকে অবহেলার চোখে দেখা হয়েছে।
মাহবুব নামের এক প্রকৌশলীর গল্প যে ব্রিজ বানায়। কিন্তু এই ব্রিজে সে এতটাই মগ্ন যে পার্থিব সবকিছুকে তার কেবল ব্রিজ বলেই মনে হয়। সমাজ, দেশ, ধর্ম, দাম্পত্যসঙ্গী, আত্মীয়-স্বজন এসবকে তার মনে হয় নদীর বিপরীত পাড় আর সে নিজে নদীর এই পাড়, ব্রিজ যেমন নদীর দুই পাড়কে জোড়া দেয় তেমনি এসবের সাথে তার সম্পর্ককেও সে ব্রিজ হিসেবে দেখে। ব্রিজের সাথে এসব সম্পর্কের সে আরেকটা মিল দেখতে পায়, ব্রিজ যেমন একদিন ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য তেমনি তার কাছে মনে হয় সকল সম্পর্কও ক্ষণস্থায়ী নারী পুরুষের আকর্ষণকে সে স্বাভাবিকভাবেই দেখে কিন্তু এটাও মনে করে সকল আকর্ষণই ক্ষণস্থায়ী। তাইতো প্রেম তার কাছে শরীরের সাথে শরীরের যোগ, মন সেখানে কাবাব মে হাড্ডি!
প্রতিক্রিয়া বলতে গেলে বলব একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে বইটা পড়ে। চমৎকার লেগেছে বিষয়বস্তুটা কিন্তু যার বয়ানে গল্পটা বলা হয়েছে সে একজন আদিম মানুষ, শরীর আর যৌনতাই যার একমাত্র আরাধ্য। ফলে চমৎকার এই বিষয়টা নিস্ফল হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। শরীরই আসল, মন সেখানে কাবাবের হাড় বা নারী-পুরুষের মিলনই জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ এমন মানসিকতা যে চরিত্র ধারণ করে তার কাছ থেকে সম্পর্কের প্রকৃতি,ভবিষ্যৎ, কারণ বোঝার আশা করাও অনর্থক মনে হয়েছে আমার কাছে। কোনো এক রিভিউয়ে পড়া এক ভাইয়ের বক্তব্যকে শব্দান্তরিত করে ( প্যারাফ্রেজ) বলতে গেলে বলতে হয় আমি ভেজিটেবল রোল খেতে চেয়েছিলাম কিন্তু পেলাম শুধু পেয়াজ! ( পেয়াজকে ভেজিটেবল মনে করলে তো হয়েই গেল!)
কিছু কিছু শব্দ বা বাক্য বাদ দিলে রওশনের সাথে প্রেমের বর্ণনাটুকু ছিল বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ। কিন্তু রওশন ওকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মাহবুব যা করেছে তা বিকৃত মানসিকতাই মনে হয়েছে, যেন রওশনের উপর একধরনের প্রতিশোধ নিতে মেয়েদের শুধু ভোগ করে যাওয়া! পতিতা, অন্যের স্ত্রী, কাজের মেয়ে, এক কলেজ শিক্ষিকা, নিজের পি.এস সবাইকে সে শুধু শরীরের প্রয়োজনেই কাছে টেনেছে কারও সাথে জড়িয়ে পড়ে নি ( মাসুদ রানার আরেক ভার্সন আর কি!)। স্তনকে পাকা পেপে, হস্তমৈথুনকে মধুর চাঁক ভাঙ্গা, স্ত্রীকে মিলনের জন্য ডাকাকে ‘ একটা রাবার ( কনডম অর্থে) নামাও', শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে অদ্ভুত সব নামে ডাকা ফালতুই মনে হয়েছে বলতে গেলে। ব্রিজে ফাটল ধরলে ব্রিজ মেরামতের পরিবর্তে এক ধ��ক্কায় ভেঙ্গে দিয়ে পাশেই আরেকটা ব্রিজ বানানোর যে সমাধান মাহবুব দিয়েছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য মনে হয় নি আমার কাছে। মা-মেয়েকে একগামী করা বা বাবা-ছেলেকে একগামী করার চিন্তাও সহ্য করতে পারে নি আমার সংকীর্ণ মন।
এককথায় বলতে গেলে বলব, এটা চিরন্তন কোনো সম্পর্কের বিশ্লেষণ নয় বরং এক যৌনকাতর আদিম মানুষের সম্পর্ক নিয়ে ভাবনা।
প্রাঞ্জলবাক্য: জলের ওপর ধুঁয়োর মতো কুয়াশা উড়ছিল। আমি বেড়ে উঠেছি সবুজের ভেতর, আমাকে ঘিরে ছিল গাছপালা
পাঠপ্রতিক্রিয়া: পুরো বই যৌনতার শিল্প। হুমায়ুন আজাদ পড়তে এজন্য বুঝি নিষেধ করা হয়। এ বই না পড়লে লেখককে এত নিবিড়ভাবে চিনতাম না। একেকটি বাক্যে ফুটে উঠেছে তার গভীরতম বর্ণনা। যা যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে আঁকড়ে ধরবে।
উপন্যাসের মূল চরিত্রে ছিল মাহবুব। যিনি পেশায় একজন ইঞ্জিয়ার। ব্রিজ নির্মাণ তার প্রধান কাজ। আর তার কাজ নিয়েই তার জীবনের উপমা। অর্থাৎ ব্রিজ, সাঁকো, পুল দিয়ে তিনি নারী-পুরুষের কামের ফিরিস্তি টেনেছেন।
আট বছরের মাহবুবের চোখে সকালে নতুন বউটির গোসল নিয়ে প্রশ্ন জাগে। জাগে কাজের মেয়েটির প্রতি কামনা। একে একে তিনু আপা, শেফালিদি, রওশনকে স্বপ্নে এঁকে কাটে তার শৈশব। মাহবুব বেড়ে ওঠে। স্ত্রী ফিরোজার সঙ্গে তার যায় না। সে অন্য ফুল খোঁজে। খোঁজে আসল মধু। জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে মাহবুব উপলব্ধি করে তার মৌচাকের মধু শুকিয়ে এসেছে। সে নিঃসঙ্গবোধ করে। একলা হয়ে পড়ে।
বইটির বিষয় ব্যক্তিগত মতামত বলতে গেলে বলবো এ সকল বই না পড়া উচিত। লেখকের এর আগে দু'তিনটে বই ছুঁয়েছি। বুক পকেটে জোনাকি, জলপাই রঙের অন্ধকার পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে বিদ্বেষের ঝুড়ি। এরপর 'ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না' বইটি পড়ে যারপরনাই মুগ্ধ হয়েছিলাম। সেইজন্য 'সব কিছু ভেঙে পড়ে' বইটি আগ্রহ করে হাতে নিয়েছিলাম। এখন দোষ আওড়ালেও সত্যি বলতে বইটির শেষ অবধি লেখক আমায় টেনে নিয়েছেন। এটা হয়তো তার সার্থকতা।
বইটা পড়ে শেষ করলাম একরাশ মুগ্ধতা, মাধুর্যতা, তিতিক্ষা, রাগ, ভালোলাগার মিশ্র অনুভূতি নিয়ে৷ লেখকের মূল কথা হলো নারী পুরুষের কোনো সম্পর্কই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। সেটা একসময় হয় আকর্ষণ হারাবে, নয়তো সম্পর্ক খারাপ হবে, অথবা পুরো মানুষটাই হারিয়ে যাবে। এ পর্যায়ে লেখক এসে পাঠককে একটি ডিলেমায় ফেলে দেন।
(এক্সিস্টেনশিয়াল ক্রাইসিসের জন্য) আমাদের মনের প্রবৃত্তিই এমন, যে আমরা খুব তীব্রভাবে মনে করি, আমাদের সম্পর্ক গুলো আজীবন অটুট থাকবে৷ কিন্তু লেখকের এই 'সেতুগুলো ভেঙে পড়ার' দাবি যখন পর্যালোচনা করি, তখন দেখি কথাটা প্রায় পুরোপুরিই সত্য৷ কিন্তু আসলেও কি সত্য?
আমি মনে করি এটা পুরোপুরি সত্য না। কারণ আকর্ষণকে অতিক্রম করেও ভালোবাসা থাকে। আকর্ষণ কমতে, বা বাড়তে পারে৷ কিন্তু ভালোবাসা থাকে। সেই অর্থে সম্পর্কও থাকে।
লেখকের যে সম্পর্কটি টিকে থাকার অনেক বেশি পোটেনশিয়াল ছিলো, সেই সম্পর্কটি তিনি এক্সপ্লোর করার সুযোগ পান নি। তাই উনার এই দাবির একটি ফাঁক সেখানে থেকেই যায়। হয়তো সম্পর্কটা থাকলে তার সব কিছু ভেঙে পড়তো না।
একজনের রিভিউতে পড়েছিলাম, বইটা কোন বয়সে পড়তে পারবে সেটার একটা অ্যালার্ট থাকা উচিত। আমিও তাই মনে করি। আমি কিশোর বয়সে বইটি একবার পড়তে গিয়ে দুই লাইন ও আগাতে পারিনি। একটা সারটেন ম্যাচুরিটি না থাকলে বইটা ঠিকঠাক উপলব্ধি করা যায় না।
আমার পড়া প্রথম উপন্যাস হুমায়ুন আজাদ এর "সবকিছু ভেঙে পড়ে"(যদিও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে উপন্যাসটি নয়)। যাহোক, উপন্যাসটির মূল বিষয় হলো নারী পুরুষের সম্পর্ক এবং এসম্পর্কিত জটিলতা। উপন্যাসের প্রথমাংশে লেখক উত্তমপুরুষে একজন কিশোর ছেলের নিজের চাহিদা এবং অনুভূতিগুলোর সাথে নতুনভাবে পরিচিত হওয়ার দিকটি খুবই সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বিশেষ করে একজন কিশোরের প্রথম প্রেম, নিজের শরীরের ব্যাপারে নতুনভাবে জানতে পারা এবং অপরাধবোধ লেখক চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন। পরের অংশে তিনি এই কিশোর এর প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার বিষয়টি এবং পারিপার্শ্বিক সমাজের বর্ণনা করেছেন। যাহোক, বইটি তাদের জন্যে নয় জারা অশ্লীলতা এড়িয়ে যেতে চান। আমার মতে যে লেখক নিজের লেখায় অশ্লীলতা এড়িয়ে চলেন তিনি সমাজের মূল সত্যটাই প্রকাশ করলেন না। আমি মনে করি এই উপন্যাসটি সমাজের অনেক অন্ধকার দিককে খুবই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে। হুমায়ুন আজাদ এর লেখনি প্রচলিত লেখকদের মতো নয়। বিশেষ করে তার উপমার ব্যাবহার এবং কাহিনি বর্ণনা করার ধরন সকলের পছন্দ হবে বলে মনে করি না। কিন্তু আমার মনে হয় এই লেখার শৈলী তার লেখাকে নতুনত্ব দিয়েছে, এবং এইজন্য তিনি প্রশংসার দাবিদার।
হুমায়ুন আজাদের "সব কিছু ভেঙে পড়ে" উপন্যাসটি পুরোটাই মানুষ্য যৌনতাকে ঘিরে রচিত। বইটির বেশির ভাগ অংশেই চরম বাস্তবতাকে নির্দেশ করে। মূল চরিত্র মাহবুব একজন সেতু প্রকৌশলী,সে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক ও দৈহিক সম্পর্ককে সেতুর কাঠামোর মত দেখতে পায়। প্রত্যেকটি কাঠামো, স্থাপনা যেমন একসময় ভেঙে পড়ে, তেমন মানুষের মৌনিক এবং দৈহিক চাহিদাও ভেঙে পড়ে। শরীর শরীর চায়, এবং একটি শরীর শুধু আরেকটি শরীর নিয়েই চিরকাল সজীব থাকতে পারে না, তার সীমাবদ্ধতা আরো বাড়তে থাকে, ভিন্ন শরীরের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। কিন্তু মানুষ তা বুঝতে দেয়না, মানুষ বাইরে একরকম ভেতরটা অন্যরকম, মানুষের ভেতরটাই সত্য; কিন্তু ভেতরটা কেউ দেখতে দেয়না। মানুষ এমন এক প্রাণী যা কোন ছক অনুসারে চলতে পারে না। কিন্তু মানুষ ছকের কথা বলতে, আর ছক তৈরি করতে পছন্দ করে। বইটির যে অংশটি আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে তা হলো মাহবুব এবং রওশনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি গুলো। ভাষায় না প্রকাশ করতে পারা ব্যাপার গুলো লেখক যেন ভাষা দিয়ে প্রকাশ করেছেন। বি:দ্র: বইটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য
বই: সব কিছু ভেঙে পড়ে লেখক: হুমায়ূন আজাদ প্রকাশনা: আগামী রেটিং: ২.৫/৫.০ পৃষ্ঠা: ১৪৪
খুব একটা ভালো লেগেছে বলাটা ভুল হবে। একজন ছেলের ছোটবেলা থেকে মধ্যবয়স্ক জীবন পর্যন্ত যৌনতাকে কিভাবে দেখে সেটা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে কাম সর্বস্ব একটি বই। পুরো বইটিতে শুধু ছেলেদের কামুকতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বইটির প্রথম প্রকাশের সময় যদি চিন্তা করি তাহলে লেখক যে সমাজকে বর্ননা করেছেন এ সময় বাংলাদেশের সমাজ আদৌ এই রকম ছিল কিনা আমার সন্দেহ আছে।
বইটি পড়ে মনে হবে যেকোনো মানুষের সাংসারিক জীবনে কাম ছাড়া আর কিছুই নেই। লেখক বইটিকে যদি কয়েকটি ভাগে ভাগ করে লিখতেন হয়তো পড়তে আরো ভালো লাগতো। আর মাঝে মাঝে কিছু অংশে অশ্লীল কথাকে শ্লীল ভাষায় বর্ণনা করত��� গিয়ে এত বেশি রূপক ব্যবহার করেছে তখন বক্তব্য গুলো আরো বেশি অশ্লীল মনে হয়েছে। #ধূসরকল্পনা
ফুললি ক্রাকড বোধহয় এরেই কয়। মানুষ প্রতিশোধ নেয়,প্রতিশোধ নিতে গিয়ে কেও সাইকো হয়। এত কিছুর দরকার নেই। আপনার প্র���য়তম মানুষটির প্রতি যদি আপনার ক্ষোভ থাকে, প্রতিশোধ নিতে চান! দরকার নেই তাকে ফিজিক্যালি হ্যারাস করার।
সবকিছু ভেঙে ফেলার যে দুর্দান্ত প্রতিভা নিয়ে হুমায়ূন আজাদ জন্মেছিলেন, তা থেকে চরিত্রগুলো রেহাই পাবে কেন? সম্পর্ক গড়েই যেন ভাঙার জন্য। চরিত্রে এত অস্থিরতা স্বাস্থ্যকর না, তবু কেন যেন ভালো লেগেছে মূল চরিত্রের রূপান্তর দেখতে। ধীরে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের আদল নেয়ার গল্প খারাপ লাগে নাই!
Explores the relationship between the sexes. Human sexuality is center stage. A bit overboard at times. Unrestrained, could have done with some revising and editing. Readable.
বাংলা বই তেমন পড়া হয় না। এইটা পড়সি কারণ অনিক পড়তে বলসে। বাচ্চাকালের ফ্রেন্ড।
এটা অনেক আগে পড়া উচিৎ ছিল। অনেক আগে।
স্টারফিল্ড নামে একটা গেম আসে। অনেকটা ফাও গেম। বাট সাইড স্টোরি কতগুলা এমন মারাত্মক হিট করে! এই বইটা অনেকাংশে একটা আজাইরা র্যান্ট। ইচ্ছা কইরা সম্ভবত, কারণ এই টাইপের আজাইরা র্যান্ট বাঙালি পছন্দ করে। কিন্তু সেসবের মাঝে এত্ত মারাত্মক সব কথাবার্তা টুকে দিসে আজাদ, হোলি ফাক।
রেকোনিং। কোন লেভেলের সব অভিজ্ঞতার মাঝে দিয়ে আজাদের যাওয়া লাগসে এইসব এভাবে বুঝতে? আর এত গভীরভাবে বুঝতে? বইটার বিভিন্ন জায়গায় যখন রিয়ালাইজেশন হিট করতেসিলো, আমারে ভাবাইতে বাধ্য করসে, মানুষ বই পড়া ছাড়া থাকে ক্যামনে। মানুষ এই ইন্টেলেকচুয়াল আনন্দ বাদ দিয়া বাঁচে ক্যামনে।
বইটা পড়ে শেষ করসি অনেক আগে। রিভিউ এখন লেখতেসি। দুইটা পঞ্চাশ। রাত। আজকের মত গেম খেলা শেষ। ভাল্লাগতেসে না।
এই ভাঙাগড়ার খেলা এত চমৎকার ভাবে দেখাইসে আজাদ। অনেকসময় এটা খুবই বিদঘুটেও হয়ে উঠে বটে। বইয়ের কিছু অংশ পড়া টাফ। বাংলাদেশে? বাঙালি? অবশ্য আমি এমনেও বেশি মানুষের সথে মিশি না, মানুষ কেমন তেমন ধারণা নাই। হইতেই পারে।
একজন কতটুকু অনুভব করে? একজন কতটুকু, কতদূর অভিনয় করে; এই ছলে চলে, যে সে অনুভব করে না?
অনুভবহীনতার অভিনয়ে কি সক্ষমতা? নাহ। নিজের ভিতরে ভাঙতে ভাঙতে যখন কিসু বাকি থাকে না, ঐটা কিসুটা সক্ষমতা। সক্ষমতা যা এককালে একজন কে পাগল বানিয়ে ছাড়ে।
অনেক সময় ইন্টারেক্ট করার সময় ছোট কিসু জিনিস থাকে না, ওইসব নিয়ে কিসু বলা কওয়া যায় না। এই বইটা সেসব বিষয় নিদারুণ তুলে ধরসে। কিন্তু আমার কাছে সেসব নিয়ে আলাপ করার ভাষা নাই। বই পইড়া তুমিও আলোকিত হও। 'সবই ঠিকাছে; কিন্তু আমার মনে হয় কোথাও একটি বড় গোলমাল ঘটে গেছে, যার জন্য আমিও দায়ী নই এবং সেও দায়ী নয়'।
স্পার্ক গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টা এত্ত ভালো দেখাইসে এই বইয়ে। ট্রু ডিটেকটিভ সিরিজে দুইটা প্রোটাগোনিস্ট। একটা ডিপ্রেসড, যেকোনো সময় আত্মহত্যা কইরা ফেলবে। আরেকটার সুন্দরী বউ আসে, আবার অতি আকর্ষণীয় একটা গার্লফ্রেন্ডও আসে। ও যায়ে ডিপ্রেসড টারে জিজ্ঞেস করে পুরুষ মানুষ একসাথে দুই নারী কে ভালবাসতে পারে কিনা। প্রতিউত্তরে ওই জ্ঞানখোর বলে পুরুষ মানুষ ভালো বাসতে পারে না। পারে না দেইখাই বাচ্চার জিনিসটা আশসে, যার জন্য বাধ্য হয়ে একটা পুরুষ পুরা জীবন একটা নারীর সাথে কাটাইতে রাজি থাকে। এই বইটা হইল এই পুরা বিষয়টার ডেমনস্ট্রেশন।
এখন তিনটা বারো বাজে। আর আমি যেই লাইনটার দিকে তাকায় আসি সেটা হইলো, 'ঘুমোতে না পারা খুবই জঘন্য ব্যাপার'।
কোথাও পড়েছিলাম, মানুষ জন্মগত ভাবেই বহুগামী ও যৌনপ্রিয়। তবুও কাঠামোর প্রয়োজনে নিজেকে বাঁধতে পারে বলেই সে মানুষ। ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’ হুমায়ূন আজাদের একটি ‘প্রচ্ছন্ন’ উপন্যাস যেখানে শুধুই নিরেট কাঠখোট্টা ভাবে মানব চরিত্রের যৌনকাতর সত্ত্বাটির উপস্থাপন করা হয়েছে। বিকল্প অর্থে "ব্যাঙ্গ করা হয়েছে" বলা যায়। লেখনীর ভাষা বরাবরের মতোই লেখকের নিজস্ব, যেখানে শ্রতিমধুর কথার চেয়ে সরাসরি কথার আধিক্য বেশী। বইটিতে মানুষের যৌন প্রবৃত্তিকে অত্যন্ত কাঁচা, প্রায় রগরগে, কখনো অস্বস্তিকরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পড়তে পড়তে মনে হয়েছে, লেখক যেন জেনে–বুঝে মানুষের আদিম, অন্ধকার প্রবৃত্তিটাকেই সামনে ঠেলে দিচ্ছেন। এবং ঠিক এই জায়গাটাই আমাকে থামিয়ে দিয়েছে, দ্বিধায় ফেলেছে, প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে। মানুষ কি সত্যিই এতটাই দেহকেন্দ্রিক? নাকি লেখক মানুষের একটিমাত্র স্তরকে বড় করে দেখিয়ে বাকিগুলো আড়ালে ফেলে দিয়েছেন? আর এমনই এক দ্বৈত অনুভূতির ঝড় নিয়ে শেষ হলো ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’। সত্যি বলতে সাহিত্যে যৌনতা কতটা প্রাসঙ্গিক আর কতটা অপ্রাসঙ্গিক সে সম্বন্ধে আমার ধারণা পরিস্কার নয়। পাঠক হিসেবে আমি বেশ দুর্বল চিত্তের। তাই, আজাদের সরল কিন্তু ধারালো বক্তব্য গুলো নিতে আমার বেশ সময় লেগেছে বৈকি।
ভালো লাগা এবং খারাপ লাগা,বইটি পড়ার সময় দুটিই কাজ করেছে।এটি একটি উপন্যাস।কিন্তু উপন্যাস হিসেবে কতোটুকু উৎরে গেল সেটি নিয়ে আমি সন্দিহান।অনাবশ্যক কাব্যিক বর্ণনা পড়ে মাঝে মাঝে ভুলে যেতে হয় যে একটি উপন্যাস পাঠ করছি আমি।তবে নারী পুরুষের সম্পর্ককে যেভাবে হুমায়ুন আজাদ দেখেছেন তা অবশ্যই মনোযোগের দাবিদার।প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নরকম ভাবে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক,মানুষের সাথে সমাজের সম্পর্ককে দেখিয়েছেন তিনি এ টেক্সটটিতে।আসলে আমাদের সমাজে টিকে থাকা বিয়ে প্রথা যে ভঙ্গুর প্রথা,এর স্থায়িত্ব যে কত কম এবং এটিকে কেন্দ্র করে যেসব ভন্ডামি চলে সেসব লেখক স্পষ্ট করেই ফুটিয়ে তুলেছেন।যৌনতাকে শৈল্পিক ভাবে রূপায়িত করেছেন।হুমায়ূন আজাদের ভাষা সুন্দর।কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তি জাগায় অতিরিক্ত উপমা আর ভাষার মারপ্যাচের জন্যে।
To all my bengali-book-lover girlies and pals, I STRONGLY SUGGEST YA'LL TO NOT READ THIS BOOK EVER. I couldn't even make it 20 pages into the book and I already felt like throwing up like wtf?
So basically this story initially revolves around a 15yo rural teenage boy. As he goes thru puberty, he starts sexualizing literally EVERY woman and girl around him and trust me he doesn't even leave his Kaajer Bua alone. That is so fucking gross. And the author shamelessly details all the gross and disgusting thoughts of the teenage boy in the goddamned BOOK. I lowkey lost all kinds of respect I had towards the author.
Omw to wash my hands, eyes, and dispose this book off.
একটা সময় ভেঙ্গে পড়ে সবকিছু।ভেঙ্গে পড়াই হয়ত নিয়তি। চুরমারের শব্দ গুলো হয় খুবই পরিচিত।
তবুও এক একজন উঠে দাড়াই আমরা। নিজেদের জন্য তৈরি করি অন্য সেতু। যা ভাঙ্গার জন্য কাঙ্গালের মত তাকিয়ে থাকি।
তৃপ্তি অতৃপ্তি নিয়ে শেষ করলাম এই বইটা। ভালো লেগেছে৷ প্রতিটা লাইন ভালো লেগেছে৷ কিন্ত আমি এই প্রোটাগনিস্ট এর ভক্ত না৷ তার জিবনের আচারণের ভক্ত না। আজাদ তার লেখা দিয়ে সেতু বানিয়েছিলেন৷ সেই সেতু পাড়ি দিয়ে এই সময়টায় খা খা বোধের জন্ম হয়েছে।গল্প শেষ সেতু ভেঙ্গে গিয়েছে। নতুন কোন গল্পে তা ফের গঠিত হবে।
হুমায়ূন আহমেদের "আমার আপন আঁধার" এ পড়েছিলাম, "ব্যর্থ কবিরাই গদ্যকার হয়"। কথাটা উল্টিয়ে বলা যায় না? গেলে আমি অন্তত হুমায়ূন আজাদ সম্পর্কে এটা বলার দুঃ(!)সাহসিকতা করতাম। The book gets only 2.5 stars; I literally expected more from this book...উচ্চবিত্ত চরম অসুখী এক লোকের শূন্যতার আখ্যান। "সব থেকেও সর্বহারা" বলা যায়। কারণ যার সুখ নেই,তার আছে টা কি?! তাই না? But I may reread and recommend it or may not....
"সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে" আমার পড়া এই লেখকের প্রথম বই। বইটিতে সবচেয়ে ভালো লেগেছে নায়ক মাহবুব আর রওশনের প্রেমের বর্ণনাগুলো। এই প্রথম এখনও প্রেম না করার জন্য আফসোস হচ্ছে।
কী স্বপ্নীল! কী কোমল সে বর্ণনা!! আহ!!!
আমার এখনও অপ্রাপ্তবয়স্ক তাই আমি আর কিছু বলবো না।😅
হুমায়ুন আজাদের লেখাগুলোর ক্ষেত্রে দেখলাম শুরুটা অসম্ভব ভালো হয়, কিন্তু এরপর কেমন যেনো আর পড়ার আগ্রহ খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা আজাদ সাহেবের লেখার একটা ব্যার্থ দিক। এই বইটার ক্ষেত্রেও তাই হলো। শুরুর কয়ে পাতা পড়ে আসা করেছিলাম বইটিতে চমকপ্রদ কিছু পেতে যাচ্ছি। কিন্তু হতাশা করেছে।