Jump to ratings and reviews
Rate this book

বনলতা সেন

Rate this book
Banalata Sen (Bengali: বনলতা সেন) is a volume of poems by Jibanananda Das. During Das's lifetime, it was published twice: first time in Poush 1349 Bengali calendar(December 1942 AD) with a cover by Sambhu Shaha including 12 poems, second time in Srabon 1359 Bengali calendar (1952 AD) an enlarged version with a cover by Satyajit Ray including 30 poems. Das named the volume after the poem: Banalata Sen, one of Das’s finest poems, certainly his most popular. The enlarged edition published by Signet Press was awarded in 1953 at the Nikhil Banga Rabindra Sahitya Sammelan (All Bengal Rabindra Literature Convention).The recurring themes in the poems of this volume are love, nature, time, temporariness of life and love and etc. Above all, a historical sense pervades everything. The names that frequent in many poems are Suchetana, Suranjana, Sudarshana and Syamali and these women are deemed above or beyond women in general. In these poems, the love Das talks about crosses the boundaries of time and place and sometimes seems impersonal too.

40 pages, Hardcover

First published January 1, 1976

169 people are currently reading
2899 people want to read

About the author

Jibanananda Das

84 books421 followers
Jibanananda Das (bn: জীবনানন্দ দাশ) is probably the most popular Bengali poet. He is considered one of the precursors who introduced modernist poetry to Bengali Literature, at a period when it was influenced by Rabindranath Tagore's Romantic poetry. During the later half of the twentieth century, Jibanananda Das emerged as the most popular poet of modern Bengali literature. Popularity apart, Jibanananda Das had distinguished himself as an extraordinary poet presenting a paradigm hitherto unknown. It is a fact that his unfamiliar poetic diction, choice of words and thematic preferences took time to reach the heart of the readers. Towards the later half of the twentieth century the poetry of Jibanananda has become the defining essence of modernism in twentieth century Bengali poetry.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
623 (68%)
4 stars
184 (20%)
3 stars
57 (6%)
2 stars
27 (2%)
1 star
16 (1%)
Displaying 1 - 30 of 88 reviews
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
August 3, 2021
আচ্ছা আপনি বই পড়তে পড়তে বাতাস, বৃক্ষ, ফসলের জমি, বিস্তৃত মাঠ এসবের ঘ্রাণ পান??
আমি জীবনানন্দের কবিতাতে পাই!!!

উনি নিজের দুঃখ, নিজের চিন্তা, প্রেম, প্রেমিকা,, এসবের সাথে প্রকৃতিকে মিশিয়ে এমন একটা গাঢ়, পরাবাস্তব আবহ তৈরী করে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে যেন জীবন্ত করে দেন।। অনুভূতির প্রচন্ডতা আপনার মধ্যে যেন অন্যরকম এক মাদকতা, যাদুকরী ভ্রম তৈরী করে 🌻🌻
Profile Image for Akhi Asma.
230 reviews464 followers
April 24, 2021
★ হাজার বছর শুধু খেলা করে অন্ধকারে জোনাকির মতো;
         চারিদিকে চিরদিন রাত্রির নিধান;
বালির উপরে জ্যোৎস্না — দেবদারু ছায়া ইতস্তত
বিচূর্ণ থামের মতো: দ্বারকার; — দাঁড়ায়ে রয়েছে নত, ম্লান।
শরীরে ঘুমের ঘ্রাণ আমাদের ঘুচে — গেছে জীবনের সব লেনদেন;
‘মনে আছে?’ শুধালো সে — শুধালাম আমি শুধু, ‘বনলতা সেন?’

★ তখন হয়তো মাঠে হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে—
বাবলার গলির অন্ধকারে
অশথের জানালার ফাঁকে
কোথায় লুকায় আপনাকে!
চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে—

সোনালি-সোনালি চিল— শিশির শিকার ক’রে নিয়ে গেছে তারে—
কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!

★ আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?
কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে
ভালোবাসে!
হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর উড়ে-উড়ে কেঁদোনাকো ধানসিড়ি নদীটির পাশে।

★ অনেক কমলা রঙের রোদ ছিলো,
অনেক কমলা রঙের রোদ;
আর তুমি ছিলে;
তোমার মুখের রূপ কতো শত শতাব্দী আমি দেখি না,
খুঁজি না।

★ একবার যখন দেহ থেকে বার হয়ে যাব
আবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে?
আবার যেন ফিরে আসি
কোনো এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।

★ প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,
হয় নাকি?’

★ ধানসিড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়েছিলাম— পউষের রাতে—
কোনোদিন আর জাগবো না জেনে
কোনোদিন জাগবো না আমি— কোনোদিন জাগবো না আর—
~
একটা বিষন্ন দিন পার করলাম। বিষণ্ণতা অনেক ছোঁয়াছে রোগ। 'বনলতা সেন' পড়ে আরো বিষন্ন হয়ে গেলাম। এই কবিতাগুলো এতো মেলানকোলিক সুন্দর কেন! এই বইটাকে আমি এতো ভালবাসি, একদম সত্যজিত রায় যেন বনলতা সেনের মুখ-ই এঁকে দিয়েছেন প্রচ্ছদে। সিগনেট প্রেসের এই ছোট বইগুলো যেন একেকটা ভালোবাসা। আমি বইগুলো পড়ার আগে অনেকক্ষণ ধরে গন্ধ শুঁকতে থাকি। মনে হয় যেন কোন এক হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুের গায়ের গন্ধ পাচ্ছি।

যা! আবার আপসেট হয়ে গেলাম।
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
October 25, 2022
বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থের বিশেষ আকর্ষণ এর কালজয়ী প্রেমের কবিতাগুলি। আমরা যারা প্রেমের উত্থান-পতন অনুভব করি, কিন্তু উপযুক্ত ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না, সেই সমস্ত বাঙালি প্রেমিকদের অবলম্বন জীবনানন্দ দাশের সহজে বোধগম্য, অথচ চিত্তাকর্ষক ভাষায় লিখিত কিছু কবিতা।

প্রেমে ঝুলে থাকা, অথবা প্রেমে ব্যর্থ হওয়া: এই দুই অবস্থা নিয়ে রচিত প্রেমের কবিতা সেরা। 'হায় চিল' কবিতাটার ক্ষেত্রে একথা হলফ করে বলা যায়, সদ্য ছ্যাকাপ্রাপ্ত প্রেমিকের জন্য এর থেকে উপাদেয় কবিতা আরেকটা নেই।
পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;
আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে
বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!

প্রায় এক যুগ আগে, আপনার একুশ বছর বয়সী প্রেমিকা যখন সুপাত্র পেয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসার সিদ্ধান্ত আপনাকে জানিয়েছিল, সেই সময় যদি এই কবিতাটা আপনি পড়ে থাকেন, আপনি জানেন বিরহ কত ভাল লাগে! জীবনানন্দ আপনার কতটা আপন! রসিকতা করছি না, পাঠকের অনুভূতির সাথে একাত্ম হতে পারলেই তবে একটা কবিতা কালজয়ী হয়।

'কুড়ি বছর পরে' কবিতাটা বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া প্রেমের প্রতি পিছুটান থেকে লেখা। যাদের নতুন নতুন প্রেম ছুটে গেছে, কিন্তু রেশ রয়ে গেছে ভালোবাসার, তারা এই কবিতা পড়বে চোখ বুজে।
অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যখন প্রেম ছুটে যায়, তখন কি যে কষ্ট লাগে! মনে হয় জীবনে আর কোনদিন প্রেম আসবে না। কুড়ি বছর পর আজকের মত কোন কার্তিকের বিকালে যদি তার সাথে দেখা হয়ে যায়, তখনও প্রেম আজকের মতই অটুট থাকবে।
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার...
এই কবিতাটা সর্বজনীন হয়ে গেছে। যাদের ক্ষেত্রে প্রেমের ব্যাপার-স্যাপার নেই, তাদেরকেই এই পঙক্তি বেশি করে ব্যবহার করতে দেখা যায়। বিংশতম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে।

একটা প্রেম চলে গেলে যখন আরেকটা প্রেম চলে আসে, আমরা সেই নতুনটাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাই। পুরাতন প্রেমের আবেগে মরচে ধরে যায়; ভৌত নয়, একেবারে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে যায়।
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,
হয় নাকি?

অভিজ্ঞ প্রেমিকদের জন্য জীবনানন্দের উপহার 'দুজন' কবিতা। পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়- পড়েই প্রেমিকের দল দার্শনিকের মত মাথা ঝাঁকায়। কুড়ি বছর টিকবে মনে হচ্ছিল যে আবেগ, সেটা কুড়ি মাস টিকলো না?

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, আবৃত্তি প্রতিযোগিতায়, অথবা স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তির জন্য অনেকেরই প্রিয় কবিতা ছিল 'বনলতা সেন'। এতবার এই কবিতাটা পড়া এবং শোনা হয়েছিল যে, কেউ যখন গলা কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি.. শুরু করতো, তখন আমার রিঅ্যাকশন ছিল ঔ মিমটার মত: "ah shit, here we go again!" একসময় ক্লিশে হয়ে গেলেও পরবর্তীতে ভাষার কারুকার্যখচিত এই অনন্য কবিতাটিকে আমি ভালবাসতে শিখেছি। নাটোরের বনলতা সেন হয়েছেন আমার সেলিব্রিটি ক্রাশের সমর্থক। অপি করিম, রাইমা সেন, মনিকা বেলুচ্চি,... - সবাই আমার চোখে একেকজন বনলতা সেন।

কান্তারের পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে
সে কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে,
বলিল, তোমারে চাই

শঙ্খমালা কবিতার শুরুটা পড়ে আশা করেছিলাম শেষ পর্যন্ত একটা সহজ সরল মিষ্টি মধুর প্রেমের কবিতা পড়তে যাচ্ছি। কিন্তু তারপর সেই রহস্যময়ী রমনী কেমন অধরা হয়ে গেল:
ধূসর পেচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে
ধানসিড়ি বেয়ে-বেয়ে
সোনার সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে
তোমারে খুঁজছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।

কবিতার শেষার্ধে শীতল বিষণ্নতা আছে, যে বিষাদ স্পর্শ করার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু যে উপমা গুলি কবি এখানে ব্যবহার করলেন, যে ছবিগুলো তিনি আঁকলেন, তেমনটা আর হয়না! কবিতার শেষে সেই বাণী চিরন্তন:
এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।

জীবনানন্দ দাশের লেখা এই লাইনটাই সম্ভবত আমার সবচেয়ে প্রিয়। এটা কোট করে রিভিউ শেষ করাটাই আইন। কিন্তু এখন ঘাস নিয়ে কিঞ্চিৎ জীবনানন্দীয় অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করতে ইচ্ছে হয়। ঘাস! মহিমান্বিত যে উদ্ভিদ কৃষিভিত্তিক সভ্যতার সূচনা করেছিল। জীবনানন্দ অবশ্য ধান, গম, ভুট্টার কথা লেখেননি। তিনি দূর্বাঘাসই বুঝিয়েছেন। তাঁর লেখার বহুবার ঘাসের কথা এসেছে : "সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর","সুরঞ্জনা, তোমার হৃদয় আজ ঘাস", "মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে",...।হয়তো চোখের তৃপ্তি, আর বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি কোমল দুর্বাচ্ছাদিত সবুজ মাঠের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই ঘাস নিয়ে তিনি রচনা করেছেন টিয়া পাখির পাখনার মত কোমল একখানা কবিতা।

আমারো ইচ্ছা করে এই ঘাসের এই ঘ্রাণ হরিৎ মদের মতো
গেলাসে গেলাসে পান করি,
এই ঘাসের শরীর ছানি- চোখে ঘসি,
ঘাসের পাখনায় আমার পালক,
ঘাসের ভিতর ঘাস হয়ে জন্মাই কোনো এক নিবিড় ঘাস-মাতার
শরীরের সুস্বাদু অন্ধকার থেকে নেমে ।


কার্তিকের এক বিকালে এই লেখাটা শেষ করছি। একটু পরেই সূর্যাস্ত। গ্রিক পুরাণে পড়েছিলাম সূর্যদেবতা অ্যাপোলো তার ঘোড়ায় টানা রথে সূর্যকে প্রতিদিন পূর্ব থেকে পশ্চিমে টেনে নিয়ে যায়। তারপর সূর্যাস্ত হয়। এরপর অলিম্পাস পাহাড়ে বিশ্রাম করেন অ্যাপোলো। বিশ্রামের সময়টা রাত। 'বেড়াল' কবিতায় সম্পূর্ণ ভিন্নরকম সূর্যাস্তের মতবাদ দিয়েছেন জীবনানন্দ:

হেমন্তের সন্ধ্যায় জাফরান-রঙের সূর্যের নরম শরীরে
শাদা থাবা বুলিয়ে বুলিয়ে খেলা করতে দেখলাম তাকে;
তারপর অন্ধকারকে ছোট ছোট বলের মতো থাবা দিয়ে লুফে আনল সে
সমন্ত পৃথিবীর ভিতর ছড়িয়ে দিল।

এভাবেই বেড়াল 'শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা' নিয়ে আসে পৃথিবীতে। তারপর আসে রূপালী চাঁদ, ঝাঁকে ঝাঁকে নক্ষত্র। গাছের কোটর থেকে বেরিয়ে আসে পেঁচা। ঝিলমিল জোনাকিরা শুরু করে হাজার বছরের পুরাতন খেলা।

আজকের হেমন্তের সন্ধ্যার শুভেচ্ছা।
৯ কার্তিক ১৪২৯
Profile Image for Akash.
446 reviews148 followers
December 29, 2022
**বনলতা সেন **

>"হাজার বছর ধরে আমি হাঁটিতেছি পথ পৃথিবীর পথে,
>সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে।"

এ দু'লাইনে আছে হাজার বছরের পুরোনো ইতিহাস, সিংহল সমুদ্র, মালয় সাগর, বিদিশা ইত্যাদি নামগুলি অতীত ঐতিহ্য বহন করে। হাজার বছরকে যেন কবি দু'লাইনের মধ্যে আবদ্ধ করেছে।

>"অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;

যখন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা প্রেমের উপন্যাস 'দময়ন্তী' পড়ে শেষ করি তখন বিদর্ভ নগর-কে আমি চিনতে পারি। রাজা নল এবং রাজকুমার দময়ন্তীর দেবতাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে; তারপর আরও পরীক্ষা দিয়ে তাদের প্রেমকে প্রমাণ করতে হয় বিশ্বসংসারের কাছে। একবার রাজ্য হারিয়ে আবার রাজ্য জয় করে তারা একে অপরকে কাছে পেয়ে সুখী হয়। তবে জানি না, জীবনানন্দ দাশ বিদর্ভ নগরী বলতে দময়ন্তীর নগরী কে বুঝিয়েছেন কিনা!

>"আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।"

**প্রশ্ন হচ্ছে; বনলতা সেন কে; একজন নারী? নাকি প্রশ্ন করব; বনলতা সেন আসলেই "কে" নাকি "কি"? **
সাধারণ আম জনতা বলবে বলনতা সেন নাটোরের একজন নারী। কিন্তু না, বনলতা সেন হল সমস্ত পৃথিবীর শান্তির প্রতীক। যে ক্ষুধার্ত-তৃঞ্চার্ত, কর্মমুখর, হতাশা-বিষাদে পরিপূর্ণ মানুষকে দিনের শেষে শান্তি-স্বস্তি দেয়।

>চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা

চুলের সাথে বিদিশার অন্ধকার নগরের তুলনা; মুখের সাথে প্রাচীন শ্রাবস্তী নগরীর কারুকার্য** **অর্থাৎ ভাস্কর্য এর সাথে যে তুলনা বা উপমা তা কেবল জীবনানন্দ দাশ এর কবিতায় সম্ভব। তাছাড়া ক্লান্ত-শ্রান্ত নাবিকের দিক হারা পথিকের মত ঘুরে বেড়ানো অর্থাৎ খুঁজে বেড়ানো বনলতা সেনকে।

>"সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে , ‘এতোদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।"

পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে তাকিয়ে মানব সভ্যতাকে বনলতা সেন শান্তি দিয়েছে। সমস্ত দুনিয়ার মানুষের দুঃখ-কষ্ট মুহূর্তে যেন ভুলিয়ে দিয়ে পার্থিব শান্তির আবেশে আবেশিত করেছে।

>সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে — সব নদী- ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।

ইঁদুর দৌড়ের খেলা শেষে যখন সন্ধ্যা নেমে আসে, পাখিরা নীড়ে ফেরে, সব নদী সমুদ্রে মিশে তখন অন্ধকারে বনলতা সেন আমাদের সকলের মুখোমুখি বসে পরম শান্তি দেয়। যার ফলে আমরা এই দুর্গন্ধময় পৃথিবীকে ভুলে সুখে থাকতে পারি।

**'বনলতা সেন**' কবিতার সাথে আমার জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সেই অন্ধকার সময়ে এ কবিতা আমি বুঝতে চেয়েছিলাম; এখনও ভালভাবে বুঝতে পারিনি। এসব কবিতা আমার মত মানুষের বিশদ আলোচনা করা অনুচিত। তবুও চেষ্টা করেছি সীমিত জ্ঞান ও কল্পনাশক্তি দিয়ে যতটুকু বিশ্লেষণ করা যায়।
Profile Image for Mozaffar.
26 reviews2 followers
April 15, 2015
বনলতা সেন নামক এই কাব্যগ্রন্থে কবিতা আছে সর্বমোট ১২টি। তবে আর সব কবিতার মত বাকি এগারটি কবিতাও ঢাকা পড়ে গিয়েছে বনলতা সেন নামের কবিতাটির কাছে।
বাংলা কবিতা যারা পড়েন তাদের মধ্যে হয়তো এরকম খুব কম মানুষ পাওয়া যাবে যারা বনলতা সেন এর নাম শুনেন নি বা কবিতাটি পড়েন নি। আর বনলতা সেন পড়ার সময় এমন কেউ নেই যে রোমান্টিক হয়ে যান নি। সম্ভবত বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় রোমান্টিক কবিতা বনলতা সেন। আর বনলতা সেন হলো বাংলা সাহিত্যের অপার শান্তির সবচেয়ে রহস্যময় নারী।
জীবনানন্দ দাসের এই কবিতা (বিশেষ ভাবে বলতে গেলে বনলতা সেন কে) নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। আমার কাছে বনলতা সেন একজন নারী। বনলতা সেন হাজার বছরের সকল প্রেমিকের কাছে তার প্রিয়তমার মুখ। কবিতায় একজনের জীবনের কথা, নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধারে এক নারীর কথা, একটি স্বপ্ন উন্মোচনের কথাই আন্তর্ভাষ্য হয়ে উঠে এসেছে।
এডগার এলান পো এর টু হেলেন কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত এই কবিতাটি আরো অনেক বিকশিত আরো অনেক সুগভীর। আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। হয়তোবা কখনো কখনো সর্বশ্রেষ্ঠ।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,956 followers
July 26, 2020
কী অসহ্য সুন্দর! বনলতা সেনের সৌন্দর্যে প্রায়শই ঢাকা পড়ে যায় বাকিগুলো। নেহাত অন্যায়। লেখার যে এরকম মোহ থাকতে পারে, তা জানার জন্যে হলেও হাতে তুলে নিতে পারেন।
Profile Image for Wasee.
Author 49 books784 followers
September 3, 2017
কত অসংখ্যবার পড়েছি, তার হিসাব নেই।

বনলতা সেন, কুড়ি বছর পর, হাওয়ার রাত, বুনো-হাঁস, শঙ্খমালা, অন্ধকার, কমলালেবু, দুজন ; কবিতাগুলো কী অসহ্য সুন্দর!!!
Profile Image for Sumaîya Afrôze Puspîta.
220 reviews288 followers
February 19, 2025
“জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার—
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু সরু কালো কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের—আমের;
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!”

▪️▪️▪️

১৭ই ফেব্রুয়ারি জীবনানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে কাব্যগ্রন্থটি পড়তে নিয়েছিলাম। কবিতাগুলো বিষণ্ণ, সেটা তো আর নতুন কিছু না। ৩০টি কবিতাই এমন বিরহ-বিষাদে মাখামাখি; মাথায় তুমুল আলোড়নের ঝড় বয়ে তোলে। কবিতার চেয়েও আর একটা জিনিসে বড় মন খারাপ হলো। পত্রিকার এক সম্পাদককে লেখা তিনখানা চিঠি এই ব‌ইটিতে দেওয়া হয়েছে। চিঠিগুলো এত করুণ, কী আর বলব–মৃত্যুর কয়েকমাস আগে লেখা। একটা কবিতা পড়ে তাঁর বিতর্কিত প্রয়াণ মনে পড়ে গেল–

“কি এক ইশারা যেন মনে রেখে একা একা শহরের পথ থেকে পথে
অনেক হেঁটেছি আমি; অনেক দেখেছি আমি ট্রাম-বাস সব ঠিক চলে;
তারপর পথ ছেড়ে শান্ত হয়ে চলে যায় তাহাদের ঘুমের জগতে:”– তাই তিনিও বুঝি ট্রামপথে শান্তি খুঁজে নিলেন?

আর একটা কবিতা খুব বেশি ভালো লেগেছে–কমলালেবু।

নীল আকাশে খ‌ই ক্ষেতের সোনালী ফুলের মতো কাব্য-ইতিহাসে নৈসর্গপ্রেমিক আপনি চিরস্থান জুড়ে বিরাজ করুন।
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
August 1, 2020
এই বই নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই। প্রত্যেকটা কবিতা একাধিকবার করে পড়া হয়ে গেছে এই ক'দিনের মধ্যেই। আর 'বনলতা সেন' যে কতবার পড়েছি নিজেও জানিনা। সবগুলো কবিতা যে সমানভাবে ভালো লেগেছে তা নয়, কোনোটা কম, কোনোটা বেশি। কিন্তু মুগ্ধ হতে হয়েছে সবগুলো পড়েই।
Profile Image for Sumaiya Akhter  Lisa.
83 reviews
January 3, 2023
বইটা পড়ে একটা ছোট চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছে।
আমার প্রিয় মানুষ,
কুড়ি বছর পর আমাদের এই মনের দ্বন্দ্ব হয়তো থাকবে না। এই মিথ্যে ব্যস্ততা থাকবে না তখন, থাকবে না কোনো বাহানা ।
আমাদের আবার কথা হবে। কি নিয়ে কথা বলবো তা এখনো জানি না শুধু এইটুকুই জানি কথা বলবো। আমাদের যে দেখা হবে এই কথা আমি এত বার ভেবেছি যে সেই কল্পনাও সত্যি মনে হয়।
যে জীবন আমাদের হয়নি যাপিত তা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে এই বইটা। অনেক ইচ্ছা আপনি এই বইয়ের একটা কবিতা আমাকে পড়ে শুনান।
আমার কথা গুলোই কবি অনেক আগেই বলে গেছেন। যেই শব্দ গুলোকে আমি বন্দী করে রেখেছি তা এখানে মুক্ত।
আজ কি সুন্দর রাত!
জানালার কাঁচে কুয়াশারা জাল বুনেছে। কোনো নক্ষত্রের দিকে উড়ে যেতে ইচ্ছে করছে আমার।
এইতো কদিন আগেও প্রেম ছিলো, আশা ছিল।
আমাদের এই কঠিন সামাজিকতাকে ছুড়ে ফেলে দেই না কেন আমরা?
সবকিছু কত সহজ হয়ে যেত তাহলে!
ফিরে আসেন আবার।

ইতি
আপনি তো আমাকে কোনো নতুন নাম দেননি
Profile Image for Sazzad Hossen.
21 reviews6 followers
July 28, 2021
যাহ বাবা,কবিতা গুলো পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো!!!
বেশ কিছু লাইন ডায়েরিতে লিখতে হবে।।
Profile Image for Samiha Kamal.
121 reviews118 followers
December 18, 2021
এর সাথে কোনো তারাবাজি চলবে না বাবা৷ শুদ্ধতম অনুভূতি, স্বর্গীয় কবিতার দলেদের সাথে আমার চক্ষু, কর্ণ ও আত্নার মিলন ঘটে প্রতিবার যখন পড়ি বনলতা সেন।
Profile Image for Shariful Sadaf.
195 reviews108 followers
August 29, 2020
অসাধারণ এক কাব্যগ্রন্থ বনলতা সেন এ যেনো এক মোহবশ।
Profile Image for Sajid.
457 reviews110 followers
February 17, 2022
“স্বপ্নের ধ্বনিরা এসে বলে যায়: স্থবিরতা সব চেয়ে ভালো;

              নিস্তব্ধ শীতের রাতে দীপ জ্বেলে

              অথবা নিভায়ে দীপ বিছানায় শুয়ে

স্থবিরের চোখে যেন জমে ওঠে অন্য কোন বিকেলের আলো।


              সেই আলো চিরদিন হয়ে থাকে স্থির,

              সব ছেড়ে একদিন আমিও স্থবির

হয়ে যাব; সেদিন শীতের রাতে সোনালী জরির কাজ ফেলে

              প্রদীন নিভায়ে রবো বিছানায় শুয়ে:

              অন্ধকারে ঠেস দিয়ে জেগে রবো

              বাদুড়ের আঁকাবাঁকা আকাশের মতো।


              স্থবিরতা, করে তুমি আসিবে বলো তো।



বনলতা সেন আমার অন্যতম পছন্দের গ্রন্থ। বহুবার পড়েছি। তবুও আজকে কবির জন্মদিন উপলক্ষে আরেকবার আবৃত্তি করতে করতে পুরোটা পড়ে ফেললাম। প্রতিবারই নতুন করে আনন্দ মেলে।
Profile Image for Syed Rezwan  Siddique .
4 reviews1 follower
January 29, 2021
মানুষ জীবনানন্দকে যতটা চেনে না,তার চেয়েও বেশি বোধ হয় বনলতাকে চেনে।এখানেই তো সৃষ্টি সার্থকতা।
Profile Image for Shaurav Saha (পার্কের খঞ্জ).
18 reviews21 followers
April 17, 2016
বনলতা সেন এককভাবে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ এবং অনন্যসাধারণ কাব্য। এখানেই রেখা, রঙ, চেতনার অভাবনীয় কিন্তু শৈল্পিক মিশেল ঘটেছে একান্ত জীবনানন্দীয় আবহাওয়ায় যা আবহমান বাংলার চির অবহেলিত মফস্বলের নিসর্গ উপাদানের অপূর্ব আয়োজনে অর্থপূর্ণভাবে প্রস্তুতকৃত। ইতিহাস এখানে উঠে এসেছে বাস্তবতায়, হাতে রেখেছে হাত সম্ভব আর অসম্ভব, বিশ্বাস আর অবিশ্বাস্য, নতুন আর পুরাতন, কাল আর মহাকাল আবার পাশাপাশি মুক্তি ঘটেছে কল্পনার গ্রহসুলভ পরিক্রমার। এমনই কিছু চিত্রকল্প, যা আবার কখনো ঋদ্ধ দার্শনিকতায়ঃ
১। ভারতসমুদ্রের তীরে/
কিংবা ভূমধ্যসাগরের কিনারে/
অথবা টায়ার সিন্ধুর পারে/
আজ নেই, কোন এক নগরী ছিল একদিন,/
কোন এক প্রাসাদ ছিল;/
মূল্যবান আসবাবে ভরা এক প্রাসাদ;/
পারস্য গালিচা, কাশ্মিরী শাল, বেরিন তরঙ্গের নিটোল মুক্তা প্রবাল,/
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্খা,/
আর তুমি নারী-/
এই সব ছিল সেই জগতে একদিন। /[নগ্ন নির্জন হাত]
২। যে রূপসীদের আমি এশিরিয়ায়, মিশরে, বিদিশায় মরে যেতে দেখেছি/
কাল তারা অতিদূর আকাশের সীমানায় কুয়াশায় কুয়াশায় দীর্ঘ বর্শা হাতে করে কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে গেছে যেন-/
মৃত্যুকে দলিত করবার জন্য ?/
জীবনের গভীর জয় প্রকাশ করার জন্য ?/
প্রেমের ভয়াবহ গম্ভীর স্তম্ভ তুলবার জন্য ?/[হাওয়ার রাত]

অসাধারণ কিছু প্রেমের কবিতা আছে এখানে, যেখানেও মিলেনি সময় ও বাস্তবতার চিরচারিত হিসেবনিকেশঃ
১। দেবদারু ছায়া ইতস্তত বিচূর্ণ থামের মতোঃ দ্বারকার; /
-দাঁড়ায়ে রয়েছে মৃত, ম্লান।/
শরীরে ঘুমের ঘ্রাণ আমাদের – ঘুচে গেছে জীবনের সব লেনদেন;/
মনে আছে শুধাল সে-শুধালাম আমি শুধু ‘বনলতা সেন ?’ [হাজার বছর শুধু খেলা করে]
২। সময়ও অপার – তাকে প্রেম আশা চেতনার কণা/
ধরে আছে বলে সে-ও সনাতন; কিন্তু এই ব্যর্থ ধারণা/
সরিয়ে মেয়েটি তার আঁচলের চোরকাঁটা বেছে/
প্রান্তর নক্ষত্র নদী আকাশের থেকে সরে গেছে/
যেই স্পষ্ট নির্লিপ্তিতে – তাই-ই-ঠিক; –ওখানে স্নিগ্ধ হয় সব!/
অপ্রেমে বা প্রেমে নয় – নিখিলের বৃক্ষ নিজ বিকাশে নীরব। [অঘ্রাণ প্রান্তরে]

কল্পনাপ্রবণ এই কবি তারপরও পুরোপুরি আধুনিক, সমকালীন নিঃস্বতা নিয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল যদিও নিরুপায়।
১। হে নর, হে নারী ,/
তোমাদের পৃথিবীকে চিনিনি কোনোদিন ;/
আমি অন্য কোন নক্ষত্রের জীব নই । /
যেখানে স্পন্দন, সংঘর্ষ, গীত, যেখানে উদ্যম, চিন্তা, কাজ,/
সেখানেই সূর্য , পৃথিবী, বৃহস্প্রতি, কালপুরুষ, অনন্ত আকাশগ্রন্থি,/
শত শত শুকরীর প্রসব বেদনার আড়ম্বর ;/
এইসব ভয়াবহ আরতী ! [অন্ধকার]
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,862 followers
September 3, 2017
এই অতি শোভন, শীর্ণকায় বইটি আমি প্রথম পড়ি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে, কারণ বইটা সিলেবাসে ছিল!
কিন্তু পড়ার পর আমার মতো বেরসিক নালায়েকের চোখেও ধাঁধা লেগে যায়, আজও যে মোহাঞ্জন চোখ থেকে মোছেনি, বোধহয় মুছবেও না।
এই বইয়ের কবিতাদের নিয়ে কিছু লেখার ক্ষমতা আমার নেই। তাই সেই অপচেষ্টা করব না।
যদি বাংলা পড়তে পারেন, তাহলে বইটা পড়ুন, প্লিজ।
Profile Image for Shihab Uddin.
289 reviews1 follower
September 11, 2022
*আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।
*প্রেম ধীরে মুছে যায় নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। অমৃত
Profile Image for Md. Rahat  Khan.
96 reviews25 followers
June 17, 2020
“হে সময়গ্রন্থি, হে সূর্য, হে মাঘনিশীথের কোকিল, হে স্মৃতি
হে হিমেল হাওয়া,
আমাকে জাগাতে চাও কেন?”

‘বনলতা সেন’ আমার কাছে জীবন। আমার জীবন আমার ঘুম। এই সমাজে থেকেও না থাকা আমার কাছে ঘুম। শিরীষের ডালপালা ছুঁয়ে একটা কোমল বেড়ালের মতো শান্ত পায়ে সময়ের সাথে নিভৃতে হেঁটে চলা আমার কাছে জীবন৷ যেমনটা জীবনান্দের। জীবনানন্দের মতো আমারও একই আর্জি, ‘‘স্থবিরতা কবে তুমি আসিবে বলো তো!”
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,741 reviews356 followers
July 6, 2025
বনলতা সেন: সময়ের অন্তরালে একটি চিরন্তন পদধ্বনি:

জীবনানন্দ দাশ—একটি নাম নয়, যেন বাংলা কবিতার এক বেদনাবিধুর, সুরভিত, অথচ অস্পষ্ট ধোঁয়াশায় মোড়া অস্তিত্ব। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ বনলতা সেন (১৯৪৯), শুধু একটি কাব্যসংকলন নয়—এ যেন এক নির্জন আর্কাইভ, যেখানে সময়, মৃত্যু, স্মৃতি ও নিঃসঙ্গতার অভিধান রচিত হয় প্রতিটি কবিতায়। এ গ্রন্থের ৩১টি কবিতার প্রতিটি যেন একটি করে চিত্রকল্প—জীবনানন্দের অভাবনীয় সংবেদনশীলতায় আঁকা।

“From the seas of Ceylon to the straits of Malaya…”

কবিতার শুরুতেই আমরা পাই এক ক্লান্ত অভিযাত্রীর আত্মপ্রতিকৃতি। ‘বনলতা সেন’ কবিতার উদ্বোধনী পঙক্তিতেই (“For aeons have I roamed the roads of the earth”) ফুটে ওঠে সেই অনন্ত পথচলা, যে পথ সময়ের সীমা ছাড়িয়ে চলে গেছে ইতিহাসের কুয়াশায়—“Through the mists of Bimbisara, Asoka, and darker Vidarbha।” এই পথচলা বাস্তবিক নয়, বরং স্মৃতির ভিতরে ডুবে থাকা এক মহাজাগতিক ক্লান্তি, যেখানে একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠেন বনলতা

—“My only peace I knew with Banalata Sen of Natore।”

এই একটি লাইনেই কবির অস্তিত্ববোধ, তার অন্বেষণ, এবং এক নারীর প্রতিমূর্তিতে স্থিতি খোঁজার আকুতি যেন ধরা পড়ে। এই বনলতা সেন, রক্ত-মাংসের নারী নন, তিনি এক প্রতীক—সময়ের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা এক শাশ্বত শান্তি।

“Her face the sculpture of Sravasti…”

জীবনানন্দের ভাষা স্বপ্নময়, অদ্ভুত নস্টালজিক। তাঁর কবিতা গঠন করে এমন সব চিত্র, যার মধ্যে প্রকৃতি, ইতিহাস ও শরীরী অনুভূতি মিলে তৈরি হয় এক ভিন্ন জগত। বনলতা সেনের মুখ “the sculpture of Sravasti”—এই উপমার মধ্যে একদিকে ইতিহাসের স্নিগ্ধতা, অন্যদিকে নারীত্বের শান্ত মাধুর্য মিলেমিশে যায়।

সাহিত্যে এমন প্রতিমারূপ আগে কেউ নির্মাণ করেছে কি? বোধহয় না। জীবনানন্দ সময়ের নির্জনতায়, শব্দের নিস্তব্ধতায় এই বনলতাকে নির্মাণ করেন, যে কিনা জীবনানন্দের কবিতার আর্কিটাইপ—নির্জনতার প্রেরণা, অস্তিত্বের সান্ত্বনা, সময়ের প্রান্তে বসে থাকা এক নারী, যিনি শুধু বলেন, “Where were you so long?”

এক প্রত্নতত্ত্বিক মৃত্যু, এক কাব্যিক পুনর্জন্ম

১৯৫৪ সালের অক্টোবরে রাসবিহারীর ট্রামলাইন–এ জীবনানন্দের মৃত্যু শুধু কলকাতার নয়, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসেও একটি রহস্যময় মোড়। কেউ বলেন, দুর্ঘটনা। কেউ বলেন, আত্মহত্যা। কারণ কবির কবিতার ভিতরে ছিল এক অনমনীয় মৃত্যুবোধ—“A rush of desire for death” (One Day Eight Years Ago)।

কিন্তু এই মৃত্যুপিপাসা কখনও সরল নয়, বরং দার্শনিক, বিষণ্ন, কখনও কখনও তিক্ত। ‘The sleep of the plague rat’ কিংবা ‘cocky smile of hollow cunning’—এসব শব্দবন্ধে যেমন একধরনের নিঃসঙ্গ ক্ষোভ আছে, তেমনি আছে মৃত্যুকে আলতোভাবে ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টাও।

বাংলার প্রকৃতি, তার ঘ্রাণ, আর শরীরী ভাষা

জীবনানন্দের কাব্যভাষা বাংলা সাহিত্যে অনন্য। তিনি রবীন্দ্র-উত্তর যুগে দাঁড়িয়ে এমন এক কাব্যদর্শন নির্মাণ করেন, যেখানে শরীরীতা, প্রকৃতির ছোঁয়া ও নিঃসঙ্গ আত্মা একসঙ্গে কথা বলে।

“Sunlight and the sparrow play in the lattice of the Hisal’s branches”—এই পঙক্তিতে যেমন শিশির মাখা সকালের নরম আলো, তেমনি আছে এক প্রগাঢ় চিত্রকরসুলভ স্পর্শ। এই কবির কবিতায় গন্ধ, রঙ, স্পর্শ—সব একসঙ্গে উপস্থিত। একদিকে “The musty smell of rice”, আরেকদিকে “the fragrance of sleep”—এ যেন এক ইন্দ্রিয়সংবেদনের মেলা।

এমন চিত্রকল্প কি কেবল বাংলায়? না। বরং এ যেন Keats-এর “Ode to Autumn”-এর মতোন স্বাদ, Lorca-র মতোন বিষণ্নতা, আর Baudelaire-এর মতন নাগরিক বিষ। অথচ জীবনানন্দ একান্তই বাঙালি, তাঁর নদী পদ্মা, তাঁর পথ-ঘাট বরিশাল, তাঁর ট্র্যাজেডি দক্ষিণ কলকাতার সন্ধ্যার ভিতরেই আটকে আছে।

“A parched, yellow light lingers in the sky…”

‘Saptak’ (Epitaph)-এ আমরা পাই মৃত্যুর পরে ধরা এক ক্লান্ত দৃশ্য। এখানে কোনও দার্শনিক বিষাদ নেই—আছে এক প্রায়-নৈর্ব্যক্তিক টোন। “Like an invisible cat / On whose face sits a cocky smile”—এটা যেন আলোর অভাব নয়, বরং সেই অপার্থিব আলো যা মৃত্যু পরবর্তী অনিশ্চয়তা বোঝাতে চায়।

এই কবিতাগুলোর ব্যঞ্জনা সাধারণ নয়—তাতে রয়েছে গূঢ় ইঙ্গিত, অলীক স্বপ্ন ও জীবনের প্রায়-নাট্যরূপ।

“The world is led by the counsel / Of the loveless, pitiless ghosts…”
Banalata Sen কাব্যগ্রন্থে কিছু রাজনৈতিক ছায়াও স্পষ্ট। ‘A Strange Darkness’ কবিতায় আমরা দেখি, কবির সমাজবীক্ষণও গভীর। “The clearest vision belongs to the blind”—এই লাইন আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক। যে সময় ‘আলোকের বাংলাদেশ’ গড়ার কথা বলছে সবাই, সেই সময় জীবনানন্দ বলেন—আলো যারা দেখে, তারা তো চোখবদ্ধ হায়না আর শকুনের আহারে পরিণত হয়।

“The green wind blowing in her face…”

এইসব কবিতায় প্রকৃতি কখনও শান্ত, কখনও চঞ্চল, কখনও রহস্যময়। কবির শব্দচয়ন এতই ব্যক্তিগত যে, তা অনুবাদে প্রায় হারিয়ে যায়। যদিও Chidananda Dasgupta-এর অনুবাদ অনেকাংশেই সফল, তবু সেই স্বাভাবিক ছন্দ, সেই নিস্তব্ধ আবেগ—তা তো কেবল মাতৃভাষায়ই ধরা পড়ে।

বনলতা সেন: শেষ নাকি শুরু?

এখন প্রশ্ন উঠে—বনলতা সেন কি কেবল একটি কাব্যগ্রন্থ? নাকি এটি জীবনানন্দের কবি-জীবনের এক পর্বান্তর? বলা যায়, এটি এক ধরণের ‘bridge’—যেখানে মধ্যবিত্ত বাঙালি কবিতার বিমূর্ত সৌন্দর্যে পৌঁছে যায়। এই বই আমাদের শেখায়—আধুনিকতা মানে কেবল পাশ্চাত্য অনুকরণ নয়, বরং বাংলা ভাষার ভিতরে থেকেই নিজস্ব ভঙ্গিমায় পথ নির্মাণ।

বনলতা সেন তাই বাংলা কবিতার এক ধ্রুব তারা, যার আলো আজও কমে না। এই বইয়ের পাঠ এক ধরণের ধ্যান—একটি ধীরচেতা নদীর মতোন, যেখানে পাঠক নিজের আত্মার প্রতিবিম্ব দেখতে পায়।

শেষ কথা:

জীবনানন্দের বনলতা সেন এমন এক গ্রন্থ যা কেবল পড়ে ফেলা যায় না—তা অনুভব করতে হয়, বুকে ধরে রাখতে হয়। এর প্রতিটি শব্দে সময় গলে পড়ে, প্রতিটি চিত্রকল্পে লুকিয়ে থাকে এক ক্লান্ত কবির স্বপ্ন। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, ক্লান্ত শরীর নিয়ে, এই কবি খুঁজেছেন শান্তি। আর আমরা, পাঠকেরা, বারবার ফিরে যাই সেই নারীটির কাছে, যিনি শুধুই বলেন
—“Where were you so long?”

এ যেন এক কবিতার নাম নয়, এক আশ্রয়—বনলতা সেন।

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for Shuvo.
84 reviews3 followers
February 13, 2023
"কোনোদিন মানুষ ছিলাম না আমি।
হে নর, হে নারী,
তোমাদের পৃথিবীকে চিনিনি কোনোদিন;
আমি অন্য কোনো নক্ষত্রের জীব নই।"
Profile Image for Adnan Chowdhury.
47 reviews2 followers
January 3, 2024
মুগ্ধ হয়ে শুধু পড়েছি। এত সুন্দর কথা!
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
March 12, 2025
রূপসী বাংলা কেন যেন খুব একটা টানেনি আমাকে। বনলতা সেন পড়ে বুঝলাম লোকে কেন পাগলের মতো জীবনানন্দের কবিতা পড়ে।
Profile Image for Anjum Haz.
285 reviews69 followers
Read
May 16, 2020
জীবনানন্দ দাশের জীবনী পড়ার পর তার কবিতার বই পড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মালো স্বভাবতই। "বনলতা সেন" কবিতাটা কেন যেন খুব আকর্ষণ করে আমাকে।

জীবনানন্দের লিখায় বেশ একটা টান আছে। কবিতাগুলো ভাবায়। এমন কোনো ভাব, যা হয়তো সচরাচর আমরা ভাবি না।

কিন্তু কবিতার বই পড়তে গিয়ে বুঝলাম এখনো ম্যাচুরিটি হয়নি আমার কবিতা পড়ার। বইয়ে লেখক যখন কবিতার উল্লেখ করেন, তখন সেটা বেশ টানে আমাকে। কিন্তু কবিতার বইয়ে কবিতা পড়তে গেলে অর্থ উপলব্ধি করতে পারিনা। হয়তো জীবনের অন্য কোনো অধ্যায়ে কবিতার বই আবার পড়ে দেখা হবে।
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
October 17, 2020
"আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।"

প্রশ্ন হচ্ছে বনলতা সেন কে? নাকি প্রশ্ন করবো বনলতা সেন আসলেই "কে" নাকি "কি"?

ঘুরঘুরান্তি! দুনিয়া ঘুরছে সাথে ঘুরছি আমরাও। কিসের নেশায় কার পেছনে যে ছুটছি সকলে!?
"পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,
হয় নাকি?"


কবি হয়তো বনলতা সেন নামে শান্তি পেয়েছিলেন কিন্তু আর সবার শান্তি কিসে???
Profile Image for Tahmina Akter Mili.
18 reviews1 follower
July 25, 2022
I wanted to write the review in Bangla. Then I realized that it should be in English, everyone should know how beautiful the writing of a Bengali writer. I loved this poems and I can read it anywhere anytime and any moment of my life.
Profile Image for তানজুম ফেরদৌস.
56 reviews5 followers
Read
April 18, 2025
শান্ত শুক্রবার দিন হোক অনন্তকালের,
বনলতা সেন , কবিতা আর চায়ের কাপের!
Profile Image for Saheli Roy.
30 reviews
November 26, 2025
এই বই এর কোনো review নেই। কারণ এসব অমর সৃষ্টি যুগে যুগেই হয়। পড়তে পড়তে এমন ও অনেক সময় হয়েছে যে আমি কাঁদছি কিন্তু খেয়ালই নেই যে কেঁদে চলেছি। কবির মতো হয়তো বাংলার প্রকৃতিকে আমরা কেউই ভালবাসতে পারব না কিন্তু ঘাসের ও যে গন্ধ থাকে এবং সেটা যে কোনো কবিতা র মধ্যেও থাকে সেটা এই বই পড়লেই বোঝা যায়।
Profile Image for Chandreyee Momo.
219 reviews30 followers
July 13, 2025
আহা কি জিনিস আমি এতদিন পর পড়লাম!
Displaying 1 - 30 of 88 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.