লেখকের কথা- 'প্রডিজি' বর্তমান প্রেক্ষাপটে লেখা উপন্যাস, মূল চরিত্র আবার শিশু। পাঠকরা এটা বেশ পছন্দ করেছে। মজার কথা হল আমার সহকর্মীরা বলেছে এর মাঝে তারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ খুজে পেয়েছে। আমার মনে হয় তারা হয়ত খুব ভুল বলে নি, নিজের অজান্তেই লেখার সময় এখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ছবি ফুটে উঠেছে।
Muhammed Zafar Iqbal (Bengali: মুহম্মদ জাফর ইকবাল) is one of the most famous Bangladeshi author of Science-Fiction and Children's Literature ever to grace the Bengali literary community since the country's independence in 1971. He is a professor of Computer Science & Engineering at Shahjalal University of Science and Technology (SUST). Before that, Iqbal worked as a research scientist in Bell Communication Research for six years until 1994.
Birth and Family Background: Iqbal was born on 23 December 1952 in Sylhet. His father, Foyzur Rahman Ahmed, was a police officer. In his childhood, he traveled various part of Bangladesh, because of his father's transferring job. Zafar Iqbal was encouraged by his father for writing at an early life. He wrote his first science fiction work at the age of seven. On 5 May 1971, during the liberation war of Bangladesh, the Pakistan's invading army captured his father and killed him brutally in the bank of a river.
Education: Iqbal passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1968 and HSC exam from Dhaka College in 1970. He earned his BSc in Physics from Dhaka University in 1976. In the same year Iqbal went to University of Washington to obtain his PhD and earned the degree in 1982.
Personal Life: Iqbal married Dr. Yasmeen Haque in 1978. Yasmeen is the Dean of the Life Science Department, Head of the Physics Department, Provost of the Shohid Janoni Jahanara Imam Hall and a researcher at SUST. They have two children - son Nabil and daughter Yeshim. Yeshim translated the book Amar Bondhu Rashed (Rashed, My Friend) written by her father. Iqbal's elder brother, Humayun Ahmed, was the most popular author and film-maker of Bangladesh since its independence. Humayun died after a nine-month struggle against colorectal cancer on the 19 July 2012. His younger brother, Ahsan Habib, is the editor of the satirical magazine, Unmad and one of the most reknowned cartoonist of Bangladesh.
Academic Career: After obtaining PhD degree, Iqbal worked as a post-doctoral researcher at California Institute of Technology (CalTech) from 1983 to 1988. He then joined Bell Communications Research (Bellcore), a separate corporation from the Bell Labs (now Telcordia Technologies), as a Research Scientist. He left the institute in 1994 and joined the faculty of the Department of CSE of SUST.
Literary career: Iqbal started writing stories from a very early age. Iqbal wrote his first short story at the age of seven. While studying in the Dhaka University Iqbal's story Copotronic Bhalobasa was published in a local magazine. But, a number of readers at that time felt that the story was based on a foreign story. To answer this allegation, he later rewrote the story and published the story in collection of stories named Copotronic Sukh Dukkho. Since then he is the most popular writer both in Bengali Science-Fiction and in Juvenile Leterature of the country.
Other Activities and Awards: Zafar Iqbal won the Bangla Academy Award, the highest award in literature in Bangladesh, in 2004. Iqbal also played a leading role in founding Bangladesh Mathematical Olympiad. In 2011 he won Rotary SEED Award for his contribution in field of education.
গুপ্ত অধ্যাপনা করতে গিয়ে, ছাত্রের টেবিলে পেয়ে নিয়ে এসেছিলাম। অনেকদিন বাদে জাফর ইকবালের বই। যাঁদের বই ধরে বইয়ের জগতটা চেনা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁদের একজন। তাঁর অনেক বই ৫-৬ বার করে পড়া, কাজেই প্রত্যাশার লেভেলটা সবসময়ই বেশি। প্রথমে একটু নেগেটিভ কথা বলে নেই। জাফর ইকবালের এখনকার বই আগেরগুলোরই 'নতুন বোতল' ভার্সন, এইটা ইদানীং সবাই বলে।কথাটা এই বইয়ের ক্ষেত্রে মিথ্যে নয় (আগের যে বইটার সাথে মিল পেয়েছি সেটার নাম বলছিনা, স্পয়লারের মানে নাই)। জাফর ইকবাল যতো কাজ করেন একসাথে, তার এক-শতাংশও আমি পারবোনা। কাজেই প্রতিবার আনকোরা কন্সেপ্টে বই লেখার উপদেশ দেবার পাকামো করছিনা। রচনা সম্পাদনার ব্যাপারটা লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গী। রবি ঠাকুরেরও অসংখ্য গান-কবিতার (শুধু এগুলোর কথাই বলছি) মাঝে পুনরাবৃত্তি এসেছে। নিশ্চয়ই প্রতিটা বই সাহিত্য ইতিহাসে ক্লাসিক হবে এমনটা ভেবে লিখছেননা জাফর ইকবাল। এই বিতর্কে আমার ভাবনা এইটুকুই। এবার আসল কথায় আসি। মুক্তিযুদ্ধ, জামাত-বিরোধিতা, অসাম্প্রদায়িক চিন্তার ব্যাপারটায় জাফর ইকবাল সিদ্ধহস্ত। সমাজসত্যের প্রতি যেসব লেখকদের 'ইয়ে মানে' আছে, সর্বজনগ্রাহ্যতা হারাবার সস্তা ভয়ে যারা 'নিউট্রাল' অবস্থান নিতে চান তারা লেখকের পতিত স্বত্বা ধারণ করে। অর্থাৎ, ঋত্বিক যে চুপ থাকাকে বলেছেন "উপরের তলার শুয়োরের বাচ্চাদের সাহায্য করা"। এই বইয়ের মধ্যে তিনি চরিত্রের মধ্য দিয়ে বলিয়েছেন, "ঐ টঙটা জামাতি, ওরা হল অ্যাটাকের সময় অস্ত্র সাপ্লাই দেয়।" বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীর নামের সনাতন ধর্মাবলম্বী এক তরুণ শিক্ষককে ভিলেন একজন বলে, "শালা মালাউন, তোর বাপের দেশে যাস না কেন?" এই ঘটনায় গল্পের নায়ক অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে শিখককে, তাকে শুধু শুধু মালাউন বলতে গেল কেন? হেসে উত্তর আসে, "এরকম মাঝে মাঝে আমাদের শুনতে হয়। " গল্পের জন্য নয়, মূলত এসব ব্যাপারের জন্যই ভালো লেগেছে।
গল্পের নাম প্রডিজি, নাম ভুমিকায় আছে বাচ্চা একটা মেয়ে শারমিন। যে কিনা এক টং ঘরের চা বিক্রেতার মেয়ে। যার কিনা কোন ফরমাল পড়াশোনা নেই, কিন্তু মুখে মুখে সে অনেক বড় বড় হিসেব করতে পারে। তাকে কিনা আবিষ্কার করে রাফি।
গল্পের আরেক অংশ জুড়ে রয়েছে বিদেশী বিনিয়োগ কোম্পানি এনডেভার যারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে, যার পিছনে রয়েছে ভয়ংকর এক উদ্দেশ্য। যা উন্মোচন করতে চায় সাহসী সাংবাদিক ঈশিতা।
প্যারালালি চলমান দুই কাহিনী মিলে যায় একসময়। এই নিয়েই হল কাহিনী।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ এই গল্পের কাহিনী জাফর ইকবালের অন্যান্য সায়েন্স ফিকশন বই গুলোর মতন নয়, একটু ব্যাতিক্রম। অন্য বই গুলোতে যেমন চরিত্র গুলোর নাম থেকে শুরু করে টাইম লাইন জীবন ব্যবস্থা বিচিত্র এখানে তেমন নয়। গল্প সায়েন্স ফিকশন হলেও টাইম লাইন থেকে শুরু করে অবস্থানও বাংলাদেশের। সেজন্য পড়তে গিয়ে খারাপ লাগে নাই এক মুহুর্তের জন্যই।
একটা সময় ছিল, যখন জাফর ইকবালের বই গোগ্রাসে গিলতাম। এখন অবশ্য স্যারের বই পড়া হয় না বললেই চলে, কেন জানি আগের সেই টানটা পাই না। তাছাড়া সায়েন্স ফিকশন আমাকে একদমই টানে না, তাও কী মনে করে এই বইটা পড়ে ফেললাম। আমি যদ্দূর জানি, এইটা স্যারের প্রথম সাই-ফাই বই। ভেবেছিলাম পড়তে খুব একটা ভালো লাগবে না, কিন্তু দেখলাম বইটা পড়তে বেশ ভালোই লাগলো! একদম এক বসায় শেষ করে ফেলেছি।
🌻🌻🌻
প্রডিজি অর্থ বিস্ময়কর কোনো ব্যক্তি বা বস্তু, যার মাঝে অনন্য সাধারণ গুণাবলি রয়েছে। এই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীটা গড়ে ওঠে দুইদিক দিয়ে। এক দিকের গল্পটা হচ্ছে এনডেভার নামক এক অামেরিকান কোম্পানি আমাদের দেশে মানুষের ব্রেন ব্যবহার করে নিউরাল কম্পিউটার তৈরির গবেষণা করার জন্য কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করছে। কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য এটা ছিল না। সুপার কম্পিউটার তৈরি করার আড়ালে তাদের উদ্দেশ্য ছিল বস্তির ছোট ছোট বাচ্চাদের এক ধরনের ভাইরাস প্রয়োগ করে অসুস্থ করার পর তাদের নিজেদের অফিসে নিয়ে এসে তাদের ব্রেনের উপর গবেষণা করা। অন্যদিকে ঈশিতা ছিলো একজন সাহসী সাংবাদিক। ঈশিতাকে তার বস বললো এনডেভারের অফিসে গিয়ে সেখানকার বসের ইন্টারভিউ নিতে। ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে সে এনডেভার সম্পর্কে বেশ কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য জেনে যায়, যা পরবর্তীতে তার জীবনে বিপদ ডেকে আনে।
অন্যদিকে ভার্সিটির এক টং দোকানের দোকানির মেয়ে বারো বছর বয়সী শারমিন খদ্দেরদের কার কত বিল হয়েছে, অনায়াসে গুণ করে বলে দিতে পারে। একসাথে মনে রাখতে পারে সবার বিল। পড়ালেখা না জানলেও একটুও ভুল হয় না তার গণনায়। ভার্সিটির নতুন লেকচারার রাফি বের করেন, মেয়েটার ডিসলেক্সিয়া আছে, যার কারণে সে এই অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারিণী। শারমিন আর রাফির সাথে ঘটনাচক্রে দেখা হয়ে যায় ঈশিতার। শারমিনের কারণে তাদের পড়তে হয় মহাবিপদে। তার পেছনে কারণ একটাই, শারমিনের ডিসলেক্সিয়া থাকা। তাছাড়া, মেয়েটি ছিল গণিতের প্রডিজি। মুহূর্তেই বড় বড় গুণ করে ফেলত সে, যা একটি কম্পিউটারের জন্যও অসম্ভব। আর তার এই গুণই তাকে নিয়ে যায় এনডেভারের কাছে। তারপর?
এটা ভাল ছিল। সত্যিই ভাল ছিল। জাফর ইকবাল স্যারের অন্যান্য বই(সাইন্স ফিকশন) এর তুলোনায় এটার প্লটটা একটু ভিন্ন ধরণের ছিল। তাও আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে । আর উনার বই এ সচরাচর যা দেখা যায় না, একটু রোমান্টিসিজম এর টাচ ও ছিল :p বইটাতে। যদিও খুবই অল্প। স্যারের লেখার একটা অসাধারণ দিক হচ্ছে যে খুব অল্প কথায় এত্তহ সুন্দর করে অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেন!!! এই বইটা তার আদর্শ উদাহরণ :) কাহিনী একটা ছোট্ট কিউট মেয়েকে ঘিরে । বই এর নাম শুনেই বোঝা যায় যে মেয়েটা একটা চাইল্ড প্রডিজি। তার ক্ষমতা হল সে যে কোন ধরণের গাণিতিক সমস্যার সমাধান মুখে মুখে করে ফেলতে পারে। ঘটনাক্রমে এক নবীন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তা আবিষ্কার করে ফেলে। এরপর ঘটনা মোড় নিতে থাকে। গল্পের আরেক কাহিনীতে এক বিদেশি কোম্পানী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে/ গবেষণা করতে আসে। কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর এক সত্য। এই দুই কাহিনীর মিশেলে বই এর ঘটনা এগিয়ে যায়। বই এর চরিত্র গুলোর মধ্যে ঈশিতাকে ভাল লেগেছে, স্যার এর বই এর নারী চরিত্র গুলো সবসময় স্ট্রংই হয়। কিন্তু এদেশের মেয়েরা যদি সত্যি ঈশিতার মত হতে পারে , তাহলে সেটা সবার জন্যেই ভাল হত। আর প্রধান ছেলে চরিত্র যে রাফি তাকে আরেকটু শক্ত দেখান গেলে ভাল হত। অনেক যায়গাতেই দূর্বলতার পরিচয় দিয়েছে ছেলেটা। সব মিলিয়ে মোটামুটি উপোভোগ্য একটা বই। তবে চাইলেই বইটা আরেকটু বড় আর গল্প আরো সুন্দর করে তুলে ধরা যেত । ৩.৫ স্টারস :)
বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে প্রথমে আঁচ করেছিলাম সাইন্স ফিকশন। তবুও কেন যেন পুরোপুরি সাইন্স ফিকশন মনে হয় নি। সচারচর বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে অনেকটা ভিন্নধর্মী কাহিনী। বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য যোগ দেয়া এক তরুণ শিক্ষকের চায়ের দোকানে Dyslexia-য় আক্রান্ত এক জীবন্ত ক্যালকুলেটর আবিষ্কারের গল্প। অনেকদিন পর ভিন্ন থিমের একটা বই পড়ে সেইরকম তৃপ্তি পেয়েছি!
বই থেকে সরাসরি উক্তি "পায়েস রাফির প্রিয় খাবার না, গরিব মানুষের ঘরের পায়েসও ভাল হয় না, কিন্তু রাফি অবাক হয়ে দেখল পায়েসটা চমৎকার।" এইটা দিয়ে উনি কি বুঝাইতে চাইল? 🙄
বাকিসব ঠিক ধরলাম কিন্তু এত প্রতিভা লুকিয়ে রেখে কি লাভ হল শেষে? শারমিন কে না লুকিয়ে ওর গুনের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যেমে ওর জীবন আর সহজ হত, ওর মা বাবা কে এত অর্থকষ্টে থাকা লাগত না, নিশ্চয় অনেক বৃত্তি পেয়ে আর ভাল শিক্ষক পেত ওর সঠিক পরিচর্যার জন্য কিন্তু না তাকে এক সাধারণ জীবন(পড়ুন তাকে রাফির উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে) । না রাফি তুমি শুধু শারমিনের প্রতিভা কে আগে আবিষ্কার করার কারনে ওর জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিতে পার না 😕
বই - প্রডিজি। লেখক - মুহম্মদ জাফর ইকবাল। প্রকাশনা - প্রথমা।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়ানোর জন্য আসে রাফি।ক্রমেই সে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি টঙের দোকানে রাফির সাথে পরিচয় হয় শারমিন নামের একটি বাচ্চা মেয়ের। শারমিন মূহূর্তের মধ্যে দোকানের সব হিসাব মুখে মুখে করে ফেলতে পারে। ছোটখাটো পরীক্ষার মাধ্যমে রাফি বুঝতে পারে শারমিন আসলে একজন প্রডিজি। কিন্তু শারমিন পড়াশোনা জানে না, করতেও পারে না।তার ডিসলেক্সিয়া অর্থাৎ লার্নিং ডিজঅর্ডার ( বইয়ের অক্ষরকে উল্টো মনে হওয়া) রয়েছে।রাফি শারমিনের জন্য পড়াশোনার একটা পদ্ধতি বের করে ফেলে।
এনডেভার নামক একটি কম্পিউটার ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানি লোকচক্ষুর আড়ালে গোপনীয় সব কাজ করে চলছে।যারা আইনকে তোয়াক্কা না করেই জনসাধারণকে ব্যবহার করে তাদের কাজ সম্পন্ন করছে। এই কোম্পানি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গিয়ে সত্যটা ধরা পড়ে যায় সাহসী রিপোর্টার ঈশিতার কাছে। তারপর থেকেই তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ঘটনাচক্রে ঈশিতার সাথে পরিচয় হয় শারমিন ও রাফির।এনডেভার কোম্পানিতে কী হচ্ছে তা জানতে ঈশিতা সাহায্য নেয় শারমিনের।পূর্বে কম্পিউটার ব্যবহার না করা শারমিন মুহূর্তেই হ্যাক করে ফেলে ঐ কোম্পানির ওয়েবসাইট। ছদ্মবেশে চাক্ষুষ কী হচ্ছে দেখতে গিয়ে বিপদে পড়ে ঈশিতা।একই চক্রব্যূহে আটকা পড়ে শারমিন ও রাফি। এই মহাবিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় মাজু বাঙালি নামের জনৈক ব্যক্তি।
এই বইটি বিশেষ করে কিশোরদের জন্য লেখা।কাজেই ঐ বয়স পার হওয়ায় ততোটা উপভোগ করতে পারিনি, যতটা আশা করেছিলাম। এছাড়া ফর্মাল পড়াশোনা না জানা একটা বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে লেখক গণিত ও কম্পিউটারের মতো বিচিত্র কাজ করিয়ে নিয়েছেন ,তা কেমন জানি হাস্যকর মনে হলো। এছাড়া গল্পের ভিলেন চরিত্রগুলো ছিল সাদামাটা। সমাপ্তি অংশ খুব তাড়াতাড়িই শেষ হয়েছে।এই বই থেকে ডিসলেক্সিক কিছু ব্যক্তির নাম জানা যায়,যেমন - আইনস্টাইন,পাবলো পিকাসো,টম ক্রুজ,ওয়াল্ট ডিজনি।
বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে সায়মা নামের একজনকে।যে স্বাভাবিক জীবনে ছবি আঁকত, কবিতা লিখতো, গণিত অলিম্পিয়াডে পুরষ্কার পেত। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তার জীবনকে তছনছ করে দেয়।
সর্বোপরি ভিন্ন স্বাদের একটি গল্প ছিল যা পাঠককে আনন্দ দিবে আশা করছি।
প্রডিজি অর্থ বিস্ময়কর কোনো ব্যক্তি বা বস্তু, যার মাঝে অনন্য সাধারণ গুণাবলি রয়েছে।ভার্সিটির এক টং দোকানের দোকানির মেয়ে বারো বছর বয়সী শারমিন খদ্দেরদের কার কত বিল হয়েছে, অনায়াসে গুণ করে বলে দিতে পারে।ভার্সিটির নতুন লেকচারার রাফি শারমিনকে আবিষ্কার করেন এবং বের করেন মেয়েটার ডিসলেক্সিয়া আছে।শারমিন আর রাফির সাথে ঘটনাচক্রে দেখা হয়ে যায় সাংবাদিক ঈশিতার।শারমিন এনডেভার নামক এক অামেরিকান কোম্পানির সত্য উদঘাটনে লেগেছিলো।এই কোম্পানি প্রচার করে তারা নিউরাল কম্পিউটার তৈরির গবেষণা করার জন্য কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করছে। কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সরাসরি মানুষের মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে নিউরাল কম্পিউটার তৈরি করা।সেই উদ্দেশ্যে তারা বস্তির ছোট ছোট বাচ্চাদের এক ধরনের ভাইরাস প্রয়োগ করে অসুস্থ করার পর তাদের নিজেদের অফিসে সেবা প্রদানের নাম করে নিয়ে এসে ব্রেনের উপর গবেষণা করে।শারমিন সত্যটা প্রকাশ করে দেবে এই ভয়ে তারা ঈশিতাকে আটক করে এবং সাহায্য করতে যাওয়ায় সন্ধান পায় শারমিন এবং রাফির তাই তাদেরও ধরে আনা হয় শেষ পর্যন্ত এনডেভারের অফিসে এক অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের সাহায্যে তারা মুক্তি পায় এবং এনডেভারকে তাদের কোম্পানি গুটিয়ে নিতে হয়।
এটা বোধহয় আমার পড়া জীবনের প্রথম উপন্যাস ছিলো। ক্লাস ফোরে ছিলাম তখন। তার আগে সব ফেইরিটেল নিয়েই পড়ে ���াকতাম। অবশ্য ক্লাস টুতে থাকতে পথের পাঁচালি পড়ার চেষ্টা করেছিলাম ,তেমন লাভ হয়নি। তবে এই বইটার মাধ্যমেই আমি বই পড়ার প্রেমে পড়েছিলাম। সায়েন্টিফিক অনেক টার্ম তখন বুঝতে পারিনি ,কিন্তু গোগ্রাসে গিলেছিলাম বইটা। স্যারের লেখা অসাধারণ বই একটা!
মুহম্মদ জাফর ইকবালের অন্যান্য লেখা গুলির মতই চমৎকার এবং আগাগোড়া আকর্ষণীয়, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নির্ভর লেখা কি��াবে সহয করে মানুষের কাছে তুলে ধরা যায় এবং তা টানটান উত্তেজনার বিষয় করে তোলা যায় তা ওনার কাছ থেকে শেখা যায়, অতি সুখ পাঠ্য এবং আকর্ষণীয়, এ বই এক খানা কিনে ফেলতেই পারেন এবং প্রিয়জনকে উপহার দিতেই পারেন, আর হ্যাঁ ইহা কিশোর পাঠ্য লেখার মধ্যেও পড়ে...
গল্পের বইয়ের মধ্যে সর্বপ্রথম এই বইটা গিফট পেয়েছিলাম। তাও প্রায় তিন-চার বছর আগে প্রডিজি বইটা পড়েছিলাম। এখানে, মনে হয় একটা মেয়েই অসাধারণ মেধার অধিকারি। তবে তার উপর কু-নজর পড়ে দুষ্টু মানুষের,, নানা প্রতিকূলতার পর আসে জয়। শিক্ষণীয় এবং রোমাঞ্চকর গল্প ছোটদের জন্য। ছোটবেলায় অনেক মজা পেয়েছিলাম বইটা পড়ে....
গল্প টা ভালো ছিল। বেশ থ্রিল অনুভব করলেও শেষের দিকে থ্রিলিং টা শেষ হয়ে গেছে। যদি আরো বড় করত তবে বেশি মজা পেতাম। অথবা শেষ টা অন্য রকম হতো। তবুও বলা যায় খুব ভালো তবে চমৎকার নয়।
জীবনের সর্বশেষ পড়া জাফর ইকবালের বই এটা! সম্ভবত আর কখনো উনাকে পড়ছিনা! Dyslexia রোগ সম্পর্কে কিছু জেনেছি, এছাড়া সময় অপচয় ছাড়া আর আপাতত কিছুইনা এই বই!!!
বইয়ের প্রচ্ছদ অনুযায়ী এটা সাইন্স ফিকশন। তবু কেন জানি এটা আমার সাইন্স ফিকশন লাগে নি। আমি আকাশ-কুসুম জগতে প্রায়ই বিচরণ করি বলেই হয়ত লাগে নি। তবে সচারচর বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে একটু ভিন্নধর্মী কাহিনী। বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য যোগ দেয়া এক তরুণ শিক্ষকের চায়ের দোকানে কাজ করা, ডিসপ্লেক্সিয়ায় আক্রান্ত এক জীবন্ত ক্যালকুলেটরকে আবিষ্কারের গল্প। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশে আসা এক নতুন মার্কিন প্রতিষ্ঠান। কাহিনীতে একটুআধটু রোমান্টিকতাও আছে। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে। . জাফর ইকবাল স্যার মানুষ হিসেবে কেমন, কই থেকে প্লট আনেন সেই বিতর্কে যাবো না। আমাদের প্রজন্মে আমরা যাদের লেখা পড়ে বইপোকা হয়েছি স্যার তাদোর একজন। কিশোর বয়সী কারো বইয়ের কথা ভাবলে এখনো প্রথমেই স্যারের বইয়ের নাম মাথায় আসে। সবচেয়ে ভালো লাগে অল্প লোখায় স্যার অনেক কিছু বলে ফেলতে পারেন।
ইউক্রাইনিয়ান সায়েন্স ফিকশন লেখক আনাতোলি দ্নেপ্রভ-এর 'ম্যাক্সওয়েল সমীকরণ' গল্পটা পড়েছেন? যারা পড়েননি তারা কষ্ট করে নিচের লিংকটাতে গিয়ে ১৯৬০ সালে লেখা গল্পটা একটু পড়ে নিন। বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। ৫১ বছর পর সেই গল্প যদি ৫,৯০০ কিলোমিটার দূরের কোন দেশের কোন লেখকের নিউরনে অনুরণন ঘটায় তাহলে তাকে কী বলবো - কাকতালীয়, নাকি ভাবনার ঐক্য?
লেখার মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু জিনিস ভাবা যাক। প্রথমে ভাবতে শেখা যায় কোন উন্নত রাষ্ট্র যদি তার থেকে অধস্তন কোন রাষ্ট্রে কোন কাজ করতে চায় সেখানে অবশ্যই সমস্যা আছে। দ্বিতীয়ত একটা বিষয় ঘুরপাক তা হলো, যাদেরকে প্রডিজি বলা হয়ে থাকে তাদের আইকিউ অনেক বেশি হয়ে থাকে। আর যাদের আইকিউ বেশি তারা তো যেকোন পরিস্থিতে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারা কথা যেটা এই বইয়ে একদম শেষে গিয়ে দেখানো হয়েছে। তৃতীয়, আমি জানিনা বাংলাদেশে প্রডিজি আছে কিনা থাকলেও সেগুলোর পরিচর্যা করা হয় কিনা। মোটামুটি ভাল লেগেছে।