হুমায়ন নামের এক দুষ্ট ছেলেকে নিয়ে গল্প বোতল ভূত। হুমায়ূন ক্লাসে ভালো ছাত্র না। ক্লাশের ৩২ জনের মধ্যে ওর রোল ৩২। তবে ওদের ক্লাশে যে ছেলেটা একদম কথা বলে না- মুনির। ও কিন্তু খুব ভালো ছাত্র। গণ্ডারের ইংরেজি বলতে বললে চট করে বলে দিতে পারবে। শুদ্ধ বানানে। মুনির হূমায়ুনকে নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করে, ভূত পুষবে নাকি? মুনির বললো, ওকে নাকি একজন ভূতের বাচ্চা দেবে। এই ভূতের বাচ্চা আর হুমায়ুনকে নিয়েই বোতল ভূত-এর গল্প।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
ছোটোবেলায় আমার পড়া হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই। এখোনো মনে আছে। তখন আমার বয়স ৯ বছর। জন্মদিনে উপহার পেয়েছিলাম। অমনি পড়ে ফেলেছিলাম। এরপরে কত বই পড়েছি লেখকের, অথচ এটার মত এত আনন্দ পেয়েছি বলে মনে হয়না। বইটা হারিয়ে গিয়েছিল বাসা থেকে। এত মন খারাপ হয়েছিল। এতদিন পরে আবার পড়লাম। একদম সেই ছোটোবেলার মত আনন্দ নিয়ে। কী দারুণ লেখাটাই না লিখেছেন। ঠিক করেছি কয়েক কপি কিনে বাচ্চাদের কে উপহার দেব।
ছোটদের উপযোগি দারুণ একটা উপন্যাস। ফিনিশিংটা আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে। একপেশে ভাবে যদি লেখক ভূতের অস্তিত্বকে পাকাপোক্ত করে কাহিনী শেষ করে দিতেন, তাহলে অনেক খুদে পাঠকদের মনে সেটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারত। কিন্তু ভাগ্য ভাল, হুমায়ুন আহমেদ সেই কাজ করেন নি!
বোতল ভূত! এ আবার কেমন ভূত? এই ভূত দেখতে কেমন? হুমায়ূন ও তার বন্ধু মুনির যায় মুনিরের এক দূর সম্পর্কের নানার বাড়িতে ভূতের বাচ্চা আনতে, ভূতের বাচ্চা কিভাবে নেবে তারা? নানা একটা বোতল খুঁজে তার মধ্যে ভূতের বাচ্চা টা ভরে দেন আর এখান থেকেই ভূতের নাম হয় বোতল ভূত। এই ভুত কে নিয়েই এগিয়ে যায় বোতল ভূতের কাহিনী, বোতল ভূতের কাণ্ডকারখানা দেখে সবাই চমকে যায়, অনেক অসাধ্য সাধন করে বসে এই বোতল ভূত, হুমায়ূনের বড় বোনের বিয়ে আটকানো থেকে শুরু করে হুমায়ূন দের ফুটবল ম্যাচ জিতিয়ে দেয়া। কিন্তু হঠাৎ একদিন? বোতল ভূত হারিয়ে যায়! হুমায়ূনরা আর খুঁজে পায়না তাদের ভালোবাসার বোতল ভূতকে।
"যারা সব পরীক্ষায় ফার্স্ট-সেকেন্ড হয় তারা কবি-সাহিত্যিক হতে পারেনা। নিয়ম নেই।"
খুবই মন ভালো করে দেওয়ার মতো একটা কথা! আত্নবিশ্বাস ফিরে পাবার মতো একটা কথা!
ছোটবেলা এই বইটি পড়া হয়নি বলে মনে অনেক দুঃখ ছিলো। এখন পড়ার পর সেই দুঃখ আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো ছোটবেলা পড়তে পারিনি বলে! ঠিক করেছি কন্যাকে বাংলা পড়তে শেখাবো! তা না হলে বোতল ভূতের মতো সুন্দর একটা গল্প সে পড়তে পারবেনা!
ছোটবেলায় সবারই আলাদীনের প্রদীপের জ্বিনের মতো ইচ্ছাপূরণের একটা ফ্যান্টাসি জাগে। ইশ! যদি এমনটা করতে পারতাম। যদি এমনটা হতো! এইসব আরও কত কী! বোতল ভূতও হুমায়ূন আহমেদের নিজেরই ছোটবেলায় ফ্যান্টাসি। বোর্ডে স্ট্যান্ড করা হুমায়ূন আহমেদ ছোটবেলায় মহা বিচ্ছু ছিল। সেই সময়ের বন্ধুদের আর পরিবারের সাথে কাটানো সময়কে তিনি তুলে ধরেছেন ইচ্ছাপূরণ করা উপকারী ভূতের কিশোর উপন্যাসটায়।
"ভূত ভাই, তুমি সত্যি হও আর মিথ্যাই হও, আমি সারা জীবন তোমাকে ভালোবেসে যাবো। তুমি যেখানেই থাকো, ভালো থেকো, সুখে থেকো।“ এই লাইনটা আমার ফেসবুকের বায়োতেও ছিলো বেশ কিছুদিন। আমার জীবনের প্রথম পড়া হুমায়ূন আহমেদের বই ছিল তার একটি কিশোর উপন্যাস সমগ্র, সেটার পঞ্চম গল্প ছিলো সম্ভবত “বোতল ভূত।“ অথচ এই তো সেদিনও আমি আমার ভাগ্নী রূপকথাকে গল্পটা শোনাচ্ছিলাম। একজন দেখতে যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত, সেটা যখন বোঝাচ্ছিলাম, তখন রূপকথা বলে বসলো, “এটা আবার কে?” এই ইউটিউব জেনারেশনের পিচ্চিকে তখন রবীন্দ্রনাথের ছবি দেখিয়েছিলাম, উনি কে–সেটা বলেছিলাম 😅 এই গল্পটা আমার অসম্ভব, অসম্ভব প্রিয়। আমি অসংখ্যবার পড়েছি গল্পটা, কারণ ক্লাস সেভেন পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া নিষেধ ছিলো, তাই এই একটা বইয়েই তখন পর্যন্ত আমি লেখককে পেতাম। পড়ার সময় কত মনে হয়েছে আমার একটা বোতল ভূত থাকতো! আমার ছোট-ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারতাম! আমি চোখ বন্ধ করে ভাবলে এখনো গল্পটা কল্পনা করে ফেলতে পারি। একটা বোতল, যেটার ভেতরে ভূত থাকে, আর একেকজন একেক রং দেখতে পায়। অঙ্কের টিচার সেই রঙিন ধোঁয়া খেয়ে ফেলে হেঁচকির পর হেঁচকি তুলতে থাকেন। বড় চাচা কোন এক পিচ্চির নড়তে থাকা দাঁত থাপ্পড় দিয়ে ফেলে সেটাকে হরলিক্সের বয়ামে রেখে দেন। বোতল ভূত একাই ফিরে আসে কুয়ার মধ্যে ফেলে দেবার পরও। তারপর একদিন, রবীন্দ্রনাথের মত লোকটার যেন কী হয়। আর বোতল ভূতেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এই গল্পের শেষ লাইনটা যখন প্রথমবার পড়েছিলাম, তখন কেমন যেন একা লেগেছিলো নিজেকে খুব। এখনও মনে হয়, ইশ! একটা বোতল ভূত থাকতো! সম্ভবত হুমায়ূন আহমেদের “কিছু শৈশব” অথবা “বলপয়েন্ট” বইয়ে পড়েছিলাম, উনি এই গল্পটা লিখেছিলেন একজন সত্যিকারের কার্টুনিস্টকে নিয়ে, যার আসলেই রবীন্দ্রনাথের মত দাঁড়ি ছিলো। কার্টুনিস্ট লেখকের সামনে বসে বসে আঁকতেন, আর শৈশবের লেখক মুগ্ধ হয়ে তার আঁকা দেখতেন। একদিন কার্টুনিস্টকে কারা যেন ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর কোনোদিন লেখক তাকে দেখেন নি। সেই লেখায় হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন, “একজন লেখক হবার এটাই সুবিধা। একজন লেখক কখনো কাউকে হারিয়ে যেতে দেন না।“ আমার মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হয়, সেই রবীন্দ্রনাথের মত দাঁড়িওয়ালা কার্টুনিস্টকে দেখার। দেখা হলে তাকে বলতাম, “জানেন, আমার প্রিয় লেখক আপনাকে নিয়ে একটা গল্প লিখেছেন। গল্পটা পড়লেই আমার মন ভালো হয়ে যে��ো। কতবার যে পড়েছি! আপনাকে থ্যাংকু, লেখকের জীবনে আসার জন্য। নাহলে এত সুন্দর গল্পটা কীভাবে পেতাম? থ্যাংকু সো মাচ!” অসম্ভব প্রিয় এই গল্পটার জন্য অনেক ভালোবাসা! আর বোতল ভূত, তুমি আসলেই যেখানে থাকো না কেন, সুখে থেকো!
This entire review has been hidden because of spoilers.
গল্পটা হুমায়ূনকে নিয়ে। যে কিনা ক্লাসের সবচেয়ে খারাপ স্টুডেন্ট(!)। ৩২ জনের মাঝে তার রোল ৩২। আর মুনিরকে নিয়েও। খুব ভাল ছাত্র মুনির, কিন্তু সমস্যা একটাই, শিক্ষক কোন পড়া জিজ্ঞেস করলে মুখ ফুটে কিছু বলে না সে। খাতায় সব লিখে দেয়। এই জন্য মারও কম খেতে হয়নি তাকে। এমনই ভাবে একদিন মুনিরের খাতা থেকে কপি করার কারনে হুমায়ূন ও মুনিরকে স্যার ডেকে নেয় সামনে, মুনির ছাড়া পেলেও হুমায়ূন বেদম মার খায়। তার প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ার কারনেই স্বম্ভবত মুনির হূমায়ূনকে ভূতের বাচ্চা নিতে যেতে নিয়ে যায়। সেখানে দেখা হয় রবি নানার সাথে। নাম রবি এসেছে রবীন্দ্রনাথ থেকে। চেহারা তার মতন বলেই কিনা তিনি নিজেকে রবীন্দ্রনাথ ভাবতে পছন্দ করেন। রবীন্দ্রনাথের লেখাও মেরে দিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দেন শুধু নাম পরিবর্তন করে। তিনি হুমায়ূনকে হোমিওপাথির শিশিতে ভরে ভূতের বাচ্চা দেন। এর পর থেকেই হুমায়ূনের জীবনে সব অদ্ভুতুরে কান্ডকারখানা ঘটতে থাকে।
ব্যাংকের কাজে বাটা সিগন্যালে গিয়েছিলাম৪টার দিকে। ৫ মিনিটেই কাজ শেষ। ৫টার দিকে আবার টিউশনি ছিল তাই রুমে ফিরতেও ইচ্ছে করছিল না। তাই কাছেই দীপনপুরে ঢু মারলাম। বই খুজতে খুজতে হুমায়ূনের ভূত সমগ্র পেয়ে গেলাম হাতের কাছে। সাইজও কম লাগল শুরু করে দিলাম। ছোট বই এক টানে শেষ হয়ে গেল।
অনেক আগে পড়েছিল। কিন্তু বইয়ের কাহিনী থেকে শুরু করে নাম পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলাম। এখন পড়ে বুঝেছি তখন বেশ মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু এখন কেন যেন ভালো লাগেনি। হয়তো এই বয়সের জন্য না! আবার বড্ড বেশি আনরিয়েলিস্টিক হওয়ার কারণেও এমন মনে হতে পারে। তবে এই টাইপের বইয়ে যে 'মোরালিটি' থাকা প্রয়োজন তা ভালোভাবেই আছে।
হুমায়ুন দুষ্টু ছেলে। তার বন্ধু মুনির। কথা বলে না সহজে। হঠাত তারা বিটকেলে এক দাদুর কাছ থেকে পেয়ে গেলো বোতলে পোড়া ছোট্ট ভূতের বাচ্চা। দাদু দেখতে অবিকল রবিবাবুর মতো। এরপর শুরু হল ঘটনা। হুমায়ুনের নানান বিপদে আপদে, কখনো পাটিগণিতের হাত থেকে রক্ষা করতে, কখনো ফুটবল খেলায় চ্যাম্পিয়ন হতে কখনো অরু আপার সাহায্যে এগিয়ে এলো সেই বোতল ভূত। এসব নানান ঘটনার শেষে বোতল ভূতের এক বছর পূর্তিতে সিদ্ধান্ত হল তার জন্মদিন পালন করবে সবাই মিলে।
বিশ্বাস করলেই বোতল ভূত আছে, না করলেই নেই। খুব প্যাচের কথা! কিন্তু কি আর করার। ভাই বোতল ভূত, লক্ষী সোনা, ময়না ভূত, আমার গুডরিডস এর শেলফে থেকো তুমি। দরকার হলে ডেকে নেবো।
"বীরশিশু" এর লেখক স্যুডো-রবিঠাকুরের কাছ থেকে বোতল ভূত নেবার পর মজার মজার কাহিনী গুলা বেশ ভালো। মুরুব্বিদের শাসন-সমাচার , অরু আপার বিজ্ঞানাবেগ, খেলায় বগা ভাইয়ের টিম কে হারিয়ে দেয়া ইত্যাদি সব ই ভালো ছিল। শেষের হুটহাট এন্ডিং টা কেন যেন যায় নাই ব্যাপারটার সাথে। :(
গল্পের প্রধান চরিত্র হুমায়ূন। একদিন তার স্কুলের এক সহপাঠী মুনির তাকে নিয়ে যায় ভূতের বাচ্চার কাছে। ভূতের বাচ্চা নাকি পালবে। যার কাছে নিয়ে গিয়েছিলো সেই লোক দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর মতো। তিনি একটা শিশিতে করে ভূত এনে দিলেন। তাই এর নাম হয়েছিলো বোতল ভূত। তো এই বোতল ভূত নিয়ে সবার অনেক আগ্রহ। হুমায়ূন এর বাসায় সবাই বোতল ভূত দেখতে লাগলেন। আশ্চর্য ব্যাপার এই যে এই বোতল ভূত যার হাতে যায়, শিশির কালার চেঞ্জ হয়ে যায়। এই রহস্য বের করেছে হুমায়ূনদের অংক স্যার। তিনি বোতল ভূত এর ভিতর যা ছিলো তা উপর করে খেয়ে ফেললেন। তার পর থেকেই তার ঢেকুর সমস্যা শুরু হলো। অংক স্যারকে নিয়ে যাওয়া হলো সেই রবী ঠাকুর এর মতো ব্যাক্তির কাছে। তিনি কিছু একটা জিনিশ খাওয়ালেন। তারপর অঙ্ক স্যার ঠিক হলেন। এরপর আরো অনেক কাহিনী হলো বোতল ভূত নিয়ে। বোতল ভূতকে যা আবদার করা হতো তা সে পূরণ করতো, যেমন স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে নিয়ে গেলো, পাড়ার ফুটবল টুর্নামেন্ট জিতে দিলো, হুমায়ূন এর বড় চাচার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি, অরু আপার বিয়ে আটকানো। আরো অনেক কিছু। বোতল ভূত বাড়িতে আসার ১ বছর পরই বোতল ভূতকে হারিয়ে যায়। কিভাবে হারায় কেউ জানে না।
This entire review has been hidden because of spoilers.
আমার পড়া হুমায়ূন আহমদের প্রথম বই। শৈশবে পড়া এই বইয়ের কাহিনি এখনও ভুলিনি। অদ্ভুত হলেও সত্য এই বইয়ের কাহিনির সাথে রবার্ট লুই স্টিভেনসনের “দ্য বোতল ইম্প”-এর সাথে অনেক মিল। সম্ভবত তিনি এই গল্প থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছিলেন।
ক্লাসে মুনির ছেলেটা একটু অদ্ভুত ধরনের। কারো সঙ্গে কথা বলে না। সব সময় পেছনের বেঞ্চিতে বসে। ক্লাসের সারাটা সময় জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলে চোখ পিটপিট করতে থাকে। তখন তার মুখ দেখে মনে হয়, সে স্যারের একটা কথাও বুঝতে পারছে না। মুনিরের এই স্বভাব স্কুলের সব স্যাররা জানেন। কাজেই কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন না। শুধু অংক স্যার মাঝে-মাঝে ক্ষেপে গিয়ে বলেন, কথা বলে না। ঢং ধরেছে। চার নম্বরি বেত দিয়ে আচ্ছা করে পেটালে ফড়ফড় করে কথা বলবে। কথায় কথায় বেতের কথা তুললেও অংক স্যার কখনো বেত হাতে নেন না। কিন্তু এক-এক দিন মুনিরের উপর অসম্ভব রাগ করেন। যেমন আজ করেছেন। রাগে তার শরীর কাঁপছে। মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। স্যার চৌবাচ্চার একটা অংক করতে দিয়েছেন। জটিল অংক। ল��খক মুনিরের খাতা দেখে টুকেছেন বলে দুজনের শা*স্তি হবে। মুনিরের উপর স্যারের রাগ কথা বলে না বলে। এছাড়া মুনির পড়াশোনায় খুব ভালো। বশির বলে একটা ছেলে আছে লেখকদের ক্লাসে। খুব বজ্জাত। তার জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে বিপদে ফেলা। যদি কোনো স্যার বেত আনতে বলেন–বশির আনন্দে হেসে ফেলে। বিনয়ে গলে গিয়ে বলে, স্যার আমি নিয়ে আসি?
মুনিরের শা*স্তি হলো না লেখক বেতের বাড়ি খেলেন।শা*স্তি দিয়ে অংক স্যারের বোধহয় মনটা খারাপ হয়েছে। কারণ তিনি মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছেন। অন্য সময় হলে এতক্ষণে বোর্ডে চলে যেতেন এবং ঝড়ের মতো একটির পর একটি অংক করতে থাকতেন। মুনির বেঞ্চে বসল। আড়চোখে কয়েকবার তাকাল লেখকের দিকে। তারপর হঠাৎ লেখককে অবাক করে দিয়ে বলল, এই হুমায়ূন, ভূ*ত পুষবি?মুনির ফিসফিস করে বলল, আমি আজ সন্ধ্যায় একটা ভূ*তের বাচ্চা আনতে যাব। একজন আজ আমাকে একটা ভূতের বাচ্চা দেবে। সন্ধ্যার সময় যেতে বলেছে। তুই যাবি?
স্কুল ছুটির পর দুজনে রওনা হলো। ব্ৰহ্মপুত্রের পাড় ধরে-ধরে অনেক দূর যেতে হলো। কেওটখালির কাছাকাছি এসে নদী পার হলো ওরা। শীতকাল, কাজেই পানি বেশি নেই। খেয়া-নৌকা আছে। দশ পয়সা করে নেয়। মুনির পয়সা দিয়ে দিল। এক সময় দোতলা একটা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল দুজনে ।গাছপালায় ঢাকা জঙ্গুলে জায়গায় শ্যাওলা ঢাকা এক বাড়ি। এটা নাকি মুনিরের এক আত্মীয়-বাড়ি। দূর সম্পর্কের নানা হয়। অনেকক্ষণ দরজা ধাক্কাবার পর যিনি দরজা খুললেন, তাকে দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঠিক সে-রকম লম্বা দাড়ি। সাদা বাবড়ি চুল। লম্বা একজন মানুষ। পরনে আলখাল্লার মতো লম্বা একটা পোশাক। গলার স্বরও কী গম্ভীর।
তিনি মুনিরকে জিজ্ঞেস করলেন ভূ*তের বাচ্চা যে নিবি, কোনো পাত্র এনেছিস? মুনির না-সূচক মাথা নাড়ল। ভদ্রলোক বিরক্ত হয়ে বললেন, কিছু নিয়ে আসিস নি, তাহলে নিবি কী করে? পকেটে করে তো আর নিতে পারবি না। ভূ*ত হচ্ছে হাওয়ার তৈরি। আচ্ছা! দেখি ঘরে কিছু আছে কী না। তিনি ওদের বসিয়ে রেখে চলে গেলেন। একটু পরে ভদ্রলোক ঢুকলেন হাতে ছোট্ট একটা হোমিওপ্যাথি, ওষুধের শিশি নিয়ে। হোমিওপ্যাথি, ওষুধের শিশিতে হলুদ রঙের ধোঁয়াটে কী একটা জিনিস।
সাবধানে রাখবি। মুখ গালা দিয়ে সিল করে রেখেছি। খবরদার, সিল ভাঙবি না। মাঝে মাঝে চাঁদের আলোতে রাখবি। এরা চাঁদের আলো খায়। ব্ৰহ্মপুত্রের পাড় দিয়ে বোতল হাতে নিয়ে হাঁটবি। এরা টাটকা বাতাস পছন্দ করে। ভদ্রলোক বললেন। আচ্ছা, যাও এখন, বাড়ি যাও। রাত হয়ে যাচ্ছে।
ভূ*তের বাচ্চা নিয়ে ওরা চলে এলো। লেখকের বারবার মনে হতে লাগল এটা সত্যি নয়। কোথাও মস্ত একটা ফাঁকি আছে। মুনিরের একটা হাত পকেটে। সেই হাতে সে নিশ্চয়ই বোতল ধরে আছে। একবার সে ক্ষীণ গলায় বলল, কেমন জানি গরম-গরম লাগছে!
ওই বোতলে সত্যিই ভূ*ত আছে কী না জানতে হলে তো বাকিটুকু পড়তে হবে আপনারও। তবে এই বোতলের গুনে হোক আর যেভাবেই হোক ওদের সাথে কিন্তু ঘটবে এরপর মজার মজার সব ঘটনা।
🫐 পাঠ প্রতিক্রিয়া 🫐
মন খারাপ হলে বই আমার খুব আপন জায়গা। বাছাই করে একটা পড়তে শুরু করি মন ভালো হয়ে যায়। হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে তর্ক বিতর্ক থাকতেই পারে কিন্তু তার বই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার অবকাশ নেই। সাহিত্যিকদের ব্যক্তিজীবনে কী হয়েছে জেনে ছিঃ ছিঃ করে সাহিত্যরস থেকে বঞ্চিত হবো কেন বলুন।
আজকে যেমন পড়লাম হুমায়ূন আহমেদের লেখা চমৎকার একটি কিশোর উপন্যাস "বোতল ভূ*ত"। সরল সাবলীল লেখনীতে কাহিনীটা এত দারুন লেগেছে আমার যে পড়েই মনটা ভালো হয়ে গেল। আমি আবার কিশোর উপন্যাস পড়তে খুব পছন্দ করি। তাই অনেক কিশোর উপন্যাস পড়া হয়েছে এবং এইজন্য আসলে কিশোর উপযোগী প্লট হিসেবে মনে হলো এই বইটা দারুন। আমি মাঝে মাঝে ফেসবুকে পোস্ট দেখি স্কুল পড়ুয়া ভাই-বোনদের জন্য অনেকেই বইয়ের সাজেশন চান। আপনাদের জন্য এই বইটির সাজেশন থাকবে। স্কুল পড়ুয়াদের তো পছন্দ হবেই এই যে দেখুন আমিও পড়লাম এবং ভালো লাগলো বেশ।
লেখক এখানে নিজেকে গল্পকথক হিসেবে রেখেছেন। এবং হুমায়ূন আহমেদের রসবোধ দারুন বলা চলে। ফাঁকে ফাঁকে যেসব মজাদার ডায়লগ বা ঘটনা তৈরি করেছেন যে পড়তে বেশ মজা পাচ্ছিলাম। এবং এইসব বই পড়লে একটা বেনিফিট হচ্ছে আপনি সহজে বোর ফিল করবেন না। আমিও পড়তে শুরু করে দ্রুত শেষ করে ফেললাম। মানে বেশ দ্রুতগতির সাবলীল লেখনী। এই জন্য আসলে হুমায়ূন আহমেদের বই এতটা পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে। ওনার মধ্যে গল্প বলার একটা ক্ষমতা ছিল। যেকোনো সহজ ঘটনা দিয়ে এত সুন্দর করে লিখেছেন যে বইগুলো আসলে মনে রয়ে যায়।
এই বইটি আমার ছোটবেলার সবচেয়ে প্রিয় বইগুলোর একটি। এই বইটি নিয়ে আমার মজার একটি অভিজ্ঞতা আছেঃ হুমায়ুন আহমেদের বইগুলার মাধ্যমেই মূলত আমার বই পড়া শুরু। তো, তখন ক্লাস সিক্সে ছিলাম। বইয়ের মূল চরিত্র হুমায়ুনও ক্লাস সিক্সেই পড়ে। নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছি। আর মাত্র কয়েকদিন আগে বইটি পড়া শেষ করেছি। যেহেতু নতুন তাই আমি আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছিলাম। তখন আমার এক বন্ধু আমার আগের স্কুল সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। ব্যস! সুযোগ পেয়ে গেছিলাম একটু ভাব নেওয়ার xD। আমি একেবারে হুবুহু বোতলভুতের কাহিনী ওকে বলা শুরু করলাম। নিজেকে হুমায়ুনের চরিত্রে রেখে বই এর ঘটনা গুলো একের পর এক বলে যাচ্ছিলাম। আর স্বাভাবিক এতো interesting ঘটনা এর আগে ও শুনেনি। ও শুধু শুনছিল আর অবাক হচ্ছিলো। specially, মুনির কিংবা রবি ঠাকুরের বাসার ঘটনা বা অঙ্ক স্যার এর ঘটনা। আর আমিও এমনভাবে বলেছি যে, ও একেবারেই বিশ্বাস করেছিলো যে ঘটনা গুলো আমার সাথেই ঘটেছে। পরে যখন ও নিজে বইটি পড়ে, তখন আমার প্রতি ওর দেওয়া reaction টা priceless ছিলো! XD
এমন বাল্য কালের মত চোখে-জল আনা অকৃত্রিম হাসি বোধহয় গল্পের বই পড়ে বহুকাল হাসি নি। হুমায়ুন বাবুর বই বলতেই মনে পরে হিমু বা মিসির আলির কথা। কিন্তু তাঁর যে অজস্র আরো মন মাতানো নোভেলা ও উপন্যাস আছে, তার কথা অনেকেই জানে না। আর শিশু কিশোর দের নিয়ে লেখার মধ্যে একটি অন্যতম গল্প এই বোতল ভূত। মন ভালো করা একটি গল্প যা ছোট বড় সবারই ভালো লাগবে বলে আমার ধারণা।
হুমায়ুন আহমেদের লেখার প্রতি প্রথম আকর্ষণ জাগে এই বইয়ের মাধ্যমে। তিনি যে ছোট বড় সবার জন্য লেখনীর মাধ্যমে রস জমাতে পারেন এই বইয়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন।
এক কথায়, অসাধারণ কিশোর উপন্যাস। উপস্থাপন, সেটিংস, ধারাবাহিকতা সবকিছু অসাধারণ। যেকোনো কিশোর এই উপন্যাস এর প্রেমে পড়তে বাধ্য, 😉
পড়তে শিখতে পারার পর প্রথম পড়া বইগুলোর একটা। আব্বুর স্কুলের লাইব্রেরি থেকে কোন এককালে হয়তো এনেছিল আর ফেরত দেয়নি। লাইব্রেরির সিলটা দেখা যেত প্রথম পাতায়। তখন কল্পনা করতাম সত্যি হয়তো বোতল ভূত আছে। আর ভেবে কষ্ট লাগতো, কই হারিয়ে গেল হুট করে ভূতটা?
মাঝেমধ্যে ছোটদের লেখা পড়তে ভালো লাগে।আমার কাছে সাহিত্যের মূল উদ্দেশ্য হল আনন্দ লাভ।তাই আমি মাঝেমধ্যে নিজ আনন্দের জন্য যে কোন জনারের বই পড়ে থাকি। বোতল ভূত পড়ে ভালো লাগলো। ছোট হুমায়ূনের মত আমার ও যদি একটা বোতল ভূত থাকতো,তাহলে ভালোই হত!!😄😄☺️
অনেক দিন ধরেই পড়বো পড়বো করছিলাম। আমি আর ছেলে দু জনে পড়ে ফেললাম। বেশ ভালো লাগলো। ফিরে গেলাম স্কুলের ক্লাসরুমে, পাড়ার ক্লাবে, ফুটবল মাঠের ঝামেলায় আর সন্ধ্যেয় পড়তে বসে বাবার কিল-চড়ে!