অভিজাত স্কুল সেন্ট অগাস্টিনে খুন হলো নিরীহ এক জুনিয়র ক্লার্ক। হোমিসাইডের ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ তদন্তে নামতেই দ্রুত ঘটনা মোড় নিতে থাকে - দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয় ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসীচক্র। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ইনভেস্টিগেটার। কিন্তু দমে যাবার পাত্র নয় সে। অবশেষে সত্য উদঘাটনে সফল হতেই সূত্রপাত ঘটে নতুন একটি উপাখ্যানের।
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
অথেন্টিক থ্রিলার! মানে এছাড়া কোনো বিশেষণ পাচ্ছি না বইটার জন্য। গল্প একেবারে টানটান। রাজনৈতিক হোক বা শারীরিক - কোনো বিবরণেই কোনোরকম লঘুকরণের দিকে যাননি লেখক। এইরকম নো-হোল্ডস-বার্ড লেখার জন্য কবজি ও কলিজা - দুটিই চওড়া হওয়া প্রয়োজন। সঙ্গে রাখুন গতি আর ট্যুইস্ট। সব মিলিয়ে, যদি 'উইলফুল সাসপেনশন অফ ডিসবেলিফ' ব্যাপারটাকে কিছুক্ষণের জন্য আপন করতে পারেন, তাহলে এই বই একেবারে ষোলোআনা পয়সা-উশুল টাইপ। চান্স পেলেই পড়ুন। তবে 'কন্ট্রাক্ট' বইটা এর আগে পড়া থাকলে কিছু চরিত্রকে আরও ভালোভাবে চিনতে পারবেন। সেক্ষেত্রে লেখাটাও হয়তো বেশি উপভোগ্য হবে।
চমৎকার প্লট! সাধারণ একজন ক্লার্কের সাদামাঠা খুন মোড় নেয় অতি রোমাঞ্চকর গল্পে। জেফরি বেগের বুদ্ধিও কিছুটা খোলতাই হয়েছে। কিছু বানান ভুল এই গল্পেও আছে। বাস্টার্ডের উপস্থিতি আরেকটু বেশী সময় জুড়ে থাকলে ভালো লাগতো।
অনেকদিন পর,খুব ভালো একটা থ্রিলার পড়লাম। যদিও সিরিজের আগের বইগুলো পড়া হয়নি,নেক্সাস পড়ার পর সেগুলো পড়ার আগ্রহবোধ করছি। এইবার বই নিয়ে বলা যাক- জেফরি বেগ হোমিসাইডের একজন সুনামধন্য অফিসার, যিনি অনেক গুলো জটিল কেস সলভ করেছেন। এইবার এক স্কুল কর্মচারীর মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ভালো নাস্তানাবুদ হয়েছেন।যখন মনে হয়েছে কেসটির একটা সুরাহা হবে তখনই কেসটি অন্যদিকে মোড় নেয়। পাঠক অনেক সাসপেন্স পাবেন এই উপন্যাসে তবে আমার মত নেক্সাস দিয়ে না শুরু করে এই সিরিজের সিকুয়েন্স মেইনটেইন করে শুরু করবেন।😐 বাস্টার্ড আর জেফরি বেগের জোট হয়ে ব্ল্যাক রঞ্জু আর মিলনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোটা অসাধারণ ছিল। বাবলু ওরফে বাস্টার্ডকে ভালো লেগেছে। কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়ছে লেখক অযথা টেনে বড় করেছেন তাছাড়া মোটের উপর বেশ ভালোই লেগেছে আমার বইটি। তাই আমি মনে করি- যারা থ্রিলার পছন্দ করেন,তাদের জন্য সুখপাঠ্য হবে বইটি। 👍👍
রচনাঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রচ্ছদঃ সিরাজুল ইসলাম নিউটন প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী ১ম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারী ২০১২ (আমার হাতে ৩য় সংস্করণের কপি)
বেগ আর বাস্টার্ড মিলে যে ভরবেগ তৈরি করলো, সেটা দারুণ ভাবেই কার্যকর।
* নিরীহ, নির্বিবাদী তরুণ খুন হবার খুব সাদা-মাটা কেইস নিয়ে জেফরি বেগের তদন্ত শুরু হল।
* ক্রমে তাতে জড়িয়ে গেল ধারণাতীত এক ব্যক্তিত্ব।
* তার মোটিভ টেনে আনলো এমন দুটো চরিত্রকে, যারা এর আগেও জেফরি বেগের বিরোধীতা করে তাকে মহিমান্বিত করেছে।
এই তিনের রঁদেভ্যূ নিয়ে তৈরি হয়েছে “নেক্সাস”।
জেফরিবেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ৩য় বই নেক্সাস। প্রথম দুটো যারা পড়েছেন এবং ৩য়টি এখনও পড়েননি, দুটো চরিত্রের একটির নতুন অবতার এবং বেগ-বাস্টার্ড এর এই রসায়ন আপনার জন্যে নতুন অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। যারা সিরিজটা শুরু করেননি, মাঝখান থেকে শুরু করার কথা ভেবেনও না। বইটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কিন্তু পুরো স্বাদ পেতে চাইলে সিরিজের একেবারে গোড়া থেকেই শুরু করা ভাল।
এক বৈঠকে বই শেষ করার সুযোগ আর হয় না, ছাত্রজীবন শেষ করবার পর থেকে। গত ছ’বছরে কেবল “কেউ কেউ কথা রাখে” আর “থেরাপি” শেষ করেছিলাম এক বৈঠকে। “নেক্সাস” ৩ বৈঠকে শেষ করেছি পেশাগত ব্যাস্ততার কারণে কিন্তু রিডিং টাইম ছিল ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। এই সময়ের পুরোটাই উপভোগ্য করে তুলেছে মূল চরিত্রগুলো ছাড়াও ম্যাকি, অরুণদা আর রেবা। রেবার কথা বলতেই হয়। অবিবাহিত এবং অপ্রেমিক পাঠকের জন্যে রেবা এক হাহাকারের নাম .....
সুলেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর যে কোন লেখা পড়তে গেলে একটা মানদন্ড দাঁড়িয়ে যায়। ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয়। যেন নাজিম ভাই তাঁর মেধার শিখরে ছিলেন উপন্যাসটি লিখবার সময়। ১৯৫২ কে স্ট্যান্ডার্ড ধরে, তাঁর অন্যান্য লেখা বিচার করার একটা অনায়াস প্রচেষ্টা চলেই আসে অবচেতনে (নেক্সাস, ১৯৫২’র আগে লেখা)। মাফ করবেন, এমন হয়েই যায়। ১৯৫২ তে যেমন প্রতিটা অধ্যায়ের শেষেই ক্লিফ-হ্যাঙ্গার, তেমনটা নেক্সাসে নেই। কিছু হুক আবার প্রেডিক্টেবল। আবার এমন কিছু জায়গায় অধ্যায় শেষ হয়েছে, যেখানে ইউ জাস্ট হ্যাভ নো আইডিয়া হোয়াট’স গনা বি দ্য নেক্সট মুভ।
কিছু কিছু জায়গায় প্রেডিক্ট করে ফেলাটাকে লেখকের দূর্বলতা ভাববেন? ভুল। আমি একে বলি সূতো ছাড়া। মাছটাকে (পড়ুন পাঠককে) বাগে আনার জন্যে সূতো ছাড়তেই হয় কখনো কখনো কিছুটা করে।
জেফরি বেগের তদন্ত শুরু হল একটা খুন দিয়ে। নাছোড়বান্দা জেফরি একসময় টের পেল, এর পেছনে একটা কন্সপিরেসি আছে। সেই কন্সপিরেসির জট ছুটাতে গিয়ে দেখা গেল তার পেছনে আরও একটা লোকের কন্সপিরেসি কাজ করছে, যে কিনা কিছুটা স্টিফেন হকিং সিনড্রোম (নিজের পয়দা করা টার্ম, বিশ্বাস করবেন না এমন কিছু) এ ভুগছে চৌদ্দ শিকের পেছনে বসে। তার সেই কন্সপিরেসির মোটিভ কি, সেটা আবিষ্কার করে জানা গেল, মোটিভের পেছনে অনেক আগের একটা কন্সপিরেসি কাজ করছে। স্টিফেন হকিং সিনড্রোমের রোগী যে কন্সপিরেসি সাজিয়েছিল, সেটাকে শতভাগ সফল করবার জন্যে ছোট পরিসরে আরও একটি কন্সপিরেসির অবতারণা হয় যার কেন্দ্রে আছে আনিকা।
বারবার কন্সপিরেসি শব্দটা পড়তে মনোটনাস লাগলো? কিন্তু মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের কন্সপিরেসি থৃলার “নেক্সাস” মোটেও একঘেয়ে নয়। তরতর করে পড়ে গেছি। কন্সপিরেসির সঙ্গে একটু প্রেম (একটু না আসলে অনেক। অনেকের), খানিক প্রতিশোধ, মাইডিয়ার ম্যাকি, মিলনের প্রথম স্ত্রীর অবয়ব, পুরান ঢাকার এসেন্স, দিল্লীর অজ্ঞাতবাস মিলে গল্পের রস বেড়ে গেছে কানায় কানায়। ইউপিএসের লাল বিপটা কিন্তু দারুণ ছিল।
তবে সবচাইতে চিত্তাকর্ষক ব্যাপার ছিল “বাস্টার্ড” এর গল্পে ঢোকার টাইমিং এবং আগেই বলে এসছি বেগ আর বাস্টার্ড এর নতুন রকম দ্বৈরথ। চরিত্র দুটো খুব সাবলেয়ারে পরস্পরের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে নিয়েছে। ভাবতে পারেন, তূর্য’র সাথে সাথে বাস্টার্ড এর নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত হয় জেফরি! ভাবা যায়! তাদের পরবর্তী সাক্ষাতে এই নতুন রসায়ন কিভাবে কাজ করে, দেখার আর তর সইছেনা। কিন্তু..
একজন লেখকের বই আমি বাঁচিয়ে রেখে পড়ি। মানে, ওনার বই তোলা থাকে একটা-দুটো। বছর জুড়ে ভাল-মন্দ বিভিন্ন লেখা পড়ি তবে যখন মনে হয় ডোজ দরকার একটা, তখনকার জন্যে ওনার বই জমিয়ে রেখেছি। সেই লেখক, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। প্রিয় নাজিম ভাই। সিরিজের ৪র্থ বইটা পড়বার প্রবল আকাংক্ষা নিয়ে শেষ করছি আজকের লেখা কিন্তু নাজিম ভাইয়ের আরও দুয়েকটা নতুন বই বের হবার আগে হাতের পাঁচ (কনফেশান এবং জাল) শেষ করবোনা। ডোজ টা মাঝে মাঝে নিতে হবে তো, নাকি!
প্রচ্ছদ দেখতে ভাল আর আঁকা ৪টা বিষয় কিন্তু খুবই প্রাসঙ্গিক। ভুলবেন না, স্টিফেন হকিং সিনড্রোম ;)
শুরুতেই উপন্যাস টার ভালো দিক সম্পর্কে বলতে গেলে যে ওয়াও ফ্যাক্টর সর্ব প্রথমে আসবে সেটা শুধু বইটার না, লেখকের নিজস্বতাও। সেই জায়গাতে লেখক স্ট্যান্ড আলোন। Nazim Uddin টাইপ জনরা বলতে পারেন। প্রত্যেকটা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুইদিক থাকে না? তেমনি প্রত্যেক টা মানুষের ও কিন্তু থাকে! কুখ্যাত কোনো এক সন্ত্রাসীর মাকে তার সম্পর্কে জিজ্ঞ্যাসা করলে হয়ত সেই সন্ত্রাসীর ভালো দিক দেখিয়ে বলবে তার সন্তান সেরা মানবিক দিক দিয়ে, পরিস্থিতিতে পড়ে সন্ত্রাসী। একজন সন্তানের কাছেও কিন্তু তার বাবা শ্রেষ্ঠ, এমনকি শীর্ষ সন্ত্রাসীর সন্তানের কাছেও বাবা শ্রেষ্ঠ। আমরা পাবলো এসকোবারের নারকোস এ দেখেছি, নিজের মেয়ের জন্য,স্ত্রীর জন্য তার কি অকৃত্রিম ভালোবাসা! এমনকি তার স্ত্রীর জন্যেও! একইভাবে তার স্ত্রীর সন্তানেরাও তাকে কি অকৃত্রিমভাবে ভালোবেসেছে।
লেখক এই একটা জায়গাতে স্ট্যান্ড আলোন। তিনি পারেন। কি পারেন? এই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠের মতো মানুষের দুই 'পিঠ' ও ভিন্নভাবে তুলে ধরতে। 'রবীন্দ্রনাথ' সিরিজে আমরা দেখেছি মানুষ ভিলেন হওয়া সত্ত্বেও কি দারুণভাবে মুশকান জুবেরীকে ভালোবেসেছে! বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ভিলেন বাস্টার্ডকে ভিলেন বাদ দিয়ে হিরোর মতো গ্রহণ করেছে মানুষ! ভালোওবেসেছে! ঐ যে, মানুষের দুইটা দিক আর লেখকের উপস্থাপনা! এই বইতে এসেছে মিলন নামে একজন সন্ত্রাসী যে বাস্টার্ড কিংবা ব্ল্যাক রঞ্জুর চেয়েও নৃসংশ অথচ শেষমেশ লেখক দেখিয়েছেন তার জীবনেও একটা গল্প ছিলো মুদ্রার ওপিঠের মতো।
আর লেখনশৈলী? সেইন্ট অগাস্টিন স্কুলের এক নামকাওয়াস্তে ক্লার্ক খুন হইসিলো। খালি স্কুল বিল্ডিঙ্গে 'কে খুন করসে' বলতে গিয়ে লেখক প্রায় চারশো পৃষ্ঠা লাগালেন। চারশো পৃষ্ঠা শেষে এই সাধারন খুনটা কে করসে উপন্যাস টা হয়ে গেলো একটা হার্ডকোর পলিটিক্যাল থ্রিলার! আমার থ্রিলার গুরু বলে, লেখক নাকি প্রচণ্ড ওভাররেটেড। আমি একমত। কিন্তু কিছু মানুষ বুঝতে ভুল করে। 'ওয়ান অফ দ্য এপিক থ্রিলার রাইটার' কে 'দ্য অনলি বেস্ট এপিক থ্রিলার রাইটার' বলাটা ওভাররেটেড। তবে ওভাররেটেড করে বলা হইলেও সে কিন্তু এপিক তাতে ভুল নেই। এইটা মেটাফোর ছিলো আসলে বুঝাতে লিখলাম।
কন্টাক্ট না পড়ে এটা পড়লে মজা অর্ধেক কমে যাবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কন্ট্রাকের সিকুয়েল হিসেবে সিরিজ সিকুয়েল করে মেলাতে গিয়ে কিছু দৃশ্যপট, প্লট মিলাতে হয়েছে যা খানিকটা দুর্বল লাগলো কয়েক জায়গায়তে।
ভালো লাগে নাই যা- লেখকের বেলাতে সেটাও চিরায়ত। লেখকের প্রোটাগনিস্ট বা ডিটেক্টিভ শুরুতে অনেক স্মার্ট প্রখর বুদ্ধিমান থাকে কিন্তু কোনো এক সময় থেকে কেমন যেনো আগের তুলনায় বোকাচন্দ্র কাজ কর্ম শুরু করে! জেফরী বেগ বিদেশফেরত ট্রেইন্ড-স্মার্ট। তাকে টিপিকাল অফিসার থেকে বুদ্ধিমান হিসেবে বিল্ডাপ দেওয়া হয়েছিলো। তারপরেও অনেক জায়গায়তে তার আচরণ অর্ডিনারি বা একদম টিপিক্যাল বোকা টাইপ! সেম যেটা নূরে ছফার সাথেও বার বার হইসিলো!
এনিওয়ে বাংলা সাহিত্যে বেশ অনেক অনেক বছর ভালোবাসায় বেচে থাকুক বেগ-বাস্টার্ড কেমিস্ট্রি <3
নেক্সাস আমার মতে সিরিজের সেরা বই। প্রথম দুটোর মতোই দ্রুতগতির লিখনশৈলী, একটানে, এক মনোযোগ বেশ অনেকক্ষণ পড়া যায়। বাস্টার্ডের সুপ্রীমেসির জন্য কন্ট্রাক্ট পাঠকপ্রিয়, তবে আমি মনে করি নাজিম ভাইয়ের ব্রিলিয়ান্স সবচেয়ে বেশি রিফ্লেক্টেড হয়েছে এই বইটায়।
এইটুকুই। এই বইয়ের অনেক রিভিউ আছে, বিশ্লেষণ আছে। আমি শুধু পাঠপ্রতিক্রিয়া জানালাম মাত্র।
নেমেসিস পড়ে এক্সপেকটেশন যেমন তলানী তে ঠেকেছিল, কন্ট্রাক্ট পড়ে আবার তা আকাশে উঠে গিয়েছিল। তবে নেক্সাস হতাশ করে নি। এক্সপেক্টেশন এর পুরোপুরি দিতে পারেছে।
থ্রিল, সাসপেন্স, চেস সব কিছুর ডিটেইলিং ছিল পার্ফেক্ট। না অতিরঞ্জিত, না রগরগে। ঠিক যেন পরিমান মত।
ঘাড় মটকে খুন করা হয়েছে লোকটাকে, মাথাটা ঘুরে গেছে একেবারে উল্টোদিকে। অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যাচ্ছে, খুনী খুবই শক্তিশালী এবং নিজের কাজে খুবই দক্ষ!
সেন্ট অগাস্টিন নামের মিশনারী স্কুলটিতে দেশের অবস্থাপন্ন পরিবারের ছাত্ররাই পড়ে। ছিমছাম এই স্কুলের ক্লার্ক হাসানের লাশটা পাওয়া গেল স্কুলের কমন টয়লেটে। ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত, নিরীহ মানুষটাকে কেন পেশাদার কোনো খুনী হত্যা করবে?
স্কুলের প্রিন্সিপাল অরুণ রোজারিও তার প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে মরিয়া হয়ে উঠলেন। হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা জেফরি বেগকে একগাদা শর্তে বেঁধে ফেললেন। বেগের মনে হচ্ছে, অস্থির চোখের আড়ালে আরো কিছু তথ্য লুকানোর চেষ্টায় আছেন স্কুল-প্রধান।
হাসানের মৃত্যুর দিন থেকেই স্কুলে আসছে না সেন্ট অগাস্টিনের ছাত্র তুর্য, বন্ধুরাও জানে না তার খোঁজ। এদিকে যে সন্ত্রাসী চক্রকে দমন করেছিল বেগ, তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। রাজনীতি আর সন্ত্রাসের খেলা শুরু হলো আবারও।
নেক্সাস মানেই যোগসূত্র! তাই দৃশ্যপটে উদয় হয়েছে ব্ল্যাক রঞ্জু ও বাস্টার্ড। সিরিজের প্রথম দু'টি উপন্যাসে ক্রমান্বয়ে জেফরি বেগ ও বাবলু'র জীবনের গল্প বলা হয়েছিল। তৃতীয় উপন্যাসে এসে তাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র স্থাপিত হলো। পাশাপাশি 'কন্ট্রাক্ট' এর বিভিন্ন চরিত্রও একে একে এসেছে উপন্যাসে।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যান্য থ্রিলারের মতো এবারও দুর্দান্ত প্লটটি একের পর এক টুইস্ট ভরপুর ছিল। খুন, অপহরণ, আইন লঙ্ঘনকারী ও আইন প্রণেতাদের সমন্বয় উপন্যাসে থ্রিল বাড়িয়েছে। প্রায় ৪০০ পৃষ্ঠার উপন্যাসটির বিস্তার আরেকটু কমিয়ে আনা যেত। মাঝখানের তদন্তের অনেকটাতেই আমি কোনো নতুনত্ব পাচ্ছিলাম না।
এ উপন্যাসে জেফ তার বুদ্ধির ঝলক দেখাতে পেরেছে। মিলন নামের যে সন্ত্রাসী চরিত্রের আবির্ভাব হয়েছে, তাকে বাস্টার্ডের চাইতেও অনেক বেশী ভয়ংকর মনে হয়েছে। তবে গোয়েন্দা থেকে সন্ত্রাসী সবাইকে হিরোরূপে উপস্থাপন করাটা একঘেয়ে লেগেছে। তাদের প্রত্যেকের একটা পশ্চাত-জীবনের অবতারণা করে লেখক পাঠকের সহানুভূতি টানার চেষ্টা করেছেন, সেটাও অদরকারী বলে মনে হয়েছে।
বাতিঘর প্রকাশনীর অন্য বইয়ের চাইতে এটাতে মুদ্রনপ্রমাদ কম ছিল। আর হ্যাঁ, টানটান উত্তেজনাময় এই থ্রিলারটি কঠোরভাবেই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।
বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ যতই এগোচ্ছে ততই স্তরে স্তরে গল্প আরও জম্পেশ হচ্ছে। এই বইয়ের রিভিউ ভালো করে দিতে গেলেই সব বলে ফেলব। তাও চেষ্টা করছি, কিছু স্পয়লার ন��� দিয়ে রিভিউ লিখতে। 🤷🏻♂️🤷🏻♂️
🌀 প্রথমত লেখক জিনিয়াস। আগের পার্ট পড়লে জানবেন যে লেখক সেটা সম্পূর্ন ভাবে বাস্টার্ড এর point of view থেকে লিখেছিলেন। সে কিভাবে এগোচ্ছে, কি ভাবছে এই সব। সেখানে একটু ভিলেন কে হিরো হিসাবে ভাবার একটা ইচ্ছা তৈরি করেই দিয়েছিলেন। বারবার ওই যে মনে হচ্ছিল যেন হিরো ধরতে না পারে, সেই শখ এই বইয়ে মিটিয়ে দিয়েছেন। 🥰 এখন ভাবছি লেখক কি প্ল্যান করেই এটা করেছিলেন? 🤔🤔 করলে বেশ করেছেন। এমন দুষ্টুমি বেশ ভালো লাগে। 🥰🥰
🌀 যাই হোক এই গল্পে সব চরিত্রের বুনন একদম তালগোল পাকিয়ে দিয়েছেন লেখক। জেফরি বেগ যেখানে একদম by the book পুলিশ সেখানে সে এমন এমন পদ্ধতি অবলম্বন করছে মনে হবে একই বাস্টার্ড হয়ে গেল নাকি? এত চালাকি?😳 আবার খানিক পরে দেখবেন বাস্টার্ড আবার একদম ভালো মানুষ হয়ে লাইব্রেরীতে বই পড়তে যাচ্ছে। তখন আপনার জেফরি বেগ কে মনে পড়তে বাধ্য। দুটো চরিত্র পুরো উল্টো হওয়া সত্ত্বেও যে কি পরিমান মিল এদের মধ্যে সেটা লেখক বেশ ভালো ভাবে গল্পের ব্যাকগ্রাউন্ডে indirectly বুঝিয়েছেন। 🌚
🌀 আচ্ছা একটা স্পয়লার দিচ্ছি, নিজ গুনে ক্ষমা করবেন। এই গল্পে দুজন কে একসাথে কাজ করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কাজ হবে কি? হিরো আর অ্যান্টি হিরোর মধ্যে জমবে কি? শেষ কোথায়?
আমি জানিনা। আর বলব না। বই নিন শুরু হয়ে যান। দুর্ধর্ষ অ্যাডভেঞ্চার এর গল্প। দুজনেরই তুখর বুদ্ধির পরিচয় দেখতে পাবেন। আর গল্পের শেষ অব্দি বইয়ের সাথে আপনাকে চিটিয়ে রাখার ট্যালেন্ট তো লেখকের আছেই।
উমার মা-বাবা একটা ছেলে ঠিক করেছে বিয়ের জন্য। খুব চাপাচাপি করছে। মানসিকভাবে উমা সুস্থির ছিলো না। বাবা-মাকে কী করে বাবলুর কথা বলবে। তাদের সম্পর্কটা জোড়া না লাগতেই যে বিচ্ছেদের আবর্তে পড়ে গেছে। জে*ল থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে বাবলু। উমার সাথে অবশ্য মাঝেমধ্যে ফোনে যোগাযোগ হয়, কিন্তু তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যত একদম অনিশ্চিত। বাবলু কবে দেশে ফিরবে, ফিরলেও মা*মলা-মো*কদ্দমাগুলোর কি হবে, কিছুই জানতো না।
মনে মনে বাবলুকে কাছে পেতে ইচ্ছে করছিলো তার। এরকম সময় বাবলু তার পাশে থাকলে খুব ভালো হতো। তার সাথে এ নিয়ে কথা বলা যেতো। তখনই বাবলু ওরফে বাস্টার্ড এর আগমন। সিঁড়ির কাছে আসতেই উমার নজরে পড়ে ক্যাপ পরা একজনের দিকে। আচমকা ভুত দেখার মতো থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে সে।
“বাবলু?!” অস্ফুটস্বরে বলে উঠেছিলো সে। তার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেছিলো। বাবলু ওরফে বাস্টার্ড উমার ভালোবাসা উপেক্ষা করতে পারেনি। উমাকে দেখার জন্য ছুটে এসেছিল, তখন তাদের ভালোবাসা আরো গভীরে পরিনত হয়। বাস্টার্ড স্বপ্ন দেখে এবার সবকিছু ছেড়ে উমাকে নিয়ে নতুন জীবন চায় সে।
"আমারো পরান যাহা চায় তুমি তাই তুমি তাই গো"
কিন্তু ভাগ্য বোধহয় বাস্টার্ডকে আবারো দাঁড় করিয়ে দেবে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির। আচ্ছা আগে চলুন জেফরি বেগের কাছে।
অভিজাত স্কুল সেন্ট অগাস্টিনে খু*ন হলো নিরীহ এক জুনিয়র ক্লার্ক হাসান। চুপচাপ নিরীহ গোছের ছেলেটাকে কে এমন নৃ*শংস ভাবে খুন করলো?তদন্তে নামে যথারীতি হোমিসাইড ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ। নিরীহ ক্লার্ক হাসানের মৃত্যুর আগে থেকে কী কী ঘটেছিল সূত্র মেলাতে থাকে বেগ। খু*নের তদন্ত করতে গিয়ে জেফরিকে কথা বলতে হয় হাসানের স্ত্রীর সাথেও। এবং পাশের ফ্ল্যাটের রহস্য মানব মিলনের সন্ধান চলে। এই মিলনের সাথে হাসান কথাবার্তা বলতো। তখনই হাসানের স্ত্রী ফোন করে জানায় হাসানের লেখা একটা ডায়েরি পাওয়া গেছে!
স্কুলের প্রিন্সিপাল অরুণ রোজারিও ভয়ে আতঙ্কে আছেন। জেফরি তার ছোট ভাইয়ের মতো, কিন্তু তবুও তাকে লুকিয়ে রাখতে হবে ওই গোপন কথাটা। জানাজানি হলে সবার বিপদ। সাথে হেড ক্লার্ক বিশ্বজিৎ বাবুও বেশ ভয়ে আছেন। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জেফরি হতাশ। এরা কিছু একটা লুকাচ্ছেন।
হাসানের খু*নের ঘটনায় হোম মিনিস্টারের ছেলে তূর্যের নাম জড়িয়ে আসছে বারবার। এবং হোম মিনিস্টার শাসাচ্ছে কিছুতেই যেনো এই খু*নের সাথে তূর্যের নাম না আসে। কিন্তু হাসানের ডায়েরি পড়ে জেফরি যা জানতে পারে তাতে অবশ্যই তূর্য জড়িত। এবং তবে কী সে খু*ন করিয়েছে হাসানকে নিজের পাপ ঢাকতে? তদন্তের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তূর্যকে খুঁজে বের করতে হবে সবার আগে। সে এই কেসের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। কিন্তু তূর্য হাসান খু*ন হবার পর থেকে স্কুলে আসে না। কিন্তু কেন? তবে কী সে পালিয়ে আছে? এখন হোম মিনিস্টারকে ডেকে তো আর কৈফিয়ত চাওয়া যায় না। জেফরি মহা চিন্তায় আছে।
কাগজে খুব ঘটা করে বেরিয়েছে হোমিসাইড যাকে ব্ল্যাক রঞ্জু হিসেবে গ্ৰে*ফতার করেছে সে আদতে রঞ্জু নয় তাই তার জামিন হয়ে গেছে। আদালতে রঞ্জুর উকিল প্রমাণ করেছেন ব্ল্যাক রঞ্জু কোলকাতায় মা*রা গেছে। জেফরি এবার আরো খেপে গেছে, এসব কী হচ্ছে! সবাই জানে যে আ*হত হয়ে হাসপাতালে সেলে বন্দি ছিলো সে আসল রঞ্জু তবে কীভাবে ছাড়া পেল সে?
জেফরি এরপর যেটা জানতে পারলো তা আরো ভয়াবহ। এই সমস্ত ঘটনার পেছনে আছেন স্বয়ং হোম মিনিস্টার! তিনি নাকি ব্ল্যাক রঞ্জুকে জামিনে বের করতে সাহায্য করেছেন। কিন্তু কেন? এমন একজন অ*পরাধী বের হলে হোম মিনিস্টারের কী লাভ? কিন্তু এর চেয়েও ভয়াবহ খবর জেফরি যা শোনে তা হলো হোম মিনিস্টার যে বাস্টার্ডকে নিরাপদ আশ্রয়ে দেশের বাইরে রেখেছেন তার ঠিকানা তিনি ব্ল্যাক রঞ্জুকে দিয়ে দিয়েছেন!
আচ্ছা একটা দেশের হোম মিনিস্টার যদি এমন ভয়ানক স*ন্ত্রাসীকে মদদ দেয় সাধারণ মানুষের জীবন তো বিপন্ন হয়ে যাবে। বাস্টার্ড হোম মিনিস্টারের এতবড় উপকার করেছে আর তিনি বাস্টার্ড কে বলি দিচ্ছেন! এতটা বদলে গেলেন কেন হোম মিনিস্টার? বাস্টার্ডের সাথে কী আর উমার দেখা হবে? নাকি বাস্টার্ড কে ম*রতে হবে রঞ্জুর হাতে? আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হোম মিনিস্টার কী তূর্যকেও কোথায় সরিয়ে রেখেছেন? ছেলেটা নিখোঁজ কেন এখনো? হাসানকেই বা কেন খু*ন হতে হলো? নেক্সাস খুলে দেবে অনেক রহস্যের জট।
🍅পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
"বেগ বাস্টার্ড" সিরিজ পড়তে পড়তে কখন যে তিন নাম্বার বইটাও শেষ হয়ে গেল টেরই পাইনি। এই সিরিজের তৃতীয় বই "নেক্সাস"। দ্বিতীয় বই কন্ট্রাক্টের সাথে নেক্সাসের যোগসূত্র রয়েছে। আপনি যদি কন্ট্রাক্ট পড়ে দারুন পছন্দ করেন তবে কাহিনী স্লো মনে হতে পারে নেক্সাসের প্রথম দিকে। আমার তেমনটাই মনে হয়েছে।
তবে এই স্লো গতিটা আসলে হয়েছে কাহিনীর ডালপালা বুনতে। যেমন মাঝপথ থেকে কাহিনী দারুন একটা মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। যারা বলেন বেগ বাস্টার্ড সিরিজে বেগকে গুরুত্ব কম দেয়া হয় এখানে কিন্তু তারা বেগের ভালোই গুরুত্ব খুঁজে পাবেন। এবং অবশ্যই বেগের কাজকর্ম আমার আগের দুই বইয়ের তুলনায় গতিশীল মনে হয়েছে। এখানে আমি করি নাজিম ভাই বেগকে যথেষ্ট স্পেস দিয়েছেন।
যেহেতু বাস্টার্ড ছাড়া বেগ অসম্পূর্ণ তাই বেশ ইন্টারেস্টিং একটা এন্ট্রি নিলো বাস্টার্ড কাহিনীর টার্নিং পয়েন্টে এসে। এবং ওই যে বলে না শত্রুর শেষ রাখতে নেই, বাস্টার্ডের পরিস্থিতিতে আমার ঠিক এটাই অনুধাবন হলো। এবং আমি মনে করি শুরুতে যতটা স্লো, শেষটা ততটাই গতিশীল এবং ইন্টারেস্টিং।
এতদিন ভাবতাম বে�� বাস্টার্ড সেই টম এন্ড জেরি। যাদের শুধু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খেলা চলে। এই বইয়ে তাদের মধ্যে বেশ একতা দেখলাম। এবং আরো ভালো লেগেছে উমা থাকায়। খু*ন, রাজনীতি, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনার মাঝেও একটু উঁকি দিয়ে যায় যেন ভালোবাসাও।
বাস্টার্ড আবার সেই পুরনো প্রতিপক্ষ ব্ল্যাক রঞ্জু। এবার জেফরি বেগের চ্যালেন্জ মোকাবেলা নয়, বরং জেফরি বেগের মাধ্যমে খবর পেয়ে কীভাবে বাস্টার্ড মোকাবেলা করে আবার ব্ল্যাক রঞ্জুকে এটা কিন্তু দারুণ থ্রিলিং লেগেছে। এবং একটা সিচুয়েশন আছে যেখানে বাস্টার্ড আর রঞ্জুর মধ্যকার একটা বলা যায় মুখোমুখি লড়াই। ওখানে গিয়ে বেশ ভয়াবহ লেগেছে লেখক যেভাবে দৃশ্যপট সাজিয়েছেন। শেষটা আমার কাছে দারুন লেগেছে। বইয়ে কিছু কিছু জায়গায় গালিগালাজ রয়েছে চরিত্রদের মুখে। এবং ১৮+ আছে। এগুলো ভালো না লাগতে পারে তবে গল্পের প্রয়োজনে এবং প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বোধহয় লেখক এগুলো রেখেছেন এটা আগেরবার ও বলেছি আমি।
নাজিম ভাইয়ের লেখা বেশ সাবলীল। এবং বর্ণনাগুলো ভালো হয় বিধায় আমি মনে করি উনি গল্পটা ভালো বলতে পারেন। গল্পের ডালপালা ছড়িয়ে শেষটায় বেশ চমক। এই বইয়েও তাই হয়েছে। তবে আমি ওই যে বাবলুর জন্য পক্ষপাতদুষ্ট বলা যায়। আমি সিরিজের যে বইটাই শুরু করি স্বাভাবিক আমি বাবলুকেই খুঁজি।
শেষটায় আর কী বলি, এই খু*ন, রাজনীতি, ষড়যন্ত্রের মাঝেও আমি অপেক্ষায় থাকি বাবলুর। দারুন স্মার্ট এই খু*নির কাজকর্ম গোগ্ৰাসে পড়ে শেষ করি। আজ থেকে আমিও উমার মতো তাকে নাহয় বাবলুই ডাকি। বাবলু! সুন্দর নাম তাই না?
🍅বইয়ের নাম: "নেক্সাস" 🍅লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 🍅প্রকাশনী: বাতিঘর
কন্ট্রাক্ট পড়ার পর পরই নেক্সাস শুরু করার কারণে এই গল্পটা একটু স্লো মোশান লাগছিলো! গল্পের প্লট সুন্দর তাতে সন্দেহ নেই, চিরায়ত নাজিম উদ্দিন স্টাইল বলা যায়! তবে টান টান উত্তেজনার ব্যাপারটা প্রথম তিনশো পেইজে বলতে গেলে ছিলোই না, কিন্তু সেই উত্তেজনার শুরু হয় দৃশ্যপটে বাস্টার্ডের আগমনে! হুম, বাস্টার্ড যে কিনা ঠান্ডার মাথার খুনী হওয়ার পাশাপাশি স্মার্ট এবং ইন্টেলিজেন্ট ও বটে! আর শেষ ১০০ পেইজেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে! আমাদের ইনভেস্টিগেটর জেফরি একটু বোকাসোকা মানুষ তো তাই গল্প ইন্টারেস্টিং করার জন্য বাস্টার্ড ছাড়া সে রীতিমতো ফ্লপ! আসেন এখন আমরা সবাই মিলে বাস্টার্ডের গুনগান গাই :D :D
কন্ট্রাক্ট পড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ বিরতি নেয়ার পর নেক্সাস পড়া শুরু করেছিলাম। সত্যি বলতে, রোমাঞ্চ বা থ্রিলার শব্দটার মানে এই বইটা বেশ ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে। কী নেই এই বইয়ে? পর্যাপ্ত পরিমাণে থ্রিলের পাশাপাশি সাসপেন্স এই বইটা এর আগের দুইটা বইকেও ছাড়িয়ে গেছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, এযাবৎকালে আমাদের দেশীয় পটভূমিতে যতগুলো থ্রিলার পড়া হয়েছে তার মাঝে এই বইটা সবদিক দিয়ে সেরা। লেখক নাজিম উদ্দিন এই বইয়েও কাহিনীর মধ্যে দারুণ জাল বুনেছেন এবং তা ছড়িয়ে দিয়ে পাঠকের মনের মাঝে দারুণ এক কল্পনার উদ্রেক ঘটিয়েছেন, যার প্রতিটি মূহুর্ত দারুণ উত্তেজনাকর, শ্বাসরুদ্ধকর এবং দুর্ধর্ষ। সত্যি বলতে এই বই শেষ করার পর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। লেখক এত দারুণভাবে গল্প ফেঁদেছেন যে যতই প্রশংসা করি না কেন তা কম হয়ে যাবে।
জেফরি বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ৩য় বই নেক্সাস। সিরিজের বাকি বই দুটোর তুলনায় জেফরি বেগ এর চরিত্র এই বইটায় ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে। অভিজাত একটি স্কুলের জুনিয়র ক্লার্কের হত্যার তদন্তের মাধ্যমে কাহিনীর শুরু। পুরো বইটায় বাস্টার্ড এর অভাব পূরণ করেছে মিলন। মিলন চরিত্রটা এই নেক্সাস বই এর প্রাণ মনে হয়েছে আমার কাছে। সে যেভাবে চোর পুলিশ খেলেছে বইটা বেশ উপভোগ করছিলাম। বইয়ে সব কিছুই পরিমাণ মতো ছিলো। শেষ সময়ে বাবলু ও ব্লাক রঞ্জুর উপস্থিতি গল্পের আলাদা মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। মোটের উপর বইটা উপভোগ্য।
রেটিং:৪.৩/৫ টানা কয়েকটি রাজনীতি বিষয়ক বই পড়ে হাপিয়ে উঠতেই প্রচন্ড উৎসাহিত হয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলাম লেখক নাজিম উদ্দিন রচিত 'নেক্সাস'। 'কন্ট্রাক্ট' পড়ার পর এটার উপর আশা আকাঙ্খা ছিল তুঙ্গে। সত্যি বলতে আমি একটু আশাহত হলেও শেষ পর্যন্ত বেশ লেগেছে। . কাহিনী শুরু হয় সেন্ট অগাস্টিন স্কুলের এক জুনিয়র ক্লার্ক এর হত্যার মধ্য দিয়ে।যার তদন্তের ভার এসে পড়ে ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ এর উপর।একের পর এক গল্পের মোড় ঘুরতে থাকে।ঘুরতে ঘুরতে হোম মিনিস্টার,তার পিএস,ব্যাক রঞ্জু, তার চ্যালাচামুণ্ডা এবং সর্বপরি পৌছে যায় সুদূরে অবস্থিত বাস্টার্ড এর কাছে। এই হত্যাকান্ডের সাথে কে জড়িত? আগেরবার এর মতোই কি পেশাদার খুনি বাস্টার্ড-এর কাজ? নাকি অন্য কোনো রহস্য? তা জানতে হলে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে যে! . প্রথমদিক থেকেই টানটান উত্তেজনায় ভরপুর ছিল।কিন্তু মাঝে এসে গতি শ্লথ হয়ে গিয়েছিলো ,ঢিলেঢালা ভাব চোখ এড়ালো না।মনে হয়েছে লেখক পৃষ্ঠা সংখ্যা বাড়াতেই উদ্ধত ছিলেন।কিন্তু এই ভাবনা একটু পরেই উবে যায়।যাই হোক শেষ দিকে এসে আবারও আগের গতি ফিরে পাই। টানটান উত্তেজনা আবারো টের পাই।
সব থেকে ভালো লেগেছে লেখক এবারে জেফরি বেগ -এর চরিত্র দূর্বল রাখেনি। বেগ কে এবার ভীষণ উপভোগ করেছি। মনে হয়েছে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট-এর প্রধান ইনভেস্টিগেটর আগে থেকে ভীষণ উন্নতি করেছে :3
ব্ল্যাক রঞ্জুর মতো শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীকে আরেকটু শক্তিশালী করতে পারত লেখক! আর বাস্টার্ড চরিত্রের কথা আর না-ই বলি।বরাবরই আমার পছন্দের ক্যারেক্টর।সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ছিল।
নামকরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল সেন্ট অগাস্টিন। সেখানেই নীচের তলার পাবলিক টয়লেটে খুন হয় এক ক্লার্ক(নাম - হাসান)।তদন্তে নামে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ। জেফরি বুঝতে পারে খুনটা কোনো পেশাদার খুনির কাজ। কিন্তু সামান্য একজন ক্লার্ককে খুন করতে এতো বড়ো পরিকল্পনা কেন ?
জেফরি বেগ - বাস্টার্ড সিরিজের বইএর একটা খারাপ দিক আমি আবিষ্কার(অবশ্য লেখক এর কাছে সেটা ভালো দিক) করেছি,সেটা হলো এই সিরিজের বই পড়ার সময় গল্পের মধ্যে একবার ঢুকে গেলে স্নান, খাওয়া,সিরিয়াল সব মাথায় ওঠে, সারাদিন বই নিয়েই পড়ে থাকতে হয় যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে।আমার সাথে তো এটাই হয়😊।বাস্টার্ড সিরিজের মতো কোনো থ্রিলার হয় না.... জাস্ট অসাধারণ। নেমেসিস পড়ার সময় বাস্টার্ড কে ঘৃণা করতাম, তারপর কন্ট্রাক্ট থেকে আমার তাকে ভালো লাগতে শুরু করে, এখানে তার প্রতি মায়াবোধ জাগে। আর জেফরি বেগ চরিত্রের ব্যক্তিত্ব টা আমার খুবই প��ন্দের, এরকম ইনভেস্টিগেটরই তো প্রয়োজন আমাদের দেশে। জেফরি বেগের বুদ্ধির প্রশংসা না করে পারা যায় না।
নাজিমুদ্দিন সাহেবের অন্য বইগুলোর চেয়ে এটা একটু ভাল। তবে বরাবরের মতই কাহিনী আগে নানাদিকে নিয়ে তারপর বেশ সহজেই ভয়ঙ্কর ভিলেন কাবু হয়ে যায়, এটা একদমই হজম হয় না। বদলোক এমনকি বাস্তবেও এত সহজে ধরা খায় না। আরেকটা মীথ থেকে মনে হয় সিনেমা-বই সব কিছুর বের হয়ে আসার সময় হয়েছে--নায়কের বুকে গুলি করা হয় কিন্তু বুকপকেটে রাখা লকেট-ঘড়ি-বই ইত্যাদিতে লেগে বুলেট আটকে যায় আর নায়ক বেঁচে যায়। এই গল্পে নায়কের বুকপকেটে ছিল একটা ছোট নোটবই। এই মীথ পরীক্ষা করার জন্য ওকলাহোমা পুলিশ আসলেই বেশ কিছু বই নিয়ে সেগুলোতে গুলি চালিয়ে পরীক্ষা করেছিল। ফলাফল হলো, কমপক্ষে দু'টো মোটা হার্ডকাভার হার্ডবাইন্ডিং বই হলে মিডিয়াম ক্যালিবারের একটা বুলেট আটকাতেও পারে, তবে সেটাও গ্যারান্টিড নয়। সেক্ষেত্রে, একটা বুকপকেটে রাখার মত নোটবুকে বুলেট লাগলে সেটা সরাসরি নোটবুক ভেদ করে নায়কের হার্ট ফুটো করে দেয়ার কথা। এইরকম বাংলা সিনেমার স্টান্টবাজি করে আর ক'দিন, তা-ও এই গুগলের যুগে?
গল্পটা ভালো, থ্রিলার হিসেবে দুর্দান্ত ! উত্তেজনা ছিল, চমক ছিল, একশান ছিল, অল্প রোম্যান্সের ছোঁয়া ছিল, কমেডি রিলিফ তবে তার দরকার ও পড়ে নাই । সব মিলায়ে, বেশ ! খারাপ কি? কাহিনি অতিরিক্ত টেনেছে মনে হইল, এই গল্পটা দুইশ পৃষ্ঠায় চমৎকার ভাবে শেষ হইতে পারত সেটাকে ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ঠেকানো দরকার কি? জেফরি বেগ বেশ বোকা, সবকিছুতেই অবাক হয়, বড্ড বেশি চমকে যায়, ইমাজিনেশান পাওয়ার বেশ কম । বাংলাদেশি ঠোঙা পুলিশ হলে দিব্যি চলে যেত কিন্তু চরিত্র ডিজাইন যেখানে বলছে, সে তুখোড় গোয়েন্দা, FBI ট্রেনিং প্রাপ্ত, যার ডাকনাম জেফ.বি.আই সে কেন এমন হবে ?
এটা আমার পড়া এই সিরিজের প্রথম বই, and I'm impressed that I didn't feel lost. The story is very gripping, with all its twists and turns. ৪ স্টার এর কারণ বানান ভুল গুলি, যা না থাকলে পড়তে আরো অনেক ভালো লাগতো। আর পড়ার সময় লেখার স্টাইলের কারণে বারবারই বইটাকে মৌলিক বই না মনে হয়ে অনুবাদ মনে হয়েছে, যদিও context টা একেবারেই লোকাল।
বইটার কাহিনী বিন্যাস দেখে বিস্মিত।অন্য কেউ হলে হয়তবা এর কাহিনী মাঝপথেই থেমে যেত। আমি ও পেতাম না, একেবারে নাড়িয়ে দেয়ার মত কিছু টুইস্ট। আরেকটা সেরা বই পড়লাম। লেখককের দূরদৃষ্টি প্রশংসার দাবিদার। দারুণ একটা কাজ। :)
টেনে টেনে বড় করা মাঝের কিছু জায়গা ছাড়া ভালো লেগেছে গল্পটা। বাংলা থ্রিলারের মজাই আলাদা। তবে বইয়ে ছাপার অক্ষরে গালির ব্যবহার ভালো লাগে না। লাগবে না কোনদিনও।
ছোট যে প্রশ্নটা মাথায় ঘুরতেছে তা হলো, বইগুলোর নাম বাংলায় হলে কি হতো?
-বেগ-বাস্টার্ড? হ্যাঁ, ৩নাম্বারটা! -থ্রিলিং? হ্যাঁ, আবার জিগায়! -দারুণ? হ্যাঁ, মানে সেইই! এক কথায়, জোশ একটা বই! এখন পর্যন্ত বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের মনে হয় সবচেয়ে সুন্দর বই এটাই, (যদিও বাকিগুলো পড়িনাই এখনো-রিভিউ দেখে আন্দাজ)
একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা, এরপর কি হচ্ছে তা জানতে চাওয়ার তাড়নায় তাড়িত করবে "নেক্সাস"! সেন্ট অগাস্টিনের এক ক্লার্ক থেকে মিনিস্টারের পিএস- সাথে কি আসছে আবারো সেই সন্ত্রাসী? প্রশ্নের উত্তর তো পাবেনই-সাথে পেতে থাকবেন একের পর এক টুইস্ট, ভাবলাম এভাবে হবে- তা দেখি নাহ, ঘুরে গেলো কাহিনী!!
এবারে বাস্টার্ডের আগমন খানিকটা দেরিতে হলেও বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ যেন তার সার্থকতা খুঁজে পেয়েছে নেক্সাসে!! আর এইবারে মি. বেগ আরো ক্ষীপ্রগতির, মি. জামান এরও তুলনামূলক শাণিত মস্তিষ্ক আর রমিজ লস্করের নিয়তি(!) বইটিকে করে তুলেছে অসাধারণ।
তাহলে? শুরু করে ফেলুন! তবে হ্যাঁ, আগের গুলো পড়ে এসে এটা পড়লে মজাটা বেশিই পাবেন😉
Superb ending. 4 stars due to late entry of Bastard a.k.a Bablu. I didn’t realize but I must have missed him or his interactions with the investigator. Slow pacing. Captivating story though. Overall, nice. Can’t wait to read the next one.
জেফরি বেগ এর অবজারভেশন ক্ষমতা দেখতে ভালো লেগেছে। তবে কিছু জায়গাতে আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন কেন করে নি সেটা ভাবছিলাম। বরাবরের মতোই বাস্টার্ড এর এন্ট্রি খুবই ভালো লেগেছে। আর বাকি সব গল্পসল্প কাহিনী সবই ভালো ছিল।