একটি অপ্রয়োজনীয় ভূমিকা হোটেল গ্রেভার ইন-এর প্রথম সংস্করণে কোন ভূমিকা ছিল না। ভেবেছিলাম, ভূমিকার প্রয়োজন নেই-পাঠক বুঝতে পারবেন যে হোটেল গ্রেভার ইন-এর গল্পগুলি আসলে বানানো গল্প নয়-স্মৃতিকথা। আমার মনে হয় সবাই তা বুঝতে পেরেছেন, তবু কেন জানি অসংখ্যবার আমাকে বলতে হয়েছে-না, এগুলি বানানো গল্প নয়। এবার ভূমিকাতেই লিখে দিলাম। আমার তু্চ্ছ স্মৃতিকথা যে পাঠকদের এত ভাল লাগবে তা আগে বুঝতে পারি নি। আমার ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো-এ আলো আমি কোথায় রাখব?
হুমায়ূন আহমেদ ২-২-৯০ শহীদুল্লাহ হল
সূচীপত্র * হোটেল গ্রেভার ইন ৯ * ডানবার হলের জীবন ২১ * বাংলাদেশ নাইট ২৬ * কিসিং বুথ ৩১ * প্রথম তুষারপাত ৩৫ * জননী ৩৮ * এই পরবাসে ৪৪ * ম্যারাথন কিস ৫৩ * লাস ভেগাস ৫৬ * শীলার জম্ম ৬২ * পাখি ৬৬ * ক্যাস্পে ৭০ * নামে কিবা আসে যায় ৭৬
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
আমার বিশেষ প্রিয় বই। কেন? গল্পের পুরোটা বলি, বুঝবেন।
আড়াই বছর আগের কথা, জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। প্রথমবারের মতো দেশ ছেড়ে গিয়েছি। দীর্ঘ বিমানযাত্রার পর ক্লান্ত, বিধস্ত অবস্থায় নিজের ওজনের কাছাকাছি দুই লাগেজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এক বৃদ্ধা এগিয়ে এলেন-- তুমি কি রিফাত? ভদ্রমহিলা দুস্থ বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের হাদিয়া (তথা সাহায্য) এবং হেদায়াত (তথা দিক-নির্দেশনা) প্রদান সংস্থার একজন চৌকস স্বেচ্ছাসেবিকা। নিয়ে গেলেন আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা কেন্দ্রে, নিয়ে গেলেন মোবাইলের দোকানে সিম কিনে টপ-আপ করে নিতে (#sarcasmalert), নিয়ে গেলেন সুপার শপে, দেশি ল্যাপটপে দম দেয়ার জন্য কনভার্টার জোগাড় করে নিতে। এরপর নামিয়ে দিলেন এক বাঙালি বোনের বাড়িতে। ৪৮ ঘন্টা তাকে নানাভাবে জ্বালিয়ে পরে নিজের বাড়িতে উঠলাম।
অড টাইমে আসার হেতু জোগাড় হয়েছে ক্যাম্পাস থেকে প্রায় আড়াই কিঃমিঃ দূরে এক বেড আর লাগোয়া বাথের ছোট্ট সাবলেট কুঠুরি। চার বেডের সেই বাড়িটি এরকম গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদের জন্যেই। বাড়িওয়ালি একই ইউনি থেকে ডঃ ধারী, পড়ান এক বাচ্চাদের স্কুলে। সপ্তাহের চারদিন থাকেন অন্যত্র। কেন, কে জানে!
তখনো ক্লাস শুরু হয়নি, কন্ধকাটা ভূতের মতো রাতদিন ফেসবুকে মুখ গুঁজে থাকি আর একা বাড়িতে বসে বসে বিরস মুখে কবিতা আওড়াই-- নিখিলেশ, আমি এই রকম ভাবে বেঁচে আছি../তোর সঙ্গে জীবন বদল করে কোন লাভ হলো না আমার ইত্যাদি।
একদিন বিকেলে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ বরফ পড়তে শুরু করলো। জীবনে প্রথমবারের মতো তুষারপাত দর্শন। উচ্ছসিত হয়ে বাইরে গিয়ে দাপাদাপি করার বদলে রুম হিটার বাড়িয়ে দিলাম। সৈয়দ মুজতবা আলী বলতে পারেন 'বেঁচে থাকুক সর্দিকাশি', ঠাণ্ডা লাগিয়ে নিউমোনিয়া বাঁধালে সহায়-সম্বলহীন এই মরুভূমিতে আমাকে দেখবে কে!
এরপর কম্বলমুড়ি দিয়ে যে ই-বুকটা খুলে বসেছিলাম সেটার প্রথম দিকের অনেকটুকু অংশ হুবহু তখন আমার নিজের-ই গল্প।
গ্রেভার ইনে হুমায়ূন লিখেছিলেন, প্রথম তুষারপাত দেখে অভিভূত হয়ে তিনি স্ত্রীকে ১৩+পাতার একটি দীর্ঘ চিঠি লেখেন এবং সেই প্রেমপত্রাঘাতে জর্জরিত হয়ে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার লিটারেলি 'কাঁথা পুড়িয়ে' কিশোরী 'জরী' আঙ্কেল স্যামের দেশে স্বামী সন্নিধানে আগমন করেন।
সম্প্রতি গুলতেকিনের এক বিতর্কিত সাক্ষাৎকারে জানা যায় ভালবাসার টানে নয়, তাঁকে আসতে হয়েছিলো প্রবল পারিবারিক চাপে পড়ে, নিতান্তই বাধ্য হয়ে। হয়তো এই বইয়ের বা হুআর অধিকাংশ ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণই আদতে এরকম অতিরঞ্জিত, সুগারকোটেড। 'কাব্য পড়ে যেমন ভাবো, কবি তেমন নয় গো'-- রবীন্দ্রনাথ কি আর সাধে লিখেছিলেন?
মুজতবা আলীর সঙ্গে হুমায়ূনকে তুলনা করে একটা তৈলাক্ত রিভিউ পড়ে সেদিন হেসেছিলাম। জার্মানি যাবার জন্য ক্ষেপে উঠেছিলাম একবার, সেটার পেছনে ছিলেন মূলত এই সুরসিক 'সিলডি' ভদ্রলোক। শ্যাম চাচার দেশ নিয়ে আগ্রহ তৈরীর ভূমিকা যেমন ছিলো হুমায়ূনের।
সেজন্যেই একসময়ের প্রিয় লেখকের প্রবল মানসিক দৈন্য এবং জাগতিক ক্ষুদ্রতাকে মাঝেমাঝে ক্ষীণ ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করি।
বরাবরের মতই তিনি দক্ষ গল্প বলিয়ের পারদর্শীতায় তার আমেরিকা প্রবাসের টুকরো টুকরো ঘটনা গুলো লিখেছেন এই বইতে। এ যেন পাঠকের সাথে লেখকের একান্ত আলাপচারিতা, যেন চায়ের টেবিলে লেখকের সাথেই বসে তার আমেরিকান জীবনের নানান সুখ-দুঃখ আর হাসি-কান্নার গল্প শোনা। তাই বলতে হবে বইটি দীর্ঘ প্রবাস জীবনের হাজারো ঘটনার মধ্য থেকে চূনী-পান্না বেঁছে তৈরী করা এমন একটি মালা যা লেখকের অভিজ্ঞ মনের সাথে পাঠকের আনকোরা মনের মিল করে দেয়।
"হোটেল গ্রেভার ইন" তাঁর প্রথম দেশের বাইরের ভ্রমণ কাহিনী। আমেরিকার নর্থ ডাকোটায় যখন তিনি পিএইচডি করতে যান, তারপর তাঁর সেখানকার অভিজ্ঞতা- অনুভূতির পাতাবন্দী সংকলন "হোটেল গ্রেভার ইন"। সমগ্র বইটি ভিন্ন আমেজ এবং বহুমাত্রিক ব্যাঞ্জনার ১৩টি আলাদা শিরোনামে ভাগ করা হয়েছে। 'এলেম নতুন দেশে' বাক্যটি দিয়ে শুরু হয়েছে বইটির প্রথম অধ্যায়- "হোটেল গ্রেভার ইন"।
দারুণ! অবশ্য হুমায়ূন আহমেদের সব লেখাই দারুণ। তার ক্ষেত্রে আমার কথা হলো, আপনি স্যার যা মন চায় লিখুন, সে লেখার মাঝে দর্শন, জীবনবোধ, অনুভূতির শ্বাশতরুপ না চাইলেও থাকবে। এ বইটিও তাই। ছোট ছোট ঘটনায় বেশি কিছু অনুভূতি উঠে এসেছে। আমার সবচাইতে ভালো লেগেছে, বীফ অ্যান্ড বান এর সেই ৩ তরুণী ওয়েইট্রেসের আচরণ। হুমায়ূন আহমেদের সাথে সাথে আমার চোখেও জল চলে এসেছে। মানুষের বয়স হলে আবেগ নাকি কমে যায়, আমার দেখি উল্টা হচ্ছে।
না মোটেই আমার নাম তিন চারটে তো নয়ই,বরং পোশাকি একটি নিয়েই এতোটাই আশেকী পর্যায়ের ভাব ভালোবাসা হয়ে গেছে গত পঁচিশ বছর ধরে;যে আদর আহ্লাদে কেউ অপভ্রংশ করলেও তাকে সভ্য বলে সম্বোধনে মনের বড়ো বেগ পেতে হয়,তার উপরে এহেন ঘরকুনো আমি কোনো বরের প্রভাবে পৃথিবীর পথে প্রান্তরে প্রাণের মেলায় বা প্রকৃতির লীলাখেলায় মত্ত হয়ে যেকোনো শর্তে বাইরে বেড়িয়ে আসবো সে শুধু এক স্বপ্নতেই সত্যি বলে মনে হয়।
সুতরাং আমার এই ধান ভানতে শিবের গীত;মানে নামের সাথে ভ্রমনপ্রীতির নায়কের নাম"হুমায়ূন আহমেদ"।এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে মন কে বেঁধে রাখার জন্য টুক করে যার হাত ধরে ঘুরে এলাম আমেরিকার আনাচেকানাচে অনায়াসে অক্লেশে আনন্দ উল্লাসে।কি গল্পে ,কি উপন্যাসে বা আত্মজীবনীতে হুমায়ূনের লেখনীতে মুগ্ধতার আবেশ এখনো স্নিগ্ধতার স্বাদ নিয়ে আসে যাপিত জীবনে।
এক ছাপোষা মধ্যবিত্ত বাঙালি থেকে বিদেশ বিভূঁইয়ে বিরস কঠিন পলিমার রসায়নে নিজের বিদ্যেবুদ্ধির বহরে আরেকটি পালক লাগানোর এই যাত্রা শুরুতে মোটেও পুলক আনেনি হুমায়ূন ভুবনে;সদ্য পরিনীতার গর্ভে পরিনত হয়ে উঠা ভালোবাসার ভূমিষ্ঠ হবার পূর্বেই যদি স্বদেশ ছাড়তে হয় তবে অমরাবতীতেও কি আনন্দ কারো হয়?পথের ধকল কাটিয়ে বাসস্থানে যদি পুরানো গ্ৰেভার ইনের ততোধিক পুরোনো ধোঁয়াটে ক্ষয়াটে সাদাকালো ছবির মতো ঘরে জায়গা হয়-যার প্রতিবেশী বিচিত্র সব বিচার আচার অভ্যাস মেনে রয় সেখানে কোনো বাঙালির মন টিকতে চায়! পিএইচডি শিকেয় তুলে সব চুকিয়ে চলে আসার ইচ্ছেটা সেথায় নেহাতই দুর্বল নয়।
যে দেশে শ্বেতশুভ্র তুষারের তন্দ্রালাগানো স্বর্গরাজ্যের সোপান আবিস্কারের পর মূহুর্তেই সতর্কতায় শরীরখানা শীতবস্ত্রে মুড়ে নিতে হয়,সেই কাঠখোট্টা শ্বেতাঙ্গদে�� শ্রাবন ধারায় সিক্ত হবার সুখের শূন্যতায় রিক্ত ছাড়া আর কিই বা আশা করা যায়?
প্রকৃতির এই রুক্ষতাই বোধহয় আমেরিকানদের তিক্ততা আরো বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে জীবন নিয়ে-যৌবনের শুরুতেই সঙ্গী খোঁজার ইঁদুর দৌড়, সন্তানেরা কাছের থেকে দায়িত্বের দুর্বিষহ দুর্বিপাকে বড় হয় বেবি কেয়ারে মায়ের মমতা থেকে মায়া কাটিয়ে,স্বপ্ন দেখার সুযোগ থেকেও সত্যি হবার অপূর্ণতা প্রতি পদে মোহভঙ্গের মর্মপীড়া নির্মম হয়ে যেখানে আঘাত দেয় ,সেদেশে কি আসলেই কি সুখি রয়?
এসব গল্প শুনে বেশ বিরক্ত বিব্রত!চিন্তা নেই। হুমায়ূনে জাদুর ছুমন্তর আছে তো; স্মৃতি মেদুর রোদ্দুরে সহধর্মিণীর সঙ্গ,তনয়া শীলা আহমেদের জন্ম,নাম না জানা সদয় তরুণীদের আদর অ্যাপায়ন, বাতিকগ্রস্ত বৃদ্ধার বাৎসল্য,বিষন্ন সময়ে স্বদেশের স্মরনে বাংলাদেশ নাইট,কিপিং বুথ থেকে লাসভেগাসের লাস্যময়ী ললনা-বিশ্বাস করুন এর মধ্যে একটা বর্ননা ও মিস করার মতোই নয়। বিদঘুটে প্রফেসরে অদ্ভুতুড়ে কান্ডে হেসে হুটোপুটি না হলেও হাসি আপনার ওষ্ঠাগত প্রাণে প্রাণোচ্ছলের ছোঁয়া ছুঁয়ে দিবেই ।
বিদায় নেওয়ার আগে অস্তগামী সূর্য যেমন সোনা রোদের আমায় শিহরণ জাগায়, শিরোনামে ছোট ছোট এই গল্পের প্রতিটি পাতা যেন সাদর আমন্ত্রণ জানায় জীবনের প্রতি:-
"ভালো থেকো তুমি বন্ধু,ভালো থেকো মিষ্টি ফুলের গন্ধে,আম মুকুলের মনোহর সমারোহে এই ধানসিঁড়ির বুকে শঙ্খচিল হয়ে আকাশে পানে ডানা মেলার অসীম স্বাধীনতার সাথে সানন্দে".
গল্পটা হোটেলের নামে, অথচ এর সাথে কত মায়া আর কত অনুপ্রেরণা জড়িয়ে। এই যে হুমায়ূন আহমেদ পরীক্ষার খাতায় নিজেকে দেশের একজন মনে করলেন, ওখানেই তার উপর দৈত্যের শক্তি ভর করে ফেলেছে। ১০০ নাম্বার দেখতে কত সহজ, আর সহজই শক্তিশালী। লেখকের সাথের আর বাঙালি শিক্ষার্থীদের বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরার যে প্রয়াস তার উপরও দেশের শক্তি ভর করেছে। জেদের যে কী অসাধারণ একটা সৌন্দর্য আছে, সেটা বেরিয়ে আসে জেদ জিতে গেলে। হেরে গেলেও হয়ত তার সৌন্দর্য থাকে, কিন্তু সে অগোচর আরেক জয়ের জন্য। আচ্ছা, দেশের বাইরে গেলে বুঝি দেশের টান চোখে পড়ে খুব করে? কে আছে ভুল প্রমাণ করবে? দিনগুলো কি রঙিন? আমি তো রঙিনই বলব। বরং রঙ আরো নেয়া যেত, তিনি কিছুটা ছাড় দিয়েছেন। কষ্টের গল্পগুলোয়ও তো রঙ থাকে। আর উল্লাসের গল্প তো রঙই! আমি জানি, হোটেল গ্রেভার ইনের গল্প পৃথিবীর আরেক পৃষ্ঠায় থাকা তরুণদের জন্য রঙ বুনে দেয়। আমি চিনি তো কয়েকজনকে।
আর আমেরিকান! তোমরা হয়ত আরো বহুদিন আমাদের গল্পগুলোয় ঘোরাঘুরি করবে। তোমরা গল্পের বিশ্বে মিশে গেছে যেন। আমাদের মত ছোট (আকার ও ক্ষমতায়) দেশগুলো আমেরিকাকে কল্পনা করে যাবে গ্রেভার ইনের দুয়ার দিয়ে, সে বড় ভাল দিক। এর মধ্য দিয়ে যদি বিশ্বায়নে কিছুটা চেতে উঠা যায় তাই তো চাই। আমার মাঝে মাঝেই মনে হয়, আমেরিকায় থাকা সব বাংলাদেশি একাডেমিয়ানরা যদি ১ বছরের জন্য দেশে চলে আসত বাংলাদেশটা কি এতটুকুই থাকত? বড় হয়ে যেত না?
This is probably the first Travel Diary I have ever read. Well, it's not a travel diary but Humayun Ahmed was indeed remembering his days in US through this book. I loved this book because the stories are real and very interesting.
বইটা পড়া পরীক্ষাকালীন সময়ে, তাই ব্যস্ততায় তখন কোন রিভিউ লেখা হয় নি। ভালো লেগেছিল বইটা, তাই চিন্তা করলাম একটা রিভিউ লিখে ফেলা যাক।
হুমায়ূন আহমেদের বই নিয়ে অনেকে সমালোচনা করলেও, ভালোই লাগে আমার কাছে তার সহজ সাবলীল ভাষায় সুন্দর গল্প বলার ভঙ্গির জন্য। হোটেল গ্রেভার ইন, হুমায়ুন যখন আমেরিকায় পিএইচডি করতে যান তখনকার সময়ের একটা স্মৃতিকথা। ছোট ছোট বেশ কয়েকটি গল্পের আকারে স্থান পেয়েছে তার আমেরিকা জীবনের কিছু ঘটনা। বইটিতে স্থানীয় লোকদের আচার-আচরণ আর কিছু মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি উঠে এসেছে হুমায়ূনের পারিবারিক কিছু গল্প। সুন্দর উপস্থাপনার জন্য মনে হবে ঘটনাস্থলে থেকেই আপনি অনুভব করছেন হুমায়ুনের আমেরিকার ফার্গো সিটির জীবন। হুমায়ূন আহমেদের স্বভাব-সুলভ রসাত্মক উপস্থাপনা আপনাকে ধরে রাখবে বইটিতে। পড়ে দেখতে পারেন বিদেশ-বিভুঁইয়ের এই গল্পগুলো, আশাকরি হতাশ হবেন না।😊
আগামীকাল থেকে মিড সপ্তাহ শুরু। পরীক্ষার আগের মধ্যরাতে বই পড়ার স্বাদ অমৃতের চেয়ে সম্ভবত কম হবে না। এদিকে নিজের বানানো চরমপর্যায়ের অখাদ্য নুডলস খেতে খেতে পড়ছিলাম, 'এক প্লেট ধবধবে সাদা ভাত- একটা বাটিতে সর্ষে বাটা দিয়ে রাঁধা ইলিশ। ছোট্ট পিরিচে কাঁচালঙ্কা, আধখান কাগজী লেবু। আমার প্রান হু-হু করে।'
এই মাঝরাতে আমার প্রাণটাও হু-হু করে উঠলো। :'')
অনেকদিন পর হুমায়ুন আহমেদ এর লিখা পড়লাম। ভালো লাগলো। আগামীকালের পরীক্ষা ভালো হওয়ার আশা রাখি না। সব দোষ লেখকের। বই এমন করে কেন লিখতে হবে যে শেষ না করে উঠা যায় না!
মানব মস্তিষ্ক কতটা সৃজনশীল টের পাওয়া যায়, যখন লেখকের বর্ণনা পড়ে আমরা নিজেরাই কোনো স্থান নিজেদের মনে কল্পনা করে নেই যা আমরা আগে কখনোই দেখিনি। লেখকের বর্ণনা পড়ে আমার নিজের মানসপটে বরফঢাকা, প্রকৃতির কাছে পরাজিত ফার্গো শহরের যে চিত্র আঁকা হয়েছে, সেটা মাঝেমাঝে আমার মনকে তীব্র বিষাদে পুলকিত করে দেয়। প্রবাসী হয়ে আমেরিকায় থাকার দিনগুলো হুমায়ূন আহমেদ এই বইতে বর্ণনা করেছেন। আমেরিকা সম্পর্কে আমাদের যা ধারণা, তার চেয়ে ভিন্ন এক আমের���কা রয়েছে এই বইতে। হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, Where have all the flowers gone? বইটি পড়ার পর পাঠক বলবে, There are still some flowers. We may not see it, but it's still there. অসাধারণ একটি বই। আমার ব্যক্তিগত চিন্তা থেকে বলব, একজন বিদেশীর চোখে আমেরিকা দেখতে কেমন, এ নিয়ে কখনো কোনো গবেষণা হলে এই বইটি উপরের সারিতে থাকবে।
"একটা বই হাতে, নিজের ঘরে নিজের চেনা জায়গাটায় বসে থাকবো, পাশে থাকবে চায়ের পেয়ালা, অথচ আমি লেখকের সঙ্গে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। "
বইটি পড়ার সময় আমার অনুভূতিও কিছুটা এরকমই ছিলো। কিন্তু হ্যা পাশে চায়ের পেয়ালা ছিলনা কারণ চায়ের প্রতি হুমায়ূন আহমেদের মতো আমার কোন বিশেষ টান নেই। বইটি পড়ে ভীষণ মজা পেয়েছি বিশেষ করে আমেরিকান যে সংস্কৃতিগুলোর উপর লেখক আলোকপাত করেছেন। অনেকবার হেসেছি। এক বসায় পড়ে ফেলার মত চমৎকার একটা বই।
আত্মজীবনীমূলক বই আমার বরাবর পছন্দ। লেখকের বিদেশ জীবন নিয়ে চমৎকার একটা বই। আমেরিকা জীবন নিয়ে লেখকের আরও দুইটি বই আছে। তবে এই বইটি আমার বেশী ভালো লেগেছে। ভুতুড়ে হোটেল, লেখক কবিদের মিলন মেলা নিয়ে লেখকের স্মৃতিচারণ, লেখকের দেখা প্রথম তুষারপাত এবং আরও অনেক ছোট ছোট গল্প স্থান পেয়েছে এই বইতে। এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলার মত বই।
হুমায়ুন আহমেদ এর লেখায় এক ধরনের জাদু থাকে। এর সাহায্যে তিনি যেকোনো সাধারন ঘটনাকেও অসাধারণ ভাবে বর্ণনা করতে পারেন। তেমন ই তার প্রবাস জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের কিছু ঘটনার অসাধারণ বিবরন রয়েছ এই আত্মজীবনী মূলক বইটিতে।
ঘটনা গুলোয় তেমন কোনও বিশেষত্ব না থাকা সত্ত্বেও বইটা পড়তে এক মুহূর্তের জন্যেও বিরক্ত বা একঘেয়ে লাগেনি। বরং মুগ্ধই হয়েছি।
আমি যেকোন বই শেষ করার পর ভাবি বইটি কি পড়তে আমার কত সময় লেগেছে। বইটি বিষয়বস্তু আমাকে কতটা আকৃষ্ট করেছে। লেখক বইটি লেখার সময় কি ভেবেছেন। তিনি কি আদৌ জানতে বইটি মানুষের কাছে কত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। . তবে গত কয়েক দিন আমি হুমায়ূণ আহমেদের আত্মকথা বিশেষ ভাবে আমেরিকায় থাকার স্মৃতিচারণ আমাকে বেশ আকৃষ্ট করেছে। শুরুতে "যশোহা বৃক্ষের দেশে" এরপর "মে ফ্লাওয়ার" সর্বশেষ পড়লাম "হোটেল গ্রেভার ইন"। স্মৃতিচারণ বেশ আকর্ষণীয় ও চিত্তাকর্ষক। তার লেখার মুন্সিয়ানা আমরা সবাই জানি। অনেকেই বইটি পড়েছেন এবং সবার কাছেই বইটি বেশ প্রিয় বলে আমার মনে হয়। . আমি একটু ভিন্ন কথা বলি। এই বইটিতে তিনি গুলতেকিন কে নিয়ে বেশ কিছু কথা লিখেছেন। আর সেই থেকে জানা যায় তিনি গুলতেকিনকে বেশ ভালোবাসতেন। তার আমেরিকা যাবার পর কাতর চিঠিতে এক ভাবে গুলতেকিন চলে গিয়েছেন আমেরিকায়। তিনি পরীক্ষা না দিয়ে স্বামীর ভালোবাসার টানে চলে গিয়েছেন। যদিও তখন তিনি, সদ্য কৈশর পেরিয়েছেন। ১৮ বছর পার করেছেন। তার মানসিক পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল। . একটা ঘটনা শেয়ার করেছেন যেটা হচ্ছে তাদের মধ্যে ঝগড়া হাবার পর দু দিন গুলতেকিন বাইরে ছিলেন। যদিও এর কতটা প্রভাব বাকি জীবনে পরেছে সেটা জানি না। তবে তাদের ভেতরকার সম্পর্কে এক সময় এসে শেষ হয়ে যায়। এটা বেশ কষ্টদায়ক। অথচ আমেরিকার থাকার সময় যেই ভালোবাসার জন্য লেখক কাতর ছিলেন সেটাই এক সময় তার কাছে আর সেই ভালোবাসা সেভাবে তাকে ধরে রাখতে পারেনি। . যদিও হোটেল গ্রেভার ইন স্মৃতিচারণ বই হিসেবে বেশ দারূন একটি বই। বিশেষ ভাবে লেখকের ভাষণ দেয়া, হোটল রুমে নগ্ন ছাত্রের সাথে রুম শেয়ার করা, পরিবার নিয়ে ক্যাম্পিং করা, সব কিছুই বেশ দারূণ ভাবে ফুটে উঠেছে।
কোন ভ্রমণ কাহিনী পড়তে আমার একটুও ভালো লাগে না, সেখানে এই বই এত বেশি ভালো লাগবে মোটেও আশা করিনি! গল্প বলার ভঙ্গিতে লেখা দেখেই হয়তোবা ভালো লাগাটা কাজ করেছে বেশি। হুমায়ূন স্যারের লেখা পড়তে ভালো লাগে কিন্তু তাঁর লেখার বিষয়বস্তু বা সব বইগুলোকে খুব অসাধারণ কখনো মনে হয় নি, তবে তার অসাধারণ কিছু লেখার মাঝে এই বইটা যে অন্যতম, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
পড়াশোনার জন্য দীর্ঘ সাত বছরের প্রবাস জীবনের ঘটনাবলী নিয়ে সাজানো লেখক হুমায়ূন আহমেদের এই আত্মজীবনী মূলক বইটি যথারীতি ভীষণ ভালো লেগেছে। অনেক অনেক বছর আগে পড়েছিলাম একবার। এখন মাইন্ড ফ্রেশ করার জন্য আবারও পড়লাম। এতো বছরের ব্যবধানে কিছু বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তনের কারনে বইটাও তাই উপভোগ করতে পেরেছি নতুন করে। লেখকের প্রবাস জীবনের ১৩টি ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি।
হোটেল গ্রেভার ইন: লেখকের নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার দরুণ ফার্গো শহরে যাওয়া এবং সেখানের এই হোটেল গ্রেভার ইনে উঠার স্মৃতি উঠে এসেছে এখানে। ছোট্র এই পর্বে আমেরিকানদের মানিব্যাগে প্রিয়জনের ছবি রাখার কথা যেমন এসেছে, তেমনি রয়েছে লেখকের নিজ দেশ ছেড়ে যাওয়ার হাহাকারের বহিঃপ্রকাশ। যথারীতি অতি সাধারণ সব ঘ���নাবলীকেও দারুণভাবে বর্ণনা করেছেন লেখক। তবে সাধারণের মাঝেও "বিফ এন্ড বানে" ঘটা ঘটনাটা ঠিকি অসাধারণ ছিল।
অল্প কিছুদিন আমাদের আয়ু। এই অল্পদিনের জন্যে আমাদের কতো আয়োজন–পাস, ডিগ্রি, চাকরি, প্রমোশন, টাকা-পয়সা, বাড়িঘর–কোনো মানে হয়? কোনোই মানে হয় না।
ডানবার হলের জীবন: লেখকের পড়াশোনার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন এখানে। হুমায়ূন আহমেদ যে কতটা প্রতিভাবান একজন মানুষ ছিলেন তার কিছুটা নমুনা জানা যাবে এখানে।
বাংলাদেশ নাইট: এই গল্পটা আমার পুরোপুরি মনে ছিল। দেশের বাইরে গেলেই আসলে দেশপ্রেমটা টের পাওয়া যায় ভালোভাবে। মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশ নাইটে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার প্ল্যান থাকলেও, শেষ পর্যন্ত কিন্তু "এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি--" এই গানটিই গাওয়া হয় অনুষ্ঠানে!!
কিসিং বুথ: আমেরিকানদের উদ্ভট সব কর্মকান্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন লেখক এখানে। এখনকার সময়ে এগুলা আমরা সবাই জানলেও সেই ১৯৮৯ সালে যারা বইটি পড়েছিলেন তারা নিশ্চয়ই হতবিহ্বল হয়ে গিয়েছিলেন।
প্রথম তুষারপাত: লেখকের প্রথম তুষারপাত দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন এখানে। দারুণ সব উপমার মাধ্যমে তা বর্ণনা করেছেন লেখক।
জননী: লেখকের এক জীবনে দু'বার মায়াময় হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দু'জন মহিলা। বিনিময়ে চেয়েছিলেন "মা" ডাক শুনতে! এমন অদ্ভুত ঘটনা সবার জীবনে ঘটে না।
এই পরবাসে: লেখকের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদকে নিয়ে সাজানো এই পুরো পর্বটি। কীভাবে এক চিঠির কারন সব ছেড়েছুড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন, কীভাবে লেখকের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছিলেন, নিজেই নিজের সময় কাটানোর উপায় খুঁজে নিয়েছেন; সব জানিয়েছেন লেখক। সাথে উঠে এসেছে আমেরিকানদের সন্তানের প্রতি উদাসীনতার কথাও। শেষ দিকে কেবিন ফিভারে আক্রান্ত হয়ে যে ঝগড়াটার কথা জানিয়েছেন, সেটা থেকে গুলতেকিনের হুমায়ুন আহমেদের প্রতি প্রবল ভালোবাসাটা টের পাওয়া যায়।
ম্যারাথন কিস: আমেরিকানদের আরো একটি উদ্ভট কর্মকান্ডের বিবরণ।
লাস ভেগাস: পলিমার ক্লে ইন্টারেকশনের গুরুত্বপূর্ণ এক আবিষ্কারের কারনে লেখককে পাড়ি জমাতে হয়েছিল উন্মাদ শহর লাস ভেগাসে। সেখানের বর্ণনাগুলো এ দেশের পাঠকদের চোখ কপালে তুলে দিতে বাধ্য।
শীলার জন্ম: টাইটেলের মতোই পুরো অংশটুকু সাজানো হয়েছে লেখকের দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের জন্মের সময়কে ঘিরে। আর বরাবরের মতোই সাধারণ এই ঘটনাটাও লেখকের কল্যানে হয়ে উঠেছে অসাধারণ।
আমি প্রার্থনা করলাম, যেন পৃথিবী তার মঙ্গলময় হাত প্রসারিত করে আমার কন্যার দিকে। দুঃখ-বেদনার সঙ্গে সঙ্গে যেন প্রগাঢ় আনন্দ বারবার আন্দোলিত করে আমার মা-মণিকে।
পাখি: রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া এক পাখিকে নিয়ে সাজানো এই পর্বে আমেরিকানদের পশু পাখির প্রতি দায়িত্বের ব্যাপারটা তুলে এনেছেন লেখক।
ক্যাম্পে: দারুণ এই পর্বটি সাজানো হয়েছে শহর থেকে দূরে ক্যাম্পে গিয়ে লেখকের পুরো একটা সপ্তাহ থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে। কিছু বর্ণনা এত মায়াময় যে ইচ্ছে হচ্ছিল এক্ষুনি ছুটে যাই সেই জায়গায়। বইয়ের আমার সবচেয়ে পছন্দের একটা পর্ব এটা।
নামে কিবা আসে যায়: আমেরিকানদের ইচ্ছে করে ভীনদেশীদের নামকে ভুলভাবে উচ্চারণ করার ব্যাপারটা নিয়ে সাজানো এই শেষ পর্বটি। একদম শেষে যে ব্যাখ্যাটি "অধ্যাপক গ্লাস" এর বয়ানে এনেছেন লেখক তা কতটা সত্যি কে জানে!!
ব্যক্তিগত রেটিং: ০৮/১০ ( হুমায়ূন আহমেদ স্যার যাইই লিখেন আমার তাইই পড়তে ভালো লাগে। এই লোক আমাকে এমন একটা বাবলের মাঝে ঢুকিয়ে দিয়েছেন যেখানে শুধু তীব্র ভালোবাসা রয়েছে। এই ভালোবাসা নিয়ে দীর্ঘ জীবনে অনেক রকমের যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে আমাকে। তবুও আমি এই বাবলটার মাঝেই থাকতে চাই )
হুমায়ূন আহমেদ আমেরিকার নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে গিয়েছিলেন | সেখানে যাওয়ার পর ইউনিভার্সিটি থেকে তাঁর থাকার ব্যাবস্থা করেছিল হোটেল গ্রেভার ইন নামক একটি হোটেলে | এই হোটেলটি তাঁর ইউনিভার্সিটি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে | মূলত হোটেল গ্রেভার ইনে থাকাকালীন সময়ে কিছু ঘটনার বর্ণনা এই বইয়ে আছে |
🖇পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ
বইটিতে ১৩ টি গল্প আছে এবং প্রতিটি গল্পেরই আকার তেমন বড় না | প্রতিটি গল্পেই হুমায়ূন আহমেদের দেশের প্রতি যে ভালোবাসা তা ফুটে উঠেছে | লেখকের গবেষণা পত্র নিয়ে লাস ভেগাসে যাওয়া , কন্যা শীলার জন্ম মুহূর্তের ঘটনা, তাঁর স্ত্রী গুলতেকিনের ব্যাপারে লেখা আছে, গুলতেকিনের বেবী সিটিং করার কথা , এক বিদেশী মহিলার ব্যাপারে লেখা আছে যে হুমায়ুন আহমেদকে নিজের পুত্র হিসেবে ভালোবাসতেন ইত্যাদি আরও অনেক ঘটনা বইটিতে আছে | বইটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে| আশা করি অন্যদেরও পড়ে ভালো লাগবে |
This entire review has been hidden because of spoilers.
ছোট বই,ছোট ছোট অধ্যায়ে হুমায়ুন আহমেদের প্রবাসী জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা। লেখার গুণে যেন গল্পকথার কাহিনী হয়ে উঠেছে। আমেরিকায় যে কবছর ছিলেন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা কালীন সেই সময়ের অনেক অজানা মুহূর্তের কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন অত্যন্ত সুচারুভাবে।
চমৎকার একটা বই। ছোট কিন্তু সুন্দর।লেখকের আমেরিকা পড়তে যাওয়া প্রথম জীবনের গল্প।বায়োগ্রাফি আমার ভালো লাগার একটা জনরা।এখানে একটা অবাক করা ব্যাপার হলো ভালোবাসা বদলায় তবে এমন!!!লেখক গুলতেকিনকে কত ভালোবাসতো সেইসময়।
"হোটেল গ্রেভার ইন" বইয়ে মোটমাট তেরোটা গল্প আছে। হুমায়ুন নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে গিয়ে নানা ঘটনার সম্মুখীন হন। দীর্ঘ সাত বছরের প্রবাস জীবনের কিছুটা এই বইয়ে ঠাই পেয়েছে। সব মিলিয়ে বইটা ভালোই। এক বসায় শেষ নামানো যায়।