Samaresh Majumdar (Bangla: সমরেশ মজুমদার) was a well-known Bengali writer. He spent his childhood years in the tea gardens of Duars, Jalpaiguri, West Bengal, India. He was a student of the Jalpaiguri Zilla School, Jalpaiguri. He completed his bachelors in Bengali from Scottish Church College, Kolkata. His first story appeared in "Desh" in 1967. "Dour" was his first novel, which was published in "Desh" in 1976. Author of novels, short stories and travelogues, Samaresh received the Indian government's coveted Sahitya Akademi award for the second book of the Animesh series, 'Kalbela".
সমরেশ মজুমদার-এর জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা-বাগানে। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র। কলকাতায় আসেন ১৯৬০-এ। শিক্ষা: স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স, পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ। প্রথমে গ্রুপ থিয়েটার করতেন। তারপর নাটক লিখতে গিয়ে গল্প লেখা। প্রথম গল্প ‘দেশ’ পত্রিকায়, ১৯৬৭ সালে। প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’, ১৯৭৫-এ ‘দেশ’ পত্রিকায়। গ্রন্থ: দৌড়, এই আমি রেণু, উত্তরাধিকার, বন্দীনিবাস, বড় পাপ হে, উজান গঙ্গা, বাসভূমি, লক্ষ্মীর পাঁচালি, উনিশ বিশ, সওয়ার, কালবেলা, কালপুরুষ এবং আরও অনেক। সম্মান: ১৯৮২ সালের আনন্দ পুরস্কার তাঁর যোগ্যতার স্বীকৃতি। এ ছাড়া ‘দৌড়’ চলচ্চিত্রের কাহিনিকার হিসাবে বি এফ জে এ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পুরস্কার। ১৯৮৪ সালে ‘কালবেলা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার।
বলিষ্ঠ বাঙালি লেখকদের এই এক চিরাচরিত সমস্যা, ফিনিশিংয়ে এসে ছন্দপতন। ছোটখাট দ্রুতগামী সামাজিক উপন্যাস। ভালোই তো এগোচ্ছিল। শেষটায় অমন না হলেও তো পারতো। বিয়োগান্তক না হয়েও কিঞ্চিৎ অতিনাটকীয়। এহেন পরিণতি বইয়ের শেষ পাতা উল্টে মনে হতাশার সৃষ্টি করে। ভালোলাগার শেষ রেষটুকু আঁকড়ে ধরে, বলতে ইচ্ছে হয়, "হলো না। হলো না। আরেকটা টেক নেবো!"
যাই হোক, গল্পের কেন্দ্রে অবস্থিত স্বপ্নাশিষ। সে ক্লাব লেভেলে ক্রিকেট খেলে। মাতৃহীন বাড়িতে পিতৃদেবের কঠোর হিটলার মাফিক শাসন সইতে হয় তাকে। ক্রিকেট খেলাকে ক্যারিয়ার হিসেবে দেখা যেখানে কল্পনার অতীত! সে খেলতে চায়। বাংলার হয়ে! ভারতের হয়ে! কলেজের পড়া ব্যালেন্স করে, সে কি পারবে?
কি ভাবছেন? স্পোর্টসের গন্ধে বাতাস লেদার-ময়? চিন্তা নেই, মতি নন্দী ঘরানার আদ্যোপান্ত 'খেলা উপন্যাস' এ জিনিস নয়। এ জিনিস একান্তই সমরেশের। নইলে ভাড়াটে ম্যাচ খেলতে গিয়ে স্বপ্নাশিষের জীবনে আহিরের উপস্থিতি হয় কেন? কি করে তবে, যা-ইচ্ছের বাজারে ক্রিকেটের সাথে মিশে যায় প্রেম, কলকাতা ও জীবনানন্দ দাশ? বাইশ গজের শৃঙ্খলা উপেক্ষা করে বল পেরোয় বাউন্ডারির বাইরে, কোন এক অচেনা ব্যালকনির শাসনে। বিদ্রোহ মাথানত করে আটপৌরে সাজের অনুষঙ্গে।
স্বল্পদৈর্ঘ্যে অনেক বিষয় ছুঁয়ে যান লেখক, নেপথ্যে তার গতিশীল স্বকীয় গদ্য। সবকিছুর সাথে সমানভাবে জাস্টিস করতে পারেন না ঠিকই। তবে এ জিনিসের পেছনে দেড়-দু ঘন্টা ব্যয় করতে ক্ষতি নেই। গল্পের গতিপ্রকৃতির সাথে নাই বা হলাম একমত। প্রেডিক্টাবলিটির আমেজে লেখকের কলমে একটি সিনেমাটিক উপন্যাস হিসেবেই যা পড়া। আর পড়া, এক অন্য যুগের গল্প শুনতে। সে যুগে উইকেট-কিপার হলে, ক্রিজে নামতে হতো আট কি ন-নম্বরে। বলাই বাহুল্য, ধোনি পূর্ব ভারতে রাত্রা-মোঙ্গিয়াদের খুব একটা সম্মান দেওয়া হতো না কোনোকালেই। আজকের দিনে দাড়িয়ে যা ভাবলেও অবাক করে।
এসব গল্প হারিয়ে গেছে এখন। পুরনো নিউজপেপারের খেলার পাতায়, বা হলদে কাব্যগ্রন্থের উপহারের কালিতে, এদের দেখা মেলে কদাচিৎ। তবে মন বলে, প্রতিশ্রুতির ফুটনোটে রয়ে গেছে চরিত্রগুলো। আর রয়ে গেছে, শহর কলকাতা। শহুরে-মফস্বলের প্রেমের সমীকরণে নায়ক-নায়িকার বাউন্সার রুপি পিতা-প্রতিবেশীরাও হয়তো আজও বিদ্যমান, তবে আধুনকীকরণের চোটে তাদের সেই দাপট বহুদিন হাপিস। বইটি তাই আমার কাছে খারাপের মাঝেও ভালো। আবার একইসাথে...ভাইস-ভার্সা।
মনের মতো মন লেখকঃ সমরেশ মজুমদার প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স গায়ের মূল্যঃ ৫০ টাকা ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৮.৫/১০
দেশবন্ধু পার্কে রোজ ক্রিকেট প্র্যাকটিস করে স্বপ্নাশিষ। তার একমাত্র স্বপ্ন দেশের বড় ক্রিকেটার হবে। স্বপ্নাশিষের পিতৃদেব চাননা তার মা হারা ছেলে ক্রিকেটার হোক। বড় ভাই দেবাশিষের সহযোগিতায় খেলাধূলায় বেশ কিছুটা স্বস্তি পেলেও বাবা হয়তো সে প্রশ্রয়টা দেননি কখনো। স্বপ্নাশিষের কোচ, হরিমাধবদা, যিনি অবিকল্প পরিশ্রম ও কঠোর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে স্বপ্নাশিষকে তৈরি করছেন। একদিন হরিমাধবদাকে লুকিয়ে লুকিয়ে তার বন্ধু সুব্রতর জোরাজুরিতে শ্যামনগরে খেপ খেলতে গিয়ে নৈহাটি লোকালে চাপতেই দেখা পেলো রোদ চশমা, পরনে সালোয়ার কামিজ, হাতে মোটা বাঁধানো খাতার এক রমনীর দিকে। উদাস ভঙ্গীমার জানলার ধারে বসে বসে বাইরের দিকে তাকানো মেয়েটিকে এক নজর দেখার পরই মনে হলো, এই মেয়েটা হয়তো খুব আপন কেউ! এতোটা শান্তির মুখ, চোখ ফেরানো যায় না! ট্রেন থেকে নেমেই যে যার গন্তব্যস্থলে চলে গেলেও ভাগ্য হয়তো স্বপ্নাশিষের জন্য অন্য কিছু রেখেছিল। শ্যামনগরে মাঠে খেলার সময় হঠাৎ পাশের বাড়ির বারান্দায় দেখতে পেলো সেই মেয়েটি দাঁড়ানো! বুকে এলো সুখের আভাস। কিন্তু একটা দূর্ঘটনায় বল গিয়ে লাগল সে মেয়ের কপালে! ব্যাস ম্যাচ ডিসমিস! কিন্তু বেশ কিছুদিন পরেই দেখা হলো আবার। এবার তার বন্ধুর সাথে। একটা সময় স্বপ্নাশিষ বুঝতে পারলো যে, ক্রিকেট ছাড়াও তার আরেকটা জগৎ আছে, সে জগৎটার নাম আহির! আহির! যে নাকি নিজেও জড়িয়ে পড়ে স্বপ্নাশিষের ভালোবাসায়। প্রগাঢ় ভালোবাসা দিয়ে ভরে উঠলেও একসময় বাধা হয়ে দাঁড়ায় আহিরের বাবা। সে আহিরতে অন্যত্র বিয়ের ব্যবস্থা করার কথা বললেই স্বপ্নাশিষের ভালোবাসার টানে পেছনে ফেলে আসে জন্মান্তরের বন্ধন। কঠোর এবং স্ত্রী হারা পিতা কোনভাবেই মেনে নেন না তার ছেলে একটা মেয়েকে এভাবে তুলে এনে বিয়ে করবে। ও হ্যাঁ, ওরা কিন্তু বিয়ের প্ল্যানিং ও করেছে। কেননা সব সম্পর্কেরই একটা পবিত্র সমাপ্তি থাকে আর সেটা ওদের জন্য ছিলো বিয়ে। কিন্তু পিতৃদেব ছোট পুত্রকে ত্যাজ্য ঘোষণা করে বাসা থেকে বিতাড়িত করার পরেই আহির আর স্বপ্নাশিষের উপর নেমে আসে প্রবল ঝড়। এ সময় একেবারে আপন মায়ের মতো পাশে ছিলো স্বপ্নাশিষের দূর সম্পর্কের মাসি। তিনি আহিরকে থাকতে দেন, তাদের মেন্টালি সাপোর্ট পর্যন্ত দেন যেটা খুব খুব প্রয়োজন ছিলো তাদের। এতো কাহিনীর পর যখন স্বপ্নাশিষ আর আহির এক হয় ঠিক তখুনি নেমে আসে তাদের উপর আরেক বিপর্যয়। আহির, যাকে ছাড়া বাঁচা অনেকটা কষ্টসাধ্য সেই আহিরের ধরা পড়ে এক কঠিন রোগ। কোনরকম কষ্টে জোগানো এক চাকুরিতে কীভাবে কী করবে সে চিন্তায় আরো ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিলো তাদের? আহিরের কী হয়েছিলো যার জন্য আহিরের মা পর্যন্ত চলে এসেছিলো? আর এতোটা পথ হেঁটে স্বপ্নাশিষ কী পারবে আহিরের রোগ থেকে মুক্তি দিতে?
আমি সমরেশের বই পড়েছি খুব কম। তার লেখনশৈলী আমার ভীষণ পছন্দের। বিশেষ করে কলকাতার গল্প, ট্রাম বাস এসব টপিক আমার রীতিমতো ভালোবাসার জন্ম দিয়েছে। তবে তার যে কয়টা বই পড়েছি তারমধ্যে এই বইটা আমার কাছে একটু সিনেম্যাটিক লেগেছে বেশী। কেনো লেগেছে জানিনা তবে আমি গল্পটার পুরোটাই অন্য রকম আশা করেছিলাম! যারা সমরেশের লেখা ভালোবাসেন তারা হয়তো ইতিমধ্যেই বইটি পড়ে ফেলেছেন। যারা পড়েননি তারা পড়তে পারেন। আর ক্রিকেট প্রেমী হলে তো কথাই নেই! খাপে খাপ।
Finally found the Ananda Publishers bookstore at CR Park, and finally got into reading bangla books again after ages. Starting with this one from Samaresh Majumdar. Two innings in the book, very different in taste. Story took an abrupt turn somewhere, but I liked the flavor of both.
Had thought to write the review in bangla but that made me procrastinate the task by almost 3 weeks, so jotting it down lest I may end up forgetting altogether.
ব্রহ্মাচারী আর রগচটা বিপত্নীক বাবার উদীয়মান ক্রিকেটার ছেলে স্বপ্নাশিষ,যে ছোট ক্লাবে দারুণ খেলে ডাক পায় প্রাদেশিক দলের হয়ে খেলার। স্বপ্নাশিষের ক্রিকেট খেলাকে কিছুটা ছাড় দিলেও ব্রহ্মাচারী পিতাকে আঘাত দেয় পুত্র পিতার মতো ব্রহ্মচারী না হয়ে তার উল্টোটা হওয়ায়, রাগী বাবা পুত্রকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ওদিকে পুত্র স্বপ্নাশিষ তার স্বপ্নকন্যা আহির দেবীকে বিবাহ করে ফেলেন। বিবাহ সমস্যা না, সমস্যা সৃষ্টি করে সুটু সেন নামক পালের গোদা (পড়ুন ক্লাবের গোদা) যার ক্লাবে স্বপ্ন নৈতিক কারণে খেলতে রাজি হয়নি। এ ঝুটমুট সমস্যা স্বপ্ন সমাধান করলেও পড়ে গভীর জলে। স্বপ্নের স্বপ্না আইমিন আহির ভীষন অসুস্থ, এদিকে দিল্লি যেতে হবে স্বপ্নের স্বপ্নপূরণ (ক্রিকেটীয়) করতে। স্বপ্ন ক্রিকেট খেলবে নাকি আহির কে বাঁচিয়ে তুলতে ঝাপিয়ে পড়বে? জানতে পড়ুন বইটি। সমরেশ মজুমদারের মিডিওকোর বই, টাইমপাস হিসেবে একেবারে মন্দ না।
গল্পের শুরুতে এমন পরিণতি আশা করি নি। সমরেশ মজুমদারকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে এভাবে এরকম পরিণতি পাঠক হিসেবে মনের ওপর প্রভাব ফেলে, হয়ত লেখক ঠিক তাই চেয়েছেন।
মজুমদার সাহেবের বই আমাকে কখনো আশাহত করে নি। প্রত্যেকবার গল্প কাহিনীর প্রতিটি চরিত্র মনের মধ্যে একটা গভীর রেখাপাত করে। মনে হয় ওই চরিত্রটা আমিই। আমার সাথেই ঘটে যাচ্ছে সমস্ত কাহিনী। গল্পে বাস্তবতার সংমিশ্রণ থাকে বলেই হয়তো এমনটা হয়।
'মনের মত মন' উপন্যাস হলেও শেষটা রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মত। এখানে শেষ টুকু নিজের মত ভেবে নিতে হবে। উপন্যাসের ৫০/৬০% বিষয়বস্তু ক্রিকেট কেন্দ্রীক। একজন উদীয়মান ক্রিকেটার তরুণের গল্প। যদি এই উপন্যাসটা ২/৩ বছর আগে পড়তাম তাহলে হয়তো আমি পড়তামই না। কারণ তখন ক্রিকেট খেলা নিয়ে আগ্রহ থাকলেও এখনকার মত এত আগ্রহ ছিল না।
ছোটগল্পের ধর্মই হচ্ছে শেষটা নিজের মত ভেবে নেয়া। অন্যান্য পাঠকদের দেখলাম শেষটা পড়ে তারা আশাহত। এই উপন্যাসের শেষটা যদি আমার মত করে ভেবে নিতে হয় আমি কখনোই ৯০% পাঠকের চাওয়ার মত হ্যাপি এন্ডিং ভাবতে পারব না। কারণ, ভাগ্য কখনোই সব সময় সবটা দেয় না। কিছু অপ্রাপ্তি অপূর্ণতা জীবনে থাকেই।
আমি ভেবে নিয়েছি, আহিরের অপারেশন সফল হয়। স্বপ্নাশিষের পিতৃদেব তাদেরকে মেনে নিয়েছে। আগের মত আর পিতৃদেব অহেতুক রাগারাগি করেনা। দেবাশিষও ব্রহ্মচারি জীবন ত্যাগ করে বিয়ে করেছে। ডাক্তারের বেধে দেয়া সময় অনুযায়ী আহির ৫/৭ বছরই বাঁচে। স্বপ্নাশিষকে ইন্ডিয়ার হয়ে খেলতে দেখা আহিরের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।সেইটা সে দেখে যেতে না পারলেও এক সময় স্বপ্নাশিষ ইন্ডিয়ার হয়ে খেলে এবং তার প্রতিটি শতক আহিরের জন্য উৎস্বর্গ করে।
সবশেষে, কোচ হরিমাধবের মত অভিভাবক এবং আহিরের মত জীবনসঙ্গী সকলের জীবনে আসুক।
ক্রিকেট আর প্রেমের সম্পর্ক খুব বিশাল। প্রত্যেকটি ক্রিকেটার একবার হলেও প্রেমে পড়ে। একদিকে নিজের ক্যারিয়ার অন্যদিকে ভালবাসা কোনটিকে বাঁচাবে এমন প্রশ্ন সবার জীবনে একবার হলেও আসে। ভালবাসা নিজে ভালবাসার শত্রু সবর্দা। একজন ছেলেকে মানুষ করতে বাবা-মার খুব কষ্ট হয়। তাকে নিয়ে তাদের বিশাল বিশাল স্বপ্ন থাকে। যখন একটি বাবা চেষ্টা করে তার ছেলে মেয়েকে সঠিক পথে রাখতে হবে তিনি সহজাত প্রবৃত্তি থেকে রগচটা মানুষ হবে। উপন্যাস এ নায়কের বাবাও এমন একজন রগচটা আর খিটখিটে মানুষ। সমরেশ বাবু সত্যি একজন বাবা যেমন হোন রক্ষণশীল সেই চরিত্রটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তিনি সফলও হয়েছেন সেই ক্ষেত্রে। যে ঘরে ভালবাসার শব্দ উচ্চারণ করা নিষেধ সেই বাড়ির ছেলে প্রেমে পড়লে স্বভাবত খুব কঠিন হয়ে যায় পরিস্থিতি। স্বপ্ন যখন আহিরের প্রেমে পড়ে তাকে আর ক্রিকেট ছাড়া তার ভাবনার দুয়ার যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
আহিরের পরিবার বিয়ের জন্য চাপ দিলে আহির স্বপ্নের কাছে চলে আসে। শত বাঁধা ডিঙিয়ে তারা ভালবাসা জয় করলেও পরিবারের কাছে তারা মৃত হয়ে পড়ে। শুরু হয় দুটি নতুন প্রাণের একা লড়াই। শেষমেশ হয়নি তাদের শেষরক্ষা, বাসা বেঁধেছে তার ভালবাসার হৃদয়ে ক্যান্সার।
ব্যক্তিগত ভাবে আর সমরেশ এর এক অভিনবত্ব লেখার পাগল হিসেবে আমি ভুল ত্রুটি থাকা সত্যেও এই উপন্যাস আমার মনের মত। হৃদয়ে দাগ কেটে গেছে।
সাতকাহন দিয়েই লেখকের সাথে আমার পরিচয়।এর পর ওনার অনেক গুলো বই কিনলেও আর কোনোটা পড়া হয়ে ওঠেনি। একদিন মনে হলো একটা বই শুরু করা যাক। মনের মতো মন বইটা আমি একটা পুরোনো বইয়ের দোকান থেকে কিনি প্রচ্ছদ দেখে। প্রচ্ছদটা অনেক সুন্দর হওয়ায় খেয়ালই করিনি এটা ইন্ডিয়ান পাবলিসার্সদের বই ই না। তাই বাংলাদেশের নরমাল বইয়ের ফন্টে কলকাতার কথা পড়তে একটু কেমনই জানি লাগছিলো। এবার আসি গল্পে একজন উঠটি ক্রিকেটার স্বপ্নাশিষ আর আহিরকে নিয়ে বইটা লেখা। ক্রিকেট খেলতে গিয়েই তাদের পরিচয়। ধীরে ধীরে তাদের আলাপ প্রেমে গড়ায় কিন্তু স্বপ্নাশিষের বাবা এসবের ঘোর বিরোধী। তারপরও তাদের বিয়েটা হয় কিন্তু শেষে এক আচমকা দুর্ঘটনা নেমে আসে তাদের জীবনে।
বইটা আমার শুরু থেকেই তেমন একটা ভালো লাগেনি।প্রথম থেকেই লাগছিলো লেখক সব কিছুকে একটা সিনেম্যাটিক ওয়েতে প্রেজেন্ট করছেন। মাঝে এসে লাগলো খুবই দ্রুত সব শেষ করতে চাচ্ছেন। সব মিলিয়ে কেমনই যেনো।
ক্রিকেট ক্রিকেট ক্রিকেট - পুরো উপন্যাস জুড়ে এটাই আছে,নাহ্ ভুল বললাম ৫০% ক্রিকেট আর ৫০% প্রেম আছে। প্রথমত বলি, খেলার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই, তাই উপন্যাসটি পড়ার ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম বেশ বিরক্ত হয়েছি।আমি তো এক এক সময় ভাবছিলাম জাস্ট চোখ বুলিয়ে শেষ করে দেবো, ভালো লাগছে না পড়তে, আর ১ স্টারের বেশি দেবই না।কিন্তু গল্পের ৫০% পড়ার পর সত্যিই আমার দারুন লেগেছে। গল্পটা শেষ করার পর মনটা ভীষণ ইমোশনাল হয়ে পড়েছিল।গল্পের শেষ ৫০% এর জন্য ৩.৫ স্টার দিতে চাই।
স্বপ্নাশিষ একজন ক্রিকেট প্রেমী। ছোটো ক্লাবে ক্রিকেট ��্রাক্টিস করে, বেঙ্গল টিমের হয়ে খেলা তার স্বপ্ন। কিন্তু কোনোদিন সে তার বাবার সাপোর্ট পায়নি। হঠাৎ করেই তার জীবনে আহির নামের এক মেয়ের আবির্ভাব ঘটে, যাকে প্রথম দেখাতেই স্বপ্নাশিষের ভালো লেগে যায়। অন্যদিকে বাবার আদেশ মেয়েদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শেষপর্যন্ত পরিস্থিতির চাপে পড়ে দুজন বিয়ে করে, এবং আলাদা সংসার বাঁধে। কিন্তু বিয়ের পর এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় তাদের। পারবে কি তারা সেই কঠিন সিচুয়েশনের মোকাবিলা করতে ?
স্বপ্নাশিষ খুব ভালো ক্রিকেট খেলে। প্রতিবারই কাগজে তার ছবি বেরোয়। কিন্তু পিতৃদেবের তাতে মত নেই। ভীষণ রাগী তিনি। দুই ছেলেকে সারাজীবন ব্রহ্মচারী থাকার আদেশ পিতৃদেবের। বড় ভাই দেবাশিষ বাবার কথার অবাধ্য হয়না কখনো! কিন্তু স্বপ্নাশিষ ওসব মানতে চায়না! স্বপ্নাশিষের জীবনে বেশ আকস্মিক ভাবেই আহিরের আগমন হয়। তারপর হঠাৎই দুই বাড়ির সকলের অমতে গিয়ে বিয়ে করলো তারা। আর তারপর!
সত্যি বলতে বইটা আমাকে টানেনি! খুব জলদি জলদি ইতি টেনে দিয়েছে! আরো কিছুক্ষন লেখা যেতো! তবে পিতৃদেব চরিত্রটি রাগী হলেও বেশ ভালো লেগেছে! মাসী আর হরিদেব ও তেমনি!
যাহোক,এই বইটা পড়ে সমরেশের লেখনীর ভিন্ন ধাঁচের স্বাদ পেলাম যেনো!
মূলত লেখকের নাম দেখে বইটি পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়। শেষ হয়ে গেল এক বৈঠকে। আমরা যখন নিজের পছন্দে ক্যারিয়ার গড়তে শুরু করি তখন প্রায় হুচট খেতে হয় নানাভাবে। আবার ক্যারিয়ারের হাই বোল্টাজ মুহূর্তে এসে ধরা দেয় প্রেম। এটিও তাই। স্বপ্নাশিষ যখন ভালো খেলতে শুরু করে তখনি প্রেম হয়ে যায় আহিরের সাথে। দুই পরিবারের অমতেই বিয়ে হয় তাদের। এরপর শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে স্বপ্নাশিষ যার কাছে ক্রিকেট খেলা শিখেছে লোভের সমুদ্র পেয়েও তে বেইমানি করেনি।
উপন্যাসটি সাধারণ কোনো উপন্যাস নয় আমার জন্য। আর যাই হোক এই বইটির কথা ভুলে যাওয়া আমার পক্ষে বোধ হয় সম্ভব নয়। দুজন মানুষ দুজনে ভালোবাসলে বোধ হয় কোনো কিছুই আর তাদের ছুঁতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি আহির আবার সুস্থ হয়ে উঠেছে আর স্বপ্নাশিষ তাকে জড়িয়ে আবার তারা দুজন নতুন করে শুন্য থেকে জীবন শুরু করেছে।
সত্যিকার অর্থে, মনের মতো মন যারা খুঁজে পায় তারা হয়তোবা সৌভাগ্যবান কিংবা সৌভাগ্যবতী।সমরেশের লেখায় সবসময়ই আলাদা একটা অসাধারণ ব্যাপার থাকে। আর এই বইটার নাম হয়তোবা পুরো জীবন জুড়ে মনে থাকবে আমার। একদম নিজ হাতে ডালা সাজিয়ে দেয়ার মতো করে সমরেশ এই বইয়ে কাহিনীটা তুলে ধরেছেন। আর বইটার নাম টাও খুব মিষ্টি।" মনের মতো মন".......
বাবা-মা'র কাঠিন্য আর চাপ যে কত ছেলেমেয়ের স্বপ্ন পুরনের পথে বাধা এমনকি জীবনের পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই লেখায়। জীবনে নিজের স্বপ্ন পুরণ করতে প্রতিটি ছেলে মেয়েকেই প্রচুর লড়াই করতে হয়...
পড়েছিলাম সেই ২০১৮ সালে।একটা সহজ প্রেমের গল্প।শেষটা আমার কাছে কষ্টের হলেও আহির কে বলা সপ্নাশিষের কথার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।সমরেশবাবুর লেখা আমার বরাবরই পছন্দের তালিকায়।এটা আমার পড়া তার তৃতীয় উপন্যাস ছিল।সপ্নাশিষ আর আহির আমার জীবনের একটা অংশ জুড়ে আছেও থাকবে।
চমৎকার জমেছিল! কিন্তু স্বপ্নাশিষের ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে, আহির-স্বপ্নের শেষটা জানতে পাঠক যখন উদগ্রীব, উপন্যাসে তখনই হঠাৎ ইতি টেনে দেয়া হয়েছে। কেমন একটা হুমায়ুন আহমেদ ফীল পেলাম। আরেকটু পড়ার তীব্র বাসনাটা থেকে গিয়েছে.......
শেষটা মনমত / পুরো বইটা পড়ার সময় যে ভালোলাগা ছিল তা ধরে রাখতে পারে নি, অতিনাটকীয় মনে হয়েছে। ছোটখাট দ্রুতগামী সামাজিক উপন্যাস। লেখকের নাম দেখে মূলত বইটা শুরু করা। একবার পড়ার জন্যে ঠিক আছে।