বারো বছরের এক কিশোর পলাশ। ফুলের মতই ফুটফুটে এক বালক। কতটুকুই বা চিনেছে এই সংসারকে, কতখানিই বা জেনেছে এই পৃথিবীর নিষ্ঠুর সত্যগুলিকে। তবু তারই উপর নেবে এল একের পর এক আঘাত। নিজের পা ভাঙল দুর্ঘটনায়, বাবা গত হলেন আচমকা, মায়ের মানসিক ভারসাম্য গেল হারিয়ে। অভাবনীয় এই বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কী করবে এখন পলাশ? সে কি ভেসে যাবে খড়কুটোর মতন? নাকি রুখে দাঁড়াবে বীরের চেহারায়? না, পলাশ হারবে না। জীবনের একদিকে যেমন দুঃখ আর যন্ত্রণা, অন্যদিকে তেমনি শান্তি আর সান্ত্বনা। সেই অন্যদিকেই রয়েছেন বিমানদাদু আর অক্ষয়কাকা, ডাঃ বোস আর তাঁর স্নেহময়ী দিদি। কী করে যাবে পলাশ? ভাগ্যবিড়ম্বিত এক কিশোরের জীবনযুদ্ধের এক আশ্চর্য প্রেরণা-যোগানো কাহিনী ‘ইতি পলাশ।’ হাসি-কান্নার চুনিপান্না দিয়ে তৈরি এক অসাধারণ জীবনমুখী কিশোর উপন্যাস। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম সৃষ্টি।
Sanjib Chattopadhyay (Bengali: সঞ্জীব চট্ট্যোপাধ্যায়) (born February 28, 1936 in Kolkata) is a Bengali novelist and writer of short stories. His style is characterised by use of short satirical sentences mixed with very lively language.
Childhood and education: Sanjib Chattopadhyay spent his childhood in the hilly terrain of Chota Nagpur Plateau under the care of his father after his mother died when he was five. They relocated to Calcutta and he was admitted to Victoria Institution school which he joined at grade seven. He later went to Scottish Church College, Calcutta where he studied chemistry.
Work: The subjects of his fiction are mostly families living in Calcutta city. Within the confines of these homes, he challenges the moral values of the fast-changing middle class of the city. Chattopadhyay frequently uses old men as his protagonists. These aged characters create the spiritual and philosophical edge found in his novels Lotakambal (The Blanket and Quilt) and Shakha Prasakha (Branches). His most famous novella Swetpatharer tebil (The Ivory Table) is an example of his characteristic style of story-telling which mixes tension, dilemma, curiosity, pity, humor, and satire. He has written fiction for children and continues to write for magazines and newspapers. Chattopdhyay current writing is related to Ramkrishna Paramhansa, Sarada Devi and Swami Vivekananda. Some of his major works apart from the above mentioned are: পরমপদকমলে (At His Divine Feet) ক্যান্সার (Cancer) দুটি চেয়ার (Two Chairs) রসেবশে রাখিস মা রসেবশে বেশ আছি রসেবশে তুমি আর আমি (You And I) একে একে (One By One) কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই (Calcutta Is In Calcutta) Apart from that his notable juvenile literature includes রুকু-সুকু, বড়মামা-মেজমামা series which are fun-filled and analyse various philosophical aspects of life through the eyes of children.
Awards: Chattopadhyay is the recipient of the Ananda Puraskar in 1981 and the Sahitya Academy Award for his book শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন in 2018.
কাঁদতে ইচ্ছে হলে এই বইটা হাতে নিই। আশেপাশের অনেক ভণ্ডামি, অনেক মিথ্যে, অনেক হিংস্রতা আর ঘৃণা, অনেক গুমড়ে ওঠা ব্যথার মধ্যে কোথাও পালিয়ে যেতে ইচ্ছে হলে এই বইটা হাতে নিই। তামাটে আকাশ, ধুলো, অসহ্য তাপ আর দুর্গন্ধে ডুবে থাকা এই জীবন থেকে পালাতে চাইলে এই বইটা হাতে নিই। একটা সময় ছিল তো, যখন মনের আকাশ ছিল নীল, চাইলেই পেতাম চাঁপার গন্ধ। সেদিন উলটোদিকের ফুটে দাঁড়ানো কিশোরী'র একচিলতে হাসি দেখে ভুলতে পারতাম রেজাল্ট, বকুনি, হাজারটা না-পাওয়া। সেই সময়টা ছুঁতে চাইলে এই বইটা হাতে নিই। অক্ষরমালার মধ্য দিয়ে, নিজের ঘোলাটে চোখটাকে ধুয়ে নিতে আর তারই মধ্য দিয়ে নতুন হব বলে এই বইটা পড়ি। হ্যাঁ, আমি আজও, বারবার, "ইতি পলাশ" পড়ি। আপনি?
সবদিক থেকেই। বারো বছরের কচি ছেলে গম্ভীর মুখে ভাষণ দিচ্ছে যেন বাষট্টি বছরের খুড়োমশাই। সেই ছেলের সমবয়েসি বান্ধবীর হাবভাব একজন বয়স্ক মহিলার মতো। বাপের বয়েসি ভেটেরান (সুতরাং সবজান্তা) কিছু চরিত্র আছে, তাদের কথাবার্তা যেন শরশয্যায় পিতামহ ভীষ্ম। শুধু বক্তৃতা আর বক্তৃতা। জ্ঞান আর জ্ঞান। বাংলায় যাকে "ডায়লগ মারা" বলে। জীবনের যত দুঃখ কষ্ট দুর্ভোগ শুধু ভাষণ মেরে-মেরেই ঝেঁটিয়ে বিদায় করার মাস্টারপ্ল্যান নিয়েছে সবাই। লেখক এমনিতে বাস্তববাদী হতে বলেছেন আমাদের, কিন্তু নানাবিধ অলৌকিক ঘটনা ঘটে চলেছে চরিত্রদের জীবনে। আর তাছাড়া, তাদের দুঃখেরও সীমা-পরিসীমা নেই রে ব্রাদার! ট্র্যাজেডি আল্ট্রা প্রো ম্যাক্স।
আরো একদিক থেকে ধপাস। পকেট সাইজের ১১৯ পৃষ্ঠার রোগা একটা বইয়ের দাম করেছে ৩৯৫ টাকা! এরা কি আনন্দ পাবলিশার্স? নাকি নিরানন্দ পাষণ্ড?
I guess no kid in Bengal today would identify with Polash anymore, for the times and society probably have changed way too much. But I recommend this book wholeheartedly anyway, for although sensitivity may now be a lost cause, some people (kids included) just can't help it.
Also, beneath the gritty story lies a sublime teen age romance (well, the word may have different meaning to kids these days:-)). Can't help quoting a few lines:
Spoiler Alert!
পলাশের ট্রেন তখন অনেক দূর চলে গেছে। পাহাড়ের এলাকা শুরু হয়ে গেছে। পলাশ পাহাড় দেখছে। জঙ্গলের পর জঙ্গল ছুটে এসে পেছনে হারিয়ে যাচ্ছে। দেখতে পাচ্ছে না, বন্ধ দরজা, এত বড় একটা তালা, একটি মেয়ের চোখের জল। পলাশ ভুলে গেছে, আজ তার প্রিয় বন্ধু ভুলোর খাওয়া হল না।
যেদিন মনে হবে দেওয়ালে পিঠ থেকে যাচ্ছে সেদিন এই বইটা হাতে তুলে নেব। বইয়ের প্রতিটা পাতায় আদর্শের গল্প বলে, সমাজের প্রতিটা স্তরের মানুষের কথা তুলে ধরে। বাবার সাথে বাজার করে ফিরছিল পলাশ । অসাবধানতাবশত এক গাড়ি দুর্ঘটনা তার পা পঙ্গু হয়ে যায় ,সে হাঁটতে পারে না । কিন্তু তার বাবার অদম্য জেদ তাকে হাঁটতে বাধ্য করে। তার বাবার বন্ধু বিমান দাদুর ডাইরিতে অনেক আদর্শের কথা লেখা থাকে যেগুলো করে পলাশ মনের জোর ফিরে পায়। তার মনে হয় তাকে পারতেই হবে। লেখকের লেখায় স্পষ্ট হয়েছে একটা ছোট্ট মনে কিভাবে ধনী গরিবের ভেদাভেদ ফুটে ওঠে। যার হাত ধরে সে একটু একটু করে হাঁটার স্বপ্ন দেখছিল সেই মানুষটার হঠাৎ মৃত্যু ঘটে। তার বাবা ছিলেন একজন আদর্শবান শিক্ষক। দুর্নীতি করবেন না বলে তাকে ধরে বেঁধে মারা হয়। এই দুর্ঘটনার পর পলাশের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে, সবদিক থেকে তার হাত-পা বাঁধা মনে হয়। তখন তার একটাই চিন্তা তাকে যেভাবেই হোক হাঁটতে হবে ,অনেক উচ্চ শিক্ষিত হতে হবে। সমস্যা যখন আসে তখন সব দিক দিয়ে আসে। তার মা হঠাৎ উন্মাদ হয়ে যায় । এই অবস্থায় তাদের জীবনে প্রবেশ ঘটে প্রশান্ত দা এবং রমাদি। এবং অনেক ঘটনার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা এলাহাবাদ চলে যাবে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে। কিন্তু এক স্বপ্নে তার বাবা এসে তাকে জানান দেয় তাঁকে ছেড়ে না যেতে। তিনি পলাশকে হাতে করে বড় করবেন, তাঁর কাছে রাখবেন। বিমান দাদুর কথায় শেষমেষ পলাশ সবকিছু ছাড়া সিদ্ধান্ত নেয় । যাওয়ার আগে একরাশ অভিমান লিখে যায় শ্যামলীর নামে। আদতে আমরা জানতে চাই না অপর মানুষটা কেমন অবস্থায় আছে। চিকেন পক্স হওয়ার দরুন শ্যামলী পলাশের সাথে দেখা করতে আসতে পারেনা। যখন দেখা করতে আসে তখন পলাশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে তার নিজের গন্তব্য স্থলে। পাঠ প্রতিক্রিয়া:- কয়েক লাইন পড়ার পর মনে হয়েছে কত ছোট ছোট জিনিস এ আমরা ভেঙ্গে পড়ি। কিন্তু এই বইটা আমাদের বাঁচতে শেখায়, নতুন করে জীবন শুরু করতে শেখায় । এক অন্যরকম ভাবনা চিন্তা আদর্শ আমাদের বারবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে। কিন্তু শেষের দিকে প্রশান্ত ও রমা চরিত্র বড়ই অদ্ভুত লেগেছে - হয়তো এভাবেই সুযোগ ফিরে ফিরে আসে। তেমনি অদ্ভুত লেগেছে বৈষয়িক বিষয়গুলো। অক্ষয়কাকু - শ্যামলী - পলাশের বন্ধু ভুলো এদের কথা কেউ ভাবে না, একাই থেকে যায়....
ইতি তোমার মা যতটা শক দিয়েছিল, সেটা কাটিয়ে উঠে এটা পড়ার পরে অল্প একটা বিষন্নতা কাজ করে ঠিকই, তবুও, জীবনের লড়াইতে হেরে না যাওয়ার একটা গল্পের রেশ ও রেখে যায়! :-)
এক বসায় বইটা শেষ করে মনে হচ্ছে,জীবনভর হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ানো প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজে পাই না পাই,বইটা নিয়ে বসার আগের মানুষ আর এখনকার মানুষটার মধ্যে অল্প কিছু একটা বদলে গেছে।
শম্ভুনাথ,প্রশান্ত,বিমান সেতারি কিংবা অক্ষয়বাবু,সবাই ই মনে দাগ কাটার মতন,কিন্তু ঘুরেফিরে রয়ে যাচ্ছে দুই কিশোর চরিত্রই। পলাশ আর শ্যামলী।জীবনের প্রতিটা জিনিস উলটপালট হয়ে গেছে, সব শেষ হয়ে গেছে জেনে,কেঁদে,দুঃখ করেও, হাল ছেড়ে দেয়ার শেষ মুহুর্তে এসে হাল না ছাড়া ছোট্ট পলাশ, আর পলাশের বহু কটুকাটব্যের পরও তার উপর হাল না ছাড়তে চাওয়া বন্ধু শ্যামলী।
সব বই স্বপ্ন দেখা শেখায়,আর কিছু বই বাস্তবতা বুঝায়। স্বপ্ন দেখার রঙিন বয়সে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে ভালো লাগত না, এত দুঃখ দুঃখ কথা কেউ বলে নাকি!অথচ রঙিন চশমা ছাড়া এটাই সত্যি জীবন।
যতবার হেরে যাব ততবার এই বই হাতে তুলে নেব, যতবার বঞ্চিত হব ততবার এই বই মুক্তির পথ দেখাবে আমায়, যতবার ক্লান্তি আসবে যতবার এই শরীর-মন কলুষিত হবে ততবার এই বইয়ের প্রতিটা শব্দ শুদ্ধ করবে আমায়, আমাদের। এই বই আমাদের জীবনের জয়গান, অস্তিত্বের আধার, সৃষ্টির বীজমন্ত্র এবং সর্বোপরি কৃষ্ণের বাঁশির সুরের ন্যায় মধুর। তাই ইষ্টদেবতার কাছে জগতবাসীর হয়ে প্রতি প্রভাতে বলতে ইচ্ছে করে, সুখী হতে চেয়ে যে আত্মার নিরন্তর অশ্রু ঝরে, প্রতিটা সকাল যেন তার হয়। সংসারের আনন্দযজ্ঞে সামিল হতে চেয়েও যাদের বিষাদ অসীম তারা যেন একদিন পাহাড়ি ঝরনা হতে পারে। তাদের দু'চোখে যেন অস্তমিত সূর্যের আভার মতই সুখস্মৃতির রেশটুকু লেগে থাকে আজীবন। যাদের জীবনে প্রিয়-বিয়োগ অবশ্যম্ভাবী তাদের সহ্যশক্তি যেন অর্জিত গুণের ন্যায় অক্ষুণ্ণ থাকে। অনন্ত নক্ষত্রবীথির সমাহারে লালিত-পালিত এই মহা মানবজীবন যেন সার্থক হয়। প্রার্থনা করি। ধন্য লেখক! 🙏
বয়সন্ধির পলাশ। তার বাবা আদর্শবান শিক্ষক। গড়পরতা বাবা, মা, ছেলের সংসার।
গাড়ি দুর্ঘটনায় তার একটা পা ক্রমশঃ অকেজো হয়ে পড়ে, পাড়ার মাস্তানদের পাল্লায় পড়ে পলাশের বাবা অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারায়, সেই দুঃখে পলাশের মা প্রায় পাগল হয়ে যায়। এর সুযোগ নিয়ে পলাশদের বাড়িওয়ালা পলাশদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে চায়।
এতগুলো ঘটনা পরপর পলাশের জীবনে ঘটে। ঘটনাক্রমে পলাশের সঙ্গে অক্ষয়জেঠু, বিমানদাদু, প্রশান্ত, রমা এরা জড়িয়ে পড়ে।
গল্পে যখন সব কিছুই মোটামুটি মারফির সূত্র মেনে চলছে, তখন মামাকে খুঁজতে গিয়ে আকাশ থেকে ব্যাঙ পড়ার মতো ডাক্তারের সাথে পরিচয় হয়। তখন থেকে বইটির কাহিনীর পতন শুরু হয়েছে। তো কীভাবে গল্পের কাহিনী এগুলে হতো? ভার্সন 2.1:
ভানু বাবুর পাঠানো লোক ছিল, ডাক্তার আর রমা। দুজনে ভাই বোন ছিল না। ডাক্তার, ডাক্তারির ডও জানতো না। সব কিছুই ভানুবাবুর সাজানো ছিল। তো ডাক্তার আর রমা, পলাশকে এলাহাবাদ নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয়। মাকে কোন এক পাগল গারদে রেখে আসে, কোথায় সেটা পলাশ জানে না। ভানুবাবু তার বাড়ি বিক্রি করে দেয়। পলাশ কোন টাকা নেয় না, ডাক্তারের প্ররোচনায়। এরপর এলাহাবাদে পলাশের উপর বিভূতিভূষণবাবু, শরৎবাবুর সুদৃষ্টি পড়ে, মানে পলাশের জীবনের ঘোর দুর্দশা শুরু হয়। এরপর পলাশ, শংকরের গতি পথ পায়, অর্থাৎ জীবনে পদে পদে ঠেকে শেখে; সেইসাথে মাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। এলাহাবাদে শ্যামলীরা বেড়াতে যায়। দূর থেকে পলাশ দেখতে পায় শ্যামলী উচ্চবিত্ত অন্যদের সাথে ঘুরছে। পলাশের অবস্থা তখন রাস্তার ছেলেদের মতো। পলাশ এরপর বুঝতে পারে, জীবনে তাকে অনেক বড় হতে হবে এবং সেটা পড়াশুনা করেই। পলাশ কলকাতাতে আবার ফিরে আসে। অক্ষয়বাবু পলাশের পাশে থাকে। পলাশ অক্ষয়বাবুর দোকানে দিনে কাজ করে, পড়াশুনা করে রাত জেগে। রেজাল্ট আবার ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে। শুরু হয় তার নিজের লড়াই।
পলাশ বনাম সমস্ত পৃথিবী।
এরপর সে একদিন চরম অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা করতে যায় কিন্তু আত্মহত্যা করার আগে বিমানবাবুর ডায়েরীটা পড়া শেষ করতে চায়। ডায়েরীতে লেখা - বিমনবাবু একবার নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসে, শুধু বেঁচে থাকতে চায় বলে।
পলাশ বুঝতে পারে: জীবনের চরম সত্য কথা - Nobody is going to save you. You are on your own. আর সব ধর্মের ভগবানরা উচ্চবিত্তদের সাথে পার্টিতে ব্যস্ত।
এরপর শুরু হয়, পলাশের শেষের শুরু অর্থাৎ বাঁচার গল্প।
গল্পের একেবারে শেষের দিকে বিমানবাবু বিমানের মতো হঠাৎ ফিরে আসে, পলাশকে সাহায্য করতে চায়। কিন্তু পলাশ তার কাছ থেকে কোনো আর্থিক সাহায্য চায় না - ব্যক্তিত্বের, চরিত্রের দিশা ব্যতিরেকে।
নাম : ইতি পলাশ লেখক : সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় প্রকাশনা : আনন্দ পাবলিশার্শ সম্প্রতি ইতি পলাশ বইটি পড়া শেষ করলাম। পলাশ নামের একটি কিশোর ছেলে কিছুদিন আগে পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে একটি পা হারিয়েছে। সেই পায়ের আঘাত সারিয়ে উঠতে না উঠতেই পলাশের বাবা হটাৎ করে মারা গেলেন এবং পলাশের মা শোভনা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরলেন। এই অবস্থায় পলাশ কি করল? সে কি আরও বেশি ভেঙে পড়লো নাকি তার মাকে সারিয়ে তুলে নিজের জীবনপথের দিকে এগিয়ে চলার চেষ্টা করল? তার পড়াশোনার ভবিষ্যৎ কি হল? এই প্রশ্নগুলির উত্তর জানার জন্য উপন্যাসটি পড়তে হবে। খুবই অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস এটি। আমাদের চারপাশে এমন অনেকে আছে যারা মনে করে তাদের সামনে কিছু নেই, সবকিছু হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু এই হারিয়ে ফেলার কথা মনে করা খুবই আপেক্ষিক। আসলে কিছুই হারায় না। সবকিছু হারিয়েও এমন কিছু খড়কুটো রয়ে যায় যাকে মানুষ আঁকড়ে ধরে নিয়ে এগিয়ে চলার চেষ্টা করে। সেখানেই মানবজীবনের সার্থকতা প্রতিফলিত হয়।
দুর্ঘটনায় একটি পা পঙ্গু হয়ে যাওয়া কিশোর পলাশের জীবনে তার বাবা ছিলেন তার মনোবল বৃদ্ধি করার একমাত্র উপায়। কিন্তু হঠাৎ একদিন তার বাবাকে খুন করা হয় এবং সাথে পলাশের জীবনে চলতে থাকে একের পর এক দুর্যোগ। পলাশ কীকরে এর মোকাবিলা করবে ? কেউ কি সাহায্য করবে না?
এক কথায় খুব মন কেমন করা এক উপন্যাস। কিন্তু কোথাও কোথাও একটু মনে হয়েছে আরো ভালো করে তুলে ধরা যেতে পারতো।
সব বয়সের লোকে পড়তে পারবেন। নিঃসংকোচে পড়ে ফেলুন।
২০২৪ এর শুরুর দিকে প্রথম পড়েছিলাম, ২০২৫-এর শুরুতে আবার পড়লাম। জীবনমুখী লেখা, যা বারবার পড়া যায়। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলা যায়। কাঁদতে ইচ্ছে হলে বইটা পড়ি, ইঁদুর দৌড়ের লড়াইয়ে খুব হাঁপিয়ে গেলে বইটা পড়ি, ভন্ডামি-মিথ্যার আড়ালে হারিয়ে গেলে বইটা পড়ি। 'ইতি পলাশ' আর 'ইতি তোমার মা' এমন দুটো উপন্যাস, যতবার পড়ি নতুন করে মনের জোর পাই।
অদ্ভুত এক মনের জোর পাওয়া যায় বইটা পড়লে। জীবনে প্রতিকূলতা কেমনভাবে আসতে পারে আর কেমন হতে পারে সেগুলোর ব্যাপ্তি, এই ছোট্ট উপন্যাসটা সেসব নিয়ে ভাবায় বেশ। কিছু জায়গা একটু রিপিটেটিভ লেগেছে, কিন্তু এক নিশ্বাসে শেষ করার মত।
A book full of deep-drenched emotions. Loved it when I read for the first time on Pujabarshiki Anandamela. Was a kid then. Now a grown-up. Still made me cry again when I read it.