Ahmed Sofa (Bangla: আহমদ ছফা) was a well-known Bangladeshi philosopher, poet, novelist, writer, critic, translator. Sofa was renowned for his intellectual righteousness as well as his holistic approach to the understanding of social dynamics and international politics. His career as a writer began in the 1960s. He never married. On 28 July 2001, Ahmed Sofa died in a hospital in Dhaka. He was buried in Martyred Intellectuals' Graveyard.
Sofa helped establishing Bangladesh Lekhak Shibir (Bangladesh Writers' Camp) in 1970 to organize liberal writers in order to further the cause of the progressive movement.
Ahmed Sofa's outspoken personality and bold self-expression brought him into the limelight. He was never seen hankering after fame in a trivial sense. His fictions were often based on his personal experience. He protested social injustice and tried to portray the hopes and dreams of common people through his writing. Sofa always handled his novels with meticulous thought and planning. The trend of telling mere stories in novels never attracted him; he was innovative in both form and content.
জুলাই ১৯৭১ সালে বইটি লিখেছিলেন লেখক, যার ভূমিকা লিখেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য। বইটি লিখার উদ্দেশ্য ছিলো একজন কলম যোদ্ধা হিসেবে এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে সচেতন তরুণ লেখক হিসেবে এর মাধ্যমে জনমত গঠন এবং তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের পটভূমি ও তাদের শোষণের চিত্র তুলে ধরা। চারটি খন্ডে বিভক্ত ছিলো বইটি। *সূচনা *সিকি শতাব্দীরও কম সময়ে *সংস্কৃতির জীয়নকাঠি *মুক্তিসংগ্রামের বর্ণমালা সূচনা এবং সিকি শতাব্দীর ও কম সময়ে এই দুই অধ্যায়ে লেখক আমাদের মুক্তিসংগ্রামের নেপথ্যে কারণ ও পশ্চিম পাকিস্তানীদের পুঁজিবাদী শোষণ এবং তাদের অলিখিত উপনিবেশ বাদের কথার উল্লেখ করেছেন। সংস্কৃতির জীয়নকাঠিতে পূর্ব বাংলার লেখক সমাজের ভূমিকা এবং সে সময়ে তাদের লেখালেখিতে সাহিত্যের যে নতুন ধারার উদ্ভব হচ্ছিল সে কথার উল্লেখ করেছেন। আর বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনকে থামাতে পাকিস্তানি স্বৈরাচারীদের দমন নিপীড়নের ঘটনার উল্লেখ ও রয়েছে। সে সময়ের বাংলা সংস্কৃতি বিশ্ব সংস্কৃতির দিকে ধাবিত হচ্ছে এই উক্তিও লেখক করেছিলেন। আর বই এর চতুর্থ অর্থাৎ শেষ অংশ জুড়ে ছিলো নির্যাতিত মানুষের ক্ষোভের চূড়ান্ত উদগিরণ। ক্রমবর্ধমান শোষণ-নিপীড়ন ও অত্যাচার তাদের চূড়ান্ত সংগ্রামের পথে ঠেলে দেয়ার পর কি করে প্রবল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছিলো তার বিশ্লেষণ এবং মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধকৌশল।
সবশেষে বাংলাদেশের সম্ভাব্য জয় দিব্যচোখে দেখে নিয়েই লেখক প্রবল আত্মবিশ্বাসের সাথে সমাপ্তি টেনেছেন- "জয় স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রিক বাংলাদেশের জয়।"
"আহমদ ছফা রচিত 'জাগ্রত বাংলাদেশ ' বইখানির মধ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্ব থেকে আরম্ভ করে তার আত্নপ্রকাশ এবং পরবর্তী সংগ্রামের বিবরণ যথাসম্ভব বিস্তৃত করে বর্ণিত হয়েছে। " শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রকে সামরিক বুটের তলায় লাঞ্চিত করেছে, প্রতিনিয়ত পূর্ব-বাংলার জনতার দাবি রহিত করে।
সিকি শতাব্দীর কম সময়ে :-
পাকিস্তানের একগুঁয়ে সমর্থকেরা অনেকটা গর্বের বশেই পাকিস্তানকে অষ্টম আশ্চর্য বলে ঘোষনা করতেন। ভাষা, সংস্কৃতি, জলবায়ু এবং ভৌগলিক সংলগ্নতা ইত্যাদি রাষ্ট্রগঠনকারী উপাদান মিথ্যে প্রমাণিত হল ৪৭ এর দেশ ভাগের পর পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিম-পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে। তারা জানত, ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের যুগ কবে অতীত হয়ে গেছে। গনতন্ত্র ও ধর্ম দুটো পরষ্পর বিরোধী প্রতিজ্ঞা, কখনো একসঙ্গে চলতে পারে না। অন্তত ইউরোপের গনতান্ত্রিক চিন্তাধারার বিকাশ সেইরকম সাক্ষ্য দেয়। পূর্ব এবং পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে ভূগোল কিংবা সংস্কৃতির কোন মিল নেই, সুতরাং ইসলামই দুই অংশের মধ্যে একমাত্র বন্ধন। তথাকথিত পাকিস্তানের জনক জিন্নাহর জীবদ্দশাতেই তাঁর কিংখাপে মোড়া পাকিস্তানের স্বরুপ বাংলার মানুষের দৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের সপক্ষে যখনই কোন প্রস্তাব উঠেছে, লিয়াকত আলী খান ছলে-বলে-কলে কৌশলে পাকিস্তানের পরিষদে পূর্ব- পাকিস্তানের দাবি আঁতুড়ঘরে হত্যা করেছেন। পাকিস্তান ছিলো আধা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র, কিন্ত যুক্তনির্বাচন ব্যাবস্থা ধর্মনিরপেক্ষ অনুসৃত। "রেলগাড়ির লাইনের উপর যেমন গরুর গাড়ি চলতে পারে না, তেমনি আধা ধর্মভিত্তিক একটি দেশেও যুক্ত নির্বাচন ব্যাবস্থা চলতে থাকলে ধর্মীয় বন্ধনের আলগা পেশিগুলো আরো আলগা করে দিতো।"
সংস্কৃতির জীয়নকাঠি :-
পাকিস্তান-সৃষ্টির উন্মাদনার মুহুর্তে এক কবি মন্তব্য করেছিলেন, "জাতীয় সাহিত্য সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন হলে আমরা রবীন্দ্রনাথকে বাদ দেব।"
সেই বর্ষীয়ান কবি এখনো বেঁচে আছেন, রবীন্দ্র-সাহিত্যের আলোচনা-সমালোচনা করে থাকেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিধর্মিতার প্রশংসায় তিনিও কম যান না। সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনীতিক সকল বিষয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করবার জন্য তাঁরা নানা কর্মপন্থাও গ্রহন করেন। সেগুলো আজ হাসি উদ্রেক করবে তাতে সন্দেহ নেই। তবে সাধারণ বাঙালির প্রতি পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর মনোভাব কী-রকম, একটা দৃষ্টান্ত দিলেই বোঝা যাবে।
"বেশ কয়েক বছর আগে লাহোরের বিখ্যাত প্রকাশক ফিরোজ এন্ড সন্স উর্দুর একটি অভিধান সংকলন করেন। তাতে বাঙালি শব্দের অর্থ করেছিলেন , ' আগার বাঙালি ইনসান হো তো ভূত কঁহৌ কিসকো'। অর্থাৎ বাঙালি যদি মানুষ হয় তাহলে ভূত বলব কাকে?"
চারটি খন্ডে বিভক্ত ছিলো বইটি *সূচনা *সীকি শতাব্দীরও কম সময়ে *সংস্কৃতির জীয়নকাঠি *মুক্তিসংগ্রামের বর্ণমালা বইটির ভূমিকা লিখেছেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য। অসাধারণ একটা বই। আহমদ ছফা ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি। আমৃত্যু কলমের যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে।
জাগ্রত বাংলাদেশ, প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ১৯৭১, ৪র্থ প্রকাশঃ ১৯৮৩, মূল্যঃ বারো টাকা (নিউজপ্রিন্ট)
এই বইটিকে ধরা হয় 'স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম গ্রন্থ'। জুলাই'৭১ থেকে জুলাই'২৪, গুনে গুনে মাঝের এই ৫৩ টা বছর পরে জাগ্রত বাংলাদেশ ১.০ থেকে ইতিহাসের নাগরদোলায় চড়ে আজ আমরা এসে দাঁড়িয়েছি জাগ্রত বাংলাদেশ ২.০ এ। আগস্ট'২৪ এর পরে সবার প্রথম যেই বইটা পড়া শুরু করেছিলাম, সেটি এই বই। হিসাব মেলানোর জন্য যে, ৫৩ বছর আগেকার 'জাগ্রত বাংলাদেশ' আর আজকের 'জাগ্রত বাংলাদেশ' এর মধ্যে ফ্লেভার কতটুকু বদলিয়েছে আর আমরাই বা কতটুকু বদলালাম?
বইটির চারটি অংশঃ সূচনা, সিকি শতাব্দীরও কম সময়ে, সংস্কৃতির জীয়ন কাঠি, মুক্তিসংগ্রামের বর্ণমালা। পাপড়ি চারটা, কিন্তু ফুল একটা। এর মধ্যে শেষ দুইটি পাপড়ি সম্পর্কে আলাদাভাবে বলা উচিত, কারণ এই দুইটার রঙ একটু আলাদা। 'সংস্কৃতির জীয়ন কাঠি' প্রবন্ধে ছফা প্রথিতযশা সাহিত্যিকদেরকে 'সাহিত্যিক' নয় বরং 'ব্যক্তি-সাহিত্যিক' হিসেবে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন, পাশাপাশি তৎকালীন সময়কে চশমার ফ্রেম বানিয়ে যুক্তিবাদী লেন্সে ব্যবচ্ছেদ করেছেন নাতিদীর্ঘ 'পূর্ব-পাকিস্তানি' বাংলা সাহিত্যকে। আর 'মুক্তিসংগ্রামের বর্ণমালা' প্রবন্ধ পড়ে মনে হচ্ছিল যেন ইতিহাসের বইয়ের পাতার মার্জিনে কোনো অভিজ্ঞ সমরবিদের নকশার আঁকিবুকি দেখছি; মনে হয়নি যে কোনো আটাশ বছরের আবেগী লেখকের উৎসাহের ফাঁকা বুলি পড়ছি। তরুণ ছফার এই সামরিক প্রজ্ঞার জীবন্ত স্বাক্ষী হচ্ছে ৭১ এর যুদ্ধের বাকিটুকু সময়। ছফার এরকম দুর্লভ রূপ আর কোথাও পেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
পুরনো সংস্করণের বই সংগ্রহের শখ এর কারণে বইটার এই ৪০ বছর পুরনো কপিটি আমার লাইব্রেরিতে রয়েছে। পুরনো কাঁথার মত সুন্দর প্রচ্ছদ, টাইপ রাইটার ফন্ট। যেই হিসাব মেলাতে চেয়ে এই বইটি শেলফ থেকে নামিয়ে হাতে নিয়েছিলাম, সত্যি বলতে সেই হিসাবটা আমার কাছে না মিললেই বরং খুশি হতাম। আরো ৫৩ বছর পরেও যদি হয়, আমার বিশ্বাস, জাগ্রত বাংলাদেশের পরবর্তী সংস্করণের সময়ে শে���ফ থেকে নামিয়ে পড়লেও বইটি সমানভাবে প্রাসংগিক থাকবে, পুরনো আলোয় নতুন পথ চেনাবে...।
'জাগ্রত বাংলাদেশ' আহমদ ছফার প্রথম দিককার রচনা। তাই প্রকৃত আহমদ ছফা এই বইতে পাওয়া যায় না। ওঙ্কারের মাঝে তিনি যেভাবে যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন এটিতে তার যেন কিছু জিনিস খুব মাত্রায় পাই নি। যুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের দুঃখ-দুর্দ্দশা নিয়ে তিনি এটি লিখেছেন। তিনি, নিবেদনে বলেছেন, বইটি লেখার সময় কারো সাক্ষাৎকার নিতে পারেননি। তাই আমি ধরে নিচ্ছি অনেক কিছু তিনি কল্পনায় সাজিয়েছেন।
ইসলাম একমাত্র ধর্ম যাকে সবাই তুলোধুনো করে। আহমদ ছফা এতে পিছপা নন। হিন্দু ধর্মের মাঝেও খুব কম আছে, হিন্দু ধর্মের সমলোচনা কঠিন ভাবে খুব একটা করা হয়।
এই বইতে তিনি বাংলাদেশর উপর পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাছাড়া, শাসকদের কালো চক্ষু, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, কৃষক বিদ্রোহ ও বাঙালি সংস্কৃতি কট্টর সমলোচনা ও প্রায়োগিক দিক তিনি তুলে ধরেছেন। এই বই তাকে ছাড়া হয়ত অন্য কাউকে দিয়ে সম্ভব হতো না গড়ে তোলা। শ্রেণীসংগ্রামের দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসের বিশ্লেষণ তিনি করেছেন।
তবে, তিনি এক জায়গায় বলেছেন, 'পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হলো অত্যাচার বাহিনী'। এমন সহজ ভাষা আমি কখনো তার থেকে আশা করিনি। এটা দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছিলেন তা তিনি জানেন। আবেগে বশীভূত হয়ে তিনি এমন কিছু সংলাপ এতে জুড়ে দিয়েছেন যা আহমদ ছফার সাথে যায় না।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে লেখা লেখকের এই রচনাটি অনেক প্রেরনা জোগায়। বাংগালির ইতিহাস এর কথা ব্যাক্ত করে একদিন বাঙালি যে বিজয় ছিনিয়ে আনবেই তা উল্লেখ করেছেন এই লেখায়।