Buddhadeb Guha (Bengali: বুদ্ধদেব গুহ) is a popular Bengali fiction writer. He studied at the well-known St Xavier's College of the University of Calcutta.
His novels and short stories are characterized by their dreamy abstractness and romantic appeal. His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels.
A highly successful chartered accountant by profession, and an accomplished musician, Guha is very urbane in his lifestyle. He was one of the first to create characters representing easy-going, upper middle-class modern Bengali families, whom readers could identify with, and that gave him instant popularity.
He is the recipient of many awards including Ananda Puraskar, 1976; Shiromani Puraskar; and Sharat Puraskar.
The Library of Congress has over fifty titles by him. His most famous novel, according to many, is Madhukori. It is considered a milestone in Bengali literature. He is also the creator of Rijuda, an imaginary character who moves about in jungles with his sidekick Rudra. The jungles that he wrote about were mainly in Eastern India.
“আসলে আমি শহরের কীট। পীচ রাস্তার হাউড্রেন্ট-এর তেলাপোকার মতো। ময়লা, ধুলো, বীজাণু ও ডিজেলের ধোঁয়ার মধ্যে আমার প্রোটিন, ভিটামিন সব। আমি কেন বনের নির্মল সুদৃশ্য প্রজাপতি হতে পারব? সবাই কি সব হতে পারে? আমি অস্পষ্ট, প্রচ্ছন্ন, সংস্কৃত, আমি আধুনিক, উদগ্র অথচ নরম, লাজুক। আমি পর্দা ভালোবাসি, ভালোবাসি ঘোরাটোপের আলো, ভালোবাসি আস্তে কথা বলা, এক চিলতে আকাশে অভ্যস্ত আমি। এতবড় আকাশে আমার চোখ বেঁধে যায়।”
▪️▪️▪️
যাপিত জীবনের বিরক্তিতে হঠাৎ হঠাৎই আমরা বলে উঠি, ধুর! সব ছেড়েছুড়ে জঙ্গলে চলে যাই... কিন্তু প্রাণীর সমার্থকই বোধহয় হিংস্রতা! মানুষ প্রাণী-বন্য প্রাণী কোনো তফাত নেই এতে। দলাদলি সবখানেই, সবার মধ্যেই।
মনে হলো, স্বশরীরে নিজেই দিনকয়েক জঙ্গলে কাটিয়ে এলাম।
....কিছু কিছু বই থাকে, যেগুলি পড়ার পর মন থেকে একটাই অনুভূতি হয়... ‘অসাধারণ’। বহুবার পড়ার পরেও আবার পড়তে ইচ্ছে করে । আমার মতে, ’লবঙ্গীর জঙ্গলে’ বইটিও এরকমই একটা লেখা । এইসব বইয়ের রিভিউ লেখার যোগ্যতা বা ধৃষ্টতা কোনোটাই আমার নেই । বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পীর লেখণীর গুণে... বহুবারর পড়া হয়ে যাওয়ার পরেও, আমার কাছে এই বইটির আকর্ষণ অপ্রতিরোধ্য । প্রকৃতিকে ঠিক কতটা ভালোবাসলে, শুধুমাত্র বর্ণণার সাহায্যে যে প্রকৃতির এত অপরূপ সুন্দর ছবি আঁকা যায়, তা বুদ্ধদেব গুহ’র লেখা না পড়লে কল্পনাও করা যায় না ।
বুদ্ধদেব গুহর লেখায় অদ্ভুত একটা মাদকতা আছে। পড়ার পর ইচ্ছে করে সব ছেড়ে চলে যায় জঙ্গলে। শহরের যান্ত্রিকতা, কোলাহল, রন্ধে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া পেট্রোল বাষ্প এসব থেকে পরিশুদ্ধ হতে জঙ্গলের নিবিড় ছায়াময়তাই দরকার। কিন্তু সে সুযোগ তো নেই তাই কালি কলমের অক্ষরে বুদ্ধদেব গুহর লেখার মধ্যে সেখানে বিচরণ করি।
অনেকদিন ধরেই খুব ধীরগতিতে বইটা পড়ছি,শেষ করবো করবো করেও করা হয় নি। বইটা যে তেমন একটা ভালো লেগেছে তা বলবো না,কয়দিন পর হয়তো কাহিনীও ভুলে যাবো।এটা আমার পড়া বুদ্ধদেব গুহর প্রথম বই।বইটা আমাকে সাজেস্ট করেছিল নীলক্ষেতের শাহজাহান চাচা। তিনিই অনেক খুঁজে বইটা আমাকে দেন,আমার নাকি ভালো লাগবে।কেনো ভালো লাগলো না বুঝলাম না।বইটা মূলত লবঙ্গীর জঙ্গলের বাবু,চন্দনী,চন্দ্রনাথকে নিয়ে। কিভাবে জঙ্গলের সব প্রতিকূলতা থেকে বাবু চন্দনীকে রক্ষা করে এই নিয়েই কাহিনী।বেশ কিছু জায়গায় খুবই স্লো লেগেছে বইটা। খুবই পানসে একটা বই,কিন্তু এটার মধ্যে খুবই সুন্দর করে লবঙ্গীর জঙ্গলের সুন্দর আবহাওয়া ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
🌿 উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে এক রহস্যময় আহ্বান। কলকাতা-বাসী লেখকের কাছে এক পুরনো পরিচিত, চন্দনী—বিড়িগড়ের পাহাড়ের এক সরল, সহজাত সৌন্দর্য এবং সাহসের প্রতীক—টিকড়পাড়া থেকে সাহায্যের আর্জি জানিয়ে একটি চিঠি লেখে। এই চিঠিই মূলত আমাদের গল্পের নায়ককে (লেখক নিজেই যিনি এখানে কথক) টেনে নিয়ে যায় লবঙ্গীর জঙ্গলের দুর্গম পথে। এই যাত্রা শুধুমাত্র ভৌগোলিক নয়, বরং তা অতীতের স্মৃতি, দায়বদ্ধতা এবং এক জটিল প্রেমের অনুসন্ধানের যাত্রা। গল্পের মূল আকর্ষণ চন্দনী। সে যেন বন-পাহাড়ের রাজকুমারী। তার মধ্যে রয়েছে প্রকৃতির সারল্য এবং এক নিবিড় আকর্ষণ। তার জীবনসঙ্গী চন্দ্রকান্ত, যে ঘরে থাকার লোক নয়, তার সঙ্গে চন্দনীর সম্পর্ক এক অস্থির বাঁধন। কথকের সঙ্গে চন্দনীর সম্পর্ক প্রথাগত প্রেম নয়, বরং তা নির্ভরতা, বন্ধুত্ব এবং এক গভীর আত্মিক বোঝাপড়ার প্রতীক। তাদের এই সম্পর্ক, যা 'ভাই' পাতানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়, এক সূক্ষ্ম, সংবেদনশীল ইশারায় ভরা, যেখানে রোমান্টিক আকর্ষণ এবং নৈতিক দূরত্ব পাশাপাশি অবস্থান করে।🌿 🌿এই উপন্যাসে বুদ্ধদেব গুহের সেই স্বকীয় গদ্যশৈলী স্পষ্ট—যা একইসঙ্গে রোমান্টিক ও দার্শনিক। তিনি শুধুমাত্র গল্প বলেন না, জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—কর্তব্য, প্রেম, সমাজ এবং মানুষের ভেতরের বন্য প্রবৃত্তিকে নিয়ে। কথক যখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, তখন পাঠকের মনেও সেই প্রশ্নগুলো জেগে ওঠে: "এ-জীবনে ক-টা কর্তব্যই-বা তুমি করেছ?" লেখকের ভাষা অত্যন্ত সংবেদনশীল; বর্ণনাভঙ্গি যেমন গভীর, তেমনি সংলাপগুলি চরিত্রদের হৃদয়ের জটিলতা প্রকাশ করে।
'লবঙ্গীর জঙ্গলে' বইটি আসলে সেই পাঠকদের জন্য, যারা বুদ্ধদেব গুহ-এর অরণ্যের কাহিনিতে কেবলমাত্র রোমাঞ্চ নয়, বরং গভীর মানবিক সম্পর্ক, দায়িত্ববোধের টানাপোড়ন এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আত্মিক বন্ধন-কে খুঁজে বেড়ান। জঙ্গল এখানে শুধুই স্থান নয়, এটি মানুষের মনেরই প্রতিচ্ছবি—গভীর, রহস্যময় এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক।🌿
বাংলা সাহিত্যে বুদ্ধদেব গুহর লেখা একটা অন্যরকম গন্ধ থাকে। বন অরণ্য, জঙ্গল, পশু পাখি, মানুষের প্রেম ভালোবাসা, জংলিপনা, স্বার্থপরতা, হিংস্রতা, নিচতা থেকে সবকিছু। এই গল্পটা এরকম। ১৬২ পৃষ্ঠার ছোট একটা উপন্যাস। গুহ সাহেবের এই দিকটা ভালো ভালো লাগে। ছোট ছোট উপন্যাসেও গভীর বার্তা বয়ে আনে। এই গল্পে জংলি হাতিদের সম্পর্কেও নতুন করে জানা হলো। লেখক সে সাথে মানুষরূপী জানোয়ারদের গল্পও তুলে ধরেছেন। উনার কোয়েলের কাছে উপন্যাসের যশোয়ন্ত ছিল আমার একটা প্রিয় চরিত্র। এখন এই লবঙ্গীর জঙ্গলে উপন্যাসের চন্দ্রকান্তও সেই তালিকায় যুক্ত হলো।