Jump to ratings and reviews
Rate this book

সাহিত্যচর্চা

Rate this book

147 pages, Hardcover

First published April 1, 1954

2 people are currently reading
39 people want to read

About the author

Buddhadeva Bose

105 books122 followers
Buddhadeva Bose (also spelt Buddhadeb Bosu) (Bengali: বুদ্ধদেব বসু ) was a major Bengali writer of the 20th century. Frequently referred to as a poet, he was a versatile writer who wrote novels, short stories, plays and essays in addition to poetry. He was an influential critic and editor of his time. He is recognized as one of the five poets who moved to introduce modernity into Bengali poetry. It has been said that since Tagore, perhaps, there has been no greater talent in Bengali literature. His wife Protiva Bose was also a writer.

Buddhadeva Bose received the Sahitya Akademi Award in 1967 for his verse play Tapaswi O Tarangini, received the Rabindra Puraskar in 1974 for Swagato Biday(poetry) and was honoured with a Padma Bhushan in 1970.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
1 (6%)
4 stars
9 (60%)
3 stars
2 (13%)
2 stars
3 (20%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 4 of 4 reviews
Profile Image for Arupratan.
235 reviews385 followers
November 20, 2022
বুদ্ধদেব বসুর প্রবন্ধগুলোকে তাঁরই লেখা অন্য একটি বইয়ের নাম অনুসরণ করে বলতে ইচ্ছে করে— হঠাৎ আলোর ঝলকানি! কিংবা "অবিরাম আলোর ঝলকানি" বললেও ক্ষতি নেই। একজন কবি যখন গদ্য লেখেন, কবি-মননের স্বভাবসিদ্ধ কাব্যিক ইঙ্গিতময়তা এসে আশ্রয় নেয় সেই গদ্যে। এইরকম কাব্যগন্ধী গদ্যকে প্রায়শই আমি উপভোগ করতে পারিনা। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়েও বুদ্ধদেব বসু এই "দোষে" দুষ্ট নন। তাঁর গদ্য আশ্চর্যরকম সাবলীল। খাঁটি প্রত্যক্ষ গদ্য। শুধুই গদ্য।

আলোচ্য সংকলনটিতে সবমিলিয়ে আটটি প্রবন্ধ রয়েছে। আলোচনায় প্রবেশ করার আগে বলে নিই, বুদ্ধদেবের প্রবন্ধকে "হঠাৎ আলোর ঝলকানি" বললাম ক্যানো। যেকোনো ভালো প্রবন্ধে দুরকম বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। গদ্যভাষার বলিষ্ঠ রম্যময়তা, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ সৈয়দ মুজতবা আলির প্রবন্ধ। আরেকটা বৈশিষ্ট্য হলো, বিষয়বস্তুর বিদগ্ধ উজ্জ্বল বিশ্লেষণ, যার উদাহরণ... ধরা যাক অম্লান দত্ত। (এখানে বারবার "রম্য" শব্দটা ব্যবহার করছি, কিন্তু তাই বলে, ইয়ে, সঞ্জীব চাটুজ্যেমার্কা "কৃত্রিম ছদ্মপ্রাজ্ঞ ছ্যাবলামি" অর্থে ব্যবহার করছি না। এখানে রম্য মানে ভাষা ও ভাবের অকৃত্রিম সাবলীলতা/ সর্বজনীনতা।) একইসঙ্গে রম্য ভাষার ব্যবহার করেছেন এবং উদার বিশ্লেষণ করেছেন এরকম প্রবন্ধলেখকের সবচেয়ে প্রকৃষ্ট উদাহরণ, আমার মতে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব বসুর প্রবন্ধে অতিরিক্ত যেটা আছে সেটা হলো, ভাষাপ্রয়োগের আশ্চর্য বনেদিয়ানা। বাংলা শব্দের উৎকৃষ্টতম প্রয়োগ। এবং হঠাৎ হঠাৎ আইডিয়ার ঝিলিকে পাঠককে চমৎকৃত করবার পারদর্শিতা। হঠাৎ আলোর ঝলকানি !

প্রতিটি প্রবন্ধ নিয়েই অনেককিছু বলতে ইচ্ছে করছে। সেটা তো সম্ভব নয়। অল্প কিছু বলি। মূল সংস্কৃত বাল্মীকি রামায়ণ (কিংবা সেটির বঙ্গানুবাদ) পড়েননি বুদ্ধদেব বসু। আমি যতোটুকু পড়েছি, তিনিও ততোটুকুই পড়েছেন। অর্থাৎ, উপেন্দ্রকিশোরের শিশুতোষ রামায়ণ, কৃত্তিবাসের "বাঙালি" রামায়ণ এবং রাজশেখর বসুর সারানুবাদ। সংকলনের প্রথম প্রবন্ধে ("রামায়ণ"), আরো অনেক প্রসঙ্গের পাশাপাশি, বহুলচর্চিত একটি বিতর্ককে নিজস্ব আঙ্গিকে দেখতে চেয়েছেন বুদ্ধদেব। বিষয়টি হলো, রামায়ণের রামচন্দ্র কি আসলেই একজন আদর্শ মানবচরিত্রের উদাহরণ? "যে-রামের নাম করলে ভূত ভাগে, সেই রাম নিষ্ঠুর অন্যায় করেছেন একাধিকবার।" ক্যানো করেছেন এইসব অন্যায় কাজ? বাজে লোক ছিলেন বলে? নাকি অন্য কোনোভাবে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে রামচন্দ্রের নিষ্ঠুরতাকে? চমৎকার এই প্রবন্ধটি পড়ে খুব খুব আনন্দ লাভ করেছি। রামায়ণ বিষয়ে এমন দারুন প্রবন্ধ বাংলায় খুব বেশি নেই।

দ্বিতীয় প্রবন্ধটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের "কীর্তি" বিষয়ক। এই প্রবন্ধেও ঝলসে উঠেছে বুদ্ধদেবের শাণিত যুক্তির তরোয়াল। এখানেও তিনি একটি সুপ্রাচীন ধারণাকে বিকল্প আঙ্গিকে পরখ করে দেখাতে চেয়েছেন। ধারণাটি হলো, মাইকেল তাঁর বিখ্যাত মহাকাব্যে রাম-লক্ষ্মণ দুই ভাইয়ের চেয়েও রাবণ-মেঘনাদ দুই বাপ-ব্যাটাকে অধিক প্রাধান্য দিয়েছেন। সত্যিই কি তাঁদের প্রাধান্য দিয়েছেন? সত্যিই মাইকেল বাংলা কাব্যের জগতে বৈপ্লবিক কাজ করেছিলেন? নাকি আমরা তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করেছি? এই প্রবন্ধে জানতে পারি, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত একবার সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন, প্রাচীন বাংলা সাহিত্য সাধারণত অপাঠ্য! (এর চেয়ে সত্যি কথা জগতে আর ক'টা আছে?) বুদ্ধদেবও প্রায় একইরকম সাহসী মন্তব্য করেছেন : "মাইকেল বাংলা জানতেন না"। এইসব কী শুনছি, অ্যাঁ?

"বাংলা শিশুসাহিত্য" প্রবন্ধটি সম্ভবত বাংলা শিশুসাহিত্য বিষয়ক আমার পড়া সবচেয়ে দুর্দান্ত প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধেও রয়েছে হঠাৎ হঠাৎ ছিটকে আসা আইডিয়ার আলোর ঝলকানি। দেখতে পাচ্ছি, সে-ই ১৯৫২ সালেই তিনি লীলা মজুমদারকে বাংলাভাষার প্রতিনিধিস্থানীয় শিশুসাহিত্যিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন! একই সঙ্গে স্পষ্ট বুঝিয়ে বলেছেন, বাচ্চাদের জন্যে সাহিত্য রচনা করা যার-তার কাজ নয়। এমনকি রবীন্দ্রনাথও পারেননি (অথচ অবনীন্দ্রনাথ পেরেছেন)। একজায়গায় লিখেছেন : "বাংলা দেশে এত বড়ো দুর্ঘটনাও ঘটেছিলো যে 'আবোল তাবোল' অনেক বছর ছাপা ছিলো না!" পরপর তিনবার পড়লাম বাক্যটা। খানিক বাদে আবার পৃষ্ঠা উল্টে ফিরে এসে পড়লাম। আরো অনেকবার পড়লাম। বারবার ফিরে ফিরে আসতে হলো এই বাক্যটার কাছে।

এই সেরেচে, রিভিউ তো গড়গড়িয়ে লম্বা হয়ে যাচ্চে! আচ্ছা এবার সংক্ষেপে সারছি। রবীন্দ্রনাথের উত্তরসূরী কারা? বিশেষত কবি রবীন্দ্রনাথের? রবীন্দ্রনাথ যখন কবিতা রচনা শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর আশেপাশে বলবার মতো বাঙালি কবির নাম একটাও ছিলো না। নিজে হাতে ইট পুড়িয়ে, বালি-সিমেন্ট মেখে, মজদুরি করে তিনি দাঁড় করিয়েছেন বাংলা কবিতার ভিত্তিমূল। তারপর? "রবীন্দ্রনাথ ও উত্তরসাধক" নামের প্রবন্ধে দেখতে পাই, রবীন্দ্রনাথ নামক একদা আকস্মিক বজ্রপাত কীভাবে আজকে বাংলা কবিতার রক্তমাংসে মিশে গেছেন। তিনি সবকিছুতেই আছেন, থেকেও আছেন, না-থেকেও আছেন। "রবীন্দ্র-জীবনী ও রবীন্দ্র-সমালোচনা" নামের আরেকটি প্রবন্ধ পড়ে বুঝতে পারলাম, আজ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের একটাও ভালো জীবনী লেখা সম্ভব হলোনা ক্যানো! রবীন্দ্রনাথ নাকি নিজেই এর জন্যে দায়ী!

যারা ছন্দের ব্যাকরণ বিষয়ে জানেন না, তাদের কাছে "বাংলা ছন্দ" প্রবন্ধটি বিরক্তিকর মনে হতে পারে। সংকলনের এই একটি প্রবন্ধ আমার মতো আমজনতার জন্যে নয়। খুবই টেকনিক্যাল। কিন্তু সংকলনের শেষ দুটি প্রবন্ধ শেষপাতে ক্ষীরের চমচমের মতো (আমার ক্ষীরের চমচম পছন্দ তাই এটার নাম লিখলাম, আপনারা নিজের নিজের পছন্দের নাম বসিয়ে নিতে পারেন)। "সাংবাদিকতা, ইতিহাস, সাহিত্য" নামের প্রবন্ধে বুদ্ধদেব দেখিয়েছেন, ইনফরমেশন-সর্বস্ব আজকের এই জমানায় সাহিত্যের মধ্যেও পাঠক "ইনফরমেশন" খুঁজে চলেছেন। "সংবাদ" খুঁজে চলেছেন। "অমুক রচনাটি আজও প্রাসঙ্গিক"— নিজস্ব দেশকালের সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে চলেছেন। অসামান্য এই প্রবন্ধটির একদম শেষদিকে চোখে পড়লো সুগভীর একটি বাক্য : "ঠিক ততটুকুই আমরা উচ্চারণের অধিকারী, যতটুকু আমাদের উপলব্ধি, আর অধিকার অতিক্রম করবার প্রলোভন ত্যাগ করতে করতেই উপলব্ধির পরিধি বাড়ে।"

বইয়ের অন্তিম প্রবন্ধ "শিল্পীর স্বাধীনতা"-তে বুদ্ধদেব বসু একটি চমৎকার প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন আমাদের দিকে। কোনও আদর্শ কিংবা মতবাদের ছাতার তলায় না এসেও, লাল নীল গেরুয়া কিংবা সবুজ রঙের পতাকা দিয়ে নিজের সত্তাকে মুড়ে না-ফেলেও, একজন শিল্পী নিজেকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করতে পারেন? সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ! — সকল পপুলার এবং ফেমাস রং ত্যাগ করে আমার যেটা রং, সেই রঙে নিজেকে রাঙাও। সংস্কৃত শ্লোকটা পড়ে প্রথমে মনে হয়, এই "আমি"টা হলেন ঈশ্বর। ঈশ্বর আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁকে অনুসরণ করতে। ভুল কথা! এই আমিটা তো আসলে আমি নিজেই। আমার পতাকার রং হবে আমার নিজের পছন্দের। সবচেয়ে ভালো হয়, এইসব পতাকা-ফতাকার ঝামেলাই না থাকলে!




.
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews193 followers
November 25, 2022
বইটি বেশ পুরনো। সিগনেট প্রেস প্রকাশিত। জানিনা এখন আর কপি পাওয়া যায় কিনা। খুঁজেছিলাম, পাইনি, তাই পিডিএফ ই ভরসা।
বুদ্ধদেব বসু একজন সব্যসাচী লেখক বলেই পরিচিত৷ তবে তাঁর নানা ধরনের লেখার মধ্যে আমার ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে প্রিয় ধরন-প্রবন্ধ। আর সেই ভালো লাগার শুরু কালের পুতুল দিয়ে।
আহমদ শরীফের মতে, একটা সার্থক প্রবন্ধ আলোচনাতে অন্তত দুটি বিষয় থাকবে। সমস্যা এবং তার সমাধান। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর প্রবন্ধ সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি এটা বলেছিলেন যে তাঁর প্রবন্ধ সুপাঠ্য হলেও সেখানে নাকি সমাধান থাকে না৷
রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক প্রবন্ধের ক্ষেত্রে মন্তব্যটা খাটলেও শিল্প-সাহিত্য বিষয়ক আলোচনায় সেটা বোধহয় সবটুকু খাটে না।
এই বইটি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে লেখক আলোচনা করেছেন, মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাহিত্য, রামায়ণ এবং বাংলা শিশুসাহিত্য নিয়ে। মাইকেল এর প্রবন্ধটা আসলে খুবই সাহসী। বাংলা কাব্যের বা সাহিত্যেরই অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মাইকেলকে নিয়ে এমন চাঁছাছোলা মন্তব্য করার জন্য, অবশ্যই যুক্তিপূর্ণভাবে, যে সাহসের এবং প্রজ্ঞার প্রয়োজন তা বুদ্ধদেবের ছিল। তিনি তাঁর দৃষ্টিকোণ থেকে মেঘনাদবধকাব্য এবং নাটক প্রহসনগুলোর মৌলিকতা, ভাষার ব্যবহার, সেগুলো কালজয়ী হওয়ার যোগ্য বা পরবর্তী সাহিত্যের পথিকৃৎ কিনা সেইসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তবে এই ভাগে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে শিশুসাহিত্য নিয়ে আলোচনাটুকু। প্রাণবন্ত এ প্রবন্ধটিতে সুকুমার রায়, লীলা মজুমদার এবং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল্যায়ন ভালো লেগেছে।
এরপরের ভাগের সিংহভাগ অংশ জুড়েই রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। আর প্রথম প্রবন্ধটি ছন্দ নিয়ে। কবিতা যারা চর্চা করেন, তাদের জন্য বেশ শিক্ষণীয় প্রবন্ধটি। বাকি দুটো প্রবন্ধ রবীন্দ্র সাহিত্য আলোচনা নিয়ে।
আর শেষভাগে রয়েছে সাংবাদিকতা এবং শিল্পীর স্বাধীনতা নিয়ে দুটি নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ। তন্মধ্যে শিল্পীর স্বাধীনতা প্রবন্ধটি ভালো লেগেছে খুব।
বুদ্ধদেব বসুর প্রবন্ধ পুনরায় আমার হৃদয় আলোড়িত করেছে। আবারও কিছু নতুন ভাবনার খোরাক জুগিয়েছে। ভাবতে শিখিয়েছে খুব চিরাচরিত বা সনাতন বলে ধরে নেয়া কোনকিছুকে আবার একটু অন্য চোখে দেখতে। অন্তত চেষ্টা করতে।
সাহিত্যচর্চা পাঠ অভিজ্ঞতা বেশ মনোহর-এটুকু বলাই যায়।
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
542 reviews
April 23, 2025
ঔপন্যাসিক কিংবা কবি, এই পরিচয়ের চেয়ে বুদ্ধদেব বসুর প্রাবন্ধিক দিকটাই আমার অধিক প্রিয়। শখের কবি ছাড়া, যারা মন দিয়ে কবিতা লেখেন, তারা তখন গদ্য লিখতে যান তখন সেই গদ্যে কাব্যময়তার ছোঁয়া বেশি থাকে। বুদ্ধদেব তাদের চেয়ে আলাদা। তিনি সেই অল্প কবিদের একজন, যাদের গদ্যকে কেবল এবং কেবলমাত্র গদ্য বলা যায়।

বাংলা ভাষার উপর তার জোর দখল মুগ্ধ করতে পারে বারে বারে। প্রবন্ধের ভাষাকে জটিল করে তোলেন না। বেশি প্যাঁচান না কোনো কথাকে। নিজের সৌন্দর্যবোধটাকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি পারদর্শী।

মোট আটটি রচনা আছে এই বইয়ে। বাংলা ছন্দ-নামে যে দীর্ঘ প্রবন্ধটি আছে সেটি তেমন আকর্ষণীয় লাগেনি এর বিষয়বস্তুর কারণে। বাকি লেখাগুলো উপভোগ্য। এর মধ্যে প্রথম দুইটি প্রবন্ধ, বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মতো।

এই বইয়ের প্রথম প্রবন্ধটি রামায়ণকে কেন্দ্র করে। যেখানে, প্রশ্ন তুলেছেন রামের উপর। যিনি বিষ্ণুর অবতার, যিনি মর্যাদা পুরুষোত্তম, সেই রাম-এর মনুষ্যত্বের দিকটাই তুলে এনেছেন। রামের চরিত্রের বিশেষ দিক, তাঁর ঐশ্বরিক উদাসীনতাকে, এমন রূপে দেখিয়েছেন বাল্মিকী, যা বুদ্ধদেবের কাছে খাটো করে তুলেছে রামের সীতাকে ত্যাগ কিংবা বালি-বধ।

দ্বিতীয় প্রবন্ধটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, এবং কবির মেঘনাদবদকাব্য-কে নিয়ে। মাইকেলের কবিত্ব-শক্তিকে, তার প্রকাশকে, ব্যর্থতাকে তুলে এনেছেন। এই ধরনের লেখার ক্ষেত্রে, যাকে নিয়ে লেখা হচ্ছে তার প্রতি যিনি লেখক—তার অনেকসময় রাগ বা বিদ্বেষ ইত্যাদি থাকার সম্ভাবনা থাকে। এই লেখাটি পড়তে গিয়ে এমন মনে হয়নি। বরং, শেষাংশ আমাদের দুঃখাতুর করে, যেখানে বুদ্ধদেব বসু লিখেছেন— তাঁকে মনে হয় এমন কোনো কবি, নিজের শক্তির ব্যবহার যিনি জানেন না, নিজের উদ্দেশ্যকে নিজেই পরাস্ত করেন, যাঁকে আমরা চড়া গলায় প্রশংসা করি, আর তাতেই আমাদের দায়িত্ব ফুরোয় বলে যারজন্য আমাদের দুঃখ হয়।
Profile Image for Saiful Sourav.
103 reviews72 followers
July 10, 2019
বুদ্ধদেব বসুর সাহিত্য সমালোচনায় ৪০' এর প্রথম দিককার আধুনিকতার ছাপ আছে । সাহিত্যচর্চায় ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তকে প্রকৃত নয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন । তার মতে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কৌষল ছিলো কিন্তু কবিত্ব নয় । সত্যেন্দ্রনাথ তৎকালিন জোঁড়াসাকোর রবীন্দ্র আসরে যাতায়ত করতেন । এ বইতেই বুদ্ধদেব বসু মাইকেল মধুসূধন দত্তের বিভ্রান্তি ও মেধার অপচয়ের কথা উল্লেখ করেন । এছাড়া রবীন্দ্রযুগের কেন্দ্রিকতা, কল্লোল যুগের বিনির্মাণের কথাও আসে ।
বুদ্ধদেব বসু সাহিত্য রচনা, অনুবাদ সাহিত্য করলেও সমালোচনাই বেশি উল্লেখযোগ্য ।
Displaying 1 - 4 of 4 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.