Jump to ratings and reviews
Rate this book

স্ট্রাইকার

Rate this book

64 pages, Hardcover

First published July 1, 1973

17 people are currently reading
283 people want to read

About the author

Moti Nandi

85 books67 followers
Moti Nandi was a sports journalist and worked as a sports editor in Anandabazar Patrika. He was awarded the Lifetime Achievement award (2008) at a glittering ceremony to mark the grand finale of the maiden edition of the Excellence in Journalism Awards.

In his novels, he is noted for his depiction of sporting events and many of his protagonists are sports-persons. His first short story was published in Desh weekly on 1957. His story for Pujabarshiki was in Parichoy Magazine on 1985.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
154 (43%)
4 stars
151 (43%)
3 stars
39 (11%)
2 stars
6 (1%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 60 reviews
Profile Image for Israt Zaman Disha.
194 reviews622 followers
January 25, 2019
আমার মাথায় মাঝে মাঝে কিছু অদ্ভুত চিন্তা আসে। যেগুলার বদৌলতে আমি ভালো কিছু পেয়ে যাই মাঝে মাঝে। এই বইটা পড়াও সেইরকম একটা চিন্তার ফসল। :P
বইটা যেহেতু একজন ফুটবলারকে কেন্দ্র করে লেখা তাই প্রথম মনে চিন্তা আসে হয়ত বুঝব না, হয়ত ভালো লাগবে না। কিন্তু পড়ার পর অনুভূতি অসাধারণ। অনেকদিন পর এতখানি উত্তেজনা নিয়ে বই শেষ করেছি। কোন বই পড়ে আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে।
বইটা ভালো লাগবে সবার। শিশু, কিশোর, বুড়া থুড়া সবার। তবে ফুটবলভক্তদের হয়ত একটু বেশি ভালো লাগবে।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
April 29, 2024
অডিওবুক শুনলাম না, চোখের সামনে যেন মুভি চলছিল৷ অসাধারণ লেখনী৷
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
August 22, 2021
একেবারে দারুণ! আমার পড়া মতি নন্দীর তিনটে বইয়ের মধ্যে এটা বেস্ট। লেখকের স্পোর্টস রিপোর্টিং এর অভিজ্ঞতা আর ভাষার ওপর দক্ষতা বইয়ের প্রতিটি অ্যাকশান সিনকে একদম চোখের সামনে জীবন্ত করে তুলেছে৷ সেইসাথে উঠে এসেছে দরিদ্র ঘরের একজন সংগ্রামী ছেলের স্ট্রাইকার হয়ে ওঠার পরিশ্রমের গল্প। গল্প পড়তে পড়তে আমার মনে হচ্ছিলো আমি যেন প্রসূনের পাশের ঘরটায় থাকি। স্পোর্টস বই আমার খুব একটা পড়া হয়ে ওঠেনি অতীতে। ভবিষ্যতে হয়তো হবে, তবে 'স্ট্রাইকার' এর কথা আমার মানসপটে আঁকা থাকবে দীর্ঘদিন।
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
August 11, 2021
মতি নন্দীর আরেকটা ছোট্ট কিন্তু দুর্দান্ত বই। স্পোর্টস ফিকশন হলেও দারুণভাবে সত্তুর দশকের কলকাতার নিম্নবিত্ত এক তরুণের গল্প তুলে ধরেছেন। দেখিয়েছেন তার উত্থান। ফলে অনেকটা সামাজিক জনরার কাতারেও ফেলা যায় বইটাকে। স্টপারের মত এই বইয়েও ফুটবল ম্যাচের বিবরণ বাস্তবিক লেগেছে, অতিমানবীয় তেমন কিছু ছিল না। লেখক স্পোর্টস জার্নালিস্ট বলেই হয়ত এমনটা সম্ভব হয়েছে। আর মতি নন্দীর গল্প বলার ধরনটাও একেবারে শিল্পের পর্যায়ে।
Profile Image for Akash.
446 reviews149 followers
August 11, 2024
প্রথম কোনো স্পোর্টস ফিকশন পড়ে মুগ্ধ হলাম। শুধু ফুটবলে কেন! প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রসূনদের এমনিভাবে সংগ্রাম করতে হয়। নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে তাদের হতে হয় স্বার্থপর, নিষ্ঠুর, আর নিরাবেগী। জোর করে আদায় করে নিতে হয় ন্যায্য অধিকারটুকু।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews84 followers
April 8, 2021
মতি নন্দী ছিলেন খ্যাতনামা এক ক্রীড়া সাংবাদিক। ফলে পেশাগত কারণেই সব ধরনের খেলা তিনি দেখেছেন কাছ থেকে। আর এই পর্যবেক্ষণকেই তিনি কাজে লাগিয়েছেন তার কিশোর উপন্যাসগুলোতে। ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার – কোনো খেলাকেই তিনি বাদ দেন নি তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু থেকে। খেলার হারজিৎ আর খেলা কেন্দ্রিক রাজনীতির পাশাপাশি স্বপ্ন, আদর্শ, জীবনবোধ আর সংগ্রামের নানা দিক উঠে আসে তাঁর উপন্যাসগুলোতে।

অনিল ভট্টাচার্য একসময় খেলতেন যুগের যাত্রীর হয়ে। ক্লাবকে অনেককিছু দিলেও সবচেয়ে প্রয়োজনের দিনে – কোনো এক কাপের ফাইনালে – তার ভুলে দল শিরোপা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ফুটবলকেই ছাড়তে হয় তার। আর এই ঘটনা তার মনে ফুটবল সম্পর্কে এক তীব্র বিতৃষ্ণার জন্ম দেয়। তিনি তো খেলা ছাড়লেন কিন্তু তার সন্তান প্রসূনকে আবার পাকড়াও করেছে ফুটবল! অভাবের সংসারে বেঁচে থাকার সংগ্রামের পাশাপাশি তাই প্রসূন চালিয়ে যায় নিয়মিত অনুশীলন। স্বপ্ন তার দুটো। একদিন পুরো ভারত তার জন্য পাগল হবে আর দ্বিতীয়ত তার বাবার অপমানের বদলা নেবে সে। কিন্তু কাজটা যে বড়ই কঠিন সেটা টের পেতে সময় লাগল না তার।

মাত্র ৬৩ পৃষ্ঠার ছোট্ট একটা উপন্যাস। অথচ লেখক দারুণভাবে ফুটবলের সাথে জীবনকে জুড়তে পেরেছেন এই সীমার মধ্যেই। এই ছোট্ট আয়তনের ভেতরেই লেখক তুলে ধরেছেন এক ফুটবলারের ফুটবলার হয়ে ওঠার সংগ্রামকে। খেলোয়াড়দের পারিবারিক সমস্যা, বন্ধুত্ব, অনুশীলন, ক্লাব ফুটবলের রাজনীতি, দল বাছাইয়ে স্বজনপ্রীতি, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনাবলী, জেতার জন্য ক্লাবগুলোর সব রকমের পন্থার অবলম্বন, টাকা বনাম আদর্শের দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বিষয়গুলো লেখক নিজ চোখে দেখেছেন বলেই প্রসূনকে এসবের মধ্য দিয়ে তিনি যখন টেনে নিয়ে গিয়েছেন তখন তা ভীষণ বাস্তব মনে হয়েছে। সাথে অনিলের ঘটনাটা যোগ করায় বইটা আরেকটু আকর্ষণীয় হয়েছে। লেখকের বর্ণনাভঙ্গি দারুণ, ফলে প্রসুণের বল নিয়ে দৌঁড়ানো বা ইডেন গার্ডেনে হাজারো দর্শকের কলরব যেন দেখতে বা শুনতে পারছিলাম! বেশ কয়েক জায়গায় লেখক আমাকে ইমোশনাল করে ফেলেছেন, দু-একবার তো চোখেও পানি এসে গিয়েছে!

যে আফসোসটা রয়ে গিয়েছে তা হলো লেখক বইটাকে আরেকটু বড় করতে পারতেন। আরেকটু সময় নিয়ে প্রসূনের সংগ্রাম দেখানো গেলে ওর সাথে নিজেকে কানেক্ট করতে সুবিধা হতো। আর প্লটটা লেখকের ‘ স্টপার' বইয়ের সাথে বেশ খানিকটা মিলে গিয়েছে। শেষটাও বেশি গৎবাঁধা আর প্রেডিক্টেবল হয়ে গিয়েছে।

মোটের উপর, এক বসায় পড়ে ফেলার মতো ঝরঝরে একটা বই।
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,762 reviews357 followers
July 26, 2025
১৯৯৭ সালের পয়লা বৈশাখ। আমি ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র। নতুন জামার গন্ধ, গাওয়া ঘিয়ের লুচি, মাংস, সন্দেশ, আর তারই মাঝে বাবার হাতে ধরা একটা পাতলা বই — মতি নন্দীর স্ট্রাইকার। আমি তখন ফুটবল পাগল, মাঠ মানেই যুদ্ধ, গোল মানেই স্বপ্নপূরণ। কিন্তু সেদিন বাবার চোখে ছিল অন্য কিছু। তিনি জানতেন, আমি মাঠে যা খুঁজে বেড়াই, তার কিছু উত্তর হয়তো এই বইতেও আছে।

প্রথমবার স্ট্রাইকার পড়া ছিল এক ধাক্কা — সাহিত্যে ফুটবল! শিবাজীর মধ্যে আমি নিজের অনেকটাও খুঁজে পেয়েছিলাম। সেই রাগ, সেই হার না মানা মনোভাব, আবার নিজের অজান্তেই সেই দ্বিধা, অনিশ্চয়তা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বইটার ভিতরের স্তরগুলো আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করল। ২০০২-এ যখন আবার পড়লাম, বুঝলাম—স্ট্রাইকার স্রেফ এক অখ্যাত বস্তির জনৈক প্রতিভাবান ছেলেকে নিয়ে লেখা কাহিনি নয়, এটা আমাদের মধ্যবিত্ত চেতনার, আমাদের মানসিক টানাপোড়েনের এক নিখুঁত প্রতিচ্ছবি।

সেদিন বুঝেছিলাম মতি বাবুর greatness !!

মতি নন্দী যেভাবে খেলার জগতকে ব্যবহার করেছেন সামাজিক বিভাজন, স্বপ্নভঙ্গ আর আত্মপরিচয়ের গল্প বলার জন্য, তা অসাধারণ। ক্লাব রাজনীতি, কোচের অন্ধ পক্ষপাত, আর খেলোয়াড়ের মানসিক যুদ্ধ — সবকিছু এতটাই জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই বইয়ে যে মনে হয়, এ কেবল উপন্যাস নয় — একটা জীবন্ত মাঠ, যার ঘাসে ঘামের গন্ধ লেগে আছে।

এখন এই পরিণত বয়সে যখন বইটা তাক থেকে নামাই, মর্মে অনুভব করি বিওর্ন বর্গের সেই উক্তি : "Sport is a great leveller that can bring people together in a way that nothing else can”

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews352 followers
April 16, 2025
Bangla sports fiction at it’s best! 😍

স্কুলের মাঠে বল নিয়ে ছুটতে শুরু করার পর থেকে আমার মতো ঘরকুনে গোবেচারা ছেলেরও রক্তে ফুটবল ঢুকে গেছিল, গা-হাত-পা নাড়ানোর উসিলা বলতে এই এক ফুটবল। আমার বিশ্বাস অধিকাংশ বাঙালী ছেলের ক্ষেত্রেই এটা সত্যি। খেলা দেখার বেলায়ও ফুটবল সর্বাগ্রে, আর কনসোলে খেলার বেলায়ও তাই। এই যে সবার মাথা খাওয়া ফুটবল, এবং পাড়ার মাঠ থেকে জাতীয় পর্যায়ের খেলা অব্দি যাতে মানুষের বুঁদ হয়ে থাকা, একে নিয়ে বুঝি গল্প লেখা হবে না! উঁহু, তা হবার নয়, মতি নন্দী'র স্টপার, স্ট্রাইকার অবশ্যই মাঠ ফাঁকা রাখেনি। এছাড়াও অজস্র গল্প পাওয়া যাবে খুঁজলে, অন্তত আমার মনে পড়ে, কৈশোরে পড়া গল্প-উপন্যাসগুলোয় খেলার একটা দৃশ্য কমন থাকতোই।

প্রসূন, স্ট্রাইকার। খেলা-অন্তপ্রাণ। স্থানীয় ক্লাবে খেলার সুযোগ পাবার চেষ্টায় আছে, স্বপ্ন, একদিন ব্রাজিলের পেলে'র ক্লাব সান্তোসে খেলবে। নিজের দক্ষতা আর উচ্চাকাঙ্ক্ষা দিয়ে ক্রমে উঠে আসার গল্প এই উপন্যাস, এবং, চাপিয়ে দেওয়া ভুলের সাথে আপোষ না করা'র।

খেলা, যাকে লাইভ দেখতে হয়, রিয়েলটাইমে (অর্থাৎ যে গতিতে ঘটনা ঘটেছে সে গতিতেই দেখা)। সিনেমার মতো, কোনো মুহূর্তকে স্কিপ করে কোনো মুহূর্তকে প্রলম্বিত করে দেখানো সহজ নয়। তবুও, খেলার ম্যাচ কেমন করে সিনেমার মতো উপস্থাপন করা যায়, পর্দায় তার সেরা উদারহরণ হতে পারে ২০২২ বিশ্বকাপ নিয়ে করা নেটফ্লিক্সের Captains of the World, অথবা ফিকশনের মাঝে Ted Lasso কম উপাদেয় নয়। মতি নন্দী, ১৯৭৩ সনে প্রকাশিত তাঁর এই উপন্যাসে সে কাজ বেশ দক্ষতার সাথে করে দেখিয়েছেন। স্ট্রাইকার নিয়ে সিনেমা-ও হয়েছিল ১৯৭৮ সনে, দেখার ইচ্ছা রইলো।
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
May 24, 2020
প্রথমবারের মতো মতি নন্দীর লেখা পড়লাম। ভদ্রলোকের লেখনী চমৎকার। খেলার মাঠের উত্তেজনা নিজের লেখনীতে ধারণ করার মতো মুন্সিয়ানা তিনি দেখিয়েছেন। শেষ করার পর এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে গেল মন।
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books328 followers
January 28, 2024
দারুণ বই। ছোট্ট কিন্তু চমৎকার। আবেগ এবং প্রত্যয়ের চমৎকার মিশেল। আর লেখনী সরল অথচ তীক্ষ্ণ। ফুটবল ভালো বাসুন আর না-ই বাসুন, এই বই ভালবাসা আদায় করে নেবে।
Profile Image for Imran.
66 reviews18 followers
February 3, 2025
উত্থান-পতন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা-প্রতিহিংসা, রোমাঞ্চ-উন্মাদনার সংমিশ্রণে দারুণ এক উপভোগ্য গল্প। ফুটবলভক্ত মাত্রই উপলব্ধি করতে পারবেন।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,957 followers
January 3, 2019
বছরের প্রথম বইটা পড়ে ফেললাম। শুভসূচনা ঘটলো বলা যায়। খেলাধূলা, বিশেষ করে ফুটবলভক্তদের ভালো লাগবে ^_^ এতটুকু ক্যানভাসে এতসব অনুভূতির মিশেল ঘটাতে মুন্সিয়ানা থাকতেই হবে। এক সময় বাংলার ফুটবল প্রেম কতটা তীব্র ছিল সেটারই নিদর্শন স্ট্রাইকার।
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
522 reviews190 followers
June 14, 2023
কেউ একজন আমাকে মতি নন্দীর বই পড়তে বলেছিলো। তাকে ধন্যবাদ।
Profile Image for Koushik Ahammed.
150 reviews12 followers
June 17, 2020
বইয়ের বিষয়বস্তু হিসবে শুধু ফুটবল ই যথেষ্ট ভালো লাগার জন্য। এই বইও ফুটবল কে কেন্দ্র করেই লেখা। স্ট্রাইকার নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে ফরোয়ার্ডের কোন প্লেয়ার কি নিয়ে লেখা বই। ফুটবল যে কখনো কখনো শুধু ফুটবল থাকে না জীবনবোধ হয়ে দেখা দেয়, জীবনে চলার প্রেরণা জোগায় এই গল্পে তেমনই দেখা যায়।

সেই সাথে আছে পিতৃঋণ শোধের মতো সেন্টিমেন্টাল বিষয়। আছে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের গল্প। আছে নিজেকে প্রমাণের প্রশ্ন। আছে আদর্শ নিয়ে চলার বা পিছুটান নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়।

সব মিলয়ে এই বই মনে আনন্দ দেয়।
Profile Image for Mrinmoy Bhattacharya.
225 reviews35 followers
January 24, 2024
অসাধারণ ।

স্পোর্টস বিষয়ক লেখা পড়ার আগে আমার মনে একটা সন্দেহ ছিল । ভিজুয়াল মিডিয়ার সেই 'অ্যাড্রিনালিন রাশ্' কি আদৌ বইয়ের পাতায় অনুভব করা সম্ভব ?? মতি নন্দী তাঁর অনবদ্য লেখনী দিয়ে আমার সেই অহেতুক সন্দেহ ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন । পুরো কাহিনী যেন চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পেলাম । নিজে ফুটবল-প্রেমী বলেই বোধহয় আরও বেশি উপভোগ করতে পারলাম ।

সত্যি বলতে আমার মনে হয়, স্পোর্টস্ বিষয়ক লেখালেখিতে মতি নন্দীর সমকক্ষ কেউ নেই ।
Profile Image for Saumen.
256 reviews
January 20, 2024
জানেন, নরমালি আমি অডিওবুক শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি। প্রতিদিন, প্রতিবার। আবার নেক্সট দিন রিপ্লে করতে হয়৷ কিন্তু এই বইটা আর গপ্পো মীরের ঠেক আমাকে ঘুমোতেই দিল না!যেমন বর্ণনা, তেমনি বিজিএম। পুরো ১০/১০। জিও মীরদা!

মতি নন্দীর আরো ৩-৪ টে বই পড়েছি। এবইটাও আগেই পড়া ছিল। পড়ায় অত বেশি ক্লিক করেনি, যতটা আজ করেছে। আমার সবচেয়ে পছন্দ ছিল স্টপার। আজ স্ট্রাইকার তাকে ছাড়িয়ে গেল। টিপিক্যাল লেখা নন্দীর, কিন্তু এই বইটার জান পুরো ধুকধুক করে গোটা মাঝরাতের আমিকে কাঁপিয়ে দিয়ে গেল।

বুকে নতুন সাহস পেলাম, নতুন বল পেলাম। প্রসূনের গল্পকে থ্রি ইডিয়েটস এর ভাষায়ও বলা যায়, সাকসেস নেহি, এক্সিলেন্স, এক্সিলেন্স কি পিছে ভাগো। সাকসেস আপনি আপনি ঝাক মারকে আ যায়েগা। 

স্কিল, স্কিল বাড়াও। বড় হতে হবে, শুধু ছাপ মেরে নয়, যেখানে নিজেকে ইমপ্রুভ করার স্কোপ আছে, সেখানে যাও, আর জানপ্রাণ লড়িয়ে দাও। কতটা ত্যাগ করলে, সেটা দু-একজন জানবে, নীলিমার মত, মায়ের মত। কিন্তু আর সবাই? আর সবাই তোমার পারফরম্যান্স চাইবে, হাঁ করে দাড়িঁয়ে থাকবে তোমাকে বেধাঁর জন্য, আর নয়তো তোমার গোলে তোমাকে কাঁধে তুলে নেবার জন্য। কিন্তু তোমার চোখের জল কেউ দেখবে না, পেটের খিদে,কেউ বুঝবে না।

প্রসুন, তোমার সামনে দুর্ভেদ্য ডিফেন্স, স্ট্রা��কার! ভাঙতে পারবে না ব্যূহ? এসো, মাঠে নামো, প্র‍্যাক্টিস করো!

ও হ্যাঁ, আনোয়ার আর নিমাই। এমন বন্ধুভাগ্য কজনের হয়? থ্রি মাস্কেটিয়ার্স একদম,আসলেই!

হ্যাটস অফ..মতি নন্দী!! ডাবল হ্যাটস অফ গপ্পো মীরের ঠেক!!!!
Profile Image for Shadin Pranto.
1,470 reviews560 followers
July 3, 2024
৩.৫/৫

দক্ষিণ এশিয়ায় ফুটবল অসম্ভব জনপ্রিয়। সোনালি যুগে ক্রিকেটের চাইতে বেশি উন্মাদনা দেখা যেত ফুটবলকে নিয়ে। যার রেশ বুঝা যায় ফুটবল বিশ্বকাপের মৌ��ুমে। যে ভূখণ্ডে ক্রীড়া নিয়ে এত মাতামাতি সেখানে কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ক্রীড়াসাহিত্যের ধারা সেভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক মতি নন্দীর লেখা উপন্যাসগুলো বাকি পাঠকপ্রিয় ঔপন্যাসিকদের মতো আলোচিত হয়নি। ইদানীং সেই ধারা বদলে যাচ্ছে। অনেক পাঠকের কাছেই পৌঁছে যাচ্ছে মতি নন্দীর লেখা অসাধারণ উপন্যাসগুলো। সেইসব অনবদ্য লেখার একটি 'স্ট্রাইকার'। এক শ পাতার কম এই উপন্যাসে সংগ্রাম ও স্বপ্নপূরণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা চমৎকারভাবে মিশে আছে।

মতি নন্দীর লেখাগুলোর একটা বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো, খেলা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকলেও চলবে। ঔপন্যাসিকের লেখার গুণে তরতরিয়ে পড়তে পারবেন। উপভোগ করতে পারবেন।

'বুড়ো ঘোড়া', 'স্টপার' বেশি ভালো লেগেছে। প্রতিতুলনায় 'স্ট্রাইকার' একটু নিষ্প্রভ মনে হলো। যদিও বাকি দুইটা না পড়লে 'স্ট্রাইকার'কে দুর্দান্ত মনে হতো।
Profile Image for Tusar Abdullah  Rezbi.
Author 11 books55 followers
March 1, 2024
লেখার ধার কতটা তুখড় হলে এমন একটা ফুটবল নিয়ে গল্প লেখা যায়। গল্পের মাঝে শ্বাসরুদ্ধকর একটা ম্যাচ এভাবে লিখে ফুটিয়ে তোলা মুখের কথা নয়৷ স্পোর্টস রিপোর্টিং এ ছিলেন বলেই হয়তো এসব সম্ভব হয়েছে। লেখকের একটা লেখা পড়েই তার ফ্যান বনে গেলাম। আহা! কী দারুণ একটা উপভোগ্য গল্প। অমায়িক।

স্ট্রাইকার শরীরে শিহরণ জাগানোর মতোই একটাই গল্প।
Profile Image for Shom Biswas.
Author 1 book49 followers
October 19, 2020
I wrote a note on finding out about Mati Nandi's passing in 2010. Going through my old blogs, I re-discovered it.
Here you go, from 2010.
......................................................

I had visited Kolkata for a short while a few days back. And I came to know through magazines and newspapers that Mati Nandi has passed away in January this year.

Mati Nandi, for the lack of a better expression, was the person who gave me sports. Let me speak to you about Mati Nandi today. Let me speak to you today, blogging friends, about sports.

Our family is non-English-speaking, and my sister and I are the first generation in our family fluent in the Queen’s language. Anandabazar Patrika was the staple newspaper of our family, and The Statesman, the English language daily that used to be standard fare at most (supposedly) intellectual Bengali homes, was only a weekend visitor at ours.

Along with being a reputed novelist, Nandi was a sports journalist with Anandabazar Patrika. Well, not a very regular journalist when I started to read the newspaper, his reputation as a novelist was already big enough by then for him to tend to only cover the major sporting events. Rupak Saha, Gautam Bhattacharya and a few others did the regular sports coverage. The standard of sports coverage was high, and the analysis was far better than what you would find today in most English-language national dailies. And reading the Anandabazar back pages (while Baba or Ma would be reading the front page), remains a cherished memory.

And then there was Anandamela, the sleek, stylish magazine for kids that Anandabazar used to come out with every fortnight. In the days of yore, Anandamela used to come up with the Pujabarshiki (Durgapuja special) edition, and Mati Nandi’s fictional sports stories were a major attraction for me. Nandi was a serious novelist, and his non-sports-based novels and novellas were (as I was to know later) also of a considerably high quality. However, it was his writing on sports, mainly for kids, that I remember him for, and what this post is about.

I remember vividly the first novel of his that I had read. It was one called ‘Stopper’, the story of an ageing central defender, Kamal Guha. Upright, honest and dignified, Kamal Guha had been humiliated and hounded out by his club a few years back, notwithstanding his great record as part of that club. Guha believes that he has that one big match still left in him, where he can prove his detractors (and there are many of them) wrong. His life is built around football, his wife had passed away a good few years ago, and he is estranged with his son. And this one match, against his former team playing for a relegation-contender, becomes his raison d’etre, a metaphor of his life and all that he stands for ….

The comparatively unheralded ‘Aparajito Anando’ (Anando the undefeated) is in my opinion his masterpiece. Teenager Anando is a promising quick bowler and tennis enthusiast, whose life as a sportsman is cut short when he is detected with an incurable heart ailment. In his bed, looking over the playing ground next to his house and the various characters that inhabit it, Anando dreams of debuting for India against the mighty West Indies of Sobers, Kallicharan, Holding and Anando’s favourite Andy Roberts. Or of playing in the semi-finals of Wimbledon against the seemingly indestructible Jimmy Connors, with the winner to play Ken Rosewall on his swansong appearance (Anando hopes to beat Connors, and then forfeit the match against Rosewall so that Rosewall can at last win the Wimbledon title that has slipped his grasp thrice previously). And as the rearguard eighth wicket partnership between Gavaskar and Anando reduces the first-innings deficit and takes India to a somewhat respectable second-innings lead; and as Anando fights back against Connors to take the match to the deciding fifth set, we know that neither of the two matches will finish… these two matches are what Anando is living for. If they finish, so would Anando…

Nandi’s heroes and heroines are you-and-I sportspeople, people we know, people we can relate to. Sometimes they are fun, sometimes they are tragic, and sometimes they are triumphant. But Ananta of ‘Jeeban Ananta’ is not defined by his 9-21 against New Zealand in his first test match but rather his friendships with Jeeban and Bhramara; Naran is a winner despite not being able to meet his hero Emile Zatopek; We root for Prasoon Bhattacharya in ‘Striker’, for Nanida in ‘Nanida Not Out’, or for Koni the swimmer (and for Khid’da her coach) not because of their skills as players, but more for their unbending, principled personalities. We love Kalabati not only because she is a fine cricketer and a dedicated journo, but also because of her joie de vivre and compassion for the world around her. Those little victories – Shibaji winning the National boxing event in ‘Shiba’r Firey Asha’, Naran completing the Kolkata marathon, the protagonist being able to sign for the club he wants to in ‘Dol Bodoler Aagey’…. Even in ‘Dwitiyo Innings-er Por’, Raminder Singh coming in to bat while his life is falling to pieces around him, is a triumph as much for him as for Saroj the journalist, who is covering the series.

Most of the protagonists, while skillful, are common everyday people, with everyday chores, everyday worries, and everyday failings. Skills are important tools for Nandi’s heroes and heroines, but what makes them successful is their moral character, their heart, their effort. The immensely talented (but of loose moral fiber) Bhabanishankars of the world are never glorified. And the ones who had strayed, but had then mended their ways, are always allowed a fresh start. In Nandi’s stories, winning is very important, but not at the risk of a compromise on human values. Glorious failure is not an option, but neither is cheating to win. In sports, as in life, Mati Nandi’s heroes celebrate winning the right way. Nandi celebrated life. And truth. And honesty.

Nandi’s stories gave me sports. He made me understand sport from a broader perspective than the next win or loss, and what it stands for. And I am glad that he wrote in my native language.

Let me leave you with these few lines from ‘Striker’, said to the protagonist Prasoon by his mentor Harsho-da, loosely translated.

…. And a man’s challenges come in many shapes and sizes. A tree grows because of its base, its roots. A man’s moral character is his root. If one’s character has disintegrated, he cannot face his demons, he cannot make it.


Profile Image for Samsudduha Rifath.
425 reviews22 followers
April 4, 2024
মনে হচ্ছিলো প্রসূনের গোলটা সচোক্ষে দেখলাম। অসাধারণ একটা স্পোর্টস ফিকশন।
Profile Image for Anika Tabassum .
88 reviews17 followers
August 12, 2025
মনে হলো স্টপারের সলিলের জীবনের আদ্যপ্রান্ত পড়লাম! অনবদ্য!
more than five star!💥
Profile Image for আহনাফ তাহমিদ.
Author 35 books78 followers
January 2, 2018
মতি নন্দীর পড়া প্রথম বই। ভদ্রলোক চমৎকার লিখেছেন! যুগের যাত্রী নামক যে ফুটবল ক্লাব থেকে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়া অনিল ভট্টাচায্যিকে দূর্নাম কুড়িয়ে ফিরে আসতে হয়েছে, ঠিক একই ক্লাবে আবার ফিরে গিয়েছে পুত্র প্রসূন ভট্টাচায্যি। বাবার কপাল থেকে ঘোচাতে হবে গ্লানি, সাংসারিক টানাপোড়েন, পেটের ক্ষুধা, অপমান- সবকিছুকে একসাথে পুঁজি করে প্রসূন ছুটছে গড়ের মাঠে। সাথে রয়েছে বন্ধু নিমাই আর আনোয়ার। পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও বন্ধুত্বটা কিভাবে ষোলআনা টিকিয়ে রাখতে হয়, তাই দেখিয়ে দিয়েছেন মতি নন্দী।
ঘুষের বিনিময়ে নিজেকে বিলিয়ে না দেয়া প্রসূন গাড়িতে তেল ঢেলে দেয় হাসিমুখে। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস! সে গাড়িতে চড়েই স্বপ্নের পানে যাত্রা করছে বন্ধু নিমাই আর আনোয়ার। লজ্জা, দ্বিধায় কেউ কারো সাথে কথা বলে না।
আর আছে নীলিমা। প্রতিনিয়তই যে সাহস যুগিয়ে যায় প্রসূনকে। ক্ষিধের সময় টাকার যোগান দিয়ে, চুটকি চুটকি হাস্যরসের মাধ্যমেও লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রসূনের বরাতে কেবলমাত্র অসহায়ত্বই নেই, একচিলতে সুখও আছে।
আর আছেন হর্ষদা! শিকড় পচে গেলে পুরো গাছটাই যে পচে যায়- তা প্রসূন শিখেছে এনার থেকেই।
যুগের যাত্রীর হয়ে আরো একবার বল পায়ে মাঠে প্রসূন। উপচে পড়া গ্যালারীতে একটাই নাম, প্রসূন!
স্ট্রাইকার পারবে তো হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে?
আমার ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪.৫/৫
Profile Image for Protyasha.
Author 1 book52 followers
June 5, 2019
আহ কী দারুণ! 😎 বেশ একটা কালবৈশাখীর মতো বইটা৷ প্রায় উড়িয়ে নিয়ে গেল বলা যায়৷
Profile Image for Sakib A. Jami.
334 reviews36 followers
June 24, 2025
সন্তান যখন বাবার প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে, তখন বাবার বুক গর্ভে ভরে ওঠে। প্রসূন কি তেমন কেউ হতে পারবে? সে অনেক বছর আগে প্রসূনের বাবাও যুগের যাত্রী দলে ফুটবল খেলতেন। ফুটবল ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। কিন্তু একটা ইনজুরি, আর ফাইনালের মতো বড়ো মঞ্চে আবেগতাড়িত হয়ে একটি ভুল; যার মাশুলে ক্যারিয়ার শেষ করেই দিতে হলো। ওপেন নেট মিস করা প্রসূনের বাবাকে তাই বিশ্বাসঘাতক ট্যাগ পেতে হলো। বলা হলো, ঘুষ খেয়ে ইচ্ছা করে ম্যাচ হেরেছে প্রসূনের বাবা। এরপর থেকে ফুটবলের নাম শুনতে পারেন না তিনি। যেই খেলা তার জীবনকে ধ্বংস করেছে, ছেলেও সে পথে আগাবে; বাবা হিসেবে চান না তিনি।

কিন্তু বাবার রক্ত বয়ে চলেছে প্রসূনের শিরা, ধমনী জুড়ে। তাই তো খেলাটাই তার ধ্যান জ্ঞান। পড়াশোনা পর্যন্ত তার হলো না। বাসায় অভাব অনটন লেগেই আছে। যে ফুটবল নিয়ে বাবার স্বপ্ন ছিল, তা ভেস্তে যাওয়ার পর আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। আধ পেটে খেয়ে থাকতে হয়। এমন অবস্থায় প্রসূনের একমাত্র লক্ষ্য ফুটবল খেলা। ফুটবল খেলে না-কি প্রচুর টাকা পাওয়া যায়।

তবে ছিন্নমূল অবস্থান থেকে উপরে ওঠার ধাপ খুব একটা সহজ নয়। ভাগ্যের জোরে যে দলে প্রসূন, নিমাই আর আনোয়ার খেলার সুযোগ পেয়েছে; তাদের লক্ষ্যটা কেবল টিকে থাকা। কোনমতে বেঁচে থাকা। এই দলে খেলে কি আর খেলা শেখা যায়? তাই এক যাত্রা শুরু হয় প্রসূনের। হয়তো কিছু সিদ্ধান্ত ভুল, কিছু আবার ঠিক। লড়াইটা যে নিজের সাথে নিজের। নিজের ক্ষমতার উপর ভরসা করে চ্যালেঞ্জ নিতে না পারলে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় না। লক্ষ্য বহুদূর। ওই যে দূরে গোলপোস্ট দাঁড়িয়ে আছে, বাঁধা দেওয়ার জন্য স্টপার আছে, গোলকিপার আছে; সব বাঁধা পেরিয়ে আলতো ছোঁয়ায় বা পায়ের কারিকুরিতে বলটা যখন জালের ছোঁয়া পেয়ে, পুরো স্টেডিয়াম ভেঙে পড়ে। জীবনটাও এমনই। বাঁধা আসবে, থামিয়ে দেওয়ার জন্য কড়া ট্যাকেল ছুটে আসবে দুই পা লক্ষ্য করে; তাকে কাটিয়েই লক্ষ্য ছুঁতে হয়। তখন গ্যালারির মতো করে শুভাকাঙ্ক্ষীর অভাব হয় না সাবাসি দেওয়ার জন্য। কিন্তু ব্যর্থ হলেই? গালির তুবড়ি ছুটে আসে।

আমি আগাগোড়া একজন স্পোর্টস ফ্রিক। খেলার জন্য কত পাগলামি করেছি তার হিসেব নেই। প্রিয় দলের জন্য রাত জেগেছি, বিজয়ে উন্মাদ হয়ে উল্লাস করেছি, পরাজয়ে নীরবে কেঁদেছি। আমার জন্য তাই এমন একটা বই আবেগের, ভালো লাগার। মতি নন্দী পেশাগত জীবনে স্পোর্টস রিপোর্টার ছিলেন। একজন রিপোর্টার তার লেখার কারিকুরিতে যেভাবে পাঠককে মুগ্ধ করেন, একজন খেলোয়াড় তার পায়ের জাদুতে সেভাবেই মুগ্ধ করেন দর্শকদের। মতি নন্দীর লেখা আমার দারুন লেগেছে। বিশেষ করে খেলার বর্ণনায় যে দৃশ্য তিনি মঞ্চস্থ করেছেন, এক কথায় অসাধারণ। ফুটবল খেলায় যে পজিশনিং থাকে, প্রতিপক্ষের সাথে যেভাবে ট্যাকটিক্যাল ব্যাটেল হয়, এই বর্ণনাগুলো ভালো লেগেছে। ফুটবল বোঝে এমন প্রতিটি পাঠকই বিষয়গুলো উপভোগ করতে পারবে।

এই উপমহাদেশের দেশগুলো আন্তর্জাতিক ফুটবলে খুব বেশি সুবিধা করতে পারে না। কিন্তু উপমহাদেশের প্রতিটি দেশ যেভাবে ফুটবলের ক্রেজ ধরে রাখে, তা অবাক করার মতোই। এক সময় পশ্চিমবঙ্গের দল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মোহামেডান দলগুলোর খেলা মানেই বাড়তি উত্তেজনা। সমর্থকে সমর্থকে টক্কর। এই নিজের প্রিয় দলকে সমর্থন দিতে গিয়ে হাতাহাতি পর্যায়ে চলে যেত কোনো কোনো মুহূর্ত।

প্রসূনের নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই এই বই। শূন্য থেকে এমন ক্লাবে শুরু করা, যেখানে শেখার কিছু নেই। নিজের দক্ষতা দেখানোরও উপায় নেই। কালেভদ্রে যদিও তা দেখানো যায়, তাতে নিজের উন্নতি সম্ভব না। প্রসূন তাই কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। হতে পারে ভুল। তবুও বড় ক্লাবে খেলার স্বপ্ন দেখে যেকোনো ফুটবলার। একটু স্বার্থপর না হলে যে এগিয়ে যাওয়া যায় না। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স হয়ে ওঠা নিমাই, প্রসূন, আনোয়ারের বন্ধন ছিন্ন হয়। প্রসূন হয় আলাদা।

খেলার জগতে রাজনীতির অভাব নেই। অনেকভাবেই এমন রাজনীতির ছক কষা যায়। প্রসূন যখন উন্নতির প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করছে, প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরানো খেলা খেলছে, তখন তাকে নিয়ে সাবধান হতেই হয়। কেউ আবার এক কাঠি সরেস, নিজের দলের বিপক্ষে যেন ভালো না খেলে তাই টাকা দিয়ে কিনে নিতে চায়। প্রসূন বিক্রি হওয়ার জন্য আসেনি। প্রসূন না থাকলেও কেউ কেউ তো আছে, যে টাকার কাছে নিজের মনুষত্ব বিকিয়ে দেয়। খেলাটা এগারো জনের। একজন বড় মুখ করে বাবার সম্মান রক্ষার্থে জিতবই বললেই জেতা যায় না। তবে খেলা না জিতলেও বাবার প্রতি ছেলের যে তীব্র ভালোবাসা, এর মূল্য অনেক বেশি।

ফুটবল এমন এক খেলা, যাকে একবার বুকের গভীরে জড়িয়ে ধরলে আর ছেড়ে যাওয়া যায় না। হয়তো মনের মধ্যে তীব্র অভিমান ভর করে, কিন্তু ফুটবল মিশে থাকে মানুষের সত্তায়। মতি নন্দীর মারাত্মক সব খেলার বর্ণনায়, আবেগের ফুলঝুরিতে খেলাটাকে নিজস্ব অস্তিত্ব মনে হয়। একজন খেলোয়াড় যখন প্রথম ম্যাচ খেলে, প্রথম গোল করে; তার অনুভূতি এখানে বর্ণিত হয়েছে। রাজনীতির শিকার হয়ে দীর্ঘদিন বসে থাকলে তার মনের মধ্যে কেমন প্রভাব পড়ে সেটাও এখানে উপজীব্য। তখন হুট করে মাঠে নামলেও নার্ভাসনেসে সবকিছু ধোঁয়াশা মনে হয়। দর্শকদের দুয়োধ্বনি সহ্য করার মতো খেলাটাই বা কয়জন খেলতে পারে।

এই বইয়ের যে জিনিসটি ভালো লেগেছে, তিন বন্ধুর সম্পর্ক। চোখের আড়াল হলেই মনের আড়াল নয়। সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা, ছোট ভাইয়ের কাছে বড় ভাই যেন এক নায়ক, আর নীলিমা — যে প্রসূনের হয়তো বন্ধুই। কিংবা বেশি কিছু। ভরসা, বিশ্বাস। তাছাড়া বাবা ও ছেলের নীরব এক বন্ধনের দৃঢ়তা। যেখানে কিছু না বললেও ভালোবাসার কমতি নেই।

যারা ইন ডেপথ গল্প পছন্দ করে, চরিত্রের গভীরতার দিকে বেশি মনোযোগ; এই বই তাদের ভালো লাগবে না। সাদামাটা, খেলার উপরই লেখক তার পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন। কিশোরদের উপযোগী বই। ফুটবল খেলাকে ধারণ করতে বা বুঝতে অথবা অনুভব করতে এই বইটা দারুণ।

অনেক বছর আগে যেখানে এক প্রজন্মের সবকিছুর শেষ হয়ে গিয়েছিল, সকল স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল; আরেক প্রজন্ম এখন সেখানে দাঁড়িয়ে আছে নতুন দিনের আশায়। যে ভুলটা অনেক বছর আগে হয়েছিল, যে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত গোটা জীবন জুড়ে দিতে হয়েছিল, আজ তার দায় মুক্তির দিন। বাবাকে সকল অপবাদ থেকে মুক্তি দিতে পারবে তো প্রসূন? গ্যালারি জুড়ে অসংখ্য দর্শক থাকলেও আজ এক জনের সামনেই নিজেকে প্রমাণ করতে চায়। ওই সবুজ গালিচায় দাঁড়িয়ে গ্যালারিতে তাই সেই মুখ-ই খুঁজছে।

▪️বই : স্ট্রাইকার
▪️লেখক : মতি নন্দী
▪️ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৫/৫
Profile Image for Salman Sakib Jishan.
272 reviews158 followers
January 27, 2024
খেলাধুলাভিত্তিক গল্পগুলোতে দেখা যায় একই সেটাপে সব গল্প সাজানো হয়। তবুও সিনেমা হোক, বই হোক মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে এগুলোর জন্য। বিশেষ করে তা যদি হয় ফুটবল। এরকম টানটান এড্রেনালিন রাশ, এরকম স্ট্র্যাটেজ, এরকম আনপ্রেডিক্টেবল খেলা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। আমরা দর্শকেরা একেকটা ক্লাবের বংশানুক্রমিক ফ্যান বনে যাই, চ্যান্টিং করে, পতাকা উড়িয়ে, নেচে গেয়ে, বিতর্ক করে, চেঁচিয়ে পাড়া মাথায় তুলে এমন আনন্দের সাথে উপভোগ করি, এত আনন্দ বোধহয় পৃথিবীর কোনো স্পোর্টস এন্টার্টেইনমেন্ট এ হয়না।
শৈশবে আমি প্রচুর ফুটবল খেলেছি। স্ট্রাইকার পজিশনে, রাইট উইং-এ ছুটে বেড়িয়েছি। ক্যাপ্টেন্সি করেছি স্কুল টিমের। সি���েকশন প্রসেস, কাদামাখা মাঠে উপচে পড়া দর্শকের ভিড় এসব দুই প্রান্ত থেকেই উপভোগ করেছি। সেজন্য মতি নন্দীর এই বইটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আবেগ আর নস্টালজিয়ার খোরাক আমার জন্যে। যদিও এসব এখনকার শারীরিক পরিস্থিতিতে, রূঢ় বাস্তবতায় মনেহয় স্বপ্ন । মনেহয় ওসব ছিল নিছক আমার কল্পণা। বাস্তবে আমি ও-জীবন কখনো কাটাইনি।

মতি নন্দীর ক্লাসিক গল্প ‘স্ট্রাইকার’ আর ‘স্টপার’। খেলাধুলা ভিত্তিক গল্পে বাংলা সাহিত্যে তিনি এক এবং অনন্য! এই তুমুল এড্রেনালিন রাশের গল্পগুলোর মাঝেও এক বাঙালি ছেলের মানবিক গল্প বলেছেন অকপটে। এই গল্পটা আপনি না পড়লেও হয়তো জানেন। এই উপমহাদেশের প্রত্যেকটি ফুটবলারের গল্প এটা। ইতোমধ্যে হয়তো বাংলা বা হিন্দী ছবিতে দেখেও ফেলেছেন এই গল্পের অন্য কোনো রূপান্তর। তবুও বইটার দাম আমার কাছে কমবেনা। ছোটবেলায়ও কমেনি, এখনো কমলোনা। আমি খুব ছোটবেলায় আবাহনী-মহামেডান এর রাইভালরির ম্যাচ দেখেছি। ভারতের ইস্টবেঙ্গল- মোহনবাগান এর দর্প শুনেছি। সেই উত্তেজনা এই উপমহাদেশে অনেক আগেই মিইয়ে গেছে। অনেকদিন পর মনে হয়েছে আমি এখনো ফুটবলকে খুব মিস করি!

৪★
Profile Image for Adham Alif.
334 reviews80 followers
April 17, 2023
গল্পের মূল চরিত্র প্রসূন উদীয়মান স্ট্রাইকার। প্রসূনের বাবা এককালে ফার্স্ট ডিভিশনের দল যাত্রীর স্ট্রাইকার ছিলো৷ পুরো সময় দারুণ খেলে শিল্ড কাপের ফাইনালে সহজ এক গোল মিস করে বসেন৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে তিনি নাকি টাকা খেয়ে অমনটা করেছিলেন। মিথ্যা অভিযোগ আর গ্লানি নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করেন তিনি। বাবার সঙ্গে ফুটবল নিয়ে প্রসূনের কখনো কথা হয়না। তবু বাবার গল্পটা প্রসূনকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে৷ প্রসূনের এই উত্থান-পতনের গল্পে এসেছে উন্নতি করার জেদ, হতাশা, প্রলোভনের গল্প। তাকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়েছে দারিদ্রতা এবং ভাগ্যের সঙ্গে। একসময় অবশ্য সুযোগ এসে যায়। যার অপেক্ষাতেই মূলত ছিলো সে!

কিশোর বয়সীদের জন্য লেখা গল্পটা কলেবড়ে খুব একটা বড় নয়। প্রসূনের পাশাপাশি অন্যসব চরিত্ররা মাথাচাড়া দিয়ে দাড়াতে পারেনি। অল্পবিস্তর তাদের কথা এসেছে প্রসূনের কল্যাণেই। গল্পে অবশ্য অতিনাটকীয়তা আছে, তবে মতি নন্দীর লেখা পড়তে মন্দ নয়।
Profile Image for Forhad Juwain Sumon.
75 reviews3 followers
April 9, 2021
এক বন্ধুর করা রিভিউ থেকে খোঁজ পাইলাম এই ছোট্ট উপন্যাসের। ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিলো আমার। ফুটবলার হইতে পারি নাই। কিন্তু ফুটবল সম্পর্কিত কিছু দেখলেই চোখ বন্ধ করে পড়া শুরু করে দেই। ভাষা যখন দেহতে অনুভূত হয়, তখন ভাষা নিজেই ধাঁধা হইয়া ওঠে। প্রসূণের বিস্ময়কর বিস্মৃত বিজয় এবং বিপর্যয়কর পরাজয়ের অনুভূতি পরাবাস্তব লাগলো। এই ছোট উপন্যাসে ফুটবল মাঠের উন্মাদনা যেমন ফুটে উঠছে তেমনি পিতৃ-সম্মানকে ফিরিয়ে আনার আবেগপ্রবণ অঙ্গীকারের দেখা গেছে। অপমান, সাংসারিক কষ্ট,অভাব এসব কিছুকে শক্তি বানিয়ে প্রসূণের ছুটে চলার সাথী হওয়ার জন্য হলেও সব ফুটবল প্রেমীদের এই উপন্যাস পড়া উচিত।

উপন্যাসটার সবচেয়ে দূর্বল দিক হইলো; সম্ভাবনাসূচক চরিত্রগুলারে অল্প প্লট দেওয়া; হর্ষদা, নীলিমাকে লেখক আরো সময় দিতে পারতো; চরিত্রগুলা আরো শক্তিশালী হইতে পারতো; নিতাইকে আমার অনেক পছন্দ হইছিলো কিন্তু নিতাই সম্পর্কে সব অচেনা অজানাই থেকে গেলো। উপন্যাসটা আরেকটু বড় হইলেও পারতো আরকি। শেষের ১০ পাতায় প্রসূনের গোল আর ইডেনের টান টান উত্তেজনার অংশটুকু ছাড়া আর কিছুই অতটা ভালো লাগে নাই।


মতি নন্দীর লেখনশৈলী খুবই চমৎকার। খেলার মাঠের বর্ণনা মুগ্ধ করতে বাধ্য করবে। লেখকের অন্য বইগুলো পড়ে শেষ করার আগ্রহ তৈরি হইলো বলা যায়।
Profile Image for فَرَح.
188 reviews2 followers
September 15, 2023
খেলো নিয়ে মাতামাতি ভালো না লাগলেও বইটা ভালোই লাগলো।
Displaying 1 - 30 of 60 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.