দশ বছর বয়স থেকে শিকারে যাচ্ছেন বুদ্ধদেব গুহ। বাংলা সাহিত্যে তাঁর আত্মপ্রকাশ জঙ্গলমহল-এর গল্প শুনিয়েই। অরণ্য তাঁর বহু জনপ্রিয় গল্প-উপন্যাসের প্রধান পটভূমি। তবে, অলঙ্কার-নির্মাণের স্বার্থে যেমন খাঁটি সোনাতেও মেশাতে হয় খাদ, তেমনই সে-সব রচনাতে স্বাভাবিকভাবেই যুক্ত হয়েছে কিছু-কিছু কল্পনা। এই প্রথম এমন-এক রচনা উপহার দিলেন বুদ্ধদেব গুহ, যা সম্পূর্ণ নিখাদ। এ-রচনাও অরণ্যকেন্দ্রিক, তবু প্রতিটি পটভূমি অবিকল, প্রতিটি চরিত্র বাস্তব। আসাম-বাংলা-বিহার-ওড়িশার যে-সমূহ বনাঞ্চল ফিরে-ফিরে এসেছে তাঁর নানান সৃষ্টিতে, সেই অপরূপ পটভূমিতে তাঁর শিকারী-জীবনের অনুষঙ্গে জড়ানো স্মৃতি-অভিজ্ঞতার এক উজ্জ্বল উদ্ধার এই বনজ্যোৎস্নায়, সবুজ অন্ধকারে।শিকার-জীবনের স্মৃতি, তাই অনিবার্যভাবেই এসেছে তাঁর শিকারী বাবার কথা, যাঁর স্নেহে-প্রশ্রয়ে বুদ্ধদেব গুহর বন্দুকে হাতেখড়ি, শিকারের মধ্য দিয়ে দেশ-মাটি ও আপামর মানুষের সঙ্গে নিবিড় পরিচয়ের দিগন্তকে যিনি করে দিয়েছিলেন উন্মুক্ত। এসেছে তাঁরই বিভিন্নবয়সী এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের বন্ধুবান্ধবদের কথা। অন্তরঙ্গ উজ্জ্বলতায় চিত্রিত সেইসব মানুষের বর্ণাঢ্য মিছিলে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর অগ্রজ ডঃ কিরণ বসু, কোডারমার যুগলপ্রসাদ, আসামের গৌরীপুরের হাতি-বিশেষজ্ঞ কুমার প্রকৃতীশচন্দ্র বড়ুয়া, ইনকাম ট্যাক্সের বড়সাহেব কেনেল এডওয়ার্ড জনসন, দণ্ডকারণ্য প্রোজেক্টের পেশাদার শিকারী, ওড়িশার কালাহাণ্ডির রামচন্দ্র দণ্ডসেনা, ডুয়ার্সের চা-বাগানের বহু সাহেব-ম্যানেজার। এ ছাড়াও রয়েছেন আসামের ধুবড়ির আবু ছাত্তার— একদিনে বহু আত্মীয়কে গুলি করে মারার অপরাধে যাঁর ফাঁসি হয়; হাজারিবাগের বন্দুকের দোকানি মহম্মদ নাজিম— যাঁর আদলে মাধুকরীর সাবীর মিঞা। রয়েছেন গোপাল সেন, সুব্রত চ্যাটার্জি, কাড়ুয়া প্রমুখ অনেকে।রাজা-রাজড়া, সাহেব-সুবো থেকে দরিদ্রতম মানুষের এই সঙ্গস্মৃতির মধ্য দিয়ে গোটা ভারতের শাশ্বত নিটোল এক সত্যরূপ যেন আবিষ্কৃত এই অসামান্য গ্রন্থে।শিকার-জীবনের স্মৃতিকথা, তবু শিকার যেন উপলক্ষ। লক্ষ্য: প্রকৃতির অন্দরমহলেরও কিছু আশ্চর্য মানুষের দুর্লভ সাহচর্যের ‘মনমৌজী জবানে’ বর্ণনা। সে-বর্ণনার গুণেই এ-গ্রন্থ আদ্যন্ত সরস ও উপভোগ্য।
Buddhadeb Guha (Bengali: বুদ্ধদেব গুহ) is a popular Bengali fiction writer. He studied at the well-known St Xavier's College of the University of Calcutta.
His novels and short stories are characterized by their dreamy abstractness and romantic appeal. His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels.
A highly successful chartered accountant by profession, and an accomplished musician, Guha is very urbane in his lifestyle. He was one of the first to create characters representing easy-going, upper middle-class modern Bengali families, whom readers could identify with, and that gave him instant popularity.
He is the recipient of many awards including Ananda Puraskar, 1976; Shiromani Puraskar; and Sharat Puraskar.
The Library of Congress has over fifty titles by him. His most famous novel, according to many, is Madhukori. It is considered a milestone in Bengali literature. He is also the creator of Rijuda, an imaginary character who moves about in jungles with his sidekick Rudra. The jungles that he wrote about were mainly in Eastern India.
বছর আটেক আগে নীলক্ষেত পুরনো বইয়ের দোকানে এই দুই খণ্ড বই দেখেছিলাম, প্রচণ্ড খুশি হয়েছিলাম এবং বিস্তর দামাদামি করার পরেও মাত্র ৫০ টাকা কম থাকায় সেবার নিতে পারিনি। মন খারাপ হয়েছিল এবং রাগও হয়েছিল অনেক। এরপর অনেকবার মনে পড়লেও বইটা আর পড়া হয়ে ওঠেনি। এতবছর পর ঝা-চকচকে নতুন বই কিনে পড়ে ফেলার আনন্দ অন্যরকম। সাধারণত কোনো বই কিনে এতটা উচ্ছ্বাস দেখাই না কখনো। তবে এ বইয়ের ব্যাপারটা একটু আলাদা আমার কাছে।
বুদ্ধদেব গুহর লেখার বিশেষ ভক্ত আমি। তার লেখার আকর্ষণ থেকে নিজেকে দূরে রাখাটা কষ্টকর আমার জন্য। বাস্তব জীবনে তিনি যতটা নাকউঁচু স্বভাবের হোক না কেন, আত্মজীবনীমূলক লেখায় তার প্রতিফলন যতটাই ঘটুক না কেন তার লেখার আলাদা সৌন্দর্য আছে যেটা আমি বরাবরই উপভোগ করি।
নিজের শিকার জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনা, গল্প, অভিজ্ঞতা মিলেমিশে স্থান পেয়েছে এই বইয়ে। বনজঙ্গল ও তাকে ঘিরে থাকা পরিবেশের এত চমৎকার বর্ণনা খুব কম লেখকের কলম দিয়েই বের হয়। মনে হয় যেন তার সাথেই মাচায় উঠে বসে আছি সামনের সুড়িপথ ধরে হেটে আসা বাঘের জন্য।
শিকারি বুদ্ধদেব গুহর স্মৃতিচারণধর্মী। নিজে বড় চাকুরে ছিলেন৷ পিতৃদেব ছিলেন উপরিমহলের লোক। তাই আনাগোনাও ছিল সমাজের মান্যগণ্যিদের সাথে। এদের নিয়ে শিকারে গিয়েছেন। শিকার করেছেন দীর্ঘকাল। তারই বর্ণনা এই বই।
বইটির প্রথমার্ধ যথেষ্ট সুখপাঠ্য। বাকি অংশ আগের ধাঁচের কথারই চর্বিতচর্বন। তাই ভালো লাগেনি। পয়সাওয়ালা মানুষদের বড্ড বেশি জটলা এই বই। টাকা আছে। শিকারে যাচ্ছেন। পশু মারছেন - এই হলো দু'শ পাতার বইটির মূলকথা৷
There is not much I can add about this book to what the author himself has expressed so eloquently -
"আমাদের অভিজ্ঞতার, অনুভূতির বৃত্তের ঘেরাটোপের বাইরেও এক মস্ত জগৎ পড়ে আছে বলেই আমাদের এই একঘেয়ে জীবনকে সেই জগৎের কল্পনা দিয়ে আমরা ভরিয়ে তুলতে পারি।
ভাগ্যিস পারি।"
A whole wide world lies outside the boundaries of our experiences and feelings. Because it exists, we strive to imagine it and fill up the routine drudgery of our lives with that imagination. How fortuitous !!