হাল্লো, কিশোর বন্ধুরা- আমি কিশোর পাশা বলছি, আমেরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলেসে, প্রশান্ত মাহাসাগরের তীরে, হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি, আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি, নাম তিন গোয়েন্দা। আমি বাঙালী। থাকি চাচা-চাচীর কাছে। দুই বন্ধুর একজনের নাম মুসা আমান, ব্যায়ামবীর, আমেরিকান নিগ্রো; অন্যজন আইরিশ আমেরিকান, রবিন মিলফোর্ড, বইয়ের পোকা। একই ক্লাসে পড়ি আমরা। পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ডে লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের নিচে পুরানো এক মোবাইল হোম-এ আমাদের হেডকোয়ার্টার।
তিনটি রহস্যের সমাধান করতে চলেছি- এসো না, চলে এসো আমাদের দলে।
রকিব হাসান বাংলাদেশের একজন গোয়েন্দা কাহিনী লেখক। তিনি সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দা নামক গোয়েন্দা কাহিনীর স্রষ্টা। তিনি মূলত মূল নামে লেখালেখি করলেও জাফর চৌধুরী ছদ্মনামেও সেবা প্রকাশনীর রোমহর্ষক সিরিজ লিখে থাকেন। থ্রিলার এবং গোয়েন্দা গল্প লেখার পূর্বে তিনি অন্যান্য কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি রহস্যপত্রিকার একজন সহকারী সম্পাদক ছিলেন।রকিব হাসান শুধুমাত্র তিন গোয়েন্দারই ১৬০টি বই লিখেছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০টি বই অনুবাদ করেছেন। তিনি টারজান সিরিজ এবং পুরো আরব্য রজনী অনুবাদ করেছেন। তাঁর প্রথম অনুবাদ গ্রন্থ ড্রাকুলা। রকিব হাসান লিখেছেন নাটকও। তিনি "হিমঘরে হানিমুন" নামে একটি নাটক রচনা করেন, যা টিভিতে সম্প্রচারিত হয়।
কৈশোরের শুরুর দিনগুলিতে পরিচয় তিন গোয়েন্দার সাথে।তারপর কত পথ হেঁটেছি একসাথে,কতো রাত কাঁথা মুড়ি দিয়ে টর্চের আলোয় কিংবা পাঠ্যবইয়ের ভিতর রেখে পড়ে যাওয়া।স্কুলে স্যারদের বই নিয়ে যাওয়া,ওয়াশরুমে বেশী সময় কাটানো নিয়ে বাসায় চিল্লাচিল্লি। কিশোর, মুসা, রবিন, রাশেদ চাচা, মেরী চাচী, বোরিস, রোভার, জিনা, শুটকি টেরি, ক্যাপ্টেন ইয়ান ফ্লেচার, ফগ র্যাম্পারকট, ভিক্টর সাইমন সবার সাথেই ছিলো গভীর মিতালি।তখন হাতে টাকা আসতো না,কতো কিছু করে যে বই কিনতে হতো এক একটা।প্রতিটা বই কিনার পর নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মনে হতো। সোনার খাঁচার সেই দিনগুলি!!
তিন গোয়েন্দার এই ভলিউমটা আমার মামাতো ছোট বোন পড়তে নিয়ে হারিয়ে ফেলেছিল অনেক বছর আগে। কত যে মন খারাপ হত আমার, কত যে স্মৃতি রয়েছে আমার এই তিন গোয়েন্দা নিয়ে। অবশেষে আমার বোন আমার অনেক খোঁটা সহ্য করে আমাকে নতুন এইটা কিনে দিয়েছিল! অনেক অনেক বছর পর পড়লাম তিন গোয়েন্দা। সত্যি বলতে সেইইইই ছোটবেলার সেই অনুভুতিটা হয়ত পড়ার পর হয়নি, কিন্তু ছোটবেলার সেই অনুভুতিগুলো তো আজও ভুলতে পারিনি। তাই এই বুড়া বয়সে এসে তিন গোয়েন্দা পড়ে আগের মত না টানলেও, ছোটবেলার সেই টান আশাকরি আমি সারা জীবন বয়ে বেড়াব!
ক্লাসিক! সেই দুরন্ত কৈশোরের অমলিন সঙ্গী। এই বইয়ের কথা চরম মনভোলাও ভুলতে পারবে কীনা সন্দেহ আছে। না পড়লে জীবন বৃথা নয়, বরং তিগো'র প্রথম ভলিউম পড়া মানে জীবনে নতুন কিছু স্মৃতি যোগ করা।
বই পড়ার 'নেশা' সম্ভবত তিন গোয়েন্দা আর রকিব হাসানের হাত ধরেই। এখনো মনে পড়ে চাদর মুড়ি দিয়ে, কিংবা বইয়ের ভেতরে লুকিয়ে, বা বাথরুমে বই লুকিয়ে নিয়ে পড়তে পড়তে সময়জ্ঞান হারিয়ে ফেলতাম। তিন গোয়েন্দার ভলিউম ১/১ আমার পড়া সবচেয়ে প্রিয় বইগুলোর একটি। ৩০ বছর বয়সেও ইচ্ছা হয় টেরর ক্যাসলে গিয়ে ভূতেদের মুখোমুখি হই, বন্ধুদের নিয়ে কংকাল দ্বীপে যাই, বা ইউরোপের সেই ছোট্ট দেশের রাজপুত্রের সাথে মিলে রহস্য সমাধান করি!
জাস্ট এ মাস্টারপিস! যে কারণেই হোক, এ বইটা স্কুল জীবনে মিসিং ছিলো। হঠাৎ মন চাইলো তিন গোয়েন্দা পড়ি আর হাতে নিলাম প্রথম বইটাই। এ বয়সেও এতোটা ভালো লাগলো বলে বুঝাতে পারবো না! রকিব হাসানের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা 💚
স্কুলে যখন তিন গোয়েন্দার জয়জয়কার -বিশাল হাইপ, আমি তখন মাথা গুঁজে ছিলাম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল আর জুল ভার্ন, আসিমভের অনুবাদে। তাই এখন এই কোভিড-১৯ এর সময়ে, সময় থাকতেই টু ডু লিস্ট থেকে তিন গোয়েন্দার নাম কাটছি।
My memories of the first volume still amazes me with vivid images of Pasha Salvage Yard, and the thrill of Kishore, Musa, Robin's adventures. I loved all three of the stories in this volume, and would read them again.
তিন গোয়েন্দার ইতিহাসের প্রথম তিনটা বই। "তিন গোয়েন্দা, কঙ্কাল দ্বীপ, রূপালী মাকড়সা।" তিনটা গল্পই আমার খুব পছন্দের। ভলিউমটা শুরু হয় তিন গোয়েন্দা দিয়ে। "রকি বিচ, লস আ্যঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া। সাইকেলটা স্ট্যান্ডে তুলে রেখে ঘরে এসে ঢুকলো রবিন মিলফোর্ড। গোলগাল চেহারা, বাদামী চুল, বেঁটেখাটো এক আমেরিকান কিশোর।" আহহ লাইনগুলো যত দেখি নস্টালজিক হয়ে পড়ি। কই চলে গেল ছেলেবেলার সে দিনগুলো!!
ক্লাস ফাইভে থাকতে পরীক্ষার আগের রাতে , রাত জেগে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়া বই। আহা সেই দিনগুলি আসলেই অনেক চমৎকার ছিল। যেকোন কিশোরের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ এবং অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য এই বই আসলেই কাজে দেয়। অন্তত আমার ক্ষেত্রে দিয়েছিল।
তিন গোয়েন্দা প্রধান চরিত্র কিশোর পাশা , মুসা আমান , রবিন মিলফোরড তিন জনের মধ্যে একেক রকমের গুন গল্পের মধ্যে সবচেয়ে ভুতুরে ও রহস্যময় কাহিনী হচ্ছে টেরর ক্যাসল দ্বিতীয় গল্পটা হচ্ছে কঙ্কাল দ্বীপ এবং তৃতীয় গল্পটা হচ্ছে রুপালী মাকরসা
নিঃসন্দেহে তিন গোয়েন্দার সেরা ভলিউম। তিন গোয়েন্দার সেরা ৫টি বইয়ের তালিকা করলে অবশ্যই এই ভলিউম থেকে ২টি বই যাবে। আমরা দেখতে পাই যে, তিন গোয়েন্দার ভলিউম গুলোতে (১-৬০) ১/২ টি গল্প খুব ভাল থাকে আর বাকি গল্পটি/গল্পগুলোও ভাল হয় বাট খুব ভাল যে তা না । এভারেজ ভাল টাইপের। কিন্তু আমার মনে হয় শুধু এই ভলিউম এই তিনটি গল্পই শুধু খুব ভাল না, একেবারে মাস্টারপিস সবগুলো।