Jump to ratings and reviews
Rate this book

খাকি চত্বরের খোয়ারি

Rate this book
দেয়াল আর কাঁটাতার ঘেরা এক আধাসামরিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে চকচকে বুট আর খাকি পরা কতিপয় কিশোর। কঠোর শৃঙ্খলা আর কড়া নজরদারির ভেতর তারা প্যারেড করে, ক্লাসরুমে বসে খোলে অঙ্কের খাতা, বিকেল গড়ালে ছুটে যায় মাঠে। বিউগল বাজিয়ে সূর্যকে বিদায় জানায় তারা। রাতে গলায় টাই বেঁধে কাঁটাচামচে খায় ইংলিশ ডিনার। ঘড়ির কাঁটা রাত দশটা স্পর্শ করলে লাইটস অফ। চারদিকে অন্ধকার, সুনসান। দূর গ্রামের কিশোর এই চত্বরে এসে হয়ে পড়ে স্কটিশ ব্যাগপাইপ বাজিয়ে। নিজেকে খাকি পরা মেঘ ঘোষণা করে কেউ বুকে বয়ে বেড়ায় জীবনানন্দ। কেউ গিটারে তুমুল ঝঙ্কার তুলে গায় 'হানড্রেড মাইলস, হানড্রেড মাইলস অ্যাওয়ে'। কারো কিশোর চোখ খোঁজে কিশোরীর মুখ। সব নজরদারি এড়িয়ে কেউ অন্ধকারে পেরিয়ে যায় কাঁটাতারের ঘেরাটোপ। কৈশোরের নিয়ম আর নিয়মভাঙার এইসব মত্ততার গল্প খাকি চত্বরের খোয়ারি।

111 pages, Hardcover

First published June 1, 2013

4 people are currently reading
332 people want to read

About the author

Shahaduz Zaman

49 books530 followers
Shahaduz Zaman (Bangla: শাহাদুজ্জামান) is a Medical Anthropologist, currently working with Newcastle University, UK. He writes short stories, novels, and non-fiction. He has published 25 books, and his debut collection ‘Koyekti Bihbol Galpa’ won the Mowla Brothers Literary Award in 1996. He also won Bangla Academy Literary Award in 2016.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
127 (41%)
4 stars
128 (41%)
3 stars
39 (12%)
2 stars
10 (3%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 73 reviews
Profile Image for Md. Rahat  Khan.
96 reviews25 followers
June 14, 2021
শাহাদুজ্জামানের প্রতি আমি পক্ষপাতদুষ্ট। এই কথা স্বীকার করতে আমার লজ্জা নাই। এক রকম একাত্মতা বোধ করি তাঁর সাথে। জীবনে কত মানুষই তো আসে যায়, কেউ কেউ ঘনিষ্ঠ হয়, তবে সকলে একাত্ম হতে পারে না। আমি কখনও ভাবি নাই মনের এই একাত্মতা আমি আবিষ্কার করব এত পরোক্ষভাবে, ছাপা অক্ষরে! শাহাদুজ্জামান যখন পড়ি তখন মনে হয়, আমি যেন কথা বলছি, আমার আর লেখকের ব্যক্তিগত দর্শনের আদান প্রদান হচ্ছে রীতিমতো। কতবার যে পড়লাম এই বই হিসাব নাই। ডেড পোয়েট'স সোসাইট, থ্রি ইডিয়টস আর খাকি চত্বরের খোয়ারি এই তিন জিনিসের প্রতি ভালবাসা আমার কোনোদিন কমবে না, যতবার দেখি না কেন, যতবার পড়ি না কেন। তাই শাহাদুজ্জামান পঠন আমার জন্য ব্যক্তিগত। অনেকটা আত্নীয়প্রীতির মতো।
Profile Image for Sourav Das.
42 reviews76 followers
December 30, 2016
৩.৭৫/৫

প্রথমেই বলে নেয়া ভাল অতীতে আমিও একজন খাকি চত্বরের খোয়ারি ছিলাম। শাহাদুজ্জামানের লেখা বইটা পড়লাম। কৈশোরের দুরন্ত ঘোড়া ওই চত্বরে আমিও দৌড়িয়ে এসেছি। তাই হয়তোবা মিশ্র অনুভূতি হল।

বইটা পড়তে পড়তে আমার ছয় বছরের কাটিয়ে আসা ক্যাডেট কলেজের ঘটনাবহুল জীবন চোখের সামনে ভেসেছে। সেই পিটি, প্যারেড, গেমস এসবের মাঝেই একসাথে মিশে কতগুলো কিশোর একসময় যৌবনের দ্বারপ্রান্তে পৌছে যায়। ক্যাডেট কলেজের আসল স্বাদটা ওখানেই, বন্ধুত্বে। ‘A friend in need , is a friend indeed!’ এইখানটাতেই মনে হয় আমাদের বন্ধুত্বের সার্থকতাটা বোঝা যায় সবচেয়ে বেশী করে।বিপদের সময় বোঝা যায় বন্ধু কাকে বলে! ঠিক।মায়ের অনুপস্থিতিতে কেউ যখন রাত জেগে অসুস্থ বন্ধুর সেবা করে তার থেকে বড় বন্ধু আর কে হতে পারে? সবাই মিলে একসাথে পড়াশুনা করা, বন্ধুরাই ছিল শিক্ষক কিংবা একজনের ভুলের জন্য সবাই শাস্তি ভোগ করা আবার সময়কালে সেই বন্ধুকেই বাঁচিয়ে দেয়া , এক অদ্ভুত সম্পর্কই বটে।

বইটাতে লেখক অনেকাংশেই দর্শকের ভূমিকা পালন করে নিজের অবস্থান জানিয়ে গেছেন। বড় একটা ভূমিকা নিয়েছে তাঁর বন্ধু মিলন। পারিবারিক ভাবেই সমস্যাগ্রস্ত মিলন তাঁর একাকিত্ব অসুখের ভাগীদার করে লেখককে। সমাজের নেতৃত্ব দেবার বদলে চকচকে নাটবল্টু হয়ে যেতে যার ঘোরতর দুঃখ। মিলন চরিত্রটা পড়ে কেন যেন আমার ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’র কুমুদের কথাই বারবার মনে হয়েছে। বোহেমিয়ান জীবন যাকে ঘোর লাগায়। পরিবর্তন আনার বদলে পালাবার দিকেই যার বড় বেশি ঝোঁক। প্রকৃতপক্ষে সমাজের নেতা হয় কারা? নেতা বলতে আমরা মূলত কাদেরই বা বুঝি? পুরো সমাজটাই তো আসলে চকচকে মেশিন মাত্র , ক্যাডেট কলেজ তো সমাজের বাইরের কিছু না।
বাংলাদেশের মত তুলনামূলক দুর্বল অর্থনীতির দেশে ক্যাডেট কলেজ বেশ খানিকটা ব্যয়বহুল একথা সত্য। তবে তার আউটপুট ও নেহায়েত কম নয়। বিজ্ঞান,চিকিৎসা,শিক্ষা সহ প্রায় সবখানেই তাঁরা বেশ চমৎকার ভাবে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে। লেখক নিজেও কিন্তু একজন গবেষক,চিকিৎসক হয়ে সমাজে বেশ গুরুত্বপুর্ণ একটা ভূমিকাই পালন করে যাচ্ছেন। আর ক্যাডেট কলেজের মূল যে লক্ষ্য, সামরিক বাহিনীর জন্য অলরাউন্ডার চৌকস কর্মকর্তা তৈরী করা সে ব্যাপারে তা অনেকাংশেই সফল।

ক্যাডেট কলেজের একটা চমৎকার দিক ছিল ওখানে সমাজের প্রায় সবখান থেকে আসা ছেলেরা পড়ার সুযোগ পেত। সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা থেকে শুরু করে তুলনামূলক অসচ্ছল কৃষকের ঘরের ছেলেরাও। বাবা-মায়ের আয় অনুসারে বেতন নির্ধারিত করা হত। যার ফল হত অনেক মেধার সর্বোচ্চ সদ্বব্যবহার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর আতিউর রহমানের কথা আমরা ভালোভাবেই জানি।

ব্যক্তিগতভাবে আমার সামরিক জীবনযাপন বা সেই ক্ষমতা নিয়ে বিন্দুমাত্র আকাঙ্ক্ষা নেই। শৃঙ্খলা মেনেই বরং শিখেছি প্রয়োজনে কিভাবে নিয়ম মেনে বিশৃঙ্খল হতে হয়। তবে ক্যাডেট কলেজ নিয়ে আমার অনেকদিন পর্যন্ত যে ক্ষোভটা ছিল সেটা একটু অন্যরকম একটা কারণে। ওখানে যাবার আগে আমি ম্যাথ অলিম্পিয়াডে যেতাম। কিন্তু ওখানে যাবার পর থেকে আর হয়ে ওঠে নি। কেন ওখান থেকে ম্যাথ অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে দেয় না? হাস্যকর মনে হতে পারে!
আমরা একটা বড় ধরনের ট্রানজিশন সময়ের মধ্যে বড় হয়েছি। যুগ হঠাত করেই লাফ দিয়ে দিয়ে এগুচ্ছে। এরকম চেঞ্জিং একটা সময়ে ক্যাডেট কলেজ অবশ্য বেশ খানিকটাই পিছিয়ে পড়ছে। তুলনামূলক কম খরচে যথেষ্ট উচ্চমানের যে শিক্ষা ক্যাডেট কলেজ দিত তার অনেকটাই এখন আধুনিকায়নের দরকার বলে আমি মনে করি। আবার বলছি আমি মনে করি! তবে আমার সময়টাতে একজন মধ্যবিত্ত সন্তান হিসেবে আমি অনেকটা সর্বোচ্চসম্ভব ভালো শিক্ষাটাই পেয়েছি বলে মনে করি। এখন দেখার অপেক্ষা আমি কতটুকু কাজে লাগাতে পারি, সমাজের কোথায় যেয়ে নাটবল্টু হই!

বইটা পড়তে অনেকাংশেই বেশ লেগেছে। তবে শেষমেশ লেখকের অনুভূতির সাথে আমি পুরোপুরি একমত না। তাই হয়তো বা একস্টার কমে যাবে। তবে শাহাদুজ্জামানের লেখার স্টাইল চমৎকার। উঁচুমানের, আগ্রহ ধরে রাখতে পারেন। তারপরও ব্যাক্তিগত ভালোলাগা বলে একটা ব্যাপার অবশ্যই থাকে। এভ্রি কয়েন হ্যাজ ইটস অপজিট সাইড, ওই চত্বরেরও ছিল। তারপরও খাকি চত্বর আমাকে নিঃশর্ত বন্ধুত্ব চিনিয়েছে,তৃপ্তি দিয়েছে, অনেক স্নেহপরায়ণ গুরুজন দিয়েছে। সারাজীবনের জন্য একদল বিপদের বন্ধু উপহার দিয়েছে। তাই খাকি চত্বর আমাকে স্টকহোম সিনড্রোমে না বরং বরাবরই আবেগ কিংবা নস্টালজিয়ায় ভোগায়।
Profile Image for Samiur Rashid Abir.
217 reviews45 followers
July 17, 2022
সচরাচর যারা ক্যাডেট কলেজে পড়েন তাদের সেই ক্যাডেট জীবন নিয়ে আলাদা একটা সেন্টিমেন্ট কাজ করে। বেশিরভাগ সিনিয়রের ক্ষেত্রেই আমি তা দেখেছি। বুড়িয়ে গেছেন কিন্তু এখনো খাকির প্রতি ভালবাসাটুকু ছাড়তে পারেন নাই। আমার ব্যক্তিগত একটা বিশ্বাস হচ্ছে, সেন্টিমেন্ট কিংবা ভালবাসা ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই একে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করার আবশ্যিকতা নাই।শাহাদুজ্জামান সাহেবের লেখক হিসাবে খ্যাতি অনেক। ক্যাডেট সূত্রে আমার সিনিয়র ভ্রাতা খ্যাতিমান এই লেখকও হয়ত সেন্টিমেন্টের বাইরে বেরুতে পারেন নাই। তাই লিখেই ফেলেছেন খাকি চত্বরের খোয়ারি। ক্যাডেট জীবন ছেড়েছি চার বছর হতে চলল। এরপর আমি আমার এই জীবন সম্পর্কিত অনেক কিছুই এড়িয়ে গেছি কেননা স্মৃতির ভারে কাতর হয়ে পড়ব অনেক। ক্যাডেট কলেজে ক্লাস সেভেনে যখন যাই তখন আমার একটুও ভাল লাগত না। কেননা, আমার ইচ্ছে করত মুক্ত পাখির মতন উড়ে বেড়াতে। কিন্তু সেই মুক্ত জীবনেই বন্দির শেকল হিসেবে দাঁড়িয়েছিল যাবতীয় সব নিয়মগুলো। আম্মা আমার এই বন্দী জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা দেখেই বলে বসলেন, দেখিস একদিন তুই এই জীবন শেষ হওয়া নিয়েই অনেক বেশি কাতর হবি। ঠিক ই তাই, কাতর হওয়ার ভয়েই এড়িয়ে গেছি ক্যাডেট কলেজ সেন্টিমেন্টের সকল ফেসবুক পোস্ট কিংবা কাহিনী। কেননা, পড়লে আবার মনে হবে, যাই কলেজের ঘাসে একটু গড়িয়ে আসি কিংবা বিকেলবেলায় প্রতিদিন যে খেলার আনন্দ সেটা ফিরিয়ে নিয়ে আসি। হারুন ভাইয়ের অনুরোধেই সাহস করে আমি পড়লাম বইখানা। এতদিনের মনের যে তীব্র ভয় সাহস করে সেটাকে এড়িয়ে শেষ করলাম ১১১ পৃষ্ঠার ছোট এই বইটুকু। লেখক শাহাদুজ্জামান আমার প্রায় চল্লিশ বছরের সিনিয়র। পড়ে বুঝলাম চল্লিশ বছরে পরিবর্তন হয়নি একটি নিয়মের ও। নস্টালজিয���ায় ফিরে গেলাম যেন পুরনো দিনগুলোয়। আর সবশেষে মিলনের সুইসাইড টা বেশ দুঃখজনক ছিল।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Nishat Monsur.
191 reviews18 followers
November 29, 2023
ক্যাডেট মাত্রই ক্যাডেট কলেজ জীবন নিয়ে লিখিত যে কোনো কিছু গোগ্রাসে পড়ে ফেলবে- এমনটাই নিয়ম ছিল, অন্তত আমি যখন ক্যাডেট ছিলাম তখন। এখনো সম্ভবত এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। তবে যে কারণে গত কিছু বছর ধরে আমি এ জাতীয় বই কম পড়েছি, তার পেছনে ক্যাডেট কলেজ নিয়ে আমার মিশ্র অনুভূতি দায়ী হয়ে থাকবে। শাহাদুজ্জামান আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক, তাই কিছুটা ভয়ে ভয়েই বইটা কেনা হয়েছিল। আমি জানতে চাচ্ছিলাম আমার এই প্রিয় লেখক কীভাবে দেখেন ঐ জীবনটা, যে জীবনটার দিকে আমি একটা পাঁচমিশেলি অভিজ্ঞতার চোখ নিয়ে তাকাই। বলাই বাহুল্য, আমি নিরাশ হইনি।

শাহাদুজ্জামান বেশ ক্রিটিক্যাল কিছু বিষয়কে এখানে অ্যাড্রেস করেছেন যেগুলো অনেক জায়গায়ই দেখিনি আমি। একেকটা ইন্ডিভিজ্যুয়ালকে কীভাবে ক্যাডেট কলেজ এক ছাঁচে ফেলতে চেষ্টা করে এবং কীভাবে সেই তীব্র চেষ্টার মধ্যেও প্রত্যেকের ভিন্নতা প্রকট হয়ে ওঠে, কীভাবে প্রত্যেকেই গড়ে ওঠে আলাদা মানুষ হিসেবে- এই ব্যাপারটা এত সুন্দরভাবে এসেছে বইটিতে, আমি মুগ্ধ না হয়ে পারিনি। ক্যাডেট কলেজের সবার সাথে বন্ধুত্বের বিষয়টিকেও তিনি এত সুন্দর একটা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন- আমার কাছে মনে হয়েছে অনেক দিন পরে এমন কাউকে পেলাম যিনি আমার সাথে একমত এই ব্যাপারে।

প্রচুর নস্টালজিক মুহূর্ত হাতড়ানো হয়েছে বইটি পড়ার সময়। যে জায়গাটা আমাকে মানুষ হিসেবে গড়ে দিয়েছে, সে জায়গাটার এরকম একটা নির্মোহ স্মৃতিচারণ অবশ্যই সুখপাঠ্য।
Profile Image for Rashedul Riyad.
58 reviews33 followers
July 11, 2020
এই বইটা যখন পড়া শেষ করেছি, তখন আকাশ মেঘলা হয়ে আছে।

'খাকি চত্বরের খোয়ারি' তে লেখক তুলে এনেছেন তাঁর ক্যাডেট কলেজের সময়কার জীবন এবং সে জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো। কৈশোরের সেই চমৎকার সময়টাতে কিভাবে তিনি খাকি চত্বরে এলেন, চত্বরের কঠোর নিয়ম কানুনের সাথে তাঁর এবং তাঁর সমসাময়িক বন্ধুদের মানিয়ে চলার চেষ্টা, গৎবাঁধা চত্বরের ভেতরে বসেও সেই বয়সেই জীবনকে নিয়ে অন্য চিন্তা করার সুযোগ- লেখকের ভাষায় 'পেঁচার চোখ দিয়ে জীবনকে দেখার ইচ্ছে'র মত ব্যাপারগুলো তাঁর মনের ভুবনে অন্য এক মাত্রা যেন যোগ করেছিলো, আর এই ভাবনার অন্যমাত্রায় বিচরণের বিশেষ পূর্ণতা দিয়েছিল কিশোর শাহাদুজ্জামানেরই ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু। তিনি সেই বন্ধুকে নিয়ে লিখলেন এবং তারপর হঠাৎ করেই যেন আর লিখলেন না। বইটা পড়লে হয়তো ব্যাপারটা বোঝা যাবে।

শাহাদুজ্জামানের এই লিখাটা যখন পড়ছি, মনে হলো উনি সামনেই বসে আছেন, কোনো এক ছাদ বারান্দায়, হাতে ধরে রেখেছেন চত্বরের পাসিং আউট ডে তে তোলা তাঁদের সেই ছবিটা, সে সময়ের কথা বলে যাচ্ছেন কিছুটা আনমনে, কিছুটা যেন নিঃস্পৃহ ভঙ্গিতে। যখন বলা শেষ করেছেন, তখনো তিনি তাকিয়ে আছেন দূরে কোথাও, অন্যমনস্ক হয়ে, আকাশ ঠিক এমনটাই মেঘলা হয়ে আছে...।
Profile Image for Prithvi Shams.
111 reviews106 followers
February 1, 2015
I do not have the same pathos for Cadet College as ex-cadets do, since I did not attend Cadet College. The author drew a clever analogy for his complicated feelings towards the institution, characterizing it as Stockholm Syndrome. Human bonds of friendship and family often cloud people's judgement, rendering them incapable of identifying and critiquing the institution(s) under which the bonds are forged. The author's brilliance lies in the fact that he transcends this shortcoming. Acc. to his narrative, Cadet Colleges construct human subjects as part British, part Bengali, part aristocratic, part Muslim. In trying to become many things at once, the subjects fail to become anything at all. This is exemplified by the fact that most of the students became agitated when the new Bengali teacher Shafiq sir provoked the students to question themselves for the first time in their life - what do they want to be and why, do their conceptions of society actually correspond with reality. This episode reminded me of Dead Poets Society, only diametrically opposite. For an institution that claims to build leaders, it successfully detaches the "future leaders" from the life and times of the proletariat majority, and makes them viscerally inimical to non-conformity towards authority. Such leaders may become autocrats and dictators at best, not the embodiment of the people's hopes and dreams.

A lovely account of an awful life that I wouldn't want for myself or posterity.
Profile Image for Md. Rahat Khan.
50 reviews5 followers
July 26, 2025
বাইরের পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন কঠোর শৃঙ্খলাবদ্ধ এক জগতে খাকি পোশাকের ভিতরে শরীর ডু্বিয়ে খুদে সৈনিকের বেশে খাকি চত্বরে আসেন লেখক। যেখানে শার্টে বোতাম না থাকলে ভোগ করতে হয় শাস্তি। বিভিন্ন অপরাধের জন্য বিভিন্ন মাত্রার শাস্তির ব্যবস্থা। বিচিত্র গুনাবলিতে পারদর্শী বন্ধুদের সাথে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। ক্রিম ইফতি, বোতল রুমি, সক্রেটিস মিলন, কুজ সোবহান৷ জমে ওঠে তাদের মিথস্ক্রিয়ায় বিচিত্র সব কর্মকান্ড। দিন যত পার হয় নিয়ম ভাঙ্গার রোমাঞ্চ তত প্রবল হয়ে ওঠে। সেসব কর্মকান্ড ছুয়ে যায় আমাদের শৈশবকেও। চোখে ভেসে থাকে রঙিন সব স্বপ্ন।শফিক স্যার এসে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয় বাস্তবতার সঙ্গে। খাকি চত্বরের জীবন শেষ হয় বিষন্নতার প্রলেপ দিয়ে। শেষ অংশটা ভয়ে ভয়ে পড়েছি।
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews194 followers
May 6, 2023
সুলেখনী সন্দেহ নেই। কিন্তু সবটাই কি সত্যি? কে জানে! সত্যি হোক বা মিথ্যে লেখার অনেককিছুই ভাবার মতো সন্দেহ নেই। ডেড পোয়েটস এর সাথে এতটা মিল কেন? নাকি সমস্ত বোর্ডিং জীবনই এমন? হয়তো তাই।
Profile Image for সাদমান হুসাইন.
155 reviews36 followers
March 16, 2017
লেখকের ক্যাডেট লাইফের কাহিনী।

প্রথমেই কেমন জানি একটা খটকা লাগলো, নিজেদের খোঁয়ারি বলছেন কেনো ভেবে। খোঁয়াড় শব্দটা তো আমরা ব্যবহার করি চারপেয়ে প্রানীদের জন্যে, কিছুটা নেগেটিভ অর্থে। পড়ার পরেও বুঝলাম না কেন দেয়া হয়েছে নামটা, পরে এই গুডরিডসে এসে জানলাম শব্দটার আসল মানে কি। Hangover বা স্বপ্নালুতা টাইপের কিছু বুঝিয়েছেন লেখক।

বই শেষে খটকাটা দূর হলো কিছুটা, নানা সুখ দুঃখের অনুভূতি থেকেই এই নাম দিয়েছেন লেখক।

ক্যাডেট লাইফ নিয়ে আগ্রহ ছিলো কিছুটা বলেই কেনা। বাপে এককালে জোর করে এক্সাম দিতে বাধ্য করসিলো, বলাবাহুল্য তেমন ইচ্ছা ছিলো না বলে এক্সামের খাতায় কিসব লিখে দিয়ে চলে আসছিলাম। এই বই পড়ে সেই কৌতুহল মিটলো, আর আল্লাহর কাছে শুকর করে আসলাম যে আমি যাই নাই ঐ খাকি চত্বরে। ঐ নিয়মের জীবন আমার জন্যে না।

এতো বেশি ভালো লাগে নাই, তাই রেটিং কম দিলাম। কারো এই টপিক নিয়ে, এই লাইফ নিয়ে আগ্রহ থাকলে পড়ে দেখতে পারেন। এমন কোন টানটান উত্তেজনার স্টোরিলাইন নাই এই বইয়ে, বদলে পাবেন এক চত্বরে নিয়মের চক্করে বন্দি কিছু কিশোরের কথা, যাদের মন আকাশে উড়ে কাব্যের ডানায়।
Profile Image for Arnab Paul.
62 reviews119 followers
March 18, 2015
ছোট ছোট অধ্যায়ে ভাগ করা অনুচ্ছেদ।অত্যন্ত সাবলীল ও সুখপাঠ্য ভাষা। বিশ্লেষণে শাহাদুজ্জামান বরাবরের মতোই 'রিজনিং' করতে চেষ্টা করেছেন প্রতিটা ঘটনার।ক্যাডেট জীবন নিয়ে লেখকের নিজস্ব দৃষ্টি,অনুভূতি,আক্ষেপ, আনন্দ খুঁজেছেন বইটাতে। একবসায় শেষ করা অত্যন্ত সুখপাঠ্য বই।
Profile Image for Soumik.
83 reviews17 followers
October 18, 2020
বেল্ট-বুট-জুতা, সামরিক কানুন এবং কাঁটাতার ঘেরা ক্যাম্পাসের স্মৃতিকাতর শাহাদুজ্জামান এই বইটাতে ঘটনাক্রমিক বলে গেছেন খাকি চত্বরে কাটানো তার দিনগুলোর কথা। লিখেছেন এই কঠোর শাসনতন্ত্রের মাঝেও কিভাবে তিনি কাটিয়েছেন কৈশোর। এটা বলতে পারি যে বইয়ের শেষটা মন খারাপ করে দেয় আর ক্যাডেট কলেজগুলো যতোই ভালো রেজাল্ট করুক না কেনো, আদতে এগুলো ছাত্রদের তৈরী করে দেশের ভেতরে আরেক আলাদা ভূখন্ডে যেখানে তারা জানেওনা তাদের এই গন্ডির বাইরে কি হচ্ছে। এই অমানবিক জীবনযাপন কোনো সপ্তম শ্রেণীর বাচ্চাই ডিজার্ভ করে না।
Profile Image for Muntasir Dhip.
165 reviews4 followers
July 6, 2024
খাকি চত্বরের খোয়ারি নামটার মতোই বইটার প্রেক্ষাপট। শাহাদুজ্জামানের লেখনীতে মুগ্ধ একই সাথে বিমোহিত হয়ে পড়েছি। মিলনের জন্য খারাপ লাগছে খুব।💔
Profile Image for Sayeed Shihab.
Author 11 books38 followers
May 20, 2016
আর দশটা কিশোরের চেয়ে একজন ক্যাডেটের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণই আলাদা। যে বয়সটা উড়ে বেড়াবার, উচ্ছলতায় মেতে উঠবার, সে বয়সেরই কিছু কিশোরকে বাছাই করা হয় খাঁচায় বন্দি করতে। সামরিক নিয়মের বেড়াজালে তারা বড় হতে থাকে নেতা তৈরির কারাগারে। আপাতদৃষ্টিতে ক্যাডেট জীবন যতটা নিয়মমাফিক, পানসে মনে হোক না কেন, ক্যাডেটদের জীবনও কম ঘটনাবহুল নয়। তেমনই কিছু ঘটনার সন্নিবেশ ঘটেছে আত্মজীবনী মূলক উপন্যাস 'খাকি চত্বরের খোয়ারি' তে। ক্যাডেট কলেজের জীবনধারা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহলের কমতি নেই। তার কিছুটা মেটাতে সক্ষম 'ক্রাচের কর্ণেল' খ্যাত কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের এই উপন্যাসটি। ক্যাডেট কলেজের উৎপত্তির ইতিহাস থেকে শুরু করে একজন ক্যাডেটের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা সম্পর্কে যেমন ধারণা পাওয়া যায় এই বইটি থেকে, তেমন ক্যাডেট হিসেবে একজন কিশোরের মনস্তাত্ত্বিক দিকটাও ফুটে ওঠেছে চমৎকারভাবে। লেখক তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তার ছয় বছরের ক্যাডেট জীবনকে বিচার করেছেন, যা একটা বিশাল চিত্রকর্মের খন্ডচিত্র মাত্র। পড়তে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, ক্যাডেট জীবন সম্পর্কে লেখক তার নিজস্ব ধ্যানধারণা নিয়ে নিজেই সন্দিহান। পুরো বই জুড়ে তার মানসিক দোলাচল চোখে পড়ে স্পষ্টই। একদিকে ব্যতিক্রমী ক্যাডেট জীবনের প্রতি টান, অন্যদিকে বন্ধু মিলনের করুণ পরিণতির পেছনে ক্যাডেট কলেজকেই দোষারোপ। আত্মজীবনীগ্রন্থ হলেও বইয়ের শেষদিকে এসে মিলনই যেন মূল চরিত্র হয়ে ওঠেছে। তার চিন্তাভাবনার সাথে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে লেখক যেন অজান্তেই নিজেকে প্রকাশ করেছেন। বস্তুত মিলনের চিন্তাভাবনা লেখককে প্রভাবিত করেছিল অনেকখানি। জীবন সম্পর্কে তাকে নতুন করে ভাবতে শেখায় মিলন, যার ছাপ রয়ে যায় তার পরবর্তী জীবনে।
Profile Image for Farhana.
325 reviews202 followers
March 7, 2017
আমার ক্যাডেট কলেজে পড়ার অনেক শখ ছিল । কিন্তু তখন একমাত্র সন্তানকে ছাড়া আব্বু-আম্মু থাকতে পারবে না বলে ক্যাডেট ভর্তি কোচিং করেও পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় নি _

লেখকের ক্যাডেট কলেজের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বইটার সিগনিফিক্যান্ট দিক হল গল্পের পাশাপাশি ইন্সটিটিউশনের আইন কানুনে সমালোচনার দিকগুলোকেও তুলে ধরেছেন।

আমরা কেন একটা ইনস্টিটিউশনে আসতে চাই, এসে কী পাই, এখান থেকে বের হবার সময় আমাদের প্রত্যাশা গুলো কতটা মিলে আর মিলে না আর যা পাই বা পাই না তা দিয়ে কী করি বা করি না, করতে পাই বা করতে পাই না ~

Institutional tags, cream of the society these labels may help us gather the "Brilliant MindS" but it's difficult to find "A Beautiful Mind".
Profile Image for Subrata Das.
164 reviews19 followers
February 2, 2024
ক্যাডেট কলেজে পড়ার ইচ্ছা কখনও জাগে নি , তবে ঐ শৃংখলাবদ্ধ জীবন নিয়ে একটা আকর্ষণ সবসময়ই ছিল।

বইটিতে লেখক খাকী চত্বরে তার শুরুর দিনটি থেকে শেষের দিন পর্যন্ত নানা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গেছেন অনেকটা সাক্ষাৎকারের মতো করে।

ক্লাস সেভেন থেকে ক্লাস টুয়েলেভ এই সময়টা মানুষের শিশু থেকে যুবকে পদার্পনের একটা সময়কাল। যেন লার্ভা থেকে প্রজাপতি হওয়ার মধ্যবর্তী সময়। সাধারণ কিশোরদের স্কুল, পরিবার বন্ধু বান্ধব নিয়ে নানা বৈচিত্রে এই সময়টা পার হয়। কিন্তু ক্যাডেটদের ব্যাপার আলাদা। তাদেরকে পুরো পৃথিবী দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে প্রশিক্ষণ অথবা দেওয়া হতে থাকে। তাদের সবচেয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার যজ্ঞে আহুতি পড়ে তাদের কৈশোরের স্বাধীনচেতা প্রবৃত্তির, আকাশে ডানা মেলে উড়ার স্বপ্নগুলোর। যাদের লক্ষ্য ভাল ক্যারিয়ার, ভাল ইনকাম, ক্ষমতার সাহচার্যময় সফল জীবন তারা এই ত্যাগে বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় না, বরং পায়ের শিকলকে নুপুরের মতো ভালোবাসে। তবে ভাগ্যদোষে মিলনের মত কেউ কেউ এই চত্বরে আটকা পড়ে যারা খাকী পড়া মেঘ, যারা জীবনে সফল হতে নয় বরং জীবনটাকে যাপন করতে চায়, উপলব্ধি করতে চায়। এদের জন্য খাকী চত্বর একটা বিশেষায়িত জেলখানা ছাড়া কিছুই নয়।

তবে বইটাতে ক্যাডেট কলেজের দুর্নাম করা হয়েছে এমন না, লেখক তার ছোটবেলার এই প্রতিষ্ঠানকে অনেক ভালোবাসেন। মূলত বাধা ধরা শৃংখলাবদ্ধ জীবন কিশোর মনের উপর কিরূপ প্রভাব ফেলে তা-ই উঠে এসেছে এই বইটিতে
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
March 3, 2020
বই: খাকি চত্বরের খোঁয়ারি
লেখক : শাহাদুজ্জামান

বইয়ের নাম দেখে প্রথমেই আমার চক্ষু চড়কগাছ। এ আবার কি রে!! খাকি তো খাকি... সে না হয় বুঝলাম কিন্তু সেখানে আবার খোঁয়ার-টোয়ারের কথা আসবে ক্যান? এটা আবার কি ধরণের বই...

মুহূর্তের মাঝেই একগাদা প্রশ্ন খেলে গেল মাথার মাঝে। সব প্রশ্নের উত্তর পাবার জন্য অবশ্যই আমার বইটা পড়তে হবে। বইটা আসলে আত্মজীবনী টাইপের। লেখকের স্কুল আর কলেজ জীবন নিয়ে লেখা। শৈশব - কৈশোরের স্মৃতি বলা ভাল স্কুল কলেজের স্মৃতির কথা বলা শুরু হলে সেটা শেষ হবার নয়... কিন্তু এখানে লেখক কনফিউজড। তাঁর শৈশব-কৈশোর কি আদৌ আনন্দময় ছিল? অবশ্য যারা কঠিন নিয়ম- শৃঙ্খলার মাঝে আবদ্ধ থেকে সৈনিকসুলভ মনোভাব নিয়ে পড়াশুনা করেছে তাদের জন্য মিষ্টি শৈশব-কৈশোরের কথা চিন্তা করা একটু কষ্টদায়কই বটে!

দেশ স্বাধীন হয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। লেখকের মামা খবর আনলেন ক্যাডেট কলেজ বলে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে... যেখানে পড়ার সুযোগ পেলে জীবন আক্ষরিক অর্থেই অন্যরকম হবে। লেখকের বাবার বদলীর চাকুরি.. বছর বছর স্কুল পরিবর্তনের হ্যাপা... তাই লেখক তখনকার আমলেই সেই খাকি চত্বর মানে ক্যাডেট কলেজে পড়ার টিকেট পাবার জন্য নামলেন ভর্তিযুদ্ধে। গল্পের নায়ক বলে কথা! যুদ্ধে জয়ী হলেন। শুরু হল তাঁর নতুন জীবণ...

দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মেধাবী সব ছেলের সমাবেশ ঘটল এ চত্বরে। যেহেতু এদের মাঝ থেকেই উঠে আসবে দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার.. সেহেতু সেই ছাঁচে তাদের গড়ে তোলাটাই হল খাকি চত্বরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। প্রথমেই মুছে ফেলা হল তাদের নাম-ধাম। সবার পরিচয় স���খ্যা দিয়ে... এক পোশাক... এক হেয়ার স্টাইল... সব কিছুই এক। কে ধনী, কে গরীব... কোন ভেদাভেদ নেই। তারা সবাই ক্ষুদে খাকি। কঠিন নিয়ম শৃঙ্খলা আর নিয়মানুবর্তিতার মধ্য দিয়ে শুরু হল তাদের কৈশোরটা...

কিন্তু দুরন্ত কৈশোরকাল কি আর সেটা মানে? কঠিন নিয়মের ফাঁক গলেই হত নানা রকম দুষ্টুমি... এডভেঞ্চার। যেখানে পান থেকে চুন খসলে ভোগ করতে হত না রকমের নানা বর্ণের গুরু / লঘু শাস্তি... সেখানে এডভেঞ্চার করতে যেয়ে ধরা খেলে কি হত তা বলাই বাহুল্য।

লেখক সেখানে ছিলেন একজন অবজার্ভার হিসেবে... খাকি চত্বরে তিনি থেকেও যেন নেই। লেখক প্রশ্নোত্তরের মত করে আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন তাঁর সেই সব দিনগুলোর কথা। বাংলা-ইংরেজি-আরবীর মিশেলে অদ্ভুত এক জগতের কথা... এ যেন চিরপরিচিত গ্রহের মাঝে অন্য এক গ্রহের প্রতিচ্ছবি। দেশের ভিতর আরেক দেশ। সেই দেশ হল খাকিদের চত্বর। যে চত্বরে জন্ম নেয় আশা, সুখ কিংবা আনন্দ আবার ধ্বংস হয়ে যায় কারো কারোর স্বপ্ন - আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা। সেই সুশৃঙ্খল জীবনেও আছে বন্ধুত্ব, সহমর্মিতা । একের সাথে অপরের আত্মার টান। যে বাঁধন ছিঁড়বার নয়। আছে উড়ন্ত- দুরন্ত কৈশোরের নানা দু:সাহসিক কাজ কারবার। ক্ষমতা যেখানে সবাইকে শাসন করে সেখানে নিয়ম ভাঙ্গাটাই হয়তো ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে প্রতিবাদ জানানোর পন্থা। খাকিরা সেসবও করে। এভাবেই হাসি-কান্নার মধ্য দিয়ে খাকিদের জীবন চলে। গড়ে উঠতে থাকে ভবিষ্যতের কর্ণধারেরা।

কৈশোরকাল... একতাল কাদামাটির মতো... যেভাবে গড়তে চান গড়ে উঠবে সেভাবেই... কিন্তু খাকিদের সেই চত্বর বড় অদ্ভুত। তারা না সৈনিক না কিশোর। লেখকের ভাষ্যমতে, খাকি চত্বর কেড়ে নিয়েছে তার আনন্দময় কৈশোর তাই বলে বিনিময়ে কিছুই দেয়নি? চত্বর ছেড়ে চলে যাবার দিন কিংবা বৃদ্ধ বয়সের এক অলস বিকেলে বন্ধুদের সাথে লেখকের ছবি হাতে নিয়ে উপলব্ধি করেছেন অনেক কিছুই... তাঁরই অংশবিশেষ - #খাকি_চত্বরের_খোঁয়াড়ি

#বই_হোক_অক্সিজেন
#Happy_reading
Profile Image for Adham Alif.
334 reviews80 followers
April 18, 2023
শাহাদুজ্জামান তার ক্যাডেট জীবনের স্মৃতির আশ্রয় নিয়ে লিখেছেন "খাকি চত্ত্বরের খোয়ারি"। ক্লাস সেভেন থেকে টুয়েলভ পর্যন্ত প্রায় ছয় বছর, কম তো নয়। কৈশোরের এক দুরন্ত সময়টাতে ঘটে যাওয়া স্মৃতিবহুল ঘটনাই নানান আঙ্গিকে উঠে এসেছে লিখায়। তবে সবগুলো ঘটনা ও চরিত্র একদম হুবহু সত্য নয়। স্মৃতির সঙ্গে সেসময়কার ভাবনার মিশেলে চরিত্রদের সাজিয়েছেন তিনি। শাহাদুজ্জামানের লিখা এতোটাই সরল এখানে যে কাল্পনিক চরিত্র আছে তা ধরা যায়না। এটা আমি জেনেছি তার আত্মকথন পড়তে গিয়ে। পুরো বইতেই একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে ক্যাডেট সময়কালের অনুভূতিগুলো নিয়ে শাহাদুজ্জামান দ্বিধায় ছিলেন। এ প্রসঙ্গে নেমেসিসের একটা গানের লাইন মনে পড়ে গেল,

"কল্পনা আর বাস্তবতা মিলেমিশে একাকার
অনুভূতি প্রতিনিয়ত নতুন কোনো আবিষ্কার"
Profile Image for Shuvo.
84 reviews3 followers
July 12, 2024
শাহাদুজ্জামানের লেখা পড়ার সময় আমার মস্তিষ্কের একটা পার্ট সদা-সতর্ক অবস্থানে থাকে। কারণ খুব ভালো একটা সম্ভাবনা থাকে যে তার লেখার কোনো একটা পার্টে গিয়ে 'নিরুপম বিষন্নতা'র সঙ্গী হতে হবে।  

স্কুল-হাইস্কুলে লোনার থাকায় খুব একটা রিলেট করতে পারি নাই,  কিন্তু সম্পূর্ণ ব্যাপারটা অন্যের চোখে দেখতেছিলাম।  আবির ভাইয়ের মুখে ক্যাডেট কলেজের কথা এতবার শুনেছি,  পড়তে পড়তে ওনার আর নাইম ভাইয়ের চেহারা ভেসে উঠতেছিলো বারবার...সাথে Dead Poets Society এর ভাইব...।  

বইটার এন্ডিং, বিষয়বস্তু, বিশেষ ঘটনা ইত্যাদি আলোচনার বদৌলতে আগে থেকেই জানতাম। কিন্তু তার পরেও পড়া শেষে কোনো একটা বিষন্ন প্রজাপতি গা ছুয়ে বসলো।
Profile Image for Arifur Rahman Nayeem.
205 reviews107 followers
September 15, 2024
আগের রাতে ক্যাম্পাসের একজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় আর পরের দিন সকালে পাসিং আউট প্যারেডসহ আরও নানান আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? আচ্ছা, ধরলাম কঠিন নিয়মনীতি আর সময়ানুবর্তিতা মেনে চলা ক্যাডেটে অস্বাভাবিক নয় এমন কিছু। কিন্তু সহপাঠী হারানোর অল্প কয়েক ঘণ্টা পরেই ছাত্ররা হৈচৈ করে, হাসিমাখা মুখে ছবি তুলবে—এটা ঠিক নেওয়া গেল না।

‘খাকি চত্বরের খোয়ারি’কে আমার মনে হয়েছে অনেকটাই স্মৃতিগদ্য। যার সঙ্গে লেখক বেশ খানিকটা কল্পনার রঙ মিশিয়েছেন। শাহাদুজ্জামান ক্যাডেটের ছাত্র ছিলেন। মিলন নামের এক বন্ধু আজও তাঁর সকল লেখাজোখার পাঠক ও পরামর্শদাতা (এ বিষয়ে কোথায় পড়েছিলাম, তা এই মুহূর্তে মনে নেই)। অর্থাৎ মিলন এখনো জীবিত। আবার মিলনের মধ্যে যে জীবনানন্দ-মুগ্ধতা দেখানো হয়েছে তা লেখকের নিজের বলে আমার মনে হলো।

দেখা থাকলে বই পড়তে পড়তে হলিউড সিনেমা ‘ডেড পয়েটস্ সোসাইটি’র কথা বেশ কয়েকবার মনে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয় কিন্তু!

খাকি চত্বরের খোয়ারি না হয়েও বইয়ের চরিত্রগুলোর অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ভালোভাবেই রিলেট করতে পেরেছি। মিলনের মৃত্যুর কারণ আরেকটু জোরালো এবং মৃত্যু পরবর্তী অন্যদের প্রতিক্রিয়া বাস্তব করে দেখাতে পারলে ফোর স্টার দেওয়া যেত।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
September 13, 2020
কৈশোরের নিয়ম আর নিয়মভাঙ্গার মত্ততার গল্প 'খাকি চত্বরের খোয়ারি'। কঠোর শৃঙ্খলা আর কড়া নজরদারির ভেতর দেয়াল আর কাঁটাতার ঘেরা এক আধাসামরিক প্রতিষ্ঠানে চকচকে বুট আর খাকি পরা কতিপয় কিশোরের গল্প চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে শাহাদুজ্জামানের সাবলীল লেখনীতে।
Profile Image for Koushik Ahammed.
150 reviews12 followers
June 14, 2020
কিছু ভালো লাগার খবর আছে যেগুলো হিংসার জন্ম দেয়। শাহাদুজ্জামানের শৈশবের গল্প মনের ভিতর হিংসার জন্ম দিয়ে গেল। আহা!! কতটা প্রানবন্ত কতটা ঘটনাবহুল শৈশব ছিল!!!

তবে শেষটায় মনটা বিষাদময় হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল এই মিলন তো আমার পরিচিত। যেই মিলন সাইকেলে চড়ে বিশ্বভ্রমণের স্বপ্ন দেখে। সেই মিলন এইভাবে মিলিয়ে যায় তা কী করে হয়???
Profile Image for হাসান নাহিয়ান নোবেল.
105 reviews169 followers
January 14, 2018
কিছু মানুষের একটা ছেলেমানুষী স্বভাব আছে—কোনো শব্দের প্রতি যদি বিতৃষ্ণা আসে—তাহলে যত যা-ই হোক না কেন—তারা লেখার মাঝে সেই শব্দ ব্যবহার করে না। এবং ঠিক তখনই মজার কিছু শব্দ আকাশ থেকে নেমে আসে। এবং আশ্চর্য এই যে, শব্দগুলো ভালোও লাগে পড়তে। চেনাজানা শব্দটাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে কিম্ভুতকিমাকার একটা শব্দ যখন জুড়ে বসে—তখন কেন সেই বিদ্‌ঘুটে শব্দটাকে ভালো লাগে—কে জানে। বোধহয় এখানে মায়ার একটা ব্যাপার আ���ে।

ক্যাডেট-জীবন নিয়ে লেখা একটা বই—অথচ পুরো বইতে একটিবারও লেখক "ক্যাডেট" শব্দটা উচ্চারণ করেননি। মাইরি শাহাদুজ্জামান, সাবাস!

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে, বইয়ের গল্পটা মোটামুটি সাদামাটা হওয়ার কথা। ক্যাডেটেই তো পড়েছেন—সে তো কত মানুষই পড়ল-গেল। আবার এমনও না যে, ক্যাডেটে পড়ার সময়কার অপার্থিব একেকটা ঘটনা বইতে এসেছে। মোটেও না। একশোভাগ, এবং তার উপরে আরও দু ভাগ পার্থিব কাহিনী নিয়ে লেখা বই—একটা বাচ্চা ক্যাডেটে ঢুকলো, কিশোর বয়সে আর দশটা ছেলে যা করে—তা-ই করল, প্রয়োজন অনুসারে ধাক্কা খেল, আবার দরকারমত সোজা হয়ে দাঁড়াল—এ আর নতুন কী।

কিন্তু...আমি জানি না কেন, কিন্তু এই বইটার মধ্যে কিছু একটা আছে—যেকারণে আমার মত কিপ্‌টে পর্যন্ত পাঁচে পাঁচ দিতে বাধ্য হচ্ছে।

আরিফ গাধাটা আমার হাতে এই বই ধরিয়ে দিয়েছিল। দিয়ে খানিকক্ষণ চেঁচামেচিও করেছিল এই বলে যে, শাহাদুজ্জামানের বই হাতে নিয়েও আমি ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলছি না কেন। গাধাটাকে বেশ বকেছিলাম সেদিন। কিন্তু...ময়মনসিংহের কোনো এক পুকুরপাড়ে বসে বইটা যখন শেষ করছি—তখন একের পর এক ধাক্কা খেয়ে আমার নিজেরই ফিক করে কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল। কেবল "ফিক" করে কাঁদা যায় না দেখে, কিংবা গেলেও বাইশ বছরের একটা ছেলে পুকুরপাড়ে বসে কাঁদলে সমাজে ঢিঢি পড়ে যাবে দেখে আমার নিজেকে সামলাতে হয়েছে।

তবু, মিলনের গল্প, তার "আলো অন্ধকারে যাই", সেই পুরনো বোধ, আবারও অন্ধকার রেললাইন ধরে হাঁটাহাঁটি—আমি নিজেকে ওখানে খুঁজে পাচ্ছি, আর সবকিছু আমাকে যেন পাগল করে দিচ্ছে, আমার চিন্তাভাবনা এলোমেলো করে দিচ্ছে। মাত্র শ'খানেক পৃষ্ঠার একটা বইয়ে শাহাদুজ্জামান এই খেলা দেখাবেন—কে জানতো।

লোকটার প্রতি শ্রদ্ধা মোটামুটি এক্সপোনেনশিয়াল হারে বাড়ছে।
Profile Image for Ridwan Anam.
126 reviews101 followers
June 12, 2016
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো বই।
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
December 17, 2019
"সমাপ্ত" শব্দটার আগে এমন একটি লাইন না থাকলেই মনে হয় ভাল হত।
কেমন এক বিষণ্ণতা ঘিরে ধরল শেষ করার পর
Profile Image for Chandreyee Momo.
219 reviews30 followers
September 15, 2025
আমার পড়া অন্যান্য যেকোন বইয়ের তুলনায় এই বইটা বেশ আলাদা। লেখকের লেখা আলাদা করে খুব ভাল আমার সবসময় লাগে। প্রতিটা বাক্য এমনভাবে ভাবায় পাঠককে যে একদম ডুবে যেতে ইচ্ছে করে লেখার ভিতরে।
এই বইটায় তিনি তার জীবনেরই একটা অংশ ক্যাডেট কলেজের সময়কার কথা লিখেছেন। খাকি চত্বরে প্রথম দিন ঢুকে পড়ার পর থেকে শেষ দিন পর্যন্ত স্মৃতিগুলোকে সুন্দর করে একদম অন্যরকম ভাবে সাজিয়ে লেখা। বাইরের একটা বিশাল দুনিয়া থেকে নিয়মের বেড়াজালে খাকি চত্বরে আটকে থাকা, পড়াশোনা, খাওয়া, প্যারেড, ঘুম এসব কিশোর মনের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। বইটা পুরো সময় আমাকে আটকে রেখেছে পড়ার প্রতি। প্রথম অংশে নতুন নতুন নিয়মের গল্প, এরপর নিয়ম ভাঙার গল্প, নানান রকম স্মৃতি। শেষদিকে এসে অদ্ভুত মন খারাপ।
খুব ভাল লাগলো বইটা।
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
August 2, 2025
খাকি চত্বরের খোয়ারি
এটা মূলত একটা স্মৃতিকথা। ফেলে আসা এক জীবন যেখানে কঠোর নিয়মের মধ্যে দূরত্ব শৈশব কিভাবে আটকে পড়েছে তার গল্প।
Profile Image for Abdullah Imran.
27 reviews47 followers
May 3, 2016
১. পড়লাম কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের ক্যাডেট কলেজ নিয়ে স্মৃতিগাঁথা 'খাকি চত্বরের খোয়ারি'।ক্যাডেট কলেজ,নটরডেম কলেজ ও বুয়েট নিয়ে আমার অদ্ভুত রকমের একটা ফ্যাসিনেশান আছে।কিন্তু এর একটাতেও আমার পরীক্ষা দেওয়া হয়নি pacman emoticon এর আগে ক্যাডেট কলেজ নিয়ে লেখা ফাহমিদুল হকের একটা বইয়ের কথা লিখেছিলাম গ্রুপে-ইঁদুরের দেশে বেড়াল হয়ে।ঐ বইটা কেবলই ছিল ক্লাস সেভেনে পড়া এক ক্যাডেটের গল্প।কিন্তু এবারেরটা শাহাদুজ্জামান বলে কথা।তাই উনার লেখাটা বইটাও হবে অন্যরকম।একেবারে ক্লাস সেভেন থেকে টুয়েলভ ক্লাস পর্যন্ত।এমন চমৎকার বর্ণনা যে পাঠকের নিজেরই নিজেকে ক্যাডেট কলেজের একজন মনে হবে।মনে হবে আরে আমিও তো ক্যাডেট!লেখকের মুনশিয়ানাতে কেবল 'আমি আমি' টাইপের বই না হয়ে পুরো বইটাই ক্যাডেট কলেজের ক্যানভাস হয়ে গেছে।লেখকের বন্ধু-সহপাঠিদের বর্ণনাও একেকটা গল্প হয়ে গেছে।সেখানে দুর্দান্ত সাহসী রুমি আছে,ব্লু ব্লাডের অধিকারী ইফতি আছে।আবার আছে 'সক্রেটিস' ও সাহিত্যমনা মিলন কিংবা 'ন্যাত্রকোনার' এক দরিদ্র কৃষকের সন্তান সোবহান যার বাবা প্যারেন্টস ডেতে সন্তানকে লুঙ্গি পড়েই দেখতে আসেন। লেখকের পছন্দের-অপছন্দের স্যারদের বর্ণনা যেমন আছে তেমনি ট্রেইনার আর সামরিক কর্মকর্তাদের বুটের আওয়াজ পাওয়া যায়।
২.এই যে নানা শ্রেণীর ছেলেরা সন্তানরা যে তখন ক্যাডেট কলেজে পড়ত,ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে।কেবল মেধার জোরে এরা শহরের সব ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে এমন জায়গায় পড়তে এসেছে।এটা স্বাধীনতার মাত্র দুই বছর পরের ঘটনা।এটা হয়ত বড়জোর নব্বই দশকের শুরু পর্যন্ত ছিল।এখন বোধহয় এটা চিন্তা করাও অনুচিত।শ্রেণী ব্যবধান ও মফঃস্বলের স্কুলগুলোর গুণগত মানের ব্যবধান এতটাই প্রকট।
৩.ক্যাডেট কলেজের কড়া নিয়ম শৃঙ্খলার মাঝেও কৈশোরের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস জায়গা করে নেয়।অব্যাহত চেষ্টা থাকে নিষিদ্ধ ফলের স্বাদ আস্বাদনের।চলে নিয়ম ভাঙ্গার পাঁয়তারা।তাতে এডভেঞ্চার থাকে।আবার কলেজ থেকে বহিষ্কারের আশংকাও থাকে।কখনো সখনো সফল হওয়া গেলেও লেখকের বন্ধুদের কাউকে কাউকে কলেজের পাঠ শেষ হওয়ার আগেই কলেজ ছাড়তে হয়েছে।
৪.এমন কড়া পরিবেশ যখন ক্যাডেট কলেজের ভিতরে,তখন দেশ কিন্তু উত্তাল।সামরিক অভ্যুত্থান আর পালটা অভ্যুত্থানে দেশ টালমাটাল।এর কিছু ধাক্কা কলেজেও লাগে।কলেজে মিলিটারি সায়েন্স পড়া ছাত্রদের জন্য মজুদ রাখা অস্ত্র থেকে অস্ত্র চুরি করবার সময়ে ধরা পড়ে কলেজ থেকে বহিস্কার হতে হয় এক 'সর্বহারা' ছাত্রকে।কলেজের ছাত্রদের সহপাঠীদেরকে বাঁচানোর আন্দোলন সামাল দিতে হাজির হন মেজর জেনারেল।
৫.এর মধ্যেই হাজির হন শফিক নামে এক তরুণ শিক্ষক।যিনি খাকি চত্বরের ভিতরে থেকেই নিয়ম ভাঙ্গার ডাক দেন।অনুসন্ধানিতসু মনকে উস্কে দেন।ফলশ্রুতিতে চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে হয় তাকে।কিন্তু সেই আলোড়ন এর ছায়া থেকেই যায়।লেখক ও তাঁর দার্শনিক বন্ধু মিলন এক দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নেন।
৬.বইয়ের অনেকটা জুড়েই আছে এই বিচিত্র চরিত্রের মিলন।যার বাবা চায় সে একজন সামরিক কর্মকর্তা হোক। কিন্তু সে চায় পর্যটক হতে।কিশোর মনের বিচিত্র টানাপড়েন আর কঠিন পারিপার্শ্বিকতার কারণে সে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবেই।কিন্তু এই ক্ষুদে দার্শনিক শেষমেশ কোথায় গিয়ে ঠেকে,সেটা জানার জন্য বইটা পড়তেই হবে।আমি আশ্বস্ত করছি বইটা মন্দ লাগবে না।বইয়ের শেষটা জানিয়ে পড়ার আনন্দ নষ্ট করতে চাই না।যদিও বইয়ের শেষটা জানাতে হাত নিশপিশ করছে grin emoticon
৭.এবার আমার কিছু 'ছোটলোকি' কথাবার্তা।বইয়ের প্রকাশক বেঙ্গল ফাউন্ডেশান।যারা এদের বই পড়েন,তারা জানেন কেমন আগুনদাম তাদের বইয়ের।তারা ভালো বই প্রকাশ করে ঠিক।তবে এত দাম দিয়ে বই কেনাটা সত্যিই কষ্ট হয়ে যায়।বইয়ের সাজসজ্জা বা কাগজ আরেকটু খারাপ দিলে বইয়ের মান পড়বে না কিন্তু দামও নাগালে থাকবে।
Profile Image for পটের দুধের কমরেড.
209 reviews25 followers
August 12, 2023
কতটুকু বাস্তবতায় কত মি.লি কল্পনা মেশানো হয়েছে সেটা ভাবনা বহির্ভূত। বইটা শুরু করেছিলাম নেহাৎ হাতের কাছে কোনো বই নেই দেখে। ক্যাডেট নিয়ে আমার খুব অনাগ্রহ৷ কারণটা ঠিক জানা নেই; অনুসন্ধানে ব্যর্থ৷ তাই, অন্যতম প্রিয় লেখক শাহাদুজ্জামানের ক্যাডেট জীবনের স্মৃতিকথায়ও কান পেতে দিতে ভীষণ অনীহা ছিল। কিন্তু শুরু করে আবারো মুগ্ধ হলাম, (হতেই হতো!) লেখকের অদ্ভুতভাবে গল্প শোনানোর কায়দায়। স্মৃতিতে ভর দিয়ে শাহাদুজ্জামান বলতে থাকলেন ক্যাডেট জীবনের সোনালী / ধূসর দিনকালের কথা। মাঝেমধ্যে সমালোচনা করলেন পুরো ব্যবস্থাপনার৷ শুনতে থাকলাম তন্ময় হয়ে...

[ মিলন চরিত্রটা বাস্তব কিনা জানা নেই। "আট বছর আগের একদিন" কবিতার অঙ্কে মিলনের 'বিপন্ন বিস্ময়' জীবনকে এক ছকের ভেতর বাঁধাটা বেদনামধুর। ]
Profile Image for Shuhail Hussain.
2 reviews
Read
May 5, 2020
বইটি মূলত লেখক শাহাদুজ্জামানের আত্নজৈবনিক বই। এ বইয়ে লেখক তার খাকি জীবন তথা ক্যাডেট থাকাকালীন জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। বইটি শুরু হয় একটি ছবির বর্ণনাকে কেন্দ্র করে। সেই ছবিতে দেখা যায় শুধু একজনের গায়ে খাকি পোশাক নেই এবং লেখকের এক ক্যাডেট বন্ধু অনুপস্থিত। পরবর্তীতে শেষের দিকে এই রহস্য উন্মোচিত হয়।
Displaying 1 - 30 of 73 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.