Hasan Azizul Huq (Bengali: হাসান আজিজুল হক) is a Bangladeshi writer, reputed for his short stories. He was born on 2 February, 1939 in Jabgraam in Burdwan district of West Bengal, India. However, later his parents moved to Fultala, near the city of Khulna, Bangladesh. He was a professor in the department of philosophy in Rajshahi University.
Huq is well known for his experiments with the language and introducing modern idioms in his writings. His use of language and symbolism has earned him critical acclaim. His stories explore the psychological depths of human beings as well as portray the lives of the peasants of Bangladesh.
He has received most of the major literary awards of Bangladesh including the Bangla Academy Award in 1970.
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে অসাধারণ সাতটি গল্প। খুব বেশি ভালো লাগার গল্পগুলোর মধ্যে কৃষ্ণপক্ষের দিন, নামহীন গোত্রহীনে ধরা পড়ে যুদ্ধের বীভৎসতা আর ফেরা, ঘরগেরস্থি এই গল্পগুলোতে উঠে আসে যুদ্ধ পরবর্তী কনফিউশন। ছোটগল্পে যুদ্ধকে এত ভালোভাবে তুলে ধরতে আর কাউকে এখনো দেখিনি।
ভূষণের একদিন গল্পে গ্রামে পাকসেনার আগমণ দিয়ে বইটা শুরু। পরবর্তী গল্প নামহীন গোত্রহীন এ আমরা দেখতে পাই হানাদার বাহিনীর আতঙ্কে শহর ফাকা হয়ে যায়। কৃষ্ণপক্ষের দিন আমাদের দেখায় যুদ্ধক্ষেত্রে কিভাবে লড়াই করেন কিশোর থেকে মাঝবয়েসী বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আটক গল্পে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণে হানাদার বাহিনীর পিছু হটার এবং একই সাথে তাদের ভেঙে পড়ার চিত্র আমাদের চোখে ভাসে। পরের গল্প কেউ আসে নি তে দেশ স্বাধীন করা দুইজন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তৈরি হওয়া সংশয় এর কথা বুঝতে পারি। যুদ্ধ জয় করে ঘরে ফেরা ছেলের সাথে মায়ের মিলনের গল্প 'ফেরা'।
কেউ আসে নি আর ফেরা গল্প দুইটা পড়ে চিন্তা হয় ছাত্র কৃষক শ্রমিক মজুর যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলো এরা কি শুধুই জীবনের তাগিদে যুদ্ধ করছেন। তারা তো দেশ,রাষ্ট্র,অর্থনীতি বুঝতো না। যুদ্ধ করে অর্জিত এই স্বাধীন দেশে তাদের জন্য কি ছিল?
শেষ গল্প ঘরগেরস্তি তে জানা যায় শরণার্থী শিবির থেকে দেশে ফেরা এক পরিবারের গল্প।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ক্রমবিকাশ এবং তার পরিণতির পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপন করছেন হাসান আজিজুল হক তার এই গল্পসংকলনে।
ঈদের দিনে এই বইটা পড়া ঠিক হয়নি। উপায় ছিলো না, একবার শুরু করে দিয়ে আর থামতে পারি নি।
সাতটা গল্পের প্রতিটারই পটভূমি একাত্তর। এতো বাস্তব, অথচ একই সাথে এতো রুক্ষ রক্তাক্ত আর কর্কশ প্রতিটা গল্প- ভেতরে কোথাও চাপ পড়ে। পূর্বে হয়তো বেদনার্ত হয়েছি, বা সমব্যথী- কিন্তু এমন কদর্য চোখে একাত্তর দেখালেন আজিজুল হক, কেবল ইলিয়াস ছাড়া আর কারো লেখায় এমনটা দেখিনি।
অসাধারণ সব গল্প! মুক্তিযুদ্ধের উপরে লেখা বই। তবে এই বইয়ে মুক্তিযুদ্ধকে যেই দৃষিকোণ থেকে দেখানো হয়েছে আর কোন বইয়ে তা পাইনি! যখন 'কেউ আসে নি' গল্পে প্ররশ্ন করা হয় 'দেশ স্বাধীন হলে কি হয়?' তখন আসলেই শিউরে উঠতে হয়! এক খারাপ লাগা কাজ করে। এখানেই হয়তো লেখকের স্বার্থকতা!
'স্বাধীন হইছে দেশ, আমার কি হইছে? আমি তো হেই খালি পেডেই আছি! কুত্তার মত মানুষের কাছে ভিক্ষা চাইতে হয়, খাওনের লাইগা। হের লাইগা নি স্বাধীন হইছি!'
এই কথার অর্থ বোঝা সহজ নয়। একদিন খালি পেটে না থাকলে বোঝা যাবে না, ক্ষুধার যন্ত্রণা কতটা! বইটির শেষ জায়গাটা যখন পড়ি তখন কান্না চলে আসে! সত্যি তো যারা এত কষ্ট করে স্বাধীন করেছে এই দেশ, তারা কি সত্যই মর্যাদা পেয়েছে? আলেফ যখন বলে, 'আমাগো দিন ফিরবো না গো মা! কেডা জিগাইবো আমার পা, খানার মাঝ খানে থাকা গুলির মর্মর চিহ্ন!'
'নামহীন গোত্রহীন' হাসান আজিজুল হকের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গল্পের বই। আমি জানি না, কতটা কল্পনা এতে মিশ্রিত লেখকের। তবে, এমন অনাদরের গল্প খুব কম মানুষই লিখে! যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তাদের উচিত নয়, স্বাধীনতাকামী মানুষকে নিজের কল্পনায় সাজানো! তাদের প্রতি অপমান হয়।
৭টি গল্প যেন জীবন্ত হাহাকার। 'কেউ আসেনি' গল্পটা যখন পড়ি তখন বুকের মাঝটা ফাঁফা হয়ে যায়। কেউ যেন বুকের মাঝে চিমনির আগুন জ্বেলে দেয়। আমি যেন সেই বুভুক্ষু মানুষ গুলোকে নিজের সামনে দেখছি।।নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করছে, সত্যই না আছে দেশপ্রেম না আছে আমার মাঝে সত্য জানার শক্তি।
বইটি সমলোচনা করব শুধু মন খারাপের জন্য। আর বলব কিছু গল্প যেন সাধারণ আঙ্গিকে পরিবেশন করা হয়েছে। কোন প্রাণ শক্তি গল্পে নেই যেনো। তবে, তার সজীব প্রাণবন্ত লেখা যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখতে সহায়তা করে!. .