চিত্রকলার ইতিহাসে 'প্রবঞ্চক' এক ভিন্নধারার সাক্ষ্য। এ বইতে দুটি বিচ্ছিন্ন কাহিনি। একটিই যোগসূত্র:প্রবঞ্চনার। এ শতাব্দীর ললিতকলা-জগতের দুটি বৃহত্তম প্রবঞ্চনার। মোনালিসা চুরি ও চিত্রকলার ইতিহাসে সেরা জালিয়াতি নিয়ে প্রবন্ধ।
Narayan Sanyal (bn: নারায়ণ সান্যাল) was a well-known & versatile writer of modern Bengali literature. He received several awards for literature including Rabindra Puraskar for Aporupa Ajanta (Bangla: অপরূপা অজন্তা) in 1969, Bankim Puraskar for Rupmonjori (Bangla: রূপমঞ্জরী) in 2000, and Narasingha Dutta Award. Many of his books were filmed and he won the Best Film Story Writer Award for Shotyokam (Bangla: সত্যকাম) by Bengal Film Journalists.
Sanyal wrote numerous books that dealt with many topics, such as children, science, art and architecture, travels, psychiatry, technology, refugee problems, history, biographical pieces, encyclopedia of animals, social novel and Devadasi-related. He also wrote a series of detective fiction called the Kanta (Thorn) series, the framework of which was borrowed from the Perry Mason series of novels by Erle Stanley Gardner. Some of the stories were inspired from popular Agatha Christie novels like Mousetrap, ABC Murders, etc.
Interestingly, this talented author also preferred writing books on deep shadow of many world famous works. One of the most popular Sci-Fictions Nakshatraloker Debatatma (Bangla: নক্ষত্রলোকের দেবাত্মা) is based on the transformation of human race from primitive creature to civilized intelligent species controlling the whole earth. Then it deals with Jupiter exploration and a super intelligent Computer HAL. The three parted book is a clear shadow of 2001: A Space Odyssey by Arthur C. Clarke. In his book, NS renamed HAL as 'Jantra-Na.' In his mother tongue Bangla, it means 'Not a Machine'.
His most popular work is Biswasghatak (Bangla: বিশ্বাসঘাতক) written about the Manhattan project that developed the first US Atom Bomb. This book is based on the shadow of Brighter than a Thousand Suns: A Personal History of the Atomic Scientists (1970), by Austrian Robert Jungk. Not a shadow, but almost translation in some parts. Few of the illustrations in this book have been taken from few Russian school level books.
Another book Timi Timingil (Bangla: তিমি তিমিঙ্গিল) is on Whales. This stands on an article published in Readers Digest. But while NS accepted this for Timi Timingil, he never mentioned or thanked authors of 2001 or Brighter.
Most of the "Kanta" series stories were copied or heavily inspired from Perry Mason novels. For example, "Ristedar-er Kanta" was copied from The case of the beautiful beggar, "Abhipurbak Ni-Dhatu Au-er Kanta" was inspired from The case of the restless redhead. Some of the stories were inspired from Agatha Christie stories. For example, "Dress Rehearsal-er Kanta" was inspired from Three Act Tragedy. NS acknowledged his inspirations in his first few "Kanta" series books, but forgot to do so for the latter ones.
Thousands of NS fans feel sorry of this as a man of his talent could have developed something even better instead of just 'Copying' and retouching others works while he had indeed produced some excellent works himself.
But it is undoubtedly accepted by all that NS was one of the finest authors in Bengali and he was a class apart from the flock of contemporary Bengali writers those who too dependent on sentiment and emotional overdose in their writings and too dependent on monopolist Bengali media/publication groups in commercial front.
আগেই বলেছি, নারায়ণ স্যানালের মত করে কেউ যদি নন ফিকশন লেখে তাহলে আর ফিকশন পড়ার দরকার কি? নাহ, ফিকশনকে ছোট করছি না। কিভাবে করি বলুন তো? আমার তো ফিকশনই বেশী পছন্দ। তা বৈ আমি যখন এ কথা বলছি, এ সৃষ্টি ফিকশনের চাইতেও অধিকতর শক্তিশালী তখন বুঝতে হবে নারায়ণ বাবু আসলেই চমৎকার গেঁথেছেন বইখানাকে।
দুটো গল্প আছে 'প্রবঞ্চক' এ। গল্প বলাটা মনে হয়ে ভুল হলো। এ আসলে ইতিহাসের কথা, নারায়ণ বাবু লিখে গেছেন অদবদ্য রচনাশৈলীতে। ইতিহাসকে ফিকশন আকারে লেখার যে অসামান্য গুণ নারায়ণ বাবুর আছে তা 'বিশ্বাসঘাতক' পড়েই বুঝতে পেরেছিলাম। সেই একই ধাঁচে 'প্রবঞ্চক' এ তিনি বর্ণনা করেছেন বিশ্বললিতকলার কুখ্যাত দুটি প্রবঞ্চনার কথা। যার একটি হচ্ছে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির 'মোনালিসা'র অন্তর্ধান আর অন্যটি হচ্ছে সপ্তদশ শতাব্দীর ডাচ শিল্পী জোহানেস ভারমিয়ারের আঁকা পেইন্টিং নিয়ে। স্পয়লার দিতে চাই না বলে প্রবঞ্চনার আদ্যপান্ত বলছি না।
একটা ঘটনা বলি বরং৷ হুমায়ূন আহমেদ যখন জনপ্রিয়তার শিখরে উঠছিলেন তখন স্বভাবতই কিছু সমালোচক তার সাহিত্যকে ফালতু, অগভীর, খেলো বলছিলেন৷ হুমায়ূন আহমেদ কোন উচ্চবাচ্য করেননি এ বিষয়ে, বেনাম কোট করে কিছু বলেনও নি। তবে একবার তার 'গুনমুগ্ধ' এক প্রফেসরকে একটা পান্ডুলিপি দিয়ে বলেছিলেন, এই যে এটা পড়ে দেখুন তো৷ আপনারা যেমন গভীরতা চান তেমন করে রচনা করেছি এটা৷ পড়ে বলুন কেমন হয়েছে।
ভদ্রলোক পড়ে মুচকি হেসে বললেন, মন্দ নয়। তবে এ গল্পেও গভীরতা কম। জবাবে হুমায়ূন আহমেদ তার কাছ থেকে পান্ডুলিপি ফেরত নিতে নিতে বললেন, এ লেখা আমার নয়, এ লেখা মানিক বন্দোপাধ্যায়ের। আমি শুধু চরিত্রগুলোর নাম পাল্টে দিয়েছি৷ যাই হোক, সমালোচকদের কাছে মানিক বাবুর লেখারই যেখানে গভীরতা নেই, সেখানে আমার লেখায় গভীরতা না থাকলেও আমার কোন দুঃখ নেই।
হুমায়ূন আহমেদ সম্ভবত নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছুতে পেরেছিলেন। নতুন প্রজন্মও তাকে গ্রহণ করেছিলো যেখানে সমালোচকরা তার নৌকা নদীতে ভালোভাবে ভাসবার আগেই ডুবিয়ে দেয়ার অনেক চেষ্টা করেছেন। ঠিক একই ভাবে প্রতিষ্ঠিত সমালোচকরা প্রতাখ্যান করেছিলো এ বইয়ের দুটো গল্পের মূল চরিত্র দুটিকে। আর কখনো কখনো এ প্রতাখ্যান যে শিল্পীমনে কতটা বড় প্রভাব ফেলে তা এই প্রবঞ্চক বলে দিয়েছে। একটু স্বীকৃতি, স্রেফ একটু স্বীকৃতি যে একজন শিল্পী ক'জন্মের খিদে মেটায় তা মনে হয় ব্যর্থ শিল্পী মাত্রই অনুধাবন করতে পারেন।
নারায়ণ সান্যাল বা তার লেখা পরিমাপ করার যোগ্যতা আমার নেই, কখনও হবে না। মাত্র দুটি বই পড়েই তার লেখার, লিখনশৈলীর অনেক বড় ফ্যান হয়ে গেছি। এতটা সহজ, সাবলীল ভাষায় কাউকে বিজ্ঞান, ইতিহাস বোঝাতে দেখিনি। সেই সাথে 'প্রবঞ্চক' এর শেষ ক'টি পাতায় যে অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গী তিনি লিখে গেছেন, তা পাঠকমাত্রেই মুগ্ধতার জন্ম দেয়। আমি আরো একবার মুগ্ধ হলাম নারায়ণ সান্যালে। খুব মায়া লাগলো ভিনসেনজো পেরুগিয়ার জন্য আমার সসম্মান সালাম রইলো হান ভীঁ মীগেরেঁর জন্য।
যারা পেইন্টিং এর ব্যাপারে আগ্রহী তারা খুব মজা পাবেন।এখানে দুটা গল্প আছে। ১/কিভাবে মোনালিসা চুরি হয়েছিল এবং ফিরে পাওয়া গেছিল সেই কাহিনী। ২/মিগেরে কিভাবে ছবি নকল করে সবাইকে ধোকা দিয়ে দিব্বি আছেন। নিজে আর্টিস্ট হতে পারেন নি কিন্তু একজন বড়মাপের আর্টিস্ট ভেরমেয়ারের নামেই তার ছবিগুলো চালিয়ে দিচ্ছেন। ঘটনার পারিপার্শিকতায় তিনি নিজে স্বীকার না করলে আসলে কারো সাধ্য ছিল না এগুলোকে নকল বলে ধরে। দারুন লেগেছে।
"দুনিয়া থেকে বিদায় নেবার মুহূর্তে শিল্পী জানতে চায় না-- কারও চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠেছে কিনা! বরং সে জানতে চায় : কেউ মাথার টুপিটা খুলেছে কিনা।"
এই টুপি খোলা মানে হল শিল্পীর স্বীকৃতি। এরচেয়ে দামী শিল্পীর কাছে আর কিছু নেই। ভাঁ মীগেরেঁ চেয়েছিলেন সরল পথে প্রতিভার স্বীকৃতি পেতে, কিন্তু অভিজাত শিল্প সমালোচকরা তাকে অংকুরেই বাতিল করে দেয়। এর প্রতিশোধ সে নেয় অভিনব উপায়ে- শিল্পসমালোচকদের সারাজীবনের অভিজ্ঞতা-জ্ঞানকে সে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। কিন্তু ইতিহাস তার উপর সদয় হয়নি, আর্টের জগতের সবচেয়ে কুখ্যাত প্রবঞ্চকের তকমা জুটেছে তার কপালে। তবে আমার কাছে তিনি প্রতারক নন, কারন উনার জালিয়াতি উনি চাইলেই এড়িয়ে যেতে পারতেন, নিজের সেলেব্রেটি মর্যাদা, সুখ স্বাচ্ছন্দ্য, অর্থবিত্ত সব ত্যাগ করে বেছে নিয়েছেন কারাজীবনের যন্ত্রণা। এত কিসের জন্য? শুধু শিল্পী হিসেবে একটা স্বীকৃতি। একটা বিষয় আমার বোধগম্য হয় না শিল্পী-সাহিত্যিকরা মানবমনের সবচেয়ে সৃষ্টিশীল, সবচেয়ে সুন্দর দিকটাকে প্রকাশ করে, কিন্তু বেশীরভাগ শিল্পী-সাহিত্যিকরা নবীনদের স্থান দিতে চান না, কখনও কখনও নিরুৎসাহিত করে অংকুরেই প্রতিভাকে নষ্ট করে দেন।
যাই হোক বইটি পড়ে পাঠকমাত্রই রোমাঞ্চিত হবেন। মাঝখানের কিছু অংশে হালকা থ্রিলারেরও স্বাদ পেতে পারেন।
মন্ত্রমুগ্ধ । ঐতিহাসিক ঘটনাকে এরকম গল্পছলে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নারায়ণ সান্যালের জুডি মেলা ভার । নবীন প্রতিভাদেরকে সমাজের তথাকথিত প্রতিথজশাদের সহজে স্বীকৃতি না দেওয়ার মানসিকতা যে কিভাবে তাদেরকে অনেক সময় এইরকম প্রবঞ্ছকতার দিকে ঠেলে দেয়, সে সম্পর্কে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি, এই বই থেকে আলাদা করে পাওনা ।
কিনেছিলাম ২০১৭এর শেষে, কাঁথি বইমেলায়। তারপর বাড়িতে রেখেই হোস্টেল চলে যেতে হয়েছিল, কাল বাড়ি ফিরেই ধরলাম, পড়লাম, আর অভিভূত হলাম। . . "এ বইতে দুটি বিচ্ছিন্ন কাহিনী। একটিই যোগসূত্র: প্রবঞ্চনার। বস্তুত এ শতাব্দীর ললিতকলা-জগতের দুটি বৃহত্তম প্রবঞ্চনার।" প্রথম কাহিনীটি হলো 'মোনালিসার প্রেমে' পাগল এক প্রবঞ্চকের, রিওর (Rio de janeiro) এক শিল্প সংগ্রহশালা থেকে একের পর এক ছবির ফুলস্কেল কপি (যাতে craquelure পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছিল) যিনি আসল বলে বিক্রি করেছেন ধনকুবের বিদেশী পর্যটকদের, ঈভেস্ শাদ্রঁ নামের এক চিত্রশিল্পীকে সঙ্গী করে, অসীম সাহস আর বুদ্ধিমত্তা সম্বল করে। শেষে যখন ওরকম একটি কপি লিসবনে ধরা পড়ে, তখন রিওর ব্যবসা ছেড়ে ইউরোপ গিয়ে মোনালিসা চুরি ও তা বিক্রি করার ফন্দি আঁটেন এই কাহিনীর নায়ক, থুড়ি… খলনায়ক Marques Eduards de Valfierno ওরফে সিনর আলবার্তো গঞ্জালেস ওরফে ডঃ স্যামুয়েল রিচার্ডসন। . কিন্তু চোরা কারবারিরা তো মোনালিসাকে ঘরণী করার আগে যাচিয়ে নেবেই, তিন মিলিয়ন ডলার তো মুখের কথা নয় (লেখক যদিও বারবার তিনলক্ষ বলেছেন, কিন্তু শেষের একটি হিসেবে বললেন ৬*তিনলক্ষ= এক কোটি আশি লক্ষ ডলার)। আর 'লা জ্যাকোন্ডা' যে সত্যিই অপহৃত হয়েছেন, তা প্রমাণ করার জন্যই অপহরণ করার দরকার হয় রহস্যময় হাসির অধিকারিণীকে। এ সীতাহরণের জন্য রাবণ হিসেবে ওয়ালফিয়েরনো বেছে নেন ভিনসেনজো পেরুগিয়াকে, ঘটনাচক্রে যিনি মোনালিসার ছবিকে সুরক্ষিত করেছিলেন বুলেটপ্রুফ কাচের অন্তরালে। তারপর কীভাবে ল্যুভরের গর্ভগৃহ সালোঁ কেয়ার থেকে অপহৃতা হলেন লিওনার্দোর মানসকন্যা, কোথায় তিনি লুকিয়ে থাকলেন পুলিশি তল্লাশীর সময়ে, পেরুগিয়ার ঘরে এসেও পুলিশ ফাঁকাহাতেই ফিরে গেল কেন, কেনই বা ওয়ালফিয়েরনো ফিরে এলেন না মোনালিসাকে নিয়ে যেতে, কী পরিস্থিতিতে কপর্দকহীন কোটিপতি পেরুগিয়া বাধ্য হলেন মোনালিসকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আদি নিবাস ইতালিতে, আর তারপর ধরা পড়ে বিচারে কী কাহিনী শোনালো পেরুগিয়া, কী সাজা হলো তার... সেসব জানতে হলে তো আপনাকে পড়তেই হবে 'মোনালিসার প্রেমে'। . . . দ্বিতীয় কাহিনী 'বিংশশতাব্দীর সর্বকুখ্যাত প্রবঞ্চক', 'আমস্টারডাম শহরের সর্ববিখ্যাত আর্টডিলার তথা আর্ট কনৌশার তথা আর্টিস্ট' হান ভাঁ মীগরেঁর; যাঁর জীবনের প্রথম এবং শেষ একক প্রদর্শনী, যাতে তাঁর এবং তাঁর অর্ধাঙ্গিনী অ্যানার প্রায় সমস্ত সম্বলই নিঃশেষ হয়ে গেছিল, আর সেই প্রদর্শনীতে এসে তৎকালীন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ 'ভেরোমিয়ার'-বিশেষজ্ঞ ডক্টর ব্রেডিউস বলে গেলেন, 'তোমার দ্বারা আঁকাআঁকি হবে না বাপু, এখনো বয়স কম আছে, অন্য কোনো কাজে লেগে পড়ো'। সেই মীগরেঁ যুদ্ধোত্তর হল্যান্ডে দায়ে পড়লেন দেশের সম্পত্তি নাৎসী জার্মানির কাছে বিক্রি করার, যার-তার কাছে নয়, হিটলারের ডানহাত গোয়ারিং-এর কাছে। সম্পত্তিটা হচ্ছে ভেরমিয়ারের আঁকা 'Adulteress', সেই ভেরমিয়ার, বিশেষজ্ঞদের মতে যার আঁকা ১৫-২০ টি ছবি মাত্র পাওয়া যায়, যিনি জীবিতদশায় ছিটেফোঁটা সম্মানও পাননি। ছবিটি কার কাছে বিক্রি করেছিলেন, বা কোথায় পেলেন.. তা পুলিশি জেরায় একবারও স্বীকার করলেন না মীগরেঁ। শেষে মাস দেড়েক পরে পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে বললেন, ছবিগুলি তাঁর নিজেরই আঁকা। বলা বাহুল্য, তাঁর এই delirium বিশ্বাস করেনি কেউই, না পুলিশি গোয়েন্দা, না কোনো শিল্পবোদ্ধা। শেষে মীগরেঁ চ্যালেঞ্জ করেন, ভেরমিয়ারের একটি মাস্টারপিসই এঁকে দেখাবেন। এ কাহিনীর সমান্তরালে এগোয় আরেক কাহিনী। যার কেন্দ্রীয় 'পাত্র: পাত্র নয় পাত্রী: ম্যাডাম অ্যাগনেস শ্যাম্পেন- অর্থাৎ ফিগেরো পত্রিকার সহকারী আর্ট ডিরেকটার', মীগরেঁর আঁকার প্রতিবেদনের জন্য যাঁকে হল্যান্ড পাঠান ফিগেরোর সম্পাদক ডক্টর নিকোলাস লে লোরেন। এই অ্যাগনেসকে আবার গ্রেফতার করতে চায় হল্যান্ড পুলিশ, তার কাছে আছে এক ফাইল, যা প্রকাশ হলে বিশ্বের দরবারে মুখ পুড়বে হল্যান্ডের। এই দুই কাহিনী মিলেমিশে যাচ্ছে শেষে। কাহিনীর নায়ক (আমার তো খলনায়ক মনে হলো না) মীগরেঁকে এখনো আপনি-আমি চাইলেই দেখতে পারি 'ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ময়দানে, যাদুঘরের উল্টোদিকে, হাওড়া স্টেশনে'। এ কাহিনী সম্পর্কে কিছু আর বলার ভাষা পাচ্ছি না, অভিভূত হয়ে আছি এখনো।
This entire review has been hidden because of spoilers.
প্রথম- বিশ্ববন্দিত মোনালিসা-চুরি। হলিউড Heist মুভি অনেক দেখেছি। কিন্তু এই চুরির আগাগোড়া ঘটনা পড়তে মনে এমন কৌতূহল আর উত্তেজনা সৃষ্টি হবে, খাওয়া-স্নান ভুলে শুধু একনাগাড়ে পড়তে বাধ্য। মানলাম চুরি হয়েছিল 1911 সালে। এতো কড়াকড়ি, সিসিটিভি, সিকিউরিটি instrument হয়তো ছিল না, সেই সাথে এটাও দেখতে হবে যে চুরি করার মতো অত্যাধুনিক সরঞ্জামও ছিল না। ছিল সাহস, বুদ্ধি আর সময়নিষ্ঠ মনোভাব, বাহুবল দরকার পড়েনি। চুরি করা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। কিন্তু চোরের ওপর বাটপারি ব্যাপারটাও যে আছে। মোনালিসা চুরি তো হলো, কিন্তু একবার ভেবে দেখলে না মোনালিসা চুরি করে কি হবে ! সেটা কেউ কিনতে পারবে কি ! কিনে করবেন বা কি ! সর্বসমক্ষে আনতে পারবে না, না পারবে নিজের ঢাকঢোল পেটাতে যে সেই মোনালিসার বর্তমান মালিক। কিন্তু চোরের ওপর যে বাটপার মেরেছেন, সেই মাস্টারমাইন্ড মোনালিসার চুরির পরে অঢেল টাকার মালিক হয়। এমনকি পরবর্তীকালে জনৈক সাংবাদিককে ইন্টারভিউতে জানান যে তিনিই এই চুরির নেপথ্যে ছিলেন, তবে তার একটাই আবদার ছিল, এই সত্যটা যেন সর্বসমক্ষে আনা হয় তার মৃত্যুর পর, সাংবাদিক সেই কথা রেখেছিলেন। মোনালিসা ল্যুভর থেকে চুরি হলো 1911 অগাস্ট, ফিরলো 1914 সালের প্রথম দিকে, প্রায় আড়াই বছর পর। এই আড়াই বছর সে ছিল তার অপহরণকারীর কাছে। প্রচন্ড দারিদ্রে। অপহরণকারী ছিলেন জন্মসূত্রে ইতালিয়ান, মোনালিসাকে ইতালিতে ফেরাতে চেয়েছিল, আর সেখানেই ধরা পড়লো। পরবর্তীকালে দেশীয় সম্পদকে দেশে ফেরাতে চেয়েছিলেন, এই স্টেটমেন্টকে সামনে রেখে ইতালিয়ানদের সহানুভূতি পেয়ে অপহরণকারী মুক্তি পায়। তাই ভুলেও সে ওই মাস্টারমাইন্ড লোকটার কথা উল্লেখ করে না। কিন্তু এরপর জীবন বেশিদিন ছিল না, প্রচন্ড দারিদ্রের মধ্যে মারা যান। আর এদিকে সেই মাস্টারমাইন্ড, প্রচন্ড ঐশ্বর্য, বিনোদন, লাস্যময়ী নারী সঙ্গে জীবন কাটিয়ে অতিবৃদ্ধ অবস্থায় পরলোক গমন করেন। প্রশ্ন থেকে যায় তিনি চুরি করেন নি, চুরি করা মোনালিসায় তার কাছে ছিল না, তাহলে এতো টাকার মালিক কিভাবে হলেন। লোককে বোনা বানাতে গেলে যে বোকা হচ্ছে তাকে বোকা হতেই হবে তা নয়, নিজেকে তার চাইতে চালাক হতে হবে। যা সেই মাস্টারমাইন্ড হয়েছিলেন। সেই ধুরন্ধর, চালাকির কাহিনী পাঠযোগ্য।
দ্বিতীয়- আজকাল অনেক কিছু copy করে বলা হচ্ছে, inspired। এই একটি শব্দে সাতখুন মাপ। ড���চ এই শিল্পী তাই করেছেন। শুধু Inspired শব্দটি ব্যবহার করেননি। নিজের আঁকা ছবিকে ১৭০০ র শিল্পী Vermeer এর নামে চালিয়ে বিক্রি করেছেন। কামিয়েছেন লক্ষ্য কোটি। কিন্তু এই ছিল তার উদ্দেশ্য ? টাকা কামানো ? তাহলে প্রশ্ন জাগে শুধু Vermeer কেন ? আরও অনেক বিশ্ববন্দিত শিল্পী আছেন। তাদের নামে এঁকে বিক্রি করলে আরো বেশি রোজগেরে হতেন। তাহলে ?
সেটা জানলে ফিরতে হবে সেই মানুষটার জীবনের কয়েক দশক আগে। নিজের এঁকে exhibition করিয়েছিলেন, শেষ হয়েছে নিজের জমানো সব টাকা, স্ত্রী wedding রিং ছাড়া বন্ধক রেখেছেন সব গয়না, শেষ সম্বল এই exhibition। কিন্তু তেমন কোনো শিল্পী বা বোদ্ধা এলেনা ���া। শুধু এলেন একজন, তাকেও জোর করে নিয়ে আসা হলো, আব্রাহাম ব্রেডিউস, যিনি Vermeer শৈল্পীর বোদ্ধা ছিলেন। এসেই বললেন এই exhibition হাস্যকর। শিল্পীর উচিত অবিলম্বে আঁকা ছেড়ে অন্য কোনো কাজ করা। এর বেশ কিছু বছর পর। ফ্রান্স হালস এর আঁকা cavalier উদ্ধার করে ব্রেডিউস এর সামনে আনেন সেই ব্যক্তি, ফল একই, ব্রেডিউস এটাকে নকল বলে সেই ব্যক্তির সমস্ত পরিশ্রম পন্ড করে।
এর বেশ কয়েক বছর পর। Emmaus, Carravaggio এর আঁকা (অনেকটা লাস্ট সাপার এর মতো) ছবি দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন সেই ব্যক্তি। Vermeer এর আঁক কিছুটা ক্ষেত্রে Carravaggio আদলে ছিল। যদিও Vermeer তার জীবনে বাইবেল সম্বন্ধিত একটি ছবি এঁকেছিলেন, ইতিমধ্যে যা সর্বসমক্ষে এনেছেন ব্রেডিউস নিজেই। এতেই মাথায় খেলে গেলো একটা বুদ্ধি। কেননা Vermeer কে আবার বিশ্বের দরবারে আনা যাক, কে আনবে, আনবে সেই ব্যক্তি, তার নিজের তুলির আঁচড়ে। ১৭০০ এর আর্ট নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুললেন তিনি। কিন্তু এই ছবি যে সত্যি ভার্মীর এর সৃষ্টি তার সত্যতা বিচার করবে কে? ব্রেডিউস। হ্যা সেই ব্রেডিউস, যার কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন তিনি। তারপর তো সব গল্প। কিন্তু এই প্রবঞ্চনার গল্পের মধ্যেও কোথাও লুকিয়ে আছে প্রতিশোধের কথা। নিজেকে প্রবঞ্চক প্রমান করিয়েছেন সবার সামনে, যাতে তথাকথিত আর্ট-বোদ্ধারা বোকা বলে পরিচিত হয় বিশ্বের সামনে।
এবার আসি লেখকের কথায় - নন-ফিক্শনকে ফিকশনের মতো করে লেখা আর পাঠকের মনে ফিক্শন সমান কৌতূহল জিইয়ে রাখা, শুরু থেকে শেষ অবধি, second to none। গল্পের শেষে এই দুই প্রবঞ্চনার মূল্যায়ন করেছেন, যা পড়লে বিশ্বের বহু-সমালোচিত এই দুই প্রবঞ্চক সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়। তার লেখনী নিয়ে কিছুই বলার নেই, কিন্তু তিনি একজন সু এবং দক্ষ পাঠক। যে কোনো সেক্টর, যে কোনো ফিল্ড এ তার অর্জিত জ্ঞান আর তা পাঠকদের বুঝিয়ে বলার কৌশল, অদ্বিতীয়। কত কিছু জানলাম এই বইটা পড়ে, কতবার যে গুগল করেছি বইটা পড়তে পড়তে। যারা এই বইটি এখনো পড়েন নি, তারা সত্যি Pro(অতি)-বঞ্চিত। (এই বই পড়ে এতটাই মুগ্ধ, বেশি লিখে ফেলেছি)
I am speechless. Flabbergasted. Astonished. Narayan Sanyal channels his own plea for artists to recognise their works to the world through this brilliant book which is at par with his best works (arguably বিশ্বাসঘাতক ).
This book is a two-parter. No link except both stories are art-based. First one is মোনালিসার প্রেমে, where we sail through the event of The theft of La Jaconda from Louvre Museum by Vincenzo Peruggia.
Second one (and by far the better one) is called প্রবঞ্চক, which is a heartfelt tribute to one of the greatest, yet misunderstood artist of 20th century, Han Van Meegereen. Narayan Sanyal takes non-fiction and by sprinkling some elements of fiction there creates magic. This book is the stark example of that. The characters of Anna, Agnes, Poikarent are just brilliant.
I have to quote one of the best lines that Sanyal wrote here," দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার মুহূর্তে শিল্পী জানতে চায় না - কারও চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠেছে কি না। বরং সে জানতে চায় : কেউ মাথার টুপিটা খুলেছে কিনা।'
By this novel, Sanyal professed his unconditional love to Meegereen also tried to enlighten that the art of "inspiration" is also worthy of respect if it is great. Which is too some extent true for himself too, some critics cited that Narayan Sanyal has copied most of his ideas from other books, so be it, most of them are masterpieces.
This entire review has been hidden because of spoilers.
নারায়ণ সান্যালের লেখনী নিয়ে নতুন কিছু কেউ বলার নয় আমি। এইটা আমার পড়া ওনার দ্বিতীয় বই, এবং যতই পড়ছি ততই আরো ভালো লেগে যাচ্ছে ওনার লেখার ক্ষমতাকে। Non-fiction ঘটনাগুলোকে fiction এর মত করে লেখার ব্যাপারে ওনার মত অদ্বিতীয় আর কেউ নেই বলে আমি মনে করি। প্রথম novelette টা একটু ধীরে ধীরে এগোলেও, শেষে Peruggia এর জন্য বেশ মায়া লাগলো। তবে Van Meegeren নিয়ে লেখাটি একইসাথে অত্যন্ত রোমাঞ্চকর এবং বেদনাদায়ক। এর থেকে বেশী কিছু বলে "spoiler" দিতে চাই না।
বইটির নাম প্রবঞ্চক হলেও বইটি পড়ে প্রবঞ্চনার শিকার হইনি। এক কথায় অভূতপূর্ব একটা উপন্যাস, যারা নারায়ণ সান্যালের লেখা পড়েছেন তাদের তো ভালো লাগবেই আর যারা পড়েননি তারাও এই বইটি দিয়ে শুরু করতে পারে নির্দ্বিধায়। ❤️🍂
প্রথমে মনে হয়েছিল ফিকশন পরে জানলাম সত্য ঘটনাই, ভার্মিরের আর্টওয়ার্ক মিল্কমেইড পোরিং মিল্ক এর উল্লেখ এখানে দেখে ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখলাম। নতুন একটা জিনিস তো জানতে পারলাম। এই তো চাই!!! এই লেখকের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা