বাবলু বিলু ভোম্বল— তিনটি ছেলে। দুটি মেয়ে- বাচ্চু আর বিচ্ছু। এই নিয়ে ওরা পাঁচজন। পঞ্চপাণ্ডব। আর ওদের সঙ্গে আছে এক-চোখ-কানা একটি কালো দেশি কুকুর— পঞ্চু। রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা যে-কোনও অভিযানে ওরা একজোট হয়ে বেরিয়ে পড়ে। ক্ষুদে এই গোয়েন্দাদলের বুকে দুর্জয় সাহস, বাহুতে অদম্য শক্তি। দু’ ঘা খেলে চার ঘা কী করে ফিরিয়ে দিতে হয়, তা এরা বিলক্ষণ জানে। আর তাই এদের অভিযান মানেই ঘটনার ঘনঘটা। নিত্যনতুন পটভূমি পদে পদে বিপদ। ক্ষণে ক্ষণে চমক। অথচ কী নিরীহভাবেই না শুরু হয় এদের অ্যাডভেঞ্চার। এই যেমন পাতাল রেল দেখতে এসে গঙ্গার ঘাটে কুড়িয়ে পাওয়া একটা মানিব্যাগ তাদের ছুটিয়ে নিয়ে গেল সেই সুদূর মধ্যপ্রদেশে। আর সে কী জটিল রহস্যজাল! গায়ে-কাটা-তোলা নানা ঘটনার নাটকীয় সমাবেশ। এক একরকম দুর্ধর্ষ অভিজ্ঞতা, টানটান উত্তেজনা। এই দুঃসাহসী আর নির্ভীক পাঁচজনকে নিয়ে তীব্র ও তাজা, অভিনব ও দুরন্ত সব কাহিনী এই বইয়ের পাতায় পাতায়। শুধু রোমাঞ্চই নয়, দেশভ্রমণের স্বাদ এবং জঙ্গল, পর্বত কিংবা মরু অভিযানের শিহরনে ঠাসা প্রতিটি কাহিনী।
দু’ খণ্ডে প্রকাশিত পাণ্ডব গোয়েন্দার সমগ্র অভিযানের এই প্রথম খণ্ডে রয়েছে প্রথম থেকে আটাশতম অভিযান।
Sasthipada Chattopadhyay (born 9 March 1941) was an Indian novelist and short story writer predominantly in the Bengali language. He was a well-known figure, famous for his juvenile detective stories, namely, the 'Pandob Goenda' series, as well as his contribution to children's fiction in general.
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়-এর জন্ম ২৫ ফাল্গুন ১৩৪৭। ইংরাজি ১৯৪১। মধ্য হাওড়া খুরুট ষষ্ঠীতলায়।
কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্য সাধনার শুরু। ১৯৬১ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় আলোচনীর সঙ্গে লেখালেখি সূত্রে যুক্ত থাকলেও ১৯৮১ সালে প্রকাশিত ছোটদের জন্য লেখা ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ই লেখককে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র জনপ্রিয়তার পর থেকে বিরামহীনভাবে লিখে চলেছেন একটির পর একটি বই। মূলত অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়, তাই দেশে দেশে ঘুরে যে-সব দুর্লভ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন, তারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তাঁর প্রতিটি লেখার ক্ষেত্রে।
(২৬/০৪/২০২৫) সমগ্র বাদে সিংগেল বই হিসেবে পাণ্ডব গোয়েন্দার খান ত্রিশেকের মতন বই তো রয়েইছে। এর মধ্যে পাণ্ডব গোয়েন্দাদের প্রথম সতেরটি অভিযান আলাদা বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে "নিউ বেঙ্গল প্রেস" প্রকাশিত "পাণ্ডব গোয়েন্দা" সিরিজের মোট ৬টি খণ্ডে। আঠারোতম অভিযান থেকে "পাণ্ডব গোয়েন্দা ৭,৮,৯..." নামে একেকটি বই প্রকাশিত হয়েছে আনন্দ থেকে। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এখানে প্রথম ৬টি খণ্ডের সঠিক লিস্টিং নেই। তাই সমগ্রের থ্রেডেই লিখব এই ৬টা খণ্ডের বিষয়ে। লাইব্রেরির কল্যাণে ১,২,৩,৫ আগেই পড়া হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কিনে ৪ পড়লাম এইবারে এবং ৬-ও রয়েছে, পড়া বাকি। আনন্দ প্রকাশিত পাণ্ডব গোয়েন্দার বইগুলির কাহিনিতে একটি থোড়বড়িখাড়া প্যাটার্ন রয়েছে তা আগেও আলোচনা করেছি। পাণ্ডব গোয়েন্দারা সদলবলে কোথাও ঘুরতে যাবে - সেখানে গিয়ে কোন দস্যুর দুষ্কৃতীর খোঁজ পাবে - পাহাড়, জঙ্গলে অভিযান - কোনো নতুন বন্ধু পাওয়া - শেষটায় পাণ্ডব গোয়েন্দাদের জয়জয়কার।
প্রথমদিকের গল্পগুলিতে অর্থাৎ পাণ্ডব গোয়েন্দাদের ইলাস্ট্রেশনগুলিতে যখন তাদের হাফপ্যান্টে দেখানো হত, তখন শহুরে পরিবেশে গুণ্ডা, নাশকতামূলক কাজের বিরুদ্ধে অভিযানগুলি বেশ ইন্টারেস্টিং লাগত। কিন্তু এগুলি ভুলে পাহাড় জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্চার-সর্বস্ব কাহিনির জের শুরু হয় এই চতুর্থ খণ্ডের ১৪তম অভিযানের কাহিনি থেকে। (এই খণ্ডে ১৩তম,১৪তম,১৫তম অভিযানের কাহিনি আছে) বছরে এক-আধবার পড়ার জন্য ঠিক আছে, যদিও কিশোর কাহিনি হিসেবে প্রচুর জিনিস লজিকের ভাবনার বাইরে রাখতে হয়, তবুও চলে যায়। তবে পরপর পড়লে লেখকের উপর lazy writing -এর দোষ চাপাতে বাধ্য হতে হবে।
৬নং খণ্ড পড়লে এখানেই যোগ করে দেব ভবিষ্যতে।
________________________________ (০৬/০৬/২০২৫) পড়ে শেষ করলাম পাণ্ডব গোয়েন্দা ৬। পাণ্ডব গোয়েন্দাদের এই ১৭তম অভিযান এবারে দার্জিলিং শহরকে কেন্দ্র করে। এত অবধি পড়া সমস্ত পাণ্ডব গোয়েন্দা কাহিনির মধ্যে এটিকে worst বলা চলে। বেশিরভাগই দার্জিলিং শহরের বিষয়ে জ্ঞান কপচানো, আসল অ্যাডভেঞ্চার নেহাতই কম। এছাড়াও বাচ্চাদের হাতে খুনজখম হতে দেখানোর বিষয়টা কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা বুঝতে পারলাম না। লেখার ভাবভঙ্গিও সত্যি বলতে কিছু জায়গায় কেমন ন্যাকামো গোছের মনে হল। এরই সঙ্গে নিউ বেঙ্গল প্রেসের আওতাভুক্ত সমস্ত পাণ্ডব গোয়েন্দা কাহিনি শেষ। এরপরে বাকিসব আনন্দ পাবলিশার্সের।
ছোটবেলার স্বপ্নের দল এই পান্ডব গোয়েন্দা। তিন গোয়েন্দা অনেক পরে পড়েছিলাম। তবে পান্ডবদের সাথে কম্পেয়ার করার সাহস আমার হয়নি সেই পরেও। বইটা পড়তে সময় অনেক ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ল, যেগুলা সাধারনত আমি ভুলেই গিয়েছিলাম প্রায়। যাক সে কথা, এখনও যে পড়ে ছোটবেলার মতোই ভালো লেগেছে সেটাই অনেক।