এমন বর্ণময়, আলোকময়, চিত্রময় জীবনযাপন বিরল। আত্মীয়তার বন্ধন সত্ত্বেও পারস্পরিক সম্মান ও ভালবাসাকে মর্যাদা দিয়ে তাঁরা দু’জন সংসার পেতেছিলেন। সংসারের ভেতরে-বাইরে, কাজের জগতে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠেছিলেন অচিরেই। এঁদের নিরবচ্ছিন্ন দাম্পত্যজীবন একদা কিংবদন্তির মর্যাদা পেয়েছিল। এঁরা হলেন সত্যজিৎ রায় ও বিজয়া রায়। প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্রস্রষ্টার সহধর্মিণী জীবনের প্রান্তসীমায় এসে হাতে কলম তুলে নিলেন। নিজেদের জীবনস্মৃতি লেখার কোনও তাগিদ বাইরে থেকে ছিল না। কিন্তু অন্তরের গভীরে থাকা বহু ঘটনা, বহু জানা-অজানা কাহিনি, বহু মানুষের মুখ তাঁকে এই অনন্য স্মৃতি-ইতিহাস লেখার প্রেরণা দিয়েছে। নিজের জীবনের শৈশব থেকে যৌবন, তারপর ‘মানিক’ সত্যজিতের সঙ্গে পর্ব থেকে পর্বান্তরে যেভাবে বাহিত হয়েছে তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি দিন— সে কথা অকপটে, সনিষ্ঠায়, বিস্তারিতভাবে লিখেছেন তিনি। ‘আমাদের কথা’র পরতে পরতে ব্যাপ্ত হয়ে আছে যে-বহুবর্ণী কাহিনি, তা জানতে না-পারলে মানুষ ও স্রষ্টা সত্যজিৎ সম্পর্কে অনেক কথা অজানা থেকে যেত। হারিয়ে যেত নানা তথ্য, অনেক মুখ। অবলুপ্ত হত সময়ের অজস্র দিক্চিহ্ন। এই গ্রন্থে স্মরণীয় হয়ে রইল সেই অপরূপ অতীত এবং অনতিঅতীত।
Bijoya Ray (4 April 1921 – 2 June 2015) was the wife of the Indian filmmaker Satyajit Ray. Their son Sandip Ray is also a film director. Bijoya and Satyajit were first cousins. After a long courtship, they were married in 1949. Bijoya Ray acted and sang playback song in a Bengali movie called Shesh Raksha in 1944 and also acted in the documentary Gaach (The Tree) by Catherine Berge in 1998. At the age of 94, She died in Kolkata after suffering from acute pneumonia.
এক বৈঠকে বসে (থুড়ি, আধশোয়া হয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে কাউচে শুয়ে পড়ছিলাম) ৫৮৪ পাতার বই শেষ করার তেল রিফাত সানজিদার এখনো আছে তাহলে! সে 'অদ্ভুদ'! :3 _________________________________ বইটার আংরেজি অনুবাদ নামিয়েছিলাম অ্যামাজন ঘেঁটে, পড়ার শখ ছিল অনেকদিনের। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে নাবিলা বাংলা, মূল বইয়ের পিডিএফ জোগাড় করে দেয়ায় ঢের সুবিধে হলো। আসল পেলে কে যায় নকলে স্বাদ নিতে!
আমাদের কথা বই বিজয়া রায়ের জবানীতে, সত্যজিতের ধর্ম ও মর্মসঙ্গিনী। আবাল্য সঙ্গীনি যিনি, সর্ম্পকে মাসতুতো বোন হতেন, বয়সেও বড় ছিলেন। বিয়েতে আটকাবে ভেবেছিলেন, কিন্তু শেষে আটকায়নি, মেনেই নিয়েছিলো সবাই। ৩০শে বিয়ে, ৩৫শে প্রথম এবং একমাত্র সন্তান। সন্দীপ রায়।
মানিক-বিজয়ার প্রেম এবং পরিণয়ের গল্প সবিস্তারে আছে,আছে বিজয়ার বাল্য এবং পূর্বপ্রেমের সাহসী বর্ণনা। সত্যজিৎ ছিলেন জাতশিল্পী, বংশের ধাত অনুযায়ী। বিজয়ার বেজায় শখ ছিল বুননে, সজ্জায়, রান্নায়, অলঙ্করণে। চলচ্চিত্রানুরাগী ছিলেন, নিজেও দু-একটা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। গাইতে ভালবাসতেন, অসাধারণ গাইতেন-ও। রেকর্ড-ও বেরিয়েছিলো। দুজনেই ছিলেন মার্গীয়, রাগসঙ্গীত এবং পাশ্চাত্য গানের সমঝদার। বিজয়া ছিলেন বুঝদার-ও। 'আমার স্বামী দেবতা ছিলেন না, ছিলেন রক্তমাংসেরই মানুষ'। সেটা জেনে নিজে রুগী হয়ে হাসপাতালে গেছেন, তবে সঙ্গ ছাড়েননি। আজন্মের বিশ্বস্ততার পাল্লায় ক্ষণিকের স্খলনকে তুচ্ছ ভেবে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন হয়তো।
গাইয়ে বিজয়ায় বিয়ের পর বাইরের জগত থেকে নেয়া স্বেচ্ছানির্বাসনের ছুতোয় আরেকজন বিখ্যাত বাঙালি লেখকের স্ত্রীর কথা মনে পড়ে। প্রতিভা বসু, বুদ্ধদেব বসুর স্ত্রী। অপ্রিয় সত্য, প্রতিভার জীবনের জলছবি'র মতো পড়ায় আরাম বিজয়া দিতে পারেননি, কিন্তু দুজনের আত্মজীবনীতে মিল কিন্তু নেহায়েত কম নয়। দুজনেরই ঈশ্বরপ্রদত্ত গানের গলা ছিল অসামান্য,সেই সুত্রে সান্নিধ্যে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, দিলীপকুমার রায়ের।
কী লাভ গড়ালো সেই প্রতিভা থেকে? বিয়ের পর দুজনেই ছেড়ে দিয়েছিলেন গান। বিজয়া অসাধারণ প্রতিভাময় স্বামীর ভ্রমণসঙ্গী হলেন দেশে-বিদেশে, দিলেন প্রেরণা, জোগালেন মানসিক-আর্থিক সমর্থন। আমরা পথের পাঁচালি পেলাম, অপরাজিত থেকে শুরু করে আগন্তুক হলো। সারা বিশ্বে বাংলা চলচ্চিত্রকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিলেন সত্যজিৎ। সেরা সন্দেশ পুনঃপ্রকাশিত হলো, ফেলুদা এন্ড কোং হলো, পিকুর ডায়রি ও অন্যান্য বেরুলো, স্বয়ং প্রফেসর শঙ্কু'র নানা চমকপ্রদ অভিযান সফল হলো।
শুধু সবকিছুর বিনিময়ে ছ ফিট সাড়ে চার ইঞ্চির অতি দীর্ঘকায়, অসাধারণ গুণী ও মেধাবী সত্যজিৎ রায়ের ছোটখাটো স্ত্রী হিসেবেই সানন্দে বেঁচে রইলেন মঙ্কু ওরফে বিজয়া রায়, তার আর নিজস্ব কোন ব্যক্তিপরিচয় রইলো না।
বয়স বাড়বার সাথে সাথে পড়বার স্বাদ যে খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে তা আজকাল বেশ টের পাচ্ছি। অবশ্য স্মৃতিকথার বই বরাবরই আমার বেশ পছন্দের। হুমায়ূন আহমেদের 'ছবি বানানোর গল্প' বইটা খুঁজতে গিয়ে হাতে এসেছিল এই বইটা। প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় নাওয়া খাওয়া ভুলে পড়ে শেষ করলাম নিজের ছোটবেলার হিরোকে আরও কাছে থেকে জানবার আশায়। শুধু সত্যজিৎ সম্পর্কে জানতে চেয়ে এই বই পড়তে বসলে প্রথমে একটু ধাক্কা অবশ্য খেতে হয় কারণ প্রথম দিকে মানিক বাবুর ছোটবেলার কথা বেশি উঠে আসেনি। কিন্তু বিজয়া রায় সম্পরকে যা জানা যায় তাই বা কম কিসে। কথায় বলে একজন সফল পুরুষের পিছে সবসময় একজন নারীর হাত থাকে। তা সে নারীর গড়ে উঠবার পথটি সম্পর্কেও তো জানবার দরকার। মানিকবাবুর লেখালেখির দিকটি সেভাবে বলতে গেলে উঠে আসেনি যতটা পুরো বই জুড়ে তার সিনেমা বানানোর আদি-অন্ত বলা হয়েছে। এছাড়া রায় পরিবারের সাথে জড়িত আরও নানা গুণীজনের ছোট ছোট অজানা কথা গুলো ভাল লেগেছে। ফটোগ্রাফ গুলো কিন্তু দারুণ! আর চমৎকার হলো দেশ বিদেশের ভ্রমণ এর বর্ণনাটুকু , ছিমছাম ভাবে অল্প কথায় সারা কিন্তু খুব জীবন্ত। এই তো! আর কি! সত্যজিৎ রায়ের ভিতরে থাকা মানিক এর কথা, তার অন্দরমহলের কথা জানতে হলে বেশ ভাল একটা বই।
বইটি নিয়ে অনেক উৎসাহ ছিল। সত্যজিৎ রায়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল অপরিসীম। তার ট্যালেন্টে আমি এতই মুগ্ধ ছিলাম যে মানুষ হিসাবেও তাকে উচ্চাসনে বসিয়েছিলাম। এই বইটা পড়ার পর একজন অসামান্য প্রতিভাধর মানুষ হিসাবে তাকে যতখানি শ্রদ্ধা করি, মানুষ হিসাবে সেইরকম করতে পারব না। এই বইটা তাই আমার জন্য জরুরি ছিল।
বিজয়া রায়ের লেখনী ভালো লাগেনি। শুরুতে ভালো লাগলেও, অর্ধেক পড়ার পর মনে হবে শুটিং, কেনাকাটা, জন্মদিনের পার্টি এছাড়া আর কিছুই নেই। এই লুপেই জীবন পড়ে গেছে। ডিরেক্টর হিসেবে সত্যজিৎ রায়কে যেভাবে হাইলাইট করেছেন, লেখক হিসেবে সেরকম বর্ণনা নেই। তার কারণ হয়ত হতে পারে লেখার কাজটা লেখকের একান্ত ব্যাক্তিগত, অন্য মানুষের সেখানে ভূমিকা তেমন নেই। তাও কিছু বর্ণনা থাকা উচিত ছিল বলে মনে হয়েছে।
মানুষ সত্যজিতের পরিচয় পাওয়া যায় বলেই তিন তারা দেওয়া। নাহয় রেটিং আরও কম দিতাম।
আমার একটা খুব খারাপ অভ্যাস ছিলো, অন্তত আমাদের দেশের কনটেক্সটে তো বটেই। আমি পরীক্ষার খাতায় ততটুকুই লিখতাম যতোটা প্রশ্নের সাথে প্রাসঙ্গিক। এজন্য বন্ধুদের বকা শুনেছি, নাম্বার কম পেয়েছি, কিন্তু শোধরাইনি। এই বই আমাকে নিজের গোয়ার্তমি বারবার মনে করিয়েছে। মিসেস রায় যদি শুধু তাঁদের কথাই লিখতেন তাহলে বড্ড সুখপাঠ্য হতো বইটি�� আমি যে তিনতারা দিয়েছি তার অন্তত আড়াইখানা সেই ৬ ফিট সাড়ে ৪ ইঞ্চির ঋজু মানুষটির সম্পর্কে অনেক কথা জেনেছি বলে। এতো এতো অর্জন যার শুধু তার কথা জানবো বলেই বইটি পড়া। হতে পারে উনি ডায়েরী থেকে লিখেছেন বলে এতো কথা এসেছে। তবে বই আকারে যখন এসেছে তখন অপ্রাসঙ্গিক অনেককিছুই ছেঁটে ফেলা যায়। বই নিয়ে কাজ করি বলেই এগুলো খুব চোখে লাগে। সত্যজিৎ রায় - আমার জন্য এক চিরবিস্ময়। আজীবন থাকবেন।
আচ্ছা, আপনারা শুধু ভদ্রমহিলা গান গেয়ে ক্যারিয়ার করার সুযোগ পাননি দেখে সত্যজিৎ রায়কে আকারে ইঙ্গিতে misogyny'র খ্যাতি দিয়ে দিলেন? লজ্জা, লজ্জা! XD
আমার পড়া সবচেয়ে ভালো বইগুলোর একটা। সত্যজিৎ রায়ের ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে এত সুন্দর লেখা, আর তার পেছনে থাকা দুই নারী- লেখিকা, অর্থাৎ ওনার স্ত্রী আর মায়ের অবদান হয়তো অজানাই থাকতো বইটা না পড়লে।
একদিনে বই শেষ করে ফেলা আমি নিজেকে দমিয়ে তিন দিনে বইটা শেষ করলাম। আসলে একদিনে শেষ করার মত বই না। আর এই বইটা পড়ার আগে সত্যজিৎ রায়ের ছবি, ওনার ছেলের কাজ, ওনার বই- এসব নিয়ে ভালো একটা সাধারণ ধারণা অন্তত থাকা তো লাগবেই।
সেসব না থাকলে, অথবা এই বই একদিনে speed reading করলে বইয়ের অনেক জিনিসই বোঝা মুশকিল হয়েই যাবে। আর তখন এত মানী একজন কিংবদন্তি'র character assassination-ও হয়ে যাবে। xD
৬ ফুট ৪ ইঞ্চির শালপ্রাংশু লোকটা ক্রমাগত পাইপ টেনে যাচ্ছেন। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা, একমনে কী যেন ভাবছেন। ভালোমতো খেয়াল করে দেখুন, চৌকোনো মুখে একই সাথে মিশে আছে জ্ঞানীর বৈদগ্ধ্য আর শিশুর বিস্ময়। সত্যজিৎ রায় কী করেছেন, সেটা কমবেশি সবাই জানেন। বিজয়া রায়ের ৫৬০ পৃষ্ঠার বিপুলায়তন বইটা পড়ার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, মানুষ সত্যজিৎ রায়কে চিনতে পারা।
বিজয়া আর সত্যজিত ছিলেন খুবই নিকটাত্মীয়, তায় বিজয়া ছিলেন বয়সে বড়। সবকিছু মিলিয়ে তাঁদের বিয়েটা আর দশটা পরিণয়ের মতো সহজ ছিল না। তবে দুজন দুজনকে এতো ভালোভাবে বুঝতে পারতেন, অনেক ঝড়ঝাপটা সামলে ঠিকই তাঁরা এক ছাদের নিচে থাকতে পেরেছিলেন। এখানে বইটা নিয়ে আমার একটু খেদ আছে। বিজয়া অরফু মঙ্কু বা সত্যজিৎ ওরফে মানিক ছিলেন আপন পিসতুতো-মাসতুতো ভাই বোন। যৌবনে রেডিওতে পাশ্চাত্য সংগীত শুনতে শুনতে তাঁরা পরস্পরের কাছাকাছি এসেছিলেন। কিন্তু সেই সম্পর্কের শুরুর দিকের রসায়নের অনেক কিছুই যেন উহ্য থেকে গেছে। অসম বয়সী সম্পর্কটার শুরুর দিকের আদ্যোপান্ত জানার আগ্রহটা তাই একটু হলেও থেকে গেছে।
অভিনেত্রী মাধবী মুখার্জির সঙ্গে সত্যজিতের প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের ব্যাপারে একসময় গুজব রটেছিল। বিজয়া নিজেই এই বইয়ে সেটা নিশ্চিত করেছেন, "আমার স্বামী রক্তমাংসের নন।" তবে মানিক নিজেই ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। একটা মজার ব্যাপার, নিজের স্ত্রীর ব্যাপারে কিন্তু মানিক খানিকটা রক্ষণশীল ছিলেন। স্ত্রীর হাত ধরলে বা খানিকটা ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলাটা বরদাশত করতে পারতেন না। বিজয়ার লেখা থেকে আভাস পাওয়া যায়, মাঝে মাঝে ব্যাপারটা তিনি উপভোগও করতেন। অনেক ব্যাপারে উদাসীন হলেও এই ব্যাপারে মানিকের নজরটা আগ্রহ জাগানিয়া বৈকি।
বিজয়া একবার মানিককে বলেছিলেন, "ইউ আর ম্যান অব ইন্টেলেক্ট"। মানিক সেটা মানতে চাননি। নিজেকে তিনি "ক্রিয়েটিভ ম্যানই" মনে করতেন সবসময়। ৭১ বছরের জীবনে কী বিপুল উদ্যমে কাজ করে গেছেন সেটা ভাবলে বিস্ময় না জেগে পারে না। ছবি পরিচালনা, লেখালেখি, সন্দেশ সম্পাদনা, আবহসংগীতের কাজ... বলা যায় আজীবন বুঁদ হয়ে ছিলেন কাজের মধ্যেই। শেষ বয়সে অসুস্থতার জন্য হাত পা গুটিয়ে বসে থাকাটা বড় পীড়া দিত তাঁকে। ৭১ বছরের জীবনে কী করে এই অফুরান প্রাণশক্তি ধরে রেখেছিলেন ? বিজয়া জানাচ্ছেন, কাজের প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে অবিরত প্রেরণা দিয়ে গেছে। কখনোই নাকি কাজ কাজ করতে করতে "টায়ার্ডও" বোধ করতেন না। বোধ করি, এটা তাদের বংশের ধারাই ছিল।
আবার একই সাথে নিজের কাজের প্রতি অদ্ভুত একটা অনাসক্তি ছিল তাঁর। ঠিক কাজ বলা যাবে না, যশ-খ্যাতির প্রতি। কোন ছবি সমালোচিত হলো বা তুমুল প্রশংসা পেল সেটা নিয়ে খুব বেশি মাথাব্যথা কখনোই ছিল না। গাদাখানেক ডক্টরেট উপাধি পাওয়ার পরেও স্যার সম্বোধনে বিব্রত হতেন। চার পাশের সব ক্লেদ, সব পঙ্কিলতা থেকে দূরে থেকে কর্মনিষ্ঠ হওয়ার এই ক্ষমতা বোধহয় অর্জন করা যায় না,এটা জন্মগতই।
সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে লিখতে বসলে হাত কাঁপতে থাকে। বিশেষণ প্রয়োগের ক্ষেত্রে এমনিতেই আমি যথেষ্ট দুর্বল, তার উপর এই মানুষটার ক্রিয়েটিভিটি বর্ণনা করতে যেয়ে কতো বড় বড় বোদ্ধা-সমালোচকদেরই বিশেষণের ভান্ডার ফুড়িয়ে যেতো.. আর আমি তো কোন ছাড়!
ভক্তের চোখে যতোই দেবতা হয়ে থাকুন না কেন আদতে তিনি রক্তে-মাংসে গড়াই একজন মানুষ। এই প্রবাদ প্রতিম ব্যক্তিত্বটিকে নিয়ে কৌতুহল থাকবে সবার, এটাই স্বাভাবিক। কাজেই, সত্যজিৎ রায়কে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছেন, তার আবাল্য সঙ্গী বিজয়া রায় হাতে তুলে নিলেন কলম। 'আমাদের কথা' কিছুটা স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ। এই বইয়ে যতটুকু জুড়ে মানিক আছেন, তারচেয়ে বেশি আছেন বিজয়া... অবশ্য ওরা দু'জন মিলে তো একই সত্ত্বা।
বিখ্যাত মানুষদের স্ত্রীদের প্রতি আমার এক ধরণের উগ্র কৌতুহল আছে। ক্রিয়েটিভ মানুষটার সমস্তটা দিন যেখানে শিল্পচর্চা নিয়েই ব্যস্ত, সেখানে তার সহধর্মিণীটি ঠিক কিভাবে সব সামলাতেন? তাদের সন্তানেরা? বিখ্যাত মানুষটিকে আরও আরও উঁচুতে তুলে ধরতে কতোটুকু ছিল তাদের ত্যাগ.. আরও কত্ত আবোলতাবোল চিন্তাভাবনা। যা হোক, বিজয়া রায় সত্যজিতের যোগ্য সহধর্মিণী ছিলেন, এ কথা বলাই যায়। বিজয়া রায়ের বইটা রক্ত মাংসের তৈরী 'মানুষ' সত্যজিৎকে নিয়ে, বিজয়ার ছোটবেলা, তার জীবন, তাদের যুগল জীবন নিয়ে লেখা। ওহ! হ্যা, এই বইয়ে কেবল চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎকে নিয়েই লেখা হয়েছে, গল্পকার সত্যজিৎ কে খুঁজে পাইনি। আর সবচেয়ে মজা লেগেছে, মুড়ি মুড়কির মতো বিদেশ থেকে আমন্ত্রণ পেতেন আর ঝোলায় ঝোলায় পুরষ্কার নিয়ে আসতেন :v ভাবতেই কী আশ্চর্য লাগে! তারপরেও এতো বিখ্যাত মানুষটাকে টাকার চিন্তা করতে হতো.. এটাই বা কম বিচিত্র কি 🐸 সত্যজিৎকে জানার জন্য বইটা ভালোই, কিন্তু অনেক বেশি বাহূল্যও আছে। ৫৮৫ পেজের এতো বৃহৎ না হয়েও আরও ছোটখাটো করে আরও গুছিয়েও বইটা লেখা যেতো।
সত্যজিৎ রায় বাংলা ও বাঙ্গালির জন্যে এক প্রবাদপ্রতিম চরিত্রের নাম। কিন্তু বারবার এই একই কথা তার অতি নিকটজনের মুখে কখনোই শ্রুতিমধুর ছিল না। লেখিকা ক্��েত্রবিশেষে তাঁর স্বামীর কথা বলতে গিয়ে অন্যদের ছোট করেছেন - এও আমার মনে হয়েছে বহুবার।
এই যেমন ২৮৬ পাতায় 'অরণ্যের দিনরাত্রি' ছবিটির প্রথম দেখার অভিজ্ঞতা তিনি লিখেছেন এভাবে, "ভরাট গল্প (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) এবং ততোধিক সুন্দর চিত্রনাট্য লোকে কিভাবে নেবে ..." ইত্যাদি।
আবার কোন একটা শ্যুটিং এর অভিজ্ঞতায় (পৃষ্ঠা নম্বর মনে নেই) লিখেছেন যে সত্যজিৎ রায় একটানা কাজ করে যাচ্ছেন। সবার তাল মিলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবাই তো আর তাঁর মত মহাপুরুষ নয়!
সত্যজিৎ রায় যে মহাপুরুষসম এবং তাঁর চিত্রনাট্য যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পের থেকে ভাল হতে পারে এতে কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই, বরং যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য কথা। কিন্তু ওইযে, এত কাছের মানুষের কাছ থেকে এমন কথা শুনলে বড়াইএর ভাবটাই ফুটে ওঠে বেশি।
পুরো ৫৫২ পাতার বইয়ে লেখিকা মানিকবাবুর তেমন সমালোচনা করেছেন একবারই। 'লন্ডনে ফেলুদা' গল্পটা পড়ে তাঁর একদমই ভাল লাগে নি!
এতকিছুর পরেও এই বই পড়ে গেছি ঐ একটি চরিত্রের জাদুকরী ব্যক্তিত্বের টানেই। তাঁর জীবনের প্রায় পুরোটাই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উঠে আসে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। ব্যক্তিজীবন, চলচ্চিত্রকার, লেখক এবং সঙ্গীতজ্ঞ - প্রতিটি সত্যজিতের সাথেই নতুন করে পরিচয় হল। বিশেষ করে প্রতিটি ছবি তৈরির কাহিনি প্রায় পুরোটাই জানা হল এই বই থেকে। পড়ে শেষ করার পর সত্যজিৎ রায়ের সবগুলো সিনেমা আরেকবার দেখার ইচ্ছা মনে জাগছে বই কি!
যাকে আইডল মানি সেই মানুষটার শেষ জীবনটা কেটেছে অসম্ভব কষ্টে, এটাও জানলাম। অর্থকষ্ট নয়, শারীরিক অক্ষমতার জন্য সিনেমা বানাতে পারেননি অনেকদিন। বেশিরভাগ সময়টা কাটাতে হয়েছে হাসপাতালে। কাজ থেকে দূরে থাকতে থাকতে কাজপাগল মানুষটা সত্যিই পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন। শেষ দিকের ঘটনাগুলো পড়ে সত্যিই চোখে জল আসে। একটানে পড়ে শেষ করে ফেললাম তাই।
সত্যজিৎ রায়ের জীবনাবসান হয়েছিল ২৩শে এপ্রিল। বইটাও আমার কাকতালীয়ভাবে পড়া শেষ হল ২৩শে এপ্রিল। মানিকবাবু শেষজীবনের অসম্ভব কষ্ট-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন মৃত্যুর মাধ্যমে। আমারো যেন বইটা শেষ করে অনেক হালকা লাগছে!
বিজয়া রায়ের লেখা এই স্মৃতিকথা তেমন একটা সুলিখিত বা সুস্বাদু নয়। গুরুত্বহীন তথ্য, দৈনন্দিন কাজ, পরিচিতদের নাম ধাম, একের পর এক দিয়ে যাওয়া হয়েছে, বিশেষভাবে কোনো কথা মনে দাগ কাটে না। আজ এখানে খেলাম, কাল ঐ গান শুনলাম, পরশু অমুককে দেখলাম, ইত্যাদি। লেখায় অনভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট। তবুও যাহোক, বিজয়া ও সত্যজিতের সম্পর্কের ব্যাপারে কিছু তথ্য জানা যায়।
জীবনী, স্মৃতিকথা পড়তে কখনোই ভালো লাগে না আমার, এবারও ব্যতিক্রম নয়। লেখা, কাজ, সৃষ্টি ভালো লাগে যাদের, দিন শেষে তারাও রক্ত-মাংসেরই মানুষ, জীবনের সমস্যা ও ঘটনাপ্রবাহ খুব আলাদা নয়। তাই ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে পড়তে/জানতে আমার আগ্রহ বরাবরই কম, বরং তাদের কাজ/সৃষ্টিকর্মের সময়ে আসা নানান সমস্যা, কী করে সেগুলোর সমাধান করা গেল, এসব জানতে বেশি ভালো লাগে।
ভেবেছিলাম সিনেমাগুলোর শুটিং নিয়ে আরও বর্ণনা থাকবে, সত্যজিতের লেখার রুটিন নিয়ে, খুব একটা মনভরানোর মতো তেমন কিছু পেলাম না ৫০০+ পৃষ্ঠার স্মৃতিচারণে। নতুন তথ্যের মাঝে ঘরের জীবন, দৈনন্দিন দিনযাপন কেমন ছিলো সত্যজিতের, স্ত্রী আর সন্তানের সুস্থতা, মঙ্গলের জন্যে কী পরিমাণ অস্থির থাকতেন, অসুখ-বিসুখ নিয়ে ভয়ে থাকতেন, আর নিজে সাংসারিক বা নিজেরও দেখাশোনার কোন কাজই করতেন না, ভাবতেন না, এটা জানলাম। বিজয়া রায়ের ছোটবেলার জীবন, পাটনায় সংস্কৃতিমনাদের জীবন, কোলকাতায় ওদের পরিবারের (সত্যজিতের মামাবাড়ি) আচরণ, কাজকর্ম, এগুলো ইন্টারেস্টিং ছিলো।
বই পড়তে পড়তে কয়েকবার মনে হলো বিজয়া রায়ের লেখনীও কিঞ্চিৎ একঘেঁয়ে - একই জন্মদিন, ক্রিসমাসে একমাত্র ছেলেকে দেয়া উপহারের বর্ণনা, যাবতীয় অসুখ-বিসুখের বিবরণ, একগাদা মানুষের নাম। কিন্তু কোন একটা বিশেষ ঘটনার তথ্য দিতে গিয়ে ডিটেইলস অনেক কিছুই লেখা নাই, বা ২ পৃষ্ঠা পরে গিয়ে তথ্যটা থাকায় গোলমেলে হয়ে যায়, মোট কথা অত গোছানো লেখা মনে হয়নি, কাজেই খুব সুখ-পাঠ্য ছিলো না।
Kiinnostava näkökulma maailmankuulun intialaisohjaajan elämään. Kyseessä ei ole mikään paljastuskirja, vaan päiväkirjojen pohjalta kirjoitettu arkikuvaus, jossa elokuvat ja perhe-elämä vuorottelevat vuosikymmenten ajan. Teos päättyy Satyajit Rayn kuolemaan, jonka jälkeen Bijoya kirjoittaa enää muutaman rivin omasta elämästään ja voinnistaan.
বেশ অনেকদিন সময় নিয়ে বইটা পড়লাম। একটানা পড়ার মত বই বলবো না, অল্প অল্প করে - প্রতিদিন একটু একটু করে পড়েছি। সত্যজিৎ রায় এবং তার জীবনকাল, পরিবেশ, নিত্যদিনের সুখ-দুঃখঃ বিজয়া রায় সবকিছু নিয়ে এসেছেন এই বইয়ে। একজন লেখক, একজন পরিচালক, ফেলুদার স্রষ্টা, একজন অস্কার-বিজয়ী এবং আরো অনেক কিছু- সবকিছু দুই মলাটের মধ্যে বেঁধে ফেলা যায় না - কখনোই না। কিন্তু সেই চেষ্টা করেছেন বিজয়া রায়, বেশ সফলভাবেই। প্রথম চল্লিশ-পঞ্চাশ পৃষ্ঠা পড়তে গিয়ে দুই-একবার বোরিং লেগেছিল, কিন্তু বাকি সাড়ে পাঁচশ পৃষ্ঠা পড়তে গিয়ে আর একবারও তা মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে বারবার, রায় পরিবারের অন্দরমহলের গল্প এই বই।
লেখায় একদম সহজ ভাষায় উঠে এসেছে ঐ সময়ের রাজনীতি, বিশিষ্ট শিল্পী, অভিনেতাসহ অসংখ্য মানুষের নাম। এসেছেন রবীন্দ্রনাথ, উত্তম কুমার, চিত্তরঞ্জন, কখনও বা ইন্দিরা গান্ধী। আধুনিকতা ব্যাপারটার সত্যিকার সংজ্ঞা পেলাম মনে হয় এই বইয়ে। আজ থেকে আরো অর্ধ-শতাব্দী আগের সমাজে সত্যিকারের আধুনিকতাকে কিভাবে হৃদয়ে ধারণ করতে হয় লিখেছেন বিজয়া রায়।
বেশ অনেকদিন ধরে এই বইটা আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। আমি মনে হয় না কোনো বই এভাবে পড়েছি আগে কখনো। রায় পরিবারকে, মঙ্কুকে (বিজয়া রায়) কেন যেন নিজের খুব কাছের মনে হচ্ছিল এক সময়। একদম শৈশব থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত - একাধিক জীবনকাল, অসংখ্য স্মৃতির খণ্ডাংশ - সব আছে এই বইয়ে। শেষের দিকে 'মানিক' (সত্যজিৎ রায়ের)-এর অবস্থা যখন খারাপ হচ্ছিল - আমারও হুট করে চোখ ভিজে ভিজে আসছিল। জানিনা কেন। সত্যজিৎ রায় খুব ভাগ্যবান ছিলেন, এমন একজনকে পেয়েছিলেন স্ত্রী হিসেবে। অনেকবার মনে হয়েছে, উনার জগদ্বিখ্যাত হবার পেছনে মঙ্কু'র অবদান এবং ত্যাগকে ছোট করে দেখার উপায় নেই কোনোভাবেই।
গত জন্মদিনে এক অকৃত্রিম বন্ধু গিফট করেছিল এই বই। ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই আমার।
a complete biography of satyajit ray..every bengali's favourite director and story teller from the eyes of bijoya ray. ..his wife....though he belinged from a blue blooded family....his journey in films and then oscars was not very smooth....beautifuly described.....
To be completely transparent, my resolve to finish this book broke at page 474; it was too laborious. For ardent Ray fans: please pick up this book because you will get inside stories, trivias and confirmation of the doubts you had. Like why did Rabindranath get Satyajit to attend art classes at Shantiniketan, and many other hidden gems. However, this is the only good part.
Late Smt. Bijoya Ray was like a pillar who stood beside Sh. Ray and his confidant all his life, and hence my expectation was running high. What high hopes I had, and what a let down! This book is a classic case of how a beautiful opportunity can be lost if the writer does not possess good story-stelling abilities, even if all the ingredients are there.
The content of this book is picked up directly from the diaries she religiously used to maintain her entire life. However, the tradgedy is that the book reads, in most parts, like the pages of a diary only! It gets quite dragging and in most places, reads like the transcript of group of women/mashima/didima chatting amongst themselves on an afternoon after they are through with their household chores and the rest of the family has gone to sleep. Quite a disjointed narration!
However, I would put the blame on the book's editor and publisher, who would have done everyone a big favour if Mrs. Ray could have been supported with a capable writer/biographer instead of a translator (Mrs. Majumdar's translation is passable too). As I have mentioned above, there are glimpses of so many good stories, but alas! what a waste of an opportunity. My opinion: Instead of the title "Manik and I", the editor should have been truthful and called it "Pages from Mrs. Ray's diary".
A one of a kind memoir taken or rather elaborated from the daily dairy notes of Bijoya Ray, it gives a complete picture about the genius Satyajit Ray was, not only as a director, writer, auteur along with sketching the costumes, sets etc for his movies. He was also a great musician, western and rabindra sangeet admirer, also he could whistle symphonies easily. A great man, artist whose day to day life has been noted so beautifully for posterity. Bijoya's notes takes you to movie which has characters which feels life like. Reading this memoirs actually takes the reader into their lives and it is like we are part of the group within a scene. Every facet of the great man is captured perfectly which no other biographer could have done. The initial pages of the book deals with the childhood days of bijoya which is filled with names, relations events that one gets confused but once it comes to the point where Bijoya and Satyajit become friends and duly get married, the pace of the book increases and also the enthusiasm as a reader. Though a person from Bengal would identify more with the detailing about places, actors, etc it is still a pleasure to read the way their lives goes ahead. A genius like Satyajit Ray needed a Bijoya without whom he seriously wouldn't have been what he is now. Overall well written and translated and takes you for a interesting journey which as readers is interesting....
এক তারা কম দিলাম, কারণ আছে। গ্ৰন্থে পরিচালক সত্যজিৎ থাকলেও লেখক সত্যজিৎ একেবারেই অনুপস্থিত। আবার লেখিকার বর্ণনা পড়ে মানুষ হিসেবে সত্যজিৎকে এক তারা কম দিতেই হয়। সত্যজিৎ নিজে একবার প্রেমে জড়িয়ে পড়লেও নিজের স্ত্রীকে একেবারে যেন অবরোধবাসিনী করে রেখেছিলেন। বিজ্ঞাপনে ছবি তুলতেও আপত্তি —লেখিকা বিজয়া রায় আবার তা মেনেও নিয়েছেন —জানি না তা তার উদারতা থেকে নাকি পুরুষতন্ত্রের দীক্ষিত নারীর অজ্ঞতা থেকে; আমার মনে হয় প্রথম ধারণাটি সঠিক এবং এজন্যই লেখিকাকে বেশি দায়ী করে একতারা কমিয়ে দিয়েছি। আর গ্ৰন্থের শেষার্ধে এসে মনে হল লেখিকা শুধু ইনপুট ব্যতিরেকে কিছু দিচ্ছেন না,কেমন যেন ছকে আবদ্ধ জীবন মনে হল। প্রথমার্ধেই মধু উৎসারিত করে যেন শূন্য গর্ভ হয়ে গেছে শেষার্ধ।
একশ উননব্বই পাতা পর্যন্ত পড়ে ক্ষান্ত দিলাম। ভালো লাগেনি।
সত্যজিৎ রায়ের জীবনটাকে আরও কাছ থেকে খুঁটিয়ে দেখা যাচ্ছিল বলেই পড়াটা এদ্দুর চালিয়ে নেওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু বিজয়া রায়ের লেখা বড় বেশি ফ্যাক্টধর্মী। লেখার সহজ ঝরঝরে আনন্দটা এই বইয়ে অনুপস্থিত। তার ওপর সত্যজিৎ রায়কে সবসময় মহামানব করে দেখানোর একটা জোর প্রয়াস খুব বেশি চোখে লেগেছে।
Very well-written, in a conversational style, so it's a quick read. It's a fascinating glimpse into what made Satyajit Ray so special. My only criticism is, many of the people in the book are alternately referred to by their name, nickname, or familial title - a source of confusion for the Western reader.
নিজের স্বামীরে বড় করে দেখাতে গিয়া অন্যদেরকে ছোট করার যে ব্যাপারটা সেইটা ভাল লাগে নাই। বিজয়া রায় হয়তো মনে করেছিলেন যে, উনি লিখে না দিলে কেউ জানতেই পারবে না সত্যজিৎ রায় কত বিশাল ব্যক্তি।
লেখার ধরণ বিরক্তিকর। অপ্রয়োজনীয় কথাই বেশি। এইটা থেকে কাজের জিনিস ছাড়া বাকি সব বাদ দিয়ে কেবল আড়াই বা তিনশো পাতায় লিখে ফেলা যেত।
She has a very fluent language just like Satyajit Ray. Very Enjoyable read. It has numerous behind the curtain life snippets of the world renowned filmmaker . Talks about the last days of Ray and his deteriorating health. Stories about making of several Ray classics. Very intimate , Very personal
Manik and I: is an account of Satyajit Ray's life from the eyes of his wife Bijoya Ray, largely based of her diary. It's an elaborate and fascinating account of the events and people they encountered. The book flows well with an easy writing style and creates a personal connect. (However, keeping track of the names was beyond my capabilities :))
Having been an ardent admirer of Ray's creations, it's been an inspiring, insightful and optimistic read to know the man behind these extraordinary works. Not only is one made aware of the immense perseverance and effort that he put in to achieve the excellence that he did, it allows one to see the fortitude, generosity, intelligence, equanimity and humanity that he embodied.
It lays bare another side of him - in many regards he was a very liberal man which is evident from his progressive works, however when it came to his own family he was quite conservative, yet very loving, adding to the complexity of his character much like his movies.
The intimate details of the suffering he went through in his last years and the vulnerable state that this indomitable figure comes to, is quite moving. There are many moments where one comes face to face with mortality, with the mention of many well-known personalities passing away.
Going through the book was like going through a lifetime of very intense experiences of one of the most creative forces I've come across.
The book is a result of the diary maintained by the wife of the renowned filmmaker Satyajit Ray for over four decades. A 600 page book can be quite daunting but what makes it engaging is the easy style of the author. This is quite a personalized account.
The initial 100 pages or so dwell on the family background, the bloosoming of a romantic relationship between the author and her close relation who became her husband and was destined to become India’s most famous filmmaker internationally. This segment also recount their travel throughout Europe and how Satyajit Ray gave up a stable career in advertising to concentrate on his passion – filmmaking.
Unless you’re a big Ray devotee and willing to lap up every titbits on the lives and the happenings in the illustrious Ray family, the book can be rather uninteresting for a more serious film buff. For example, there is no mention of what Ray thought of other filmmakers except a passing reference to Ritwik Ghatak’s brilliance on the occasion of passing away of Ghatak . We do know that Ray wrote a book OUR FILMS THEIR FILMS wherein he discusses that the book in question eschews that totally.
The book is littered with effusive praises showered on her husband barring a single mention of a relationship Ray had with a well-known actress which left the author deeply scarred. One can discover several interesting facts though – that Ray once contemplated to make a film based on the childhood of Mozart, that once renowned director Buddhadeb Dasgupta turned his 15-minute interview session with Ray into an affair lasting more than three hours and which eventually caused Ray a heart attack ….
What comes through the pages was that Ray was quite a family man who loved his wife and son and during his last days his grandson dearly. He travelled extensively across the globe attending film festivals and receiving honors galore from various foreign universities.
It is also amazing to read that India’s most famous filmmaker didn’t have enough money to buy a house for himself and his family. Ray suffered greatly during his last few years on account of his failing health.
The last few pages are quite touching especially where Ray on realization that he would be gone and unable to find strength to converse kisses his son Sandip affectionately – a muted expression of farewell from his loved ones.
Overall one does get a glimpse into the life of the celebrated filmmaker and his artistic celluloid journey.
বাতিঘরে যেদিন বইটি পড়ি শুরুর দিকটা খুব ভালো লেগে যায়।একবসায় অনেকখানি পড়ে ফেলি। পরে বইটির দাম দেখে মনে হল এখন বইটি কেনা সম্ভব না অর্ধেক পড়ে রেখে দেয়াও সম্ভব না একমাত্র পিডিএফ ভরসা। এবং পিডিএফ পড়তে আমি বরাবরই কাঁচা। ৫৭৪ পৃষ্ঠার পিডিএফ যে আমি পড়তে পেরেছি এটা ভেবেই অনেকটা বিশ্ব জয়ের মত আনন্দ হচ্ছে।
আত্মজীবনী মূলক বই আমি বরাবরিই একটু এড়িয়ে চলি।কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের এর উপর অগাধ ভালোবাসার জন্যই বোধহয় বইটি পড়ার প্রতি আগ্রহ জম্নেছে। বই এর শুরু টা পাঠক কে সহজে আকর্ষিত করবে। এর কারনেই পাঠক আগ্রহ পাবে বইটি শেষ করার দিকে এগিয়ে যাওয়ার।তবে বইটির শুরু তে মানিক মানে সত্যজিৎ রায়ের শৈশবের কথা ফুটে আসেনি বললেই চলে।বই এর মাঝা মাঝি এসে কথা গুলা বড়ই একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিল,কিন্তু শেষ টা আবার অন্যরকম। বইটি লিখেছেন বিজয়া রায়( সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী) উনার নিজের ডায়েরির পাতার ছোট খাট প্রতিটা বিষয়ের সংকলন এই বই। বিজয়া রায় প্রকৃত অর্থেই সত্যজিৎ রায়ের অর্ধাংগীনি ছিলেন। সত্যজিৎ রায়ের সব কিছু তে বিজয়ার অবদান,সাপোর্টই প্রমান করে কি অসম্ভব ভালোবাসতেন তিনি তাঁর স্বামীকে। ডায়েরীর প্রতিটি পাতা জুড়েই ছিল "মানিক" বিজয়ার চোখে "মানিক" নিজের কথা, নিজের শখ, নিজের ইচ্ছা সবকিছুর উর্দ্ধে ছিল তাঁর কাছে "মানিকের ইচ্ছা" মানিক কি চাইতেন। কথায় বলে, প্রতিটি সফল পুরুষের পিছনে এক নারীর অবদান রয়েছে।বিজয়া রায় তার এক উদাহরণ। তাঁর অবিরাম সহযোগিতা, বিশ্বাস সত্যজিৎ রায়ের মেধা কে আরো শানীত করেছে। সত্যজিৎ রায়ের ভুল কেও সাদরে মেনে নিয়েছেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের অর্ধাংগীনি হতে গিয়ে নিজের স্বত্তা কে হারিয়ে ফেলেছেন, হয়ত তিনিও হতে পারতেন নামকরা এক জন শিল্পী,কিন্তু এই পরিচয়ের থেকেও মানিকের মংঙ্কু, সত্যজিৎ এর সহধর্মিণী পরিচয়ই তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশী মূল্যবান ছিল। তাই তাঁর হাত থেকেই সত্যজিতের অস্কার নেয়াটা মানায় :) যেহেতু বইটি বিজয়ার চোখে সত্যজিৎ কে দেখা তাই সত্যজিৎ এর নিজের কথা খুব কমই জানা যায়। তবে সত্যজিৎ এর ফিল্ম মেকিং,মিউজিক, নিত্য দিনের প্রতিটা খুঁটিনাটি বিষয় খুব সুন্দর ভাবে বইটি তে ফুঁটে উঠেছে। তবে সত্যজিৎ এর বই লেখার বিষয়টি একটু ঝাপসাই রয়ে গেছে বইটিতে।পথের প্যাঁচালি থেকে হীরক রাজার দেশে আবার তা থেকে আগন্তুক সব ছবির মেকিং,অন্দরমহলের প্রতিটা বিষয় ফুঁটে উঠেছে বইটি তে।জানা গেছে রায় পরিবারের বন্ধু, আত্মীয় এবং আরো অনেক ছোটখাট কাছের মানুষের কথা।আরেকটি বিষয় না বললেই নয় বইটি তে সংযুক্ত ফটোগ্রাফ গুলো নিয়ে।চমৎকার সব ছবি,পিডিএফ এ এত সুন্দর লাগে, হার্ড কপি তা না জানি কত সুন্দর লাগবে।বইয়ের নামকরন যথার্থ "আমাদের কথা", আসলেই বিজয়া ছাড়া সত্যজিৎ অসম্পূর্ন। এবং সবসময়ের জন্যই তাঁর সবচেয়ে বড় ভক্ত,সমালোচক হচ্ছেন বিজয়া রায়।
বিজয়া রায়ের 'আমাদের কথা' ওনার আর সত্যাজিত রায় নিয়ে স্মৃতি চর্চা। অনেক অজানা তথ্য উঠে আসে যেগুলো সাধারণ মানুষের জানা নেই। তবে হ্যাঁ এই বইয়ের অনেক কথা বাবুকে নিয়ে মানে সান্দিপ রায় জড়িত। বিজয়া রায় নিজের রোজ লেখা ডায়েরি থেকে এই স্মৃতিচারণ লিখেছেন।